অনলাইন ডেস্ক
৭ ফেব্রুয়ারি ইরান ‘ইগল-৪৪’ নামে নতুন ভূগর্ভস্থ বিমানঘাঁটি উন্মোচনের এক চোখধাঁধানো ভিডিও প্রকাশ করে। ওই ভিডিওতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবিতে বিমানঘাঁটির পাশে ফাইটার জেটের পোস্টার দেখা গেছে। তবে অত্যাধুনিক এই ফাইটার জেট ইরানের তৈরি নয়। দেখতে রাশিয়ার এসইউ-৩৫ যুদ্ধবিমানের মতো। ইরানের কর্মকর্তারা দাবি করছেন, রাশিয়া তাঁদের কাছে এটি বিক্রির প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
স্যাটেলাইটের ছবি বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা দেখেছেন, ওই বিমানঘাঁটিতে রুশ ফাইটার জেটের মডেল তৈরি করা হয়েছে। ইরানের এ পরিকল্পনা দুটি বিষয় নির্দেশ করে—তারা এই জেট বিমানগুলো রাশিয়ার কাছ থেকে পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী এবং এই বিমানঘাঁটিতে বেশ কিছু রুশ জেট বিমান সংরক্ষণের চেষ্টা করছে।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ইরানের সামরিক ও রাজনৈতিক কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে রুশ জেট এসইউ-৩৫ কেনার কথা বলে আসছেন। এটি রাশিয়ার সবচেয়ে উন্নত যুদ্ধবিমানগুলোর একটি।
রাশিয়া ইরানের সঙ্গে চুক্তির বিষয় নিশ্চিত না করলেও ভিডিও এবং স্যাটেলাইট চিত্রগুলো থেকে বোঝা যাচ্ছে, ইরান ফাইটার জেটের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ নির্মাণাধীন ঘাঁটিতে বিমানগুলো মোতায়েন করা হবে বলে দেশটির কর্মকর্তারা আশা করছেন। তেমনটি ঘটলে এটি হবে কয়েক দশকের মধ্যে ইরানের বিমানবাহিনীতে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।
ইউক্রেন আক্রমণের পরে রাশিয়ার আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা মস্কো ও তেহরানের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা ত্বরান্বিত করেছে বলে মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক বিশ্লেষকেরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির আশঙ্কাও প্রবল হচ্ছে।
বাইডেন প্রশাসন রাশিয়া ও ইরানের মধ্যে এ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে ‘ক্ষতিকর’ হিসেবে বর্ণনা করছে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, ইরানিরা এরই মধ্যে এসব রুশ ফাইটার জেট পরিচালনার প্রশিক্ষণ নিয়েছে। এ বিষয়ে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি গত বছরের ডিসেম্বরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, এই যুদ্ধবিমানগুলো ইরানের বিমানবাহিনীকে প্রতিবেশী দেশগুলোর চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী করবে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সাবেক স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষক ও হকআই-৩৬০ মিশন অ্যাপ্লিকেশনের সিনিয়র ডিরেক্টর ক্রিস বিগারস যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসের ভিজ্যুয়াল ইনভেস্টিগেশন টিমকে জানিয়েছেন, তিনি ইরানের একটি নির্মাণাধীন বিমানঘাঁটি এলাকায় দুটি রুশ মকআপ ফাইটার জেট চিহ্নিত করেছেন। এর মধ্যে একটি এসইউ-৩৫। মকআপগুলো সম্ভবত ভূগর্ভস্থ বিমানঘাঁটিতে ফাইটার জেটগুলোর মহড়া চালনার লেন পরিমাপের জন্য তৈরি করা হয়েছে, যেখানে ফাইটার জেটগুলো রাখা হবে। অন্য মকআপটি ইরানের বিমানবাহিনীতে বর্তমানে রয়েছে। তবে এসইউ-৩৫ এখনো তাদের বহরে যুক্ত হয়নি। তবে চলতি বছরের প্রথম দিকেই যুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দ্য টাইমস স্যাটেলাইটের ছবি পর্যালোচনা করে দেখেছে, দুটি মকআপই গত জানুয়ারিতে বিমানঘাঁটিতে যুক্ত করা হয়। ঘাঁটিটি তখনো নির্মাণাধীন দেখা গেছে। মকআপগুলো এরপর সেখানে থেকে সরানো হয়নি। তবে এর মধ্যে ঘাঁটির কিছু উন্নয়নকাজ চলে থাকতে পারে। বিদ্যমান একটি সুড়ঙ্গের প্রবেশদ্বার রাশিয়ার বৃহৎ জেটগুলো চলাচলের জন্য যথেষ্ট প্রশস্ত নয় বলে দেখা গেছে। তবে বড় আরেকটি সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ এখনো চলছে।
