নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
পুঁজিবাজারের নারী বিনিয়োগকারী রোকসানা আমজাদ ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে কারসাজির (সিরিজ ট্রেডিং) মাধ্যমে গ্লোবাল ইনস্যুরেন্সের শেয়ারের দাম বাড়িয়ে বিপুল পরিমাণ মুনাফা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ কাজে সহযোগীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তাঁর স্বামী অবসরপ্রাপ্ত সামরিক চিকিৎসক মো. আমজাদ হোসেন ফকির। তিনিও একজন শেয়ার ব্যবসায়ী।
সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করে কারসাজি ও প্রতারণার মাধ্যমে গ্লোবাল ইনস্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজি করার অপরাধ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় স্বামী-স্ত্রী এবং তাঁদের সহযোগীদের ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
তথ্যমতে, গ্লোবাল ইনস্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজির ঘটনাটি ২০২১ সালের ৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত সংঘটিত হয়েছে। বিষয়টি বিএসইসির নজরে আসলে ১৫ জুন ঢাকা স্টক স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) তদন্ত কমিটি গঠন করা নির্দেশ দেওয়া হয়। গ্লোবাল ইনস্যুরেন্সের শেয়ার লেনদেন সংক্রান্ত তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে ডিএসই এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করে।
তদন্ত প্রতিবেদনে, রোকসানা আমজাদ ও তার সহযোগীরা ওই সময়ে কারসাজির মাধ্যমে গ্লোবাল ইনস্যুরেন্সের শেয়ার লেনদেন করে মোট ১ কোটি ১৩ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯ টাকা অর্জিত মুনাফা তুলে নিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের শুনানিতে তলব করে বিএসইসি। শুনানি কার্যক্রমে অভিযুক্তদের বক্তব্য গ্রহণযোগ্য মনে না হওয়ায় কারসাজির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে বিএসইসি।
বিগত সরকারের আমলে শেয়ার কারসাজির অভিযোগে আমজাদ হোসেন ফকির, রোকসানা আমজাদ ও তার সহযোগীদের নাম উঠলেও কারও বিরুদ্ধে তেমন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পুনর্গঠিত বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশন তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিল।
বিএসইসির আদেশে বলা হয়, বিএসইসির শুনানিতে রোকসানা আমজাদ এবং তার সহযোগীদের বক্তব্য থেকে প্রতীয়মান হয় যে, উপস্থাপিত অভিযোগসমূহ সঠিক এবং উপযুক্ত কর্মকাণ্ডের ফলে পুঁজিবাজারের সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, যা পুঁজিবাজার উন্নয়নের পরিপন্থী। এ ক্ষেত্রে রোকসানা আমজাদ এবং তাঁর সহযোগীদের ব্যাখ্যা কমিশনের নিকট গ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়নি। যেহেতু রোকসানা আমজাদ এবং তার সহযোগীদের উপযুক্ত কর্মকাণ্ড সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অরডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ১৭ এর (সি) (৫) লঙ্ঘন করেছে, যা সিকিউরিটিজ আইনের পরিপন্থী।
আদেশে বলা হয়, রোকসানা আমজাদ এবং তার সহযোগীদের উপর্যুক্ত কর্মকাণ্ড সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অরডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ২২ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কমিশনের বিবেচনায়, সিকিউরিটিজ আইন ও বিধি-বিধান পরিপালনে আলোচ্য ব্যর্থতার জন্য, পুঁজিবাজারের শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা এবং জনস্বার্থে রোকসানা আমজাদ এবং তার সহযোগীদের জরিমানা করা প্রয়োজন ও সমীচীন। অতএব, কমিশন উল্লিখিত বিষয় বিবেচনাপূর্বক, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অরডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ২২ এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রোকসানা আমজাদ এবং তার সহযোগীদের ২৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড ধার্য করল। এ আদেশের জারি করার ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের অনুকূলে ইস্যুকৃত ব্যাংক ড্রাফট বা পে-অর্ডারের মাধ্যমে জমা প্রদান করতে হবে। অন্যথায় সিকিউরিটিজ আইন মোতাবেক পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তথ্য বলছে, গ্লোবাল ইনস্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজিতে রোকসানা আমজাদ ও তার সহযোগীরা পুঁজিবাজারের সদস্যভুক্ত ব্রোকারেজ হাউস বিডি সানলাইফ সিকিউরিটিজ, এনএলআই সিকিউরিটিজ এবং এনসিসিবি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস থেকে শেয়ার লেনদেন করেন। আমজাদ হোসেন ফকির এবং তার সহযোগী (রোকসানা আমজাদ) বিডি সানলাইফ সিকিউরিটিজ এবং এনএলআই সিকিউরিটিজে ৪টি বিও অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে গ্লোবাল ইনস্যুরেন্সের শেয়ার লেনদেন করেছেন। এর মধ্যে বিডি সানলাইফ সিকিউরিটিজে আমজাদ হোসেন ফকির ও রোকসানা আমজাদের জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট (ক্লায়েন্ট কোড-৩২০০১ ও বিও আইডি-১২০৫৬৭০০২৮৪০৯৪৭৬) রয়েছে। একই ব্রোকারেজ হাউসে আমজাদ হোসেন ফকিরের একক বিও অ্যাকাউন্ট (ক্লায়েন্ট কোড-৩২০০৬ ও বিও আইডি- ১২০৫৬৭০০২৩৪৯৩৪৯১) রয়েছে। এ ছাড়া বিডি সানলাইফ সিকিউরিটিজে রোকসানা আমজাদের একক বিও অ্যাকাউন্ট (ক্লায়েন্ট কোড-৪৩১৩ ও বিও আইডি-১২০৫৬৭০০৬২১৯৫৬৫৭) রয়েছে। আর এনএলআই সিকিউরিটিজে আমজাদ হোসেন ফকির এবং রোকসানা আমজাদের বিও অ্যাকাউন্ট (ক্লায়েন্ট কোড-০১৭৬১ ও বিও আইডি-১২০৫৭২০০২৮৪০৯৪) রয়েছে।
বিডি সানলাইফ সিকিউরিটিজ, এনএলআই সিকিউরিটিজ লিমিটেড এবং এনসিসিবি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের বিও অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আমজাদ হোসেন ফকির ও তাঁর সহযোগী (রোকসানা আমজাদ) ২০২১ সালের ৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত সময়ে গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সে ১৮ লাখ ৯৭ হাজার ৩৪০টি শেয়ার কিনেছেন। আর ওই সময়ের মধ্যে তাদের হাতে থাকা মোট ৪২ লাখ ৪০ হাজার ৩৫টি শেয়ার বিক্রি করেছেন। কারসাজির ওই সময়ের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ারের মোট লেনদেনের মধ্যে তাঁরা সম্মিলিতভাবে ২ দশমিক ৩৪ শতাংশ লেনদেন করেছেন। এ লেনদেনের মাধ্যমে কোম্পানিটির শেয়ার কেনাবেচা করে তারা ১ কোটি ১৩ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯ টাকা বা ৫৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ অর্জিত মুনাফা তুলে নিয়েছেন, যা সিকিউরিটিজ আইন পরিপন্থী নয়। আর ওই সময়ে চক্রটির অনর্জিত মুনাফা ছিল ২ কোটি ১৪ লাখ ৭০ হাজার ৩৫৩ টাকা।
সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অরডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ১৭-এ উল্লেখ রয়েছে, কোনো ব্যক্তি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো শেয়ার বিক্রি বা ক্রয় করতে প্ররোচিত, প্রত্যাখ্যান, প্রভাব, প্রতিরোধ বা কোনো উপায়ে তার সুবিধাকে প্রভাবিত বা পরিবর্তন করতে পারবে না।
অরডিন্যান্স ১৯৬৯ এর সেকশন ১৭ (ই) (৫)-এ উল্লেখ রয়েছে, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যেকোনো শেয়ারের একটি সিরিজ লেনদেন প্রভাবিত করে তাতে সক্রিয় ভূমিকা তৈরি করে অথবা অন্যের দ্বারা শেয়ারটি ক্রয়ে প্ররোচিত করার জন্য মূল্য বৃদ্ধি করা বা অন্যদের দ্বারা এটির বিক্রয়ে প্ররোচিত করা র জন্য মূল্য হ্রাস করা যাবে না।
কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, রোকসানা আমজাদ এবং তার সহযোগী (আমজাদ হোসেন ফকির) গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারগুলোতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে লেনদেনের একটি সিরিজ লেনদেন করে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অরডিন্যান্স ১৯৬৯ এর সেকশন ১৭ (ই) (৫) লঙ্ঘন করেছেন।
