ফারুক মেহেদী
এ সময়টা এলেই আপনারা আমাকে লেবুচিপা করেন! চিপতে চিপতে এক সময় তিতা করে ফেলেন! সারা বছর আমাকে নিয়ে কারও কোনো মাথাব্যথা থাকে না। জুন মাসে যখন আপনারা আমাকে নিয়ে যারপরনাই ব্যস্ত হয়ে পড়েন, তখনই বুঝতে পারি আমার নাম-দাম আছে! আপনাদের শোরগোল দেখে বুঝি যে আমিই বাজেট। এটা ঠিক নামে কী যায় আসে? কাজটিই আসল।
শুরুতে বলছিলাম, আমাকে আপনারা এত কচলান যে, একপর্যায়ে রস না বেরোলেও আপনাদের কচলানো থামে না। কখনো সরকার কচলায়, কখনো বিরোধীরা কচলায়। কখনো সুশীল বুদ্ধিজীবীরা, কখনোবা অর্থনীতি বোদ্ধারা। এখন আমি চূড়ান্ত কচলানির মধ্যে আছি। সংসদে অর্থমন্ত্রী যখন কালো ব্রিফকেস থেকে আমাকে বের করে মহাসম্মানের সঙ্গে নানান স্তুতিতে গুণগান গাইবেন, তখন আবার আরেক রকম কচলানি শুরু হবে। এখানেই শেষ নয়; বরং কচলানি চলে পুরো মাসব্যাপী। তো, এত যে কচলান আমাকে, আমি তো আর পারছি না। তাই ভাবলাম, আজ একটু মনের কথা বলি। দেখুন, আমি নাকি আপনাদের এক বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব। মানে প্রায় ১৭ কোটি মানুষের এই দেশ পরিচালনার জন্য সরকার আমাকে তৈরি করে। এবার আমার আকার ধরা হয়েছে ৬ লাখ ২ হাজার কোটি টাকা। আপনারা তো সাধারণ মানুষ। বাজেটের তথ্য জানতে পারেন গণমাধ্যমের কল্যাণে। টিভিতে বা পত্রিকায় প্রতিবেদন হলে সেখানে অর্থনীতি বিশ্লেষকেরা তা পর্যালোচনা করে। আমি জানি আমার আকার শুনে আপনারা মাঝে মাঝে বিভ্রান্ত হন। সরকার বলে রেকর্ড বরাদ্দের বাজেট। কেউ আবার বলে উচ্চাভিলাষী বাজেট। বিরোধীরা বলে সরকারের আয় নেই, তাই ঘাটতি বাজেট। ঋণ করে ঘি খাওয়ার বাজেট। বিশ্লেষকেরা বলে, এ বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য নয়। নানান মত। আপনারা তখন খেই হারিয়ে ফেলেন! তাহলে কোনটা ঠিক? যে যাই বলুক, সরকার কারও কথায় কান দেয় না! অবশ্য আমাকে তৈরি করার আগে অর্থমন্ত্রী, অর্থ মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ববোর্ড-এনবিআর অনেকের সঙ্গেই আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেছে। বিশেষ করে, ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষক শ্রেণির সঙ্গে। এ রকম অসংখ্য বৈঠকে শত-সহস্র মতামত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। আমি সব সাক্ষী। তবে এর সামান্যই প্রতিফলন হয়েছে আমার মধ্যে। রীতি মেনে প্রতিবছরই এসব আলোচনা হয়, দিন শেষে আমার কাঠামোতে খুব একটা পরিবর্তন হয় না। এবার যে করোনাকাল চলছে, মানুষের চাকরি নেই, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অচল। উৎপাদন ব্যাহত। সেবা খাতের নাজুক অবস্থা; সে হিসেবে আমার আদল যেভাবে পরিবর্তন করার কথা ছিল, তা হয়নি।
করোনার কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে খুব একটা গতি নেই। ফলে সবার আয় কমেছে। আপনাদের অনেকের চাকুরি নেই। সবাই কাজ চালাচ্ছে সীমিত পরিসরে। অব্যাহত লকডাউনে চলাচলও সীমিত। সামনে কী হবে কেউ জানে না। যেহেতু মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির; তো কর আদায় হবে কী করে? কর না পেলে এই যে ৬ লাখ কোটি টাকা খরচের লক্ষ্য, সেটাই বা কীভাবে জোগাড় হবে? এটা ঠিক, যে যাই বলুক, ৬ লাখ কোটি টাকার বাজেট আপনাদের চাহিদার তুলনায় বড় না। ধরুন, আপনারা প্রায় ১৭ কোটি জনগোষ্ঠী। এত বিপুল জনগোষ্ঠীর খাওয়া-পরা, একটি