মো. ইকবাল হোসেন
বন্যার সময় তো বটেই, পরবর্তী সময়েও আক্রান্ত এলাকার বাসিন্দাদের শারীরিকভাবে সুস্থ থাকা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। ফলে এ সময়ে জীবনযাপনে আনতে হয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন।
বন্যা-পরবর্তী সময়ে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ অনেক বেড়ে যায়। তাই সবার আগে বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। বন্যায় নিরাপদ পানির অভাবে অনেকেই পান এবং দৈনন্দিন কাজে অনিরাপদ পানি ব্যবহার করতে বাধ্য হয়। এই দূষিত পানি পানের ফলে পানিবাহিত রোগ, যেমন ডায়রিয়া, কলেরা, টাইফয়েড কিংবা হেপাটাইটিসের সংক্রমণ বেড়ে যায়। এগুলো থেকে মুক্ত থাকতে বিশুদ্ধ পানি পানের বিকল্প নেই।
বিশুদ্ধ পানির উৎস না থাকলে পানি ফুটিয়ে ঠান্ডা করে পান করতে হবে। কিংবা পানি বিশুদ্ধ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের পিউরিফায়ার ব্যবহার করা যায়। এতে পানিবাহিত রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
বন্যার পর বাড়ির আশপাশে পানি জমে থাকে। এই পানি মশার বংশ বিস্তারে ভূমিকা রাখে। ফলে ডেঙ্গু বা ম্যালেরিয়ার মতো মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। তাই প্রয়োজনে দিনে-রাতে মশারি ব্যবহার করতে হবে। প্রয়োজনে পুরো শরীর ঢেকে রাখা যায় এমন পোশাক পরতে হবে। বেশ কিছু গন্ধের প্রতি আকৃষ্ট হলেও কিছু সুগন্ধ একেবারেই সহ্য করতে পারে না এ প্রাণীটি। এসবের মধ্যে আছে ল্যাভেন্ডার, ইউক্যালিপটাস, লেমন গ্রাস এবং পেপারমিন্টের গন্ধ। শোয়ার ঘরের চারদিকে এসব উদ্ভিদের সুগন্ধযুক্ত তেল হালকা করে ছিটিয়ে দেওয়া যায়; কিংবা সরাসরি ত্বকেও মাখা যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের মসকুইটো রিপেলেন্টও ব্যবহার করতে পারেন মশা তাড়াতে।
গন্ধের মতো কিছু কিছু রংও মশা সহ্য করতে পারে না। নীল, বেগুনি, সবুজ ও সাদার মতো উজ্জ্বল রং থেকে মশা দূরে থাকে। তাই শোয়ার ঘরের দেয়াল, বিছানার চাদর ও বালিশের কভারের রঙের ক্ষেত্রেও মশার অপছন্দের রংগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে।
ঘরবাড়ি স্যাঁতসেঁতে হওয়ার কারণে ত্বকে ছত্রাকজাতীয় সংক্রমণ বেড়ে যায়। ঘনবসতি হলে এর সংক্রমণ একজন থেকে অন্যজনের শরীরে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এটি রোধে ছোট-বড় সবারই পাতলা ও ঢিলেঢালা আরামদায়ক পোশাক পরা উচিত। শরীর শুকনো থাকলে ছত্রাকজনিত চর্মরোগ থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।
শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে হলে সবার আগে সুষম খাবার নিশ্চিত করতে হবে। এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হবে। বন্যাদুর্গত এলাকায় খাবার সংরক্ষণ ও রান্নার সুবিধা খুবই অপ্রতুল থাকে। তাই এমন খাবার বাছাই করতে হবে, যা সহজে পচনশীল নয় এবং রান্না না করে খাওয়া যায়।
সবার আগে শিশুদের নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে। ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে হবে, যাতে তারা খেলাধুলা করে আতঙ্ক দূর করতে পারে। প্রতিবার সুষম খাবার নিশ্চিত করতে হবে। স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি কিছু বাড়তি খাবার রাখতে হবে শিশুদের জন্য।
এক থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের খাবার হিসেবে আলট্রা হাই টেম্পারেচার (ইউএইচটি) তরল দুধ দেওয়া যেতে পারে। দুধ একটি আদর্শ খাবার, যা শরীরের প্রায় সব ধরনের পুষ্টির চাহিদা পূরণে সক্ষম। দুধের পরিবর্তে দুধের তৈরি খাবার দেওয়া যায়। প্রতিদিনের খাবারে একটু পিনাট বাটার রাখলে প্রোটিনের চাহিদার পাশাপাশি অন্যান্য পুষ্টির ঘাটতিও পূরণ হবে। ফল হিসেবে কমলা, মালটা ও কলা দেওয়া যায়। এর ভিটামিন সি পানিবাহিত রোগের বিরুদ্ধে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করবে।
