সেলিম জাহান
আজকের করোনা অতিমারি প্রকৃত অর্থেই একটি বৈশ্বিক সংকট–ব্যাপ্তিতে, গভীরতায় ও অভিঘাতে। ব্যাপ্তির দিক থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বের ২১২টি দেশ ও ভূখণ্ড এর শিকার হয়েছে। অভিঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বের মোট ১৯ কোটি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এবং ৪১ লাখের বেশি মানুষ এই অতিমারিতে এরই মধ্যে প্রাণ হারিয়েছে। নতুন নতুন ধরনের জীবাণু তরঙ্গের মতো আসছে–গ্রাস করছে দেশ, সমাজ ও মানুষ। সন্দেহ নেই, তেজ ও তাণ্ডবের দিক থেকে করোনা সারা বিশ্বকে দিশেহারা করে ফেলেছে এবং মাত্র দেড় বছরের মধ্যে এটা জীবন ও জগতের চিত্র বদলে দিয়েছে। করোনা সংকট এক ‘নতুন বাস্তবতার’ জন্ম দিয়েছে। এ বাস্তবতার নানান প্রভাব আছে বিভিন্ন পর্যায়ে–দেশজ ও রাষ্ট্রীয় স্তরে। এই বাস্তবতার নানান মাত্রিকতা আছে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে, সামাজিক বলয়ে ও মনস্তাত্ত্বিক বিষয়ে। এই বাস্তবতার অভিঘাত পড়বে ব্যক্তিমানুষের জীবনে, পারিবারিক আঙিনায়, সমাজের উঠোনে। প্রশ্ন উঠছে, করোনার কারণে বৈশ্বিক ও বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থা ও পরিস্থিতি কেমন দাঁড়াবে এবং সে অবস্থায় করণীয় কী?
বৈশ্বিক পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব অর্থনীতি ২০২০ সালে ৪.৪ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। ১৯৩০ সালের অতিমন্দার পর এই প্রথম বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির হার এত হ্রাস পেল। গত বছর চীনের প্রবৃদ্ধির হারও ছিল ২ শতাংশের কিছু বেশি। অথচ দুই দশক ধরে চীনের গড় প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ শতাংশের ওপরে। করোনা অতিমারি পৃথিবীর সব দেশে কর্মনিয়োজনকেও সংকুচিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মতো শক্তিশালী অর্থনীতিতেও বেকারত্বের হার ২০১৯-এর ৩ শতাংশ থেকে তিন গুণ বেড়ে ২০২০-এ ৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছিল। বিশ্ব অর্থনীতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেবামূলক খাত, যেখানে কর্মনিয়োজন সবচেয়ে বেশি। বৈশ্বিক বাণিজ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। যুক্তরাষ্ট্রে ৬৬ লাখ লোক কর্মহীন হয়ে পড়েছে, স্পেনে ৩৫ লাখ। এর ফলে তাদের কর্মসংস্থান, আয় ও জীবনযাত্রার মানের ওপরে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। যুক্তরাজ্যে প্রাক্কলন করা হচ্ছে যে, প্রায় ৮ লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী তাঁদের ব্যবসা হারাবেন।
করোনা সংকটে অর্থনৈতিক দিক থেকে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ও হবে দরিদ্র, প্রান্তিক ও নাজুক জনগোষ্ঠী। এর মধ্যে থাকবে বিত্তহীন, বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী এবং নারীরা। সারা বিশ্বে গত তিন দশকে চরম দারিদ্র্য হ্রাস করার ব্যাপারে যে অভূতপূর্ব অগ্রগতি হয়েছে, তা ব্যাহত হবে। গত ত্রিশ বছরে বিশ্বের চরম দরিদ্রের সংখ্যা ১৯০ কোটি থেকে ৮৯ কোটিতে নেমে এসেছিল। অর্থাৎ, গড়ে প্রতিদিন বিশ্বে ২ লাখের বেশি মানুষ চরম দারিদ্র্যসীমার ওপরে উঠে আসছিল। এখন প্রাক্কলনে বলা হচ্ছে, করোনার কারণে সারা বিশ্বে নতুন করে ৫০ কোটি মানুষ চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যেতে পারে।
