সানজিদা সামরিন
এখনো এমন কয়টি পরিবার পাওয়া যাবে, যার পুরুষ সদস্যরা নিজের কাজটি অন্তত নিজে করেন? একটা ছোট্ট উদাহরণ দিয়েই বলি, টুম্পা আর অর্ক দুজনেই কর্মজীবী। বাড়ি ফেরার পর গোটা সংসার যেন টুম্পার একার। অর্ক না পারতে টুম্পাকে রান্না, কাপড় ধোয়া বা অন্যান্য কাজে সাহায্য করে। এরই টানাপোড়েনে অর্ক রাতে খাওয়ার পর থালাবাসন ধুয়ে একটু হলেও সাহায্য করত টুম্পাকে। কিন্তু টুম্পার শাশুড়িমা ঘরে বউ থাকতে নিজের ছেলে বাসন মাজছে—ব্যাপারটা কোনোভাবেই হজম করতে পারছিলেন না। একবার বলেই ফেললেন, টুম্পা, অর্ককে আমি এক গ্লাস পানি ঢেলে খেতে দিইনি। সেখানে বিয়ের পরপর ও সংসারের কাজ করে! তাহলে ছেলে বিয়ে করিয়ে আমার কী লাভ হলো? কোনোভাবেই শাশুড়িকে বোঝাতে পারেনি টুম্পা যে, সংসার দুজনের। ঘরে-বাইরে তারা একসঙ্গেই কাজ করবে—এটাই স্বাভাবিক।
বর্তমান সময়ে কর্মজীবী নারীর সংখ্যা আগের তুলনায় অনেক বেশি হলেও কর্মজীবী নারীর পরিবারে যেসব পুরুষ রয়েছেন, তাঁদের কয়জনই–বা ঘরের কাজে হাত লাগান? সহজ কথায়, নারী উপার্জন করা, বিল পরিশোধ, বাজার, বয়োজ্যেষ্ঠদের ডাক্তার দেখানোর মতো বাইরের কাজগুলোয় পুরুষ সদস্যকে সহায়তা করলেও পুরুষ সদস্যটিকে কি রান্নাঘরে, ঘরের কাজে নারী সদস্যের পাশে দেখা যায় সহজে? সাদৃশ্য হলো, সকালে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কর্মজীবী পুরুষ ও নারী সদস্য বেরিয়ে পড়েন। দুজনেই কর্মক্ষেত্রে আট ঘণ্টা কাজ করেন। এরপর? কয়জন পুরুষ রয়েছেন যারা কর্মজীবী নারীর রান্না ও ঘরের কাজগুলোয় সাহায্য করেন? এদিকে, গৃহিণী যারা বাড়িতে কাজ করেন তাদের রোজ সবার আগে ঘুম থেকে উঠতে হবে এবং সবাই ঘুমাতে যাওয়ার পর শুতে যেতে হবে—হয়তো এটাই নিয়ম ভাবে সবাই।
যে প্রসঙ্গে কথা বলছি তা হলো, পুরুষের পানি দাও তো; খুঁজে দাও; গোসলে যাব, তোয়ালে দাও; শার্টটা ইস্তিরি করে দাও, মশারিটা টাঙিয়ে দাও, প্যান্টটা ধুয়ে দিয়ো, চা দাও ইত্যাদি। খাওয়ার পর কয়জন পুরুষ নিজের প্লেটটি নিজে ধুয়েছেন বলতে পারেন? অথবা এখনো অনেক শিক্ষিত ও স্মার্ট পেশাদার পুরুষের পক্ষে ভাবা কঠিন যে, রাতে সবার শেষে খাওয়ার পর খাবারের বাটি ফ্রিজে তুলে রাখা ও সর্বশেষ থালাবাসন ধোয়ার কাজটি তারও হতে পারে। এই ‘করে দাও’ মানসিকতার উৎপত্তি আসলে কোথায় বা কোন যুগ থেকে শুরু হয়েছে, তা ঠিক জানা নেই। তবে নারীরা যদি ঘর-বাহির দুটোই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সামাল দিতে পারেন, তাহলে পুরুষের নিজের কাজগুলো করতে অসুবিধা কোথায়? ছোটবেলায় কাছেপিঠের অনেক পুরুষকে দেখেছি, নিজের সেবায় তাঁদের স্ত্রী ও কন্যাদের দিয়ে ঠিক কী কী করাবেন তার একটা অলিখিত ফর্দই থাকত। খাওয়ার পর স্ত্রীকে বলতেন, পানি ঢাল হাত ধুই। এরপর কন্যারা গামছা এগিয়ে দিত হাত মোছার জন্য। সেই অর্ধশিক্ষার যুগের বেনামী জমিদারি আচরণ এখনকার উচ্চশিক্ষিত আরামপ্রিয় পুরুষেরও রপ্ত করা আছে।
কিন্তু কেন এই অথর্ব আচরণ? এখন নারীর ঘরের-বাইরে সব ধরনের কর্মক্ষেত্রে বিচরণ সম্ভব হয়েছে শুধু নারীর আত্মনির্ভরশীল হওয়ার অদম্য ইচ্ছাশক্তির কারণে। তাহলে পুরুষ কেন বদলায় না?
