স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্র পরিচালনার চালিকা শক্তি হিসেবে চারটি মৌলনীতি গ্রহণ করেছিলেন। এগুলো হলো: জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র। আজ ৫২ বছর পর দেখছি, এই মৌলনীতিগুলোর প্রতিটির সূচক এত নিচে নেমে গেছে যে, বলা চলে রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলনীতি বলে এখন আর কিছু নেই। জাতীয়তা দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে; বাঙালি ও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ।
ধর্মনিরপেক্ষতার জায়গা দখল করেছে অন্ধ সাম্প্রদায়িকতা, এমনকি মৌলবাদও। সমাজতন্ত্রের মূল যে কথা, বৈষম্যহীন সমাজ, সেই বৈষম্য না কমে বেড়েছে। যা-ই হোক, আমাদের আজকের প্রসঙ্গ বাকি থাকা গণতন্ত্র।
স্বাধীনতাযুদ্ধে বিজয়ী হলে অথবা কোনো বিপ্লব সংঘটিত হওয়ার পর সমাজের গুণগত পরিবর্তন আনার লক্ষ্য সামনে থাকলে প্রথম কিছুদিন স্বাধীনতাযুদ্ধ অথবা বিপ্লবের মূল নেতাকে শক্ত হাতে হাল ধরতে হয়। এই চিন্তার পক্ষে সমর্থন পেতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়ার দরকার নেই, কারণ অস্ত্র ব্যবহৃত হয় যে আন্দোলনে বা বিপ্লবে, সেই আন্দোলন বা বিপ্লব শেষে রাষ্ট্রে ইতিবাচক শক্তির পাশাপাশি নেতিবাচক অপশক্তিরও জন্ম হয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছিল। যুবসমাজের ব্যাপক অংশের কাছে অস্ত্র ছিল এবং মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের সংখ্যাও কম ছিল না।
সেই অস্ত্র এবং মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীরা যাতে স্বাধীনতার চেতনাকে নষ্ট করতে না পারে, সে জন্য দরকার ছিল একটা বিপ্লবী সরকারের মাধ্যমে অন্তত দুই বছর দেশ শাসন করা। কিন্তু বঙ্গবন্ধু সেই পথে না গিয়ে তাঁর আজন্ম লালিত গণতন্ত্রের দর্শন দ্বারা প্রভাবিত হয়ে প্রথমেই গণতান্ত্রিক সমাজ গড়তে চাইলেন। মুক্তিযুদ্ধটাকে প্রলম্বিত করে দেশ থেকে অপশক্তি নির্মূল করার যে প্রয়োজন ছিল, তা না করে গণতন্ত্রচর্চার নীতি গ্রহণ করলেন। ফলে যা হওয়ার তা-ই হয়েছে। গণতন্ত্রের সুযোগ নিয়ে অস্ত্রধারী অপশক্তি ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীরা দেশের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত করেছিল।
বঙ্গবন্ধু ১৯৭৫ সালে বাকশাল পদ্ধতির সূচনা না করে ’৭২ থেকে ’৭৫ পর্যন্ত এ ধরনের শাসন চালু রেখে গণতন্ত্রে ফিরে যেতেন যদি, তাহলে গণতন্ত্রটা ফলপ্রসূ ও টেকসই হওয়ার সম্ভাবনা থাকত প্রচুর; যা হোক।
লেখার পরিসর কম, তাই কথাগুলো সংক্ষিপ্তাকারে বলি। আমি প্রায়ই একটা কথা বলি, গণতন্ত্রটা বড় বেশি গণতান্ত্রিক! আসলে শুধু শাসনব্যবস্থাই গণতান্ত্রিক হলে চলে না, এই রাষ্ট্রনৈতিক দর্শনের ব্যাপ্তি অনেক বড়। পরিবারসহ সমাজের প্রতিটি স্তরে ও ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ না থাকলে সেই সমাজ প্রকৃত গণতান্ত্রিক নয়। কিন্তু দুঃখজনক হলো, বর্তমান বাংলাদেশে সমাজের সর্বস্তর তো নয়ই, এমনকি শাসনব্যবস্থায়ও গণতন্ত্রের প্রতিমা চিত্রটি খুবই অসুন্দর।
এই দায় দেশের সব রাজনৈতিক দল তো বটেই, দেশের শিক্ষিত তথা সুশীল সমাজেরও। জনবহুল দেশে যদি সম্পদ সীমিত হয়, তাহলে যা ঘটার কথা, তা-ই ঘটছে এখানে। রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতা ব্যবহার করে সম্পদ আহরণ করতে চাইছে আর সুশীল সমাজ সেই সম্পদের ক্ষুদ্রাংশ ভাগে নিতে তৎপর রয়েছে।
