পাকিস্তানিদের জন্য ভিসা সহজ করল বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮: ৫৭
Thumbnail image

পাকিস্তানিদের জন্য ভিসা পাওয়া সহজ করেছে বাংলাদেশ। এখন থেকে ভিসা নিতে পাকিস্তানিদের আর ঢাকার ছাড়পত্রের প্রয়োজন হবে না বলে জানিয়েছেন ইসলামাবাদে বাংলাদেশের হাইকমিশনার ইকবাল হুসেইন। দ্য ডনের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

গতকাল শনিবার লাহোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিতে (এলসিসিআই) ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় হাই কমিশনার বলেন, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে পাকিস্তানিদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করেছে বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানিদের ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে ঢাকা থেকে ছাড়পত্রের প্রয়োজনীয়তা বাতিল করেছে বাংলাদেশ সরকার। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিই এখন প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।’

এই লক্ষ্য অর্জনে এলসিসিআইয়ের সহযোগিতার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, এক দশকে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক আশানুরূপ না হলেও বর্তমান সরকার সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী। ১৮ কোটি মানুষের একটি বিশাল বাজার হিসেবে বাংলাদেশ পাকিস্তানের জন্য বড় একটি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হতে পারে।

হাইকমিশনার আরও বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্ভাবনা এখনো অনেকটাই অনাবিষ্কৃত। পাকিস্তান এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সক্ষম।’

আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন তিনি। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বৃহত্তর সহযোগিতার জন্য দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) পুনরুজ্জীবিত করার ওপরও জোর দেন তিনি।

হাইকমিশনার বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়লেও দক্ষিণ এশিয়ায় এখনো কিছু চ্যালেঞ্জ আছে, যা মোকাবিলায় সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান প্রজন্মের জন্য সুযোগ তৈরি করা এবং পারস্পরিক বাণিজ্য ও সহযোগিতার পথে বাধা দূর করা উভয় দেশের দায়িত্ব। এ ক্ষেত্রে এলসিসিআই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।’

কোভিড-১৯ মহামারির অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে হাইকমিশনার আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘সংকট মোকাবিলায় প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করা এবং বাণিজ্য প্রবাহ চালু রাখা অত্যন্ত জরুরি।’

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দায়িত্ব নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার উদ্যোগ নিয়েছে ড. ইউনূসের সরকার। এর অংশ হিসেবে পাকিস্তান থেকে সরাসরি পণ্য আমদানি এবং এ ক্ষেত্রে নজিরবিহীনভাবে শুল্ক পরিদর্শন মওকুফ করে দেওয়া হয়েছে। এরপর বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা ফি মওকুফ করেছে পাকিস্তান।

এলসিসিআই সভাপতি মিয়া আবুজার শাদ জানান, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ৭১৮ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। বাংলাদেশে পাকিস্তান ৬৬১ মিলিয়ন ডলারের পণ্য ও সেবা রপ্তানি করেছে। আর বাংলাদেশ থেকে ৫৭ মিলিয়ন ডলারের পণ্য ও সেবা আমদান করেছে।

তিনি বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) পাকিস্তান বাংলাদেশে রপ্তানি করেছে ৩১৪ মিলিয়ন ডলার, আর আমদানি করেছে ৩১ মিলিয়ন ডলার।

দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের পরিমাণ বাড়িয়ে দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করার আশাপ্রকাশ করেন এলসিসিআই সভাপতি। এই লক্ষ্য অর্জনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য উভয় দেশের সরকারি এবং বেসরকারি খাতের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

তথ্যপ্রযুক্তি, ওষুধশিল্প, চাল, সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, গাড়ির যন্ত্রাংশ এবং ক্রীড়া সামগ্রীসহ বিভিন্ন খাত দুই দেশের বাণিজ্য বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত