ভজন সরকার
যত দোর্দণ্ড প্রতাপশালীই হোক না কেন, মানুষকে বেশির ভাগ সময়েই নিজের সঙ্গেই থাকতে হয়। নিজের সঙ্গেই পরামর্শ করতে হয়। নিজের সঙ্গেই কথা বলতে হয়। কখনো কখনো যুক্তি এবং প্রতিযুক্তি দিতে হয়। খণ্ডন করতে হয় প্রতিটি যুক্তি ও প্রতিযুক্তিকে এবং পৌঁছুতে হয় সিদ্ধান্তে। যতই শলাপরামর্শ নিক না কেন, মানুষকে শেষবিচারে নিজের সিদ্ধান্ত নিজেকেই নিতে হয়। এগিয়ে যেতে হয় সে সিদ্ধান্তের অনুকূলে।
এই এগিয়ে যাওয়া যে সব সময় অনুকূল থাকে, তা–ও নয়। অধিকাংশ সময়েই মানুষকে যুদ্ধ করতে হয় চারদিকের নানান বৈরিতার সঙ্গে। সে জীবনযুদ্ধে অবসাদ আছে, আছে অসহায়ত্ব। সে অবসাদকে, সে অসহায়ত্বকে মোকাবিলা করার জন্য প্রয়োজন হয় শক্তির। কিন্তু পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষের জীবনযুদ্ধে লড়াই করার মতো শক্তি কি সব সময় থাকে? পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র কি সব সময় সব মানুষের সহায়ক হয় কিংবা হয়েছে কোনোদিন?
আজ যে কোনোভাবে যদি এ বদ্ধমূল ধারণা প্রতিষ্ঠা করা যায় কিংবা সব মানুষকে বোঝানো যায় যে, ঈশ্বর, আল্লাহ, ভগবান, যিশুসহ এতদিন বিশ্বাস করে আসা সৃষ্টিকর্তার কোনো অস্তিত্ব এ পৃথিবীতে নেই, যদিও নানা বিজ্ঞানী ও যুক্তিবাদী মানুষ নানাভাবে এ কথা বলে আসছেন যুগ যুগ ধরে, তাহলে একবার ভাবুন তো, বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের অসহায়ত্ব! যাঁরা এতদিন নানা বিপদ-বিসম্বাদে সৃষ্টিকর্তার ওপর ভরসা করে বেঁচেছিলেন, যাঁরা ভাবতেন এ পৃথিবীর কেউ সঙ্গে না থাকলেও উপরওয়ালা একজন সারাক্ষণ তাদের দেখছেন।
সেই উপরওয়ালার ইচ্ছেতেই তাঁরা বেঁচে আছেন। সেই ওপরওয়ালাই তাঁদের বিপদে ফেলছেন আবার তিনিই রক্ষা করছেন কিংবা মেরে ফেলছেন। সেই উপরওয়ালাই বৃষ্টি দিয়ে ভেজাচ্ছেন, রোদ দিয়ে শুকোচ্ছেন আবার ছায়া দিয়ে জুড়াচ্ছেন।
‘যেমনি নাচাও তেমনি নাচি পুতুলের কি দোষ।’ সেই নাচানেওয়ালা সৃষ্টিকর্তা কোথায় আছেন কিংবা আদৌ আছেন কি না, সে যুক্তিবাদী প্রশ্ন অধিকাংশ মানুষের কাছে অবান্তর মাত্র। এক চরম অসহায়ত্ব, এক মহা–অনিশ্চয়তা থেকে মানুষ আত্মসমর্পণ করছে এক ভয়াবহ অলৌকিকতার কাছে, এক মহামারি বিশ্বাসের কাছে।
প্রখ্যাত যুক্তিবাদী লেখক, কবি ও ভাষাবিজ্ঞানী অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ একবার নিজের অভিজ্ঞতা বলছিলেন এক আড্ডায়। ঢাকা থেকে নিজের গ্রামের বাড়ি বিক্রমপুরের রাঢ়িখালে যাওয়ার সময় একবার বাস দুর্ঘটনায় পড়েছিলেন হুমায়ুন আজাদ। কিন্তু বাসড্রাইভারের সাহস ও দক্ষতার জন্য সে যাত্রায় বাসের প্রতিটি যাত্রী বেঁচে যান। এ কথা বাড়ি পৌঁছে মা–কে বললে হুমায়ুন আজাদের মা বলছিলেন: ‘আল্লাহর কাছে হাজার শোকর করো, তিনি তোমাদের বাঁচিয়েছেন।’
