আব্দুর রহমান
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এখন পর্যন্ত ৮৪টি ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে আঘাত হেনেছে। নিহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইউক্রেন ও পশ্চিমা বিশ্ব। তবে রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ (বর্তমানে নিরাপত্তা কাউন্সিলের ডেপুটি চেয়ারম্যান) এই হামলাকে ‘কেবল প্রথম পর্ব’ বলে উল্লেখ করেছেন।
চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর অল্পদিন পরই রুশ সেনারা কিয়েভের ওপর থেকে অবরোধ তুলে নিয়ে দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে থিতু হয়। যুদ্ধের একপর্যায়ে দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে রুশ সেনা ও তাদের ইউক্রেনীয় মিত্ররা। ওই চার অঞ্চলকে গণভোটের মাধ্যমে যুক্ত করা হয় রাশিয়ার সঙ্গে। তবে একই সময়ে রাশিয়ার সৈন্যরা বেশ কিছু ফ্রন্ট থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়।
রুশ সৈন্যদের এমন ব্যর্থতার পর গত ২১ সেপ্টেম্বর রাশিয়ার রিজার্ভ সৈন্য থেকে ‘পারশিয়াল মোবিলাইজেশনের’ ঘোষণা দেন পুতিন। সেই ঘোষণার পরপরই রাশিয়া সেনাবাহিনীর উচ্চপর্যায়ে বেশ রদবদল আনে। আল-জাজিরার প্রতিবেদন অনুসারে, ইউক্রেনে চলমান অভিযানে কমান্ডার হিসেবে জেনারেল সের্গেই সুরোভিকিনকে দায়িত্ব দেয় পুতিন প্রশাসন। গত ৮ অক্টোবর ইউক্রেন অভিযানে রাশিয়া সুবিধা করতে না পারায় তাঁকে ইউক্রেনে সার্বিক যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
সুরোভিকিনের দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই রাশিয়া ও ক্রিমিয়ার সংযোগের একমাত্র সেতুটিতে একটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণ নিয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেন একে অপরের দিকে আঙুল তুলেছে। যাই হোক, রাশিয়া ও ক্রিমিয়ার মধ্যকার একমাত্র সংযোগ সেতুতে ইউক্রেনের হাত রয়েছে মস্কোর—এমন দাবির এক দিন পরই সিরিজ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করল মস্কো। বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, ইউক্রেনের ‘অনেকগুলো’ শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।
এএফপির প্রতিবেদন অনুসারে, মোট ৮৪টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে রাশিয়া থেকে। ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী দানিস শামিহাল জানিয়েছেন, আটটি অঞ্চলের অন্তত ১১টি অতি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। শামিহাল জনগণকে বিদ্যুৎ, পানিসহ ইত্যাদি অতি প্রয়োজনীয় সেবার সংকটের বিষয়েও সতর্ক করেছেন।
এদিকে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, বিশেষ করে ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো, সামরিক কমান্ডের অবস্থান এবং যোগাযোগব্যবস্থাকে লক্ষ্য করেই এই হামলা চালানো হয়েছে। এএফপির প্রতিবেদন অনুসারে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন নিজে এ ধরনের স্থাপনায় হামলার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আজ (১০ অক্টোবর) সকালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে এবং সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাদের পরিকল্পনা অনুসারে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে নির্ভুল লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে।’
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন অনুসারে, সোমবার সকালে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়া ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোকেই হামলার লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে।
হামলায় কেবল ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো, সামরিক কমান্ডের অবস্থান এবং যোগাযোগব্যবস্থাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এমন নয়; এসব হামলার ‘কোলেটারাল ড্যামেজ’ বা হামলার ফলে আশপাশের ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে কিয়েভে জার্মান কনস্যুলেট এবং স্যামসাংয়ের কার্যালয়ও। তবে কেউ হতাহত হয়নি এসব ঘটনায়।
