সানজিদা কাওছার ঋতু, ঢাকা
দেখলেই শ্বাস বন্ধ হয়ে আসা, হেসে গলিয়ে পড়া, সারা শরীরে বিদ্যুতের ঝলকানি—এর মানে কি আপনি তার ওপর ক্রাশ খেয়েছেন নাকি তাকে শুধুই বন্ধু হিসেবে দেখছেন? নিজের অনুভূতি নিয়ে যদি এমন দ্বিধায় থাকেন তাহলে চিন্তার কোনো কারণ নেই। আপনার এ সমস্যার সম্ভাব্য সমাধান বের করার চেষ্টা করেছে উইকিহাউ। আপনার মনে আলোড়ন সৃষ্টি করা মানুষটি আপনার শুধুই বন্ধু না আরও কিছু, তা জানার জন্য বেশ কয়েকটি উপায় রয়েছে।
ক্রাশ জিনিসটা কী?
আগে জানুন ক্রাশ বিষয়টা আসলে কী। ক্রাশের সংজ্ঞায় আরবান ডিকশনারি বলছে, আকর্ষণীয় ও অনেক বিশেষ মনে হয় এমন কারো সঙ্গ পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা হলো ক্রাশ। এর কারণে অদ্ভুত সব আবেগ অনুভূত হয়। যেমন: একই সঙ্গে লজ্জা আর মন অসম্ভব চঞ্চল হয়ে ওঠে।
ক্রাশকে অবশ্য শুধু একটি ধরনে সীমাবদ্ধ করা যায় না। কাউকে সুন্দর মনে হলেই আমরা বলে ফেলি ক্রাশ। এটি অনেক ধরনেরই হতে পারে। এটি হতে পারে কারো প্রতি ক্ষণস্থায়ী মোহ বা হতে পারে আপনি সত্যি সত্যি তাকে পছন্দ করেন।
প্লেটোনিক ক্রাশ
এটা মনে রাখা জরুরি যে, সব তীব্র অনুভূতিই রোমান্টিক হয় না। কিছু অনুভূতি প্লেটোনিক বা নিষ্কামও হয়। কোনো ধরনের রোমান্টিক অনুভূতি ছাড়াই কারো ওপর ভরসা করা এবং খুব কাছাকাছি থাকার অত্যন্ত বিশেষ এক অনুভূতি। সার্বক্ষণিক সঙ্গ লাভের ইচ্ছা জাগলে বুঝতে হবে আপনাদের সম্পর্ক বন্ধুত্ব থেকে সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বে রূপ নিয়েছে। বন্ধুত্বপূর্ণ ক্রাশ খুবই সাধারণ একটি বিষয়। আপনার এমন কোনো বন্ধু থাকতেই পারে যার সঙ্গে আপনার সব সময় থাকতে মন চায়, এমনকি তাঁর সঙ্গে আপনার নিষ্কাম সম্পর্কও গড়ে উঠতে পারে।
মুগ্ধতা ক্রাশ
আপনি যখন কোনো ব্যক্তির বিশেষ বৈশিষ্ট্য বা তার কোনো দক্ষতার ওপর বিশেষভাবে মুগ্ধ হয়ে পড়েন— তিনি হতে পারেন কোনো সেলিব্রেটি, শিক্ষক, সহপাঠী— তাঁর প্রতি আপনার তীব্র অনুভূতি জাগতে পারে। এ ধরনের অনুভূতিকে তীব্রতার জন্য অনেকে রোমান্টিক ভেবে ভুল করতে পারেন। চমৎকার কিছু করেছে বা আপনাকে ভালো কোনো কিছু শিখিয়েছে এমন কারো উপস্থিতিতে অভিভূত হয়ে পড়া স্বাভাবিক।
এ ধরনের অনুভূতি জাগলে এ বিষয়ে বেশি চিন্তা করার আগে নিজেকে কিছুটা সময় দেওয়া উচিত। সাধারণত, কারো সঙ্গে অনেক বেশি সময় কাটানোর পর আপনি তাদের কাছ থেকে নতুন অনেক কিছু শিখতে পারেন এবং এর কারণে নিজেকে তাঁর সমমনোভাবাপন্ন বলেও মনে হতে পারে। প্রাথমিক মুগ্ধতা কেটে যাওয়ার পরই তাঁর উপস্থিতিতে আর ক্রাশের মতো অনুভূতি কাজ করে না।
ক্ষণস্থায়ী ক্রাশ
