সানজিদা সামরিন, ঢাকা
লিখতে বসতেই কেন যেন মনে পড়ছে ছোটবেলার ‘ফার্স্ট ডে অ্যাট স্কুল’ রচনার কথা। গৎবাঁধা মুখস্থ সেই রচনা। সবচেয়ে সাহসী ছেলেটা বা মেয়েটাকেও লিখতে হতো–‘স্কুলের প্রথম দিন তার বুক দুরুদুরু কাঁপছিল।’ তবে হ্যাঁ, একসঙ্গে নতুন কোনো কিছু শুরু করার সময় বুক একটু দুরুদুরু করেই বৈকি…। সাংবাদিকতা শুরু করেছি আজ থেকে প্রায় আট বছর আগে। অনলাইন ও প্রিন্ট দুই মাধ্যমেই কাজ করেছি। কিন্তু কর্মজীবনে প্রথম যে পত্রিকার জন্মলগ্ন থেকে সংযুক্ত হয়েছি, তার নাম ‘আজকের পত্রিকা’। গোটা এক বছরে এক ঝুড়ি কথা জমেছে। না বলে উপায় কী…।
আমার সংযুক্তি
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের কোনো এক দিন আলী আজম ভাই জানালেন, ‘একটা নতুন প্রজেক্ট শুরু হতে যাচ্ছে।’ এর পর তিনি লাইফস্টাইল বিভাগে কাজ করার বিষয়ে জানালেন। আলী আজম ভাই আজকের পত্রিকার যুগ্ম বার্তা সম্পাদক। এর আগে আরেকটি দৈনিক পত্রিকায় আমরা দুজন ভিন্ন দুটি বিভাগে কাজ করেছি, কিন্তু সেভাবে কথা হয়নি কখনো। একটু ভেবেই আমি এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলাম। আজম ভাই একদিন আজকের পত্রিকার ক্যাম্প অফিসে এসে ইন্টারভিউ দিয়ে যেতে বললেন। গেলাম। আমাকে একটি ঘরে বসিয়ে রেখে আজম ভাই যাঁকে নিয়ে ফিরলেন তাঁকে দেখে আরও চমকে উঠলাম, ‘নেলসন ভাই’! আজম ভাই আর আমি যে প্রতিষ্ঠানে ছিলাম, সেখানে নেলসন ভাইকে কিছুদিন পেয়েছি। তবে বিভাগ আলাদা বলে তাঁর সঙ্গেও একটি শব্দও আদান-প্রদান হয়নি আগে। যাই হোক, সেদিন কথা হলো। আমার চাওয়া ছিল, ‘কাজের চাপ নিতে কোনো অসুবিধে নেই। কিন্তু মানসিকভাবে ভালো থাকতে চাই। হেসে খেলে কাজ করতে চাই।’ আজম ভাই ও নেলসন ভাই আশ্বাস দিলেন, ‘এখানে ভালো পরিবেশ পাবেন। নিজের বিভাগ ছাড়াও অন্যান্য আরও অনেক পাতা বা অনলাইনে স্পেস আছে স্বাধীনভাবে লেখার।’ খুশি হয়ে গেলাম। এর পরের দিন অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার নিয়ে বাড়ি ফিরলাম।
প্রথম সেদিন
২০২১ সালের ১ মার্চ অফিশিয়ালি আমরা জয়েন করি। অফিসের নিচে পৌঁছে আজম ভাইকে ফোন দিলাম। তিনি বললেন, ‘চতুর্থতলায় সবাই আছি। লিফটের তিন-এ চলে আসেন।’ আনুষ্ঠানিকতা ও পরিচয়পর্ব কাটল বিকেল অবধি। জানলাম, আনিকা জীনাত, রিক্তা রিচি, মন্টি বৈষ্ণব ও দিতি আহমেদও লাইফস্টাইল টিমে রয়েছেন। প্রাথমিকভাবে কাজের শুরুটা এর পরদিন থেকেই হবে।
নানা রঙের দিনগুলি
শুরুর কিছুদিন কোনো বিভাগেরই নির্ধারিত ডেস্ক ছিল না। যখন গিয়ে যেখানে জায়গা পেতাম, বসে পড়তাম। তখনো জানি না লাইফস্টাইল বিভাগে লিড কে দেবেন। রোজই একটি করে স্টোরি তৈরি করে আজম ভাই আর নেলসন ভাইয়ের মেইলে পাঠিয়ে বাড়ি যাই। তখন ধীরে ধীরে জানতে পারি সহকর্মীদের একে অপরকে। কে কোন ধরনের কাজ করতে ভালোবাসে—সবকিছু। কাজ-আড্ডা সবই চলে। একটা উপলব্ধি হয়েছে সে সময়, এখানে সিনিয়র যাঁরা আছেন, তাঁরা ‘লিডার’, ‘বস’ নন।
