রফি হক
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলে দেখেছিলাম একদল হরিণকে ধাওয়া করছে সিংহ। শেষমেশ ধরতে পেরেছে একটি হরিণকে। শিকার করতে পারা হরিণটির টুঁটি চেপে ধরে রাখল অনেকটা সময় সিংহটি। হরিণ তার সর্বশক্তি দিয়ে ঝাপটাল কিছুক্ষণ। এক সময় নিস্তেজ হয়ে গেলে আরও দুটি সিংহ এসে তাতে যোগ দিল। কিছু দূরেই হরিণের অন্য সাথিরা নিশ্চিন্তমনে ঘাস ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাচ্ছে। শিকার করা হরিণটি সিংহগুলোর পেটে সম্পূর্ণ হজম না হওয়া পর্যন্ত অন্য হরিণগুলো জানে যে তাদের কিছু হবে না। বরং ততক্ষণে কিছু ঘাস খেয়ে নেওয়া যাক! এমনই ভাবলেশহীন তারা!
আমরাও চোখ-কান বন্ধ রেখেছি আজকাল। ভাবছি, চলছে তো দিন—চলুক না। আমরা জানি, ভেবে কোনো লাভ হবে না। আমার ব্যক্তিগত ভাবনা আর কষ্টের কী মূল্য আছে? যা হওয়ার তা তো হবেই। বরং হওয়ার আগে নিজের সময়টা নিজের মতোই চুপচাপ থাকি। ভাবলেশহীন থাকার মধ্যে অনেক সুবিধা আছে। নির্জন সুনসান থাকা যায়—অন্তত নিজে যতক্ষণ না বিপদে পড়ি!
কোভিড আক্রান্ত সময়টা সবার এক রকমের নয়। যখন কোভিড আক্রান্ত হলাম, সেই দিনই কুষ্টিয়ায় আমার বড় ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। দ্বিতীয় ঢেউয়ের লকডাউন শুরু হয়েছে। সেই মৃত্যুশোক জীবনে ভুলবার নয়। পরিবারের সবাইকে বললাম, আমি একা থাকতে চাই। রূপকথা অবাক হয়ে দূর থেকে বাবাকে দেখছে। ওদের মায়াময় মুখ মেঘলা আকাশের মতো থম ধরে আছে। আমি দরজা বন্ধ করে রইলাম। দুই চোখ ঝেঁপে বর্ষার জলধারার মতো ভেসে গেল। … কত স্মৃতি, কত কথা, কত হাজার হাজার দিবস-রজনীর গল্প, ছোট ছোট আনন্দ-বেদনা ভালোবাসার কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। অনেক দুঃখ-যন্ত্রণা ভোগ করে তিনি চলে গেলেন! এই মায়াবী পৃথিবীতে আর কখনো কোথাও তাঁর সঙ্গে দেখা হবে না। আমার পুরো কোভিডের সময়টি কেটেছে আতঙ্কে। প্রায় প্রতিদিন শুনেছি পরিচিত বন্ধু, স্বজনদের মৃত্যুসংবাদ। প্রায় এক মাস লাগল উঠে দাঁড়াতে!
কোভিড থেকে সেরে ওঠার দুই মাস হতে চলল। কিন্তু জীবনের স্বাভাবিক ছন্দ আর ফিরে পাচ্ছি না। শরীরের নানা রকমের দুর্ভোগ বেড়েছে—ক্লান্তি, বিষাদে ছেয়ে আছে মন। উৎসাহের জায়গাগুলো খুঁজে পাচ্ছি না। রাতে চোখে ঘুম নেই মোটেও। কিন্তু দিনের বেলা অকস্মাৎ তন্দ্রায় চোখ লেগে যায়, সেটা দিন-রাতের যখনই হোক—যতবার চোখ খুলি, মনে হয় নতুন ভোরে ঘুম ভাঙল! কমলা রঙের ভোর! ঘরময় কমলা রঙের আভা ছড়িয়ে থাকে। এই লেখাটি লিখতে লিখতেই এমন একটি কাণ্ড ঘটল এখন। পৌনে এক ঘণ্টা ঘুমিয়ে ছিলাম ল্যাপটপের সমুখেই, টাইপ করার ভঙ্গিমায়! কত দিন লাগবে এই সবকিছু কাটিয়ে উঠতে, কে জানে?