মানুষের প্রবৃত্তিই হলো অন্যের প্রতি আকর্ষণ বোধ করা। একটি সুখী সম্পর্কে থাকা সত্ত্বেও আপনি সঙ্গী ছাড়াও অন্য কারো প্রতি আকর্ষণ বোধ করতে পারেন। এ ধরনের আকর্ষণকে ক্ষণস্থায়ী ক্রাশ বলা হয়। এমন ক্রাশে নতুন মানুষটির নতুনত্ব উত্তেজনার সঞ্চার করে। তবে এর মানে এ নয় যে, নতুন মানুষটির জন্য আপনি পুরোনো সম্পর্ক নিয়ে দোটানায় পড়ে যাবেন বা সবকিছু ছেড়ে নতুন মানুষের সঙ্গে থাকার চেষ্টা করবেন। কারো প্রতি শারীরিক আকর্ষণ থেকেই ক্ষণস্থায়ী মোহের সৃষ্টি হয়।
রোমান্টিক ক্রাশ
কখনো কখনো কারো প্রতি ক্রাশ মানে হতে পারে আপনি ওই ব্যক্তিকে বাস্তবিক অর্থেই ভীষণ পছন্দ করেন আর বেশ রোমান্টিকভাবেই পছন্দ করেন। কারোও প্রতি রোমান্টিক ক্রাশ থাকা মানে হলো, আপনি তাঁর সঙ্গে কেবল বন্ধু হয়েই থাকতে চান না, আপনি বরং তাঁর রোমান্টিক সঙ্গী হয়ে থাকতে চান। আপনি যদি তাঁর চুমু খাওয়া, তাঁর হাত ধরা বা জড়িয়ে ধরার কথা কল্পনা করে থাকেন তবে সম্ভবত আপনার তাঁর প্রতি রোমান্টিক ক্রাশ আছে।
আপনাকে বুঝতে হবে আপনার ক্রাশ কতটা গুরুতর। এর গুরুত্বের ভিত্তিতেই আপনি বুঝবেন কীভাবে এ বিষয়ে এগোতে হবে— আপনার আবেগ অনুভূতিকে নিজের পর্যন্তই চেপে রাখবেন নাকি ক্রাশের কাছে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করবেন।
বিশেষ ওই ব্যক্তির প্রতি আপনার অনুভূতি কতটা তীব্র তা বোঝার কয়েকটি উপায় আছে—
ক্রাশের কাছাকাছি থাকা
যে ব্যক্তির ওপর আপনার ক্রাশ আছে তাঁর আশপাশে থাকার সময় নিজের আচার ব্যবহার লক্ষ্য করুন। নিজের শারীরিক আচরণের দিকে খেয়াল করুন। আপনার ক্রাশ যখন আশেপাশে থাকে তখন আপনার স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া কেমন তা লক্ষ্য করুন। বিভিন্ন মানুষের ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া বিভিন্ন হয়ে থাকে, আর বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা অবচেতনভাবেই হয়ে থাকে। সাধারণত ক্রাশের কাছাকাছি থাকলে আপনার মধ্যে দুই ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা যাবে: হয় আপনি অত্যন্ত লাজুক হয়ে পড়বেন আর ভাষা হারিয়ে ফেলবেন; না হয় আপনি হয়ে উঠবেন অনেক বেশি মুখর।
লাজুক প্রতিক্রিয়া
ক্রাশ আশেপাশে থাকলে কী আপনার কুঁকড়ে যেতে ইচ্ছে হয়? আপনার কি হঠাৎই লজ্জায় গাল লাল লাগে, আর অতি তুচ্ছ জিনিসও হঠাৎ আকর্ষণীয় লাগে, আর তা থেকে চোখ ফেরাতে পারেন না? আপনার কি হঠাৎই মনে হয় যে, আপনার কাছে বলার মতো মজার বা আকর্ষণীয় কিছু নেই? এসব প্রতিক্রিয়া থেকেই বোঝা যায়, আপনি ব্যক্তিটিকে পছন্দ করেন।
মুখর প্রতিক্রিয়া
