হায়াৎ মামুদ
সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলন নিয়ে অনেক কথা হয়। এখানে নির্দিষ্ট কিছু ঘটনার কথা বলি।
১৯৭১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন আওয়ামী লীগ প্রধান ও সমগ্র পাকিস্তানের প্রত্যাশিত প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান বাংলা একাডেমিতে এসেছিলেন। একাডেমি আয়োজিত ভাষা-আন্দোলন স্মরণ সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি ছিলেন প্রধান অতিথি। দৃপ্তকণ্ঠে তিনি ঘোষণা করেছিলেন, ‘আমি ঘোষণা করছি, আমাদের হাতে যেদিন ক্ষমতা আসবে সেদিন থেকেই দেশের সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চালু হবে। বাংলা ভাষার পণ্ডিতেরা পরিভাষা তৈরি করবেন, তারপরে বাংলা ভাষা চালু হবে, সে হবে না।
পরিভাষাবিদেরা যত খুশি গবেষণা করুন, আমরা ক্ষমতা হাতে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলা ভাষা চালু করে দেব, সে বাংলা যদি ভুল হয়, তবে ভুলই চালু হবে, পরে তা সংশোধন করা হবে।’
এ কথা সবাই জানেন, ১৯৭০ সালে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ের বিরুদ্ধে তৎকালীন কেন্দ্রীয় শাসক চক্রের চক্রান্ত ও শাঠ্য পাকিস্তান রাষ্ট্রের মৃত্যু ডেকে এনেছিল এবং ২৬ মার্চ ১৯৭১ স্বাধীন ও সার্বভৌম এক বাংলাদেশের জন্ম ঘোষণা করে স্বাধীনতাকামী বাঙালি জাতি তার স্মরণকালের ইতিহাসে অনন্য ও নতুন ধরনের এক স্বাধীনতাযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে বাধ্য হয়েছিল। যুদ্ধজয় ঘটে ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বরে এবং স্বাধীন বাংলা বাঙালি জাতির রাষ্ট্রিক ও সাংস্কৃতিক স্বাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়।
স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা হলো বাংলা। কারণ, এক ভাষিক ও এক সংস্কৃতির দেশটিতে ভিন্নতর রাষ্ট্রভাষা হওয়া সম্ভবই ছিল না। এতৎসত্ত্বেও ও নির্জলা সত্য এই যে, সর্বস্তরে বাংলা প্রচলন আজও সুদূরপরাহত।
পাকিস্তান আমলে ১৯৬২ সালে ঢাকায় স্থাপিত কেন্দ্রীয় বাংলা উন্নয়ন বোর্ড বাংলা ভাষায় নথিপত্র সংরক্ষণ কীভাবে করা সম্ভব, তার একটি প্রাথমিক নমুনা বা মডেল ১৯৭০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকাশ করে। পরবর্তীকালে বাংলাদেশ আবির্ভূত হওয়ার পর ১৯৭২ সালে ওই গ্রন্থের পরিমার্জিত অপরিবর্তিত দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়। এমদাদুর রহমান রচিত এই গ্রন্থে ‘অফিস সংগঠন, নথি ও নথির খতিয়ান, প্রাপ্ত চিঠিপত্রের ব্যবস্থা, নথি লেখার নমুনা, চিঠিপত্র লেখার নিয়ম, বাজেট, টাকাপয়সার হিসাব-নিকাশ ইত্যাদি বাংলায় সম্পাদন করার বিষয়ে আলোকপাত করা’ যেমন হয়েছিল, তেমনি ‘ছুটির হিসাব, চিঠিপত্র প্রাপ্তি ও প্রেরণের খতিয়ান, পত্রবাহকের বহি, কর্মচারীদের হাজিরা বহি, অফিসার এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের বেতনের বিল ছক, গেজেট ও নন-গেজেটেড কর্মচারীদের ভ্রমণ ভাতার বিল ছক, দায়িত্বভার হস্তান্তরের প্রত্যয়নপত্র, ছুটির দরখাস্ত প্রভৃতি বিষয়ের মডেল’ও সন্নিবেশিত হয়েছিল।
এই তথ্য বিশেষভাবে উল্লেখের উদ্দেশ্য এই সত্য তুলে ধরা যে, প্রশাসনিক ক্ষেত্রে বাংলা ভাষা প্রচলনে যে প্রাথমিক পরিকল্পনা-জটিলতা ও প্রস্তুতিপর্বে যে অনতিক্রম্য কালক্ষেপণের সম্মুখীন বাংলাদেশ সরকারকে হতে হতো, সেই বাধাতার সামনে ছিল না। উপরন্তু এও জানা দরকার যে, তদানীন্তন প্রাদেশিক পূর্ব পাকিস্তান সরকার বা পরবর্তী বাংলাদেশ সরকার কেউ-ই ওই গ্রন্থের প্রয়োগ সম্ভব, তা পর্যালোচনা করে বাস্তব কর্মক্ষেত্রে পরীক্ষা করে দেখেনি, বিভিন্ন দপ্তরে তার প্রচার বা অনুসরণ তো দূরের কথা।
যাহোক, সর্বস্তরে বাংলা প্রচলন করার কথা ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকেই সরকারের বিভিন্ন মুখপাত্র বলতে শুরু করেন।
১৯৭২ সালের ৩১ জানুয়ারি সোমবার ‘দৈনিক বাংলা’র প্রতিনিধির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তদানীন্তন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী বলেছিলেন, ‘রাষ্ট্রের উচ্চতম পর্যায় পর্যন্ত যাবতীয় সরকারি নথিপত্র ও অন্যান্য কাজকর্ম বাংলা ভাষায় শুরু হয়েছে। রাষ্ট্রপ্রধান ও জাতির পিতা স্বয়ং নথিপত্র ও চিঠি ইত্যাদি সব কাজ বাংলায় করছেন।’
সে বছর ৭ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বাংলা একাডেমি মিলনায়তনে বাংলা সাঁটলিপি ও মুদ্রণের প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী ভাষণে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ আলী প্রথম ঘোষণা করেন, ‘অবিলম্বে বাংলা সর্বস্তরে চালু করতে হবে এবং তা না হলে বাঙালিরা বিলম্ব ক্ষমা করবে না।’ কয়েক দিন পরেই ১২ ফেব্রুয়ারি এই মর্মে এক প্রেসনোট জারি করা হয় যে, প্রাক্-প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি যাবতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার মাধ্যম একমাত্র বাংলা হবে বলে সরকারের শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক দপ্তর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন।’ এতে আকাঙ্ক্ষিত সুফল পাওয়া গিয়েছিল।
১৯৭৩ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি সোমবার সংবাদপত্রে একটি উল্লেখযোগ্য সংবাদ প্রকাশিত হয়। ‘দৈনিক বাংলা’য় ওই সংবাদের শিরোনাম ছিল: ‘সরকারি পর্যায়ে বাংলা প্রচলন কমিটি গঠিত/বঙ্গবন্ধুর কাছে কোন ফাইল পেশ করতে হলে/তা বাংলায় লিখতে হবে’।
স্টাফ রিপোর্টার পরিবেশিত ওই সংবাদের অংশবিশেষ উদ্ধৃতিযোগ্য: ‘জানা গেছে—বঙ্গবন্ধু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, অফিসের নথি, অন্যান্য কাগজপত্র বাংলায় না লেখা হলে তাঁর কাছে উপস্থাপিত করা যাবে না। সুতরাং যাবতীয় সরকারি নথিপত্রাদি বাংলায় লেখার জন্য কেবিনেট ডিভিশন এক পরিপত্রে সকল মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়েছে।’
