লাভা মাহমুদা
রাজধানী শহর ঢাকা বাসযোগ্যতা হারিয়েছে অনেক আগেই। দূষণেও সেরাদের তালিকায় ঢাকা স্থান পেয়েছে। দীর্ঘদিন থেকেই দূষণের নগরীর হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে দুই কোটিরও বেশি মানুষের এই প্রাণের শহর। পানি, বায়ু, শব্দ—সব ধরনের দূষণে নাজুক ঢাকা এখন সমস্ত মাত্রা অতিক্রম করে পৃথিবীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দূষণের নগর।
শিল্পকারখানা ও যানবাহন বায়ুদূষণের প্রধানতম কারণ। এর উপাদানগুলো মূলত ধুলিকণা, সালফার, কার্বণ ডাই–অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, হাইড্রোকার্বন, কার্বন মনো–অক্সাইড, সিসা ও অ্যামোনিয়া। অপরিকল্পিতভাবে শিল্পকারখানা স্থাপনের কারণে ক্ষতিকর উপাদানগুলোর ব্যাপক হারে নিঃসরণ ঘটছে। ফলে বায়ুদূষণও ক্রমাগত বাড়ছে। ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ পারমাণবিক শক্তি গবেষণাকেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেন পৃথিবীর বড় শহরগুলোর মধ্যে ঢাকার বাতাসে সবচেয়ে বেশি মিশছে সিসা। সিসা কমানোর কোনো তথ্য জানা নেই।
বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি গবেষণাকেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী ঢাকায় যানবাহনগুলো প্রতিদিন ১০০ কেজি সিসা, ১ দশমিক ৫ টন সালফার ডাই–অক্সাইড, ৬০ টন কার্বন মনো–অক্সাইড নির্গত করে। এসব উপাদান ক্রমাগত বাতাসের সঙ্গে মিশছে। সেই বাতাস আমাদের নিঃশ্বাসের সঙ্গে মিশে দেহে যক্ষ্মা, ইনফ্লুয়েঞ্জা, ব্রংকাইটিস, নিউমোনিয়া, হাঁপানি প্রভৃতি মারাত্মক রোগের সৃষ্টি করে।
বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য প্রতিনিয়ত খাল–বিল–নদীতে মেশার ফলে এবং জমিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত রাসায়নিক সার, কীটনাশক ইত্যাদি বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে পুকুর, নদীতে গিয়ে পড়ছে। এতে অক্সিজেন কমে যাচ্ছে এবং এর ক্ষতিকারক প্রভাবক হিসেবে পুকুর ও নদীর জলজ প্রাণীর মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। কীটনাশক, সার ও বর্জ্য মাছের রোগ সৃষ্টি করছে, যার ফলে ক্যানসারসহ মানুষের নানাবিধ রোগ হচ্ছে।
আমরা যারা এই শহরে বাস করি, তারা জানি—প্রতি পদে কত যন্ত্রণা ভোগ করি। ধুলায়, ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন পুরো শহর, নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। মেজাজ বিগড়ে যায়। শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ে। অতিরিক্ত ট্রাফিক জ্যামের কারণে ১০ মিনিটের পথ পেরুতে দুই ঘণ্টা লেগে যায়। সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারি না। সমস্ত সহ্যক্ষমতা ছাড়িয়ে জ্যাম এখন অসহনীয় অবস্থায় পৌঁছেছে । প্রতিদিন কী পরিমাণ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে, ভাবলে শুধু কষ্টই বাড়ে। অনেকেই হাঁটার কথা বলেন। কিন্তু ফুটপাতগুলো দিয়ে হাঁটতে গেলে বোঝা যায়, সেগুলো মোটেই জনবান্ধব নয় বরং যন্ত্রণাদায়ক। হাঁটতে গেলে কতবার হোঁচট খেতে হয়, তার ইয়ত্তা নেই। তা ছাড়া বেশির ভাগ ফুটপাত স্থায়ী অথবা অস্থায়ী হকারদের দখলে।
একটু বৃষ্টিতে পানি জমে রাস্তাঘাট টইটম্বুর হয়ে যায়, অন্যান্য বাহনের সঙ্গে চলে নৌকাও। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে এই শহরে । এখন এখানে শীতকাল আসে শুধু ঋতুর হিসেবে। প্রায় পুরোটা বছরই প্রচণ্ড গরম থাকে। গরম এবং আর্দ্রতার পরিমাণ এত বেশি যে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। বছরভর তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষা করি, কবে হিমালয় থেকে একটু শীতের হিমেল পরশ আমাদের শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তি দেবে।
কিন্তু বাস্তবতা অন্যরকম। ১৩৪ বর্গমাইল আয়তনের ঢাকায় মোট জনসংখ্যা প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ। প্রতি বর্গমাইলে ১ লাখ ১৫ হাজার লোকের বাস এবং প্রতিদিন যোগ হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ মানুষ। এটাই পৃথিবীর সবচেয়ে জনঘনত্বপূর্ণ নগর। এই বিশাল মানুষের বোঝা বইতে পারছে না ঢাকা। এর প্রভাব পড়ছে প্রতিটি ক্ষেত্রেই। আর দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে নগরজীবন।
তবে বাস্তবতা যাই হোক, দখল হওয়া খালগুলোকে তার যৌবন ফিরিয়ে দিতে হবে, ঢাকার ভেতর থেকে সব কলকারখানা বাইরে নেওয়াসহ সব উপায় প্রয়োগ করে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এখনই। আমরা চাই— বিশুদ্ধ মুক্ত বায়ুতে প্রাণভরে শ্বাস নিতে, চাই গাছের ছায়ায় আচ্ছাদিত শহরের হিমেল পরশ পেতে। মেট্রোরেলের মতো মেগা প্রকল্পগুলোর দ্রুত বাস্তবায়নে যানবাহনের চাপ কমবে। ৪০০ বছরের পুরোনো এই শহর আমাদের অতি আপন, হৃদয়ের অংশ। এর অলিগলিতে আমরা প্রাণের স্পন্দন খুঁজে পাই। এই শহরের বাসিন্দা হিসেবে দূষিত বায়ুতে ধুঁকে ধুঁকে মরতে চাই না। এই নগরের একজন গর্বিত নাগরিক হিসেবে প্রাণোচ্ছ্বল জীবন চাই, চাই আনন্দে বেঁচে থাকতে।
রাজধানী শহর ঢাকা বাসযোগ্যতা হারিয়েছে অনেক আগেই। দূষণেও সেরাদের তালিকায় ঢাকা স্থান পেয়েছে। দীর্ঘদিন থেকেই দূষণের নগরীর হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে দুই কোটিরও বেশি মানুষের এই প্রাণের শহর। পানি, বায়ু, শব্দ—সব ধরনের দূষণে নাজুক ঢাকা এখন সমস্ত মাত্রা অতিক্রম করে পৃথিবীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দূষণের নগর।
শিল্পকারখানা ও যানবাহন বায়ুদূষণের প্রধানতম কারণ। এর উপাদানগুলো মূলত ধুলিকণা, সালফার, কার্বণ ডাই–অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, হাইড্রোকার্বন, কার্বন মনো–অক্সাইড, সিসা ও অ্যামোনিয়া। অপরিকল্পিতভাবে শিল্পকারখানা স্থাপনের কারণে ক্ষতিকর উপাদানগুলোর ব্যাপক হারে নিঃসরণ ঘটছে। ফলে বায়ুদূষণও ক্রমাগত বাড়ছে। ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ পারমাণবিক শক্তি গবেষণাকেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেন পৃথিবীর বড় শহরগুলোর মধ্যে ঢাকার বাতাসে সবচেয়ে বেশি মিশছে সিসা। সিসা কমানোর কোনো তথ্য জানা নেই।
বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি গবেষণাকেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী ঢাকায় যানবাহনগুলো প্রতিদিন ১০০ কেজি সিসা, ১ দশমিক ৫ টন সালফার ডাই–অক্সাইড, ৬০ টন কার্বন মনো–অক্সাইড নির্গত করে। এসব উপাদান ক্রমাগত বাতাসের সঙ্গে মিশছে। সেই বাতাস আমাদের নিঃশ্বাসের সঙ্গে মিশে দেহে যক্ষ্মা, ইনফ্লুয়েঞ্জা, ব্রংকাইটিস, নিউমোনিয়া, হাঁপানি প্রভৃতি মারাত্মক রোগের সৃষ্টি করে।
বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য প্রতিনিয়ত খাল–বিল–নদীতে মেশার ফলে এবং জমিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত রাসায়নিক সার, কীটনাশক ইত্যাদি বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে পুকুর, নদীতে গিয়ে পড়ছে। এতে অক্সিজেন কমে যাচ্ছে এবং এর ক্ষতিকারক প্রভাবক হিসেবে পুকুর ও নদীর জলজ প্রাণীর মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। কীটনাশক, সার ও বর্জ্য মাছের রোগ সৃষ্টি করছে, যার ফলে ক্যানসারসহ মানুষের নানাবিধ রোগ হচ্ছে।