ইরানের ইগল-৪৪ বিমানঘাঁটির প্রচার ভিডিওটি দ্য টাইমস এবং মিস্টার বিগার্স বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, বিমানঘাঁটিটি ইরানের উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছেন।
ভিডিওতে একটি পোস্টারে মূল ফাইটার জেট এসইউ-৩৫–এর প্রতিচ্ছবি দেখা গেছে, এই যুদ্ধবিমানকে ন্যাটো ফ্ল্যাঙ্কার সিরিজের যুদ্ধবিমান বলে থাকে। ইরানের কাছে বর্তমানে এই সিরিজের কোনো বিমান নেই। পোস্টারে অঙ্কিত অন্য প্রতিচ্ছবিগুলো ইরানের নিজস্ব যুদ্ধবিমানের ছবি।
ইউক্রেন যুদ্ধ ও রাশিয়া-ইরানের সামরিক ঘনিষ্ঠতা
ইউক্রেন যুদ্ধে কিছুটা পিছু হটার রাশিয়া ক্রমবর্ধমানভাবে সামরিক সহযোগিতার জন্য ইরানের প্রতি হাত বাড়িয়েছে। ড্রোনসহ বেশ কিছু সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করে আসছে ইরান। ইরানি ড্রোনগুলো দিয়েই কিয়েভের মতো বড় শহরগুলোতে আক্রমণ পরিচালনা করা হয়। ফাইটার জেট এসইউ-৩৫ বিক্রি ইউক্রেন যুদ্ধে ইরানের কাছে রাশিয়ার আরও সমর্থন আদায়ের উপায় হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
ক্যালিফোর্নিয়ার নেভাল পোস্টগ্র্যাজুয়েট স্কুলের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক সহযোগী অধ্যাপক ড. আফশোন অস্টোভার দ্য টাইমসকে বলেছেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধে ইরানের সমর্থন পেতেই রাশিয়ার এমন বৃহৎ প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি করেছে মনে হচ্ছে। ইরান রাশিয়ার অস্ত্র সহযোগিতা ছাড়াও বিভিন্ন উপায়ে উপকৃত হতে পারে। তবে রাশিয়ার উন্নত সব যুদ্ধবিমান এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যেমন এস-৪০০ পাওয়াটাই তেহরানের মুখ্য উদ্দেশ্য হবে।’
ড. অস্টোভার আরও বলেন, ‘নতুন ভূগর্ভস্থ বিমানঘাঁটি নির্মাণে ইরানের বিনিয়োগ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার মধ্য দিয়ে ফলপ্রসূ হতে পারে। তবে এটি ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের স্নায়ুযুদ্ধকে উসকে দেবে। এ ছাড়া ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া ইরানের শক্ত সমর্থন পাওয়ার যে গুঞ্জন উঠেছে, সেখান থেকে ধারণা করছি, ইরান রাশিয়ার কাছ থেকে আরও উন্নত যুদ্ধবিমান সংগ্রহ করতে পারবে। চীনের কাছ থেকেও তারা অস্ত্র সংগ্রহ করতে পারে, যা তাদের ভূগর্ভস্থ ঘাঁটিগুলোকে আরও বেশি শক্তিশালী করে তুলবে।’
ইরানের ভূগর্ভস্থ বিমানঘাঁটি তৈরির ১০ বছর
ইরানের দক্ষিণাঞ্চলের প্রদেশ হরমোজগানের একটি পাহাড়ি এলাকায় এ বিমানঘাঁটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এটি হরমুজ প্রণালি থেকে মাত্র ১০০ মাইল উত্তরে। এই জলপথ বিশ্বব্যাপী তেল সরবরাহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রুট।
কয়েক বছর ধরে ওই এলাকার স্যাটেলাইটের ছবি পর্যালোচনা করেছে দ্য টাইমস। এতে দেখা গেছে, ২০১৩ সালের আগস্টে বিমানঘাঁটি নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৪ সালের প্রথম দিকে ভূগর্ভস্থ খননকাজের মাটি ওপরে তোলার ছবি দৃশ্যমান হয়। চলতি ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভূগর্ভস্থ বিমানঘাঁটিতে প্রবেশের জন্য পাঁচটি সুড়ঙ্গ দেখা গেছে।