এর পাঁচ দিন পর ২৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার সংবাদপত্রে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্পষ্ট ঘোষণা প্রকাশিত হয়: ‘প্রশাসনের সর্বস্তরে বাংলা চালুর নির্দেশ যেসব কর্মচারী মানবে না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ পরিবেশিত খবরে আরও বলা হয়েছিল, ‘বঙ্গবন্ধু নিজে সরকারি কাগজপত্রের নোট লেখা থেকে শুরু করে স্বাক্ষরদান পর্যন্ত সবকিছু বাংলায় করে আসছেন এবং বাংলায় নোট লেখা ছাড়া কোনো ফাইল তাঁর কাছে পাঠানো হলে তিনি তা গ্রহণ করবেন না।’ কিন্তু এর পরেই যে তথ্য পরিবেশিত হয়েছিল তার দৃষ্টি উন্মোচক। এনা’র (ইস্টার্ন নিউজ এজেন্সি, একটি সংবাদ সংস্থার নাম) একটি খবরে উল্লেখ করা হয়, ‘প্রশাসনের সর্বস্তরে অবিলম্বে বাংলা প্রচলনের জন্য এর আগেও বঙ্গবন্ধু নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু একশ্রেণির সরকারি কর্মচারী ভ্রান্ত অজুহাতে এই নির্দেশ পালন করেননি। তাদের যুক্তি ছিল, বাংলা ভাষা জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে প্রচলনের উপযোগী ও সমৃদ্ধ নয়।’
এ কথা এখন ভুলে গেলে চলবে না যে, স্বাধীনতাযুদ্ধের সর্বগ্রাসী ধ্বংসে বিপর্যস্ত দেশের সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলনের চেয়ে বহুগুণ বেশি জরুরি ছিল আইনশৃঙ্খলার শাসন স্থাপন, বিধ্বস্ত অর্থনীতির পুনর্নির্মাণ, বাস্তুহারা, সর্বস্ব খোয়ানো বিপুলসংখ্যক মানুষের পুনর্বাসন। সেই সংকটের মুখেও শেখ মুজিব বাঙালি হিসেবে তাঁর নৈতিক দায়িত্ব ও পূর্বপ্রদত্ত অঙ্গীকার বিস্মৃত হননি—এই সত্য কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করতেই হবে। ১৯৭৪ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি সংবাদপত্রের একটি প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাংলাদেশ সরকারের মহা হিসাবরক্ষকের দপ্তর অর্থাৎ অ্যাকাউন্টস জেনারেলের অফিস বাংলা চালু করার ব্যাপারে অনুৎসাহী। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাংলায় নাম পর্যন্ত স্বাক্ষর করতে চান না।
সেই চক্রান্তের একটি চমৎকার দলিল দেখা যাবে ১৯৭৪ সালের ১৮ মে সরকারের সমস্ত মন্ত্রণালয়ে, বিভাগে এবং দপ্তরে পাঠানো ইংরেজি লেখা চিঠিতে। চিঠিটি পাঠিয়েছিলেন বাংলাদেশ সরকারের সংস্থাপন বিভাগের সচিব এম রহমান। চিঠিতে তিনি সমস্ত কার্যাবলি বাংলায় করার কথা বলছেন যদিও; কিন্তু চিঠিটি তিনি লিখেছেন নির্ভেজাল ইংরেজি ভাষায়!
এই চিঠি বাংলা মুদ্রলেখযন্ত্রের অভাবে অনন্যোপায় হয়ে ইংরেজিতে লিখিত হয়েছিল—এমন যুক্তি অচল। কারণ, জার্মান প্রজাতন্ত্রী সরকার-প্রস্তুত মুনির-অপটিমা বাংলা টাইপরাইটার তখন ঢালাওভাবে আমদানি করা হচ্ছে। সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই যে, দেশের সরকার প্রকৃতপক্ষে যাঁরা পরিচালনা করেন, সেই আমলা শ্রেণির আত্মগ্লানিকর মাতৃভাষাবৈরিতা ও রাষ্ট্রধ্বংসী দেশপ্রেমহীনতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিব বুঝতে পেরেছিলেন। বাংলা প্রচলন বিষয়ে তাঁর সর্বশেষ যে ঘোষণাপত্রটি প্রচারিত হয়েছিল, সেটির তারিখ ছিল ১২ মার্চ ১৯৭৫। সে ঘোষণায় বলা হয়েছিল: ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রাষ্ট্রভাষা বাংলা। তবু অত্যন্ত দুঃখের সাথে লক্ষ করেছি যে, স্বাধীনতার তিন বছর পরেও অধিকাংশ অফিস-আদালতে মাতৃভাষার পরিবর্তে বিজাতীয় ইংরেজি ভাষায় নথিপত্র লেখা হচ্ছে। মাতৃভাষার প্রতি যার ভালোবাসা নেই, দেশের প্রতি যে তার ভালোবাসা আছে—এ কথা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। দীর্ঘ তিন বছর অপেক্ষার পরও বাংলাদেশের বাঙালি কর্মচারীরা ইংরেজি ভাষায় নথিতে লিখবেন—সেটা অসহনীয়। এ সম্পর্কে আমার পূর্ববর্তী নির্দেশ সত্ত্বেও এ ধরনের অনিয়ম চলছে। আর এ উচ্ছৃঙ্খলতা চলতে দেয়া যেতে পারে না।
এ আদেশ জারি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সব সরকারি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও আধা সরকারি অফিসসমূহে কেবলমাত্র বাংলার মাধ্যমে নথিপত্র ও চিঠিপত্র লেখা হবে। এ বিষয়ে কোনো অন্যথা হলে উক্ত বিধি লঙ্ঘনকারীকে আইনানুগ শাস্তি দেবার ব্যবস্থা করা হবে। বিভিন্ন অফিস-আদালতে এর কর্তাব্যক্তিগণ সতর্কতার সাথে এই আদেশ কার্যকরী করবেন এবং আদেশ লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান ব্যবস্থা করবেন।
তবে কোনো বিদেশি সংস্থা বা সরকারের সাথে পত্র যোগাযোগ করার সময় বাংলার সাথে সাথে ইংরেজি অথবা সংশ্লিষ্ট ভাষায় একটি প্রতিলিপি পাঠানো প্রয়োজন। তেমনিভাবে বিদেশের কোনো সরকার বা সংস্থার সাথে চুক্তি সম্পাদনের সময় বাংলার সাথে অনুমোদিত ইংরেজি বা সংশ্লিষ্ট ভাষায় প্রতিলিপি ব্যবহার করা চলবে। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকরী হবে।
স্বাক্ষর
শেখ মুজিবুর রহমান
রাষ্ট্রপতি
১২-৩-৭৫
বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে এ রকম কড়া চিঠি আসতে পারে—সে কথা প্রশাসনের অনেকে ভাবতে পারেননি। এই নির্দেশের অব্যবহিত সুফল এই হয়েছিল যে, সরকারি-আধা সরকারি-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে রাতারাতি বাংলা ব্যবহারের হিড়িক পড়ে যায়। বাংলা প্রচলনের ক্ষেত্রে সুদিনের পূর্বাভাস এভাবে দেখা দিতে না দিতে দেশ ও জাতির ভাগ্যে চরম বিপর্যয় নেমে এসেছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সকালে। মানুষী দুর্বলতা ও ত্রুটি-বিচ্যুতি সত্ত্বেও যে মহান রাজনৈতিক নেতা বাঙালির জীবন ও সংস্কৃতি, স্বাধিকার নিয়ে স্বপ্ন দেখতে দেখতে শেষ পর্যন্ত বাঙালি জাতিকে তার নিজস্ব একটি দেশ উপহার দিয়ে গেলেন, মধ্যবিত্ত গ্রামীণ বাঙালির প্রতিভূ ও প্রতীককল্প সেই বঙ্গবন্ধুকে অবশেষে হত্যা করা হলো।
লেখক: শিক্ষাবিদ
সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলন নিয়ে অনেক কথা হয়। এখানে নির্দিষ্ট কিছু ঘটনার কথা বলি।
১৯৭১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন আওয়ামী লীগ প্রধান ও সমগ্র পাকিস্তানের প্রত্যাশিত প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান বাংলা একাডেমিতে এসেছিলেন। একাডেমি আয়োজিত ভাষা-আন্দোলন স্মরণ সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি ছিলেন প্রধান অতিথি। দৃপ্তকণ্ঠে তিনি ঘোষণা করেছিলেন, ‘আমি ঘোষণা করছি, আমাদের হাতে যেদিন ক্ষমতা আসবে সেদিন থেকেই দেশের সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চালু হবে। বাংলা ভাষার পণ্ডিতেরা পরিভাষা তৈরি করবেন, তারপরে বাংলা ভাষা চালু হবে, সে হবে না।
পরিভাষাবিদেরা যত খুশি গবেষণা করুন, আমরা ক্ষমতা হাতে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলা ভাষা চালু করে দেব, সে বাংলা যদি ভুল হয়, তবে ভুলই চালু হবে, পরে তা সংশোধন করা হবে।’
এ কথা সবাই জানেন, ১৯৭০ সালে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ের বিরুদ্ধে তৎকালীন কেন্দ্রীয় শাসক চক্রের চক্রান্ত ও শাঠ্য পাকিস্তান রাষ্ট্রের মৃত্যু ডেকে এনেছিল এবং ২৬ মার্চ ১৯৭১ স্বাধীন ও সার্বভৌম এক বাংলাদেশের জন্ম ঘোষণা করে স্বাধীনতাকামী বাঙালি জাতি তার স্মরণকালের ইতিহাসে অনন্য ও নতুন ধরনের এক স্বাধীনতাযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে বাধ্য হয়েছিল। যুদ্ধজয় ঘটে ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বরে এবং স্বাধীন বাংলা বাঙালি জাতির রাষ্ট্রিক ও সাংস্কৃতিক স্বাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়।
স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা হলো বাংলা। কারণ, এক ভাষিক ও এক সংস্কৃতির দেশটিতে ভিন্নতর রাষ্ট্রভাষা হওয়া সম্ভবই ছিল না। এতৎসত্ত্বেও ও নির্জলা সত্য এই যে, সর্বস্তরে বাংলা প্রচলন আজও সুদূরপরাহত।
পাকিস্তান আমলে ১৯৬২ সালে ঢাকায় স্থাপিত কেন্দ্রীয় বাংলা উন্নয়ন বোর্ড বাংলা ভাষায় নথিপত্র সংরক্ষণ কীভাবে করা সম্ভব, তার একটি প্রাথমিক নমুনা বা মডেল ১৯৭০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকাশ করে। পরবর্তীকালে বাংলাদেশ আবির্ভূত হওয়ার পর ১৯৭২ সালে ওই গ্রন্থের পরিমার্জিত অপরিবর্তিত দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়। এমদাদুর রহমান রচিত এই গ্রন্থে ‘অফিস সংগঠন, নথি ও নথির খতিয়ান, প্রাপ্ত চিঠিপত্রের ব্যবস্থা, নথি লেখার নমুনা, চিঠিপত্র লেখার নিয়ম, বাজেট, টাকাপয়সার হিসাব-নিকাশ ইত্যাদি বাংলায় সম্পাদন করার বিষয়ে আলোকপাত করা’ যেমন হয়েছিল, তেমনি ‘ছুটির হিসাব, চিঠিপত্র প্রাপ্তি ও প্রেরণের খতিয়ান, পত্রবাহকের বহি, কর্মচারীদের হাজিরা বহি, অফিসার এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের বেতনের বিল ছক, গেজেট ও নন-গেজেটেড কর্মচারীদের ভ্রমণ ভাতার বিল ছক, দায়িত্বভার হস্তান্তরের প্রত্যয়নপত্র, ছুটির দরখাস্ত প্রভৃতি বিষয়ের মডেল’ও সন্নিবেশিত হয়েছিল।
এই তথ্য বিশেষভাবে উল্লেখের উদ্দেশ্য এই সত্য তুলে ধরা যে, প্রশাসনিক ক্ষেত্রে বাংলা ভাষা প্রচলনে যে প্রাথমিক পরিকল্পনা-জটিলতা ও প্রস্তুতিপর্বে যে অনতিক্রম্য কালক্ষেপণের সম্মুখীন বাংলাদেশ সরকারকে হতে হতো, সেই বাধাতার সামনে ছিল না। উপরন্তু এও জানা দরকার যে, তদানীন্তন প্রাদেশিক পূর্ব পাকিস্তান সরকার বা পরবর্তী বাংলাদেশ সরকার কেউ-ই ওই গ্রন্থের প্রয়োগ সম্ভব, তা পর্যালোচনা করে বাস্তব কর্মক্ষেত্রে পরীক্ষা করে দেখেনি, বিভিন্ন দপ্তরে তার প্রচার বা অনুসরণ তো দূরের কথা।