এ সংকটের একটি ফলাফল হতে পারে বৈশ্বিক খাদ্যঘাটতি। এর মধ্যেই বলা হচ্ছে, বিশ্বে ২৫ কোটি মানুষ দুর্ভিক্ষপীড়িত হতে পারে। সাধারণ সময়ে খাদ্য লভ্যতার ক্ষেত্রে উৎপাদন নয়, বণ্টনই মূল সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। অসম বণ্টনের কারণেই মোট উৎপাদন পর্যাপ্ত হলেও সবার কাছে খাদ্য লভ্য হয় না। দরিদ্ররা বুভুক্ষুই থেকে যায়। করোনা-পরবর্তী পর্যায়ে এ সংকটটি আরও ঘনীভূত হতে পারে। পৃথিবীতে খাদ্যের অভাবে কোনো দুর্ভিক্ষ হয়নি, হয়েছে সুষম বণ্টনের অভাবে। ১৯৪৩-এর মন্বন্তরের সময়ে মানুষ যখন বুভুক্ষায় মারা গেছে, তখনো সরকারি গুদামে খাদ্য মজুত ছিল।
করোনা সংকটকে পুঁজি করে দেশজ ও আন্তর্জাতিক কায়েমি স্বার্থবাদীরা খাদ্যসামগ্রী মজুত করে মুনাফা সর্বোচ্চকরণে প্রয়াসী হতে পারে। ফলে কৃত্রিম খাদ্যসংকট তৈরি হতে পারে এবং আবির্ভূত হতে পারে মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ। সুতরাং প্রকৃতিসৃষ্ট খাদ্য ঘাটতির সঙ্গে যুক্ত হবে মানুষের সৃষ্ট সংকট। বলার অপেক্ষা রাখে না, এ-জাতীয় দুর্ভিক্ষে প্রধান বলি হবে দরিদ্র জনগোষ্ঠী। বৈশ্বিক পর্যায়ে জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দেশজ আলোচনা এখনই শুরু হওয়া উচিত–কী করে আন্তর্জাতিক বণ্টনব্যবস্থাকে সংহত করা যায়। সেই সঙ্গে দেশজ পর্যায়ে প্রতিরোধব্যবস্থাও প্রণীত হওয়া দরকার।
খাদ্য গ্রহণে কৃচ্ছ্রসাধন আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য একান্ত প্রয়োজন। খাদ্য অপচয় নয়, লোক দেখানো ভোগ নয়–এগুলোই আমাদের মূলমন্ত্র হওয়া উচিত। সেই সঙ্গে দরিদ্র জনগণের খাদ্যনিরাপত্তার জন্য খাদ্য-ত্রাণ বজায় রাখতে হবে। বিশ্বের সব দেশেই এটা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করতে হবে। এ জন্য বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচিকে জোরদার করা প্রয়োজন। আমরা সবাই এখন একই নৌকার যাত্রী। এ অবস্থায় আত্মকেন্দ্রিকতা আমাদের উত্তরণের পথ হতে পারে না। যূথবদ্ধতাই আমাদের পরিত্রাণের একমাত্র উপায়–এই সহজ সত্যটি আমরা যেন ভুলে না যাই।
কোনো দুর্যোগেই বিশ্বের সব জনগোষ্ঠী সমভাবে পরাস্ত হয় না। তবে বেশির ভাগ দুর্যোগেই, তা সে যুদ্ধবিগ্রহই হোক, কিংবা ঘূর্ণিঝড়-প্লাবনই হোক অথবা দুর্ভিক্ষ-মহামারিই হোক না কেন, অসমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দরিদ্র ও প্রান্তিক গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠীর মধ্যে একদিকে যেমন নানান প্রতিবন্ধকতাসম্পন্ন মানুষ আছে, তেমনি আছেন জাতিসত্তাভিত্তিক সংখ্যালঘু; একদিকে যেমন আছে পরিবেশ-শরণার্থী, তেমনি আছে নৃতাত্ত্বিক ক্ষুদ্রগোষ্ঠী। এবারের করোনা দুর্যোগও তার ব্যতিক্রম নয়। সব দেশেই এ প্রবণতা বর্তমান।
