মাজহারুল ইসলাম
‘জীবনের কত অলি-গলি ঘুরে ক্লান্ত শরীর,
বিষাদ মনে বেলাপড়া কোনো রাস্তার মোড়ে অবশেষে হাতছানি দিয়ে ছুটটান,
আবেগগুলোও বেগ পায় হয়ে সুখের অবসান’
জীবন কী এবং আমরা ছুটছি কোথায়? গত ৪ জুন আমার চোখের সামনে ঘটে যাওয়া এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় পঞ্চগড় ওসিএলএসডির মৃত্যু ও তাঁর প্রিয়জনদের বুকফাটা কান্না আর আর্তনাদ দেখে আমি নিজেই আবেগতাড়িত হয়ে যাই। বিষণ্ণতায় ভরে ওঠে মন। ভাবছি, বেঁচে থাকার সময় তাঁর কত স্বপ্ন ছিল। ছিল কত সুন্দর প্রাণপ্রাচুর্যময় জীবন। কিন্তু এক নিমেষে তাঁর নিশ্বাসটুকু চলে যাওয়ার পর পড়ে থাকল হাসপাতালের বারান্দায় নিথর দেহখানি। তখন নিজেকে প্রশ্ন করি, জীবন কি এমনই? জীবনের অর্থ কী? আমরা জীবনকে একটি দার্শনিক এবং আত্মিক সাধারণভাবে জীবন অথবা অস্তিত্ব্স—বের তাৎপর্য আলোচনা করে থাকি। জীবনের অর্থ খুঁজতে গিয়ে দর্শন, বিজ্ঞান, অধিবিদ্যা এবং ধর্ম—নানা ধরনের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে পৃথিবীর মানবকুলের মাঝে।
আমরা কোথা থেকে এসেছি? আমরা কে? আমরা কোথায় যাচ্ছি? জীবনের অর্থ বলতে আমরা যা বুঝি, তার উৎপত্তি দার্শনিক ও ধর্মীয় আত্মচিন্তা এবং অস্তিত্ব, সামাজিক বন্ধন, চেতনা, সুখ এগুলোর বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান থেকে পাই। আরও নানা বিষয় এখানে জড়িত।
কিন্তু বেঁচে থাকায় আমরা বাস্তব যা কিছু দেখতে পাই তা হলো যেমন, বৃষ্টি থেমে গেলে ছাতাটাকেও বোঝা মনে হয়। কালি ফুরিয়ে গেলে কলমটাও আবর্জনার ডাস্টবিনে জমা হয়। বাসি হয়ে গেলে প্রিয়জনের দেওয়া ফুলটাও পরদিন ডাস্টবিনে পাওয়া যায়। এক কথায়, যতদিন বেঁচে আছি ততদিন জীবনের শ্বাস ও আশ। দম চলে গেলে সবই শেষ। চোখের সামনে কত প্রিয়জন চলে গেছে, আমরা কয়জনই-বা তাদের স্মরণ রাখি? মৃত্যুর সময় সাময়িক কিছুক্ষণ ব্যথিত হই মাত্র। পরে ভুলে যাই সব। কিন্তু ধর্মীয় বিধানে উল্লেখ আছে, মানুষ মরে গেলেও কিছু আমলনামা বা কল্যাণমুখী কাজের মাধ্যমে অমর হয়ে থাকে। যেমন—পৃথিবীতে নেক সন্তান জন্মদান, জনকল্যাণে পানি খাওয়ার জন্য টিউবওয়েল দান, গাছ লাগানো, ধর্মী কোনো প্রতিষ্ঠান যেমন মসজিদ, মাদ্রাসা বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ। পৃথিবীর নিষ্ঠুরতম সত্য হলো, উপকারের কথা মানুষ বেশি দিন মনে রাখে না। জীবনের সবচেয়ে নিদারুণ বাস্তবতা হলো, কার কাছে কতদিন অধিকার পাব, সেটা নির্ভর করবে কার জন্য কতদিন কিছু একটা করার সামর্থ্য আছে তার ওপর। এই বাস্তবতা মানলেও সত্যি, না মানলেও সত্যি।