শুনানিতে রোকসানা আমজাদ ও আমজাদ হোসেন ফকিরের ব্যাখ্যা
এদিকে বিএসইসির শুনানিতে রোকসানা আমজাদ ও আমজাদ হোসেন ফকির দুজনই পুঁজিবাজারে ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে বিনিয়োগ রয়েছে বলে দাবি করেছেন। তাঁরা বলেন, খণ্ডকালীন বিনিয়োগকারী হিসেবে তাঁরা কমিশনের সমস্ত আইন, বিধি, প্রবিধান এবং নির্দেশনা মেনে বিনিয়োগ করেছেন। রোকসানা আমজাদের অ্যাকাউন্টটি স্বামী আমজাদ হোসেন ফকির পরিচালনা করেছেন। তাঁর একটি একক এবং ২টি যৌথ বিও অ্যাকাউন্ট রয়েছে। আর আমজাদ হোসেন ফকিরের ৪টি বিও অ্যাকাউন্ট (একক এবং যৌথ) রয়েছে। তাঁরা দুজনেই দুর্ভাগ্যবশত, কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেনে মোট রিয়েলাইজড গেইন (মুনাফা) কত হচ্ছিল তা বুঝতে পারেননি। এ জন্য ভবিষ্যতে, আরও সতর্ক থাকবেন এবং এ ধরনের ভুল আর পুনরাবৃত্তি হবে না বলে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অভিযুক্তদের বিষয়ে তদন্ত করে গ্লোবাল ইনস্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজির প্রমাণ পাওয়া গেছে। যে কারণে এনফোর্সমেন্ট বিভাগ তাদের আইন অনুযায়ী জরিমানা করেছে। পরবর্তীতে নিয়ম অনুযায়ী তাদের কাজ থেকে জরিমানা আদায় করা হবে।’
পুঁজিবাজারের নারী বিনিয়োগকারী রোকসানা আমজাদ ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে কারসাজির (সিরিজ ট্রেডিং) মাধ্যমে গ্লোবাল ইনস্যুরেন্সের শেয়ারের দাম বাড়িয়ে বিপুল পরিমাণ মুনাফা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ কাজে সহযোগীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তাঁর স্বামী অবসরপ্রাপ্ত সামরিক চিকিৎসক মো. আমজাদ হোসেন ফকির। তিনিও একজন শেয়ার ব্যবসায়ী।
সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করে কারসাজি ও প্রতারণার মাধ্যমে গ্লোবাল ইনস্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজি করার অপরাধ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় স্বামী-স্ত্রী এবং তাঁদের সহযোগীদের ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
তথ্যমতে, গ্লোবাল ইনস্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজির ঘটনাটি ২০২১ সালের ৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত সংঘটিত হয়েছে। বিষয়টি বিএসইসির নজরে আসলে ১৫ জুন ঢাকা স্টক স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) তদন্ত কমিটি গঠন করা নির্দেশ দেওয়া হয়। গ্লোবাল ইনস্যুরেন্সের শেয়ার লেনদেন সংক্রান্ত তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে ডিএসই এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করে।
তদন্ত প্রতিবেদনে, রোকসানা আমজাদ ও তার সহযোগীরা ওই সময়ে কারসাজির মাধ্যমে গ্লোবাল ইনস্যুরেন্সের শেয়ার লেনদেন করে মোট ১ কোটি ১৩ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯ টাকা অর্জিত মুনাফা তুলে নিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের শুনানিতে তলব করে বিএসইসি। শুনানি কার্যক্রমে অভিযুক্তদের বক্তব্য গ্রহণযোগ্য মনে না হওয়ায় কারসাজির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে বিএসইসি।
বিগত সরকারের আমলে শেয়ার কারসাজির অভিযোগে আমজাদ হোসেন ফকির, রোকসানা আমজাদ ও তার সহযোগীদের নাম উঠলেও কারও বিরুদ্ধে তেমন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পুনর্গঠিত বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশন তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিল।
বিএসইসির আদেশে বলা হয়, বিএসইসির শুনানিতে রোকসানা আমজাদ এবং তার সহযোগীদের বক্তব্য থেকে প্রতীয়মান হয় যে, উপস্থাপিত অভিযোগসমূহ সঠিক এবং উপযুক্ত কর্মকাণ্ডের ফলে পুঁজিবাজারের সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, যা পুঁজিবাজার উন্নয়নের পরিপন্থী। এ ক্ষেত্রে রোকসানা আমজাদ এবং তাঁর সহযোগীদের ব্যাখ্যা কমিশনের নিকট গ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়নি। যেহেতু রোকসানা আমজাদ এবং তার সহযোগীদের উপযুক্ত কর্মকাণ্ড সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অরডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ১৭ এর (সি) (৫) লঙ্ঘন করেছে, যা সিকিউরিটিজ আইনের পরিপন্থী।