বিমানঘাঁটি নির্মাণের জন্যই যে এই খনন শুরু হয়েছিল, তা প্রথমে কেউ অনুমান করতে পারেনি। কার্যক্রম শুরুর প্রায় আট বছর পর ২০২১ সালের মে পর্যন্তও সেখানে কোনো বিমানঘাঁটি নির্মাণের সরঞ্জাম দেখা যায়নি।
কী আছে এসইউ-৩৫ যুদ্ধবিমানে
এই যুদ্ধবিমান বানিয়েছে রুশ কমসমোলস্ক-না-আমুর অ্যাভিয়েশন প্রোডাকশন অ্যাসোসিয়েশন। এসইউ-৩৫ মাল্টিরোল ফাইটার মূলত এসইউ-২৭ বিমানের আধুনিক সংস্করণ। অত্যন্ত কৌশলী বিমানটি সর্বোচ্চ মাক ২ দশমিক ২৫ গতিতে উড়তে পারে। অর্থাৎ এটি শব্দের ২ দশমিক ২৫ গুণ গতিতে উড়তে পারে। যেখানে কক্ষ তাপমাত্রায় শব্দের গতি সেকেন্ডে ৩৪৩ মিটার।এসইউ-৩৫ বর্তমানে রাশিয়ান এয়ারফোর্স এবং চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি এয়ার ফোর্সে রয়েছে। বিমানটিতে রয়েছে একটি ৩০০ এমএম জিএসএইচ-৩০ কামান, বোমা, আকাশ থেকে আকাশ এবং আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র এবং গাইডেড ও আনগাইডেড রকেট।
বিমানটি দুটি স্যাটার্ন ১১৭এস টার্বোফ্যান ইঞ্জিন চালিত। প্রতিটি ইঞ্জিন আফটারবার্নিং ১৪ হাজার ৫০০ কেজি-ফোর্স (১৪২ কিলো নিউটন) থ্রাস্ট উৎপন্ন করতে পারে। এসইউ-৩৫ একবার জ্বালানি ভরে টানা ৩ হাজার ৬০০ কিলোমিটার উড়তে পারে।
৭ ফেব্রুয়ারি ইরান ‘ইগল-৪৪’ নামে নতুন ভূগর্ভস্থ বিমানঘাঁটি উন্মোচনের এক চোখধাঁধানো ভিডিও প্রকাশ করে। ওই ভিডিওতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবিতে বিমানঘাঁটির পাশে ফাইটার জেটের পোস্টার দেখা গেছে। তবে অত্যাধুনিক এই ফাইটার জেট ইরানের তৈরি নয়। দেখতে রাশিয়ার এসইউ-৩৫ যুদ্ধবিমানের মতো। ইরানের কর্মকর্তারা দাবি করছেন, রাশিয়া তাঁদের কাছে এটি বিক্রির প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
স্যাটেলাইটের ছবি বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা দেখেছেন, ওই বিমানঘাঁটিতে রুশ ফাইটার জেটের মডেল তৈরি করা হয়েছে। ইরানের এ পরিকল্পনা দুটি বিষয় নির্দেশ করে—তারা এই জেট বিমানগুলো রাশিয়ার কাছ থেকে পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী এবং এই বিমানঘাঁটিতে বেশ কিছু রুশ জেট বিমান সংরক্ষণের চেষ্টা করছে।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ইরানের সামরিক ও রাজনৈতিক কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে রুশ জেট এসইউ-৩৫ কেনার কথা বলে আসছেন। এটি রাশিয়ার সবচেয়ে উন্নত যুদ্ধবিমানগুলোর একটি।
রাশিয়া ইরানের সঙ্গে চুক্তির বিষয় নিশ্চিত না করলেও ভিডিও এবং স্যাটেলাইট চিত্রগুলো থেকে বোঝা যাচ্ছে, ইরান ফাইটার জেটের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ নির্মাণাধীন ঘাঁটিতে বিমানগুলো মোতায়েন করা হবে বলে দেশটির কর্মকর্তারা আশা করছেন। তেমনটি ঘটলে এটি হবে কয়েক দশকের মধ্যে ইরানের বিমানবাহিনীতে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।
ইউক্রেন আক্রমণের পরে রাশিয়ার আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা মস্কো ও তেহরানের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা ত্বরান্বিত করেছে বলে মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক বিশ্লেষকেরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির আশঙ্কাও প্রবল হচ্ছে।
