প্রযুক্তি ডেস্ক
জ্যাক ডরসি, নোয়াহ গ্লাস, বিজ স্টোন ও ইভান উইলিয়ামসের হাত ধরে ২০০৬ সালের ২১ মার্চ যাত্রা শুরু করেছিল টুইটার। গত অক্টোবরে মাস্কের টুইটার অধিগ্রহণের পর থেকে প্ল্যাটফর্মটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। গত কয়েক মাস ঘটনাবহুল সময় পার করল টুইটার। অথচ এই মাইক্রো ব্লগিং সাইটের শুরুর সময়টা ছিল একদমই ভিন্ন। বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারের জন্মদিনে জেনে নেওয়া যাক এর আদ্যোপান্ত।
২০০৪ সালে ‘ওডেহো’ নামের পডকাস্ট সার্ভিস চালু করেছিলেন ইভান উইলিয়াম। তিনি গুগলের একজন সাবেক কর্মী হওয়ার পাশাপাশি ছিলেন বিখ্যাত ব্লগিং সাইট ব্লগার ডট কমের প্রতিষ্ঠাতা। উইলিয়ামের সঙ্গে যোগ দেন তাঁর সহকর্মী বিজ স্টোন ও নোয়া গ্লাস। তবে ২০০৫ সালে অ্যাপল তাদের আইটিউনস প্ল্যাটফর্মে পডকাস্ট যুক্ত করার ঘোষণা দেওয়ার পর ওডেহোর প্রতিষ্ঠাতারা দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। কারণ তাঁরা জানতেন তাঁদের পক্ষে অ্যাপলের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করা সম্ভব না।
ওডেহোর প্রতিষ্ঠাতারা তাঁদের কর্মীদের নতুন আইডিয়া নিয়ে ভাবতে বলেন। ওডেহোতে কর্মরত ইঞ্জিনিয়ার জ্যাক ডরসি তখন টেক্সটভিত্তিক সার্ভিস চালু করার প্রস্তাব দেন। নোয়া গ্লাসের নাম প্রস্তাব করে ‘Twttr’। ২০০৬ সালের জুন মাসে ডরসি প্রথম টুইট করে ‘just setting up my twttr’। টুইটারের প্রোটোটাইপ শুরুতে ওডেহোর কর্মীদের জন্য একটি অভ্যন্তরীণ পরিষেবা হিসেবে ব্যবহৃত হতো। পরে সম্পূর্ণ সংস্করণটি ২০০৬ সালের ১৫ জুলাই সাধারণ মানুষের জন্য চালু করা হয়। তবে ওডেহোর বিনিয়োগকারীরা এই প্রকল্পকে খুব একটা ভালো চোখে নেননি। ইভান উইলিয়াম ওডেহোর সব শেয়ার কিনে নেযন এবং নোয়া গ্লাসকে চাকরিচ্যুত করেন।
টুইটার উন্মোচনের ছয় মাস পর এর নামে ভাওয়েল যুক্ত করে ‘Twitter’ নাম দেওয়া হয়। মূলত টুইটার ডট কমের ডোমেইন পাওয়ার পরেই নাম বদলানোর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
২০০৭ সালে প্রতি ত্রৈমাসিকে ৪ লাখ টুইট পোস্ট করা হয়েছে। ওই বছরই জ্যাক ডরসি কোম্পানির প্রথম প্রধান নির্বাহী হিসেবে নিযুক্ত হন। ২০০৮ সালে টুইটের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ কোটিতে। ২০০৯ সালে টুইটারকে ‘ব্রেকআউট অব দ্য ইয়ার’-এর পুরস্কার দেয় ওয়েবি অ্যাওয়ার্ড। ২০১০ সালের মার্চের মধ্যে প্ল্যাটফর্মে ৭০ হাজারেরও বেশি ব্যবহারকারী যুক্ত হন। চলতি মাসের হিসাব অনুযায়ী, টুইটারে প্রায় ৪৫ কোটি সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছেন।
টুইটারের ব্যবহার মূলত বাড়ে বিভিন্ন ব্রেকিং নিউজ প্রচারের মাধ্যমে। তা প্রচার করত সাধারণ মানুষ। টুইটার সংক্ষিপ্ত টেক্সটভিত্তিক সোশ্যাল মিডিয়া হওয়ার কারণে এখানে নিউজগুলো বেশি প্রচারিত হতো। উদাহরণস্বরূপ, ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের হাডসন নদীতে প্লেন বিধ্বস্তের ছবি তুলে একজন যাত্রী ‘টুইট পিক ডট কম’-এ পোস্ট করলে লাখ লাখ মানুষ সেই ছবি দেখতে গেলে সার্ভার ডাউন হয়ে পড়ে।