মার্চ মাসের অর্ধেক কেটে গেলে রঞ্জু ভাই যোগ দেন; রঞ্জু চৌধুরী। তাঁর লিডে আমরা কাজ শুরু করি। ফ্যাশন, বিউটি, ফুড—এই তিনটি সেগমেন্ট ভাগ করে দেন লাইফস্টাইলে আমরা যে কজন আছি তাঁদের মধ্যে। এর বাইরে মিলেমিশে করার আরও কাজ আছে। কাজ শুরু করি। প্রথম দিকে ডামি পাতা বানাতেন গ্র্যাফিক্সের জুলিও আপা। এর আগে ডামি তৈরি ও পেজ প্ল্যানিংয়ের একটা অভিজ্ঞতা ছিল আমার। একটা প্ল্যান জমা দিই রঞ্জু ভাইকে। সেটা ধরে একটু একটু করে এগোনোর কথা বলেন তিনি। সঙ্গে আরও সংযোজন ছিল। সে সময় ইন্টারনাল সিস্টেম বা ডেটা সেন্টার চালু হয়নি। ফলে আমরা কাজ তৈরির পর ডেটা পেনড্রাইভে করে গ্রাফিক্সে নিয়ে যেতাম। জুলিও আপা পাতা বানাতেন। প্রথমে লাইফস্টাইল পাতার নাম রাখা হয় ‘আজকের জীবনধারা’। পরে সেটা পাল্টে আজকের চালচলন। এরপর ফাইনালি দাঁড়ায় ‘আজকের জীবন’ নামে। আজকের পত্রিকার তিন নম্বর পাতা এটি। প্রথম পেজ ওল্টালেই একটা ঝলমলে পাতা। মনটাই ভালো হয়ে যায়।
এক গল্পের জাদুকরের আগমন
খোঁজ খবর পাচ্ছিলাম তিনি এই যাত্রায় সঙ্গী হবেন। গল্প শুনেছি, তবে দেখিনি সরাসরি। যখন দেখলাম; মনে হলো উচ্ছল। এ মানুষটি যেন বৃষ্টির মতো ঝরেন, আর অমনি সবুজাভ লতাগুলো বেড়ে ওঠে অনায়াসে। বলছি, জাহীদ রেজা নূরের কথা। কাজের এপাশ-ওপাশ ঘর কাঁপিয়ে দুষ্টুমিতেও মেতে ওঠেন বড়। বড্ড গুছিয়ে কথা বলেন। মনে হয়, কবিতা বলছেন। কী শুদ্ধ উচ্চারণ। জাহীদ ভাইয়ের সঙ্গে ভেতরে-ভেতরে প্ল্যান করছিলাম, ‘শিশুদের জন্য কিছু না কিছু করতেই হবে।’ একটা লিখিত প্ল্যান দাঁড় করানো হয়। সে অনুযায়ী কাজ চলছে এখনো। আর সবকিছুর বাইরে যা বলার–জাহীদ রেজা নূর—এমন একজন যাকে আশ্রয় করা যায়। মন গলিয়ে বহুক্ষণ কথা বলা যায়। মানুষটাই এমন, যাঁকে আমাদের ঘর মনে হয়। মাঝে মাঝে মন খারাপ হলে, ক্লান্ত লাগলে জাহীদ ভাইয়ের সামনের চেয়ারে বসে বলি, ‘ভাইয়া একটা গল্প বলেন।’ জাহীদ ভাই গল্প শোনান, ‘সনকাকে কী করে সেই ভূতের ছানাটা ছোট্ট রবীন্দ্রনাথের বাড়ি নিয়ে যায়!’
এ কুলম্যান ও তাঁর বাহিনী
এবার মূল যুদ্ধের প্রস্তুতি। লাইফস্টাইল পাতার লিডিংয়ে যোগ দিলেন রজত কান্তি রায়। প্রথম দিকে মনে হতো, ‘উফ রজতদা কি অনেক গম্ভীর; একটু হলেই কি ঝাড়ি দেবেন?’ রোজ কাজ শেষে বিদায় নেওয়ার সময় মন্টি দি আর রিক্তা আয়রন লেডির মতো শক্ত হয়ে বসে থাকতেন দাদার সামনে। আর দাদা পাতার যোগ-বিয়োগ নিয়ে চেয়ারে হেলান দিয়ে নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছেন। এই দৃশ্য দূর থেকে দেখে হাসতাম আনিকা আর আমি। ধীরে ধীরে বোঝা গেল, রজতদা মোটেও এমন নন, যেমনটা ভেবেছিলাম। বরং কাজের বিষয়ে টিমের সদস্যদের মতামত নিয়েই পরিকল্পনা করতে পছন্দ করেন। এভাবেই আমরা রোজকার পাতা ও প্রতিটি বিশেষ সংখ্যা নিয়ে এগিয়েছি।
আজকের জীবন পাতায় শিশুদের ছোট্ট একটা স্পেস আছে। এই জায়গাটায় শিশুতোষ বইয়ের পরিচিতি থাকবে—এটা আগেই ঠিক ছিল। রজতদা এখানে শিশুর উপযোগী অ্যাপ যোগ করেন। এর পর আমি ক্র্যাফট, ফুড আর্ট, খেলা সেগমেন্টগুলো জুড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিলে তিনি সাদরে গ্রহণ করেন। মোটকথা বিভাগীয় প্রধান বলে কখনো নিজের চারপাশে বারান্দা জুড়ে দেননি তিনি। কাজের যেকোনো বিষয়ে যেকোনো সময়েই কথা বলতে পেরেছি। ফলে তাঁকে ‘কুলম্যান’ না বলে উপায় কী!