ইউক্রেনে রাশিয়ার ৮৪টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরও এটিকে হামলার ‘প্রথম পর্ব’ বলে উল্লেখ করেছেন রাশিয়ার নিরাপত্তা কাউন্সিলের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ। তিনি বলেছেন, ‘কেবল এই খেলার প্রথম পর্ব খেলা হয়েছে। আরও পর্ব এখনো বাকি।’ আরও পর্ব কী এবং তা কতটা ভয়াবহ হবে সে বিষয়ে অবগত ইউক্রেনও। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রি কুলেবা বলেছেন, ‘এই সিরিজ ক্ষেপণাস্ত্র হামলাই প্রমাণ করে দেয়, যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার সৈন্যদের কোনো অর্জন দেখতে না পেয়ে পুতিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।’
পুতিন যে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন তা তাঁর কথাতেই স্পষ্ট। পারশিয়াল মোবিলাইজেশন (আংশিক গণ-অংশগ্রহণ), প্রয়োজনে কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিয়ে রাখা থেকেই বিষয়টি বোঝা যায়।
রাশিয়ার এমন হুমকি এবং একদিনে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পশ্চিমা বিশ্বের প্রতিক্রিয়াও তীব্র।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাশিয়ার এই নতুন পদক্ষেপকে ‘ভয়ানক’ বলে বর্ণনা করেছেন। সেই সঙ্গে ইউক্রেনকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, ‘ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিকদের ওপর এই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলার মাধ্যমে এই যুদ্ধের চরিত্রে গভীর পরিবর্তন এসেছে।’ তবে তিনি ইউক্রেনে কোনো ধরনের সহায়তা পাঠাবেন কি না, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। মাখোঁর পাশাপাশি জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে ‘যুদ্ধকে অগ্রহণযোগ্যভাবে তীব্র করা’ হলো বলে মন্তব্য করেছেন।
ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিকদের ওপর এমন হামলা ভয়াবহ।’ তিনি ইউক্রেনে ন্যাটোর সহায়তা অব্যাহত রাখারও ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘ন্যাটো ইউক্রেনের সাহসী জনগণকে যতক্ষণ প্রয়োজন সহায়তা দিয়ে যাবে।’
প্রায় একই রকম প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে ইউরোপীয় কমিশন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৭ দেশের এই জোট এই হামলাকে বর্বরোচিত বলে আখ্যা দিয়েছে। জোটের বৈদেশিক নীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছেন, ‘একুশ শতকে রাশিয়ার এমন আচরণের কোনো স্থান নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউক্রেনকে সহায়তা করার বিষয়ে নিজ গতিতে এগিয়ে যাবে।’
ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নিন্দা করে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি বলেছেন, ‘এই হামলা অগ্রহণযোগ্য। এই হামলা পুতিনের দুর্বলতারই প্রকাশ, শক্তিমত্তার নয়।’ রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নিন্দা করেছেন পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিমোন সিনকোভস্কি ভেল সেকও। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনজুড়ে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা একটি বর্বরোচিত যুদ্ধাপরাধ।’
পশ্চিমা বিশ্বকে পুতিন কতটা আমল দেবেন সেটিই এখন দেখার বিষয়। তবে উভয় পক্ষের অনড় অবস্থান যে আলোচনার পথকে কেবল রুদ্ধই করে তার নজির এরই মধ্যে দেখা গেছে। এমন অবস্থান যুদ্ধকে আরও দীর্ঘায়িত করবে, যা খাদ্যসংকট ও অর্থনৈতিক মন্দার ঝুঁকিতে থাকা বিশ্ব পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে।
তথ্যসূত্র: আল–জাজিরা, এএফপি, বিবিসি, রয়টার্স
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এখন পর্যন্ত ৮৪টি ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে আঘাত হেনেছে। নিহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইউক্রেন ও পশ্চিমা বিশ্ব। তবে রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ (বর্তমানে নিরাপত্তা কাউন্সিলের ডেপুটি চেয়ারম্যান) এই হামলাকে ‘কেবল প্রথম পর্ব’ বলে উল্লেখ করেছেন।
চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর অল্পদিন পরই রুশ সেনারা কিয়েভের ওপর থেকে অবরোধ তুলে নিয়ে দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে থিতু হয়। যুদ্ধের একপর্যায়ে দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে রুশ সেনা ও তাদের ইউক্রেনীয় মিত্ররা। ওই চার অঞ্চলকে গণভোটের মাধ্যমে যুক্ত করা হয় রাশিয়ার সঙ্গে। তবে একই সময়ে রাশিয়ার সৈন্যরা বেশ কিছু ফ্রন্ট থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়।
রুশ সৈন্যদের এমন ব্যর্থতার পর গত ২১ সেপ্টেম্বর রাশিয়ার রিজার্ভ সৈন্য থেকে ‘পারশিয়াল মোবিলাইজেশনের’ ঘোষণা দেন পুতিন। সেই ঘোষণার পরপরই রাশিয়া সেনাবাহিনীর উচ্চপর্যায়ে বেশ রদবদল আনে। আল-জাজিরার প্রতিবেদন অনুসারে, ইউক্রেনে চলমান অভিযানে কমান্ডার হিসেবে জেনারেল সের্গেই সুরোভিকিনকে দায়িত্ব দেয় পুতিন প্রশাসন। গত ৮ অক্টোবর ইউক্রেন অভিযানে রাশিয়া সুবিধা করতে না পারায় তাঁকে ইউক্রেনে সার্বিক যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
সুরোভিকিনের দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই রাশিয়া ও ক্রিমিয়ার সংযোগের একমাত্র সেতুটিতে একটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণ নিয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেন একে অপরের দিকে আঙুল তুলেছে। যাই হোক, রাশিয়া ও ক্রিমিয়ার মধ্যকার একমাত্র সংযোগ সেতুতে ইউক্রেনের হাত রয়েছে মস্কোর—এমন দাবির এক দিন পরই সিরিজ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করল মস্কো। বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, ইউক্রেনের ‘অনেকগুলো’ শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।
এএফপির প্রতিবেদন অনুসারে, মোট ৮৪টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে রাশিয়া থেকে। ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী দানিস শামিহাল জানিয়েছেন, আটটি অঞ্চলের অন্তত ১১টি অতি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। শামিহাল জনগণকে বিদ্যুৎ, পানিসহ ইত্যাদি অতি প্রয়োজনীয় সেবার সংকটের বিষয়েও সতর্ক করেছেন।
এদিকে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, বিশেষ করে ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো, সামরিক কমান্ডের অবস্থান এবং যোগাযোগব্যবস্থাকে লক্ষ্য করেই এই হামলা চালানো হয়েছে। এএফপির প্রতিবেদন অনুসারে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন নিজে এ ধরনের স্থাপনায় হামলার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আজ (১০ অক্টোবর) সকালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে এবং সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাদের পরিকল্পনা অনুসারে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে নির্ভুল লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে।’
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন অনুসারে, সোমবার সকালে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়া ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোকেই হামলার লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে।
হামলায় কেবল ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো, সামরিক কমান্ডের অবস্থান এবং যোগাযোগব্যবস্থাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এমন নয়; এসব হামলার ‘কোলেটারাল ড্যামেজ’ বা হামলার ফলে আশপাশের ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে কিয়েভে জার্মান কনস্যুলেট এবং স্যামসাংয়ের কার্যালয়ও। তবে কেউ হতাহত হয়নি এসব ঘটনায়।
ইউক্রেনে রাশিয়ার ৮৪টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরও এটিকে হামলার ‘প্রথম পর্ব’ বলে উল্লেখ করেছেন রাশিয়ার নিরাপত্তা কাউন্সিলের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ। তিনি বলেছেন, ‘কেবল এই খেলার প্রথম পর্ব খেলা হয়েছে। আরও পর্ব এখনো বাকি।’ আরও পর্ব কী এবং তা কতটা ভয়াবহ হবে সে বিষয়ে অবগত ইউক্রেনও। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রি কুলেবা বলেছেন, ‘এই সিরিজ ক্ষেপণাস্ত্র হামলাই প্রমাণ করে দেয়, যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার সৈন্যদের কোনো অর্জন দেখতে না পেয়ে পুতিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।’
