অনলাইন ডেস্ক
নিজ ঘরেই বেকায়দায় পড়ে গেছেন মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। ওয়াশিংটনের অনেকেই তাঁর তাইওয়ান সফরকে বিপজ্জনক ও অর্থহীন বলে মনে করছেন। রয়েছে তাঁর সমর্থকও। তবে দেশটিতে তাঁর ১৮ ঘণ্টার সফর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে স্থগিত কূটনৈতিক সম্পর্কের ট্যাবু ভাঙার পাশাপাশি তাইওয়ানকে ঘিরে নজিরবিহীন সামরিক মহড়া চালাতে চীনকে উসকে দিয়েছে।
পুলিৎজার জয়ী সাংবাদিক টমাস ফ্রিডম্যান মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসে এক মতামত কলামে লিখেছেন, ‘এই সফর থেকে ইতিবাচক কোনো ফলাফল আসবে না।’ তিনি বলেন, ডেমোক্র্যাট নেতাদের তাইপে সফর তাইওয়ানকেও একটি বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলেছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমার গুরুতর সন্দেহ রয়েছে যে, তাইওয়ানের বর্তমান নেতৃবৃন্দ এই মুহূর্তে পেলোসির সফরটি খুশি মনে চেয়েছিলেন।’
পেলোসির এই সফর যদি উচ্চ ঝুঁকি তৈরি করেও থাকে তবে এর অর্জন কি খুবই কম? পেলোসির তাইওয়ান সফরে দেশটির জনগণ যেভাবে সাড়া দিয়েছে, তাকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ‘পেলোসি লাভফেস্ট’ বা পেলোসির জন্য ভালোবাসা উৎসব হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। যদিও প্রকৃত বাস্তবতা এখনো অজানা। তবে এটি নিশ্চিত যে, পেলোসির এই সফর দেশটির দোরগোড়ায় একটি যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রে তাইওয়ানের অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিত্ব বিষয়ক কার্যালয় (যা কার্যত দেশটিতে তাইওয়ানের দূতাবাস হিসেবেই কাজ করে) সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো মেইলে তাইওয়ানে পেলোসিকে স্বাগত জানানোর কিছু তথ্যচিত্র পাঠিয়েছে। মেইলে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকার পরও দেশটির রাজনৈতিক দলগুলো পেলোসিকে উষ্ণ অভ্যর্থনা দিয়েছে। এমনকি দেশটির বিরোধী দল কুওমিনতাং যা বেইজিং ঘেঁষা বলে পরিচিত, তারাও স্বাগত জানিয়েছে।
বাস্তবতা হলো, অফিশিয়াল বক্তব্যে বিপদের আভাস খুব কমই টের পাওয়া যায়। যেমন, তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন পেলোসির সঙ্গে তাঁর যে ছবি টুইটারে শেয়ার করেছেন, তা যুদ্ধের হুমকির বাস্তবতা থেকে কয়েক লাখ মাইল দূরে। কারণ, পেলোসি তাইপেতে প্রবেশ করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাইওয়ান প্রণালিতে সরাসরি সামরিক মহড়া চালানোর ঘোষণা দেয়। সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুসারে, চীন এরই মধ্যে মহড়া চালানো শুরুও করেছে। অথচ ওই ছবিতে তার কোনো কিছু ধরা পড়েনি।
মহড়া চালানোর জন্য নির্ধারিত অনেকগুলো এলাকাই তাইওয়ানের জলসীমার মধ্যে। নিজ জলসীমায় চীনা মহড়ার বিষয়ে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘এই মহড়া আমাদের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর ও শহরগুলোকে হুমকির মুখে ফেলা এবং একতরফভাবে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ভঙ্গ করার চেষ্টা।’
