মো. কামরুল ইসলাম
মন চাইলেই জেট ফুয়েলের দাম বাড়িয়ে দেওয়া, আট মাসে সাতবার মূল্য বৃদ্ধি, প্রতি লিটার জেট ফুয়েলের বর্ধিত এই দামের বাড়তি অর্থ এয়ারলাইনগুলোর কোথা থেকে সমন্বয় করবে? মনোপলি ব্যবসা করলেই ভোক্তার সুবিধা-অসুবিধা দেখা যাবে না, তা কি করে হয়? একটি খাত আজ ধ্বংসের কিনারায়। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সারা বিশ্ব আজ স্তব্ধ হয়ে আছে। অ্যাভিয়েশন খাত আজ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। সহসা এ ক্ষতি থেকে উত্তরণের কোনো পথ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
করোনাভাইরাসের প্রভাবে হওয়া ক্ষতিকে আরও বাড়িয়ে তুলছে জেট ফুয়েলের দাম বৃদ্ধি। শুধু জ্বালানির দাম তো নয়। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অতিরিক্ত অ্যারোনটিক্যাল ও নন–অ্যারোনটিক্যাল চার্জ ও বিমানবন্দর উন্নয়ন ও নিরাপত্তা ফি। এর সঙ্গে করোনার কারণে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা ও অ্যাভিয়েশনের ইতিহাসে যাত্রীস্বল্পতার রেকর্ড মিলে পুরো খাতের নাভিশ্বাস তুলে দিয়েছে।
করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়লেই এয়ারলাইনসের ওপর খড়্গ নেমে আসে। করোনার শুরু থেকেই এয়ারলাইনসের অপারেশন থাকা–না থাকার দোলাচল চলছে। কখনো দেশের কর্তৃপক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা, আবার কখনো অন্য দেশের নিষেধাজ্ঞা। কখনো ৫০ শতাংশ যাত্রী ধারণের অনুমতি, আবার কখনো ৭০ শতাংশ। এর মধ্যে করোনাকালে এয়ারলাইনস ভ্রমণের নানা স্বাস্থ্য সতর্কতামূলক নির্দেশনা তো রয়েছেই। সব নির্দেশনার মধ্যেই এয়ারলাইনগুলো যাত্রীদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছে।
বাংলাদেশ অ্যাভিয়েশন, তথা বিশ্ব অ্যাভিয়েশনে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস শৈশব অতিক্রম করছে। এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, বাংলাদেশে এ খাতটির বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। বিভিন্ন দেশে প্রায় দেড় কোটি বাংলাদেশি রয়েছে। দেশের ভেতরেও এ বাজার ক্রমে বড় হচ্ছে। ফলে বিশ্বের বড় বড় এয়ারলাইনস প্রতিষ্ঠানগুলো এ দেশে ব্যবসা পরিচালনা করছে। অনেক এয়ারলাইনস নতুন করে ব্যবসা পরিচালনার উৎসাহ দেখাচ্ছে। এই আন্তর্জাতিক রুটের মার্কেট শেয়ারের প্রায় ৭০ শতাংশই বিদেশি এয়ারলাইনগুলোর দখলে। ব্যবসায়িক ও নীতিগত কিছু বিষয়ে দুর্বলতার কারণে মার্কেট শেয়ারের বাকি অংশও হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিভিন্ন সিদ্ধান্তের কারণে বেসরকারি এয়ারলাইনগুলোর পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জাতীয় বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসও। এর একটি জ্বালানি ব্যয়, যার কথা শুরুতেই উল্লেখ করা হয়েছে। একটি এয়ারলাইনস কোম্পানির ফ্লাইট পরিচালনার মোট ব্যয়ের প্রায় ৪০ শতাংশই হয় জেট ফুয়েলের পেছনে। ফলে দাম বৃদ্ধির কারণে বিদেশি প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিগুলোর চেয়ে দেশীয় কোম্পানিগুলোকে বেশি ব্যয় করতে হয়। এতে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা নষ্ট হয়।
বাংলাদেশের অ্যাভিয়েশন খাতের ইতিহাস অনেকটাই ব্যর্থতার ইতিহাসে ভরপুর। মধ্যপ্রাচ্যসহ দক্ষিণ এশিয়া, পূর্ব এশিয়া এমনকি ইউরোপের অন্যতম গন্তব্য লন্ডনসহ নানা রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ, জিএমজি এয়ারলাইনস, রিজেন্ট এয়ারওয়েজ আজ ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছে। সঙ্গে বেস্ট এয়ার, এভিয়ানা এয়ারওয়েজ কিংবা এয়ার পারাবাত, অ্যারো বেঙ্গলও রয়েছে। সাউথ এশিয়া এয়ারওয়েজ, নেপচুন এয়ার, এপিক এয়ার কিংবা টিএসি অ্যাভিয়েশন, এরিস্টোক্র্যাট, রূপসী বাংলা এয়ারলাইনসসহ আরেও বেশ কয়েকটি এয়ারলাইনস ব্যবসা শুরুর পরিকল্পনা সাজিয়েছিল। কিন্তু শুরুতেই স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে তাদের।
ব্যর্থতার ইতিহাসের মধ্যে সফলতার গল্প শোনানোর জন্য বর্তমান প্রজন্মের এয়ারলাইনস ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস আর নভোএয়ার জাতীয় বিমান সংস্থার সঙ্গে মিলে যাত্রীদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছে। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও ব্যবসাকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। প্রাইভেট এয়ারলাইনসের ব্যর্থতার ইতিহাসে প্যাসেঞ্জার এয়ারলাইনসের জন্য গত ২৫ বছরে এয়ারক্রাফট রক্ষণাবেক্ষণের জন্য হ্যাঙ্গার সুবিধা না পাওয়া অন্যতম। এ ক্ষেত্রে অতীতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা উল্লেখ করার মতো। বর্তমান সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলোর জন্য হ্যাঙ্গার সুবিধা দেওয়ার জন্য অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ করছে, যা সহযোগিতার নিদর্শন হয়ে থাকবে।
বাংলাদেশের এয়ারলাইনগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। এয়ারলাইনসের অপারেশন খরচের বৃহদাংশ দিতে হয় জেট ফুয়েলের জন্য। আন্তর্জাতিক রুটের চেয়ে অভ্যন্তরীণ রুটে প্রায় ১৩ টাকা বেশি খরচ করতে হয় প্রতি লিটার জেট ফুয়েলের জন্য, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এই অতিরিক্ত খরচ অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রীকেই বহন করতে হয়। বর্তমান অবস্থা বিবেচনা না করে নিজেদের ব্যবসার কথা মাথায় রেখে মূল্য নির্ধারণ করলে ভোক্তার অধিকারও খর্ব হয়। এ ব্যাপারে পদ্মা ওয়েল কোম্পানি আরও যত্নশীল ভূমিকা নিলে এয়ারলাইনগুলোর বিশ্ব এভিয়েশনের এ অসহনীয় সময়ে টিকে থাকার সুযোগ পাবে। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক রুটের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ রুটের জেট ফুয়েলের মূল্য সমন্বয় করা খুবই জরুরি।
অ্যাভিয়েশন সেক্টরের উন্নয়নের জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর যেভাবে এগিয়ে আসা উচিত ছিল, গত ২৫ বছরে তারা সেভাবে এগিয়ে আসেনি। বর্তমানে এই দুর্বিষহ অবস্থায় যদি সরকার এগিয়ে না আসে, তবে বাংলাদেশের অ্যাভিয়েশন খাতের ব্যর্থতার ইতিহাস আরও দীর্ঘ হবে। নতুন করে কেউ এই খাতে বিনিয়োগে উৎসাহিত হবে না। জিএমজি এয়ারলাইনস ১৪ বছর, ইউনাইটেড ও রিজেন্ট এয়ারওয়েজ ১০ বছর করে ফ্লাইট পরিচালনা করে বন্ধ হয়ে যায়, নতুন বিনিয়োগকারীর জন্য যা অশনিসংকেত। দেশের এয়ারলাইনগুলো যদি ব্যবসায় টিকে থাকতে না পারে তবে এই অ্যাভিয়েশন বাজার চলে যাবে বিদেশিদের হাতে। এতে শুধু এয়ারলাইনস কোম্পানিই নয়। এর সঙ্গে যুক্ত অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও পড়বে বিপাকে। ইউএস-বাংলা, নভোএয়ার কিংবা বাংলাদেশ বিমানের ওপর অনেকটা নির্ভর করে আছে শত শত ট্রাভেল এজেন্সি, ট্যুর অপারেটর ও বিভিন্ন মানের তারকা হোটেল। আজ প্রায় সব বন্ধ হওয়ার উপক্রম। এ খাত ও এর সঙ্গে যুক্ত অন্য খাতগুলোর বিনিয়োগকারীদের কেউ ভালো নেই। লাখ লাখ কর্মী আর্থিক অনটনে নিদারুণ দিনাতিপাত করছে।
সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঠিক সিদ্ধান্তই পারে এয়ারলাইনগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে। তাহলে শত শত ট্রাভেল এজেন্সি, ট্যুর অপারেটর, হোটেলগুলোর বিনিয়োগকারীরা বেঁচে যাবেন, লাখ লাখ কর্মী বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবেন। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঠিক সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে এই খাতের বাঁচা–মরা। সবাই ইতিবাচক সিদ্ধান্ত দেখার অপেক্ষায় আছে।
মো. কামরুল ইসলাম: মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ), ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস
মন চাইলেই জেট ফুয়েলের দাম বাড়িয়ে দেওয়া, আট মাসে সাতবার মূল্য বৃদ্ধি, প্রতি লিটার জেট ফুয়েলের বর্ধিত এই দামের বাড়তি অর্থ এয়ারলাইনগুলোর কোথা থেকে সমন্বয় করবে? মনোপলি ব্যবসা করলেই ভোক্তার সুবিধা-অসুবিধা দেখা যাবে না, তা কি করে হয়? একটি খাত আজ ধ্বংসের কিনারায়। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সারা বিশ্ব আজ স্তব্ধ হয়ে আছে। অ্যাভিয়েশন খাত আজ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। সহসা এ ক্ষতি থেকে উত্তরণের কোনো পথ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
করোনাভাইরাসের প্রভাবে হওয়া ক্ষতিকে আরও বাড়িয়ে তুলছে জেট ফুয়েলের দাম বৃদ্ধি। শুধু জ্বালানির দাম তো নয়। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অতিরিক্ত অ্যারোনটিক্যাল ও নন–অ্যারোনটিক্যাল চার্জ ও বিমানবন্দর উন্নয়ন ও নিরাপত্তা ফি। এর সঙ্গে করোনার কারণে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা ও অ্যাভিয়েশনের ইতিহাসে যাত্রীস্বল্পতার রেকর্ড মিলে পুরো খাতের নাভিশ্বাস তুলে দিয়েছে।
করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়লেই এয়ারলাইনসের ওপর খড়্গ নেমে আসে। করোনার শুরু থেকেই এয়ারলাইনসের অপারেশন থাকা–না থাকার দোলাচল চলছে। কখনো দেশের কর্তৃপক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা, আবার কখনো অন্য দেশের নিষেধাজ্ঞা। কখনো ৫০ শতাংশ যাত্রী ধারণের অনুমতি, আবার কখনো ৭০ শতাংশ। এর মধ্যে করোনাকালে এয়ারলাইনস ভ্রমণের নানা স্বাস্থ্য সতর্কতামূলক নির্দেশনা তো রয়েছেই। সব নির্দেশনার মধ্যেই এয়ারলাইনগুলো যাত্রীদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছে।
বাংলাদেশ অ্যাভিয়েশন, তথা বিশ্ব অ্যাভিয়েশনে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস শৈশব অতিক্রম করছে। এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, বাংলাদেশে এ খাতটির বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। বিভিন্ন দেশে প্রায় দেড় কোটি বাংলাদেশি রয়েছে। দেশের ভেতরেও এ বাজার ক্রমে বড় হচ্ছে। ফলে বিশ্বের বড় বড় এয়ারলাইনস প্রতিষ্ঠানগুলো এ দেশে ব্যবসা পরিচালনা করছে। অনেক এয়ারলাইনস নতুন করে ব্যবসা পরিচালনার উৎসাহ দেখাচ্ছে। এই