যাহোক, সর্বস্তরে বাংলা প্রচলন করার কথা ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকেই সরকারের বিভিন্ন মুখপাত্র বলতে শুরু করেন।
১৯৭২ সালের ৩১ জানুয়ারি সোমবার ‘দৈনিক বাংলা’র প্রতিনিধির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তদানীন্তন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী বলেছিলেন, ‘রাষ্ট্রের উচ্চতম পর্যায় পর্যন্ত যাবতীয় সরকারি নথিপত্র ও অন্যান্য কাজকর্ম বাংলা ভাষায় শুরু হয়েছে। রাষ্ট্রপ্রধান ও জাতির পিতা স্বয়ং নথিপত্র ও চিঠি ইত্যাদি সব কাজ বাংলায় করছেন।’
সে বছর ৭ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বাংলা একাডেমি মিলনায়তনে বাংলা সাঁটলিপি ও মুদ্রণের প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী ভাষণে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ আলী প্রথম ঘোষণা করেন, ‘অবিলম্বে বাংলা সর্বস্তরে চালু করতে হবে এবং তা না হলে বাঙালিরা বিলম্ব ক্ষমা করবে না।’ কয়েক দিন পরেই ১২ ফেব্রুয়ারি এই মর্মে এক প্রেসনোট জারি করা হয় যে, প্রাক্-প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি যাবতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার মাধ্যম একমাত্র বাংলা হবে বলে সরকারের শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক দপ্তর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন।’ এতে আকাঙ্ক্ষিত সুফল পাওয়া গিয়েছিল।
১৯৭৩ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি সোমবার সংবাদপত্রে একটি উল্লেখযোগ্য সংবাদ প্রকাশিত হয়। ‘দৈনিক বাংলা’য় ওই সংবাদের শিরোনাম ছিল: ‘সরকারি পর্যায়ে বাংলা প্রচলন কমিটি গঠিত/বঙ্গবন্ধুর কাছে কোন ফাইল পেশ করতে হলে/তা বাংলায় লিখতে হবে’।
স্টাফ রিপোর্টার পরিবেশিত ওই সংবাদের অংশবিশেষ উদ্ধৃতিযোগ্য: ‘জানা গেছে—বঙ্গবন্ধু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, অফিসের নথি, অন্যান্য কাগজপত্র বাংলায় না লেখা হলে তাঁর কাছে উপস্থাপিত করা যাবে না। সুতরাং যাবতীয় সরকারি নথিপত্রাদি বাংলায় লেখার জন্য কেবিনেট ডিভিশন এক পরিপত্রে সকল মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়েছে।’
এর পাঁচ দিন পর ২৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার সংবাদপত্রে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্পষ্ট ঘোষণা প্রকাশিত হয়: ‘প্রশাসনের সর্বস্তরে বাংলা চালুর নির্দেশ যেসব কর্মচারী মানবে না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ পরিবেশিত খবরে আরও বলা হয়েছিল, ‘বঙ্গবন্ধু নিজে সরকারি কাগজপত্রের নোট লেখা থেকে শুরু করে স্বাক্ষরদান পর্যন্ত সবকিছু বাংলায় করে আসছেন এবং বাংলায় নোট লেখা ছাড়া কোনো ফাইল তাঁর কাছে পাঠানো হলে তিনি তা গ্রহণ করবেন না।’ কিন্তু এর পরেই যে তথ্য পরিবেশিত হয়েছিল তার দৃষ্টি উন্মোচক। এনা’র (ইস্টার্ন নিউজ এজেন্সি, একটি সংবাদ সংস্থার নাম) একটি খবরে উল্লেখ করা হয়, ‘প্রশাসনের সর্বস্তরে অবিলম্বে বাংলা প্রচলনের জন্য এর আগেও বঙ্গবন্ধু নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু একশ্রেণির সরকারি কর্মচারী ভ্রান্ত অজুহাতে এই নির্দেশ পালন করেননি। তাদের যুক্তি ছিল, বাংলা ভাষা জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে প্রচলনের উপযোগী ও সমৃদ্ধ নয়।’