প্রথমেই যে কথাটা বলা দরকার, তা হচ্ছে, করোনার সংক্রমণ আর মৃত্যুহারের মাঝেই তো একধরনের বৈষম্য আছে। করোনায় যাদের প্রাণহানি ঘটেছে, তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশ পুরুষ এবং ৩০ শতাংশ নারী। করোনার সংক্রমণ আর মৃত্যুহারের মধ্যেও বয়স্ক জনগোষ্ঠীর অনুপাত বেশি। তেমনি যেসব ব্যক্তিবর্গ নানান রোগে যেমন: উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, প্রমেহ, হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টজনিত অসুবিধায় ভুগছেন, তাঁরাও করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর অন্যতম শিকার। যেসব রোগের কথা বলা হয়েছে, তাতে যাঁরা ভুগছেন, সেসব জনগোষ্ঠীর যেকোনো জীবাণু প্রতিরোধক্ষমতা তুলনামূলকভাবে কম। সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই তাঁরাই করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর মূল শিকার হয়েছেন।
দ্বিতীয় প্রবণতা সম্পর্কে কিছুটা বলা প্রয়োজন। নারীর তুলনায় পুরুষেরা মৃত্যুর মূল শিকার। চীনের ৩ হাজার ৫০০ করোনায় মৃত্যুর মধ্যে ৬৪ শতাংশ পুরুষ আর ৩৬ শতাংশ নারী। ব্রিটেনে এ পর্যন্ত করোনায় মৃত্যুর ৭০ শতাংশ পুরুষ ও ৩০ শতাংশ নারী। অর্থাৎ, পুরুষের মৃত্যুর হার নারীর দ্বিগুণ। এর কারণ বিবিধ। নারীর একটি জৈবিক শারীরিক সু-অবস্থা আছে, যার কারণে নারীর প্রত্যাশিত গড় আয়ু বেশি। সেই সঙ্গে ধূমপান ও অতিরিক্ত মদ্যপানের প্রকোপ পুরুষের মাঝে বেশি, সুস্বাস্থ্য অভ্যাস পুরুষের চেয়ে নারীর ভালো এবং হৃদরোগ বা প্রমেহর মতো রোগের সংক্রমণ পুরুষের চেয়ে নারীর মধ্যে কম। যেকোনো জীবাণু প্রতিরোধের ক্ষমতা তরুণদের চেয়ে বয়ঃবৃদ্ধদের কম। করোনাও তার ব্যতিক্রম নয়। ফলে করোনায় মৃত্যুহার বয়ঃবৃদ্ধদের বেশি।
দ্বিতীয়ত, এ পর্যন্ত যতটুকু জানা গেছে, তাতে বিভিন্ন দেশে নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘুরা অনানুপাতিকভাবে বেশি করোনার শিকার হচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রে জনসংখ্যার মাত্র ১৩ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ; কিন্তু করোনা সংক্রমণে তাদের অনুপাত ২৫ শতাংশ। যুক্তরাজ্যে প্রতি তিনজন করোনায় আক্রান্ত মানুষের মধ্যে একজন নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘু। বলা হচ্ছে, কৃষ্ণাঙ্গ ও কিছু কিছু দক্ষিণ এশীয় জনগোষ্ঠীর ৯০ শতাংশ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন। যুক্তরাজ্যে জাতীয় স্বাস্থ্যব্যবস্থার ৫৮ শতাংশ চিকিৎসক ও সেবিকাই দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত। এ পর্যন্ত ব্রিটেনে কৃষ্ণাঙ্গ, এশীয় ও সংখ্যালঘু উদ্ভূত ১৩০ জন চিকিৎসক, সেবিকা ও অন্যান্য সেবাকর্মী মৃত্যুবরণ করেছেন। নিবিড় পরিচর্যা স্থাপনায় প্রতি তিনটি মৃত্যুর একজন কৃষ্ণাঙ্গ, এশীয় ও সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর।
নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘুদের অনানুপাতিকভাবে করোনার শিকার হওয়ার পেছনে নানান কারণ রয়েছে, যার কেন্দ্রবিন্দুতেই রয়েছে দারিদ্র্য, বঞ্চনা ও অসমতা। দারিদ্র্যের কারণেই এই জনগোষ্ঠী একই বাড়িতে গাদাগাদি করে বসবাস করে। ফলে সংগনিরোধ সেখানে বাতুলতা মাত্র। সেই সঙ্গে এ-জাতীয় মানুষ কর্মসংস্থানের যে স্তরে কাজ করে, সেখানে কাজ ও আয়ের জন্য তাদের বাইরে আসতেই হয়। ফলে সামাজিক জনদূরত্ব সেখানে কাজ করে না। নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘুরা যেখানে বসবাস করে, সেখানে সামাজিক সেবার বিস্তৃতি ও মান উভয়েই বড় সীমিত। সব মিলিয়ে করোনাকালে এসব জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা বড়ই কম।