আপনার কি ক্রাশকে জ্বালাতন করতে ইচ্ছে করে? সে আশপাশে থাকলে কি আপনার অনেক বেশি কথা বলে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ইচ্ছে করে? এগুলো সবই ক্রাশের লক্ষণ। তবে এ ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে, আর বিশেষ মানুষকে অপ্রস্তুত বা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলা যাবে না! খুব বেশি জ্বালাতন করলে সে আর আপনার সঙ্গে ঘুরতে চাইবে না।
ফ্লার্ট করা
আপনি কি চান আপনার ক্রাশ লক্ষ্য করুক আপনি কী পরেছেন বা কীভাবে চুল আঁচড়েছেন? আপনার কি তার আশেপাশে হাসিঠাট্টা করতে ভালো লাগে? হতে পারে আপনার ইচ্ছে করবে ক্রাশের পাশে যতটা সম্ভব পরিপাটি হয়ে থাকতে যেন সে আপনাকে লক্ষ্য করে। তার উপস্থিতিতে চোখ পিটপিট করা, কাঁধের ওপর থেকে চুল সরানো বা চুল নিয়ে খেলা করা— এসবই ক্রাশের লক্ষণ।
ক্রাশের আশপাশে আপনার কেমন অনুভূতি হয় তা ভেবে দেখুন। কারো প্রতি ক্রাশ থাকার একটি সাধারণ লক্ষণ হলো— বিশেষ মানুষটি আশপাশে থাকলে মনে হবে আপনার চারপাশে হাজারো প্রজাপতি উড়ছে! ক্রাশকে দেখলেই আপনার বুক ধক করে উঠতে পারে। আর তাকে দেখলেই আপনার উষ্ণ ও চঞ্চল অনুভূতি হতে পারে।
আপনার কি একই সময় নার্ভাস আর উত্তেজিত মনে হয়? আপনার সে মানুষটাকে জড়িয়ে ধরতে বা সব সময় তার আশেপাশেই থাকতে ইচ্ছে হতে পারে। কারো প্রতি ক্রাশ থাকলে এগুলো অত্যন্ত সাধারণ প্রতিক্রিয়া।
আপনার কি সবকিছু ছেড়ে তার আশেপাশে থাকতে ইচ্ছে হয়?
আপনার বন্ধু ও আপনার ক্রাশের আশপাশে থাকলে আপনি কেমন আচরণ করেন তা খেয়াল করুন। কারো ওপর ক্রাশ থাকলে হয় আপনার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে মন চাইবে, না হয় একেবারেই কথা বলতে মন চাইবে না। আপনার যদি কারো ওপর ক্রাশ থাকে আর বন্ধুদের সঙ্গে থাকার সময় যদি ওই মানুষটা এসে পড়ে, তখন আপনি কী করেন?
আপনার যদি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে মন চায় তবে আপনি আলোচনা সেদিকেই ঘোরাতে চাইবেন, যাতে আপনি নিজেকে জাহির করে ক্রাশকে পটাতে পারেন। আপনি তখন ক্রাশের মনযোগ আকর্ষণের জন্য তার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করতে পারেন।
যদি আপনি মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলেন তবে আপনার মনে হতে পারে আপনার কথা বলার মতো কিছুই নেই। কারো ওপর ক্রাশ থাকলে অনেকে অত্যন্ত লাজুক হয়ে পড়েন। যদি আপনি সাধারণত কথা বলতে পছন্দ করে থাকেন, কিন্তু বিশেষ মানুষটা আশপাশে থাকলেই আপনি চুপ হয়ে যান, তবে সম্ভবত তাঁর ওপর আপনার ক্রাশ আছে।
ক্রাশ কাছে এলেই কি আপনার মনে হয় যেন আশপাশের বন্ধুরা সব অদৃশ্য হয়ে গেছে? হয়তো আপনার চারপাশ ঘিরে অনেক মানুষই আছে। তাও আপনি শুধু আপনার বিশেষ মানুষকেই দেখবেন। বন্ধুরা মজার কিছু না বললেও আপনি অনেক হাসবেন। বন্ধুরা কিছু জিজ্ঞেস করলেও আপনি তাদের প্রশ্ন সহজে বুঝবেন না, কারণ আপনার মনযোগ ওই একজনের ওপরই থাকবে।
আপনাকে কেমন দেখাচ্ছে, এ বিষয়ে আপনি অনেক বেশি মনোযোগী হয়ে উঠছেন কি না খেয়াল করুন। কারও ওপর ক্রাশ থাকার প্রধান একটি লক্ষণ হলো সে আশপাশে থাকলে আপনি সুন্দর ও পরিপাটি হয়ে থাকতে চাইবেন। আপনি কি সকালে তৈরি হতে আগের চেয়ে বেশি সময় নিচ্ছেন? আপনি কি ক্রাশ পছন্দ করতে পারে অনুমান করে তেমন পোশাক কিনেছেন? ক্রাশের সঙ্গে দেখা হয়ে যেতে পারে তা ভেবে কি আপনি চুল বাঁধতে বা সাজগোজ করতে বাড়তি সময় নিচ্ছেন? এমন যদি হয় তবে অবশ্যই আপনার তার ওপর ক্রাশ আছে।
বিশেষ ওই মানুষের কাছ থেকে দূরে থাকলেও আপনি তাঁর কথাই ভাবতে থাকেন। অন্য যে কারো চেয়ে আপনি তার কথা ভাববেন। পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে বের হলেও আপনি কোনো আলোচনায় মনযোগ দিতে পারবেন না। আপনি ভবতে থাকবেন সে কি করছে।
হয়তো আপনি বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরছেন কিন্তু আপনার মনে হতে থাকবে সে বিশেষ মানুষটার সঙ্গে সময় কাটালেই বুঝি বেশি ভালো লাগতো!
আপনি যখন রাতে ঘুমাতে যান তখন কি ক্রাশকে চুমু খেয়ে ঘুমাতে যাওয়ার কথা ভাবেন?
আপনি বিশেষ ওই মানুষ নিয়েই বেশি কথা বলছেন কি না লক্ষ্য করুন। বন্ধুদের সঙ্গে সব আলোচনাতেই কি আপনি তার বিষয়ে আলাপ তোলেন? আপনার বন্ধুরা যদি বলে আপনি নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির কথা অনেক বেশি বলেন, তবে এটি কারো প্রতি ক্রাশ থাকার বড় একটা লক্ষণ।
আপনি যদি এমনটা করে থাকেন তবে আপনি বন্ধুদের সঙ্গে এ বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করে দেখতে পারেন। তাঁরা আপনাকে আপনার অনুভূতি বুঝে উঠতে এবং ক্রাশের সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানতে সাহায্য করতে পারে।
তবে ক্রাশ নিয়ে কার কাছে কথা বলছেন সে বিষয়ে বেশ সতর্ক হতে হবে। এমন কোনো বন্ধুকে যদি বলে থাকেন যে আবার বিশেষ ওই মানুষটিকে আপনার অনুভূতির কথা জানিয়ে দেবে, তাহলে আপনাকে বেশ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হতে পারে। তাই নিজের অনুভূতির কথা কেবল বিশ্বস্ত বন্ধুদের সঙ্গেই শেয়ার করুন।
দেখলেই শ্বাস বন্ধ হয়ে আসা, হেসে গলিয়ে পড়া, সারা শরীরে বিদ্যুতের ঝলকানি—এর মানে কি আপনি তার ওপর ক্রাশ খেয়েছেন নাকি তাকে শুধুই বন্ধু হিসেবে দেখছেন? নিজের অনুভূতি নিয়ে যদি এমন দ্বিধায় থাকেন তাহলে চিন্তার কোনো কারণ নেই। আপনার এ সমস্যার সম্ভাব্য সমাধান বের করার চেষ্টা করেছে উইকিহাউ। আপনার মনে আলোড়ন সৃষ্টি করা মানুষটি আপনার শুধুই বন্ধু না আরও কিছু, তা জানার জন্য বেশ কয়েকটি উপায় রয়েছে।
ক্রাশ জিনিসটা কী?
