ড. এ এন এম মাসউদুর রহমান
মানুষের মধ্যে সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ হজরত মুহাম্মদ (সা.)। রাসুল (সা.)-এর মুখনিঃসৃত সব বাণী, কৃতকর্ম ও মৌন সম্মতিকে হাদিস বলে। এ ছাড়া সাহাবি ও তাবিঈগণের বাণীকেও হাদিস নামে অভিহিত করা হয়। হাদিস ইসলামি শরিয়তের দ্বিতীয় উৎস।
মহানবীর সময়কাল থেকে সাহাবিরা বিভিন্ন পদ্ধতিতে হাদিস সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতেন। যেমন হজরত আনাস (রা.) বলেন, আমরা মহানবীর (সা.) কাছে থাকতাম এবং হাদিস শুনতাম। তিনি যখন সভা ত্যাগ করতেন, তখন আমরা পরস্পর শোনা হাদিসের পুনরাবৃত্তি করতাম এবং মুখস্থ করতাম।
মহানবী (সা.) প্রাথমিক একবার হাদিস লিখতে নিষেধ করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘তোমরা কোরআন ছাড়া অন্য কিছু লিপিবদ্ধ করবে না। যদি করে থাকো তবে তা মুছে ফেলবে (মুসলিম)। হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, ‘একদা আমি হাদিস লেখার ব্যাপারে মহানবীর (সা.) কাছে অনুমতি প্রার্থনা করলাম। কিন্তু তিনি আমাকে অনুমতি প্রদান করেননি।’ (আস-সুন্নাহ) এসব নিষেধাজ্ঞার কারণে সাহাবিরা হাদিস লেখা বাদ দিয়ে কেবল মুখস্থ করে সংরক্ষণ করতেন। মক্কা বিজয়ের পর মহানবী (সা.) যখন উপস্থিত জনতার উদ্দেশে ভাষণ দেন, তখন আবু শাহ নামে ইয়ামেনের এক সাহাবি সেই বক্তব্য লিখে নেওয়ার জন্য তাঁর অনুমতি চান। তিনি অনুমতি দেন।
মহানবী (সা.)-এর ইন্তিকালের পর সাহাবিদের যুগ শুরু হয়। এ যুগে বিশ্বের বিভিন্ন দিকে ইসলামের বিস্তৃতি ঘটে। সাহাবিরা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েন এবং স্থায়ী বসতি স্থাপন করেন। তাঁদের চেষ্টায় অনেক মানুষ ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিতে শুরু করেন।
হজরত আয়েশা (রা.) ছিলেন যুগশ্রেষ্ঠ ইসলামি আইনবিদ ও হাদিসবিশারদ। তাঁকে কেন্দ্র করে ওহি অবতীর্ণ হয়েছে এবং তায়াম্মুমের বিধান ফরজ হয়েছে। তিনি দুই হাজারের বেশি হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি মাহনবী (সা.)-এর প্রিয় সহধর্মিণী হওয়ায় অনেক হাদিস সম্পর্কে অবগত হওয়ার সুযোগ লাভ করেছিলেন।
হাদিস প্রচার ও প্রসারে প্রসিদ্ধ হলেন হজরত আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা.)। তিনি ইসলামের প্রাথমিক যুগে ইসলাম গ্রহণ করেন এবং মহানবী (সা.)-এর সান্নিধ্য লাভে সর্বদা তাঁর খেদমতে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি হাবশা ও মদিনায় হিজরত করেন এবং মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে বদর, উহুদ, খন্দকসহ ইসলামের সব যুদ্ধে অংশ নেন। তিনি নবী পরিবারের সঙ্গে এতই ঘনিষ্ঠ ছিলেন যে তাঁদের কোনো পারিবারিক আলোচনায়ও তিনি অংশ নিতেন।
হাদিস প্রচার ও প্রসারে প্রসিদ্ধ ছিলেন হজরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর (রা.)। তিনি দীর্ঘকাল যাবৎ মহানবী (সা.)-এর সঙ্গ লাভ করায় তাঁর অধিকাংশ আমল প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পেয়েছেন। এ জন্য তিনি হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবিগণের মধ্যে বিশেষ মর্যাদা লাভ করেন।
হাদিস প্রচার ও প্রসারে প্রসিদ্ধ ছিলেন হজরত আবুদ দারদা (রা.)। মদিনা হিজরতের পর যেসব লোক মহানবী (সা.) এবং তাঁর সাহাবিদের সাহায্য করেছিলেন, তাঁরা ইসলামের ইতিহাসে আনসার নামে পরিচিত। হিজরতের পর মহানবী (সা.) আবুদ দারদা ও সালমান ফারেসিকে (রা.) ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ করেন। আবুদ দারদা (রা.) সাহাবিগণের মধ্যে ফিক্হ বা ইসলামি আইনশাস্ত্রে পারদর্শী ছিলেন। হাদিস প্রচার ও প্রসারে হজরত আবু হুরায়রার (রা.) অবদান অপরিসীম। ইসলাম গ্রহণের আগে তাঁর নাম ছিল আবদে শামস। ইসলাম গ্রহণের পর তাঁর নাম রাখা হয় আব্দুর রহমান। আবু হুরায়রা ছিল তাঁর উপনাম। তিনি প্রায় ছয় হাজার হাদিস বর্ণনা করেন।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
মানুষের মধ্যে সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ হজরত মুহাম্মদ (সা.)। রাসুল (সা.)-এর মুখনিঃসৃত সব বাণী, কৃতকর্ম ও মৌন সম্মতিকে হাদিস বলে। এ ছাড়া সাহাবি ও তাবিঈগণের বাণীকেও হাদিস নামে অভিহিত করা হয়। হাদিস ইসলামি শরিয়তের দ্বিতীয় উৎস।
মহানবীর সময়কাল থেকে সাহাবিরা বিভিন্ন পদ্ধতিতে হাদিস সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতেন। যেমন হজরত আনাস (রা.) বলেন, আমরা মহানবীর (সা.) কাছে থাকতাম এবং হাদিস শুনতাম। তিনি যখন সভা ত্যাগ করতেন, তখন আমরা পরস্পর শোনা হাদিসের পুনরাবৃত্তি করতাম এবং মুখস্থ করতাম।
মহানবী (সা.) প্রাথমিক একবার হাদিস লিখতে নিষেধ করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘তোমরা কোরআন ছাড়া অন্য কিছু লিপিবদ্ধ করবে না। যদি করে থাকো তবে তা মুছে ফেলবে (মুসলিম)। হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, ‘একদা আমি হাদিস লেখার ব্যাপারে মহানবীর (সা.) কাছে অনুমতি প্রার্থনা করলাম। কিন্তু তিনি আমাকে অনুমতি প্রদান করেননি।’ (আস-সুন্নাহ) এসব নিষেধাজ্ঞার কারণে সাহাবিরা হাদিস লেখা বাদ দিয়ে কেবল মুখস্থ করে সংরক্ষণ করতেন। মক্কা বিজয়ের পর মহানবী (সা.) যখন উপস্থিত জনতার উদ্দেশে ভাষণ দেন, তখন আবু শাহ নামে ইয়ামেনের এক সাহাবি সেই বক্তব্য লিখে নেওয়ার জন্য তাঁর অনুমতি চান। তিনি অনুমতি দেন।
মহানবী (সা.)-এর ইন্তিকালের পর সাহাবিদের যুগ শুরু হয়। এ যুগে বিশ্বের বিভিন্ন দিকে ইসলামের বিস্তৃতি ঘটে। সাহাবিরা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েন এবং স্থায়ী বসতি স্থাপন করেন। তাঁদের চেষ্টায় অনেক মানুষ ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিতে শুরু করেন।
হজরত আয়েশা (রা.) ছিলেন যুগশ্রেষ্ঠ ইসলামি আইনবিদ ও হাদিসবিশারদ। তাঁকে কেন্দ্র করে ওহি অবতীর্ণ হয়েছে এবং তায়াম্মুমের বিধান ফরজ হয়েছে। তিনি দুই হাজারের বেশি হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি মাহনবী (সা.)-এর প্রিয় সহধর্মিণী হওয়ায় অনেক হাদিস সম্পর্কে অবগত হওয়ার সুযোগ লাভ করেছিলেন।