এ কথা এখন ভুলে গেলে চলবে না যে, স্বাধীনতাযুদ্ধের সর্বগ্রাসী ধ্বংসে বিপর্যস্ত দেশের সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলনের চেয়ে বহুগুণ বেশি জরুরি ছিল আইনশৃঙ্খলার শাসন স্থাপন, বিধ্বস্ত অর্থনীতির পুনর্নির্মাণ, বাস্তুহারা, সর্বস্ব খোয়ানো বিপুলসংখ্যক মানুষের পুনর্বাসন। সেই সংকটের মুখেও শেখ মুজিব বাঙালি হিসেবে তাঁর নৈতিক দায়িত্ব ও পূর্বপ্রদত্ত অঙ্গীকার বিস্মৃত হননি—এই সত্য কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করতেই হবে। ১৯৭৪ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি সংবাদপত্রের একটি প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাংলাদেশ সরকারের মহা হিসাবরক্ষকের দপ্তর অর্থাৎ অ্যাকাউন্টস জেনারেলের অফিস বাংলা চালু করার ব্যাপারে অনুৎসাহী। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাংলায় নাম পর্যন্ত স্বাক্ষর করতে চান না।
সেই চক্রান্তের একটি চমৎকার দলিল দেখা যাবে ১৯৭৪ সালের ১৮ মে সরকারের সমস্ত মন্ত্রণালয়ে, বিভাগে এবং দপ্তরে পাঠানো ইংরেজি লেখা চিঠিতে। চিঠিটি পাঠিয়েছিলেন বাংলাদেশ সরকারের সংস্থাপন বিভাগের সচিব এম রহমান। চিঠিতে তিনি সমস্ত কার্যাবলি বাংলায় করার কথা বলছেন যদিও; কিন্তু চিঠিটি তিনি লিখেছেন নির্ভেজাল ইংরেজি ভাষায়!
এই চিঠি বাংলা মুদ্রলেখযন্ত্রের অভাবে অনন্যোপায় হয়ে ইংরেজিতে লিখিত হয়েছিল—এমন যুক্তি অচল। কারণ, জার্মান প্রজাতন্ত্রী সরকার-প্রস্তুত মুনির-অপটিমা বাংলা টাইপরাইটার তখন ঢালাওভাবে আমদানি করা হচ্ছে। সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই যে, দেশের সরকার প্রকৃতপক্ষে যাঁরা পরিচালনা করেন, সেই আমলা শ্রেণির আত্মগ্লানিকর মাতৃভাষাবৈরিতা ও রাষ্ট্রধ্বংসী দেশপ্রেমহীনতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিব বুঝতে পেরেছিলেন। বাংলা প্রচলন বিষয়ে তাঁর সর্বশেষ যে ঘোষণাপত্রটি প্রচারিত হয়েছিল, সেটির তারিখ ছিল ১২ মার্চ ১৯৭৫। সে ঘোষণায় বলা হয়েছিল: ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রাষ্ট্রভাষা বাংলা। তবু অত্যন্ত দুঃখের সাথে লক্ষ করেছি যে, স্বাধীনতার তিন বছর পরেও অধিকাংশ অফিস-আদালতে মাতৃভাষার পরিবর্তে বিজাতীয় ইংরেজি ভাষায় নথিপত্র লেখা হচ্ছে। মাতৃভাষার প্রতি যার ভালোবাসা নেই, দেশের প্রতি যে তার ভালোবাসা আছে—এ কথা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। দীর্ঘ তিন বছর অপেক্ষার পরও বাংলাদেশের বাঙালি কর্মচারীরা ইংরেজি ভাষায় নথিতে লিখবেন—সেটা অসহনীয়। এ সম্পর্কে আমার পূর্ববর্তী নির্দেশ সত্ত্বেও এ ধরনের অনিয়ম চলছে। আর এ উচ্ছৃঙ্খলতা চলতে দেয়া যেতে পারে না।