আগে জানুন ক্রাশ বিষয়টা আসলে কী। ক্রাশের সংজ্ঞায় আরবান ডিকশনারি বলছে, আকর্ষণীয় ও অনেক বিশেষ মনে হয় এমন কারো সঙ্গ পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা হলো ক্রাশ। এর কারণে অদ্ভুত সব আবেগ অনুভূত হয়। যেমন: একই সঙ্গে লজ্জা আর মন অসম্ভব চঞ্চল হয়ে ওঠে।
ক্রাশকে অবশ্য শুধু একটি ধরনে সীমাবদ্ধ করা যায় না। কাউকে সুন্দর মনে হলেই আমরা বলে ফেলি ক্রাশ। এটি অনেক ধরনেরই হতে পারে। এটি হতে পারে কারো প্রতি ক্ষণস্থায়ী মোহ বা হতে পারে আপনি সত্যি সত্যি তাকে পছন্দ করেন।
প্লেটোনিক ক্রাশ
এটা মনে রাখা জরুরি যে, সব তীব্র অনুভূতিই রোমান্টিক হয় না। কিছু অনুভূতি প্লেটোনিক বা নিষ্কামও হয়। কোনো ধরনের রোমান্টিক অনুভূতি ছাড়াই কারো ওপর ভরসা করা এবং খুব কাছাকাছি থাকার অত্যন্ত বিশেষ এক অনুভূতি। সার্বক্ষণিক সঙ্গ লাভের ইচ্ছা জাগলে বুঝতে হবে আপনাদের সম্পর্ক বন্ধুত্ব থেকে সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বে রূপ নিয়েছে। বন্ধুত্বপূর্ণ ক্রাশ খুবই সাধারণ একটি বিষয়। আপনার এমন কোনো বন্ধু থাকতেই পারে যার সঙ্গে আপনার সব সময় থাকতে মন চায়, এমনকি তাঁর সঙ্গে আপনার নিষ্কাম সম্পর্কও গড়ে উঠতে পারে।
মুগ্ধতা ক্রাশ
আপনি যখন কোনো ব্যক্তির বিশেষ বৈশিষ্ট্য বা তার কোনো দক্ষতার ওপর বিশেষভাবে মুগ্ধ হয়ে পড়েন— তিনি হতে পারেন কোনো সেলিব্রেটি, শিক্ষক, সহপাঠী— তাঁর প্রতি আপনার তীব্র অনুভূতি জাগতে পারে। এ ধরনের অনুভূতিকে তীব্রতার জন্য অনেকে রোমান্টিক ভেবে ভুল করতে পারেন। চমৎকার কিছু করেছে বা আপনাকে ভালো কোনো কিছু শিখিয়েছে এমন কারো উপস্থিতিতে অভিভূত হয়ে পড়া স্বাভাবিক।
এ ধরনের অনুভূতি জাগলে এ বিষয়ে বেশি চিন্তা করার আগে নিজেকে কিছুটা সময় দেওয়া উচিত। সাধারণত, কারো সঙ্গে অনেক বেশি সময় কাটানোর পর আপনি তাদের কাছ থেকে নতুন অনেক কিছু শিখতে পারেন এবং এর কারণে নিজেকে তাঁর সমমনোভাবাপন্ন বলেও মনে হতে পারে। প্রাথমিক মুগ্ধতা কেটে যাওয়ার পরই তাঁর উপস্থিতিতে আর ক্রাশের মতো অনুভূতি কাজ করে না।
ক্ষণস্থায়ী ক্রাশ
মানুষের প্রবৃত্তিই হলো অন্যের প্রতি আকর্ষণ বোধ করা। একটি সুখী সম্পর্কে থাকা সত্ত্বেও আপনি সঙ্গী ছাড়াও অন্য কারো প্রতি আকর্ষণ বোধ করতে পারেন। এ ধরনের আকর্ষণকে ক্ষণস্থায়ী ক্রাশ বলা হয়। এমন ক্রাশে নতুন মানুষটির নতুনত্ব উত্তেজনার সঞ্চার করে। তবে এর মানে এ নয় যে, নতুন মানুষটির জন্য আপনি পুরোনো সম্পর্ক নিয়ে দোটানায় পড়ে যাবেন বা সবকিছু ছেড়ে নতুন মানুষের সঙ্গে থাকার চেষ্টা করবেন। কারো প্রতি শারীরিক আকর্ষণ থেকেই ক্ষণস্থায়ী মোহের সৃষ্টি হয়।
রোমান্টিক ক্রাশ