২০০৯ সালে বিং ও গুগলের সঙ্গে যথাক্রমে ১ ও ১ দশমিক ৫ কোটি ডলারের চুক্তি করে তাদের সার্চ ইঞ্জিনে টুইট যোগ করা হয়। অর্থাৎ, সার্চ ইঞ্জিন দুটিতে সার্চ দিলে টুইটারের টুইটও রেজাল্টে আসবে। তবে তা শুধু মোবাইল ফোনে কাজ হতো। ডেস্কটপে এই ফিচার আসে ২০১৫ সালে।
পরে ২০১০ সালে প্রমোটেড টুইট নামে আরেকটা সার্ভিস চালু করা হয়, যেখানে টাকা দিয়ে কোনো কোম্পানির বা ব্যক্তির টুইট, অ্যাকাউন্ট, হ্যাশট্যাগ অন্যের ফিডে দেখানো যাবে। এই সার্ভিসের মাধ্যমে ২০১৫ সালে ৪ কোটি ডলার আয় করে টুইটার।
মাস্কের টুইটার অধিগ্রহণ
ঘটনার শুরু ২০২২ সালের মার্চে। ওই মাসের এক সাদামাটা সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের সান জোসের এয়ারবিএনবিতে তৎকালীন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক একটি বৈঠকের আয়োজন করেন। বৈঠকটি টুইটারের জন্য ছিল বিশেষ কিছু। কারণ তার অল্প কয়েক দিন আগেই মাস্ক টুইটারের অন্যতম শেয়ারহোল্ডার হয়েছেন। তবে তখনো টুইটারের চেয়ারম্যান ব্রেট টেলর বৈঠকটি ডাকার কারণ সম্বন্ধে জানতেন না। টুইটারের অংশীদার (শেয়ারহোল্ডার) হওয়ার পর কোম্পানিটির বোর্ডেরও অংশ হওয়ার ইচ্ছা হয়েছিল মাস্কের। সেই উদ্দেশ্য সফল করতেই মূলত তিনি বৈঠকটি ডেকেছিলেন।
বৈঠকের কয়েক দিন পর মাস্ক ঘোষণা করেন, তিনি টুইটারের বোর্ডে যোগ দিয়েছেন। সেই ঘোষণা ছিল একটি টানটান উত্তেজনাময়-পরবর্তী ছয় মাসের ঘটনাবহুল এক টুইটারকাণ্ডের শুরু। সত্যিকার অর্থেই মার্চ মাসের পর থেকে টুইটার ও ইলন মাস্ককে ঘিরে যা ঘটেছে, তা সিলিকন ভ্যালির ইতিহাসে কেউ দেখেনি। এপ্রিলের শুরুর দিকে মাস্ক টুইটার নিয়ে নিয়মিত টুইট করতে শুরু করেন এবং কীভাবে টুইটারে আরও পরিবর্তন আনা যায়, সেসব নিয়ে পোস্ট করতে থাকেন। তাঁকে তখন টুইটার বোর্ডের সদস্য হিসেবে বেশ উৎফুল্লই মনে হচ্ছিল।
তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর বের হতে শুরু করে, টুইটারের প্রধান নির্বাহী (সিইও) পরাগ আগরওয়ালের সঙ্গে ইলন মাস্কের বৈঠকগুলো হৃদ্যতাপূর্ণ হচ্ছে না। টুইটার প্ল্যাটফর্মে পরিবর্তন আনার বিষয়ে তাঁরা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারছেন না। এ নিয়ে তাঁদের মতবিরোধ একসময় চরমে ওঠে। গুঞ্জন ওঠে, টুইটার কিনতে চান ইলন মাস্ক।
এরপর এপ্রিলের ১৪ তারিখে ইলন মাস্ক প্রকাশ্যে বোমাটি ফাটান এবং ঘোষণা দেন, তিনি টুইটার কিনতে চান। তখন বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানায়, মাস্ক ৪৪ বিলিয়ন ডলারে টুইটার কেনার প্রস্তাব দিয়েছেন। টুইটার বোর্ড প্রাথমিকভাবে তাঁর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এবং জোর করে মাস্ক যাতে টুইটার কিনতে না পারেন, সে জন্য ‘পয়জন পিল’ নামে একটি কোম্পানি বিধিমালাও তৈরি করেছিল।
পরে টুইটার বোর্ড তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে এবং টুইটার বিক্রির বিষয়ে মাস্কের সঙ্গে চুক্তি করে। এপ্রিলের ২৫ তারিখে টুইটার ঘোষণা করে, তারা মাস্কের টুইটার ক্রয়বিষয়ক প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছে। ওই দিনই মাস্ক খুশিতে টুইট করেন—‘ইয়েসসসসস’ লিখে।
