তানিয়া ফেরদৌস
আবলুস কাঠের মতো নিকষ কালো রংটির প্রতি সবাই কেমন এক অন্য রকম আকর্ষণ অনুভব করে। এডগার এলান পোর রক্ত হিম করা গল্পের ‘ব্ল্যাক ক্যাট’ অথবা শেক্সপিয়ারের বিখ্যাত চরিত্র লেডি ম্যাকবেথের কৃষ্ণ বরণ পোশাকের রহস্যময়তা তবু আন্দাজ করা যায়। কিন্তু দুনিয়াজুড়ে মিশকালো সব খাবারের মধ্যে যে সবাই কী রহস্য আর আকর্ষণ খুঁজে পায়, তা সত্যিই ভাববার বিষয়। এই কুচকুচে কালো খাবারগুলোর (Black Food) কোনো কোনোটি প্রাকৃতিকভাবেই কালো। আবার কোনোটিকে কালো রূপ দিতে ব্যবহার করা হয়েছে প্রয়োজনীয় উপাদান।
কালো চাল
আমাদের দেশের পাহাড়ি অঞ্চলে জন্মানো কালো বিন্নি চালের মতো চীন, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া ইত্যাদি দেশেও একেবারে কালো দানার আঠালো গ্লুটেনযুক্ত চাল উৎপন্ন হয়। পুষ্টিমানের দিক থেকে এ কালো চাল অত্যন্ত উৎকৃষ্ট। কারণ, এতে উপকারী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও আমিষের পরিমাণ অন্য সব চাল থেকে বেশি। এর বিভিন্ন স্বাস্থ্যগুণের জন্য এবং সেই সঙ্গে রান্না করা ভাতের কাকচক্ষু রূপের জন্যও আদিকালের চীন দেশে এই চাল শুধু সমাজের উচ্চশ্রেণির মানুষেরাই খেতে পারত। একে তারা রীতিমতো ফরবিডেন রাইস বা নিষিদ্ধ চাল নাম দিয়েছিল। এখন অবশ্য আর তেমন কোনো ব্যাপার নেই। পুষ্টিগুণে সেরা আর রূপ, রং ও স্বাদে অনন্য বলে এই চাল দিয়ে আমাদের দেশে হয় সুস্বাদু খিচুড়ি, ভাত, পায়েস। আর অনেক দেশে বিভিন্ন রঙিন উপকরণের সঙ্গে কালো ভাত দিয়ে বানানো হয় সালাদ, পিলাফ, ম্যাক্সিকান বারিটো, জাপানি সুশি।
কালো মুরগি
একেবারে দাঁড়কাকের মতো কুচকুচে কালো পালকে ঢাকা, কালো পা, ঠোঁট, ঝুঁটিবিশিষ্ট কিছু জাতের মোরগ-মুরগি আছে পৃথিবীতে, যাদের মাংস, হাড় আর বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পর্যন্ত মিশকালো। অত্যন্ত দুর্লভ জাতের এই মুরগি খুব কম জায়গাতেই মেলে দুনিয়ায়। আন্তর্জাতিকভাবে যে কালো মুরগির জাত নাম করেছে, তা হলো ইন্দোনেশিয়ান আয়াম সেমানি। ফ্রি রেঞ্জ বা চরে বেড়ানো মুরগি বলে এটি অত্যন্ত সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। সাধারণ মুরগির মতোই স্টু, স্যুপ, কারি—সবকিছুই এই চিকেন দিয়ে খুব উপাদেয় হয়। এর ভারতীয় জাত কড়কনাথ চিকেনও কিন্তু কোনো দিক থেকে কম নয়। চড়া মূল্যের এই মুরগি সে দেশের মধ্যপ্রদেশ অঞ্চলেই বেশি হয়। একে স্থানীয়ভাবে ‘কালি মাস’ও বলা হয়। তেলতেলে সুস্বাদু এই কালো কুচকুচে মুরগি ভুনা বা ঝোল করলে তা আসলেই একেবারে অন্য রকম স্বাদের অবতারণা করে বলে অভিজ্ঞজনেরা বলে থাকেন।
কালো স্প্যাগেটি
