মো. আরাফাত হোসেন
বর্ষায় ঝরনা হয় রূপী। বৃষ্টির তোড়ে সারা বছরের ক্ষীণ ধারা এ সময় প্রবল হয়ে ওঠে। ঝরনার পাশের গাছপালা হয়ে ওঠে গাঢ় সবুজ। চড়াই-উতরাই পেরিয়ে তাই বর্ষায় এটি থাকতে পারে ভ্রমণতালিকার প্রথম দিকে।
কোথায় আছে ঝরনা
ঝরনা মানেই পাহাড়। তাই এটি দেখতে যাওয়ার এক রোমাঞ্চকর অনুভূতি আছে। আমাদের দেশের সিংহভাগ ঝরনা পার্বত্য এলাকায় অবস্থিত। রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি এলাকায় প্রচুর ঝরনা আর খুম আছে। এ ছাড়া আলীকদম ও রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলায় রয়েছে অপরূপ সব ঝরনা। মোটামুটি হাতে পাঁচ দিন সময় নিয়ে বের হলে দেখা যাবে পাঁচ থেকে সাতটি ঝরনার সৌন্দর্য। সেই সঙ্গে মিলবে অভিযাত্রার রোমাঞ্চ।
আলীকদম
শুরুতেই আসছি আলীকদমের কথায়। এখানে আপনি এক তৈন খালের পাশেই দেখতে পাবেন পাঁচটি ঝরনা। এগুলো হলো থানকোয়াইন, ক্রাতোং, পালংখিয়াং, লাদমেরাগ ও জামরুন। আর যদি চিম্বুক রেঞ্জের দিকে চলে যান তাহলে ক্রিসতং পাহাড়ের শরীর থেকে তিন ধাপে নেমে আসা অনিন্দ্যসুন্দর সাইংপ্রা ঝরনার দেখা পাবেন। থানচি-আলীকদম মহাসড়কের পাশেই পাবেন দামতুয়ার মতো চোখধাঁধানো ঝরনা। এ ছাড়া প্রচুর ঝরনা আছে এই উপজেলার গহিনে।
থানচি-রুমা জোন
থানচি-রুমা জোনে হচ্ছে অপার্থিব সব খুম ও ঝরনা। প্রথমেই বলতে হবে আমিয়াখুমের নাম, যাকে ধরেই নেওয়া হয় বান্দরবানের সব থেকে সুন্দর জায়গা হিসেবে। আর এর সঙ্গে নাম আসবে নাফাখুমের। খুব সহজে ট্রেকিং করে এ দুটি খুম দেখে আসা যায়। এ এলাকায় ঝরনার মধ্যে পাওয়া যাবে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ঝরনা হিসেবে খ্যাত লাংলোক এবং দ্বিতীয় উঁচু ঝরনা বাকলাই। রেমাক্রির পথে পাবেন সইংগং ও লিখিয়াং ঝরনা। এ ছাড়া রয়েছে ঝরনার রানি খ্যাত জাদিপাই। আরও আছে স্বপ্নের ত্লাবং ঝরনা, যা জোড়া বা ক্লিবুং খাম নামেও পরিচিত। পাথুরে খাল রেমাক্রির উৎপত্তি এই ঝরনা থেকে। ত্লাবং একটি বম শব্দ। এর অর্থ ‘পানি ধরে রাখার বেসিন বা গর্ত’। কঠিন ট্রেকিং করতে পারলে দেখা মিলবে তিনাপ সাইতার ঝরনা, যেটি বাংলাদেশের প্রশস্ত ঝরনা হিসেবে পরিচিত। এর অবস্থান রোয়াংছড়ি পাইন্দু খালে। যদি আরও এক্সট্রিম ট্রেক করতে পারেন, তাহলে দেখে আসতে পারবেন তার পি, তার তে, লুং ফের ভা সাইতার, ফাইপি, জিংসিয়াম সাইতার, নাথাম্বা সাইতারসহ রুমা-থানচি সীমানায় অবস্থিত আরও অনেক নজরকাড়া ঝরনা।
রাঙামাটি
রাঙামাটি এলাকায় আছে রিছাং, হাজাছড়া ও শুভলং ঝরনা। একটু ট্রেকিং করতে ভালোবাসলে দেখা যাবে ধুপপানি, গাছকাটা ও মুপ্পোছড়া ঝরনা। মুপ্পোছড়ার একটি মাত্র ঝরনা থাকলেও প্রস্থের দিক থেকে এটি বাংলাদেশের অন্যতম বড় প্রশস্ত ঝরনার দাবিদার। একদম বিলাইছড়ির গহিনে গেলে দেখা পাওয়া যাবে রাইক্ষং ফলস, তুইকুতুমু ও চ্যাদলাং ঝরনা।