এরপর হঠাৎ করেই মাস্ক টুইটারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উত্থাপন করতে শুরু করেন। যেমন—টুইটার তার পথ হারিয়েছে, এটি মানুষের বাকস্বাধীনতা খর্ব করে ইত্যাদি। এরপর তিনি সবচেয়ে গুরুতর যে অভিযোগটি তোলেন সেটি হচ্ছে, ভুয়া অ্যাকাউন্ট দিয়ে টুইটার ভরা।
এরপর থেকে তিনি টুইটার কর্তৃপক্ষকে বারবার প্রকৃত ব্যবহারকারীর তথ্য সরবরাহ করতে চাপ দিতে থাকেন। টুইটারের নির্বাহীরা বলেন, টুইটারে ভুয়া অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ৫ শতাংশের কম। কিন্তু মাস্ক তা বিশ্বাস করতে নারাজ ছিলেন। তিনি বারবার প্রকৃত ব্যবহারকারীর তথ্য চাইতে থাকেন টুইটারের কাছে। মাস্কের দাবি, টুইটার কর্তৃপক্ষের দাবি করা অ্যাকাউন্টের চেয়ে অনেক বেশি ভুয়া অ্যাকাউন্ট আছে এই প্ল্যাটফর্মে।
এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে টুইটারের চুক্তিটি হুমকির মুখে পড়ে। ৪ জুলাই মাস্ক ঘোষণা দেন, তিনি আর টুইটার কিনতে চান না। চুক্তি থেকে বের হয়ে আসতে চান। কিন্তু বেঁকে বসে টুইটার কর্তৃপক্ষ। তারা জানায়, টুইটার কিনতে ইলন আইনত বাধ্য। চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।
শেষমেশ বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। মাস্কের বিরুদ্ধে মামলা করে টুইটার। এরপর মাস্ক টুইটার কিনতে বাধ্য কি না, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে উভয় পক্ষের আইনজীবীকে ১৭ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়্যার অঙ্গরাজ্যের একটি আদালতে উপস্থিত হতে বলা হয়।
এরপর হঠাৎ করেই ঘটনার মোড় অন্য দিকে ঘুরে যায়। মাস্ক বলেন, ‘তিনি টুইটার কিনবেন। চুক্তিটি সচল থাকবে।’ ইলন মাস্কের এই ঘোষণার পর টুইটার কর্তৃপক্ষ মামলাটি স্থগিত করে। দীর্ঘ ছয় মাস ধরে জল ঘোলা করার পর টুইটারের নিয়ন্ত্রণ নেন ইলন মাস্ক। টুইটারের অন্যতম বিনিয়োগকারী রস গারবারের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, ৪৪ বিলিয়ন ডলারে টুইটার কিনে নিয়েছেন মাস্ক। ২৭ অক্টোবর এই প্ল্যাটফর্মের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি।
জ্যাক ডরসি, নোয়াহ গ্লাস, বিজ স্টোন ও ইভান উইলিয়ামসের হাত ধরে ২০০৬ সালের ২১ মার্চ যাত্রা শুরু করেছিল টুইটার। গত অক্টোবরে মাস্কের টুইটার অধিগ্রহণের পর থেকে প্ল্যাটফর্মটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। গত কয়েক মাস ঘটনাবহুল সময় পার করল টুইটার। অথচ এই মাইক্রো ব্লগিং সাইটের শুরুর সময়টা ছিল একদমই ভিন্ন। বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারের জন্মদিনে জেনে নেওয়া যাক এর আদ্যোপান্ত।
