সানজিদা সামরিন, ঢাকা
তরুণ ডিজাইনার ফারদিন বায়জিদের সঙ্গে তখন আড্ডা জমে উঠেছে। ফ্যাশনের ভবিষ্যৎ, পরিবেশবান্ধব রঙের ব্যবহার ইত্যাদি বিষয়ে কথার ফাঁকে তিনি নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানালেন। কোভিড-১৯-এর থমকে যাওয়া সময়ে তিনি ঘরে বসে ফেলে দেওয়া প্রাকৃতিক উপাদান থেকে রং তৈরি করার চেষ্টা করছিলেন। খুঁজছিলেন সহজ ও সস্তায় প্রাকৃতিক রঙের সম্ভাব্য উৎস।
স্টুডিও ভেলভেটের সহপ্রতিষ্ঠাতা, ডিজাইনার ও ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর ফারদিন বয়সে তরুণ হলেও ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিয়ে গেছেন নিজেকে। কাজ করছেন দেশের বিখ্যাত হাউস ও মডেলদের সঙ্গে। ফলে সাসটেইনেবল ডিজাইন নিয়ে বেশ সতর্ক তিনি।
ফ্যাশনে দূষণ
ফাস্ট ফ্যাশনের রমরমা যুগে আমাদের পরিধেয় পোশাক তৈরিতে যে উপকরণ ও রং ব্যবহার করা হয়, সেগুলো পরিবেশদূষণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। রঙের বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান বাতাস দূষিত করে। এসব রাসায়নিক মিশ্রিত পানি মাটি, উন্মুক্ত জলাশয়ের পানি, উদ্ভিদ ও প্রাণীর জন্য হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। ফলে বিশ্বজুড়ে পরিবেশবান্ধব ফ্যাশন নিয়ে কথা ও কাজ শুরু হয়েছে অনেক দিন আগে। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আমাদের দেশে কাজ করছেন ফারদিন বায়জিদ। প্রতিদিনের ব্যবহার্য প্রাকৃতিক উপাদান থেকে রঙের উৎস খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন তিনি।
প্রাকৃতিক রঙের নিরীক্ষা
২০২০ সালে লকডাউন শুরু হওয়ার কিছুদিন আগে ফারদিন সিলেটের এক চায়ের কারখানা দেখতে গিয়েছিলেন। দেখেছিলেন, চা তৈরির সময় ঝরে পড়া গুঁড়ার পুরোটাই নষ্ট হয়। ফারদিন সেগুলো সংগ্রহ করে রং তৈরি করে হাফ সিল্ক ও সুতি কাপড়ে ব্যবহার করেন। ফলাফল হয় দারুণ। শুধু চা-পাতা নয়, গোলাপের পাপড়ি ও অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদান থেকে রং তৈরি করেও কিছু পোশাকে ব্যবহার করেন তিনি। প্রথম পর্যায় শেষে এখন দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষায় পাস করার রাস্তায় আছে সেগুলো। ফারদিন ইতিমধ্যে চা-পাতা, খয়েরগাছের বাকল, লোহায় পড়া মরচে, গোলাপের পাপড়ি, কলার খোসা, আঙুরের সবুজ খোসাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান থেকে রং তৈরি করে সেগুলো সুতি ও সিনথেটিক কাপড়ে ব্যবহার করেছেন।
টেকসই ফ্যাশনের অংশ হিসেবে প্রাকৃতিক রঙের উৎসকে ব্যবহারের পক্ষে ফারদিন। জানালেন, এ ক্ষেত্রে ক্রেতাদের আগ্রহ থাকতে হবে পরিবেশবান্ধব রঙে রাঙানো কাপড় পরার বিষয়ে।
কাপড়ে পরিবেশবান্ধব রং