হাদিস প্রচার ও প্রসারে প্রসিদ্ধ হলেন হজরত আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা.)। তিনি ইসলামের প্রাথমিক যুগে ইসলাম গ্রহণ করেন এবং মহানবী (সা.)-এর সান্নিধ্য লাভে সর্বদা তাঁর খেদমতে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি হাবশা ও মদিনায় হিজরত করেন এবং মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে বদর, উহুদ, খন্দকসহ ইসলামের সব যুদ্ধে অংশ নেন। তিনি নবী পরিবারের সঙ্গে এতই ঘনিষ্ঠ ছিলেন যে তাঁদের কোনো পারিবারিক আলোচনায়ও তিনি অংশ নিতেন।
হাদিস প্রচার ও প্রসারে প্রসিদ্ধ ছিলেন হজরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর (রা.)। তিনি দীর্ঘকাল যাবৎ মহানবী (সা.)-এর সঙ্গ লাভ করায় তাঁর অধিকাংশ আমল প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পেয়েছেন। এ জন্য তিনি হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবিগণের মধ্যে বিশেষ মর্যাদা লাভ করেন।
হাদিস প্রচার ও প্রসারে প্রসিদ্ধ ছিলেন হজরত আবুদ দারদা (রা.)। মদিনা হিজরতের পর যেসব লোক মহানবী (সা.) এবং তাঁর সাহাবিদের সাহায্য করেছিলেন, তাঁরা ইসলামের ইতিহাসে আনসার নামে পরিচিত। হিজরতের পর মহানবী (সা.) আবুদ দারদা ও সালমান ফারেসিকে (রা.) ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ করেন। আবুদ দারদা (রা.) সাহাবিগণের মধ্যে ফিক্হ বা ইসলামি আইনশাস্ত্রে পারদর্শী ছিলেন। হাদিস প্রচার ও প্রসারে হজরত আবু হুরায়রার (রা.) অবদান অপরিসীম। ইসলাম গ্রহণের আগে তাঁর নাম ছিল আবদে শামস। ইসলাম গ্রহণের পর তাঁর নাম রাখা হয় আব্দুর রহমান। আবু হুরায়রা ছিল তাঁর উপনাম। তিনি প্রায় ছয় হাজার হাদিস বর্ণনা করেন।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
এখন রাজনীতির এক গতিময়তার সময়। শেখ হাসিনার ১৫ বছরের গণতন্ত্রহীন কর্তৃত্ববাদী দুর্নীতিপরায়ণ শাসন ছাত্র আন্দোলনে উচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তী শাসনকালে দ্রুততার সঙ্গে নানা রকম রাজনৈতিক কথাবার্তা, চিন্তা-ভাবনা, চেষ্টা-অপচেষ্টা, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার প্রকাশ ঘটছে।
১২ ঘণ্টা আগেবহু বছর আগে সেই ব্রিটিশ যুগে কাজী নজরুল লিখেছিলেন, ‘ক্ষুধাতুর শিশু চায় না স্বরাজ, চায় দুটো ভাত, একটু নুন।’ আসলে পেটের খিদে নিয়ম, আইন, বিবেক, বিচার কোনো কিছুই মানে না। তাই তো প্রবাদ সৃষ্টি হয়েছে, খিদের জ্বালা বড় জ্বালা। এর থেকে বোধ হয় আর কোনো অসহায়তা নেই। খালি পেটে কেউ তত্ত্ব শুনতে চায় না। কাওয়ালিও ন
১২ ঘণ্টা আগেতিন বছরের শিশু মুসা মোল্লা ও সাত বছরের রোহান মোল্লা নিষ্পাপ, ফুলের মতো কোমল। কারও সঙ্গে তাদের কোনো স্বার্থের দ্বন্দ্ব থাকার কথা নয়। কিন্তু বাবার চরম নিষ্ঠুরতায় পৃথিবী ছাড়তে হয়েছে তাদের। আহাদ মোল্লা নামের এক ব্যক্তি দুই ছেলেসন্তানকে গলা কেটে হত্যা করার পর নিজের গলায় নিজে ছুরি চালিয়েছেন।
১২ ঘণ্টা আগেদলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
১ দিন আগে