চট্টগ্রাম
যাঁরা একদম অল্প ট্রেকিং করতে চান অথবা এক দিনে নিজেদের মতো ঝরনা দেখতে চান, তাঁদের জন্য রয়েছে চট্টগ্রামের মিরসরাই রেঞ্জে অবস্থিত বেশ কিছু ঝরনা এবং ট্রেইল। কমলদহ, নাপিত্তাছড়া, বোয়ালিয়া ঝরনা, হরিণমারা ট্রেইলসহ আরও অনেক ছোট-বড় ঝরনা আছে চট্টগ্রামে। এর মধ্যে খৈয়াছড়া ঝরনা ও এর ঝিরিপথ অন্যতম। খৈয়াছড়া ঝরনায় মোট ৯টি বড় ঝরনার ধাপ তথা ক্যাসকেড রয়েছে। সীতাকুণ্ড রেঞ্জে দেখা যাবে ঝরঝরি ট্রেইল, সোনাইছড়ি ট্রেইল, বাড়বকুণ্ড ট্রেইল, সুপ্তধারা এবং সহস্রধারা ট্রেইল। এসব ট্রেইলে প্রচুর ছোট ঝরনা আছে। একদম সহজে ট্রেকিং করে ঘুরে আসতে পারবেন এই ঝরনা ও ঝিরিগুলো।
সিলেট
শুধু যে আমাদের পার্বত্য এলাকায় ঝরনা আছে, এমন নয়। সিলেট বিভাগেও আছে সুন্দর সুন্দর সব ঝরনা। মৌলভীবাজার জেলায় আছে পরি কুণ্ড ঝরনা। একটি প্রাকৃতিক জলাধারা, যেটি স্থানীয় পাহাড় থেকে প্রায় ১২০ ফুট নিচে পতিত হয়। এর কাছেই আছে সুপরিচিত মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত।
আর যে ঝরনার কথা না বললেই নয়, যেটি সবার প্রিয় গন্তব্য, তার নাম হাম হাম জলপ্রপাত বা চিতা ঝরনা। রাজকান্দি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গভীরে কুরমা বন বিট এলাকায় অবস্থিত এই জলপ্রপাত দেখতে বর্ষাকালে হাজারো মানুষ ভিড় করে। আরও আছে সিলেট শহর থেকে ৬২ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে ভারতের মেঘালয় সীমান্ত ঘেঁষে খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত বিখ্যাত সংগ্রামপুঞ্জি জলপ্রপাত। পাহাড়, জলপ্রপাত ও নদীর সম্মিলনে এটি অনিন্দ্যসুন্দর পর্যটন গন্তব্য।
হাতে সময় থাকলে বেরিয়ে পড়ুন এই বর্ষায়, বন্ধুবান্ধব কিংবা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। আমাদের দেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় এসব ঝরনা, ঝিরি ও ক্যাসকেডের রূপ বিমোহিত করবে আপনাকে।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা, বেঙ্গল ট্রেকার্স
বর্ষায় ঝরনা হয় রূপী। বৃষ্টির তোড়ে সারা বছরের ক্ষীণ ধারা এ সময় প্রবল হয়ে ওঠে। ঝরনার পাশের গাছপালা হয়ে ওঠে গাঢ় সবুজ। চড়াই-উতরাই পেরিয়ে তাই বর্ষায় এটি থাকতে পারে ভ্রমণতালিকার প্রথম দিকে।
কোথায় আছে ঝরনা
ঝরনা মানেই পাহাড়। তাই এটি দেখতে যাওয়ার এক রোমাঞ্চকর অনুভূতি আছে। আমাদের দেশের সিংহভাগ ঝরনা পার্বত্য এলাকায় অবস্থিত। রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি এলাকায় প্রচুর ঝরনা আর খুম আছে। এ ছাড়া আলীকদম ও রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলায় রয়েছে অপরূপ সব ঝরনা। মোটামুটি হাতে পাঁচ দিন সময় নিয়ে বের হলে দেখা যাবে পাঁচ থেকে সাতটি ঝরনার সৌন্দর্য। সেই সঙ্গে মিলবে অভিযাত্রার রোমাঞ্চ।