সুন্দর জীবনযাপন, রাস্তা-ঘাট, স্কুল-কলেজ, কাজের সুযোগ তৈরি, স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হলে আরও বড় বাজেট দেওয়া দরকার। সরকার যত বেশি খরচ করবে, তা মানুষের কল্যাণে আসবে। আপনাদের আয় বাড়বে, জীবনযাত্রা উন্নত হবে, ব্যবসা-বাণিজ্য ও উৎপাদন ও সেবা খাতের প্রসার ঘটবে। তাতে আপনাদেরই লাভ। মানে সরকার বিনিয়োগ করলে তা জনগণেরই উপকার হবে। তবে টাকার সংস্থান তেমন নেই বলেই খুব বড় বাজেট দেওয়া যাচ্ছে না। আমার চিন্তা অন্যখানে। এই যে ৬ লাখ কোটি টাকার হিসাব, এটাও জোগাড় করতে সরকারকে অনেক ধারকর্জ করতে হবে। কর আদায়ের অবস্থা ভালো না। তারপরও ৩ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা আয় করতে চায় সরকার। আমার ধারণা এ টাকাও শেষ পর্যন্ত আদায় হবে না। এমনিতেই আয়ের সঙ্গে খরচের বড় ফারাক। তার মধ্যে যদি রাজস্ব আয় ঠিকমতো না হয়, তবে যে ৬ লাখ কোটি টাকা সরকার খরচ করবে ভাবছে তাও সম্ভব হবে না। টাকাই থাকবে না, খরচ করবে কীভাবে? তখন আমি দেখব আমাকে নিয়ে সরকার যে এত গর্ব করে বলছে যে, রেকর্ড বরাদ্দের বাজেট, এটা আর শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়ন হবে না। এ অর্থবছরে যেমন অনেক কিছুই অপূর্ণ রয়েছে তেমন হবে। মানে বিশেষ পরিস্থিতিতে একটি বিশেষ বাজেট দিতে পারত সরকার, তা করেনি। ঠিক আছে, ধরে নিলাম সরকার বাজেট বাস্তবায়ন করবে। এ জন্য ঘাটতির টাকাটা জোগাড় করবে ব্যাংক থেকে ধার করে, বেশি সুদে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে আর উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে হাত পেতে। সরকার ব্যাংক ঋণ নিয়ে আর সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে যদি বেশি টাকা ধার করে, তাতে শুধু সরকারের দায়ই বাড়বে না, ব্যাংকের টাকা নিয়ে নেওয়ার ফলে ব্যাংক থেকে আপনারা বা আপনাদের মত বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা টাকা পাবে না। আর আপনারা যদি ব্যাংক থেকে ঋণ না পান, তবে চাইলে আপনি আপনার ব্যবসা বাড়াতে পারবেন না, বা নতুন ব্যবসা কিংবা শিল্প-কারখানাও করতে পারবেন না। আর যদি তা করতে না পারেন, তবে নতুন কাজের সুযোগ হবে না, মানুষের আয় হবে না, সরকারেরও আয় হবে না। আর সরকারের আয় মানেই তো তা আপনাদের জন্য খরচ করা। তখন তাও হবে না। ফলে সরকারের যে বাজেট বাস্তবায়নের লক্ষ্য সেটাও পূরণ হবে না।
এবার আমার রাজস্ব বাজেটে ব্যবসায়ীদের বিশেষ কিছু সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। করোনার কারণেই এ চিন্তা করেছে সরকার। বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে কর, ভ্যাট ও শুল্ক ছাড় দেওয়া হচ্ছে। এটা আমার মনে হয় ভালোই করছে। তবে শুধু ছাড় দিলে তো হবে না; করের আওতা বাড়াতে হবে। প্রতিবছরই বাজেটে এ ঘোষণা থাকে। বাস্তবে করের আওতা খুব একটা বাড়েনা। যারা নিয়মিত কর দেন; বারবার তাদেরই কর দিতে হয়। নতুন করদাতা খুব একটা তৈরি হয় না।