স্প্যাগেটি আজকাল পুরো বিশ্বেই খাওয়া হয়। ডিম, ডুরুম জাতের গম, আর কুসুম গরম পানিতে স্প্যাগেটির খামির বানাতে গিয়ে যদি স্কুইডের কালির প্রাকৃতিক কালো রং মেশানো হয়, তবে অদ্ভুত সুন্দর কালো স্প্যাগেটি তৈরি করা যায়। গরম ফুটন্ত পানিতে দাঁতে কাটার মতো আল দান্তে পর্যায়ে সেদ্ধ করে পানি ঝরিয়ে একটু মাখনে মেখে নিলে যে অপরূপ চকচকে কালো স্প্যাগেটির কুণ্ডলীটি প্লেটে পাওয়া যায়, তা সামান্য একটু পার্মেজান চিজ ছিটিয়েই অনায়াসে খেয়ে নেওয়া যায়। আবার লাল টুকটুকে মারিনারা সস, সবুজ পেস্তো সস, কুচি করা ক্যাপসিকাম, অলিভ, বাসিল পাতা—সবকিছুই কালো স্প্যাগেটির পাশে অসাধারণ রূপসী দেখায়। শুধু আকর্ষণীয় রং নয়, স্কুইডের কালি ব্যবহার করা হয় বলে সিফুডের একটা হালকা ফ্লেভারও পাওয়া যায় এতে।
কালো আইসক্রিম
গত এক দশক ধরেই ব্ল্যাক আইসক্রিম সারা বিশ্বে এক অদ্ভুত ক্রেজ তৈরি করেছে। মচমচে ওয়েফার কোনের মাঝে চুড়ো ধরা নরম হিম হিম কুচকুচে কালো আইসক্রিম পেলে পশ্চিমা কিশোর-তরুণেরা আর কিছুই চায় না। এই ঘোর কৃষ্ণবর্ণ কিন্তু মৌলিক আইসক্রিম মিশ্রণে অ্যাকটিভ চারকোল মিশিয়ে পাওয়া যায়। বিশেষ প্রক্রিয়ায় ভস্মীভূত নারকেল থেকে অ্যাকটিভ চারকোল তৈরি করে আইসক্রিমে মেশানোর এই বুদ্ধি কিন্তু নিউইয়র্কের বিখ্যাত আইসক্রিম প্রস্তুতকারক কোম্পানি মরগান্সটার্নের আইসক্রিম শিল্পীদের। অবশ্য এই অ্যাকটিভ চারকোল অতিমাত্রায় খাওয়ার কিছু ক্ষতিকর প্রভাব আছে বলে সম্প্রতি অনেক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে। তবে শরীর বিষমুক্ত করার গুণাগুণসহ আরও কিছু স্বাস্থ্যগুণের কথা জানা গেছে অ্যাকটিভ চারকোলের। এ গুণগুলোই পশ্চিমা সমাজে ক্রেজ তৈরি করতে যথেষ্ট সহায়ক হয়েছে এই কালো আইসক্রিমের।
এই কালো খাবারগুলো ছাড়া আরও অনেক জনপ্রিয় কৃষ্ণবর্ণ খাবার আছে সারা বিশ্বে। এখন বেকিংয়ের দুনিয়ায় কুচকুচে কালো ব্রাউনি, ডার্ক চকলেট মুয, ঘন কালো ব্ল্যাক ফরেস্ট কেক, মাড কেক, লাভা কেক, কালো বন রুটি ইত্যাদি খুবই সমাদৃত। আবার এদিকে প্রাকৃতিকভাবেই কালো ব্ল্যাক বেরি, জলপাই, কালো তিল, কালো জিরা, কালো মাশরুম ইত্যাদি তো বিভিন্ন খাবারে যুগে যুগে বাড়িয়ে দিচ্ছে স্বাদ আর জেল্লা। ঘোর কৃষ্ণবর্ণ এই খাবারগুলোর আবেদন ও আকর্ষণ তাই প্রেয়সীর ঘন কালো চুলের চেয়ে কোনো অংশেই কম রহস্যময় নয়।
আবলুস কাঠের মতো নিকষ কালো রংটির প্রতি সবাই কেমন এক অন্য রকম আকর্ষণ অনুভব করে। এডগার এলান পোর রক্ত হিম করা গল্পের ‘ব্ল্যাক ক্যাট’ অথবা শেক্সপিয়ারের বিখ্যাত চরিত্র লেডি ম্যাকবেথের কৃষ্ণ বরণ পোশাকের রহস্যময়তা তবু আন্দাজ করা যায়। কিন্তু দুনিয়াজুড়ে মিশকালো সব খাবারের মধ্যে যে সবাই কী রহস্য আর আকর্ষণ খুঁজে পায়, তা সত্যিই ভাববার বিষয়। এই কুচকুচে কালো খাবারগুলোর (Black Food) কোনো কোনোটি প্রাকৃতিকভাবেই কালো। আবার কোনোটিকে কালো রূপ দিতে ব্যবহার করা হয়েছে প্রয়োজনীয় উপাদান।
কালো চাল