এ কথা শুনে হুমায়ুন আজাদ বলেছিলেন: ‘আম্মা, এ কথা কেন বলছেন? আল্লাহ বাঁচাবেন কীভাবে, আল্লাহ তো মারতেই চেয়েছিলেন, বাঁচালো তো বাস ড্রাইভার।’সহজ মানুষের খুব সরল বিশ্বাস। সবকিছুর পেছনেই সেই উপরওয়ালার ইশারা দেখতে পান, বিশেষ করে পরিস্থিতি যখন নিজের আয়ত্তের মধ্যে আর থাকে না।
ছোটবেলায় প্রতি সপ্তাহে বাড়ি থেকে কলেজ হোস্টেল যাওয়ার সময় আমার ঈশ্বরভক্ত বড়মা (জেঠিমা) ঢাউস আকারের দুটি তুলসীপাতা কানের গোড়ায় গুঁজে দিয়ে বলতেন: ‘ভগবান যেন নিরাপদে পৌঁছে দেন।’
আমি জানতাম, কোনো বাধায় কাজ হবে না, তাই নীরবে মাথা নিচু করে সে তুলসীপাতা কানে নিয়ে বলতাম: ‘ঠিক আছে দাও। ঢাকা যাব বাসে। আর বাস তো আমি চালাব না, চালাবে ড্রাইভার। তাই বিপদ হলে ড্রাইভারের জন্যই হবে। তাই বাসে উঠেই বাসড্রাইভারের কানে তুলসীপাতা গুঁজে দেব।’
কোটি কোটি মানুষের কি সহজসরল অথচ প্রবল বিশ্বাস ওই না-দেখা সৃষ্টিকর্তার ওপর। অথচ পথের দুর্ঘটনার জন্য বাস্তবের মানুষগুলোই দায়ী। কিন্তু হুমায়ুন আজাদের মা কিংবা আমার বড়মার তো কোনো আস্থা-ভরসা কিংবা কর্তৃত্ব নেই ওই বাসড্রাইভার কিংবা বাস্তব জীবনের দুর্ঘটনার জন্য দায়ী সব নিয়ামকের ওপর। তাই শেষভরসা ওই উপরওয়ালার কাছেই!
বিশ্বাস যদি চিরস্থায়ী না হয়, তবে ধর্মীয় বিশ্বাসও চিরস্থায়ী হওয়ার কথা নয়। যাঁরা ধর্মীয় বিশ্বাসকে চিরকালীন এবং অভ্রান্ত ও অপরিবর্তনীয় বলে বিশ্বাস করে থাকেন, তাঁদের যুক্তিতে কোথাও কি গরমিল আছে?
ঠাকুমা-দিদিমাদের কাছে শুনেছি গুটিবসন্ত বা কলেরায় গ্রামের পর গ্রাম উজাড় হয়ে যেত। সৎকার করার মতো মানুষও খুঁজে পাওয়া যেত না। এসব রোগ থেকে বাঁচতে ঘরে ঘরে প্রচলন ছিল উলনচণ্ডী মতো নানা পূজা–অর্চনার। এখন সেসব রোগ নেই, পূজা-অর্চনা বা বিশ্বাসও নেই।
আগে প্রচণ্ড উৎপাত ছিল সাপের। জঙ্গল ছিল বসতবাড়ির চারদিকে। অনাবাদি ভিটে ছিল। ইঁদুর বা অন্যান্য পোকামাকড় ছিল। ছিল সাপের উপদ্রব। তাই ছোটবেলায় গ্রামে দেখেছি হিন্দু তো অবশ্যই, মুসলমান বাড়ি থেকেও মনসা পূজার জন্য টাকা দেওয়া হতো।
এখন মানুষ বেড়েছে। জঙ্গল ভিটেবাড়িতেও হয়েছে মানুষের ঘর-গিরস্থালি। ঘরবাড়িতেও এসেছে পরিবর্তন। মাটির ঘর থেকে উঠেছে পাকা দালান। সাপের আবাসন কমে গেছে। তাই এখন আর মনসা পূজার তেমন প্রচলন গ্রামবাংলায় মুসলমান তো দূরের কথা হিন্দুদের মধ্যেও তেমন কোথাও নেই।