আলীকদম
শুরুতেই আসছি আলীকদমের কথায়। এখানে আপনি এক তৈন খালের পাশেই দেখতে পাবেন পাঁচটি ঝরনা। এগুলো হলো থানকোয়াইন, ক্রাতোং, পালংখিয়াং, লাদমেরাগ ও জামরুন। আর যদি চিম্বুক রেঞ্জের দিকে চলে যান তাহলে ক্রিসতং পাহাড়ের শরীর থেকে তিন ধাপে নেমে আসা অনিন্দ্যসুন্দর সাইংপ্রা ঝরনার দেখা পাবেন। থানচি-আলীকদম মহাসড়কের পাশেই পাবেন দামতুয়ার মতো চোখধাঁধানো ঝরনা। এ ছাড়া প্রচুর ঝরনা আছে এই উপজেলার গহিনে।
থানচি-রুমা জোন
থানচি-রুমা জোনে হচ্ছে অপার্থিব সব খুম ও ঝরনা। প্রথমেই বলতে হবে আমিয়াখুমের নাম, যাকে ধরেই নেওয়া হয় বান্দরবানের সব থেকে সুন্দর জায়গা হিসেবে। আর এর সঙ্গে নাম আসবে নাফাখুমের। খুব সহজে ট্রেকিং করে এ দুটি খুম দেখে আসা যায়। এ এলাকায় ঝরনার মধ্যে পাওয়া যাবে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ঝরনা হিসেবে খ্যাত লাংলোক এবং দ্বিতীয় উঁচু ঝরনা বাকলাই। রেমাক্রির পথে পাবেন সইংগং ও লিখিয়াং ঝরনা। এ ছাড়া রয়েছে ঝরনার রানি খ্যাত জাদিপাই। আরও আছে স্বপ্নের ত্লাবং ঝরনা, যা জোড়া বা ক্লিবুং খাম নামেও পরিচিত। পাথুরে খাল রেমাক্রির উৎপত্তি এই ঝরনা থেকে। ত্লাবং একটি বম শব্দ। এর অর্থ ‘পানি ধরে রাখার বেসিন বা গর্ত’। কঠিন ট্রেকিং করতে পারলে দেখা মিলবে তিনাপ সাইতার ঝরনা, যেটি বাংলাদেশের প্রশস্ত ঝরনা হিসেবে পরিচিত। এর অবস্থান রোয়াংছড়ি পাইন্দু খালে। যদি আরও এক্সট্রিম ট্রেক করতে পারেন, তাহলে দেখে আসতে পারবেন তার পি, তার তে, লুং ফের ভা সাইতার, ফাইপি, জিংসিয়াম সাইতার, নাথাম্বা সাইতারসহ রুমা-থানচি সীমানায় অবস্থিত আরও অনেক নজরকাড়া ঝরনা।
রাঙামাটি
রাঙামাটি এলাকায় আছে রিছাং, হাজাছড়া ও শুভলং ঝরনা। একটু ট্রেকিং করতে ভালোবাসলে দেখা যাবে ধুপপানি, গাছকাটা ও মুপ্পোছড়া ঝরনা। মুপ্পোছড়ার একটি মাত্র ঝরনা থাকলেও প্রস্থের দিক থেকে এটি বাংলাদেশের অন্যতম বড় প্রশস্ত ঝরনার দাবিদার। একদম বিলাইছড়ির গহিনে গেলে দেখা পাওয়া যাবে রাইক্ষং ফলস, তুইকুতুমু ও চ্যাদলাং ঝরনা।
চট্টগ্রাম
যাঁরা একদম অল্প ট্রেকিং করতে চান অথবা এক দিনে নিজেদের মতো ঝরনা দেখতে চান, তাঁদের জন্য রয়েছে চট্টগ্রামের মিরসরাই রেঞ্জে অবস্থিত বেশ কিছু ঝরনা এবং ট্রেইল। কমলদহ, নাপিত্তাছড়া, বোয়ালিয়া ঝরনা, হরিণমারা ট্রেইলসহ আরও অনেক ছোট-বড় ঝরনা আছে চট্টগ্রামে। এর মধ্যে খৈয়াছড়া ঝরনা ও এর ঝিরিপথ অন্যতম। খৈয়াছড়া ঝরনায় মোট ৯টি বড় ঝরনার ধাপ তথা ক্যাসকেড রয়েছে। সীতাকুণ্ড রেঞ্জে দেখা যাবে ঝরঝরি ট্রেইল, সোনাইছড়ি ট্রেইল, বাড়বকুণ্ড ট্রেইল, সুপ্তধারা এবং সহস্রধারা ট্রেইল। এসব ট্রেইলে প্রচুর ছোট ঝরনা আছে। একদম সহজে ট্রেকিং করে ঘুরে আসতে পারবেন এই ঝরনা ও ঝিরিগুলো।