সবচেয়ে বিপদের দিকটি হলো, পার্সেন্টেজে অতি অল্প ব্যতিক্রম বাদ দিলে পুরো জাতি দুটি পরস্পরবিরোধী শিবিরে বিভক্ত হয়ে যাওয়ার ফলে দুই বড় রাজনৈতিক দল নেতা-কর্মীর অতিরিক্ত সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশকে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে ব্যবহার করতে পারছে। বিভক্ত শিবিরের দুপক্ষই কতগুলো হালকা চিন্তা দ্বারা আচ্ছন্ন এবং তাই রাজনীতিটা সংঘাতপূর্ণও হয়ে উঠেছে। প্রকৃত প্রস্তাবে, তত্ত্বাবধায়ক নাকি দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হওয়া উচিত, এই বিতর্কের মীমাংসা হলেও দেশ যে অবস্থায় চলে গেছে, তাতে গণতন্ত্রচর্চার ক্ষেত্র তৈরি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলেই প্রতীয়মান হয়।
আমি আরেকটি কথা বলে থাকি, এ দেশে রাজনৈতিক সংকটের চেয়ে সাংস্কৃতিক সংকটই বেশি গভীর এবং অনেক রাজনৈতিক সংকটের জন্ম হয় সংস্কৃতির সংকটের গর্ভ থেকে। সাংস্কৃতিক সংকট এখন এত তীব্র যে গণতন্ত্রের ঠিকানা যেখানেই হোক না কেন, সেখানে পৌঁছাতে দৌড় লাগালে দেখা যাবে চারদিকেই পাহারাদার।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে কথা, একটা সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নাহয় সম্পন্ন করা গেল, তাতে কি গণতন্ত্র বগল দাবাবে? এ তো রোমান্টিক এক বাসররাতের পরদিন বিয়ে ভেঙে যাওয়ার মতো ঘটনা হবে।
তাহলে এখন কী করা? তানজানিয়ার স্বর্গত প্রেসিডেন্ট জুলিয়াস নায়ারের একটি উক্তি দিয়ে শেষ করি। তিনি বলেছিলেন, ‘সোশ্যালিজম অর ডেমোক্রেসি ইজ অ্যান অ্যাটিটিউড অব মাইন্ড।’ অর্থাৎ সমাজতন্ত্র বলি আর গণতন্ত্র, এটা দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার। আমরা কথা বলছি গণতন্ত্র নিয়ে, তাই সমাজতন্ত্র বাদ। নায়ারের কথা মোতাবেক, প্রকৃত গণতন্ত্র পেতে হলে তাই রাজনৈতিক নেতৃত্ব শুধু নয়, সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিটা পাল্টাতে হবে আগে। সেটা কীভাবে সম্ভব, আমি জানি না।
এ তো খুবই সাধারণ কথা, একটা সাম্প্রদায়িক সমাজ কখনো গণতান্ত্রিক হতে পারে না। এই একটা পয়েন্টেই তো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন মানে সেটা গণতন্ত্র হবে না, সেটা হবে সোনার পাথর বাটি। কারণ সাম্প্রদায়িকতা কখনোই দূর হবে না এ দেশ থেকে। নজরুল লিখেছিলেন, ‘এ যৌবন জলতরঙ্গ রুধিবি কী দিয়া বালির বাঁধ?’ ‘যৌবন জলতরঙ্গ’র জায়গায় ‘সাম্প্রদায়িকতা’ বসিয়ে বাক্যটি আবার পড়ুন।
লেখক : সাংবাদিক
স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্র পরিচালনার চালিকা শক্তি হিসেবে চারটি মৌলনীতি গ্রহণ করেছিলেন। এগুলো হলো: জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র। আজ ৫২ বছর পর দেখছি, এই মৌলনীতিগুলোর প্রতিটির সূচক এত নিচে নেমে গেছে যে, বলা চলে রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলনীতি বলে এখন আর কিছু নেই। জাতীয়তা দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে; বাঙালি ও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ।
ধর্মনিরপেক্ষতার জায়গা দখল করেছে অন্ধ সাম্প্রদায়িকতা, এমনকি মৌলবাদও। সমাজতন্ত্রের মূল যে কথা, বৈষম্যহীন সমাজ, সেই বৈষম্য না কমে বেড়েছে। যা-ই হোক, আমাদের আজকের প্রসঙ্গ বাকি থাকা গণতন্ত্র।