অপেক্ষার পালা ফুরোল
প্রায় সাড়ে তিন মাসের প্রস্তুতি শেষে পত্রিকা প্রকাশের তারিখ ঘোষণা হলো। উফ, কি যে এক উত্তেজনা তা বলে বোঝানোর মতো না। সবচেয়ে ভালো পাতা হতে হবে শুরুর দিন। তত দিনে পাতার ক্যারেক্টার দাঁড়িয়ে গেছে। এবার শুধু ছক্কা তোলার পালা। পত্রিকা প্রকাশের পাঁচ দিন আগে ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বিছানায় পড়লাম। জ্বর কমলই না। ২৭ জুন, ২০২১-এ বিছানায় শুয়ে শুয়েই দেখলাম প্রকাশিত আজকের পত্রিকার প্রথম দিনের পাতা। এদিন অফিস যাওয়ার জন্য যে শাড়িটা পরব বলে ভেবেছিলাম, তা আলমারিতেই বন্দী রইল। আক্ষেপের কথা লিখে হোয়াটসঅ্যাপ করলাম জাহীদ ভাইকে। ফিরতি মেসেজে তিনি বললেন, ‘সুস্থ হয়ে তবেই ফিরিস, জীবন অনেক বড় ব্যাপার। আজ তোর লেখা পেস্টিং হচ্ছে। ফিরে এসে আবার লিখবি।’ আমি জানলাম পরদিন আমার লেখা প্রকাশ পাবে। জীবনে অনেক লিড স্টোরি করেছি। কিন্তু এমন একটা অনুভূতি হলো, যেন জীবনে প্রথম বুঝি নিজের লেখা প্রকাশের আনন্দ পাচ্ছি, আর কখনো বুঝি লিখিইনি! আসলে একটি পত্রিকার জন্ম হতে দেখা খুবই আনন্দের বিষয়। এত এত ভাবনা, পরিকল্পনা, এত এত মানুষের পরিশ্রম, সময়, প্রচেষ্টার ফল। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।
যোজন-বিয়োজন
মোট সাতজন সদস্যের লাইফস্টাইল বিভাগ থেকে মন্টি বৈষ্ণব দিদিকে অনলাইন বিভাগে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়। নারী ও শিশু নিয়ে তাঁর কাজ করার অভিজ্ঞতা ও কর্মদক্ষতার কারণে অনলাইনে তাঁকে প্রয়োজন পড়ে। যদিও একই অফিসেই থাকব সবাই, তবুও মনে হচ্ছিল টিম থেকে বড় বোনটা চলে যাচ্ছে, অন্যরকম শূন্যতাবোধ হলো আমাদের। রজতদা, জাহীদ ভাই, নেলসন ভাই প্রত্যেকেই আমাদের আন্তঃসম্পর্কের এই অনুভূতিগুলো বুঝলেন। তবে দিন শেষে কাজের জায়গায় নিজের সেরা কাজটিই দিতে হয়। আর সেদিক থেকে এখনো আজকের জীবন পাতার স্বাস্থ্য সেগমেন্টে লেখা সংগ্রহের কিছু কাজ মন্টি দি করে যাচ্ছেন।
এদিকে আমাদের বিভাগ থেকে আমরা চেষ্টা করি সময় সুযোগ বুঝে অনলাইনকে একটু হলেও এগিয়ে রাখার। যে যেই বিভাগেই থাকি না কেন, আজকের পত্রিকা তো আমাদেরই। আগে জুলিও আপা পাতা পেস্টিংয়ের কাজটি করতেন। তিনি এখন অন্য বিভাগে পাতা তৈরির কাজ নিয়ে ব্যস্ত। তাঁর পরিবর্তে আমাদের সঙ্গে যোগ দেন মোশারফ ভাই। তাঁকে