এবারের পৃথিবীব্যাপী মহামারি কোভিড-১৯ ভাইরাসের কথাই ধরুন। লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। গোটা বিশ্ব স্থবির হয়ে আছে প্রায় দেড়টি বছর। কিন্তু কোনো অলৌকিক সৃষ্টিকর্তা কিন্তু রক্ষা করছেন না। মানুষ সুস্থ হচ্ছেন বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত টিকাতেই।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার দিয়ে মানুষ যত নিজের অসহায়ত্বকে বশ করতে পারবে, যত আত্মবিশ্বাসী হয়ে নিজেকে সুরক্ষিত করতে পারবে, যত যুক্তিবাদী জ্ঞানের চর্চা করবে, মানুষের তত অনিশ্চয়তা কেটে যাবে ওই অদৃশ্য ‘নাচানেওয়ালা’র নির্ভরশীলতা থেকে, মানুষ ততই বিশ্বাস হারাবে ওই অদেখা ঈশ্বরের প্রতিও।
লেখক: সাহিত্যিক ও প্রকৌশলী
যত দোর্দণ্ড প্রতাপশালীই হোক না কেন, মানুষকে বেশির ভাগ সময়েই নিজের সঙ্গেই থাকতে হয়। নিজের সঙ্গেই পরামর্শ করতে হয়। নিজের সঙ্গেই কথা বলতে হয়। কখনো কখনো যুক্তি এবং প্রতিযুক্তি দিতে হয়। খণ্ডন করতে হয় প্রতিটি যুক্তি ও প্রতিযুক্তিকে এবং পৌঁছুতে হয় সিদ্ধান্তে। যতই শলাপরামর্শ নিক না কেন, মানুষকে শেষবিচারে নিজের সিদ্ধান্ত নিজেকেই নিতে হয়। এগিয়ে যেতে হয় সে সিদ্ধান্তের অনুকূলে।
এই এগিয়ে যাওয়া যে সব সময় অনুকূল থাকে, তা–ও নয়। অধিকাংশ সময়েই মানুষকে যুদ্ধ করতে হয় চারদিকের নানান বৈরিতার সঙ্গে। সে জীবনযুদ্ধে অবসাদ আছে, আছে অসহায়ত্ব। সে অবসাদকে, সে অসহায়ত্বকে মোকাবিলা করার জন্য প্রয়োজন হয় শক্তির। কিন্তু পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষের জীবনযুদ্ধে লড়াই করার মতো শক্তি কি সব সময় থাকে? পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র কি সব সময় সব মানুষের সহায়ক হয় কিংবা হয়েছে কোনোদিন?
আজ যে কোনোভাবে যদি এ বদ্ধমূল ধারণা প্রতিষ্ঠা করা যায় কিংবা সব মানুষকে বোঝানো যায় যে, ঈশ্বর, আল্লাহ, ভগবান, যিশুসহ এতদিন বিশ্বাস করে আসা সৃষ্টিকর্তার কোনো অস্তিত্ব এ পৃথিবীতে নেই, যদিও নানা বিজ্ঞানী ও যুক্তিবাদী মানুষ নানাভাবে এ কথা বলে আসছেন যুগ যুগ ধরে, তাহলে একবার ভাবুন তো, বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের অসহায়ত্ব! যাঁরা এতদিন নানা বিপদ-বিসম্বাদে সৃষ্টিকর্তার ওপর ভরসা করে বেঁচেছিলেন, যাঁরা ভাবতেন এ পৃথিবীর কেউ সঙ্গে না থাকলেও উপরওয়ালা একজন সারাক্ষণ তাদের দেখছেন।