সাধারণত সুতি, লিনেন, হাফ সিল্ক, সিল্ক, তাঁত ইত্যাদি কাপড়ে ভেষজ রঙের ব্যবহার দেখা যায়। কিছুদিন আগেও শাড়ি, ওড়না আর গজ কাপড়ে ভেষজ রঙের ব্যবহার বেশি হতো। রঙের ক্ষেত্রে নীল, খয়েরি আর বাদামিই চোখে পড়ত বেশি। দাম দিয়ে এসব কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতার সংখ্যাও ছিল নির্দিষ্ট। তবে চিত্রটা কিছুটা হলেও বদলেছে। ক্রেতাদের অনেকে এখন পরিবেশসচেতন। পোশাকের সর্বোচ্চ ব্যবহারের ক্ষেত্রেও সচেতনতা এসেছে। তাই পরিবেশবাদী ডিজাইনাররা এখন প্রাকৃতিক রং ব্যবহার করে ব্লাউজ, সালোয়ার-কামিজ, স্কার্ট, স্কার্ফ, কুর্তি, কটি, টপ, শার্ট, টি-শার্ট, ফতুয়াসহ বেডশিট, কুশন কভার, বালিশের কভারের মতো গৃহস্থালি সামগ্রী, গয়না, ব্যাগ ইত্যাদি তৈরি করছেন। রঙের ক্ষেত্রেও এসেছে বৈচিত্র্য। পাওয়া যাচ্ছে লাল, খয়েরি, ছাই, সোনালি, খাকি, জলপাই ইত্যাদি রং। টাইডাই, শিবোরি, প্যাচওয়ার্ক, বাটিক ইত্যাদি নকশার কাজ হচ্ছে ভেষজ রঙের পোশাকে। এর সঙ্গে কাঠ, মেটাল বা কাপড়ের বোতাম, কড়ি, লেস কিংবা এমব্রয়ডারি যোগ করে দেওয়া হচ্ছে ভিন্ন মাত্রা।
বিভিন্ন রং
খয়েরগাছের কাঠের কষ থেকে মেরুন বা খয়েরি, শিউলি ফুল ও কাঁঠাল কাঠের ভুসি থেকে হালকা হলুদ, লটকনবীজ থেকে কমলা, ডালিমের খোসা থেকে অলিভ এবং গাব ফল থেকে গোলাপি ও ছাই রং তৈরি হয়। গাঁদা ফুলের পাপড়ি ও শিল কড়ই কাঠের ভুসি, মেহেদিপাতা ও পেঁয়াজের খোসা থেকে গাঢ় সোনালি এবং হরীতকীগাছের ছাল থেকে অ্যাশ বা ছাই রং পাওয়া যায়। এ ছাড়া অর্জুন, গরান, সুন্দরী ও ঝাউগাছের ছাল, সুপারি ও এলাচিপাতা থেকে গোলাপি; কৃষ্ণচূড়া, তুলসীপাতা, লেবুপাতা থেকে হালকা সবুজ এবং গর্জন কাঠের ভুসি, বাবলাগাছের ছাল ও চা-পাতা থেকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় হালকা বাদামি রং তৈরি করা সম্ভব।
যত্ন হবে যত্ন নিয়ে
ভেষজ রঙের কাপড় অন্য কাপড়ের সঙ্গে ধোয়া উচিত নয়। কাপড় ধোয়ার আগে তার এক কোনা নিয়ে পরীক্ষা করে দেখতে হবে রং ওঠে কি না। যদি ওঠে, তাহলে পানিতে শ্যাম্পু দিয়ে সামান্য লবণ মিশিয়ে কাপড় পরিষ্কার করুন। কেনার সময় কাপড়ের লেবেলে ধোয়া ও সংরক্ষণের নির্দেশনা পড়ে নিন। কাপড়ের উজ্জ্বলতা অটুট রাখতে ধোয়ার পর ভিনেগার মেশানো পানিতে ডুবিয়ে হালকা চিপে নরম রোদে উল্টো করে মেলে শুকাতে দিতে হবে। প্রাকৃতিক রং করা কাপড় ঘন ঘন ধোয়া ও ড্রাই ওয়াশ করা যাবে না।
তরুণ ডিজাইনার ফারদিন বায়জিদের সঙ্গে তখন আড্ডা জমে উঠেছে। ফ্যাশনের ভবিষ্যৎ, পরিবেশবান্ধব রঙের ব্যবহার ইত্যাদি বিষয়ে কথার ফাঁকে তিনি নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানালেন। কোভিড-১৯-এর থমকে যাওয়া সময়ে তিনি ঘরে বসে ফেলে দেওয়া প্রাকৃতিক উপাদান থেকে রং তৈরি করার চেষ্টা করছিলেন। খুঁজছিলেন সহজ ও সস্তায় প্রাকৃতিক রঙের সম্ভাব্য উৎস।
স্টুডিও ভেলভেটের সহপ্রতিষ্ঠাতা, ডিজাইনার ও ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর ফারদিন বয়সে তরুণ হলেও ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিয়ে গেছেন নিজেকে। কাজ করছেন দেশের বিখ্যাত হাউস ও মডেলদের সঙ্গে। ফলে সাসটেইনেবল ডিজাইন নিয়ে বেশ সতর্ক তিনি।
