সানজিদা সামরিন
ঈদের দিন। দীপাদের বাড়িভর্তি অতিথি। দীপা একটু না, বেশ রোগা বলা চলে। শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ বা ওয়েস্টার্ন—যেমন পোশাকই পরুক না কেন, এই দৈহিক গড়নের জন্য তাকে নিয়ে পরিবার, ক্লাসরুম বা বন্ধুমহলে কম হাসি-ঠাট্টা হয় না। সেদিনও এর ব্যতিক্রম হয়নি। হঠাৎ করেই তার বড় বোনের দেবর ঠাট্টা শুরু করল। গান গেয়ে উঠল: তুমি এত রোগা, এত রোগা…। ডাইনিং টেবিলে বসা সবাই হেসে উঠল। বড় বোন বলে উঠল, ‘এই ফিগারে শাড়ি পরলে ভালো লাগে? কিচ্ছু মানায় না।’ আরেকজন বলল, ‘ছেলেরা এত রোগা মেয়ে পছন্দ করে না। বিয়ের আগেই আরেকটু স্বাস্থ্য বাড়িয়ে নাও।’ একের পর এক ঠাট্টা জমে উঠল। যেখানে জানা গেল দীপা দেখতে বাঁশের মতো, কেউ বলল, দীপা শাড়ি পরলে মনে হয় খুঁটির সঙ্গে কাপড় পেঁচিয়ে রেখেছে। একপর্যায়ে দীপা বলে উঠল, ‘এত বাজেভাবে আমাকে না দেখলেই কি নয়!’ এরপর কথায় কথায় তাকে বলা হলো, সে বেয়াদব। বড় বোন আড়ালে নিয়ে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করল যে, অতিথিদের সঙ্গে ভদ্রভাবে কথা বলতে হয়। দীপা বেয়াদবের মতো আচরণ করেছে। এর শেষ কী হলো বা এমন ঘটনা যখন ঘটে তখন শেষমেশ তা বালিশ ভেজানো পর্যন্ত গড়ায়। আশপাশ থেকে এমন সব নেতিবাচক কথা শুনতে শুনতে একটি মেয়ে হীনম্মন্যতায় ভুগতে থাকে। কমে যায় আত্মবিশ্বাস। আবার যারা এসব গা থেকে ঝেড়ে ফেলে উত্ত্যক্তকারীকে বোঝানোর চেষ্টা করে যে তারা ভুল করছে, তারা দীপার মতোই বেয়াদবের তকমা নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। সবার জ্বলন্ত চোখ তাদের পুড়িয়ে ছাই করে দেয়।
ইন্টারনেট বা ক্লাসরুম বুলিং নিয়ে ইদানীং কথাবার্তা লোকে বলতে শুরু করেছে। মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব ও ভয়াবহতা নিয়ে নানাভাবে সচেতনতাও তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে এখনকার সচেতন নেটিজেনরা। তবে বলতে দ্বিধা নেই, শুধু যদি মেয়েদের কথা বলি, তাহলে এই টিজিং বা বুলিংয়ের ব্যাপারটা শুরু হয় পরিবারের কাছ থেকেই। আমাদের পরিবারের সামনেই আত্মীয়রা শরীর, গঠন, মুখশ্রী ও যোগ্যতা নিয়ে নানান রসিকতা করে। যেখানে দুঃখজনকভাবে নিজের বাবা, মা ও ভাই-বোনদেরও যোগ দিতে দেখা যায়। অভিভাবকেরা ভিকটিমের পক্ষপাতিত্বের পরিবর্তে উত্ত্যক্তকারীর দলেই ভিড় করেন। উল্লেখ করতে গেলে বলা ভালো, নব্বইয়ের দশকে জন্মানো ছেলেমেয়েরা পরিবারের এই নির্মম রূপ দেখেছে বেশ ভালোভাবে। ঠিক একই কারণে বাড়ির মেয়েটি পুরুষ আত্মীয়দের কাছেই প্রথম ‘মলেস্ট’ বা ‘ফিজিক্যালি অ্যাবিউসড’ হয় বা হয়ে আসছে। কারণ, পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের বারবার জানানোর পরও শুধু আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার ভয়ে মেয়েটিকে চুপ করিয়ে দেওয়া হয়। পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের সবার আগে বোঝা প্রয়োজন, কোনটি নীতিগত কাজ ও কোনটি অপরাধ। কারও শারীরিক গঠন বা যোগ্যতা নিয়ে হাসি-ঠাট্টা নীতিগত আচরণের বহির্ভূত। এসব নিয়ে ‘বুলিং’ যারা করে তাদের পোষার কিছু নেই। এদের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠাই একজন আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন মানুষের আচরণ হওয়া উচিত।
ঈদের দিন। দীপাদের বাড়িভর্তি অতিথি। দীপা একটু না, বেশ রোগা বলা চলে। শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ বা ওয়েস্টার্ন—যেমন পোশাকই পরুক না কেন, এই দৈহিক গড়নের জন্য তাকে নিয়ে পরিবার, ক্লাসরুম বা বন্ধুমহলে কম হাসি-ঠাট্টা হয় না। সেদিনও এর ব্যতিক্রম হয়নি। হঠাৎ করেই তার বড় বোনের দেবর ঠাট্টা শুরু করল। গান গেয়ে উঠল: তুমি এত রোগা, এত রোগা…। ডাইনিং টেবিলে বসা সবাই হেসে উঠল। বড় বোন বলে উঠল, ‘এই ফিগারে শাড়ি পরলে ভালো লাগে? কিচ্ছু মানায় না।’ আরেকজন বলল, ‘ছেলেরা এত রোগা মেয়ে পছন্দ করে না। বিয়ের আগেই আরেকটু স্বাস্থ্য বাড়িয়ে নাও।’ একের পর এক ঠাট্টা জমে উঠল। যেখানে জানা গেল দীপা দেখতে বাঁশের মতো, কেউ বলল, দীপা শাড়ি পরলে মনে হয় খুঁটির সঙ্গে কাপড় পেঁচিয়ে রেখেছে। একপর্যায়ে দীপা বলে উঠল, ‘এত বাজেভাবে আমাকে না দেখলেই কি নয়!’ এরপর কথায় কথায় তাকে বলা হলো, সে বেয়াদব। বড় বোন আড়ালে নিয়ে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করল যে, অতিথিদের সঙ্গে ভদ্রভাবে কথা বলতে হয়। দীপা বেয়াদবের মতো আচরণ করেছে। এর শেষ কী হলো বা এমন ঘটনা যখন ঘটে তখন শেষমেশ তা বালিশ ভেজানো পর্যন্ত গড়ায়। আশপাশ থেকে এমন সব নেতিবাচক কথা শুনতে শুনতে একটি মেয়ে হীনম্মন্যতায় ভুগতে থাকে। কমে যায় আত্মবিশ্বাস। আবার যারা এসব গা থেকে ঝেড়ে ফেলে উত্ত্যক্তকারীকে বোঝানোর চেষ্টা করে যে তারা ভুল করছে, তারা দীপার মতোই বেয়াদবের তকমা নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। সবার জ্বলন্ত চোখ তাদের পুড়িয়ে ছাই করে দেয়।
ইন্টারনেট বা ক্লাসরুম বুলিং নিয়ে ইদানীং কথাবার্তা লোকে বলতে শুরু করেছে। মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব ও ভয়াবহতা নিয়ে নানাভাবে সচেতনতাও তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে এখনকার সচেতন নেটিজেনরা। তবে বলতে দ্বিধা নেই, শুধু যদি মেয়েদের কথা বলি, তাহলে এই টিজিং বা বুলিংয়ের ব্যাপারটা শুরু হয় পরিবারের কাছ থেকেই। আমাদের পরিবারের সামনেই আত্মীয়রা শরীর, গঠন, মুখশ্রী ও যোগ্যতা নিয়ে নানান রসিকতা করে। যেখানে দুঃখজনকভাবে নিজের বাবা, মা ও ভাই-বোনদেরও যোগ দিতে দেখা যায়। অভিভাবকেরা ভিকটিমের পক্ষপাতিত্বের পরিবর্তে উত্ত্যক্তকারীর দলেই ভিড় করেন। উল্লেখ করতে গেলে বলা ভালো, নব্বইয়ের দশকে জন্মানো ছেলেমেয়েরা পরিবারের এই নির্মম রূপ দেখেছে বেশ ভালোভাবে। ঠিক একই কারণে বাড়ির মেয়েটি পুরুষ আত্মীয়দের কাছেই প্রথম ‘মলেস্ট’ বা ‘ফিজিক্যালি অ্যাবিউসড’ হয় বা হয়ে আসছে। কারণ, পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের বারবার জানানোর পরও শুধু আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার ভয়ে মেয়েটিকে চুপ করিয়ে দেওয়া হয়। পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের সবার আগে বোঝা প্রয়োজন, কোনটি নীতিগত কাজ ও কোনটি অপরাধ। কারও শারীরিক গঠন বা যোগ্যতা নিয়ে হাসি-ঠাট্টা নীতিগত আচরণের বহির্ভূত। এসব নিয়ে ‘বুলিং’ যারা করে তাদের পোষার কিছু নেই। এদের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠাই একজন আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন মানুষের আচরণ হওয়া উচিত।
এখন রাজনীতির এক গতিময়তার সময়। শেখ হাসিনার ১৫ বছরের গণতন্ত্রহীন কর্তৃত্ববাদী দুর্নীতিপরায়ণ শাসন ছাত্র আন্দোলনে উচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তী শাসনকালে দ্রুততার সঙ্গে নানা রকম রাজনৈতিক কথাবার্তা, চিন্তা-ভাবনা, চেষ্টা-অপচেষ্টা, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার প্রকাশ ঘটছে।
১৬ ঘণ্টা আগেবহু বছর আগে সেই ব্রিটিশ যুগে কাজী নজরুল লিখেছিলেন, ‘ক্ষুধাতুর শিশু চায় না স্বরাজ, চায় দুটো ভাত, একটু নুন।’ আসলে পেটের খিদে নিয়ম, আইন, বিবেক, বিচার কোনো কিছুই মানে না। তাই তো প্রবাদ সৃষ্টি হয়েছে, খিদের জ্বালা বড় জ্বালা। এর থেকে বোধ হয় আর কোনো অসহায়তা নেই। খালি পেটে কেউ তত্ত্ব শুনতে চায় না। কাওয়ালিও ন
১৬ ঘণ্টা আগেতিন বছরের শিশু মুসা মোল্লা ও সাত বছরের রোহান মোল্লা নিষ্পাপ, ফুলের মতো কোমল। কারও সঙ্গে তাদের কোনো স্বার্থের দ্বন্দ্ব থাকার কথা নয়। কিন্তু বাবার চরম নিষ্ঠুরতায় পৃথিবী ছাড়তে হয়েছে তাদের। আহাদ মোল্লা নামের এক ব্যক্তি দুই ছেলেসন্তানকে গলা কেটে হত্যা করার পর নিজের গলায় নিজে ছুরি চালিয়েছেন।
১৬ ঘণ্টা আগেদলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
২ দিন আগে