মার্কিন সেনাবাহিনীতে থেকে ট্রান্সজেন্ডারদের বাদ দেবেন ট্রাম্প!

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০: ৪০
প্রতিবেদনে প্রকাশ, মার্কিন সেনাবাহিনী থেকে ট্রান্সজেন্ডার সদস্যদের বাদ দিতে পারেন ট্রাম্প। প্রতীকী ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য এক নির্বাহী আদেশ নিয়ে দেশটির ট্রান্সজেন্ডার তথা এলজিবিটিকিউআইএ‍+ সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সানডে টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প এমন একটি আদেশ জারির পরিকল্পনা করছেন, যার ফলে মার্কিন সেনাবাহিনী থেকে সব ট্রান্সজেন্ডার সদস্যকে সরিয়ে দেওয়া হবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রান্সজেন্ডার সেনা সদস্যদের শারীরিকভাবে ‘অযোগ্য’ হিসেবে চিহ্নিত করে চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। ৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্প প্রথম মেয়াদে এমনই এক আদেশ দিয়েছিলেন, যেখানে ট্রান্সজেন্ডারদের নতুন করে সেনাবাহিনীতে যোগদানে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। তবে চাকরিতে থাকা ট্রান্সজেন্ডারদের বাহিনীতে বহাল রাখা হয়েছিল। তবে এবার তিনি চাকরিতে থাকা সব ট্রান্সজেন্ডার সদস্যদেরও সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন।

সানডে টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প আগামী ২০ জানুয়ারি তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম দিনেই এই নির্বাহী আদেশে সই করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, সেদিন থেকেই এই আদেশ কার্যকর হতে পারে।

বর্তমানে প্রায় মার্কিন সেনাবাহিনীতে প্রায় ১৫ হাজার ট্রান্সজেন্ডার সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ট্রাম্পের প্রথম দফার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর সেনাবাহিনীতে ২ হাজার ২০০ সদস্য ‘জেন্ডার ডিসফোরিয়ায় (সাধারণত, কোনো ব্যক্তির জন্মের সময় সনদে যে লিঙ্গ লেখা হয়, পরিণত বয়সে গিয়ে ব্যক্তি সেই লিঙ্গের সঙ্গে নিজেকে মেলাতে না পারাকে জেন্ডার ডিসফোরিয়া বলে) আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত হন এবং অনেকেই জন্মগত লিঙ্গের বাইরে নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করেন।

ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়কে মূল সমাজে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টিকে উপেক্ষা করে এসেছেন। তাঁর অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কথিত ‘দুর্বলতা’ এবং ‘বামপন্থী মতাদর্শ’ দূর করা। তিনি আগেই বলেছিলেন যে, কোনো স্কুলে সমালোচনামূলক বর্ণবাদী তত্ত্ব, ট্রান্সজেন্ডার ইস্যু এবং অনুপযুক্ত যৌন বা রাজনৈতিক বিষয় পড়ানো হলে সেই স্কুলের অর্থায়ন বন্ধ করবেন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প নারী ও ট্রান্সজেন্ডার সেনাদের বাহিনীতে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে বরাবরই বিরোধিতা করেছেন। তাঁর প্রশাসনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিট হেগসেথও একই মনোভাব পোষণ করেন। তিনি দাবি করেছেন, সেনাবাহিনীতে নারী ও ট্রান্সজেন্ডারদের অন্তর্ভুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা দুর্বল করছে।

এদিকে, চলতি মাসের শুরুর দিকে ট্রাম্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ট্রান্সজেন্ডার এবং নন-বাইনারি সম্প্রদায় নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে আলোচনায় আসেন। তিনি দাবি করেন, ‘শ্বেতাঙ্গ’ শিশুরা আইভি লিগে ভর্তি হওয়ার জন্য ট্রান্সজেন্ডার হওয়ার প্ররোচনা পাচ্ছে।

এক পডকাস্টে জেডি ভ্যান্স বলেন, ‘আপনি যদি মধ্যবিত্ত বা উচ্চ মধ্যবিত্ত শ্বেতাঙ্গ অভিভাবক হন এবং আপনার একমাত্র লক্ষ্য যদি হয় সন্তানকে হার্ভার্ড বা ইয়েলে ভর্তি করা, তবে সেটা কঠিন হয়ে গেছে। এখন যারা এই ডিইআই (ডাইভার্সিটি, ইকুইটি, অ্যান্ড ইনক্লুশন—সমাজের সব ধরনের মানুষের জন্য একই ধরনের ব্যবস্থা বাস্তবায়নের সামাজিক কাঠামো) ব্যবস্থা পছন্দ করে, তাদের জন্য ট্রান্সজেন্ডার হওয়াই একমাত্র পথ।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত