ডা. উম্মে নুসরাত আরা
চিকিৎসক হিসেবে নিজেকে ভাগ্যবান মনে হয়। কারণ, অসংখ্য মানুষের ভালোবাসা ও সম্মান পেয়েছি এই পেশায় এসে। এটি যেমন আনন্দ দেয়, তেমনি কিছু বেদনাও রয়েছে। একটি মেয়ের চিকিৎসক হয়ে ওঠার পেছনে কী পরিমাণ ত্যাগ স্বীকার করতে হয়, তা অভাবনীয়। বিয়ের পরে সংসারের সঙ্গে একই সমান্তরালে যখন মেডিকেলের পড়াশোনাটাও চালিয়ে যেতে হয়, তখনই চ্যালেঞ্জটা শুরু হয়। এটা রীতিমতো অসম্ভব ব্যাপার।
এই সময়ে স্বামী যদি সমর্থন না করে, তাহলে সেটি কোনোভাবেই সম্ভব নয়। সবার আগে তাঁকে এই পেশার কঠিন যাত্রাটা বুঝতে হবে। কী হাড়ভাঙা পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে একজন মেডিকেল শিক্ষার্থীকে যেতে হয়। সাদাত যেহেতু এই পেশার মানুষ নয়, ফলে এই বিষয়টি সে ঠিক কতটুকু বুঝবে, তা নিয়ে খানিক দ্বিধা যে আমার ছিল না, তা নয়। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার হলো, সাদাত সেই দ্বিধাটা তাঁর অসাধারণ ধৈর্য, সংবেদনশীলতা ও যত্ন দিয়ে কাটিয়ে দিয়েছে। অথচ আমার ব্যস্ততা, পরীক্ষা, পড়াশোনা, ডিউটির কারণে সামান্য সময়ও তাঁকে দিতে পারিনি। কতবার যে ছুটি নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে, কিন্তু শেষ অবধি সময় বের করতে পারিনি। কিংবা ছুটিতে গিয়েও মাঝপথে জরুরি কোনো কাজে আমাকে চলে আসতে হয়েছে।
যখন যেখানে যার যতটুকু ভূমিকা রাখার সুযোগ থাকবে, সে যদি আন্তরিকভাবে ততটুকু করে, তাহলে সবকিছু সহজ হয়ে যায়।
অথচ এসব নিয়ে সে কখনো অভিযোগ করেনি। বরং পরিস্থিতি বুঝতে চেষ্টা করেছে। এমনকি বিয়ের ছয়-সাত বছর পরে এসে যখন আমরা খানিকটা নিয়মিত সংসারী হওয়ার সুযোগ পেলাম; তবু কোনো অনুযোগ ছিল না তার। সে বলত, ‘আমাদের ভালো সময় আসবে। আমি তোমাকে খুব ভালো, বড় একজন ডাক্তার হিসেবে দেখতে চাই। আমি তোমার ওই পরিচয়টা নিয়ে সবার কাছে গর্ব করতে চাই।’ কোথাও যদি আমার কোনো সফলতা আসে, তা নিয়ে সে শিশুর মতো উচ্ছ্বসিত হয়। এগুলো আমাকে অনুপ্রাণিত করে। আমার সব ধরনের হতাশার সময় সে পাশে দাঁড়িয়েছে, সাহস জুগিয়েছে। যে কোনো দুঃসময়ে আমি যে মানুষটির হাত সবচেয়ে নির্ভরতা নিয়ে ধরতে পেরেছি, সেই মানুষটি সাদাত। আজকের আমি হয়ে ওঠার পেছনে তাঁর ভূমিকা যে কতটা, তা বলে বোঝানো যাবে না।
সাদাত হোসাইন
আমি লেখক। নুসরাত ডাক্তার। আমরা দুজন দুই মেরুর মানুষ। তবে একটা জায়গায় ভীষণ মিল। আমরা পরস্পরের কাজকে সম্মান করি এবং বুঝতে চেষ্টা করি। এ নিয়ে যতটা সম্ভব অভিযোগ না করার চেষ্টা করি। সমর্থন করার চেষ্টা করি। এমন নয়, আমরা দুজনই সব সময় শতভাগ ঠিকঠাক আচরণ করতে পারি, কিংবা সব সময় যথাযথ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে পারি। কিন্তু একটি বিষয় আমাদের মাথায় থাকে, কখনো হয়তো আমি ৩০ ভাগ করছি, নুসরাত ৭০ ভাগ। আবার কোথাও হয়তো আমি বেশির ভাগ, বাকিটুকু সে। আসলে এটাই হওয়া উচিত। যখন যেখানে যার যতটুকু ভূমিকা রাখার সুযোগ থাকবে, সে যদি আন্তরিকভাবে ততটুকু করে, তাহলে সবকিছু সহজ হয়ে যায়। কারণ, অঙ্কের জটিল হিসাব কষে সর্বক্ষেত্রে একদম সমান দায়িত্ব পালন করতে হবে, এই ভাবনা সবকিছু কঠিন করে তোলে।
একজন লেখক হিসেবে আমার যে রুটিন, তা একজন স্ত্রীর পক্ষে মেনে নেওয়া সত্যিকার অর্থেই কঠিন। ‘নোরা’ আমাদের এক মাত্র কন্যাসন্তান। তার প্রতিও যথাযথ দায়িত্ব আমি কখনো পালন করতে পারিনি। নুসরাতও কিন্তু হাউসওয়াইফ নয়। অনেক ব্যস্ত মানুষ। সেই কাকভোরে বাসা থেকে বের হয়। ফিরতে ফিরতে রাত।
কিন্তু তারপরও নিজের পরিশ্রমটা বাড়িয়ে নিয়ে হলেও আমার লেখালেখিতে যেন ব্যাঘাত না ঘটে, সেই চেষ্টাটা করে সে। নুসরাত প্রায়ই বলে, তাঁর দিন যদি ২৪ ঘণ্টায় না হয়ে ৪৮ ঘণ্টায় হতো, তাহলে হয়তো সবকিছু সামলানো খানিকটা সহজ হতো। কিন্তু শি ইজ ট্রুলি অ্যান আয়রন লেডি। ওই ২৪ ঘণ্টাতেই সে ৪৮ ঘণ্টার কাজ একা হাতে সামলায়। এবং এই নিয়ে কোনো অভিযোগও তার নেই। বরং মনে হয়, খুব শান্ত, স্থির এক মানুষ। যেকোনো কিছুতেই যেন কখনো বিচলিত হয় না। ওর এই ব্যক্তিত্বের ভীষণ ফ্যান আমি। আমার যেকোনো সমস্যা কিংবা সংকটে সবার আগে তার কথাই মনে পড়ে আমার। মনে হয়, তাকে বললে নিশ্চয়ই একটা সমাধান মিলে যাবে। একটা আশ্রয়ের মতো। এটা সবচেয়ে জরুরি।
ডা. উম্মে নুসরাত আরা
চিকিৎসক হিসেবে নিজেকে ভাগ্যবান মনে হয়। কারণ, অসংখ্য মানুষের ভালোবাসা ও সম্মান পেয়েছি এই পেশায় এসে। এটি যেমন আনন্দ দেয়, তেমনি কিছু বেদনাও রয়েছে। একটি মেয়ের চিকিৎসক হয়ে ওঠার পেছনে কী পরিমাণ ত্যাগ স্বীকার করতে হয়, তা অভাবনীয়। বিয়ের পরে সংসারের সঙ্গে একই সমান্তরালে যখন মেডিকেলের পড়াশোনাটাও চালিয়ে যেতে হয়, তখনই চ্যালেঞ্জটা শুরু হয়। এটা রীতিমতো অসম্ভব ব্যাপার।
এই সময়ে স্বামী যদি সমর্থন না করে, তাহলে সেটি কোনোভাবেই সম্ভব নয়। সবার আগে তাঁকে এই পেশার কঠিন যাত্রাটা বুঝতে হবে। কী হাড়ভাঙা পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে একজন মেডিকেল শিক্ষার্থীকে যেতে হয়। সাদাত যেহেতু এই পেশার মানুষ নয়, ফলে এই বিষয়টি সে ঠিক কতটুকু বুঝবে, তা নিয়ে খানিক দ্বিধা যে আমার ছিল না, তা নয়। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার হলো, সাদাত সেই দ্বিধাটা তাঁর অসাধারণ ধৈর্য, সংবেদনশীলতা ও যত্ন দিয়ে কাটিয়ে দিয়েছে। অথচ আমার ব্যস্ততা, পরীক্ষা, পড়াশোনা, ডিউটির কারণে সামান্য সময়ও তাঁকে দিতে পারিনি। কতবার যে ছুটি নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে, কিন্তু শেষ অবধি সময় বের করতে পারিনি। কিংবা ছুটিতে গিয়েও মাঝপথে জরুরি কোনো কাজে আমাকে চলে আসতে হয়েছে।
যখন যেখানে যার যতটুকু ভূমিকা রাখার সুযোগ থাকবে, সে যদি আন্তরিকভাবে ততটুকু করে, তাহলে সবকিছু সহজ হয়ে যায়।
অথচ এসব নিয়ে সে কখনো অভিযোগ করেনি। বরং পরিস্থিতি বুঝতে চেষ্টা করেছে। এমনকি বিয়ের ছয়-সাত বছর পরে এসে যখন আমরা খানিকটা নিয়মিত সংসারী হওয়ার সুযোগ পেলাম; তবু কোনো অনুযোগ ছিল না তার। সে বলত, ‘আমাদের ভালো সময় আসবে। আমি তোমাকে খুব ভালো, বড় একজন ডাক্তার হিসেবে দেখতে চাই। আমি তোমার ওই পরিচয়টা নিয়ে সবার কাছে গর্ব করতে চাই।’ কোথাও যদি আমার কোনো সফলতা আসে, তা নিয়ে সে শিশুর মতো উচ্ছ্বসিত হয়। এগুলো আমাকে অনুপ্রাণিত করে। আমার সব ধরনের হতাশার সময় সে পাশে দাঁড়িয়েছে, সাহস জুগিয়েছে। যে কোনো দুঃসময়ে আমি যে মানুষটির হাত সবচেয়ে নির্ভরতা নিয়ে ধরতে পেরেছি, সেই মানুষটি সাদাত। আজকের আমি হয়ে ওঠার পেছনে তাঁর ভূমিকা যে কতটা, তা বলে বোঝানো যাবে না।
সাদাত হোসাইন
আমি লেখক। নুসরাত ডাক্তার। আমরা দুজন দুই মেরুর মানুষ। তবে একটা জায়গায় ভীষণ মিল। আমরা পরস্পরের কাজকে সম্মান করি এবং বুঝতে চেষ্টা করি। এ নিয়ে যতটা সম্ভব অভিযোগ না করার চেষ্টা করি। সমর্থন করার চেষ্টা করি। এমন নয়, আমরা দুজনই সব সময় শতভাগ ঠিকঠাক আচরণ করতে পারি, কিংবা সব সময় যথাযথ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে পারি। কিন্তু একটি বিষয় আমাদের মাথায় থাকে, কখনো হয়তো আমি ৩০ ভাগ করছি, নুসরাত ৭০ ভাগ। আবার কোথাও হয়তো আমি বেশির ভাগ, বাকিটুকু সে। আসলে এটাই হওয়া উচিত। যখন যেখানে যার যতটুকু ভূমিকা রাখার সুযোগ থাকবে, সে যদি আন্তরিকভাবে ততটুকু করে, তাহলে সবকিছু সহজ হয়ে যায়। কারণ, অঙ্কের জটিল হিসাব কষে সর্বক্ষেত্রে একদম সমান দায়িত্ব পালন করতে হবে, এই ভাবনা সবকিছু কঠিন করে তোলে।
একজন লেখক হিসেবে আমার যে রুটিন, তা একজন স্ত্রীর পক্ষে মেনে নেওয়া সত্যিকার অর্থেই কঠিন। ‘নোরা’ আমাদের এক মাত্র কন্যাসন্তান। তার প্রতিও যথাযথ দায়িত্ব আমি কখনো পালন করতে পারিনি। নুসরাতও কিন্তু হাউসওয়াইফ নয়। অনেক ব্যস্ত মানুষ। সেই কাকভোরে বাসা থেকে বের হয়। ফিরতে ফিরতে রাত।
কিন্তু তারপরও নিজের পরিশ্রমটা বাড়িয়ে নিয়ে হলেও আমার লেখালেখিতে যেন ব্যাঘাত না ঘটে, সেই চেষ্টাটা করে সে। নুসরাত প্রায়ই বলে, তাঁর দিন যদি ২৪ ঘণ্টায় না হয়ে ৪৮ ঘণ্টায় হতো, তাহলে হয়তো সবকিছু সামলানো খানিকটা সহজ হতো। কিন্তু শি ইজ ট্রুলি অ্যান আয়রন লেডি। ওই ২৪ ঘণ্টাতেই সে ৪৮ ঘণ্টার কাজ একা হাতে সামলায়। এবং এই নিয়ে কোনো অভিযোগও তার নেই। বরং মনে হয়, খুব শান্ত, স্থির এক মানুষ। যেকোনো কিছুতেই যেন কখনো বিচলিত হয় না। ওর এই ব্যক্তিত্বের ভীষণ ফ্যান আমি। আমার যেকোনো সমস্যা কিংবা সংকটে সবার আগে তার কথাই মনে পড়ে আমার। মনে হয়, তাকে বললে নিশ্চয়ই একটা সমাধান মিলে যাবে। একটা আশ্রয়ের মতো। এটা সবচেয়ে জরুরি।
বাংলাদেশ ব্যাংকে ‘সহকারী পরিচালক’ পদে নিয়োগ পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মো. জবদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
১৮ ঘণ্টা আগেজনবল নিয়োগের জন্য পুনর্নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানটির দুই ধরনের শূন্য পদে ১২ জন নিয়োগ দেওয়া হবে। আগ্রহী ও যোগ্য প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।
১৯ ঘণ্টা আগেসিনিয়র স্টাফ নার্স (১০ম গ্রেড) পদের লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এতে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৪ হাজার ৫৫২ জন প্রার্থী। বুধবার পিএসসির জনসংযোগ কর্মকর্তা এস এম মতিউর রহমানের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
১ দিন আগেজনবল নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে আজকের পত্রিকা। প্রতিষ্ঠানটিতে অ্যাড অপারেশন পদে জনবল নেবে। আগ্রহী ও যোগ্য প্রার্থীরা ই-মেইলে অথবা সরাসরি প্রতিষ্ঠানের ঠিকানায় সিভি পাঠাতে পারবেন।
২ দিন আগে