যুক্তরাষ্ট্রে দেখা গেছে, প্রতি চারজন করোনায় সংক্রমিতের একজন কৃষ্ণাঙ্গ। ব্রিটেনেও এ-জাতীয় প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। আগামী দিনে যখন অন্যান্য দেশের উপাত্ত লভ্য হবে, তখন হয়তো দেখা যাবে, সংখ্যালঘুরাই সংক্রমিত হয়েছিল বেশি এবং মৃত্যুর সংখ্যাও তাদের মাঝেই বেশি ছিল। যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে উচ্চতর সংক্রমণের কারণের কিছু কিছু কাঠামোগত এবং কিছু কিছু প্রায়োগিক। কাঠামোগত দিক থেকে বিচার করলে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠী ঐতিহাসিক দিক থেকেই দরিদ্র, বঞ্চিত ও অসমতার শিকার। তারা স্বল্পশিক্ষিত, তাদের পুষ্টির অভাব রয়েছে এবং তাদের জীবনযাত্রার মান নিম্ন। ন্যূনতম সামাজিক সুবিধাও তাদের কাছে লভ্য নয়। সুতরাং কাঠামোগত দিক থেকে তারা যেকোনো সংকটে ভঙ্গুর অবস্থানে থাকে।
সেই সঙ্গে প্রায়োগিক অনেক কারণও এর সঙ্গে যুক্ত। কৃষ্ণাঙ্গরা বেশির ভাগই কর্ম-মইয়ের নিচের দিকে অবস্থান করেন। এর ফলে একদিকে যেমন তাঁদের সঞ্চয় কম, অন্যদিকে কাজের জন্য তাঁদের ঘরের বাইরে আসতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। তাঁদের জীবনযাত্রা প্রণালির কারণেও ঘরের মধ্যে সামাজিক জনদূরত্ব বজায় রাখা তাঁদের জন্য কষ্টকর। তাঁরা যেসব অঞ্চলে বসবাস করেন, সেখানে স্বাস্থ্যসুবিধা ও সেবাও সীমিত। এসব প্রায়োগিক কারণেও তাঁদের করোনা-ভঙ্গুরতা বেশি। (চলবে)
লেখক: ভূতপূর্ব পরিচালক, মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন দপ্তর এবং দারিদ্র্য বিমোচন বিভাগ,
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি
নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র
আজকের করোনা অতিমারি প্রকৃত অর্থেই একটি বৈশ্বিক সংকট–ব্যাপ্তিতে, গভীরতায় ও অভিঘাতে। ব্যাপ্তির দিক থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বের ২১২টি দেশ ও ভূখণ্ড এর শিকার হয়েছে। অভিঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বের মোট ১৯ কোটি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এবং ৪১ লাখের বেশি মানুষ এই অতিমারিতে এরই মধ্যে প্রাণ হারিয়েছে। নতুন নতুন ধরনের জীবাণু তরঙ্গের মতো আসছে–গ্রাস করছে দেশ, সমাজ ও মানুষ। সন্দেহ নেই, তেজ ও তাণ্ডবের দিক থেকে করোনা সারা বিশ্বকে দিশেহারা করে ফেলেছে এবং মাত্র দেড় বছরের মধ্যে এটা জীবন ও জগতের চিত্র বদলে দিয়েছে। করোনা সংকট এক ‘নতুন বাস্তবতার’ জন্ম দিয়েছে। এ বাস্তবতার নানান প্রভাব আছে বিভিন্ন পর্যায়ে–দেশজ ও রাষ্ট্রীয় স্তরে। এই বাস্তবতার নানান মাত্রিকতা আছে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে, সামাজিক বলয়ে ও মনস্তাত্ত্বিক বিষয়ে। এই বাস্তবতার অভিঘাত পড়বে ব্যক্তিমানুষের জীবনে, পারিবারিক আঙিনায়, সমাজের উঠোনে। প্রশ্ন উঠছে, করোনার কারণে বৈশ্বিক ও বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থা ও পরিস্থিতি কেমন দাঁড়াবে এবং সে অবস্থায় করণীয় কী?