যেকোনো বিষয়েই আমাদের প্রতিক্রিয়া কয়েক ঘণ্টা। বড়জোড় কয়েকদিন। তারপর ভুলে যেতে থাকি। ভুলে যাওয়ার চাদরটা শরীরে মুড়িয়ে নিদ্রা যায়। তারপর চমৎকার থাকি। আমি তখনো সেরে উঠিনি, তখনো বিছানায়। … দেখলাম, আমার অনুজ বন্ধুসম সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে যা-তা ভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে। অসম্মান করা হচ্ছে। অপমান করা হচ্ছে। খবরটি জানার প্রথমদিকে মাত্র কয়েকজন ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিল। আসলে বেশির ভাগই প্রথমে দ্বিধাগ্রস্ত ছিল ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কে কোন বিপদে পড়ে! আমার এ ধারণা ভুলও হতে পারে, এ আমার অনুমান মাত্র। কারণ, আমাকেই বেশ কয়জনা—আমার বন্ধু, শুভাকাঙ্ক্ষী ফোন করে, টেক্সট করে জানাল: ‘তুমি পোস্টটি উঠিয়ে নাও। বিপদে পড়বে। …’ আমি বললাম, ‘ও আমার বন্ধু, ও অনেক বড় সাংবাদিক। তারচেয়ে বড়কথা, আমি আমার বন্ধুর নিঃশর্ত মুক্তি চেয়েছি, যারা এই কাজটি করেছে তাদের নিন্দা করেছি। এ আমার নির্মল দাবি। আমি সব সময় বন্ধুর পাশে থাকতে চেষ্টা করি। আমি অন্যায় কিছু করিনি। …’
তারপর তো পুরো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ইলেকট্রনিক মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলো রোজিনার পাশে দাঁড়িয়েছিল। আমি নিজে সংবাদপত্রের একজন কর্মী ছিলাম দীর্ঘ চৌদ্দ বছর। আমার ভালো লেগেছে যে, রোজিনার ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রতিটি সাংবাদিক তাঁর পাশে ছিল। তাঁর মুক্তির জন্য সর্বোচ্চ করেছেন তাঁর সহকর্মী সাংবাদিক বন্ধুরা, অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন, নিন্দা করেছেন এবং রোজিনাকে মুক্ত করেছেন—এ দৃশ্য বিরল। রোজিনা যখন কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্ত হচ্ছেন, মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন। শত শত সাংবাদিক, ক্যামেরা, মাইক্রোফোন…আর সাধারণ মানুষের ফুলেল শুভেচ্ছা। আমার দুই চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছিল। আমি সব সময় একটি কথা বলি: মানুষের ভালোবাসার বিকল্প নেই। যারা রোজিনাকে যা-তা রকমের অপমান করেছিল, গলা টিপে ধরেছিল, তারা কি দেখেছে ও-কে মুক্ত করার দৃশ্যগুলো? সাংবাদিক সমাজ, সাধারণ মানুষ যে জেগে উঠেছিল, ফুঁসে উঠেছিল—দেখেছে তারা? নিশ্চয়ই দেখেছে। আপনাদের লজ্জা হওয়া উচিত। এর মধ্যে বুড়িগঙ্গা দিয়ে প্রচুর পানি বয়ে গেছে। কিন্তু আমরা ভুলে গেছি, যারা ওর গলা টিপে ধরেছিল, তাদের শাস্তির দাবি নিয়ে আর কথা বলছি না। যেমন আমরা অনেক কিছু ভুলে যাই, এটাও সে রকম বিষয়। অথবা ভুলে যেতে পেরে ভালো থাকি।