বাইডেন প্রশাসন রাশিয়া ও ইরানের মধ্যে এ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে ‘ক্ষতিকর’ হিসেবে বর্ণনা করছে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, ইরানিরা এরই মধ্যে এসব রুশ ফাইটার জেট পরিচালনার প্রশিক্ষণ নিয়েছে। এ বিষয়ে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি গত বছরের ডিসেম্বরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, এই যুদ্ধবিমানগুলো ইরানের বিমানবাহিনীকে প্রতিবেশী দেশগুলোর চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী করবে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সাবেক স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষক ও হকআই-৩৬০ মিশন অ্যাপ্লিকেশনের সিনিয়র ডিরেক্টর ক্রিস বিগারস যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসের ভিজ্যুয়াল ইনভেস্টিগেশন টিমকে জানিয়েছেন, তিনি ইরানের একটি নির্মাণাধীন বিমানঘাঁটি এলাকায় দুটি রুশ মকআপ ফাইটার জেট চিহ্নিত করেছেন। এর মধ্যে একটি এসইউ-৩৫। মকআপগুলো সম্ভবত ভূগর্ভস্থ বিমানঘাঁটিতে ফাইটার জেটগুলোর মহড়া চালনার লেন পরিমাপের জন্য তৈরি করা হয়েছে, যেখানে ফাইটার জেটগুলো রাখা হবে। অন্য মকআপটি ইরানের বিমানবাহিনীতে বর্তমানে রয়েছে। তবে এসইউ-৩৫ এখনো তাদের বহরে যুক্ত হয়নি। তবে চলতি বছরের প্রথম দিকেই যুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দ্য টাইমস স্যাটেলাইটের ছবি পর্যালোচনা করে দেখেছে, দুটি মকআপই গত জানুয়ারিতে বিমানঘাঁটিতে যুক্ত করা হয়। ঘাঁটিটি তখনো নির্মাণাধীন দেখা গেছে। মকআপগুলো এরপর সেখানে থেকে সরানো হয়নি। তবে এর মধ্যে ঘাঁটির কিছু উন্নয়নকাজ চলে থাকতে পারে। বিদ্যমান একটি সুড়ঙ্গের প্রবেশদ্বার রাশিয়ার বৃহৎ জেটগুলো চলাচলের জন্য যথেষ্ট প্রশস্ত নয় বলে দেখা গেছে। তবে বড় আরেকটি সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ এখনো চলছে।
ইরানের ইগল-৪৪ বিমানঘাঁটির প্রচার ভিডিওটি দ্য টাইমস এবং মিস্টার বিগার্স বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, বিমানঘাঁটিটি ইরানের উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছেন।
ভিডিওতে একটি পোস্টারে মূল ফাইটার জেট এসইউ-৩৫–এর প্রতিচ্ছবি দেখা গেছে, এই যুদ্ধবিমানকে ন্যাটো ফ্ল্যাঙ্কার সিরিজের যুদ্ধবিমান বলে থাকে। ইরানের কাছে বর্তমানে এই সিরিজের কোনো বিমান নেই। পোস্টারে অঙ্কিত অন্য প্রতিচ্ছবিগুলো ইরানের নিজস্ব যুদ্ধবিমানের ছবি।
ইউক্রেন যুদ্ধ ও রাশিয়া-ইরানের সামরিক ঘনিষ্ঠতা
ইউক্রেন যুদ্ধে কিছুটা পিছু হটার রাশিয়া ক্রমবর্ধমানভাবে সামরিক সহযোগিতার জন্য ইরানের প্রতি হাত বাড়িয়েছে। ড্রোনসহ বেশ কিছু সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করে আসছে ইরান। ইরানি ড্রোনগুলো দিয়েই কিয়েভের মতো বড় শহরগুলোতে আক্রমণ পরিচালনা করা হয়। ফাইটার জেট এসইউ-৩৫ বিক্রি ইউক্রেন যুদ্ধে ইরানের কাছে রাশিয়ার আরও সমর্থন আদায়ের উপায় হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
ক্যালিফোর্নিয়ার নেভাল পোস্টগ্র্যাজুয়েট স্কুলের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক সহযোগী অধ্যাপক ড. আফশোন অস্টোভার দ্য টাইমসকে বলেছেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধে ইরানের সমর্থন পেতেই রাশিয়ার এমন বৃহৎ প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি করেছে মনে হচ্ছে। ইরান রাশিয়ার অস্ত্র সহযোগিতা ছাড়াও বিভিন্ন উপায়ে উপকৃত হতে পারে। তবে রাশিয়ার উন্নত সব যুদ্ধবিমান এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যেমন এস-৪০০ পাওয়াটাই তেহরানের মুখ্য উদ্দেশ্য হবে।’