আন্তর্জাতিক রুটের মার্কেট শেয়ারের প্রায় ৭০ শতাংশই বিদেশি এয়ারলাইনগুলোর দখলে। ব্যবসায়িক ও নীতিগত কিছু বিষয়ে দুর্বলতার কারণে মার্কেট শেয়ারের বাকি অংশও হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিভিন্ন সিদ্ধান্তের কারণে বেসরকারি এয়ারলাইনগুলোর পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জাতীয় বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসও। এর একটি জ্বালানি ব্যয়, যার কথা শুরুতেই উল্লেখ করা হয়েছে। একটি এয়ারলাইনস কোম্পানির ফ্লাইট পরিচালনার মোট ব্যয়ের প্রায় ৪০ শতাংশই হয় জেট ফুয়েলের পেছনে। ফলে দাম বৃদ্ধির কারণে বিদেশি প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিগুলোর চেয়ে দেশীয় কোম্পানিগুলোকে বেশি ব্যয় করতে হয়। এতে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা নষ্ট হয়।
বাংলাদেশের অ্যাভিয়েশন খাতের ইতিহাস অনেকটাই ব্যর্থতার ইতিহাসে ভরপুর। মধ্যপ্রাচ্যসহ দক্ষিণ এশিয়া, পূর্ব এশিয়া এমনকি ইউরোপের অন্যতম গন্তব্য লন্ডনসহ নানা রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ, জিএমজি এয়ারলাইনস, রিজেন্ট এয়ারওয়েজ আজ ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছে। সঙ্গে বেস্ট এয়ার, এভিয়ানা এয়ারওয়েজ কিংবা এয়ার পারাবাত, অ্যারো বেঙ্গলও রয়েছে। সাউথ এশিয়া এয়ারওয়েজ, নেপচুন এয়ার, এপিক এয়ার কিংবা টিএসি অ্যাভিয়েশন, এরিস্টোক্র্যাট, রূপসী বাংলা এয়ারলাইনসসহ আরেও বেশ কয়েকটি এয়ারলাইনস ব্যবসা শুরুর পরিকল্পনা সাজিয়েছিল। কিন্তু শুরুতেই স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে তাদের।
ব্যর্থতার ইতিহাসের মধ্যে সফলতার গল্প শোনানোর জন্য বর্তমান প্রজন্মের এয়ারলাইনস ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস আর নভোএয়ার জাতীয় বিমান সংস্থার সঙ্গে মিলে যাত্রীদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছে। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও ব্যবসাকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। প্রাইভেট এয়ারলাইনসের ব্যর্থতার ইতিহাসে প্যাসেঞ্জার এয়ারলাইনসের জন্য গত ২৫ বছরে এয়ারক্রাফট রক্ষণাবেক্ষণের জন্য হ্যাঙ্গার সুবিধা না পাওয়া অন্যতম। এ ক্ষেত্রে অতীতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা উল্লেখ করার মতো। বর্তমান সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলোর জন্য হ্যাঙ্গার সুবিধা দেওয়ার জন্য অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ করছে, যা সহযোগিতার নিদর্শন হয়ে থাকবে।
বাংলাদেশের এয়ারলাইনগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। এয়ারলাইনসের অপারেশন খরচের বৃহদাংশ দিতে হয় জেট ফুয়েলের জন্য। আন্তর্জাতিক রুটের চেয়ে অভ্যন্তরীণ রুটে প্রায় ১৩ টাকা বেশি খরচ করতে হয় প্রতি লিটার জেট ফুয়েলের জন্য, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এই অতিরিক্ত খরচ অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রীকেই বহন করতে হয়। বর্তমান অবস্থা বিবেচনা না করে নিজেদের ব্যবসার কথা মাথায় রেখে মূল্য নির্ধারণ করলে ভোক্তার অধিকারও খর্ব হয়। এ ব্যাপারে পদ্মা ওয়েল কোম্পানি আরও যত্নশীল ভূমিকা নিলে এয়ারলাইনগুলোর বিশ্ব এভিয়েশনের এ অসহনীয় সময়ে টিকে থাকার সুযোগ পাবে। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক রুটের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ রুটের জেট ফুয়েলের মূল্য সমন্বয় করা খুবই জরুরি।