কখনো কখনো কারো প্রতি ক্রাশ মানে হতে পারে আপনি ওই ব্যক্তিকে বাস্তবিক অর্থেই ভীষণ পছন্দ করেন আর বেশ রোমান্টিকভাবেই পছন্দ করেন। কারোও প্রতি রোমান্টিক ক্রাশ থাকা মানে হলো, আপনি তাঁর সঙ্গে কেবল বন্ধু হয়েই থাকতে চান না, আপনি বরং তাঁর রোমান্টিক সঙ্গী হয়ে থাকতে চান। আপনি যদি তাঁর চুমু খাওয়া, তাঁর হাত ধরা বা জড়িয়ে ধরার কথা কল্পনা করে থাকেন তবে সম্ভবত আপনার তাঁর প্রতি রোমান্টিক ক্রাশ আছে।
আপনাকে বুঝতে হবে আপনার ক্রাশ কতটা গুরুতর। এর গুরুত্বের ভিত্তিতেই আপনি বুঝবেন কীভাবে এ বিষয়ে এগোতে হবে— আপনার আবেগ অনুভূতিকে নিজের পর্যন্তই চেপে রাখবেন নাকি ক্রাশের কাছে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করবেন।
বিশেষ ওই ব্যক্তির প্রতি আপনার অনুভূতি কতটা তীব্র তা বোঝার কয়েকটি উপায় আছে—
ক্রাশের কাছাকাছি থাকা
যে ব্যক্তির ওপর আপনার ক্রাশ আছে তাঁর আশপাশে থাকার সময় নিজের আচার ব্যবহার লক্ষ্য করুন। নিজের শারীরিক আচরণের দিকে খেয়াল করুন। আপনার ক্রাশ যখন আশেপাশে থাকে তখন আপনার স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া কেমন তা লক্ষ্য করুন। বিভিন্ন মানুষের ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া বিভিন্ন হয়ে থাকে, আর বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা অবচেতনভাবেই হয়ে থাকে। সাধারণত ক্রাশের কাছাকাছি থাকলে আপনার মধ্যে দুই ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা যাবে: হয় আপনি অত্যন্ত লাজুক হয়ে পড়বেন আর ভাষা হারিয়ে ফেলবেন; না হয় আপনি হয়ে উঠবেন অনেক বেশি মুখর।
লাজুক প্রতিক্রিয়া
ক্রাশ আশেপাশে থাকলে কী আপনার কুঁকড়ে যেতে ইচ্ছে হয়? আপনার কি হঠাৎই লজ্জায় গাল লাল লাগে, আর অতি তুচ্ছ জিনিসও হঠাৎ আকর্ষণীয় লাগে, আর তা থেকে চোখ ফেরাতে পারেন না? আপনার কি হঠাৎই মনে হয় যে, আপনার কাছে বলার মতো মজার বা আকর্ষণীয় কিছু নেই? এসব প্রতিক্রিয়া থেকেই বোঝা যায়, আপনি ব্যক্তিটিকে পছন্দ করেন।
মুখর প্রতিক্রিয়া
আপনার কি ক্রাশকে জ্বালাতন করতে ইচ্ছে করে? সে আশপাশে থাকলে কি আপনার অনেক বেশি কথা বলে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ইচ্ছে করে? এগুলো সবই ক্রাশের লক্ষণ। তবে এ ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে, আর বিশেষ মানুষকে অপ্রস্তুত বা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলা যাবে না! খুব বেশি জ্বালাতন করলে সে আর আপনার সঙ্গে ঘুরতে চাইবে না।
ফ্লার্ট করা
আপনি কি চান আপনার ক্রাশ লক্ষ্য করুক আপনি কী পরেছেন বা কীভাবে চুল আঁচড়েছেন? আপনার কি তার আশেপাশে হাসিঠাট্টা করতে ভালো লাগে? হতে পারে আপনার ইচ্ছে করবে ক্রাশের পাশে যতটা সম্ভব পরিপাটি হয়ে থাকতে যেন সে আপনাকে লক্ষ্য করে। তার উপস্থিতিতে চোখ পিটপিট করা, কাঁধের ওপর থেকে চুল সরানো বা চুল নিয়ে খেলা করা— এসবই ক্রাশের লক্ষণ।
ক্রাশের আশপাশে আপনার কেমন অনুভূতি হয় তা ভেবে দেখুন। কারো প্রতি ক্রাশ থাকার একটি সাধারণ লক্ষণ হলো— বিশেষ মানুষটি আশপাশে থাকলে মনে হবে আপনার চারপাশে হাজারো প্রজাপতি উড়ছে! ক্রাশকে দেখলেই আপনার বুক ধক করে উঠতে পারে। আর তাকে দেখলেই আপনার উষ্ণ ও চঞ্চল অনুভূতি হতে পারে।