আমরা ব্রো বলে ডাকি! এরই মধ্যে রঞ্জু ভাই আমাদের ছেড়ে বিদায় নেন। তাঁর অবদান কম নয়। গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ ও ছবির স্টক তিনি রেখে গেছেন। প্রায় তিন মাস হলো আনিকা জীনাতও আমাদের সঙ্গে নেই। কাজ ও যাতায়াতের সুবিধার্থে অন্য একটি হাউসে যোগ দিয়েছেন সম্প্রতি। আজকের জীবনের গেজেট ও প্রযুক্তি বিষয়ক লেখাগুলো তিনি লিখতেন। এখন তাঁর শূন্যস্থান পূরণ করেছেন অলকানন্দা রায়। আনিকা কাজ করতে করতে গান শুনতেন। আর এখন ওই চেয়ারে বসে অলকানন্দা কাজ করতে করতে গান গেয়ে ওঠেন, ‘এসো নীপবনে ছায়া বীথিতলে, এসো করো স্নান নব ধারাজলে।’
সত্যি বলছি…
আজকের পত্রিকায় জয়েন করার পর পর নানা সময়ে নানা মিটিংয়ে নির্বাহী সম্পাদক সেলিম খান বলতেন, ‘অফিসকে ঘর মনে করতে হবে।’ প্রথম প্রথম মনে হতো, অফিস ঘর হবে কেন? কিন্তু এখন ঘর থেকে বেরিয়ে অফিসে ঢোকার পর আসলেই মনে হয় না ঘর ছেড়ে এসেছি। সহকর্মীদের নিয়ে এই কর্মক্ষেত্র আমার আরেকটি পরিবার হয়ে উঠেছে। একজন অন্যজনের অসুবিধায় সমঝোতা করেই কাজ এগিয়ে নিই। কখনো ছেড়ে যেতে হলে, সত্যিই কষ্ট পাব। আরেকটা আনন্দের ব্যাপার ছিল, শুরুতে এই অফিসে আমরা সব মিলে প্রায় ১৫ জন নারী সাংবাদিক ছিলাম। এই অঙ্কটা বেশ ভালো। আর লাইফস্টাইল বিভাগে বিভাগীয় প্রধান ছাড়া বাকি সবাই নারী। অনেকে জানতে চান, এখানে নারীর কর্মপরিবেশ কেমন? এই বিষয়টা নিয়ে কর্মজীবনের শুরু থেকে কিছু শঙ্কা আমারও কাজ করেছে। কিন্তু এখানে জয়েন করার পরপরই সম্পাদক গোলাম রহমান স্যার ও ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কামরুল হাসান অফিসের সব নারী সদস্যদের নিয়ে একটি মিটিং করেন। সেখানে নিশ্চয়তা দেন সব সময় সুরক্ষিত থাকব আমরা। সত্যি বলতে, এখনো সুরক্ষিতবোধ করছি।
তারুণ্যের জয়গান
তারুণ্য শব্দটা উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে আরও যে শব্দগুলো মস্তিষ্কে ঘুরপাক খায় তা হলো, বিশুদ্ধতা, উচ্ছলতা, হাসি, আনন্দ, উদার আর আলোকময়—ঠিক আকাশের মতো। আজকের পত্রিকায় কর্মরতদের মধ্যে অধিকাংশই তরুণ। ফলে হই হই রই রই করতে করতেই আমরা কাজ করি রোজ। পত্রিকার শুরুর দিনগুলোয় সহকারী বার্তা সম্পাদক নেলসন ভাই বলেছিলেন, ‘আমরা হই হই করতে করতে অফিস ঢুকব, হই হই করতে করতে বের হব।’ হ্যাঁ, তাই তো করছি!