সিলেট
শুধু যে আমাদের পার্বত্য এলাকায় ঝরনা আছে, এমন নয়। সিলেট বিভাগেও আছে সুন্দর সুন্দর সব ঝরনা। মৌলভীবাজার জেলায় আছে পরি কুণ্ড ঝরনা। একটি প্রাকৃতিক জলাধারা, যেটি স্থানীয় পাহাড় থেকে প্রায় ১২০ ফুট নিচে পতিত হয়। এর কাছেই আছে সুপরিচিত মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত।
আর যে ঝরনার কথা না বললেই নয়, যেটি সবার প্রিয় গন্তব্য, তার নাম হাম হাম জলপ্রপাত বা চিতা ঝরনা। রাজকান্দি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গভীরে কুরমা বন বিট এলাকায় অবস্থিত এই জলপ্রপাত দেখতে বর্ষাকালে হাজারো মানুষ ভিড় করে। আরও আছে সিলেট শহর থেকে ৬২ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে ভারতের মেঘালয় সীমান্ত ঘেঁষে খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত বিখ্যাত সংগ্রামপুঞ্জি জলপ্রপাত। পাহাড়, জলপ্রপাত ও নদীর সম্মিলনে এটি অনিন্দ্যসুন্দর পর্যটন গন্তব্য।
হাতে সময় থাকলে বেরিয়ে পড়ুন এই বর্ষায়, বন্ধুবান্ধব কিংবা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। আমাদের দেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় এসব ঝরনা, ঝিরি ও ক্যাসকেডের রূপ বিমোহিত করবে আপনাকে।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা, বেঙ্গল ট্রেকার্স
দিগন্তবিস্তৃত ধানখেতের মাথার ওপর নীল আকাশে উঁকি দেবে সাদা মেঘ। শরৎকাল বলে ভুল হতে পারে। ভুল ভাঙলে দেখতে পাবেন, মেঘের ভেলা সূর্যের আলোয় ক্ষণে ক্ষণে রং বদলে হয়ে উঠছে গোলাপি কিংবা লাল। বুঝবেন, আপনি শরতের সাদা মেঘ নয়, দেখছেন তুষারে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা।
২ দিন আগেকোনো কিছু ওপর থেকে নিচে পড়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে। স্কুলের পদার্থবিজ্ঞান বইয়ে আমরা সবাই এ বিষয়ে পড়েছি। কিন্তু এমন কিছু জায়গা আছে, যেগুলোতে স্যার আইজ্যাক নিউটনের সূত্র কাজ করে না। অর্থাৎ সেসব জায়গায় কোনো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই। যেতে চান সেই সব জায়গায়?
২ দিন আগেশীত, বসন্ত আর বর্ষায় বাংলার নীল নদ সারির রূপ বদলে ফেলে। বর্ষায় পাহাড়ি ঢল নামলে দক্ষ মাঝিরাও ভয়ে ভয়ে বইঠা চালান। আর শীতে সারি নদীর নীল পানি দেয় অপার্থিব জগতের খোঁজ। নদীটি ধরে কিছুদূর উজান বাইলেই পাওয়া যাবে লালাখাল জিরো পয়েন্ট।
২ দিন আগেভ্রমণকালে রোগবালাই থেকে দূরে থাকার বিকল্প নেই। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী না হলে ভ্রমণের আনন্দ মাঠে মারা যেতে পারে। ভ্রমণের সময় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বেছে নিতে পারেন কিছু উপায়।
২ দিন আগে