কিশোর ও পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য স্বাভাবিকের পাশাপাশি কিছু বাড়তি খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ ও ফল, যেমন বাদাম, আপেল, খেজুর, খুরমা, আমড়া, আমলকী, জাম্বুরা, কলা রাখা যেতে পারে। এসব ফল সংরক্ষণ ছাড়াই কয়েক দিন ভালো থাকে। এসব ফল সব ধরনের ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদা পূরণ করবে।
এ ছাড়া সব শ্রেণির মানুষের জন্য সুষম খাবার হিসেবে সবজিখিচুড়ি রাখা যেতে পারে। মৌসুমে যেসব সবজি পাওয়া যায়, সেগুলো দিয়েই রান্না করা যাবে এই সুষম খাবার। এই খাবার সব বয়সী মানুষের পুষ্টির চাহিদা প্রায় শতভাগ পূরণ করবে। পরিস্থিতি যদি অনুকূলে থাকে, তাহলে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন প্রথম শ্রেণির প্রোটিন, অর্থাৎ মাছ, মাংস, ডিমযুক্ত খাবার খেতে হবে।
গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৫০০ মিলিলিটার দুধ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
লেখক: মো. ইকবাল হোসেন, জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল
বন্যার সময় তো বটেই, পরবর্তী সময়েও আক্রান্ত এলাকার বাসিন্দাদের শারীরিকভাবে সুস্থ থাকা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। ফলে এ সময়ে জীবনযাপনে আনতে হয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন।
বন্যা-পরবর্তী সময়ে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ অনেক বেড়ে যায়। তাই সবার আগে বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। বন্যায় নিরাপদ পানির অভাবে অনেকেই পান এবং দৈনন্দিন কাজে অনিরাপদ পানি ব্যবহার করতে বাধ্য হয়। এই দূষিত পানি পানের ফলে পানিবাহিত রোগ, যেমন ডায়রিয়া, কলেরা, টাইফয়েড কিংবা হেপাটাইটিসের সংক্রমণ বেড়ে যায়। এগুলো থেকে মুক্ত থাকতে বিশুদ্ধ পানি পানের বিকল্প নেই।
বিশুদ্ধ পানির উৎস না থাকলে পানি ফুটিয়ে ঠান্ডা করে পান করতে হবে। কিংবা পানি বিশুদ্ধ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের পিউরিফায়ার ব্যবহার করা যায়। এতে পানিবাহিত রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
বন্যার পর বাড়ির আশপাশে পানি জমে থাকে। এই পানি মশার বংশ বিস্তারে ভূমিকা রাখে। ফলে ডেঙ্গু বা ম্যালেরিয়ার মতো মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। তাই প্রয়োজনে দিনে-রাতে মশারি ব্যবহার করতে হবে। প্রয়োজনে পুরো শরীর ঢেকে রাখা যায় এমন পোশাক পরতে হবে। বেশ কিছু গন্ধের প্রতি আকৃষ্ট হলেও কিছু সুগন্ধ একেবারেই সহ্য করতে পারে না এ প্রাণীটি। এসবের মধ্যে আছে ল্যাভেন্ডার, ইউক্যালিপটাস, লেমন গ্রাস এবং পেপারমিন্টের গন্ধ। শোয়ার ঘরের চারদিকে এসব উদ্ভিদের সুগন্ধযুক্ত তেল হালকা করে ছিটিয়ে দেওয়া যায়; কিংবা সরাসরি ত্বকেও মাখা যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের মসকুইটো রিপেলেন্টও ব্যবহার করতে পারেন মশা তাড়াতে।
গন্ধের মতো কিছু কিছু রংও মশা সহ্য করতে পারে না। নীল, বেগুনি, সবুজ ও সাদার মতো উজ্জ্বল রং থেকে মশা দূরে থাকে। তাই শোয়ার ঘরের দেয়াল, বিছানার চাদর ও বালিশের কভারের রঙের ক্ষেত্রেও মশার অপছন্দের রংগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে।
ঘরবাড়ি স্যাঁতসেঁতে হওয়ার কারণে ত্বকে ছত্রাকজাতীয় সংক্রমণ বেড়ে যায়। ঘনবসতি হলে এর সংক্রমণ একজন থেকে অন্যজনের শরীরে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এটি রোধে ছোট-বড় সবারই পাতলা ও ঢিলেঢালা আরামদায়ক পোশাক পরা উচিত। শরীর শুকনো থাকলে ছত্রাকজনিত চর্মরোগ থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।
শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে হলে সবার আগে সুষম খাবার নিশ্চিত করতে হবে। এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হবে। বন্যাদুর্গত এলাকায় খাবার সংরক্ষণ ও রান্নার সুবিধা খুবই অপ্রতুল থাকে। তাই এমন খাবার বাছাই করতে হবে, যা সহজে পচনশীল নয় এবং রান্না না করে খাওয়া যায়।
সবার আগে শিশুদের নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে। ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে হবে, যাতে তারা খেলাধুলা করে আতঙ্ক দূর করতে পারে। প্রতিবার সুষম খাবার নিশ্চিত করতে হবে। স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি কিছু বাড়তি খাবার রাখতে হবে শিশুদের জন্য।
এক থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের খাবার হিসেবে আলট্রা হাই টেম্পারেচার (ইউএইচটি) তরল দুধ দেওয়া যেতে পারে। দুধ একটি আদর্শ খাবার, যা শরীরের প্রায় সব ধরনের পুষ্টির চাহিদা পূরণে সক্ষম। দুধের পরিবর্তে দুধের তৈরি খাবার দেওয়া যায়। প্রতিদিনের খাবারে একটু পিনাট বাটার রাখলে প্রোটিনের চাহিদার পাশাপাশি অন্যান্য পুষ্টির ঘাটতিও পূরণ হবে। ফল হিসেবে কমলা, মালটা ও কলা দেওয়া যায়। এর ভিটামিন সি পানিবাহিত রোগের বিরুদ্ধে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করবে।
কিশোর ও পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য স্বাভাবিকের পাশাপাশি কিছু বাড়তি খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ ও ফল, যেমন বাদাম, আপেল, খেজুর, খুরমা, আমড়া, আমলকী, জাম্বুরা, কলা রাখা যেতে পারে। এসব ফল সংরক্ষণ ছাড়াই কয়েক দিন ভালো থাকে। এসব ফল সব ধরনের ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদা পূরণ করবে।
এ ছাড়া সব শ্রেণির মানুষের জন্য সুষম খাবার হিসেবে সবজিখিচুড়ি রাখা যেতে পারে। মৌসুমে যেসব সবজি পাওয়া যায়, সেগুলো দিয়েই রান্না করা যাবে এই সুষম খাবার। এই খাবার সব বয়সী মানুষের পুষ্টির চাহিদা প্রায় শতভাগ পূরণ করবে। পরিস্থিতি যদি অনুকূলে থাকে, তাহলে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন প্রথম শ্রেণির প্রোটিন, অর্থাৎ মাছ, মাংস, ডিমযুক্ত খাবার খেতে হবে।
গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৫০০ মিলিলিটার দুধ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
লেখক: মো. ইকবাল হোসেন, জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল
খাবার মজাদার করতে আমরা সাধারণভাবে তেল-মসলার খুব বাড়াবাড়ি করে ফেলি। সেখান থেকে বাদ যায় না পেঁয়াজ কিংবা রসুন। পেঁয়াজকে কায়দা করে সরিয়ে রাখলেও খাবার মজাদার হতে পারে। তেমনই কিছু রেসিপি...
১১ ঘণ্টা আগেবাংলা অঞ্চলে মিষ্টিজাতীয় প্রাচীন খাবারগুলোর মধ্যে সন্দেশের নাম আছে একেবারে প্রথম দিকে। সব মিষ্টির কিছু না কিছু বদল হলেও, এর বদল হয়েছে খুবই কম। যশোরের নলেন গুড়ের সন্দেশ, মানিকগঞ্জ বা নাগরপুরের প্যারা সন্দেশ, পাবনার মাছের পেটি সন্দেশ ইত্যাদি কে না খেতে পছন্দ করে!
১২ ঘণ্টা আগেজীবনানন্দ দাশের কবিতায় ঘুরেফিরে এসেছে দারুচিনি দ্বীপের কথা, তার রহস্যময় শ্যামলিমার কথা, সেই সবুজের গহিনে দিকহারা নাবিকের আশ্রয়-আকাঙ্ক্ষার কথা। এই দারুচিনি দ্বীপ কি আসলে কোনো সমুদ্রঘেরা ভূখণ্ড, নাকি বনলতা সেন নিজেই, তা নিয়ে কবিরা বিতর্ক করুক। আমরা বরং এই দ্বীপের তত্ত্বতালাশ করি।
১২ ঘণ্টা আগে‘প্রসেসেস’-এ প্রকাশিত এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ভাতের মাড় ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য একটি হজমযোগ্য স্বাস্থ্যকর পানীয় হিসেবে কাজ করে। এমনকি এটি ওজন কমাতে পারে।
১২ ঘণ্টা আগে