পেলোসির তাইওয়ান সফরে প্রতিবাদে কিছু বিক্ষোভও হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই সফরের বিষয়ে জনগণের প্রতিক্রিয়া ছিল উদ্যাপনের, নিদেনপক্ষে আনন্দের। ওয়াশিংটন পোস্টের তাইপে প্রতিনিধি লি কুয়োকে ৩৫ বছর বয়সী ইনগ্রিড হো নামে একজন বলেন, ‘আজ সবচেয়ে বেশি অসুখী চীন, সবচেয়ে বেশি সুখী আমি।’ হো আরও বলেন, ‘পেলোসি আসার কারণে যেকোনো পরিণতিই হতে পারে, তবে এই মুহূর্তে উত্তেজনা সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে।’
এই সফরের বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। যেমন, তাইওয়ান বংশোদ্ভূত মার্কিন সাংবাদিক ক্লারিসা ওয়েই মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনে লিখেছেন, ‘এই মুহূর্তে আমার পরিবারে সবচেয়ে বড় আলোচনার বিষয় হলো—কীভাবে আমি আমার গাড়ি ঠিক করার একটি ওয়ার্কশপে একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে পারব এবং আমার কক্ষে তেলাপোকার বিস্তার কীভাবে রোধ করা যায়।’
আবার, তাইওয়ানের লেখক ব্রায়ান হিওয়ে বলেছেন, ‘যদিও অধিকাংশেরই মনে হচ্ছে, তাইওয়ানবাসীরা চীনের ভয়ে বাংকারে ছুটে যাচ্ছে। তবে আমি মনে করি, অনেকেই এই সফরের তাৎপর্য সম্পর্কে সম্পূর্ণরূপে অজ্ঞাত।’
তাইওয়ানের ইতিহাসবিদ আলবার্ট উ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানকে বলেছেন, ‘পেলোসির তাইওয়ান সফর ইস্যুতে ওঠা আলোচনায় তাইওয়ানের ভবিষ্যৎ নিয়ে দেশটির নীতিনির্ধারকদের ভাবনা আড়ালেই রয়ে গেছে। যে বিষয়টি সামনে এসেছে তা হলো—“এখনো তাইওয়ানকে রক্ষা করতে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রয়োজন”।’
পেলোসির তাইওয়ান সফরের সময়ও ইউক্রেনের মতো একটি যুদ্ধের কালো ছায়া ঝুলে ছিল দেশটির আকাশে। তাইওয়ানের মতো ইউক্রেনও বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর ক্ষমতার রাজনীতির মাইক্রোস্কোপের নিচেই ছিল কয়েক যুগ। তবে সংঘাতের ক্রমাগত হুমকিও যে কাউকে বিরক্ত এবং উদাসীন করে তুলতে পারে, যেমনটা দেখা গেছে ইউক্রেনের বেলায়। যুক্তরাষ্ট্র আগেই সতর্ক করেছিল, ফেব্রুয়ারির শেষদিকে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু হতে পারে। কিন্তু এমন হুমকির সঙ্গে অভ্যস্ত কিয়েভ বিষয়টি আমলেই নেয়নি। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা এই সতর্কবার্তায় বিরক্তি প্রকাশ করেছিল। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানুয়ারিতে বলেছিলেন, ‘অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি অস্থিতিশীল’ হওয়াই ইউক্রেনের জন্য বড় সমস্যা। সে সময় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, ‘অনেকই ইঙ্গিত দিচ্ছেন যে, আগামীকালই যুদ্ধ শুরু হবে। কিন্তু এ ধরনের উদ্বেগ আমাদের রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর।’
কোনো সন্দেহ নেই, তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে তা থেকে শিখেছেন। এখান থেকে যে প্রধান শিক্ষা পাওয়া গেছে, তা হলো—যুক্তরাষ্ট্রের নৈকট্যে থাকো। পেলোসির এই সফর হয়তো তাইওয়ানের জন্য হুমকি তৈরি করবে। তবে পেলোসি সফর বাতিল করলে সেই হুমকি আরও কঠোর হয়ে উঠত। বিশেষ করে, গত এপ্রিলে পেলোসি কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পর তখনকার সফর বাতিল করায় এই সফর আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
তাইওয়ানের কর্মকর্তারাও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে লুকোচুরির সম্পর্ক বজায় রাখা নিয়ে বিরক্ত। যুক্তরাষ্ট্রে তাইওয়ানের ডি-ফ্যাক্টো রাষ্ট্রদূত সাইও বি-খিম ২০২০ সালের অক্টোবরে ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছিলেন, ‘আমাদের এই বিষয়ে স্বচ্ছতা প্রয়োজন।’