ফ্যাশনে দূষণ
ফাস্ট ফ্যাশনের রমরমা যুগে আমাদের পরিধেয় পোশাক তৈরিতে যে উপকরণ ও রং ব্যবহার করা হয়, সেগুলো পরিবেশদূষণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। রঙের বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান বাতাস দূষিত করে। এসব রাসায়নিক মিশ্রিত পানি মাটি, উন্মুক্ত জলাশয়ের পানি, উদ্ভিদ ও প্রাণীর জন্য হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। ফলে বিশ্বজুড়ে পরিবেশবান্ধব ফ্যাশন নিয়ে কথা ও কাজ শুরু হয়েছে অনেক দিন আগে। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আমাদের দেশে কাজ করছেন ফারদিন বায়জিদ। প্রতিদিনের ব্যবহার্য প্রাকৃতিক উপাদান থেকে রঙের উৎস খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন তিনি।
প্রাকৃতিক রঙের নিরীক্ষা
২০২০ সালে লকডাউন শুরু হওয়ার কিছুদিন আগে ফারদিন সিলেটের এক চায়ের কারখানা দেখতে গিয়েছিলেন। দেখেছিলেন, চা তৈরির সময় ঝরে পড়া গুঁড়ার পুরোটাই নষ্ট হয়। ফারদিন সেগুলো সংগ্রহ করে রং তৈরি করে হাফ সিল্ক ও সুতি কাপড়ে ব্যবহার করেন। ফলাফল হয় দারুণ। শুধু চা-পাতা নয়, গোলাপের পাপড়ি ও অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদান থেকে রং তৈরি করেও কিছু পোশাকে ব্যবহার করেন তিনি। প্রথম পর্যায় শেষে এখন দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষায় পাস করার রাস্তায় আছে সেগুলো। ফারদিন ইতিমধ্যে চা-পাতা, খয়েরগাছের বাকল, লোহায় পড়া মরচে, গোলাপের পাপড়ি, কলার খোসা, আঙুরের সবুজ খোসাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান থেকে রং তৈরি করে সেগুলো সুতি ও সিনথেটিক কাপড়ে ব্যবহার করেছেন।
টেকসই ফ্যাশনের অংশ হিসেবে প্রাকৃতিক রঙের উৎসকে ব্যবহারের পক্ষে ফারদিন। জানালেন, এ ক্ষেত্রে ক্রেতাদের আগ্রহ থাকতে হবে পরিবেশবান্ধব রঙে রাঙানো কাপড় পরার বিষয়ে।
কাপড়ে পরিবেশবান্ধব রং
সাধারণত সুতি, লিনেন, হাফ সিল্ক, সিল্ক, তাঁত ইত্যাদি কাপড়ে ভেষজ রঙের ব্যবহার দেখা যায়। কিছুদিন আগেও শাড়ি, ওড়না আর গজ কাপড়ে ভেষজ রঙের ব্যবহার বেশি হতো। রঙের ক্ষেত্রে নীল, খয়েরি আর বাদামিই চোখে পড়ত বেশি। দাম দিয়ে এসব কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতার সংখ্যাও ছিল নির্দিষ্ট। তবে চিত্রটা কিছুটা হলেও বদলেছে। ক্রেতাদের অনেকে এখন পরিবেশসচেতন। পোশাকের সর্বোচ্চ ব্যবহারের ক্ষেত্রেও সচেতনতা এসেছে। তাই পরিবেশবাদী ডিজাইনাররা এখন প্রাকৃতিক রং ব্যবহার করে ব্লাউজ, সালোয়ার-কামিজ, স্কার্ট, স্কার্ফ, কুর্তি, কটি, টপ, শার্ট, টি-শার্ট, ফতুয়াসহ বেডশিট, কুশন কভার, বালিশের কভারের মতো গৃহস্থালি সামগ্রী, গয়না, ব্যাগ ইত্যাদি তৈরি করছেন। রঙের ক্ষেত্রেও এসেছে বৈচিত্র্য। পাওয়া যাচ্ছে লাল, খয়েরি, ছাই, সোনালি, খাকি, জলপাই ইত্যাদি রং। টাইডাই, শিবোরি, প্যাচওয়ার্ক, বাটিক ইত্যাদি নকশার কাজ হচ্ছে ভেষজ রঙের পোশাকে। এর সঙ্গে কাঠ, মেটাল বা কাপড়ের বোতাম, কড়ি, লেস কিংবা এমব্রয়ডারি যোগ করে দেওয়া হচ্ছে ভিন্ন মাত্রা।