অ্যাভিয়েশন সেক্টরের উন্নয়নের জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর যেভাবে এগিয়ে আসা উচিত ছিল, গত ২৫ বছরে তারা সেভাবে এগিয়ে আসেনি। বর্তমানে এই দুর্বিষহ অবস্থায় যদি সরকার এগিয়ে না আসে, তবে বাংলাদেশের অ্যাভিয়েশন খাতের ব্যর্থতার ইতিহাস আরও দীর্ঘ হবে। নতুন করে কেউ এই খাতে বিনিয়োগে উৎসাহিত হবে না। জিএমজি এয়ারলাইনস ১৪ বছর, ইউনাইটেড ও রিজেন্ট এয়ারওয়েজ ১০ বছর করে ফ্লাইট পরিচালনা করে বন্ধ হয়ে যায়, নতুন বিনিয়োগকারীর জন্য যা অশনিসংকেত। দেশের এয়ারলাইনগুলো যদি ব্যবসায় টিকে থাকতে না পারে তবে এই অ্যাভিয়েশন বাজার চলে যাবে বিদেশিদের হাতে। এতে শুধু এয়ারলাইনস কোম্পানিই নয়। এর সঙ্গে যুক্ত অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও পড়বে বিপাকে। ইউএস-বাংলা, নভোএয়ার কিংবা বাংলাদেশ বিমানের ওপর অনেকটা নির্ভর করে আছে শত শত ট্রাভেল এজেন্সি, ট্যুর অপারেটর ও বিভিন্ন মানের তারকা হোটেল। আজ প্রায় সব বন্ধ হওয়ার উপক্রম। এ খাত ও এর সঙ্গে যুক্ত অন্য খাতগুলোর বিনিয়োগকারীদের কেউ ভালো নেই। লাখ লাখ কর্মী আর্থিক অনটনে নিদারুণ দিনাতিপাত করছে।
সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঠিক সিদ্ধান্তই পারে এয়ারলাইনগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে। তাহলে শত শত ট্রাভেল এজেন্সি, ট্যুর অপারেটর, হোটেলগুলোর বিনিয়োগকারীরা বেঁচে যাবেন, লাখ লাখ কর্মী বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবেন। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঠিক সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে এই খাতের বাঁচা–মরা। সবাই ইতিবাচক সিদ্ধান্ত দেখার অপেক্ষায় আছে।
মো. কামরুল ইসলাম: মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ), ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস
এখন রাজনীতির এক গতিময়তার সময়। শেখ হাসিনার ১৫ বছরের গণতন্ত্রহীন কর্তৃত্ববাদী দুর্নীতিপরায়ণ শাসন ছাত্র আন্দোলনে উচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তী শাসনকালে দ্রুততার সঙ্গে নানা রকম রাজনৈতিক কথাবার্তা, চিন্তা-ভাবনা, চেষ্টা-অপচেষ্টা, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার প্রকাশ ঘটছে।
৯ ঘণ্টা আগেবহু বছর আগে সেই ব্রিটিশ যুগে কাজী নজরুল লিখেছিলেন, ‘ক্ষুধাতুর শিশু চায় না স্বরাজ, চায় দুটো ভাত, একটু নুন।’ আসলে পেটের খিদে নিয়ম, আইন, বিবেক, বিচার কোনো কিছুই মানে না। তাই তো প্রবাদ সৃষ্টি হয়েছে, খিদের জ্বালা বড় জ্বালা। এর থেকে বোধ হয় আর কোনো অসহায়তা নেই। খালি পেটে কেউ তত্ত্ব শুনতে চায় না। কাওয়ালিও ন
১০ ঘণ্টা আগেতিন বছরের শিশু মুসা মোল্লা ও সাত বছরের রোহান মোল্লা নিষ্পাপ, ফুলের মতো কোমল। কারও সঙ্গে তাদের কোনো স্বার্থের দ্বন্দ্ব থাকার কথা নয়। কিন্তু বাবার চরম নিষ্ঠুরতায় পৃথিবী ছাড়তে হয়েছে তাদের। আহাদ মোল্লা নামের এক ব্যক্তি দুই ছেলেসন্তানকে গলা কেটে হত্যা করার পর নিজের গলায় নিজে ছুরি চালিয়েছেন।
১০ ঘণ্টা আগেদলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
১ দিন আগে