লিখতে বসতেই কেন যেন মনে পড়ছে ছোটবেলার ‘ফার্স্ট ডে অ্যাট স্কুল’ রচনার কথা। গৎবাঁধা মুখস্থ সেই রচনা। সবচেয়ে সাহসী ছেলেটা বা মেয়েটাকেও লিখতে হতো–‘স্কুলের প্রথম দিন তার বুক দুরুদুরু কাঁপছিল।’ তবে হ্যাঁ, একসঙ্গে নতুন কোনো কিছু শুরু করার সময় বুক একটু দুরুদুরু করেই বৈকি…। সাংবাদিকতা শুরু করেছি আজ থেকে প্রায় আট বছর আগে। অনলাইন ও প্রিন্ট দুই মাধ্যমেই কাজ করেছি। কিন্তু কর্মজীবনে প্রথম যে পত্রিকার জন্মলগ্ন থেকে সংযুক্ত হয়েছি, তার নাম ‘আজকের পত্রিকা’। গোটা এক বছরে এক ঝুড়ি কথা জমেছে। না বলে উপায় কী…।
আমার সংযুক্তি
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের কোনো এক দিন আলী আজম ভাই জানালেন, ‘একটা নতুন প্রজেক্ট শুরু হতে যাচ্ছে।’ এর পর তিনি লাইফস্টাইল বিভাগে কাজ করার বিষয়ে জানালেন। আলী আজম ভাই আজকের পত্রিকার যুগ্ম বার্তা সম্পাদক। এর আগে আরেকটি দৈনিক পত্রিকায় আমরা দুজন ভিন্ন দুটি বিভাগে কাজ করেছি, কিন্তু সেভাবে কথা হয়নি কখনো। একটু ভেবেই আমি এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলাম। আজম ভাই একদিন আজকের পত্রিকার ক্যাম্প অফিসে এসে ইন্টারভিউ দিয়ে যেতে বললেন। গেলাম। আমাকে একটি ঘরে বসিয়ে রেখে আজম ভাই যাঁকে নিয়ে ফিরলেন তাঁকে দেখে আরও চমকে উঠলাম, ‘নেলসন ভাই’! আজম ভাই আর আমি যে প্রতিষ্ঠানে ছিলাম, সেখানে নেলসন ভাইকে কিছুদিন পেয়েছি। তবে বিভাগ আলাদা বলে তাঁর সঙ্গেও একটি শব্দও আদান-প্রদান হয়নি আগে। যাই হোক, সেদিন কথা হলো। আমার চাওয়া ছিল, ‘কাজের চাপ নিতে কোনো অসুবিধে নেই। কিন্তু মানসিকভাবে ভালো থাকতে চাই। হেসে খেলে কাজ করতে চাই।’ আজম ভাই ও নেলসন ভাই আশ্বাস দিলেন, ‘এখানে ভালো পরিবেশ পাবেন। নিজের বিভাগ ছাড়াও অন্যান্য আরও অনেক পাতা বা অনলাইনে স্পেস আছে স্বাধীনভাবে লেখার।’ খুশি হয়ে গেলাম। এর পরের দিন অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার নিয়ে বাড়ি ফিরলাম।
প্রথম সেদিন
২০২১ সালের ১ মার্চ অফিশিয়ালি আমরা জয়েন করি। অফিসের নিচে পৌঁছে আজম ভাইকে ফোন দিলাম। তিনি বললেন, ‘চতুর্থতলায় সবাই আছি। লিফটের তিন-এ চলে আসেন।’ আনুষ্ঠানিকতা ও পরিচয়পর্ব কাটল বিকেল অবধি। জানলাম, আনিকা জীনাত, রিক্তা রিচি, মন্টি বৈষ্ণব ও দিতি আহমেদও লাইফস্টাইল টিমে রয়েছেন। প্রাথমিকভাবে কাজের শুরুটা এর পরদিন থেকেই হবে।
নানা রঙের দিনগুলি
শুরুর কিছুদিন কোনো বিভাগেরই নির্ধারিত ডেস্ক ছিল না। যখন গিয়ে যেখানে জায়গা পেতাম, বসে পড়তাম। তখনো জানি না লাইফস্টাইল বিভাগে লিড কে দেবেন। রোজই একটি করে স্টোরি তৈরি করে আজম ভাই আর নেলসন ভাইয়ের মেইলে পাঠিয়ে বাড়ি যাই। তখন ধীরে ধীরে জানতে পারি সহকর্মীদের একে অপরকে। কে কোন ধরনের কাজ করতে ভালোবাসে—সবকিছু। কাজ-আড্ডা সবই চলে। একটা উপলব্ধি হয়েছে সে সময়, এখানে সিনিয়র যাঁরা আছেন, তাঁরা ‘লিডার’, ‘বস’ নন।