আজ সকালে যে পত্রিকার দাম ১০ টাকা, এক দিন পর সেই একই পত্রিকার এক কেজির দাম ১০ টাকা মাত্র। সময় ফুরিয়ে গেলে এভাবেই মূল্য কমতে থাকে সবার, সবকিছুর। আমরা আপাদমস্তক স্বার্থপর প্রাণী। ভিখারিকে দুই টাকা দেওয়ার আগেও মানুষ চিন্তা করে কতটুকু পুণ্য অর্জন হবে। এতকিছুর পরও আমরা একটু ভেবেচিন্তে কথা বলি। রাগটা কমাই। অহংকারকে ভুলে যাই।
যদি সুখী হতে চাই, তবে প্রত্যাশা কমাই। কারও জন্য কিছু করে থাকলে সেটা চিরতরে ভুলে যাই। কারণ, যতদিন মনে রাখব ততদিন সেটা আমাকে অহংকারী করে তুলবে। আবার কেউ যদি কারও জন্য খুব ছোট কিছুও করে থাকে, তবে সেটা আজীবন মনে রাখা উচিত। কারণ, এটা নিজেকে বিনয়ী ও কৃতজ্ঞ একজন ভালো মানুষ হিসেবে বাঁচিয়ে রাখবে। জীবন এমনই যেখানে যেমন।
লেখক: সাংবাদিক
‘জীবনের কত অলি-গলি ঘুরে ক্লান্ত শরীর,
বিষাদ মনে বেলাপড়া কোনো রাস্তার মোড়ে অবশেষে হাতছানি দিয়ে ছুটটান,
আবেগগুলোও বেগ পায় হয়ে সুখের অবসান’
জীবন কী এবং আমরা ছুটছি কোথায়? গত ৪ জুন আমার চোখের সামনে ঘটে যাওয়া এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় পঞ্চগড় ওসিএলএসডির মৃত্যু ও তাঁর প্রিয়জনদের বুকফাটা কান্না আর আর্তনাদ দেখে আমি নিজেই আবেগতাড়িত হয়ে যাই। বিষণ্ণতায় ভরে ওঠে মন। ভাবছি, বেঁচে থাকার সময় তাঁর কত স্বপ্ন ছিল। ছিল কত সুন্দর প্রাণপ্রাচুর্যময় জীবন। কিন্তু এক নিমেষে তাঁর নিশ্বাসটুকু চলে যাওয়ার পর পড়ে থাকল হাসপাতালের বারান্দায় নিথর দেহখানি। তখন নিজেকে প্রশ্ন করি, জীবন কি এমনই? জীবনের অর্থ কী? আমরা জীবনকে একটি দার্শনিক এবং আত্মিক সাধারণভাবে জীবন অথবা অস্তিত্ব্স—বের তাৎপর্য আলোচনা করে থাকি। জীবনের অর্থ খুঁজতে গিয়ে দর্শন, বিজ্ঞান, অধিবিদ্যা এবং ধর্ম—নানা ধরনের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে পৃথিবীর মানবকুলের মাঝে।
আমরা কোথা থেকে এসেছি? আমরা কে? আমরা কোথায় যাচ্ছি? জীবনের অর্থ বলতে আমরা যা বুঝি, তার উৎপত্তি দার্শনিক ও ধর্মীয় আত্মচিন্তা এবং অস্তিত্ব, সামাজিক বন্ধন, চেতনা, সুখ এগুলোর বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান থেকে পাই। আরও নানা বিষয় এখানে জড়িত।
কিন্তু বেঁচে থাকায় আমরা বাস্তব যা কিছু দেখতে পাই তা হলো যেমন, বৃষ্টি থেমে গেলে ছাতাটাকেও বোঝা মনে হয়। কালি ফুরিয়ে গেলে কলমটাও আবর্জনার ডাস্টবিনে জমা হয়। বাসি হয়ে গেলে প্রিয়জনের দেওয়া ফুলটাও পরদিন ডাস্টবিনে পাওয়া যায়। এক কথায়, যতদিন বেঁচে আছি ততদিন জীবনের শ্বাস ও আশ। দম চলে গেলে সবই শেষ। চোখের সামনে কত প্রিয়জন চলে গেছে, আমরা কয়জনই-বা তাদের স্মরণ রাখি? মৃত্যুর সময় সাময়িক কিছুক্ষণ ব্যথিত হই মাত্র। পরে ভুলে যাই সব। কিন্তু ধর্মীয় বিধানে উল্লেখ আছে, মানুষ মরে গেলেও কিছু আমলনামা বা কল্যাণমুখী কাজের মাধ্যমে অমর হয়ে থাকে। যেমন—পৃথিবীতে নেক সন্তান জন্মদান, জনকল্যাণে পানি খাওয়ার জন্য টিউবওয়েল দান, গাছ লাগানো, ধর্মী কোনো প্রতিষ্ঠান যেমন মসজিদ, মাদ্রাসা বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ। পৃথিবীর নিষ্ঠুরতম সত্য হলো, উপকারের কথা মানুষ বেশি দিন মনে রাখে না। জীবনের সবচেয়ে নিদারুণ বাস্তবতা হলো, কার কাছে কতদিন অধিকার পাব, সেটা নির্ভর করবে কার জন্য কতদিন কিছু একটা করার সামর্থ্য আছে তার ওপর। এই বাস্তবতা মানলেও সত্যি, না মানলেও সত্যি।
আজ সকালে যে পত্রিকার দাম ১০ টাকা, এক দিন পর সেই একই পত্রিকার এক কেজির দাম ১০ টাকা মাত্র। সময় ফুরিয়ে গেলে এভাবেই মূল্য কমতে থাকে সবার, সবকিছুর। আমরা আপাদমস্তক স্বার্থপর প্রাণী। ভিখারিকে দুই টাকা দেওয়ার আগেও মানুষ চিন্তা করে কতটুকু পুণ্য অর্জন হবে। এতকিছুর পরও আমরা একটু ভেবেচিন্তে কথা বলি। রাগটা কমাই। অহংকারকে ভুলে যাই।
যদি সুখী হতে চাই, তবে প্রত্যাশা কমাই। কারও জন্য কিছু করে থাকলে সেটা চিরতরে ভুলে যাই। কারণ, যতদিন মনে রাখব ততদিন সেটা আমাকে অহংকারী করে তুলবে। আবার কেউ যদি কারও জন্য খুব ছোট কিছুও করে থাকে, তবে সেটা আজীবন মনে রাখা উচিত। কারণ, এটা নিজেকে বিনয়ী ও কৃতজ্ঞ একজন ভালো মানুষ হিসেবে বাঁচিয়ে রাখবে। জীবন এমনই যেখানে যেমন।
লেখক: সাংবাদিক
এখন রাজনীতির এক গতিময়তার সময়। শেখ হাসিনার ১৫ বছরের গণতন্ত্রহীন কর্তৃত্ববাদী দুর্নীতিপরায়ণ শাসন ছাত্র আন্দোলনে উচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তী শাসনকালে দ্রুততার সঙ্গে নানা রকম রাজনৈতিক কথাবার্তা, চিন্তা-ভাবনা, চেষ্টা-অপচেষ্টা, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার প্রকাশ ঘটছে।
১৭ ঘণ্টা আগেবহু বছর আগে সেই ব্রিটিশ যুগে কাজী নজরুল লিখেছিলেন, ‘ক্ষুধাতুর শিশু চায় না স্বরাজ, চায় দুটো ভাত, একটু নুন।’ আসলে পেটের খিদে নিয়ম, আইন, বিবেক, বিচার কোনো কিছুই মানে না। তাই তো প্রবাদ সৃষ্টি হয়েছে, খিদের জ্বালা বড় জ্বালা। এর থেকে বোধ হয় আর কোনো অসহায়তা নেই। খালি পেটে কেউ তত্ত্ব শুনতে চায় না। কাওয়ালিও ন
১৮ ঘণ্টা আগেতিন বছরের শিশু মুসা মোল্লা ও সাত বছরের রোহান মোল্লা নিষ্পাপ, ফুলের মতো কোমল। কারও সঙ্গে তাদের কোনো স্বার্থের দ্বন্দ্ব থাকার কথা নয়। কিন্তু বাবার চরম নিষ্ঠুরতায় পৃথিবী ছাড়তে হয়েছে তাদের। আহাদ মোল্লা নামের এক ব্যক্তি দুই ছেলেসন্তানকে গলা কেটে হত্যা করার পর নিজের গলায় নিজে ছুরি চালিয়েছেন।
১৮ ঘণ্টা আগেদলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
২ দিন আগে