সেই উপরওয়ালার ইচ্ছেতেই তাঁরা বেঁচে আছেন। সেই ওপরওয়ালাই তাঁদের বিপদে ফেলছেন আবার তিনিই রক্ষা করছেন কিংবা মেরে ফেলছেন। সেই উপরওয়ালাই বৃষ্টি দিয়ে ভেজাচ্ছেন, রোদ দিয়ে শুকোচ্ছেন আবার ছায়া দিয়ে জুড়াচ্ছেন।
‘যেমনি নাচাও তেমনি নাচি পুতুলের কি দোষ।’ সেই নাচানেওয়ালা সৃষ্টিকর্তা কোথায় আছেন কিংবা আদৌ আছেন কি না, সে যুক্তিবাদী প্রশ্ন অধিকাংশ মানুষের কাছে অবান্তর মাত্র। এক চরম অসহায়ত্ব, এক মহা–অনিশ্চয়তা থেকে মানুষ আত্মসমর্পণ করছে এক ভয়াবহ অলৌকিকতার কাছে, এক মহামারি বিশ্বাসের কাছে।
প্রখ্যাত যুক্তিবাদী লেখক, কবি ও ভাষাবিজ্ঞানী অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ একবার নিজের অভিজ্ঞতা বলছিলেন এক আড্ডায়। ঢাকা থেকে নিজের গ্রামের বাড়ি বিক্রমপুরের রাঢ়িখালে যাওয়ার সময় একবার বাস দুর্ঘটনায় পড়েছিলেন হুমায়ুন আজাদ। কিন্তু বাসড্রাইভারের সাহস ও দক্ষতার জন্য সে যাত্রায় বাসের প্রতিটি যাত্রী বেঁচে যান। এ কথা বাড়ি পৌঁছে মা–কে বললে হুমায়ুন আজাদের মা বলছিলেন: ‘আল্লাহর কাছে হাজার শোকর করো, তিনি তোমাদের বাঁচিয়েছেন।’
এ কথা শুনে হুমায়ুন আজাদ বলেছিলেন: ‘আম্মা, এ কথা কেন বলছেন? আল্লাহ বাঁচাবেন কীভাবে, আল্লাহ তো মারতেই চেয়েছিলেন, বাঁচালো তো বাস ড্রাইভার।’সহজ মানুষের খুব সরল বিশ্বাস। সবকিছুর পেছনেই সেই উপরওয়ালার ইশারা দেখতে পান, বিশেষ করে পরিস্থিতি যখন নিজের আয়ত্তের মধ্যে আর থাকে না।
ছোটবেলায় প্রতি সপ্তাহে বাড়ি থেকে কলেজ হোস্টেল যাওয়ার সময় আমার ঈশ্বরভক্ত বড়মা (জেঠিমা) ঢাউস আকারের দুটি তুলসীপাতা কানের গোড়ায় গুঁজে দিয়ে বলতেন: ‘ভগবান যেন নিরাপদে পৌঁছে দেন।’
আমি জানতাম, কোনো বাধায় কাজ হবে না, তাই নীরবে মাথা নিচু করে সে তুলসীপাতা কানে নিয়ে বলতাম: ‘ঠিক আছে দাও। ঢাকা যাব বাসে। আর বাস তো আমি চালাব না, চালাবে ড্রাইভার। তাই বিপদ হলে ড্রাইভারের জন্যই হবে। তাই বাসে উঠেই বাসড্রাইভারের কানে তুলসীপাতা গুঁজে দেব।’
কোটি কোটি মানুষের কি সহজসরল অথচ প্রবল বিশ্বাস ওই না-দেখা সৃষ্টিকর্তার ওপর। অথচ পথের দুর্ঘটনার জন্য বাস্তবের মানুষগুলোই দায়ী। কিন্তু হুমায়ুন আজাদের মা কিংবা আমার বড়মার তো কোনো আস্থা-ভরসা কিংবা কর্তৃত্ব নেই ওই বাসড্রাইভার কিংবা বাস্তব জীবনের দুর্ঘটনার জন্য দায়ী সব নিয়ামকের ওপর। তাই শেষভরসা ওই উপরওয়ালার কাছেই!
বিশ্বাস যদি চিরস্থায়ী না হয়, তবে ধর্মীয় বিশ্বাসও চিরস্থায়ী হওয়ার কথা নয়। যাঁরা ধর্মীয় বিশ্বাসকে চিরকালীন এবং অভ্রান্ত ও অপরিবর্তনীয় বলে বিশ্বাস করে থাকেন, তাঁদের যুক্তিতে কোথাও কি গরমিল আছে?