আমাদের দেশের পাহাড়ি অঞ্চলে জন্মানো কালো বিন্নি চালের মতো চীন, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া ইত্যাদি দেশেও একেবারে কালো দানার আঠালো গ্লুটেনযুক্ত চাল উৎপন্ন হয়। পুষ্টিমানের দিক থেকে এ কালো চাল অত্যন্ত উৎকৃষ্ট। কারণ, এতে উপকারী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও আমিষের পরিমাণ অন্য সব চাল থেকে বেশি। এর বিভিন্ন স্বাস্থ্যগুণের জন্য এবং সেই সঙ্গে রান্না করা ভাতের কাকচক্ষু রূপের জন্যও আদিকালের চীন দেশে এই চাল শুধু সমাজের উচ্চশ্রেণির মানুষেরাই খেতে পারত। একে তারা রীতিমতো ফরবিডেন রাইস বা নিষিদ্ধ চাল নাম দিয়েছিল। এখন অবশ্য আর তেমন কোনো ব্যাপার নেই। পুষ্টিগুণে সেরা আর রূপ, রং ও স্বাদে অনন্য বলে এই চাল দিয়ে আমাদের দেশে হয় সুস্বাদু খিচুড়ি, ভাত, পায়েস। আর অনেক দেশে বিভিন্ন রঙিন উপকরণের সঙ্গে কালো ভাত দিয়ে বানানো হয় সালাদ, পিলাফ, ম্যাক্সিকান বারিটো, জাপানি সুশি।
কালো মুরগি
একেবারে দাঁড়কাকের মতো কুচকুচে কালো পালকে ঢাকা, কালো পা, ঠোঁট, ঝুঁটিবিশিষ্ট কিছু জাতের মোরগ-মুরগি আছে পৃথিবীতে, যাদের মাংস, হাড় আর বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পর্যন্ত মিশকালো। অত্যন্ত দুর্লভ জাতের এই মুরগি খুব কম জায়গাতেই মেলে দুনিয়ায়। আন্তর্জাতিকভাবে যে কালো মুরগির জাত নাম করেছে, তা হলো ইন্দোনেশিয়ান আয়াম সেমানি। ফ্রি রেঞ্জ বা চরে বেড়ানো মুরগি বলে এটি অত্যন্ত সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। সাধারণ মুরগির মতোই স্টু, স্যুপ, কারি—সবকিছুই এই চিকেন দিয়ে খুব উপাদেয় হয়। এর ভারতীয় জাত কড়কনাথ চিকেনও কিন্তু কোনো দিক থেকে কম নয়। চড়া মূল্যের এই মুরগি সে দেশের মধ্যপ্রদেশ অঞ্চলেই বেশি হয়। একে স্থানীয়ভাবে ‘কালি মাস’ও বলা হয়। তেলতেলে সুস্বাদু এই কালো কুচকুচে মুরগি ভুনা বা ঝোল করলে তা আসলেই একেবারে অন্য রকম স্বাদের অবতারণা করে বলে অভিজ্ঞজনেরা বলে থাকেন।
কালো স্প্যাগেটি
স্প্যাগেটি আজকাল পুরো বিশ্বেই খাওয়া হয়। ডিম, ডুরুম জাতের গম, আর কুসুম গরম পানিতে স্প্যাগেটির খামির বানাতে গিয়ে যদি স্কুইডের কালির প্রাকৃতিক কালো রং মেশানো হয়, তবে অদ্ভুত সুন্দর কালো স্প্যাগেটি তৈরি করা যায়। গরম ফুটন্ত পানিতে দাঁতে কাটার মতো আল দান্তে পর্যায়ে সেদ্ধ করে পানি ঝরিয়ে একটু মাখনে মেখে নিলে যে অপরূপ চকচকে কালো স্প্যাগেটির কুণ্ডলীটি প্লেটে পাওয়া যায়, তা সামান্য একটু পার্মেজান চিজ ছিটিয়েই অনায়াসে খেয়ে নেওয়া যায়। আবার লাল টুকটুকে মারিনারা সস, সবুজ পেস্তো সস, কুচি করা ক্যাপসিকাম, অলিভ, বাসিল পাতা—সবকিছুই কালো স্প্যাগেটির পাশে অসাধারণ রূপসী দেখায়। শুধু আকর্ষণীয় রং নয়, স্কুইডের কালি ব্যবহার করা হয় বলে সিফুডের একটা হালকা ফ্লেভারও পাওয়া যায় এতে।
কালো আইসক্রিম