মার্চ মাসের অর্ধেক কেটে গেলে রঞ্জু ভাই যোগ দেন; রঞ্জু চৌধুরী। তাঁর লিডে আমরা কাজ শুরু করি। ফ্যাশন, বিউটি, ফুড—এই তিনটি সেগমেন্ট ভাগ করে দেন লাইফস্টাইলে আমরা যে কজন আছি তাঁদের মধ্যে। এর বাইরে মিলেমিশে করার আরও কাজ আছে। কাজ শুরু করি। প্রথম দিকে ডামি পাতা বানাতেন গ্র্যাফিক্সের জুলিও আপা। এর আগে ডামি তৈরি ও পেজ প্ল্যানিংয়ের একটা অভিজ্ঞতা ছিল আমার। একটা প্ল্যান জমা দিই রঞ্জু ভাইকে। সেটা ধরে একটু একটু করে এগোনোর কথা বলেন তিনি। সঙ্গে আরও সংযোজন ছিল। সে সময় ইন্টারনাল সিস্টেম বা ডেটা সেন্টার চালু হয়নি। ফলে আমরা কাজ তৈরির পর ডেটা পেনড্রাইভে করে গ্রাফিক্সে নিয়ে যেতাম। জুলিও আপা পাতা বানাতেন। প্রথমে লাইফস্টাইল পাতার নাম রাখা হয় ‘আজকের জীবনধারা’। পরে সেটা পাল্টে আজকের চালচলন। এরপর ফাইনালি দাঁড়ায় ‘আজকের জীবন’ নামে। আজকের পত্রিকার তিন নম্বর পাতা এটি। প্রথম পেজ ওল্টালেই একটা ঝলমলে পাতা। মনটাই ভালো হয়ে যায়।
এক গল্পের জাদুকরের আগমন
খোঁজ খবর পাচ্ছিলাম তিনি এই যাত্রায় সঙ্গী হবেন। গল্প শুনেছি, তবে দেখিনি সরাসরি। যখন দেখলাম; মনে হলো উচ্ছল। এ মানুষটি যেন বৃষ্টির মতো ঝরেন, আর অমনি সবুজাভ লতাগুলো বেড়ে ওঠে অনায়াসে। বলছি, জাহীদ রেজা নূরের কথা। কাজের এপাশ-ওপাশ ঘর কাঁপিয়ে দুষ্টুমিতেও মেতে ওঠেন বড়। বড্ড গুছিয়ে কথা বলেন। মনে হয়, কবিতা বলছেন। কী শুদ্ধ উচ্চারণ। জাহীদ ভাইয়ের সঙ্গে ভেতরে-ভেতরে প্ল্যান করছিলাম, ‘শিশুদের জন্য কিছু না কিছু করতেই হবে।’ একটা লিখিত প্ল্যান দাঁড় করানো হয়। সে অনুযায়ী কাজ চলছে এখনো। আর সবকিছুর বাইরে যা বলার–জাহীদ রেজা নূর—এমন একজন যাকে আশ্রয় করা যায়। মন গলিয়ে বহুক্ষণ কথা বলা যায়। মানুষটাই এমন, যাঁকে আমাদের ঘর মনে হয়। মাঝে মাঝে মন খারাপ হলে, ক্লান্ত লাগলে জাহীদ ভাইয়ের সামনের চেয়ারে বসে বলি, ‘ভাইয়া একটা গল্প বলেন।’ জাহীদ ভাই গল্প শোনান, ‘সনকাকে কী করে সেই ভূতের ছানাটা ছোট্ট রবীন্দ্রনাথের বাড়ি নিয়ে যায়!’
এ কুলম্যান ও তাঁর বাহিনী
এবার মূল যুদ্ধের প্রস্তুতি। লাইফস্টাইল পাতার লিডিংয়ে যোগ দিলেন রজত কান্তি রায়। প্রথম দিকে মনে হতো, ‘উফ রজতদা কি অনেক গম্ভীর; একটু হলেই কি ঝাড়ি দেবেন?’ রোজ কাজ শেষে বিদায় নেওয়ার সময় মন্টি দি আর রিক্তা আয়রন লেডির মতো শক্ত হয়ে বসে থাকতেন দাদার সামনে। আর দাদা পাতার যোগ-বিয়োগ নিয়ে চেয়ারে হেলান দিয়ে নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছেন। এই দৃশ্য দূর থেকে দেখে হাসতাম আনিকা আর আমি। ধীরে ধীরে বোঝা গেল, রজতদা মোটেও এমন নন, যেমনটা ভেবেছিলাম। বরং কাজের বিষয়ে টিমের সদস্যদের মতামত নিয়েই পরিকল্পনা করতে পছন্দ করেন। এভাবেই আমরা রোজকার পাতা ও প্রতিটি বিশেষ সংখ্যা নিয়ে এগিয়েছি।
আজকের জীবন পাতায় শিশুদের ছোট্ট একটা স্পেস আছে। এই জায়গাটায় শিশুতোষ বইয়ের পরিচিতি থাকবে—এটা আগেই ঠিক ছিল। রজতদা এখানে শিশুর উপযোগী অ্যাপ যোগ করেন। এর পর আমি ক্র্যাফট, ফুড আর্ট, খেলা সেগমেন্টগুলো জুড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিলে তিনি সাদরে গ্রহণ করেন। মোটকথা বিভাগীয় প্রধান বলে কখনো নিজের চারপাশে বারান্দা জুড়ে দেননি তিনি। কাজের যেকোনো বিষয়ে যেকোনো সময়েই কথা বলতে পেরেছি। ফলে তাঁকে ‘কুলম্যান’ না বলে উপায় কী!