স্বাধীনতাযুদ্ধে বিজয়ী হলে অথবা কোনো বিপ্লব সংঘটিত হওয়ার পর সমাজের গুণগত পরিবর্তন আনার লক্ষ্য সামনে থাকলে প্রথম কিছুদিন স্বাধীনতাযুদ্ধ অথবা বিপ্লবের মূল নেতাকে শক্ত হাতে হাল ধরতে হয়। এই চিন্তার পক্ষে সমর্থন পেতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়ার দরকার নেই, কারণ অস্ত্র ব্যবহৃত হয় যে আন্দোলনে বা বিপ্লবে, সেই আন্দোলন বা বিপ্লব শেষে রাষ্ট্রে ইতিবাচক শক্তির পাশাপাশি নেতিবাচক অপশক্তিরও জন্ম হয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছিল। যুবসমাজের ব্যাপক অংশের কাছে অস্ত্র ছিল এবং মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের সংখ্যাও কম ছিল না।
সেই অস্ত্র এবং মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীরা যাতে স্বাধীনতার চেতনাকে নষ্ট করতে না পারে, সে জন্য দরকার ছিল একটা বিপ্লবী সরকারের মাধ্যমে অন্তত দুই বছর দেশ শাসন করা। কিন্তু বঙ্গবন্ধু সেই পথে না গিয়ে তাঁর আজন্ম লালিত গণতন্ত্রের দর্শন দ্বারা প্রভাবিত হয়ে প্রথমেই গণতান্ত্রিক সমাজ গড়তে চাইলেন। মুক্তিযুদ্ধটাকে প্রলম্বিত করে দেশ থেকে অপশক্তি নির্মূল করার যে প্রয়োজন ছিল, তা না করে গণতন্ত্রচর্চার নীতি গ্রহণ করলেন। ফলে যা হওয়ার তা-ই হয়েছে। গণতন্ত্রের সুযোগ নিয়ে অস্ত্রধারী অপশক্তি ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীরা দেশের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত করেছিল।
বঙ্গবন্ধু ১৯৭৫ সালে বাকশাল পদ্ধতির সূচনা না করে ’৭২ থেকে ’৭৫ পর্যন্ত এ ধরনের শাসন চালু রেখে গণতন্ত্রে ফিরে যেতেন যদি, তাহলে গণতন্ত্রটা ফলপ্রসূ ও টেকসই হওয়ার সম্ভাবনা থাকত প্রচুর; যা হোক।
লেখার পরিসর কম, তাই কথাগুলো সংক্ষিপ্তাকারে বলি। আমি প্রায়ই একটা কথা বলি, গণতন্ত্রটা বড় বেশি গণতান্ত্রিক! আসলে শুধু শাসনব্যবস্থাই গণতান্ত্রিক হলে চলে না, এই রাষ্ট্রনৈতিক দর্শনের ব্যাপ্তি অনেক বড়। পরিবারসহ সমাজের প্রতিটি স্তরে ও ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ না থাকলে সেই সমাজ প্রকৃত গণতান্ত্রিক নয়। কিন্তু দুঃখজনক হলো, বর্তমান বাংলাদেশে সমাজের সর্বস্তর তো নয়ই, এমনকি শাসনব্যবস্থায়ও গণতন্ত্রের প্রতিমা চিত্রটি খুবই অসুন্দর।
এই দায় দেশের সব রাজনৈতিক দল তো বটেই, দেশের শিক্ষিত তথা সুশীল সমাজেরও। জনবহুল দেশে যদি সম্পদ সীমিত হয়, তাহলে যা ঘটার কথা, তা-ই ঘটছে এখানে। রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতা ব্যবহার করে সম্পদ আহরণ করতে চাইছে আর সুশীল সমাজ সেই সম্পদের ক্ষুদ্রাংশ ভাগে নিতে তৎপর রয়েছে।
সবচেয়ে বিপদের দিকটি হলো, পার্সেন্টেজে অতি অল্প ব্যতিক্রম বাদ দিলে পুরো জাতি দুটি পরস্পরবিরোধী শিবিরে বিভক্ত হয়ে যাওয়ার ফলে দুই বড় রাজনৈতিক দল নেতা-কর্মীর অতিরিক্ত সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশকে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে ব্যবহার করতে পারছে। বিভক্ত শিবিরের দুপক্ষই কতগুলো হালকা চিন্তা দ্বারা আচ্ছন্ন এবং তাই রাজনীতিটা সংঘাতপূর্ণও হয়ে উঠেছে। প্রকৃত প্রস্তাবে, তত্ত্বাবধায়ক নাকি দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হওয়া উচিত, এই বিতর্কের মীমাংসা হলেও দেশ যে অবস্থায় চলে গেছে, তাতে গণতন্ত্রচর্চার ক্ষেত্র তৈরি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলেই প্রতীয়মান হয়।