ড. অস্টোভার আরও বলেন, ‘নতুন ভূগর্ভস্থ বিমানঘাঁটি নির্মাণে ইরানের বিনিয়োগ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার মধ্য দিয়ে ফলপ্রসূ হতে পারে। তবে এটি ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের স্নায়ুযুদ্ধকে উসকে দেবে। এ ছাড়া ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া ইরানের শক্ত সমর্থন পাওয়ার যে গুঞ্জন উঠেছে, সেখান থেকে ধারণা করছি, ইরান রাশিয়ার কাছ থেকে আরও উন্নত যুদ্ধবিমান সংগ্রহ করতে পারবে। চীনের কাছ থেকেও তারা অস্ত্র সংগ্রহ করতে পারে, যা তাদের ভূগর্ভস্থ ঘাঁটিগুলোকে আরও বেশি শক্তিশালী করে তুলবে।’
ইরানের ভূগর্ভস্থ বিমানঘাঁটি তৈরির ১০ বছর
ইরানের দক্ষিণাঞ্চলের প্রদেশ হরমোজগানের একটি পাহাড়ি এলাকায় এ বিমানঘাঁটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এটি হরমুজ প্রণালি থেকে মাত্র ১০০ মাইল উত্তরে। এই জলপথ বিশ্বব্যাপী তেল সরবরাহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রুট।
কয়েক বছর ধরে ওই এলাকার স্যাটেলাইটের ছবি পর্যালোচনা করেছে দ্য টাইমস। এতে দেখা গেছে, ২০১৩ সালের আগস্টে বিমানঘাঁটি নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৪ সালের প্রথম দিকে ভূগর্ভস্থ খননকাজের মাটি ওপরে তোলার ছবি দৃশ্যমান হয়। চলতি ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভূগর্ভস্থ বিমানঘাঁটিতে প্রবেশের জন্য পাঁচটি সুড়ঙ্গ দেখা গেছে।
বিমানঘাঁটি নির্মাণের জন্যই যে এই খনন শুরু হয়েছিল, তা প্রথমে কেউ অনুমান করতে পারেনি। কার্যক্রম শুরুর প্রায় আট বছর পর ২০২১ সালের মে পর্যন্তও সেখানে কোনো বিমানঘাঁটি নির্মাণের সরঞ্জাম দেখা যায়নি।
কী আছে এসইউ-৩৫ যুদ্ধবিমানে
এই যুদ্ধবিমান বানিয়েছে রুশ কমসমোলস্ক-না-আমুর অ্যাভিয়েশন প্রোডাকশন অ্যাসোসিয়েশন। এসইউ-৩৫ মাল্টিরোল ফাইটার মূলত এসইউ-২৭ বিমানের আধুনিক সংস্করণ। অত্যন্ত কৌশলী বিমানটি সর্বোচ্চ মাক ২ দশমিক ২৫ গতিতে উড়তে পারে। অর্থাৎ এটি শব্দের ২ দশমিক ২৫ গুণ গতিতে উড়তে পারে। যেখানে কক্ষ তাপমাত্রায় শব্দের গতি সেকেন্ডে ৩৪৩ মিটার।এসইউ-৩৫ বর্তমানে রাশিয়ান এয়ারফোর্স এবং চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি এয়ার ফোর্সে রয়েছে। বিমানটিতে রয়েছে একটি ৩০০ এমএম জিএসএইচ-৩০ কামান, বোমা, আকাশ থেকে আকাশ এবং আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র এবং গাইডেড ও আনগাইডেড রকেট।
বিমানটি দুটি স্যাটার্ন ১১৭এস টার্বোফ্যান ইঞ্জিন চালিত। প্রতিটি ইঞ্জিন আফটারবার্নিং ১৪ হাজার ৫০০ কেজি-ফোর্স (১৪২ কিলো নিউটন) থ্রাস্ট উৎপন্ন করতে পারে। এসইউ-৩৫ একবার জ্বালানি ভরে টানা ৩ হাজার ৬০০ কিলোমিটার উড়তে পারে।
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
১ দিন আগেপরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
৫ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় মোটামুটি সারা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। বাদ যায়নি তাঁর প্রতিবেশী দেশগুলো। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই জয়ের বড় প্রভাব পড়বে প্রতিবেশী দেশগুলোয়।
৭ দিন আগেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর বিশ্বের অনেক অঞ্চলে নতুন উদ্বেগ ও প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সতর্কভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, ইউক্রেন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, আর ইসরায়েল অনেকটা খুশিতে উদ্বেলিত। তবে বিশেষ নজরে আছে পারস্য উপসাগরীয় তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো।
৮ দিন আগে