অপেক্ষার পালা ফুরোল
প্রায় সাড়ে তিন মাসের প্রস্তুতি শেষে পত্রিকা প্রকাশের তারিখ ঘোষণা হলো। উফ, কি যে এক উত্তেজনা তা বলে বোঝানোর মতো না। সবচেয়ে ভালো পাতা হতে হবে শুরুর দিন। তত দিনে পাতার ক্যারেক্টার দাঁড়িয়ে গেছে। এবার শুধু ছক্কা তোলার পালা। পত্রিকা প্রকাশের পাঁচ দিন আগে ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বিছানায় পড়লাম। জ্বর কমলই না। ২৭ জুন, ২০২১-এ বিছানায় শুয়ে শুয়েই দেখলাম প্রকাশিত আজকের পত্রিকার প্রথম দিনের পাতা। এদিন অফিস যাওয়ার জন্য যে শাড়িটা পরব বলে ভেবেছিলাম, তা আলমারিতেই বন্দী রইল। আক্ষেপের কথা লিখে হোয়াটসঅ্যাপ করলাম জাহীদ ভাইকে। ফিরতি মেসেজে তিনি বললেন, ‘সুস্থ হয়ে তবেই ফিরিস, জীবন অনেক বড় ব্যাপার। আজ তোর লেখা পেস্টিং হচ্ছে। ফিরে এসে আবার লিখবি।’ আমি জানলাম পরদিন আমার লেখা প্রকাশ পাবে। জীবনে অনেক লিড স্টোরি করেছি। কিন্তু এমন একটা অনুভূতি হলো, যেন জীবনে প্রথম বুঝি নিজের লেখা প্রকাশের আনন্দ পাচ্ছি, আর কখনো বুঝি লিখিইনি! আসলে একটি পত্রিকার জন্ম হতে দেখা খুবই আনন্দের বিষয়। এত এত ভাবনা, পরিকল্পনা, এত এত মানুষের পরিশ্রম, সময়, প্রচেষ্টার ফল। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।
যোজন-বিয়োজন
মোট সাতজন সদস্যের লাইফস্টাইল বিভাগ থেকে মন্টি বৈষ্ণব দিদিকে অনলাইন বিভাগে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়। নারী ও শিশু নিয়ে তাঁর কাজ করার অভিজ্ঞতা ও কর্মদক্ষতার কারণে অনলাইনে তাঁকে প্রয়োজন পড়ে। যদিও একই অফিসেই থাকব সবাই, তবুও মনে হচ্ছিল টিম থেকে বড় বোনটা চলে যাচ্ছে, অন্যরকম শূন্যতাবোধ হলো আমাদের। রজতদা, জাহীদ ভাই, নেলসন ভাই প্রত্যেকেই আমাদের আন্তঃসম্পর্কের এই অনুভূতিগুলো বুঝলেন। তবে দিন শেষে কাজের জায়গায় নিজের সেরা কাজটিই দিতে হয়। আর সেদিক থেকে এখনো আজকের জীবন পাতার স্বাস্থ্য সেগমেন্টে লেখা সংগ্রহের কিছু কাজ মন্টি দি করে যাচ্ছেন।
এদিকে আমাদের বিভাগ থেকে আমরা চেষ্টা করি সময় সুযোগ বুঝে অনলাইনকে একটু হলেও এগিয়ে রাখার। যে যেই বিভাগেই থাকি না কেন, আজকের পত্রিকা তো আমাদেরই। আগে জুলিও আপা পাতা পেস্টিংয়ের কাজটি করতেন। তিনি এখন অন্য বিভাগে পাতা তৈরির কাজ নিয়ে ব্যস্ত। তাঁর পরিবর্তে আমাদের সঙ্গে যোগ দেন মোশারফ ভাই। তাঁকে আমরা ব্রো বলে ডাকি! এরই মধ্যে রঞ্জু ভাই আমাদের ছেড়ে বিদায় নেন। তাঁর অবদান কম নয়। গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ ও ছবির স্টক তিনি রেখে গেছেন। প্রায় তিন মাস হলো আনিকা জীনাতও আমাদের সঙ্গে নেই। কাজ ও যাতায়াতের সুবিধার্থে অন্য একটি হাউসে যোগ দিয়েছেন সম্প্রতি। আজকের জীবনের গেজেট ও প্রযুক্তি বিষয়ক লেখাগুলো তিনি লিখতেন। এখন তাঁর শূন্যস্থান পূরণ করেছেন অলকানন্দা রায়। আনিকা কাজ করতে করতে গান শুনতেন। আর এখন ওই চেয়ারে বসে অলকানন্দা কাজ করতে করতে গান গেয়ে ওঠেন, ‘এসো নীপবনে ছায়া বীথিতলে, এসো করো স্নান নব ধারাজলে।’
সত্যি বলছি…