বিভিন্ন রং
খয়েরগাছের কাঠের কষ থেকে মেরুন বা খয়েরি, শিউলি ফুল ও কাঁঠাল কাঠের ভুসি থেকে হালকা হলুদ, লটকনবীজ থেকে কমলা, ডালিমের খোসা থেকে অলিভ এবং গাব ফল থেকে গোলাপি ও ছাই রং তৈরি হয়। গাঁদা ফুলের পাপড়ি ও শিল কড়ই কাঠের ভুসি, মেহেদিপাতা ও পেঁয়াজের খোসা থেকে গাঢ় সোনালি এবং হরীতকীগাছের ছাল থেকে অ্যাশ বা ছাই রং পাওয়া যায়। এ ছাড়া অর্জুন, গরান, সুন্দরী ও ঝাউগাছের ছাল, সুপারি ও এলাচিপাতা থেকে গোলাপি; কৃষ্ণচূড়া, তুলসীপাতা, লেবুপাতা থেকে হালকা সবুজ এবং গর্জন কাঠের ভুসি, বাবলাগাছের ছাল ও চা-পাতা থেকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় হালকা বাদামি রং তৈরি করা সম্ভব।
যত্ন হবে যত্ন নিয়ে
ভেষজ রঙের কাপড় অন্য কাপড়ের সঙ্গে ধোয়া উচিত নয়। কাপড় ধোয়ার আগে তার এক কোনা নিয়ে পরীক্ষা করে দেখতে হবে রং ওঠে কি না। যদি ওঠে, তাহলে পানিতে শ্যাম্পু দিয়ে সামান্য লবণ মিশিয়ে কাপড় পরিষ্কার করুন। কেনার সময় কাপড়ের লেবেলে ধোয়া ও সংরক্ষণের নির্দেশনা পড়ে নিন। কাপড়ের উজ্জ্বলতা অটুট রাখতে ধোয়ার পর ভিনেগার মেশানো পানিতে ডুবিয়ে হালকা চিপে নরম রোদে উল্টো করে মেলে শুকাতে দিতে হবে। প্রাকৃতিক রং করা কাপড় ঘন ঘন ধোয়া ও ড্রাই ওয়াশ করা যাবে না।
দিগন্তবিস্তৃত ধানখেতের মাথার ওপর নীল আকাশে উঁকি দেবে সাদা মেঘ। শরৎকাল বলে ভুল হতে পারে। ভুল ভাঙলে দেখতে পাবেন, মেঘের ভেলা সূর্যের আলোয় ক্ষণে ক্ষণে রং বদলে হয়ে উঠছে গোলাপি কিংবা লাল। বুঝবেন, আপনি শরতের সাদা মেঘ নয়, দেখছেন তুষারে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা।
২ দিন আগেকোনো কিছু ওপর থেকে নিচে পড়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে। স্কুলের পদার্থবিজ্ঞান বইয়ে আমরা সবাই এ বিষয়ে পড়েছি। কিন্তু এমন কিছু জায়গা আছে, যেগুলোতে স্যার আইজ্যাক নিউটনের সূত্র কাজ করে না। অর্থাৎ সেসব জায়গায় কোনো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই। যেতে চান সেই সব জায়গায়?
২ দিন আগেশীত, বসন্ত আর বর্ষায় বাংলার নীল নদ সারির রূপ বদলে ফেলে। বর্ষায় পাহাড়ি ঢল নামলে দক্ষ মাঝিরাও ভয়ে ভয়ে বইঠা চালান। আর শীতে সারি নদীর নীল পানি দেয় অপার্থিব জগতের খোঁজ। নদীটি ধরে কিছুদূর উজান বাইলেই পাওয়া যাবে লালাখাল জিরো পয়েন্ট।
২ দিন আগেভ্রমণকালে রোগবালাই থেকে দূরে থাকার বিকল্প নেই। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী না হলে ভ্রমণের আনন্দ মাঠে মারা যেতে পারে। ভ্রমণের সময় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বেছে নিতে পারেন কিছু উপায়।
২ দিন আগে