আমি আরেকটি কথা বলে থাকি, এ দেশে রাজনৈতিক সংকটের চেয়ে সাংস্কৃতিক সংকটই বেশি গভীর এবং অনেক রাজনৈতিক সংকটের জন্ম হয় সংস্কৃতির সংকটের গর্ভ থেকে। সাংস্কৃতিক সংকট এখন এত তীব্র যে গণতন্ত্রের ঠিকানা যেখানেই হোক না কেন, সেখানে পৌঁছাতে দৌড় লাগালে দেখা যাবে চারদিকেই পাহারাদার।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে কথা, একটা সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নাহয় সম্পন্ন করা গেল, তাতে কি গণতন্ত্র বগল দাবাবে? এ তো রোমান্টিক এক বাসররাতের পরদিন বিয়ে ভেঙে যাওয়ার মতো ঘটনা হবে।
তাহলে এখন কী করা? তানজানিয়ার স্বর্গত প্রেসিডেন্ট জুলিয়াস নায়ারের একটি উক্তি দিয়ে শেষ করি। তিনি বলেছিলেন, ‘সোশ্যালিজম অর ডেমোক্রেসি ইজ অ্যান অ্যাটিটিউড অব মাইন্ড।’ অর্থাৎ সমাজতন্ত্র বলি আর গণতন্ত্র, এটা দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার। আমরা কথা বলছি গণতন্ত্র নিয়ে, তাই সমাজতন্ত্র বাদ। নায়ারের কথা মোতাবেক, প্রকৃত গণতন্ত্র পেতে হলে তাই রাজনৈতিক নেতৃত্ব শুধু নয়, সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিটা পাল্টাতে হবে আগে। সেটা কীভাবে সম্ভব, আমি জানি না।
এ তো খুবই সাধারণ কথা, একটা সাম্প্রদায়িক সমাজ কখনো গণতান্ত্রিক হতে পারে না। এই একটা পয়েন্টেই তো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন মানে সেটা গণতন্ত্র হবে না, সেটা হবে সোনার পাথর বাটি। কারণ সাম্প্রদায়িকতা কখনোই দূর হবে না এ দেশ থেকে। নজরুল লিখেছিলেন, ‘এ যৌবন জলতরঙ্গ রুধিবি কী দিয়া বালির বাঁধ?’ ‘যৌবন জলতরঙ্গ’র জায়গায় ‘সাম্প্রদায়িকতা’ বসিয়ে বাক্যটি আবার পড়ুন।
লেখক : সাংবাদিক
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে লন্ডন এবং দিল্লি হয়ে ঢাকায় ফিরলেন। সেদিন অপরাহ্ণে রেসকোর্সে অলিখিত স্বতঃস্ফূর্ত ভাষণ দিয়েছিলেন। যে ভাষণটি আমি শুনেছিলাম—১৭ মিনিটের। ভাষণে একটি জায়গায় তিনি বলেছিলেন, একটা কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে,
২৬ মার্চ ২০২৪১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানে যে চার রাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করা হয়েছিল তার একটি সমাজতন্ত্র। সমাজতন্ত্র মানে বৈষম্যের অবসান। সমাজতন্ত্র মানে ন্যায্যতা। সমাজতন্ত্র মানে সবার শিক্ষা, চিকিৎসা, মাথাগোঁজার ঠাঁই, কাজের সুযোগ। সমাজতন্ত্র মানে যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ, প্রয়োজন অনুয
২৬ মার্চ ২০২৪বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা যেতে পারে, রাষ্ট্র হিসেবে নবীন, কিন্তু এর সভ্যতা সুপ্রাচীন। নদীবেষ্টিত গাঙেয় উপত্যকায় পলিবাহিত উর্বর ভূমি যেমন উপচে পড়া শস্যসম্ভারে জীবনকে সমৃদ্ধ করেছে, তেমনি নদীর ভাঙনের খেলায় রাতারাতি বিলুপ্ত হয়েছে বহু জনপদ। এরপরও সভ্যতার নানা চিহ্ন এখানে খুঁজে পাওয়া যায় এবং বাঙালিত্বের বৈশিষ
২৬ মার্চ ২০২৪তত্ত্বগতভাবে সেক্যুলারিজমের ধারণা কয়েক শতাব্দী ধরে পাশ্চাত্যে এবং তারপরে প্রাচ্যে বিকাশ লাভ করেছে। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়া উপমহাদেশে, বিশেষ করে বাংলাদেশে বাস্তব ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় নীতি হিসেবে সেক্যুলারিজমের স্বীকৃতি বঙ্গবন্ধুরই অবদান। শেখ মুজিব বাস্তব ঘটনাবলি দেখে উপলব্ধি করেছিলেন, সাম্প্রদায়িকতা, জাতিব
১৭ মার্চ ২০২৪