আপনার কি একই সময় নার্ভাস আর উত্তেজিত মনে হয়? আপনার সে মানুষটাকে জড়িয়ে ধরতে বা সব সময় তার আশেপাশেই থাকতে ইচ্ছে হতে পারে। কারো প্রতি ক্রাশ থাকলে এগুলো অত্যন্ত সাধারণ প্রতিক্রিয়া।
আপনার কি সবকিছু ছেড়ে তার আশেপাশে থাকতে ইচ্ছে হয়?
আপনার বন্ধু ও আপনার ক্রাশের আশপাশে থাকলে আপনি কেমন আচরণ করেন তা খেয়াল করুন। কারো ওপর ক্রাশ থাকলে হয় আপনার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে মন চাইবে, না হয় একেবারেই কথা বলতে মন চাইবে না। আপনার যদি কারো ওপর ক্রাশ থাকে আর বন্ধুদের সঙ্গে থাকার সময় যদি ওই মানুষটা এসে পড়ে, তখন আপনি কী করেন?
আপনার যদি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে মন চায় তবে আপনি আলোচনা সেদিকেই ঘোরাতে চাইবেন, যাতে আপনি নিজেকে জাহির করে ক্রাশকে পটাতে পারেন। আপনি তখন ক্রাশের মনযোগ আকর্ষণের জন্য তার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করতে পারেন।
যদি আপনি মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলেন তবে আপনার মনে হতে পারে আপনার কথা বলার মতো কিছুই নেই। কারো ওপর ক্রাশ থাকলে অনেকে অত্যন্ত লাজুক হয়ে পড়েন। যদি আপনি সাধারণত কথা বলতে পছন্দ করে থাকেন, কিন্তু বিশেষ মানুষটা আশপাশে থাকলেই আপনি চুপ হয়ে যান, তবে সম্ভবত তাঁর ওপর আপনার ক্রাশ আছে।
ক্রাশ কাছে এলেই কি আপনার মনে হয় যেন আশপাশের বন্ধুরা সব অদৃশ্য হয়ে গেছে? হয়তো আপনার চারপাশ ঘিরে অনেক মানুষই আছে। তাও আপনি শুধু আপনার বিশেষ মানুষকেই দেখবেন। বন্ধুরা মজার কিছু না বললেও আপনি অনেক হাসবেন। বন্ধুরা কিছু জিজ্ঞেস করলেও আপনি তাদের প্রশ্ন সহজে বুঝবেন না, কারণ আপনার মনযোগ ওই একজনের ওপরই থাকবে।
আপনাকে কেমন দেখাচ্ছে, এ বিষয়ে আপনি অনেক বেশি মনোযোগী হয়ে উঠছেন কি না খেয়াল করুন। কারও ওপর ক্রাশ থাকার প্রধান একটি লক্ষণ হলো সে আশপাশে থাকলে আপনি সুন্দর ও পরিপাটি হয়ে থাকতে চাইবেন। আপনি কি সকালে তৈরি হতে আগের চেয়ে বেশি সময় নিচ্ছেন? আপনি কি ক্রাশ পছন্দ করতে পারে অনুমান করে তেমন পোশাক কিনেছেন? ক্রাশের সঙ্গে দেখা হয়ে যেতে পারে তা ভেবে কি আপনি চুল বাঁধতে বা সাজগোজ করতে বাড়তি সময় নিচ্ছেন? এমন যদি হয় তবে অবশ্যই আপনার তার ওপর ক্রাশ আছে।
বিশেষ ওই মানুষের কাছ থেকে দূরে থাকলেও আপনি তাঁর কথাই ভাবতে থাকেন। অন্য যে কারো চেয়ে আপনি তার কথা ভাববেন। পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে বের হলেও আপনি কোনো আলোচনায় মনযোগ দিতে পারবেন না। আপনি ভবতে থাকবেন সে কি করছে।
হয়তো আপনি বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরছেন কিন্তু আপনার মনে হতে থাকবে সে বিশেষ মানুষটার সঙ্গে সময় কাটালেই বুঝি বেশি ভালো লাগতো!