এ আদেশ জারি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সব সরকারি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও আধা সরকারি অফিসসমূহে কেবলমাত্র বাংলার মাধ্যমে নথিপত্র ও চিঠিপত্র লেখা হবে। এ বিষয়ে কোনো অন্যথা হলে উক্ত বিধি লঙ্ঘনকারীকে আইনানুগ শাস্তি দেবার ব্যবস্থা করা হবে। বিভিন্ন অফিস-আদালতে এর কর্তাব্যক্তিগণ সতর্কতার সাথে এই আদেশ কার্যকরী করবেন এবং আদেশ লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান ব্যবস্থা করবেন।
তবে কোনো বিদেশি সংস্থা বা সরকারের সাথে পত্র যোগাযোগ করার সময় বাংলার সাথে সাথে ইংরেজি অথবা সংশ্লিষ্ট ভাষায় একটি প্রতিলিপি পাঠানো প্রয়োজন। তেমনিভাবে বিদেশের কোনো সরকার বা সংস্থার সাথে চুক্তি সম্পাদনের সময় বাংলার সাথে অনুমোদিত ইংরেজি বা সংশ্লিষ্ট ভাষায় প্রতিলিপি ব্যবহার করা চলবে। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকরী হবে।
স্বাক্ষর
শেখ মুজিবুর রহমান
রাষ্ট্রপতি
১২-৩-৭৫
বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে এ রকম কড়া চিঠি আসতে পারে—সে কথা প্রশাসনের অনেকে ভাবতে পারেননি। এই নির্দেশের অব্যবহিত সুফল এই হয়েছিল যে, সরকারি-আধা সরকারি-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে রাতারাতি বাংলা ব্যবহারের হিড়িক পড়ে যায়। বাংলা প্রচলনের ক্ষেত্রে সুদিনের পূর্বাভাস এভাবে দেখা দিতে না দিতে দেশ ও জাতির ভাগ্যে চরম বিপর্যয় নেমে এসেছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সকালে। মানুষী দুর্বলতা ও ত্রুটি-বিচ্যুতি সত্ত্বেও যে মহান রাজনৈতিক নেতা বাঙালির জীবন ও সংস্কৃতি, স্বাধিকার নিয়ে স্বপ্ন দেখতে দেখতে শেষ পর্যন্ত বাঙালি জাতিকে তার নিজস্ব একটি দেশ উপহার দিয়ে গেলেন, মধ্যবিত্ত গ্রামীণ বাঙালির প্রতিভূ ও প্রতীককল্প সেই বঙ্গবন্ধুকে অবশেষে হত্যা করা হলো।
লেখক: শিক্ষাবিদ
এখন রাজনীতির এক গতিময়তার সময়। শেখ হাসিনার ১৫ বছরের গণতন্ত্রহীন কর্তৃত্ববাদী দুর্নীতিপরায়ণ শাসন ছাত্র আন্দোলনে উচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তী শাসনকালে দ্রুততার সঙ্গে নানা রকম রাজনৈতিক কথাবার্তা, চিন্তা-ভাবনা, চেষ্টা-অপচেষ্টা, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার প্রকাশ ঘটছে।
১৪ ঘণ্টা আগেবহু বছর আগে সেই ব্রিটিশ যুগে কাজী নজরুল লিখেছিলেন, ‘ক্ষুধাতুর শিশু চায় না স্বরাজ, চায় দুটো ভাত, একটু নুন।’ আসলে পেটের খিদে নিয়ম, আইন, বিবেক, বিচার কোনো কিছুই মানে না। তাই তো প্রবাদ সৃষ্টি হয়েছে, খিদের জ্বালা বড় জ্বালা। এর থেকে বোধ হয় আর কোনো অসহায়তা নেই। খালি পেটে কেউ তত্ত্ব শুনতে চায় না। কাওয়ালিও ন
১৪ ঘণ্টা আগেতিন বছরের শিশু মুসা মোল্লা ও সাত বছরের রোহান মোল্লা নিষ্পাপ, ফুলের মতো কোমল। কারও সঙ্গে তাদের কোনো স্বার্থের দ্বন্দ্ব থাকার কথা নয়। কিন্তু বাবার চরম নিষ্ঠুরতায় পৃথিবী ছাড়তে হয়েছে তাদের। আহাদ মোল্লা নামের এক ব্যক্তি দুই ছেলেসন্তানকে গলা কেটে হত্যা করার পর নিজের গলায় নিজে ছুরি চালিয়েছেন।
১৪ ঘণ্টা আগেদলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
২ দিন আগে