বৈশ্বিক পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব অর্থনীতি ২০২০ সালে ৪.৪ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। ১৯৩০ সালের অতিমন্দার পর এই প্রথম বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির হার এত হ্রাস পেল। গত বছর চীনের প্রবৃদ্ধির হারও ছিল ২ শতাংশের কিছু বেশি। অথচ দুই দশক ধরে চীনের গড় প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ শতাংশের ওপরে। করোনা অতিমারি পৃথিবীর সব দেশে কর্মনিয়োজনকেও সংকুচিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মতো শক্তিশালী অর্থনীতিতেও বেকারত্বের হার ২০১৯-এর ৩ শতাংশ থেকে তিন গুণ বেড়ে ২০২০-এ ৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছিল। বিশ্ব অর্থনীতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেবামূলক খাত, যেখানে কর্মনিয়োজন সবচেয়ে বেশি। বৈশ্বিক বাণিজ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। যুক্তরাষ্ট্রে ৬৬ লাখ লোক কর্মহীন হয়ে পড়েছে, স্পেনে ৩৫ লাখ। এর ফলে তাদের কর্মসংস্থান, আয় ও জীবনযাত্রার মানের ওপরে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। যুক্তরাজ্যে প্রাক্কলন করা হচ্ছে যে, প্রায় ৮ লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী তাঁদের ব্যবসা হারাবেন।
করোনা সংকটে অর্থনৈতিক দিক থেকে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ও হবে দরিদ্র, প্রান্তিক ও নাজুক জনগোষ্ঠী। এর মধ্যে থাকবে বিত্তহীন, বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী এবং নারীরা। সারা বিশ্বে গত তিন দশকে চরম দারিদ্র্য হ্রাস করার ব্যাপারে যে অভূতপূর্ব অগ্রগতি হয়েছে, তা ব্যাহত হবে। গত ত্রিশ বছরে বিশ্বের চরম দরিদ্রের সংখ্যা ১৯০ কোটি থেকে ৮৯ কোটিতে নেমে এসেছিল। অর্থাৎ, গড়ে প্রতিদিন বিশ্বে ২ লাখের বেশি মানুষ চরম দারিদ্র্যসীমার ওপরে উঠে আসছিল। এখন প্রাক্কলনে বলা হচ্ছে, করোনার কারণে সারা বিশ্বে নতুন করে ৫০ কোটি মানুষ চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যেতে পারে।
এ সংকটের একটি ফলাফল হতে পারে বৈশ্বিক খাদ্যঘাটতি। এর মধ্যেই বলা হচ্ছে, বিশ্বে ২৫ কোটি মানুষ দুর্ভিক্ষপীড়িত হতে পারে। সাধারণ সময়ে খাদ্য লভ্যতার ক্ষেত্রে উৎপাদন নয়, বণ্টনই মূল সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। অসম বণ্টনের কারণেই মোট উৎপাদন পর্যাপ্ত হলেও সবার কাছে খাদ্য লভ্য হয় না। দরিদ্ররা বুভুক্ষুই থেকে যায়। করোনা-পরবর্তী পর্যায়ে এ সংকটটি আরও ঘনীভূত হতে পারে। পৃথিবীতে খাদ্যের অভাবে কোনো দুর্ভিক্ষ হয়নি, হয়েছে সুষম বণ্টনের অভাবে। ১৯৪৩-এর মন্বন্তরের সময়ে মানুষ যখন বুভুক্ষায় মারা গেছে, তখনো সরকারি গুদামে খাদ্য মজুত ছিল।