আপনি যখন রাতে ঘুমাতে যান তখন কি ক্রাশকে চুমু খেয়ে ঘুমাতে যাওয়ার কথা ভাবেন?
আপনি বিশেষ ওই মানুষ নিয়েই বেশি কথা বলছেন কি না লক্ষ্য করুন। বন্ধুদের সঙ্গে সব আলোচনাতেই কি আপনি তার বিষয়ে আলাপ তোলেন? আপনার বন্ধুরা যদি বলে আপনি নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির কথা অনেক বেশি বলেন, তবে এটি কারো প্রতি ক্রাশ থাকার বড় একটা লক্ষণ।
আপনি যদি এমনটা করে থাকেন তবে আপনি বন্ধুদের সঙ্গে এ বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করে দেখতে পারেন। তাঁরা আপনাকে আপনার অনুভূতি বুঝে উঠতে এবং ক্রাশের সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানতে সাহায্য করতে পারে।
তবে ক্রাশ নিয়ে কার কাছে কথা বলছেন সে বিষয়ে বেশ সতর্ক হতে হবে। এমন কোনো বন্ধুকে যদি বলে থাকেন যে আবার বিশেষ ওই মানুষটিকে আপনার অনুভূতির কথা জানিয়ে দেবে, তাহলে আপনাকে বেশ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হতে পারে। তাই নিজের অনুভূতির কথা কেবল বিশ্বস্ত বন্ধুদের সঙ্গেই শেয়ার করুন।
দিগন্তবিস্তৃত ধানখেতের মাথার ওপর নীল আকাশে উঁকি দেবে সাদা মেঘ। শরৎকাল বলে ভুল হতে পারে। ভুল ভাঙলে দেখতে পাবেন, মেঘের ভেলা সূর্যের আলোয় ক্ষণে ক্ষণে রং বদলে হয়ে উঠছে গোলাপি কিংবা লাল। বুঝবেন, আপনি শরতের সাদা মেঘ নয়, দেখছেন তুষারে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা।
১ দিন আগেকোনো কিছু ওপর থেকে নিচে পড়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে। স্কুলের পদার্থবিজ্ঞান বইয়ে আমরা সবাই এ বিষয়ে পড়েছি। কিন্তু এমন কিছু জায়গা আছে, যেগুলোতে স্যার আইজ্যাক নিউটনের সূত্র কাজ করে না। অর্থাৎ সেসব জায়গায় কোনো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই। যেতে চান সেই সব জায়গায়?
১ দিন আগেশীত, বসন্ত আর বর্ষায় বাংলার নীল নদ সারির রূপ বদলে ফেলে। বর্ষায় পাহাড়ি ঢল নামলে দক্ষ মাঝিরাও ভয়ে ভয়ে বইঠা চালান। আর শীতে সারি নদীর নীল পানি দেয় অপার্থিব জগতের খোঁজ। নদীটি ধরে কিছুদূর উজান বাইলেই পাওয়া যাবে লালাখাল জিরো পয়েন্ট।
১ দিন আগেভ্রমণকালে রোগবালাই থেকে দূরে থাকার বিকল্প নেই। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী না হলে ভ্রমণের আনন্দ মাঠে মারা যেতে পারে। ভ্রমণের সময় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বেছে নিতে পারেন কিছু উপায়।
১ দিন আগে