ঠাকুমা-দিদিমাদের কাছে শুনেছি গুটিবসন্ত বা কলেরায় গ্রামের পর গ্রাম উজাড় হয়ে যেত। সৎকার করার মতো মানুষও খুঁজে পাওয়া যেত না। এসব রোগ থেকে বাঁচতে ঘরে ঘরে প্রচলন ছিল উলনচণ্ডী মতো নানা পূজা–অর্চনার। এখন সেসব রোগ নেই, পূজা-অর্চনা বা বিশ্বাসও নেই।
আগে প্রচণ্ড উৎপাত ছিল সাপের। জঙ্গল ছিল বসতবাড়ির চারদিকে। অনাবাদি ভিটে ছিল। ইঁদুর বা অন্যান্য পোকামাকড় ছিল। ছিল সাপের উপদ্রব। তাই ছোটবেলায় গ্রামে দেখেছি হিন্দু তো অবশ্যই, মুসলমান বাড়ি থেকেও মনসা পূজার জন্য টাকা দেওয়া হতো।
এখন মানুষ বেড়েছে। জঙ্গল ভিটেবাড়িতেও হয়েছে মানুষের ঘর-গিরস্থালি। ঘরবাড়িতেও এসেছে পরিবর্তন। মাটির ঘর থেকে উঠেছে পাকা দালান। সাপের আবাসন কমে গেছে। তাই এখন আর মনসা পূজার তেমন প্রচলন গ্রামবাংলায় মুসলমান তো দূরের কথা হিন্দুদের মধ্যেও তেমন কোথাও নেই।
এবারের পৃথিবীব্যাপী মহামারি কোভিড-১৯ ভাইরাসের কথাই ধরুন। লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। গোটা বিশ্ব স্থবির হয়ে আছে প্রায় দেড়টি বছর। কিন্তু কোনো অলৌকিক সৃষ্টিকর্তা কিন্তু রক্ষা করছেন না। মানুষ সুস্থ হচ্ছেন বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত টিকাতেই।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার দিয়ে মানুষ যত নিজের অসহায়ত্বকে বশ করতে পারবে, যত আত্মবিশ্বাসী হয়ে নিজেকে সুরক্ষিত করতে পারবে, যত যুক্তিবাদী জ্ঞানের চর্চা করবে, মানুষের তত অনিশ্চয়তা কেটে যাবে ওই অদৃশ্য ‘নাচানেওয়ালা’র নির্ভরশীলতা থেকে, মানুষ ততই বিশ্বাস হারাবে ওই অদেখা ঈশ্বরের প্রতিও।
লেখক: সাহিত্যিক ও প্রকৌশলী
এখন রাজনীতির এক গতিময়তার সময়। শেখ হাসিনার ১৫ বছরের গণতন্ত্রহীন কর্তৃত্ববাদী দুর্নীতিপরায়ণ শাসন ছাত্র আন্দোলনে উচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তী শাসনকালে দ্রুততার সঙ্গে নানা রকম রাজনৈতিক কথাবার্তা, চিন্তা-ভাবনা, চেষ্টা-অপচেষ্টা, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার প্রকাশ ঘটছে।
১৮ ঘণ্টা আগেবহু বছর আগে সেই ব্রিটিশ যুগে কাজী নজরুল লিখেছিলেন, ‘ক্ষুধাতুর শিশু চায় না স্বরাজ, চায় দুটো ভাত, একটু নুন।’ আসলে পেটের খিদে নিয়ম, আইন, বিবেক, বিচার কোনো কিছুই মানে না। তাই তো প্রবাদ সৃষ্টি হয়েছে, খিদের জ্বালা বড় জ্বালা। এর থেকে বোধ হয় আর কোনো অসহায়তা নেই। খালি পেটে কেউ তত্ত্ব শুনতে চায় না। কাওয়ালিও ন
১৮ ঘণ্টা আগেতিন বছরের শিশু মুসা মোল্লা ও সাত বছরের রোহান মোল্লা নিষ্পাপ, ফুলের মতো কোমল। কারও সঙ্গে তাদের কোনো স্বার্থের দ্বন্দ্ব থাকার কথা নয়। কিন্তু বাবার চরম নিষ্ঠুরতায় পৃথিবী ছাড়তে হয়েছে তাদের। আহাদ মোল্লা নামের এক ব্যক্তি দুই ছেলেসন্তানকে গলা কেটে হত্যা করার পর নিজের গলায় নিজে ছুরি চালিয়েছেন।
১৮ ঘণ্টা আগেদলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
২ দিন আগে