আদেশে বলা হয়, রোকসানা আমজাদ এবং তার সহযোগীদের উপর্যুক্ত কর্মকাণ্ড সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অরডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ২২ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কমিশনের বিবেচনায়, সিকিউরিটিজ আইন ও বিধি-বিধান পরিপালনে আলোচ্য ব্যর্থতার জন্য, পুঁজিবাজারের শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা এবং জনস্বার্থে রোকসানা আমজাদ এবং তার সহযোগীদের জরিমানা করা প্রয়োজন ও সমীচীন। অতএব, কমিশন উল্লিখিত বিষয় বিবেচনাপূর্বক, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অরডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ২২ এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রোকসানা আমজাদ এবং তার সহযোগীদের ২৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড ধার্য করল। এ আদেশের জারি করার ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের অনুকূলে ইস্যুকৃত ব্যাংক ড্রাফট বা পে-অর্ডারের মাধ্যমে জমা প্রদান করতে হবে। অন্যথায় সিকিউরিটিজ আইন মোতাবেক পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তথ্য বলছে, গ্লোবাল ইনস্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজিতে রোকসানা আমজাদ ও তার সহযোগীরা পুঁজিবাজারের সদস্যভুক্ত ব্রোকারেজ হাউস বিডি সানলাইফ সিকিউরিটিজ, এনএলআই সিকিউরিটিজ এবং এনসিসিবি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস থেকে শেয়ার লেনদেন করেন। আমজাদ হোসেন ফকির এবং তার সহযোগী (রোকসানা আমজাদ) বিডি সানলাইফ সিকিউরিটিজ এবং এনএলআই সিকিউরিটিজে ৪টি বিও অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে গ্লোবাল ইনস্যুরেন্সের শেয়ার লেনদেন করেছেন। এর মধ্যে বিডি সানলাইফ সিকিউরিটিজে আমজাদ হোসেন ফকির ও রোকসানা আমজাদের জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট (ক্লায়েন্ট কোড-৩২০০১ ও বিও আইডি-১২০৫৬৭০০২৮৪০৯৪৭৬) রয়েছে। একই ব্রোকারেজ হাউসে আমজাদ হোসেন ফকিরের একক বিও অ্যাকাউন্ট (ক্লায়েন্ট কোড-৩২০০৬ ও বিও আইডি- ১২০৫৬৭০০২৩৪৯৩৪৯১) রয়েছে। এ ছাড়া বিডি সানলাইফ সিকিউরিটিজে রোকসানা আমজাদের একক বিও অ্যাকাউন্ট (ক্লায়েন্ট কোড-৪৩১৩ ও বিও আইডি-১২০৫৬৭০০৬২১৯৫৬৫৭) রয়েছে। আর এনএলআই সিকিউরিটিজে আমজাদ হোসেন ফকির এবং রোকসানা আমজাদের বিও অ্যাকাউন্ট (ক্লায়েন্ট কোড-০১৭৬১ ও বিও আইডি-১২০৫৭২০০২৮৪০৯৪) রয়েছে।
বিডি সানলাইফ সিকিউরিটিজ, এনএলআই সিকিউরিটিজ লিমিটেড এবং এনসিসিবি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের বিও অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আমজাদ হোসেন ফকির ও তাঁর সহযোগী (রোকসানা আমজাদ) ২০২১ সালের ৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত সময়ে গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সে ১৮ লাখ ৯৭ হাজার ৩৪০টি শেয়ার কিনেছেন। আর ওই সময়ের মধ্যে তাদের হাতে থাকা মোট ৪২ লাখ ৪০ হাজার ৩৫টি শেয়ার বিক্রি করেছেন। কারসাজির ওই সময়ের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ারের মোট লেনদেনের মধ্যে তাঁরা সম্মিলিতভাবে ২ দশমিক ৩৪ শতাংশ লেনদেন করেছেন। এ লেনদেনের মাধ্যমে কোম্পানিটির শেয়ার কেনাবেচা করে তারা ১ কোটি ১৩ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯ টাকা বা ৫৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ অর্জিত মুনাফা তুলে নিয়েছেন, যা সিকিউরিটিজ আইন পরিপন্থী নয়। আর ওই সময়ে চক্রটির অনর্জিত মুনাফা ছিল ২ কোটি ১৪ লাখ ৭০ হাজার ৩৫৩ টাকা।
সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অরডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ১৭-এ উল্লেখ রয়েছে, কোনো ব্যক্তি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো শেয়ার বিক্রি বা ক্রয় করতে প্ররোচিত, প্রত্যাখ্যান, প্রভাব, প্রতিরোধ বা কোনো উপায়ে তার সুবিধাকে প্রভাবিত বা পরিবর্তন করতে পারবে না।
অরডিন্যান্স ১৯৬৯ এর সেকশন ১৭ (ই) (৫)-এ উল্লেখ রয়েছে, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যেকোনো শেয়ারের একটি সিরিজ লেনদেন প্রভাবিত করে তাতে সক্রিয় ভূমিকা তৈরি করে অথবা অন্যের দ্বারা শেয়ারটি ক্রয়ে প্ররোচিত করার জন্য মূল্য বৃদ্ধি করা বা অন্যদের দ্বারা এটির বিক্রয়ে প্ররোচিত করা র জন্য মূল্য হ্রাস করা যাবে না।
কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, রোকসানা আমজাদ এবং তার সহযোগী (আমজাদ হোসেন ফকির) গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারগুলোতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে লেনদেনের একটি সিরিজ লেনদেন করে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অরডিন্যান্স ১৯৬৯ এর সেকশন ১৭ (ই) (৫) লঙ্ঘন করেছেন।
শুনানিতে রোকসানা আমজাদ ও আমজাদ হোসেন ফকিরের ব্যাখ্যা
এদিকে বিএসইসির শুনানিতে রোকসানা আমজাদ ও আমজাদ হোসেন ফকির দুজনই পুঁজিবাজারে ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে বিনিয়োগ রয়েছে বলে দাবি করেছেন। তাঁরা বলেন, খণ্ডকালীন বিনিয়োগকারী হিসেবে তাঁরা কমিশনের সমস্ত আইন, বিধি, প্রবিধান এবং নির্দেশনা মেনে বিনিয়োগ করেছেন। রোকসানা আমজাদের অ্যাকাউন্টটি স্বামী আমজাদ হোসেন ফকির পরিচালনা করেছেন। তাঁর একটি একক এবং ২টি যৌথ বিও অ্যাকাউন্ট রয়েছে। আর আমজাদ হোসেন ফকিরের ৪টি বিও অ্যাকাউন্ট (একক এবং যৌথ) রয়েছে। তাঁরা দুজনেই দুর্ভাগ্যবশত, কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেনে মোট রিয়েলাইজড গেইন (মুনাফা) কত হচ্ছিল তা বুঝতে পারেননি। এ জন্য ভবিষ্যতে, আরও সতর্ক থাকবেন এবং এ ধরনের ভুল আর পুনরাবৃত্তি হবে না বলে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অভিযুক্তদের বিষয়ে তদন্ত করে গ্লোবাল ইনস্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজির প্রমাণ পাওয়া গেছে। যে কারণে এনফোর্সমেন্ট বিভাগ তাদের আইন অনুযায়ী জরিমানা করেছে। পরবর্তীতে নিয়ম অনুযায়ী তাদের কাজ থেকে জরিমানা আদায় করা হবে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমের আওতায় তারল্য ঘাটটি মেটাতে দুর্বল সাতটি ব্যাংককে ৬ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা তারল্য সহায়তা দিয়েছে সবল ৯টি ব্যাংক। তবে এসব দুর্বল ব্যাংক থেকে চাওয়া হয়েছিল ১১ হাজার ১০০ কোটি টাকা। গতকাল বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আ
৭ ঘণ্টা আগেদেশে চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভেজাল, নকল, মানহীন, অনুমোদনহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ প্রসাধনী সামগ্রী। বাংলাদেশ যেন বিদেশি এসব পণ্যের ডাম্পিং স্টেশন। প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়ায় দিন দিন এসব পণ্যে সয়লাব হচ্ছে বাজার। বিদেশ থেকে চোরাই পথে বিপুল পরিমাণে নিম্নমানের ভেজাল প্রসাধনী ঢুকছে দেশে।
১০ ঘণ্টা আগেরাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী নির্মাণ, আবাসন, বিদ্যুৎ ও সংশ্লিষ্ট সরঞ্জামকেন্দ্রিক দেশের সবচেয়ে বড় ছয়টি পৃথক আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী। চলবে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত
১২ ঘণ্টা আগেব্রোকারেজ হাউস সাবভ্যালি সিকিউরিটিজের সব ধরনের কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। মূলধন ঋণাত্মক ও বিনিয়োগের বিপরীতে দেওয়া ঋণের অনুপাত অনেক বেশি হওয়ায় এই নির্দেশ দিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ।
১২ ঘণ্টা আগে