গত বছরের অক্টোবর তাইওয়ানের পাবলিক ওপিনিয়ন ফাউন্ডেশন পরিচালিত এক জরিপ থেকে দেখা যায়, অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ তাইওয়ানি নাগরিক মনে করেন, চীন তাদের দেশ আক্রমণ করলে যুক্তরাষ্ট্র সৈন্য পাঠাবে। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর সেই হার নেমে আসে সাড়ে ৩৪ শতাংশে।
পেলোসির তাইওয়ান সফর যুক্তরাষ্ট্রে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। দেশটির দুই দলই এই বিষয়টিকে সমর্থন করেছে। তবে এই সফর চীনের তরফ থেকে বড় ধরনের সামরিক প্রদর্শনীতেও উসকে দিয়েছে। তবে চীনের এই কার্যক্রম তাইওয়ানের জনগণকে বর্তমান স্থিতাবস্থা থেকে পূর্ণ স্বাধীনতার দিকে উৎসাহিত করছে। অন্তত সাম্প্রতিক সময়ে পরিচালিত বেশ কিছু জরিপ থেকে এই তথ্যই পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে এটি নিশ্চিত যে, পেলোসির তাইওয়ান সফর নিয়ে সমালোচনা থাকলেও তা কোনোভাবেই অর্থহীন নয়।
ওয়াশিংটন পোস্ট থেকে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান
নিজ ঘরেই বেকায়দায় পড়ে গেছেন মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। ওয়াশিংটনের অনেকেই তাঁর তাইওয়ান সফরকে বিপজ্জনক ও অর্থহীন বলে মনে করছেন। রয়েছে তাঁর সমর্থকও। তবে দেশটিতে তাঁর ১৮ ঘণ্টার সফর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে স্থগিত কূটনৈতিক সম্পর্কের ট্যাবু ভাঙার পাশাপাশি তাইওয়ানকে ঘিরে নজিরবিহীন সামরিক মহড়া চালাতে চীনকে উসকে দিয়েছে।
পুলিৎজার জয়ী সাংবাদিক টমাস ফ্রিডম্যান মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসে এক মতামত কলামে লিখেছেন, ‘এই সফর থেকে ইতিবাচক কোনো ফলাফল আসবে না।’ তিনি বলেন, ডেমোক্র্যাট নেতাদের তাইপে সফর তাইওয়ানকেও একটি বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলেছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমার গুরুতর সন্দেহ রয়েছে যে, তাইওয়ানের বর্তমান নেতৃবৃন্দ এই মুহূর্তে পেলোসির সফরটি খুশি মনে চেয়েছিলেন।’
পেলোসির এই সফর যদি উচ্চ ঝুঁকি তৈরি করেও থাকে তবে এর অর্জন কি খুবই কম? পেলোসির তাইওয়ান সফরে দেশটির জনগণ যেভাবে সাড়া দিয়েছে, তাকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ‘পেলোসি লাভফেস্ট’ বা পেলোসির জন্য ভালোবাসা উৎসব হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। যদিও প্রকৃত বাস্তবতা এখনো অজানা। তবে এটি নিশ্চিত যে, পেলোসির এই সফর দেশটির দোরগোড়ায় একটি যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রে তাইওয়ানের অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিত্ব বিষয়ক কার্যালয় (যা কার্যত দেশটিতে তাইওয়ানের দূতাবাস হিসেবেই কাজ করে) সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো মেইলে তাইওয়ানে পেলোসিকে স্বাগত জানানোর কিছু তথ্যচিত্র পাঠিয়েছে। মেইলে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকার পরও দেশটির রাজনৈতিক দলগুলো পেলোসিকে উষ্ণ অভ্যর্থনা দিয়েছে। এমনকি দেশটির বিরোধী দল কুওমিনতাং যা বেইজিং ঘেঁষা বলে পরিচিত, তারাও স্বাগত জানিয়েছে।