অথচ আমি দেখি কর দেওয়ার মত সক্ষম মানুষ আছে অসংখ্য। আমি জানি আপনাদের অনেকেই এখন ভালো আয় করেন। আগের চেয়ে উন্নত আপনাদের জীবনযাত্রা। অনেকের গাড়ি আছে, বাড়ি, ফ্ল্যাট আছে। ছেলে মেয়ে বিদেশে পড়তে যায়। এমনকি আপনাদের অনেকের উপরি আয়ও আছে। আপনাদের অনেকের বিদেশেও বাড়ি আছে। অথচ আপনারা তা আয়কর রিটার্নে দেখান না। অনেকে রিটার্নই দেন না। এটাও আমার মনোকষ্টের কারণ। আমার খারাপ লাগে যখন দেখি, আপনাদের অনেকে আমাকে নিয়ে অনেক মন্তব্য করেন, বড় বড় বিবৃতি দেন। আমার রাজস্ব বাজেট বাস্তবায়ন হয় না বলে মাতামাতি করেন। অথচ দেখা যাবে আপনিই ঠিকমতো কর দেন না। রিটার্ন দাখিল করেন না। আপনারা সবাই যদি নাগরিক দায়িত্ব ঠিকমতো পালন না করেন, যেটুকু আয় করেন তা যদি করযোগ্য হয় তা না দেন, তাহলে দেশ এগোবে কী করে? বাজেট বাস্তবায়ন হবে কীভাবে? এটাও আপনাদের ভাবতে হবে। আপনাদের প্রয়োজনেই যেমন সরকারকে বড় বাজেট দিতে হয়, আবার তার অর্থসংস্থানের জন্যও আপনাদের সক্ষম সবাইকে কর দেওয়া প্রয়োজন। না হলে, আমাকে নিয়ে আপনারা সমালোচনা করতেই থাকবেন। আমিও আর পরিপূর্ণ ভাবে সফল হব না। অনেকে তো কর ফাঁকি দেনই, উল্টো তাদেরই অনেকে আবার প্রতিবছর এনবিআরের সঙ্গে বৈঠক করে নিজ নিজ খাতের ব্যবসা ও উদ্যোগের জন্য কর ও শুল্ক ছাড় চান। এভাবে সবাই ছাড় চাইলে, বাজেটের রাজস্ব আয় কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় হবে কী করে?
সরকার আমার উন্নয়ন বাজেটও করেছে বড় আকারের। ২ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা সরকার খরচ করতে চায় উন্নয়নকাজে। আপনারা জানেন, এ টাকাও বছর শেষে পুরোটা খরচ করা যায় না। অনেক সময় অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প নেওয়া হয়, প্রকল্পের টাকার অপব্যবহার হয়, নজরদারির অভাবেও আমার বাজেটের টাকা জলে যায়! এবারও আমার ধারণা পুরো টাকা খরচ করতে পারবে না। আর আমার উন্নয়ন বাজেটের বড় সমস্যা হলো- প্রথম ৮/৯ মাস কাজে কোন গতিই থাকে না। অর্থবছর শেষের দিকে এসে তাড়াহুড়া করে খরচ করে টাকাটা তুলে নেওয়া হয়। বাস্তব কাজের মান খুব খারাপ হয়। আপনারা জানেন যে, সরকারের আইএমইডি বিভাগ প্রকল্প কাজের মূল্যায়ন করে। তখন দেখা যায়, প্রকল্পে কী রকম ভাবে অপচয় হয়। এটা বন্ধ করতে না পারলে, বছর বছর আমার আকার বাড়িয়ে লাভ নেই।
সরকার রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে রীতি মেনে আমার আকার বাড়িয়েছে। এ জন্য এখন অনেক আলোচনা হচ্ছে। আপনারা যদি যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করতেন তবে এ আলোচনাটা শুধু এখন নয়, সব সময় হতো। আমাকে সফল করতে সবাই কাজ করতেন তাহলে আপনাদেরই উপকার হতো। ধরেন, আপনি সরকার। আপনি রাজনৈতিক বিবেচনা না নিয়ে যারা বাজেট বুঝে, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে, সাধারণ মানুষের চাহিদার দিকটি মাথায় রেখে একটি সুষম বাজেট দিলেন। যেটুকু আয় হবে, তার সঙ্গে চাহিদার কথা বিবেচনা করে প্রয়োজনে কিছু ধার করে একটি সুন্দর বরাদ্দ রাখলেন। রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য যৌক্তিক রাখলেন। উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা করলেন প্রয়োজন মেপে, কৃচ্ছতা সাধন করলেন খরচে। এমনকি প্রয়োজন না হলে আপনার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অপ্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণ বাতিল করলেন। আর যে টাকা খরচ করবেন, তা যেন দক্ষতার সঙ্গে হয়, কোন অপচয় বা লুটপাট যেন না হয়, তা কঠোর ভাবে নজরদারি করলেন, দলীয় বিবেচনায় বা তদবিরে কোনো টাকা বরাদ্দ দিলেন না, তাহলে আমার উন্নয়ন বাজেট পূর্ণতা পেত। আর আপনারা