রোজিনাকন্যা আলভিনা অসাধারণ ছবি আঁকে। আলভিনার আঁকা ছবিগুলো আমাকে রোজিনা পাঠাতেন। কমেন্টসের জন্য। আমি প্রায় দশ বছর আর্ট কলেজের জয়নুল শিশুকলা নিকেতনের শিক্ষক ছিলাম। আমার শিক্ষক শিল্পী অধ্যাপক আব্দুল বাসেত, আবুল বারক আলভী আমাকে বলতেন, বাচ্চাদের ছবি তাদের মতো আঁকতে দেবে। তাদের আঁকা প্রতিটি ছবিই ইউনিক এবং ডিভাইন। আলভিনার ছবিগুলোও তাই ছিল। আমি কমেন্ট করতাম; কিন্তু কোনো সাজেশন দিতাম না।
রোজিনাও দারুণভাবে চিত্রকলা অনুরাগী একজন নারী। সাংবাদিক পরিচয়ের বাইরে তাঁর একটি দারুণ সংবেদনশীল হৃদয় আছে, এককথায় আর্টলাভার। রোজিনা যতবার দেশের বাইরে ইউরোপ-আমেরিকা গিয়েছেন পেশাগত কারণে, ততবার আর্ট মিউজিয়ামগুলো ভিজিট করেছেন। এমন একজন ভালো মনের শিল্প অনুরাগী সাংবাদিকের জন্য আমরা সবাই পাশে দাঁড়াতে পেরেছি, দেশের সাংবাদিকরা জোটবেঁধে সাংবাদিকতার মহান পেশাকে সমুন্নত রাখতে পেরেছেন—এ আমার ভালো লেগেছে।
পরমেশ্বর সবার ভালো করুন।
লেখক∶ চিত্রশিল্পী
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলে দেখেছিলাম একদল হরিণকে ধাওয়া করছে সিংহ। শেষমেশ ধরতে পেরেছে একটি হরিণকে। শিকার করতে পারা হরিণটির টুঁটি চেপে ধরে রাখল অনেকটা সময় সিংহটি। হরিণ তার সর্বশক্তি দিয়ে ঝাপটাল কিছুক্ষণ। এক সময় নিস্তেজ হয়ে গেলে আরও দুটি সিংহ এসে তাতে যোগ দিল। কিছু দূরেই হরিণের অন্য সাথিরা নিশ্চিন্তমনে ঘাস ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাচ্ছে। শিকার করা হরিণটি সিংহগুলোর পেটে সম্পূর্ণ হজম না হওয়া পর্যন্ত অন্য হরিণগুলো জানে যে তাদের কিছু হবে না। বরং ততক্ষণে কিছু ঘাস খেয়ে নেওয়া যাক! এমনই ভাবলেশহীন তারা!
আমরাও চোখ-কান বন্ধ রেখেছি আজকাল। ভাবছি, চলছে তো দিন—চলুক না। আমরা জানি, ভেবে কোনো লাভ হবে না। আমার ব্যক্তিগত ভাবনা আর কষ্টের কী মূল্য আছে? যা হওয়ার তা তো হবেই। বরং হওয়ার আগে নিজের সময়টা নিজের মতোই চুপচাপ থাকি। ভাবলেশহীন থাকার মধ্যে অনেক সুবিধা আছে। নির্জন সুনসান থাকা যায়—অন্তত নিজে যতক্ষণ না বিপদে পড়ি!
কোভিড আক্রান্ত সময়টা সবার এক রকমের নয়। যখন কোভিড আক্রান্ত হলাম, সেই দিনই কুষ্টিয়ায় আমার বড় ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। দ্বিতীয় ঢেউয়ের লকডাউন শুরু হয়েছে। সেই মৃত্যুশোক জীবনে ভুলবার নয়। পরিবারের সবাইকে বললাম, আমি একা থাকতে চাই। রূপকথা অবাক হয়ে দূর থেকে বাবাকে দেখছে। ওদের মায়াময় মুখ মেঘলা আকাশের মতো থম ধরে আছে। আমি দরজা বন্ধ করে রইলাম। দুই চোখ ঝেঁপে বর্ষার জলধারার মতো ভেসে গেল। … কত স্মৃতি, কত কথা, কত হাজার হাজার দিবস-রজনীর গল্প, ছোট ছোট আনন্দ-বেদনা ভালোবাসার কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। অনেক দুঃখ-যন্ত্রণা ভোগ করে তিনি চলে গেলেন! এই মায়াবী পৃথিবীতে আর কখনো কোথাও তাঁর সঙ্গে দেখা হবে না। আমার পুরো কোভিডের সময়টি কেটেছে আতঙ্কে। প্রায় প্রতিদিন শুনেছি পরিচিত বন্ধু, স্বজনদের মৃত্যুসংবাদ। প্রায় এক মাস লাগল উঠে দাঁড়াতে!
কোভিড থেকে সেরে ওঠার দুই মাস হতে চলল। কিন্তু জীবনের স্বাভাবিক ছন্দ আর ফিরে পাচ্ছি না। শরীরের নানা রকমের দুর্ভোগ বেড়েছে—ক্লান্তি, বিষাদে ছেয়ে আছে মন। উৎসাহের জায়গাগুলো খুঁজে পাচ্ছি না। রাতে চোখে ঘুম নেই মোটেও। কিন্তু দিনের বেলা অকস্মাৎ তন্দ্রায় চোখ লেগে যায়, সেটা দিন-রাতের যখনই হোক—যতবার চোখ খুলি, মনে হয় নতুন ভোরে ঘুম ভাঙল! কমলা রঙের ভোর! ঘরময় কমলা রঙের আভা ছড়িয়ে থাকে। এই লেখাটি লিখতে লিখতেই এমন একটি কাণ্ড ঘটল এখন। পৌনে এক ঘণ্টা ঘুমিয়ে ছিলাম ল্যাপটপের সমুখেই, টাইপ করার ভঙ্গিমায়! কত দিন লাগবে এই সবকিছু কাটিয়ে উঠতে, কে জানে?
যেকোনো বিষয়েই আমাদের প্রতিক্রিয়া কয়েক ঘণ্টা। বড়জোড় কয়েকদিন। তারপর ভুলে যেতে থাকি। ভুলে যাওয়ার চাদরটা শরীরে মুড়িয়ে নিদ্রা যায়। তারপর চমৎকার থাকি। আমি তখনো সেরে উঠিনি, তখনো বিছানায়। … দেখলাম, আমার অনুজ বন্ধুসম সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে যা-তা ভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে। অসম্মান করা হচ্ছে। অপমান করা হচ্ছে। খবরটি জানার প্রথমদিকে মাত্র কয়েকজন ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিল। আসলে বেশির ভাগই প্রথমে দ্বিধাগ্রস্ত ছিল ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কে কোন বিপদে পড়ে! আমার এ ধারণা ভুলও হতে পারে, এ আমার অনুমান মাত্র। কারণ, আমাকেই বেশ কয়জনা—আমার বন্ধু, শুভাকাঙ্ক্ষী ফোন করে, টেক্সট করে জানাল: ‘তুমি পোস্টটি উঠিয়ে নাও। বিপদে পড়বে। …’ আমি বললাম, ‘ও আমার বন্ধু, ও অনেক বড় সাংবাদিক। তারচেয়ে বড়কথা, আমি আমার বন্ধুর নিঃশর্ত মুক্তি চেয়েছি, যারা এই কাজটি করেছে তাদের নিন্দা করেছি। এ আমার নির্মল দাবি। আমি সব সময় বন্ধুর পাশে থাকতে চেষ্টা করি। আমি অন্যায় কিছু করিনি। …’
তারপর তো পুরো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ইলেকট্রনিক মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলো রোজিনার পাশে দাঁড়িয়েছিল। আমি নিজে সংবাদপত্রের একজন কর্মী ছিলাম দীর্ঘ চৌদ্দ বছর। আমার ভালো লেগেছে যে, রোজিনার ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রতিটি সাংবাদিক তাঁর পাশে ছিল। তাঁর মুক্তির জন্য সর্বোচ্চ করেছেন তাঁর সহকর্মী সাংবাদিক বন্ধুরা, অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন, নিন্দা করেছেন এবং রোজিনাকে মুক্ত করেছেন—এ দৃশ্য বিরল। রোজিনা যখন কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্ত হচ্ছেন, মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন। শত শত সাংবাদিক, ক্যামেরা, মাইক্রোফোন…আর সাধারণ মানুষের ফুলেল শুভেচ্ছা। আমার দুই চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছিল। আমি সব সময় একটি কথা