বাস্তবতা হলো, অফিশিয়াল বক্তব্যে বিপদের আভাস খুব কমই টের পাওয়া যায়। যেমন, তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন পেলোসির সঙ্গে তাঁর যে ছবি টুইটারে শেয়ার করেছেন, তা যুদ্ধের হুমকির বাস্তবতা থেকে কয়েক লাখ মাইল দূরে। কারণ, পেলোসি তাইপেতে প্রবেশ করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাইওয়ান প্রণালিতে সরাসরি সামরিক মহড়া চালানোর ঘোষণা দেয়। সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুসারে, চীন এরই মধ্যে মহড়া চালানো শুরুও করেছে। অথচ ওই ছবিতে তার কোনো কিছু ধরা পড়েনি।
মহড়া চালানোর জন্য নির্ধারিত অনেকগুলো এলাকাই তাইওয়ানের জলসীমার মধ্যে। নিজ জলসীমায় চীনা মহড়ার বিষয়ে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘এই মহড়া আমাদের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর ও শহরগুলোকে হুমকির মুখে ফেলা এবং একতরফভাবে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ভঙ্গ করার চেষ্টা।’
পেলোসির তাইওয়ান সফরে প্রতিবাদে কিছু বিক্ষোভও হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই সফরের বিষয়ে জনগণের প্রতিক্রিয়া ছিল উদ্যাপনের, নিদেনপক্ষে আনন্দের। ওয়াশিংটন পোস্টের তাইপে প্রতিনিধি লি কুয়োকে ৩৫ বছর বয়সী ইনগ্রিড হো নামে একজন বলেন, ‘আজ সবচেয়ে বেশি অসুখী চীন, সবচেয়ে বেশি সুখী আমি।’ হো আরও বলেন, ‘পেলোসি আসার কারণে যেকোনো পরিণতিই হতে পারে, তবে এই মুহূর্তে উত্তেজনা সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে।’
এই সফরের বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। যেমন, তাইওয়ান বংশোদ্ভূত মার্কিন সাংবাদিক ক্লারিসা ওয়েই মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনে লিখেছেন, ‘এই মুহূর্তে আমার পরিবারে সবচেয়ে বড় আলোচনার বিষয় হলো—কীভাবে আমি আমার গাড়ি ঠিক করার একটি ওয়ার্কশপে একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে পারব এবং আমার কক্ষে তেলাপোকার বিস্তার কীভাবে রোধ করা যায়।’
আবার, তাইওয়ানের লেখক ব্রায়ান হিওয়ে বলেছেন, ‘যদিও অধিকাংশেরই মনে হচ্ছে, তাইওয়ানবাসীরা চীনের ভয়ে বাংকারে ছুটে যাচ্ছে। তবে আমি মনে করি, অনেকেই এই সফরের তাৎপর্য সম্পর্কে সম্পূর্ণরূপে অজ্ঞাত।’
তাইওয়ানের ইতিহাসবিদ আলবার্ট উ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানকে বলেছেন, ‘পেলোসির তাইওয়ান সফর ইস্যুতে ওঠা আলোচনায় তাইওয়ানের ভবিষ্যৎ নিয়ে দেশটির নীতিনির্ধারকদের ভাবনা আড়ালেই রয়ে গেছে। যে বিষয়টি সামনে এসেছে তা হলো—“এখনো তাইওয়ানকে রক্ষা করতে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রয়োজন”।’
পেলোসির তাইওয়ান সফরের সময়ও ইউক্রেনের মতো একটি যুদ্ধের কালো ছায়া ঝুলে ছিল দেশটির আকাশে। তাইওয়ানের মতো ইউক্রেনও বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর ক্ষমতার রাজনীতির মাইক্রোস্কোপের নিচেই ছিল কয়েক যুগ। তবে সংঘাতের ক্রমাগত হুমকিও যে কাউকে বিরক্ত এবং উদাসীন করে তুলতে পারে, যেমনটা দেখা গেছে ইউক্রেনের বেলায়। যুক্তরাষ্ট্র আগেই সতর্ক করেছিল, ফেব্রুয়ারির শেষদিকে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু হতে পারে। কিন্তু এমন হুমকির সঙ্গে অভ্যস্ত কিয়েভ বিষয়টি আমলেই নেয়নি। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা এই সতর্কবার্তায় বিরক্তি প্রকাশ করেছিল। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানুয়ারিতে বলেছিলেন, ‘অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি অস্থিতিশীল’ হওয়াই ইউক্রেনের জন্য বড় সমস্যা। সে সময় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, ‘অনেকই ইঙ্গিত দিচ্ছেন যে, আগামীকালই যুদ্ধ শুরু হবে। কিন্তু এ ধরনের উদ্বেগ আমাদের রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর।’