করোনা সংকটকে পুঁজি করে দেশজ ও আন্তর্জাতিক কায়েমি স্বার্থবাদীরা খাদ্যসামগ্রী মজুত করে মুনাফা সর্বোচ্চকরণে প্রয়াসী হতে পারে। ফলে কৃত্রিম খাদ্যসংকট তৈরি হতে পারে এবং আবির্ভূত হতে পারে মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ। সুতরাং প্রকৃতিসৃষ্ট খাদ্য ঘাটতির সঙ্গে যুক্ত হবে মানুষের সৃষ্ট সংকট। বলার অপেক্ষা রাখে না, এ-জাতীয় দুর্ভিক্ষে প্রধান বলি হবে দরিদ্র জনগোষ্ঠী। বৈশ্বিক পর্যায়ে জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দেশজ আলোচনা এখনই শুরু হওয়া উচিত–কী করে আন্তর্জাতিক বণ্টনব্যবস্থাকে সংহত করা যায়। সেই সঙ্গে দেশজ পর্যায়ে প্রতিরোধব্যবস্থাও প্রণীত হওয়া দরকার।
খাদ্য গ্রহণে কৃচ্ছ্রসাধন আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য একান্ত প্রয়োজন। খাদ্য অপচয় নয়, লোক দেখানো ভোগ নয়–এগুলোই আমাদের মূলমন্ত্র হওয়া উচিত। সেই সঙ্গে দরিদ্র জনগণের খাদ্যনিরাপত্তার জন্য খাদ্য-ত্রাণ বজায় রাখতে হবে। বিশ্বের সব দেশেই এটা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করতে হবে। এ জন্য বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচিকে জোরদার করা প্রয়োজন। আমরা সবাই এখন একই নৌকার যাত্রী। এ অবস্থায় আত্মকেন্দ্রিকতা আমাদের উত্তরণের পথ হতে পারে না। যূথবদ্ধতাই আমাদের পরিত্রাণের একমাত্র উপায়–এই সহজ সত্যটি আমরা যেন ভুলে না যাই।
কোনো দুর্যোগেই বিশ্বের সব জনগোষ্ঠী সমভাবে পরাস্ত হয় না। তবে বেশির ভাগ দুর্যোগেই, তা সে যুদ্ধবিগ্রহই হোক, কিংবা ঘূর্ণিঝড়-প্লাবনই হোক অথবা দুর্ভিক্ষ-মহামারিই হোক না কেন, অসমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দরিদ্র ও প্রান্তিক গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠীর মধ্যে একদিকে যেমন নানান প্রতিবন্ধকতাসম্পন্ন মানুষ আছে, তেমনি আছেন জাতিসত্তাভিত্তিক সংখ্যালঘু; একদিকে যেমন আছে পরিবেশ-শরণার্থী, তেমনি আছে নৃতাত্ত্বিক ক্ষুদ্রগোষ্ঠী। এবারের করোনা দুর্যোগও তার ব্যতিক্রম নয়। সব দেশেই এ প্রবণতা বর্তমান।
প্রথমেই যে কথাটা বলা দরকার, তা হচ্ছে, করোনার সংক্রমণ আর মৃত্যুহারের মাঝেই তো একধরনের বৈষম্য আছে। করোনায় যাদের প্রাণহানি ঘটেছে, তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশ পুরুষ এবং ৩০ শতাংশ নারী। করোনার সংক্রমণ আর মৃত্যুহারের মধ্যেও বয়স্ক জনগোষ্ঠীর অনুপাত বেশি। তেমনি যেসব ব্যক্তিবর্গ নানান রোগে যেমন: উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, প্রমেহ, হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টজনিত অসুবিধায় ভুগছেন, তাঁরাও করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর অন্যতম শিকার। যেসব রোগের কথা বলা হয়েছে, তাতে যাঁরা ভুগছেন, সেসব জনগোষ্ঠীর যেকোনো জীবাণু প্রতিরোধক্ষমতা তুলনামূলকভাবে কম। সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই তাঁরাই করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর মূল শিকার হয়েছেন।