যারা সরকারি আমলা আমার এক বছরের টাকা খরচ করবেন, নিয়ন্ত্রণ করবেন, প্রকল্প পাস করবেন, নজরদারি করবেন, তাদেরও সততা দরকার। আপনাদের কারও কারও বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতির অভিযোগ আছে। যদি এ জায়গায় আপনারা আরও স্বচ্ছ হতেন, কোনো অনিয়ম-দুর্নীতিকে প্রশ্রয় না দিতেন, তাহলে আমার বাস্তবায়ন হতো শতভাগ। আর যারা ঠিকাদার তারাও যদি মনে করতেন, এ টাকা আপনার টাকা, জনগণের টাকা। এর অপচয় করবেন না, দুর্নীতি করবেন না। তাহলে আমার বাস্তবায়ন হতো দক্ষতার সঙ্গে। এভাবে যারা কর দেওয়ার জন্য সক্ষম, তারা নিয়ম মেনে কর দিলে সরকারের রাজস্ব আয়েও এমন হাহাকার থাকে না।
এই আপনারা যারা বিরোধী দলে আছেন, তারাও আমার আকার নিয়ে শুধু রাজনীতি করবেন না। একটু পড়বেন, যৌক্তিক পর্যালোচনা করবেন। আপনার দলের যারা অর্থনীতি বোঝেন, বাজেট পর্যালোচনায় যাদের দক্ষতা আছে তাদের দিয়ে বিশ্লেষণ করে মতামত দিন। সাধারণ মানুষের কথা বলার জায়গা নেই। আমার আকার নিয়ে আপনারা যখন সমালোচনায় মত্ত, তখন একজন রিকশাওয়ালাকে রিকশা চালিয়েই তিন বেলা খাবার জোগাড় করতে হয়। আপনারা যখন আমার অঙ্ক করছেন, তখন একজন দিনমজুর, একজন শ্রমিক, একজন দরিদ্র মানুষ একবেলা খাবারের পেছনে অক্লান্ত সংগ্রামে লিপ্ত। দেশের বেশির ভাগ মানুষের কাছে আমার লাখ লাখ কোটি টাকার হিসাব তামাশার মত মনে হয়। কারণ প্রতিবছর ঘটা করে আমাকে তৈরি করা হয়, আলোচনা হয়, সংসদে সুন্দর করে স্বপ্নের মোড়কে আমার উজ্জ্বল ভাবমূর্তি ফুটিয়ে তোলা হয়। তাতে মধ্যবিত্ত শ্রেণি কিংবা দরিদ্র মানুষের কায়ক্লেশের ম্লান জীবনে খরচের ফর্দ বড় করা ছাড়া আর কোন পরিবর্তন আনে না।
আমাকে নিয়ে শুধু চর্বিতচর্বণ আলোচনা নয়; একে প্রকৃত অর্থে মানুষের কল্যাণে প্রণয়ন করুন, বাস্তবায়ন করুন। সহনীয় মাত্রায় ধারকর্জ করুন, তবে চেষ্টা করুন যাতে নিজেদের অর্থে, সামর্থ্যে আমাকে বাস্তবায়ন করতে পারেন। এমন কৌশল নিন, যাতে বৈষম্য কমে, বিনিয়োগ বাড়ে, অর্থের লেনদেনে স্বচ্ছতা থাকে। আমাকে স্বল্প সময়ে লেবুচিপা না করে সারা বছর আমাকে কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, সে লক্ষ্যে আলোচনা করুন।
লেখক: সহকারি সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
এ সময়টা এলেই আপনারা আমাকে লেবুচিপা করেন! চিপতে চিপতে এক সময় তিতা করে ফেলেন! সারা বছর আমাকে নিয়ে কারও কোনো মাথাব্যথা থাকে না। জুন মাসে যখন আপনারা আমাকে নিয়ে যারপরনাই ব্যস্ত হয়ে পড়েন, তখনই বুঝতে পারি আমার নাম-দাম আছে! আপনাদের শোরগোল দেখে বুঝি যে আমিই বাজেট। এটা ঠিক নামে কী যায় আসে? কাজটিই আসল।
শুরুতে বলছিলাম, আমাকে আপনারা এত কচলান যে, একপর্যায়ে রস না বেরোলেও আপনাদের কচলানো থামে না। কখনো সরকার কচলায়, কখনো বিরোধীরা কচলায়। কখনো সুশীল বুদ্ধিজীবীরা, কখনোবা অর্থনীতি বোদ্ধারা। এখন আমি চূড়ান্ত কচলানির মধ্যে আছি। সংসদে অর্থমন্ত্রী যখন কালো ব্রিফকেস থেকে আমাকে বের করে মহাসম্মানের সঙ্গে নানান স্তুতিতে গুণগান গাইবেন, তখন আবার আরেক রকম কচলানি শুরু হবে। এখানেই শেষ নয়; বরং কচলানি চলে পুরো মাসব্যাপী। তো, এত যে কচলান আমাকে, আমি তো আর পারছি না। তাই ভাবলাম, আজ একটু মনের কথা বলি। দেখুন, আমি নাকি আপনাদের এক বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব। মানে প্রায় ১৭ কোটি মানুষের এই দেশ পরিচালনার জন্য সরকার আমাকে তৈরি করে। এবার আমার আকার ধরা হয়েছে ৬ লাখ ২ হাজার কোটি টাকা। আপনারা তো সাধারণ মানুষ। বাজেটের তথ্য জানতে পারেন গণমাধ্যমের কল্যাণে। টিভিতে বা পত্রিকায় প্রতিবেদন হলে সেখানে অর্থনীতি বিশ্লেষকেরা তা পর্যালোচনা করে। আমি জানি আমার আকার শুনে আপনারা মাঝে মাঝে বিভ্রান্ত হন। সরকার বলে রেকর্ড বরাদ্দের বাজেট। কেউ আবার বলে উচ্চাভিলাষী বাজেট। বিরোধীরা বলে সরকারের আয় নেই, তাই ঘাটতি বাজেট। ঋণ করে ঘি খাওয়ার বাজেট। বিশ্লেষকেরা বলে, এ বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য নয়। নানান মত। আপনারা তখন খেই হারিয়ে ফেলেন! তাহলে কোনটা ঠিক? যে যাই বলুক, সরকার কারও কথায় কান দেয় না! অবশ্য আমাকে তৈরি করার আগে অর্থমন্ত্রী, অর্থ মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ববোর্ড-এনবিআর অনেকের সঙ্গেই আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেছে। বিশেষ করে, ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষক শ্রেণির সঙ্গে। এ রকম অসংখ্য বৈঠকে শত-সহস্র মতামত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। আমি সব সাক্ষী। তবে এর সামান্যই প্রতিফলন হয়েছে আমার মধ্যে। রীতি মেনে প্রতিবছরই এসব আলোচনা হয়, দিন শেষে আমার কাঠামোতে খুব একটা পরিবর্তন হয় না। এবার যে করোনাকাল চলছে, মানুষের চাকরি নেই, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অচল। উৎপাদন ব্যাহত। সেবা খাতের নাজুক অবস্থা; সে হিসেবে আমার আদল যেভাবে পরিবর্তন করার কথা ছিল, তা হয়নি।
করোনার কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে খুব একটা গতি নেই। ফলে সবার আয় কমেছে। আপনাদের অনেকের চাকুরি নেই। সবাই কাজ চালাচ্ছে সীমিত পরিসরে। অব্যাহত লকডাউনে চলাচলও সীমিত। সামনে কী হবে কেউ জানে না। যেহেতু মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির; তো কর আদায় হবে কী করে? কর না পেলে এই যে ৬ লাখ কোটি টাকা খরচের লক্ষ্য, সেটাই বা কীভাবে জোগাড় হবে? এটা ঠিক, যে যাই বলুক, ৬ লাখ কোটি টাকার বাজেট আপনাদের চাহিদার তুলনায় বড় না। ধরুন, আপনারা প্রায় ১৭ কোটি জনগোষ্ঠী। এত বিপুল জনগোষ্ঠীর খাওয়া-পরা, একটি সুন্দর জীবনযাপন, রাস্তা-ঘাট, স্কুল-কলেজ, কাজের সুযোগ তৈরি, স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হলে আরও বড় বাজেট দেওয়া দরকার। সরকার যত বেশি খরচ করবে, তা মানুষের কল্যাণে আসবে। আপনাদের আয় বাড়বে, জীবনযাত্রা উন্নত হবে, ব্যবসা-বাণিজ্য ও উৎপাদন ও সেবা খাতের প্রসার ঘটবে। তাতে আপনাদেরই লাভ। মানে সরকার বিনিয়োগ করলে তা জনগণেরই উপকার হবে। তবে টাকার সংস্থান তেমন নেই বলেই খুব বড় বাজেট দেওয়া যাচ্ছে না। আমার চিন্তা অন্যখানে। এই যে ৬ লাখ কোটি টাকার হিসাব, এটাও জোগাড় করতে সরকারকে অনেক ধারকর্জ করতে হবে। কর আদায়ের অবস্থা ভালো না। তারপরও ৩ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা আয় করতে চায় সরকার। আমার ধারণা এ টাকাও শেষ পর্যন্ত আদায় হবে না। এমনিতেই আয়ের সঙ্গে খরচের বড় ফারাক। তার মধ্যে যদি রাজস্ব আয় ঠিকমতো না হয়, তবে যে ৬ লাখ কোটি টাকা সরকার খরচ করবে ভাবছে তাও সম্ভব হবে না। টাকাই থাকবে না, খরচ করবে কীভাবে? তখন আমি দেখব আমাকে নিয়ে সরকার যে এত গর্ব করে