কোনো সন্দেহ নেই, তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে তা থেকে শিখেছেন। এখান থেকে যে প্রধান শিক্ষা পাওয়া গেছে, তা হলো—যুক্তরাষ্ট্রের নৈকট্যে থাকো। পেলোসির এই সফর হয়তো তাইওয়ানের জন্য হুমকি তৈরি করবে। তবে পেলোসি সফর বাতিল করলে সেই হুমকি আরও কঠোর হয়ে উঠত। বিশেষ করে, গত এপ্রিলে পেলোসি কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পর তখনকার সফর বাতিল করায় এই সফর আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
তাইওয়ানের কর্মকর্তারাও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে লুকোচুরির সম্পর্ক বজায় রাখা নিয়ে বিরক্ত। যুক্তরাষ্ট্রে তাইওয়ানের ডি-ফ্যাক্টো রাষ্ট্রদূত সাইও বি-খিম ২০২০ সালের অক্টোবরে ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছিলেন, ‘আমাদের এই বিষয়ে স্বচ্ছতা প্রয়োজন।’
গত বছরের অক্টোবর তাইওয়ানের পাবলিক ওপিনিয়ন ফাউন্ডেশন পরিচালিত এক জরিপ থেকে দেখা যায়, অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ তাইওয়ানি নাগরিক মনে করেন, চীন তাদের দেশ আক্রমণ করলে যুক্তরাষ্ট্র সৈন্য পাঠাবে। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর সেই হার নেমে আসে সাড়ে ৩৪ শতাংশে।
পেলোসির তাইওয়ান সফর যুক্তরাষ্ট্রে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। দেশটির দুই দলই এই বিষয়টিকে সমর্থন করেছে। তবে এই সফর চীনের তরফ থেকে বড় ধরনের সামরিক প্রদর্শনীতেও উসকে দিয়েছে। তবে চীনের এই কার্যক্রম তাইওয়ানের জনগণকে বর্তমান স্থিতাবস্থা থেকে পূর্ণ স্বাধীনতার দিকে উৎসাহিত করছে। অন্তত সাম্প্রতিক সময়ে পরিচালিত বেশ কিছু জরিপ থেকে এই তথ্যই পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে এটি নিশ্চিত যে, পেলোসির তাইওয়ান সফর নিয়ে সমালোচনা থাকলেও তা কোনোভাবেই অর্থহীন নয়।
ওয়াশিংটন পোস্ট থেকে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
১ দিন আগেপরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
৫ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় মোটামুটি সারা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। বাদ যায়নি তাঁর প্রতিবেশী দেশগুলো। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই জয়ের বড় প্রভাব পড়বে প্রতিবেশী দেশগুলোয়।
৮ দিন আগেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর বিশ্বের অনেক অঞ্চলে নতুন উদ্বেগ ও প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সতর্কভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, ইউক্রেন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, আর ইসরায়েল অনেকটা খুশিতে উদ্বেলিত। তবে বিশেষ নজরে আছে পারস্য উপসাগরীয় তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো।
৮ দিন আগে