২০০৪ সালে ‘ওডেহো’ নামের পডকাস্ট সার্ভিস চালু করেছিলেন ইভান উইলিয়াম। তিনি গুগলের একজন সাবেক কর্মী হওয়ার পাশাপাশি ছিলেন বিখ্যাত ব্লগিং সাইট ব্লগার ডট কমের প্রতিষ্ঠাতা। উইলিয়ামের সঙ্গে যোগ দেন তাঁর সহকর্মী বিজ স্টোন ও নোয়া গ্লাস। তবে ২০০৫ সালে অ্যাপল তাদের আইটিউনস প্ল্যাটফর্মে পডকাস্ট যুক্ত করার ঘোষণা দেওয়ার পর ওডেহোর প্রতিষ্ঠাতারা দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। কারণ তাঁরা জানতেন তাঁদের পক্ষে অ্যাপলের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করা সম্ভব না।
ওডেহোর প্রতিষ্ঠাতারা তাঁদের কর্মীদের নতুন আইডিয়া নিয়ে ভাবতে বলেন। ওডেহোতে কর্মরত ইঞ্জিনিয়ার জ্যাক ডরসি তখন টেক্সটভিত্তিক সার্ভিস চালু করার প্রস্তাব দেন। নোয়া গ্লাসের নাম প্রস্তাব করে ‘Twttr’। ২০০৬ সালের জুন মাসে ডরসি প্রথম টুইট করে ‘just setting up my twttr’। টুইটারের প্রোটোটাইপ শুরুতে ওডেহোর কর্মীদের জন্য একটি অভ্যন্তরীণ পরিষেবা হিসেবে ব্যবহৃত হতো। পরে সম্পূর্ণ সংস্করণটি ২০০৬ সালের ১৫ জুলাই সাধারণ মানুষের জন্য চালু করা হয়। তবে ওডেহোর বিনিয়োগকারীরা এই প্রকল্পকে খুব একটা ভালো চোখে নেননি। ইভান উইলিয়াম ওডেহোর সব শেয়ার কিনে নেযন এবং নোয়া গ্লাসকে চাকরিচ্যুত করেন।
টুইটার উন্মোচনের ছয় মাস পর এর নামে ভাওয়েল যুক্ত করে ‘Twitter’ নাম দেওয়া হয়। মূলত টুইটার ডট কমের ডোমেইন পাওয়ার পরেই নাম বদলানোর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
২০০৭ সালে প্রতি ত্রৈমাসিকে ৪ লাখ টুইট পোস্ট করা হয়েছে। ওই বছরই জ্যাক ডরসি কোম্পানির প্রথম প্রধান নির্বাহী হিসেবে নিযুক্ত হন। ২০০৮ সালে টুইটের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ কোটিতে। ২০০৯ সালে টুইটারকে ‘ব্রেকআউট অব দ্য ইয়ার’-এর পুরস্কার দেয় ওয়েবি অ্যাওয়ার্ড। ২০১০ সালের মার্চের মধ্যে প্ল্যাটফর্মে ৭০ হাজারেরও বেশি ব্যবহারকারী যুক্ত হন। চলতি মাসের হিসাব অনুযায়ী, টুইটারে প্রায় ৪৫ কোটি সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছেন।
টুইটারের ব্যবহার মূলত বাড়ে বিভিন্ন ব্রেকিং নিউজ প্রচারের মাধ্যমে। তা প্রচার করত সাধারণ মানুষ। টুইটার সংক্ষিপ্ত টেক্সটভিত্তিক সোশ্যাল মিডিয়া হওয়ার কারণে এখানে নিউজগুলো বেশি প্রচারিত হতো। উদাহরণস্বরূপ, ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের হাডসন নদীতে প্লেন বিধ্বস্তের ছবি তুলে একজন যাত্রী ‘টুইট পিক ডট কম’-এ পোস্ট করলে লাখ লাখ মানুষ সেই ছবি দেখতে গেলে সার্ভার ডাউন হয়ে পড়ে।
২০০৯ সালে বিং ও গুগলের সঙ্গে যথাক্রমে ১ ও ১ দশমিক ৫ কোটি ডলারের চুক্তি করে তাদের সার্চ ইঞ্জিনে টুইট যোগ করা হয়। অর্থাৎ, সার্চ ইঞ্জিন দুটিতে সার্চ দিলে টুইটারের টুইটও রেজাল্টে আসবে। তবে তা শুধু মোবাইল ফোনে কাজ হতো। ডেস্কটপে এই ফিচার আসে ২০১৫ সালে।
পরে ২০১০ সালে প্রমোটেড টুইট নামে আরেকটা সার্ভিস চালু করা হয়, যেখানে টাকা দিয়ে কোনো কোম্পানির বা ব্যক্তির টুইট, অ্যাকাউন্ট, হ্যাশট্যাগ অন্যের ফিডে দেখানো যাবে। এই সার্ভিসের মাধ্যমে ২০১৫ সালে ৪ কোটি ডলার আয় করে টুইটার।
মাস্কের টুইটার অধিগ্রহণ