আমরা যারা এই শহরে বাস করি, তারা জানি—প্রতি পদে কত যন্ত্রণা ভোগ করি। ধুলায়, ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন পুরো শহর, নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। মেজাজ বিগড়ে যায়। শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ে। অতিরিক্ত ট্রাফিক জ্যামের কারণে ১০ মিনিটের পথ পেরুতে দুই ঘণ্টা লেগে যায়। সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারি না। সমস্ত সহ্যক্ষমতা ছাড়িয়ে জ্যাম এখন অসহনীয় অবস্থায় পৌঁছেছে । প্রতিদিন কী পরিমাণ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে, ভাবলে শুধু কষ্টই বাড়ে। অনেকেই হাঁটার কথা বলেন। কিন্তু ফুটপাতগুলো দিয়ে হাঁটতে গেলে বোঝা যায়, সেগুলো মোটেই জনবান্ধব নয় বরং যন্ত্রণাদায়ক। হাঁটতে গেলে কতবার হোঁচট খেতে হয়, তার ইয়ত্তা নেই। তা ছাড়া বেশির ভাগ ফুটপাত স্থায়ী অথবা অস্থায়ী হকারদের দখলে।
একটু বৃষ্টিতে পানি জমে রাস্তাঘাট টইটম্বুর হয়ে যায়, অন্যান্য বাহনের সঙ্গে চলে নৌকাও। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে এই শহরে । এখন এখানে শীতকাল আসে শুধু ঋতুর হিসেবে। প্রায় পুরোটা বছরই প্রচণ্ড গরম থাকে। গরম এবং আর্দ্রতার পরিমাণ এত বেশি যে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। বছরভর তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষা করি, কবে হিমালয় থেকে একটু শীতের হিমেল পরশ আমাদের শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তি দেবে।
কিন্তু বাস্তবতা অন্যরকম। ১৩৪ বর্গমাইল আয়তনের ঢাকায় মোট জনসংখ্যা প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ। প্রতি বর্গমাইলে ১ লাখ ১৫ হাজার লোকের বাস এবং প্রতিদিন যোগ হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ মানুষ। এটাই পৃথিবীর সবচেয়ে জনঘনত্বপূর্ণ নগর। এই বিশাল মানুষের বোঝা বইতে পারছে না ঢাকা। এর প্রভাব পড়ছে প্রতিটি ক্ষেত্রেই। আর দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে নগরজীবন।
তবে বাস্তবতা যাই হোক, দখল হওয়া খালগুলোকে তার যৌবন ফিরিয়ে দিতে হবে, ঢাকার ভেতর থেকে সব কলকারখানা বাইরে নেওয়াসহ সব উপায় প্রয়োগ করে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এখনই। আমরা চাই— বিশুদ্ধ মুক্ত বায়ুতে প্রাণভরে শ্বাস নিতে, চাই গাছের ছায়ায় আচ্ছাদিত শহরের হিমেল পরশ পেতে। মেট্রোরেলের মতো মেগা প্রকল্পগুলোর দ্রুত বাস্তবায়নে যানবাহনের চাপ কমবে। ৪০০ বছরের পুরোনো এই শহর আমাদের অতি আপন, হৃদয়ের অংশ। এর অলিগলিতে আমরা প্রাণের স্পন্দন খুঁজে পাই। এই শহরের বাসিন্দা হিসেবে দূষিত বায়ুতে ধুঁকে ধুঁকে মরতে চাই না। এই নগরের একজন গর্বিত নাগরিক হিসেবে প্রাণোচ্ছ্বল জীবন চাই, চাই আনন্দে বেঁচে থাকতে।
এখন রাজনীতির এক গতিময়তার সময়। শেখ হাসিনার ১৫ বছরের গণতন্ত্রহীন কর্তৃত্ববাদী দুর্নীতিপরায়ণ শাসন ছাত্র আন্দোলনে উচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তী শাসনকালে দ্রুততার সঙ্গে নানা রকম রাজনৈতিক কথাবার্তা, চিন্তা-ভাবনা, চেষ্টা-অপচেষ্টা, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার প্রকাশ ঘটছে।
১ দিন আগেবহু বছর আগে সেই ব্রিটিশ যুগে কাজী নজরুল লিখেছিলেন, ‘ক্ষুধাতুর শিশু চায় না স্বরাজ, চায় দুটো ভাত, একটু নুন।’ আসলে পেটের খিদে নিয়ম, আইন, বিবেক, বিচার কোনো কিছুই মানে না। তাই তো প্রবাদ সৃষ্টি হয়েছে, খিদের জ্বালা বড় জ্বালা। এর থেকে বোধ হয় আর কোনো অসহায়তা নেই। খালি পেটে কেউ তত্ত্ব শুনতে চায় না। কাওয়ালিও ন
১ দিন আগেতিন বছরের শিশু মুসা মোল্লা ও সাত বছরের রোহান মোল্লা নিষ্পাপ, ফুলের মতো কোমল। কারও সঙ্গে তাদের কোনো স্বার্থের দ্বন্দ্ব থাকার কথা নয়। কিন্তু বাবার চরম নিষ্ঠুরতায় পৃথিবী ছাড়তে হয়েছে তাদের। আহাদ মোল্লা নামের এক ব্যক্তি দুই ছেলেসন্তানকে গলা কেটে হত্যা করার পর নিজের গলায় নিজে ছুরি চালিয়েছেন।
১ দিন আগেদলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
২ দিন আগে