বলছে যে, রেকর্ড বরাদ্দের বাজেট, এটা আর শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়ন হবে না। এ অর্থবছরে যেমন অনেক কিছুই অপূর্ণ রয়েছে তেমন হবে। মানে বিশেষ পরিস্থিতিতে একটি বিশেষ বাজেট দিতে পারত সরকার, তা করেনি। ঠিক আছে, ধরে নিলাম সরকার বাজেট বাস্তবায়ন করবে। এ জন্য ঘাটতির টাকাটা জোগাড় করবে ব্যাংক থেকে ধার করে, বেশি সুদে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে আর উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে হাত পেতে। সরকার ব্যাংক ঋণ নিয়ে আর সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে যদি বেশি টাকা ধার করে, তাতে শুধু সরকারের দায়ই বাড়বে না, ব্যাংকের টাকা নিয়ে নেওয়ার ফলে ব্যাংক থেকে আপনারা বা আপনাদের মত বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা টাকা পাবে না। আর আপনারা যদি ব্যাংক থেকে ঋণ না পান, তবে চাইলে আপনি আপনার ব্যবসা বাড়াতে পারবেন না, বা নতুন ব্যবসা কিংবা শিল্প-কারখানাও করতে পারবেন না। আর যদি তা করতে না পারেন, তবে নতুন কাজের সুযোগ হবে না, মানুষের আয় হবে না, সরকারেরও আয় হবে না। আর সরকারের আয় মানেই তো তা আপনাদের জন্য খরচ করা। তখন তাও হবে না। ফলে সরকারের যে বাজেট বাস্তবায়নের লক্ষ্য সেটাও পূরণ হবে না।
এবার আমার রাজস্ব বাজেটে ব্যবসায়ীদের বিশেষ কিছু সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। করোনার কারণেই এ চিন্তা করেছে সরকার। বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে কর, ভ্যাট ও শুল্ক ছাড় দেওয়া হচ্ছে। এটা আমার মনে হয় ভালোই করছে। তবে শুধু ছাড় দিলে তো হবে না; করের আওতা বাড়াতে হবে। প্রতিবছরই বাজেটে এ ঘোষণা থাকে। বাস্তবে করের আওতা খুব একটা বাড়েনা। যারা নিয়মিত কর দেন; বারবার তাদেরই কর দিতে হয়। নতুন করদাতা খুব একটা তৈরি হয় না।
অথচ আমি দেখি কর দেওয়ার মত সক্ষম মানুষ আছে অসংখ্য। আমি জানি আপনাদের অনেকেই এখন ভালো আয় করেন। আগের চেয়ে উন্নত আপনাদের জীবনযাত্রা। অনেকের গাড়ি আছে, বাড়ি, ফ্ল্যাট আছে। ছেলে মেয়ে বিদেশে পড়তে যায়। এমনকি আপনাদের অনেকের উপরি আয়ও আছে। আপনাদের অনেকের বিদেশেও বাড়ি আছে। অথচ আপনারা তা আয়কর রিটার্নে দেখান না। অনেকে রিটার্নই দেন না। এটাও আমার মনোকষ্টের কারণ। আমার খারাপ লাগে যখন দেখি, আপনাদের অনেকে আমাকে নিয়ে অনেক মন্তব্য করেন, বড় বড় বিবৃতি দেন। আমার রাজস্ব বাজেট বাস্তবায়ন হয় না বলে মাতামাতি করেন। অথচ দেখা যাবে আপনিই ঠিকমতো কর দেন না। রিটার্ন দাখিল করেন না। আপনারা সবাই যদি নাগরিক দায়িত্ব ঠিকমতো পালন না করেন, যেটুকু আয় করেন তা যদি করযোগ্য হয় তা না দেন, তাহলে দেশ এগোবে কী করে? বাজেট বাস্তবায়ন হবে কীভাবে? এটাও আপনাদের ভাবতে হবে। আপনাদের প্রয়োজনেই যেমন সরকারকে বড় বাজেট দিতে হয়, আবার তার অর্থসংস্থানের জন্যও আপনাদের সক্ষম সবাইকে কর দেওয়া প্রয়োজন। না হলে, আমাকে নিয়ে আপনারা সমালোচনা করতেই থাকবেন। আমিও আর পরিপূর্ণ ভাবে সফল হব না। অনেকে তো কর ফাঁকি দেনই, উল্টো তাদেরই অনেকে আবার প্রতিবছর এনবিআরের সঙ্গে বৈঠক করে নিজ নিজ খাতের ব্যবসা ও উদ্যোগের জন্য কর ও শুল্ক ছাড় চান। এভাবে সবাই ছাড় চাইলে, বাজেটের রাজস্ব আয় কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় হবে কী করে?