বলি: মানুষের ভালোবাসার বিকল্প নেই। যারা রোজিনাকে যা-তা রকমের অপমান করেছিল, গলা টিপে ধরেছিল, তারা কি দেখেছে ও-কে মুক্ত করার দৃশ্যগুলো? সাংবাদিক সমাজ, সাধারণ মানুষ যে জেগে উঠেছিল, ফুঁসে উঠেছিল—দেখেছে তারা? নিশ্চয়ই দেখেছে। আপনাদের লজ্জা হওয়া উচিত। এর মধ্যে বুড়িগঙ্গা দিয়ে প্রচুর পানি বয়ে গেছে। কিন্তু আমরা ভুলে গেছি, যারা ওর গলা টিপে ধরেছিল, তাদের শাস্তির দাবি নিয়ে আর কথা বলছি না। যেমন আমরা অনেক কিছু ভুলে যাই, এটাও সে রকম বিষয়। অথবা ভুলে যেতে পেরে ভালো থাকি।
রোজিনাকন্যা আলভিনা অসাধারণ ছবি আঁকে। আলভিনার আঁকা ছবিগুলো আমাকে রোজিনা পাঠাতেন। কমেন্টসের জন্য। আমি প্রায় দশ বছর আর্ট কলেজের জয়নুল শিশুকলা নিকেতনের শিক্ষক ছিলাম। আমার শিক্ষক শিল্পী অধ্যাপক আব্দুল বাসেত, আবুল বারক আলভী আমাকে বলতেন, বাচ্চাদের ছবি তাদের মতো আঁকতে দেবে। তাদের আঁকা প্রতিটি ছবিই ইউনিক এবং ডিভাইন। আলভিনার ছবিগুলোও তাই ছিল। আমি কমেন্ট করতাম; কিন্তু কোনো সাজেশন দিতাম না।
রোজিনাও দারুণভাবে চিত্রকলা অনুরাগী একজন নারী। সাংবাদিক পরিচয়ের বাইরে তাঁর একটি দারুণ সংবেদনশীল হৃদয় আছে, এককথায় আর্টলাভার। রোজিনা যতবার দেশের বাইরে ইউরোপ-আমেরিকা গিয়েছেন পেশাগত কারণে, ততবার আর্ট মিউজিয়ামগুলো ভিজিট করেছেন। এমন একজন ভালো মনের শিল্প অনুরাগী সাংবাদিকের জন্য আমরা সবাই পাশে দাঁড়াতে পেরেছি, দেশের সাংবাদিকরা জোটবেঁধে সাংবাদিকতার মহান পেশাকে সমুন্নত রাখতে পেরেছেন—এ আমার ভালো লেগেছে।
পরমেশ্বর সবার ভালো করুন।
লেখক∶ চিত্রশিল্পী
এখন রাজনীতির এক গতিময়তার সময়। শেখ হাসিনার ১৫ বছরের গণতন্ত্রহীন কর্তৃত্ববাদী দুর্নীতিপরায়ণ শাসন ছাত্র আন্দোলনে উচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তী শাসনকালে দ্রুততার সঙ্গে নানা রকম রাজনৈতিক কথাবার্তা, চিন্তা-ভাবনা, চেষ্টা-অপচেষ্টা, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার প্রকাশ ঘটছে।
১৪ ঘণ্টা আগেবহু বছর আগে সেই ব্রিটিশ যুগে কাজী নজরুল লিখেছিলেন, ‘ক্ষুধাতুর শিশু চায় না স্বরাজ, চায় দুটো ভাত, একটু নুন।’ আসলে পেটের খিদে নিয়ম, আইন, বিবেক, বিচার কোনো কিছুই মানে না। তাই তো প্রবাদ সৃষ্টি হয়েছে, খিদের জ্বালা বড় জ্বালা। এর থেকে বোধ হয় আর কোনো অসহায়তা নেই। খালি পেটে কেউ তত্ত্ব শুনতে চায় না। কাওয়ালিও ন
১৪ ঘণ্টা আগেতিন বছরের শিশু মুসা মোল্লা ও সাত বছরের রোহান মোল্লা নিষ্পাপ, ফুলের মতো কোমল। কারও সঙ্গে তাদের কোনো স্বার্থের দ্বন্দ্ব থাকার কথা নয়। কিন্তু বাবার চরম নিষ্ঠুরতায় পৃথিবী ছাড়তে হয়েছে তাদের। আহাদ মোল্লা নামের এক ব্যক্তি দুই ছেলেসন্তানকে গলা কেটে হত্যা করার পর নিজের গলায় নিজে ছুরি চালিয়েছেন।
১৪ ঘণ্টা আগেদলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
২ দিন আগে