আজকের পত্রিকায় জয়েন করার পর পর নানা সময়ে নানা মিটিংয়ে নির্বাহী সম্পাদক সেলিম খান বলতেন, ‘অফিসকে ঘর মনে করতে হবে।’ প্রথম প্রথম মনে হতো, অফিস ঘর হবে কেন? কিন্তু এখন ঘর থেকে বেরিয়ে অফিসে ঢোকার পর আসলেই মনে হয় না ঘর ছেড়ে এসেছি। সহকর্মীদের নিয়ে এই কর্মক্ষেত্র আমার আরেকটি পরিবার হয়ে উঠেছে। একজন অন্যজনের অসুবিধায় সমঝোতা করেই কাজ এগিয়ে নিই। কখনো ছেড়ে যেতে হলে, সত্যিই কষ্ট পাব। আরেকটা আনন্দের ব্যাপার ছিল, শুরুতে এই অফিসে আমরা সব মিলে প্রায় ১৫ জন নারী সাংবাদিক ছিলাম। এই অঙ্কটা বেশ ভালো। আর লাইফস্টাইল বিভাগে বিভাগীয় প্রধান ছাড়া বাকি সবাই নারী। অনেকে জানতে চান, এখানে নারীর কর্মপরিবেশ কেমন? এই বিষয়টা নিয়ে কর্মজীবনের শুরু থেকে কিছু শঙ্কা আমারও কাজ করেছে। কিন্তু এখানে জয়েন করার পরপরই সম্পাদক গোলাম রহমান স্যার ও ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কামরুল হাসান অফিসের সব নারী সদস্যদের নিয়ে একটি মিটিং করেন। সেখানে নিশ্চয়তা দেন সব সময় সুরক্ষিত থাকব আমরা। সত্যি বলতে, এখনো সুরক্ষিতবোধ করছি।
তারুণ্যের জয়গান
তারুণ্য শব্দটা উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে আরও যে শব্দগুলো মস্তিষ্কে ঘুরপাক খায় তা হলো, বিশুদ্ধতা, উচ্ছলতা, হাসি, আনন্দ, উদার আর আলোকময়—ঠিক আকাশের মতো। আজকের পত্রিকায় কর্মরতদের মধ্যে অধিকাংশই তরুণ। ফলে হই হই রই রই করতে করতেই আমরা কাজ করি রোজ। পত্রিকার শুরুর দিনগুলোয় সহকারী বার্তা সম্পাদক নেলসন ভাই বলেছিলেন, ‘আমরা হই হই করতে করতে অফিস ঢুকব, হই হই করতে করতে বের হব।’ হ্যাঁ, তাই তো করছি!
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে লন্ডন এবং দিল্লি হয়ে ঢাকায় ফিরলেন। সেদিন অপরাহ্ণে রেসকোর্সে অলিখিত স্বতঃস্ফূর্ত ভাষণ দিয়েছিলেন। যে ভাষণটি আমি শুনেছিলাম—১৭ মিনিটের। ভাষণে একটি জায়গায় তিনি বলেছিলেন, একটা কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে,
২৬ মার্চ ২০২৪১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানে যে চার রাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করা হয়েছিল তার একটি সমাজতন্ত্র। সমাজতন্ত্র মানে বৈষম্যের অবসান। সমাজতন্ত্র মানে ন্যায্যতা। সমাজতন্ত্র মানে সবার শিক্ষা, চিকিৎসা, মাথাগোঁজার ঠাঁই, কাজের সুযোগ। সমাজতন্ত্র মানে যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ, প্রয়োজন অনুয
২৬ মার্চ ২০২৪স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্র পরিচালনার চালিকা শক্তি হিসেবে চারটি মৌলনীতি গ্রহণ করেছিলেন। এগুলো হলো: জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র। আজ ৫২ বছর পর দেখছি, এই মৌলনীতিগুলোর প্রতিটির সূচক এত নিচে নেমে গেছে যে, বলা চলে রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলনীতি বলে এখন আর কিছু নেই। জাতীয়তা দুই ভাগে বি
২৬ মার্চ ২০২৪বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা যেতে পারে, রাষ্ট্র হিসেবে নবীন, কিন্তু এর সভ্যতা সুপ্রাচীন। নদীবেষ্টিত গাঙেয় উপত্যকায় পলিবাহিত উর্বর ভূমি যেমন উপচে পড়া শস্যসম্ভারে জীবনকে সমৃদ্ধ করেছে, তেমনি নদীর ভাঙনের খেলায় রাতারাতি বিলুপ্ত হয়েছে বহু জনপদ। এরপরও সভ্যতার নানা চিহ্ন এখানে খুঁজে পাওয়া যায় এবং বাঙালিত্বের বৈশিষ
২৬ মার্চ ২০২৪