সরকার আমার উন্নয়ন বাজেটও করেছে বড় আকারের। ২ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা সরকার খরচ করতে চায় উন্নয়নকাজে। আপনারা জানেন, এ টাকাও বছর শেষে পুরোটা খরচ করা যায় না। অনেক সময় অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প নেওয়া হয়, প্রকল্পের টাকার অপব্যবহার হয়, নজরদারির অভাবেও আমার বাজেটের টাকা জলে যায়! এবারও আমার ধারণা পুরো টাকা খরচ করতে পারবে না। আর আমার উন্নয়ন বাজেটের বড় সমস্যা হলো- প্রথম ৮/৯ মাস কাজে কোন গতিই থাকে না। অর্থবছর শেষের দিকে এসে তাড়াহুড়া করে খরচ করে টাকাটা তুলে নেওয়া হয়। বাস্তব কাজের মান খুব খারাপ হয়। আপনারা জানেন যে, সরকারের আইএমইডি বিভাগ প্রকল্প কাজের মূল্যায়ন করে। তখন দেখা যায়, প্রকল্পে কী রকম ভাবে অপচয় হয়। এটা বন্ধ করতে না পারলে, বছর বছর আমার আকার বাড়িয়ে লাভ নেই।
সরকার রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে রীতি মেনে আমার আকার বাড়িয়েছে। এ জন্য এখন অনেক আলোচনা হচ্ছে। আপনারা যদি যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করতেন তবে এ আলোচনাটা শুধু এখন নয়, সব সময় হতো। আমাকে সফল করতে সবাই কাজ করতেন তাহলে আপনাদেরই উপকার হতো। ধরেন, আপনি সরকার। আপনি রাজনৈতিক বিবেচনা না নিয়ে যারা বাজেট বুঝে, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে, সাধারণ মানুষের চাহিদার দিকটি মাথায় রেখে একটি সুষম বাজেট দিলেন। যেটুকু আয় হবে, তার সঙ্গে চাহিদার কথা বিবেচনা করে প্রয়োজনে কিছু ধার করে একটি সুন্দর বরাদ্দ রাখলেন। রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য যৌক্তিক রাখলেন। উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা করলেন প্রয়োজন মেপে, কৃচ্ছতা সাধন করলেন খরচে। এমনকি প্রয়োজন না হলে আপনার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অপ্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণ বাতিল করলেন। আর যে টাকা খরচ করবেন, তা যেন দক্ষতার সঙ্গে হয়, কোন অপচয় বা লুটপাট যেন না হয়, তা কঠোর ভাবে নজরদারি করলেন, দলীয় বিবেচনায় বা তদবিরে কোনো টাকা বরাদ্দ দিলেন না, তাহলে আমার উন্নয়ন বাজেট পূর্ণতা পেত। আর আপনারা যারা সরকারি আমলা আমার এক বছরের টাকা খরচ করবেন, নিয়ন্ত্রণ করবেন, প্রকল্প পাস করবেন, নজরদারি করবেন, তাদেরও সততা দরকার। আপনাদের কারও কারও বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতির অভিযোগ আছে। যদি এ জায়গায় আপনারা আরও স্বচ্ছ হতেন, কোনো অনিয়ম-দুর্নীতিকে প্রশ্রয় না দিতেন, তাহলে আমার বাস্তবায়ন হতো শতভাগ। আর যারা ঠিকাদার তারাও যদি মনে করতেন, এ টাকা আপনার টাকা, জনগণের টাকা। এর অপচয় করবেন না, দুর্নীতি করবেন না। তাহলে আমার বাস্তবায়ন হতো দক্ষতার সঙ্গে। এভাবে যারা কর দেওয়ার জন্য সক্ষম, তারা নিয়ম মেনে কর দিলে সরকারের রাজস্ব আয়েও এমন হাহাকার থাকে না।