হ্যাঁ, গুটিকয়েক তো অবশ্যই আত্মনির্ভরশীল সুপুরুষ রয়েছেন, যাঁরা মানবিক এবং বরাবরই সম্মানিত। আর বাকিরা? তারা কি বদলাবেন আদৌ?
এখনো এমন কয়টি পরিবার পাওয়া যাবে, যার পুরুষ সদস্যরা নিজের কাজটি অন্তত নিজে করেন? একটা ছোট্ট উদাহরণ দিয়েই বলি, টুম্পা আর অর্ক দুজনেই কর্মজীবী। বাড়ি ফেরার পর গোটা সংসার যেন টুম্পার একার। অর্ক না পারতে টুম্পাকে রান্না, কাপড় ধোয়া বা অন্যান্য কাজে সাহায্য করে। এরই টানাপোড়েনে অর্ক রাতে খাওয়ার পর থালাবাসন ধুয়ে একটু হলেও সাহায্য করত টুম্পাকে। কিন্তু টুম্পার শাশুড়িমা ঘরে বউ থাকতে নিজের ছেলে বাসন মাজছে—ব্যাপারটা কোনোভাবেই হজম করতে পারছিলেন না। একবার বলেই ফেললেন, টুম্পা, অর্ককে আমি এক গ্লাস পানি ঢেলে খেতে দিইনি। সেখানে বিয়ের পরপর ও সংসারের কাজ করে! তাহলে ছেলে বিয়ে করিয়ে আমার কী লাভ হলো? কোনোভাবেই শাশুড়িকে বোঝাতে পারেনি টুম্পা যে, সংসার দুজনের। ঘরে-বাইরে তারা একসঙ্গেই কাজ করবে—এটাই স্বাভাবিক।
বর্তমান সময়ে কর্মজীবী নারীর সংখ্যা আগের তুলনায় অনেক বেশি হলেও কর্মজীবী নারীর পরিবারে যেসব পুরুষ রয়েছেন, তাঁদের কয়জনই–বা ঘরের কাজে হাত লাগান? সহজ কথায়, নারী উপার্জন করা, বিল পরিশোধ, বাজার, বয়োজ্যেষ্ঠদের ডাক্তার দেখানোর মতো বাইরের কাজগুলোয় পুরুষ সদস্যকে সহায়তা করলেও পুরুষ সদস্যটিকে কি রান্নাঘরে, ঘরের কাজে নারী সদস্যের পাশে দেখা যায় সহজে? সাদৃশ্য হলো, সকালে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কর্মজীবী পুরুষ ও নারী সদস্য বেরিয়ে পড়েন। দুজনেই কর্মক্ষেত্রে আট ঘণ্টা কাজ করেন। এরপর? কয়জন পুরুষ রয়েছেন যারা কর্মজীবী নারীর রান্না ও ঘরের কাজগুলোয় সাহায্য করেন? এদিকে, গৃহিণী যারা বাড়িতে কাজ করেন তাদের রোজ সবার আগে ঘুম থেকে উঠতে হবে এবং সবাই ঘুমাতে যাওয়ার পর শুতে যেতে হবে—হয়তো এটাই নিয়ম ভাবে সবাই।
যে প্রসঙ্গে কথা বলছি তা হলো, পুরুষের পানি দাও তো; খুঁজে দাও; গোসলে যাব, তোয়ালে দাও; শার্টটা ইস্তিরি করে দাও, মশারিটা টাঙিয়ে দাও, প্যান্টটা ধুয়ে দিয়ো, চা দাও ইত্যাদি। খাওয়ার পর কয়জন পুরুষ নিজের প্লেটটি নিজে ধুয়েছেন বলতে পারেন? অথবা এখনো অনেক শিক্ষিত ও স্মার্ট পেশাদার পুরুষের পক্ষে ভাবা কঠিন যে, রাতে সবার শেষে খাওয়ার পর খাবারের বাটি ফ্রিজে তুলে রাখা ও সর্বশেষ থালাবাসন ধোয়ার কাজটি তারও হতে পারে। এই ‘করে দাও’ মানসিকতার উৎপত্তি আসলে কোথায় বা কোন যুগ থেকে শুরু হয়েছে, তা ঠিক জানা নেই। তবে নারীরা যদি ঘর-বাহির দুটোই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সামাল দিতে পারেন, তাহলে পুরুষের নিজের কাজগুলো করতে অসুবিধা কোথায়? ছোটবেলায় কাছেপিঠের অনেক পুরুষকে দেখেছি, নিজের সেবায় তাঁদের স্ত্রী ও কন্যাদের দিয়ে ঠিক কী কী করাবেন তার একটা অলিখিত ফর্দই থাকত। খাওয়ার পর স্ত্রীকে বলতেন, পানি ঢাল হাত ধুই। এরপর কন্যারা গামছা এগিয়ে দিত হাত মোছার জন্য। সেই অর্ধশিক্ষার যুগের বেনামী জমিদারি আচরণ এখনকার উচ্চশিক্ষিত আরামপ্রিয় পুরুষেরও রপ্ত করা আছে।
কিন্তু কেন এই অথর্ব আচরণ? এখন নারীর ঘরের-বাইরে সব ধরনের কর্মক্ষেত্রে বিচরণ সম্ভব হয়েছে শুধু নারীর আত্মনির্ভরশীল হওয়ার অদম্য ইচ্ছাশক্তির কারণে। তাহলে পুরুষ কেন বদলায় না?
হ্যাঁ, গুটিকয়েক তো অবশ্যই আত্মনির্ভরশীল সুপুরুষ রয়েছেন, যাঁরা মানবিক এবং বরাবরই সম্মানিত। আর বাকিরা? তারা কি বদলাবেন আদৌ?
এখন রাজনীতির এক গতিময়তার সময়। শেখ হাসিনার ১৫ বছরের গণতন্ত্রহীন কর্তৃত্ববাদী দুর্নীতিপরায়ণ শাসন ছাত্র আন্দোলনে উচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তী শাসনকালে দ্রুততার সঙ্গে নানা রকম রাজনৈতিক কথাবার্তা, চিন্তা-ভাবনা, চেষ্টা-অপচেষ্টা, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার প্রকাশ ঘটছে।
১৪ ঘণ্টা আগেবহু বছর আগে সেই ব্রিটিশ যুগে কাজী নজরুল লিখেছিলেন, ‘ক্ষুধাতুর শিশু চায় না স্বরাজ, চায় দুটো ভাত, একটু নুন।’ আসলে পেটের খিদে নিয়ম, আইন, বিবেক, বিচার কোনো কিছুই মানে না। তাই তো প্রবাদ সৃষ্টি হয়েছে, খিদের জ্বালা বড় জ্বালা। এর থেকে বোধ হয় আর কোনো অসহায়তা নেই। খালি পেটে কেউ তত্ত্ব শুনতে চায় না। কাওয়ালিও ন
১৪ ঘণ্টা আগেতিন বছরের শিশু মুসা মোল্লা ও সাত বছরের রোহান মোল্লা নিষ্পাপ, ফুলের মতো কোমল। কারও সঙ্গে তাদের কোনো স্বার্থের দ্বন্দ্ব থাকার কথা নয়। কিন্তু বাবার চরম নিষ্ঠুরতায় পৃথিবী ছাড়তে হয়েছে তাদের। আহাদ মোল্লা নামের এক ব্যক্তি দুই ছেলেসন্তানকে গলা কেটে হত্যা করার পর নিজের গলায় নিজে ছুরি চালিয়েছেন।
১৪ ঘণ্টা আগেদলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
২ দিন আগে