পুতিন যে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন তা তাঁর কথাতেই স্পষ্ট। পারশিয়াল মোবিলাইজেশন (আংশিক গণ-অংশগ্রহণ), প্রয়োজনে কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিয়ে রাখা থেকেই বিষয়টি বোঝা যায়।
রাশিয়ার এমন হুমকি এবং একদিনে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পশ্চিমা বিশ্বের প্রতিক্রিয়াও তীব্র।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাশিয়ার এই নতুন পদক্ষেপকে ‘ভয়ানক’ বলে বর্ণনা করেছেন। সেই সঙ্গে ইউক্রেনকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, ‘ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিকদের ওপর এই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলার মাধ্যমে এই যুদ্ধের চরিত্রে গভীর পরিবর্তন এসেছে।’ তবে তিনি ইউক্রেনে কোনো ধরনের সহায়তা পাঠাবেন কি না, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। মাখোঁর পাশাপাশি জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে ‘যুদ্ধকে অগ্রহণযোগ্যভাবে তীব্র করা’ হলো বলে মন্তব্য করেছেন।
ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিকদের ওপর এমন হামলা ভয়াবহ।’ তিনি ইউক্রেনে ন্যাটোর সহায়তা অব্যাহত রাখারও ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘ন্যাটো ইউক্রেনের সাহসী জনগণকে যতক্ষণ প্রয়োজন সহায়তা দিয়ে যাবে।’
প্রায় একই রকম প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে ইউরোপীয় কমিশন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৭ দেশের এই জোট এই হামলাকে বর্বরোচিত বলে আখ্যা দিয়েছে। জোটের বৈদেশিক নীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছেন, ‘একুশ শতকে রাশিয়ার এমন আচরণের কোনো স্থান নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউক্রেনকে সহায়তা করার বিষয়ে নিজ গতিতে এগিয়ে যাবে।’
ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নিন্দা করে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি বলেছেন, ‘এই হামলা অগ্রহণযোগ্য। এই হামলা পুতিনের দুর্বলতারই প্রকাশ, শক্তিমত্তার নয়।’ রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নিন্দা করেছেন পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিমোন সিনকোভস্কি ভেল সেকও। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনজুড়ে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা একটি বর্বরোচিত যুদ্ধাপরাধ।’
পশ্চিমা বিশ্বকে পুতিন কতটা আমল দেবেন সেটিই এখন দেখার বিষয়। তবে উভয় পক্ষের অনড় অবস্থান যে আলোচনার পথকে কেবল রুদ্ধই করে তার নজির এরই মধ্যে দেখা গেছে। এমন অবস্থান যুদ্ধকে আরও দীর্ঘায়িত করবে, যা খাদ্যসংকট ও অর্থনৈতিক মন্দার ঝুঁকিতে থাকা বিশ্ব পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে।
তথ্যসূত্র: আল–জাজিরা, এএফপি, বিবিসি, রয়টার্স
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
১৯ ঘণ্টা আগেপরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
৫ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় মোটামুটি সারা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। বাদ যায়নি তাঁর প্রতিবেশী দেশগুলো। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই জয়ের বড় প্রভাব পড়বে প্রতিবেশী দেশগুলোয়।
৭ দিন আগেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর বিশ্বের অনেক অঞ্চলে নতুন উদ্বেগ ও প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সতর্কভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, ইউক্রেন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, আর ইসরায়েল অনেকটা খুশিতে উদ্বেলিত। তবে বিশেষ নজরে আছে পারস্য উপসাগরীয় তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো।
৮ দিন আগে