ঘটনার শুরু ২০২২ সালের মার্চে। ওই মাসের এক সাদামাটা সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের সান জোসের এয়ারবিএনবিতে তৎকালীন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক একটি বৈঠকের আয়োজন করেন। বৈঠকটি টুইটারের জন্য ছিল বিশেষ কিছু। কারণ তার অল্প কয়েক দিন আগেই মাস্ক টুইটারের অন্যতম শেয়ারহোল্ডার হয়েছেন। তবে তখনো টুইটারের চেয়ারম্যান ব্রেট টেলর বৈঠকটি ডাকার কারণ সম্বন্ধে জানতেন না। টুইটারের অংশীদার (শেয়ারহোল্ডার) হওয়ার পর কোম্পানিটির বোর্ডেরও অংশ হওয়ার ইচ্ছা হয়েছিল মাস্কের। সেই উদ্দেশ্য সফল করতেই মূলত তিনি বৈঠকটি ডেকেছিলেন।
বৈঠকের কয়েক দিন পর মাস্ক ঘোষণা করেন, তিনি টুইটারের বোর্ডে যোগ দিয়েছেন। সেই ঘোষণা ছিল একটি টানটান উত্তেজনাময়-পরবর্তী ছয় মাসের ঘটনাবহুল এক টুইটারকাণ্ডের শুরু। সত্যিকার অর্থেই মার্চ মাসের পর থেকে টুইটার ও ইলন মাস্ককে ঘিরে যা ঘটেছে, তা সিলিকন ভ্যালির ইতিহাসে কেউ দেখেনি। এপ্রিলের শুরুর দিকে মাস্ক টুইটার নিয়ে নিয়মিত টুইট করতে শুরু করেন এবং কীভাবে টুইটারে আরও পরিবর্তন আনা যায়, সেসব নিয়ে পোস্ট করতে থাকেন। তাঁকে তখন টুইটার বোর্ডের সদস্য হিসেবে বেশ উৎফুল্লই মনে হচ্ছিল।
তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর বের হতে শুরু করে, টুইটারের প্রধান নির্বাহী (সিইও) পরাগ আগরওয়ালের সঙ্গে ইলন মাস্কের বৈঠকগুলো হৃদ্যতাপূর্ণ হচ্ছে না। টুইটার প্ল্যাটফর্মে পরিবর্তন আনার বিষয়ে তাঁরা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারছেন না। এ নিয়ে তাঁদের মতবিরোধ একসময় চরমে ওঠে। গুঞ্জন ওঠে, টুইটার কিনতে চান ইলন মাস্ক।
এরপর এপ্রিলের ১৪ তারিখে ইলন মাস্ক প্রকাশ্যে বোমাটি ফাটান এবং ঘোষণা দেন, তিনি টুইটার কিনতে চান। তখন বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানায়, মাস্ক ৪৪ বিলিয়ন ডলারে টুইটার কেনার প্রস্তাব দিয়েছেন। টুইটার বোর্ড প্রাথমিকভাবে তাঁর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এবং জোর করে মাস্ক যাতে টুইটার কিনতে না পারেন, সে জন্য ‘পয়জন পিল’ নামে একটি কোম্পানি বিধিমালাও তৈরি করেছিল।
পরে টুইটার বোর্ড তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে এবং টুইটার বিক্রির বিষয়ে মাস্কের সঙ্গে চুক্তি করে। এপ্রিলের ২৫ তারিখে টুইটার ঘোষণা করে, তারা মাস্কের টুইটার ক্রয়বিষয়ক প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছে। ওই দিনই মাস্ক খুশিতে টুইট করেন—‘ইয়েসসসসস’ লিখে।
এরপর হঠাৎ করেই মাস্ক টুইটারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উত্থাপন করতে শুরু করেন। যেমন—টুইটার তার পথ হারিয়েছে, এটি মানুষের বাকস্বাধীনতা খর্ব করে ইত্যাদি। এরপর তিনি সবচেয়ে গুরুতর যে অভিযোগটি তোলেন সেটি হচ্ছে, ভুয়া অ্যাকাউন্ট দিয়ে টুইটার ভরা।
এরপর থেকে তিনি টুইটার কর্তৃপক্ষকে বারবার প্রকৃত ব্যবহারকারীর তথ্য সরবরাহ করতে চাপ দিতে থাকেন। টুইটারের নির্বাহীরা বলেন, টুইটারে ভুয়া অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ৫ শতাংশের কম। কিন্তু মাস্ক তা বিশ্বাস করতে নারাজ ছিলেন। তিনি বারবার প্রকৃত ব্যবহারকারীর তথ্য চাইতে থাকেন টুইটারের কাছে। মাস্কের দাবি, টুইটার কর্তৃপক্ষের দাবি করা অ্যাকাউন্টের চেয়ে অনেক বেশি ভুয়া অ্যাকাউন্ট আছে এই প্ল্যাটফর্মে।
এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে টুইটারের চুক্তিটি হুমকির মুখে পড়ে। ৪ জুলাই মাস্ক ঘোষণা দেন, তিনি আর টুইটার কিনতে চান না। চুক্তি থেকে বের হয়ে আসতে চান। কিন্তু বেঁকে বসে টুইটার কর্তৃপক্ষ। তারা জানায়, টুইটার কিনতে ইলন আইনত বাধ্য। চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।
শেষমেশ বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। মাস্কের বিরুদ্ধে মামলা করে টুইটার। এরপর মাস্ক টুইটার কিনতে বাধ্য কি না, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে উভয় পক্ষের আইনজীবীকে ১৭ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়্যার অঙ্গরাজ্যের একটি আদালতে উপস্থিত হতে বলা হয়।
এরপর হঠাৎ করেই ঘটনার মোড় অন্য দিকে ঘুরে যায়। মাস্ক বলেন, ‘তিনি টুইটার কিনবেন। চুক্তিটি সচল থাকবে।’ ইলন মাস্কের এই ঘোষণার পর টুইটার কর্তৃপক্ষ মামলাটি স্থগিত করে। দীর্ঘ ছয় মাস ধরে জল ঘোলা করার পর টুইটারের নিয়ন্ত্রণ নেন ইলন মাস্ক। টুইটারের অন্যতম বিনিয়োগকারী রস গারবারের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, ৪৪ বিলিয়ন ডলারে টুইটার কিনে নিয়েছেন মাস্ক। ২৭ অক্টোবর এই প্ল্যাটফর্মের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি।
ষড়যন্ত্র তত্ত্ববিদ প্রচারক অ্যালেক্স জোন্সের প্ল্যাটফর্ম ইনফোওয়ার্স কিনতে যাচ্ছে প্যারোডি নিউজ ওয়েবসাইট দ্য অনিয়ন। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে দ্য অনিয়ন জানিয়েছে, তারা ‘তুলনামূলক কম বিদ্বেষপূর্ণ বিভ্রান্তিকর তথ্যের’ মাধ্যমে ইনফোওয়ার্সের ‘বিভ্রান্তিকর তথ্যের লাগাতার স্রোত’ প্রতিস্থাপন করতে চায়।
১১ ঘণ্টা আগেদেশে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট চালুর লক্ষ্যে খসড়া নির্দেশিকা চূড়ান্ত করতে জনগণের মতামত চেয়েছে টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, স্যাটেলাইট ইন্টারনেট চালুর এ পদক্ষেপ ব্যাকহোলিং, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও গ্রাহকের ডেটা ব্যবহারের পাশাপাশি ডিজিটাল বিভাজন দূর করে স
১৫ ঘণ্টা আগেহোয়াটসঅ্যাপের চ্যাটকে আরও আকর্ষণীয় করতে কাস্টম স্টিকার তৈরি করে পাঠান অনেকেই। এই ধরনের স্টিকার খুব সহজেই তৈরি করা যায়। এই ফিচারটি মাধ্যমের ব্যক্তির চেহারা বা বস্তুকে ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আলাদা করে কাস্টম স্টিকার তৈরি করা যায়। প্ল্যাটফর্মটির কাস্টম স্টিকার অপশন তৈরি করার জন্য নিজের ছবি বা পছন্দমতো অন্য
১৬ ঘণ্টা আগেজনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এখন থেকে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন প্ল্যাটফর্ম এক্স (সাবেক টুইটার)-এর অফিশিয়াল অ্যাকাউন্ট থেকে আর কনটেন্ট পোস্ট বা শেয়ার করবে না। তবে সংবাদমাধ্যমটির কনটেন্ট আগের মতোই এক্স-এ শেয়ার করতে পারবেন পাঠকেরা।
১৭ ঘণ্টা আগে