দ্বিতীয় প্রবণতা সম্পর্কে কিছুটা বলা প্রয়োজন। নারীর তুলনায় পুরুষেরা মৃত্যুর মূল শিকার। চীনের ৩ হাজার ৫০০ করোনায় মৃত্যুর মধ্যে ৬৪ শতাংশ পুরুষ আর ৩৬ শতাংশ নারী। ব্রিটেনে এ পর্যন্ত করোনায় মৃত্যুর ৭০ শতাংশ পুরুষ ও ৩০ শতাংশ নারী। অর্থাৎ, পুরুষের মৃত্যুর হার নারীর দ্বিগুণ। এর কারণ বিবিধ। নারীর একটি জৈবিক শারীরিক সু-অবস্থা আছে, যার কারণে নারীর প্রত্যাশিত গড় আয়ু বেশি। সেই সঙ্গে ধূমপান ও অতিরিক্ত মদ্যপানের প্রকোপ পুরুষের মাঝে বেশি, সুস্বাস্থ্য অভ্যাস পুরুষের চেয়ে নারীর ভালো এবং হৃদরোগ বা প্রমেহর মতো রোগের সংক্রমণ পুরুষের চেয়ে নারীর মধ্যে কম। যেকোনো জীবাণু প্রতিরোধের ক্ষমতা তরুণদের চেয়ে বয়ঃবৃদ্ধদের কম। করোনাও তার ব্যতিক্রম নয়। ফলে করোনায় মৃত্যুহার বয়ঃবৃদ্ধদের বেশি।
দ্বিতীয়ত, এ পর্যন্ত যতটুকু জানা গেছে, তাতে বিভিন্ন দেশে নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘুরা অনানুপাতিকভাবে বেশি করোনার শিকার হচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রে জনসংখ্যার মাত্র ১৩ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ; কিন্তু করোনা সংক্রমণে তাদের অনুপাত ২৫ শতাংশ। যুক্তরাজ্যে প্রতি তিনজন করোনায় আক্রান্ত মানুষের মধ্যে একজন নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘু। বলা হচ্ছে, কৃষ্ণাঙ্গ ও কিছু কিছু দক্ষিণ এশীয় জনগোষ্ঠীর ৯০ শতাংশ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন। যুক্তরাজ্যে জাতীয় স্বাস্থ্যব্যবস্থার ৫৮ শতাংশ চিকিৎসক ও সেবিকাই দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত। এ পর্যন্ত ব্রিটেনে কৃষ্ণাঙ্গ, এশীয় ও সংখ্যালঘু উদ্ভূত ১৩০ জন চিকিৎসক, সেবিকা ও অন্যান্য সেবাকর্মী মৃত্যুবরণ করেছেন। নিবিড় পরিচর্যা স্থাপনায় প্রতি তিনটি মৃত্যুর একজন কৃষ্ণাঙ্গ, এশীয় ও সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর।
নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘুদের অনানুপাতিকভাবে করোনার শিকার হওয়ার পেছনে নানান কারণ রয়েছে, যার কেন্দ্রবিন্দুতেই রয়েছে দারিদ্র্য, বঞ্চনা ও অসমতা। দারিদ্র্যের কারণেই এই জনগোষ্ঠী একই বাড়িতে গাদাগাদি করে বসবাস করে। ফলে সংগনিরোধ সেখানে বাতুলতা মাত্র। সেই সঙ্গে এ-জাতীয় মানুষ কর্মসংস্থানের যে স্তরে কাজ করে, সেখানে কাজ ও আয়ের জন্য তাদের বাইরে আসতেই হয়। ফলে সামাজিক জনদূরত্ব সেখানে কাজ করে না। নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘুরা যেখানে বসবাস করে, সেখানে সামাজিক সেবার বিস্তৃতি ও মান উভয়েই বড় সীমিত। সব মিলিয়ে করোনাকালে এসব জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা বড়ই কম।