গত এক দশক ধরেই ব্ল্যাক আইসক্রিম সারা বিশ্বে এক অদ্ভুত ক্রেজ তৈরি করেছে। মচমচে ওয়েফার কোনের মাঝে চুড়ো ধরা নরম হিম হিম কুচকুচে কালো আইসক্রিম পেলে পশ্চিমা কিশোর-তরুণেরা আর কিছুই চায় না। এই ঘোর কৃষ্ণবর্ণ কিন্তু মৌলিক আইসক্রিম মিশ্রণে অ্যাকটিভ চারকোল মিশিয়ে পাওয়া যায়। বিশেষ প্রক্রিয়ায় ভস্মীভূত নারকেল থেকে অ্যাকটিভ চারকোল তৈরি করে আইসক্রিমে মেশানোর এই বুদ্ধি কিন্তু নিউইয়র্কের বিখ্যাত আইসক্রিম প্রস্তুতকারক কোম্পানি মরগান্সটার্নের আইসক্রিম শিল্পীদের। অবশ্য এই অ্যাকটিভ চারকোল অতিমাত্রায় খাওয়ার কিছু ক্ষতিকর প্রভাব আছে বলে সম্প্রতি অনেক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে। তবে শরীর বিষমুক্ত করার গুণাগুণসহ আরও কিছু স্বাস্থ্যগুণের কথা জানা গেছে অ্যাকটিভ চারকোলের। এ গুণগুলোই পশ্চিমা সমাজে ক্রেজ তৈরি করতে যথেষ্ট সহায়ক হয়েছে এই কালো আইসক্রিমের।
এই কালো খাবারগুলো ছাড়া আরও অনেক জনপ্রিয় কৃষ্ণবর্ণ খাবার আছে সারা বিশ্বে। এখন বেকিংয়ের দুনিয়ায় কুচকুচে কালো ব্রাউনি, ডার্ক চকলেট মুয, ঘন কালো ব্ল্যাক ফরেস্ট কেক, মাড কেক, লাভা কেক, কালো বন রুটি ইত্যাদি খুবই সমাদৃত। আবার এদিকে প্রাকৃতিকভাবেই কালো ব্ল্যাক বেরি, জলপাই, কালো তিল, কালো জিরা, কালো মাশরুম ইত্যাদি তো বিভিন্ন খাবারে যুগে যুগে বাড়িয়ে দিচ্ছে স্বাদ আর জেল্লা। ঘোর কৃষ্ণবর্ণ এই খাবারগুলোর আবেদন ও আকর্ষণ তাই প্রেয়সীর ঘন কালো চুলের চেয়ে কোনো অংশেই কম রহস্যময় নয়।
দিগন্তবিস্তৃত ধানখেতের মাথার ওপর নীল আকাশে উঁকি দেবে সাদা মেঘ। শরৎকাল বলে ভুল হতে পারে। ভুল ভাঙলে দেখতে পাবেন, মেঘের ভেলা সূর্যের আলোয় ক্ষণে ক্ষণে রং বদলে হয়ে উঠছে গোলাপি কিংবা লাল। বুঝবেন, আপনি শরতের সাদা মেঘ নয়, দেখছেন তুষারে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা।
১ দিন আগেকোনো কিছু ওপর থেকে নিচে পড়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে। স্কুলের পদার্থবিজ্ঞান বইয়ে আমরা সবাই এ বিষয়ে পড়েছি। কিন্তু এমন কিছু জায়গা আছে, যেগুলোতে স্যার আইজ্যাক নিউটনের সূত্র কাজ করে না। অর্থাৎ সেসব জায়গায় কোনো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই। যেতে চান সেই সব জায়গায়?
১ দিন আগেশীত, বসন্ত আর বর্ষায় বাংলার নীল নদ সারির রূপ বদলে ফেলে। বর্ষায় পাহাড়ি ঢল নামলে দক্ষ মাঝিরাও ভয়ে ভয়ে বইঠা চালান। আর শীতে সারি নদীর নীল পানি দেয় অপার্থিব জগতের খোঁজ। নদীটি ধরে কিছুদূর উজান বাইলেই পাওয়া যাবে লালাখাল জিরো পয়েন্ট।
১ দিন আগেভ্রমণকালে রোগবালাই থেকে দূরে থাকার বিকল্প নেই। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী না হলে ভ্রমণের আনন্দ মাঠে মারা যেতে পারে। ভ্রমণের সময় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বেছে নিতে পারেন কিছু উপায়।
১ দিন আগে