এই আপনারা যারা বিরোধী দলে আছেন, তারাও আমার আকার নিয়ে শুধু রাজনীতি করবেন না। একটু পড়বেন, যৌক্তিক পর্যালোচনা করবেন। আপনার দলের যারা অর্থনীতি বোঝেন, বাজেট পর্যালোচনায় যাদের দক্ষতা আছে তাদের দিয়ে বিশ্লেষণ করে মতামত দিন। সাধারণ মানুষের কথা বলার জায়গা নেই। আমার আকার নিয়ে আপনারা যখন সমালোচনায় মত্ত, তখন একজন রিকশাওয়ালাকে রিকশা চালিয়েই তিন বেলা খাবার জোগাড় করতে হয়। আপনারা যখন আমার অঙ্ক করছেন, তখন একজন দিনমজুর, একজন শ্রমিক, একজন দরিদ্র মানুষ একবেলা খাবারের পেছনে অক্লান্ত সংগ্রামে লিপ্ত। দেশের বেশির ভাগ মানুষের কাছে আমার লাখ লাখ কোটি টাকার হিসাব তামাশার মত মনে হয়। কারণ প্রতিবছর ঘটা করে আমাকে তৈরি করা হয়, আলোচনা হয়, সংসদে সুন্দর করে স্বপ্নের মোড়কে আমার উজ্জ্বল ভাবমূর্তি ফুটিয়ে তোলা হয়। তাতে মধ্যবিত্ত শ্রেণি কিংবা দরিদ্র মানুষের কায়ক্লেশের ম্লান জীবনে খরচের ফর্দ বড় করা ছাড়া আর কোন পরিবর্তন আনে না।
আমাকে নিয়ে শুধু চর্বিতচর্বণ আলোচনা নয়; একে প্রকৃত অর্থে মানুষের কল্যাণে প্রণয়ন করুন, বাস্তবায়ন করুন। সহনীয় মাত্রায় ধারকর্জ করুন, তবে চেষ্টা করুন যাতে নিজেদের অর্থে, সামর্থ্যে আমাকে বাস্তবায়ন করতে পারেন। এমন কৌশল নিন, যাতে বৈষম্য কমে, বিনিয়োগ বাড়ে, অর্থের লেনদেনে স্বচ্ছতা থাকে। আমাকে স্বল্প সময়ে লেবুচিপা না করে সারা বছর আমাকে কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, সে লক্ষ্যে আলোচনা করুন।
লেখক: সহকারি সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
এখন রাজনীতির এক গতিময়তার সময়। শেখ হাসিনার ১৫ বছরের গণতন্ত্রহীন কর্তৃত্ববাদী দুর্নীতিপরায়ণ শাসন ছাত্র আন্দোলনে উচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তী শাসনকালে দ্রুততার সঙ্গে নানা রকম রাজনৈতিক কথাবার্তা, চিন্তা-ভাবনা, চেষ্টা-অপচেষ্টা, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার প্রকাশ ঘটছে।
২১ ঘণ্টা আগেবহু বছর আগে সেই ব্রিটিশ যুগে কাজী নজরুল লিখেছিলেন, ‘ক্ষুধাতুর শিশু চায় না স্বরাজ, চায় দুটো ভাত, একটু নুন।’ আসলে পেটের খিদে নিয়ম, আইন, বিবেক, বিচার কোনো কিছুই মানে না। তাই তো প্রবাদ সৃষ্টি হয়েছে, খিদের জ্বালা বড় জ্বালা। এর থেকে বোধ হয় আর কোনো অসহায়তা নেই। খালি পেটে কেউ তত্ত্ব শুনতে চায় না। কাওয়ালিও ন
২১ ঘণ্টা আগেতিন বছরের শিশু মুসা মোল্লা ও সাত বছরের রোহান মোল্লা নিষ্পাপ, ফুলের মতো কোমল। কারও সঙ্গে তাদের কোনো স্বার্থের দ্বন্দ্ব থাকার কথা নয়। কিন্তু বাবার চরম নিষ্ঠুরতায় পৃথিবী ছাড়তে হয়েছে তাদের। আহাদ মোল্লা নামের এক ব্যক্তি দুই ছেলেসন্তানকে গলা কেটে হত্যা করার পর নিজের গলায় নিজে ছুরি চালিয়েছেন।
২১ ঘণ্টা আগেদলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
২ দিন আগে