যুক্তরাষ্ট্রে দেখা গেছে, প্রতি চারজন করোনায় সংক্রমিতের একজন কৃষ্ণাঙ্গ। ব্রিটেনেও এ-জাতীয় প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। আগামী দিনে যখন অন্যান্য দেশের উপাত্ত লভ্য হবে, তখন হয়তো দেখা যাবে, সংখ্যালঘুরাই সংক্রমিত হয়েছিল বেশি এবং মৃত্যুর সংখ্যাও তাদের মাঝেই বেশি ছিল। যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে উচ্চতর সংক্রমণের কারণের কিছু কিছু কাঠামোগত এবং কিছু কিছু প্রায়োগিক। কাঠামোগত দিক থেকে বিচার করলে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠী ঐতিহাসিক দিক থেকেই দরিদ্র, বঞ্চিত ও অসমতার শিকার। তারা স্বল্পশিক্ষিত, তাদের পুষ্টির অভাব রয়েছে এবং তাদের জীবনযাত্রার মান নিম্ন। ন্যূনতম সামাজিক সুবিধাও তাদের কাছে লভ্য নয়। সুতরাং কাঠামোগত দিক থেকে তারা যেকোনো সংকটে ভঙ্গুর অবস্থানে থাকে।
সেই সঙ্গে প্রায়োগিক অনেক কারণও এর সঙ্গে যুক্ত। কৃষ্ণাঙ্গরা বেশির ভাগই কর্ম-মইয়ের নিচের দিকে অবস্থান করেন। এর ফলে একদিকে যেমন তাঁদের সঞ্চয় কম, অন্যদিকে কাজের জন্য তাঁদের ঘরের বাইরে আসতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। তাঁদের জীবনযাত্রা প্রণালির কারণেও ঘরের মধ্যে সামাজিক জনদূরত্ব বজায় রাখা তাঁদের জন্য কষ্টকর। তাঁরা যেসব অঞ্চলে বসবাস করেন, সেখানে স্বাস্থ্যসুবিধা ও সেবাও সীমিত। এসব প্রায়োগিক কারণেও তাঁদের করোনা-ভঙ্গুরতা বেশি। (চলবে)
লেখক: ভূতপূর্ব পরিচালক, মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন দপ্তর এবং দারিদ্র্য বিমোচন বিভাগ,
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি
নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র
এখন রাজনীতির এক গতিময়তার সময়। শেখ হাসিনার ১৫ বছরের গণতন্ত্রহীন কর্তৃত্ববাদী দুর্নীতিপরায়ণ শাসন ছাত্র আন্দোলনে উচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তী শাসনকালে দ্রুততার সঙ্গে নানা রকম রাজনৈতিক কথাবার্তা, চিন্তা-ভাবনা, চেষ্টা-অপচেষ্টা, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার প্রকাশ ঘটছে।
২ ঘণ্টা আগেবহু বছর আগে সেই ব্রিটিশ যুগে কাজী নজরুল লিখেছিলেন, ‘ক্ষুধাতুর শিশু চায় না স্বরাজ, চায় দুটো ভাত, একটু নুন।’ আসলে পেটের খিদে নিয়ম, আইন, বিবেক, বিচার কোনো কিছুই মানে না। তাই তো প্রবাদ সৃষ্টি হয়েছে, খিদের জ্বালা বড় জ্বালা। এর থেকে বোধ হয় আর কোনো অসহায়তা নেই। খালি পেটে কেউ তত্ত্ব শুনতে চায় না। কাওয়ালিও ন
২ ঘণ্টা আগেতিন বছরের শিশু মুসা মোল্লা ও সাত বছরের রোহান মোল্লা নিষ্পাপ, ফুলের মতো কোমল। কারও সঙ্গে তাদের কোনো স্বার্থের দ্বন্দ্ব থাকার কথা নয়। কিন্তু বাবার চরম নিষ্ঠুরতায় পৃথিবী ছাড়তে হয়েছে তাদের। আহাদ মোল্লা নামের এক ব্যক্তি দুই ছেলেসন্তানকে গলা কেটে হত্যা করার পর নিজের গলায় নিজে ছুরি চালিয়েছেন।
২ ঘণ্টা আগেদলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
১ দিন আগে