অনলাইন ডেস্ক
‘হীরক রাজার দেশে’ মনে আছে? কেউ একটু এদিক-ওদিক হলেই হীরক রাজা তাকে পাঠিয়ে দিতেন যন্তর-মন্তরে। সেখানে ছিল মিস্তষ্ক প্রক্ষালন যন্ত্র। আর এই যন্ত্রে একবার মাথা দিলে মস্তিষ্কের জটিল অলিগলিতে কী যেন কী হয়ে যেত। বিজ্ঞানীরা এখন জানাচ্ছেন, এমন এক যন্ত্র হাতে চলে এসেছে, যা মস্তিষ্কে বসানো যাবে তাকে ঠিকঠাক করার জন্য। তাঁরা আশা করছেন এর মাধ্যমে ভয়াবহ বিষণ্নতায় (ডিপ্রেশন) আক্রান্তদের জাগিয়ে তোলা যাবে, মুক্ত করা যাবে।
আধুনিককালের এই মস্তিষ্ক প্রক্ষালন যন্ত্রকে বলা হচ্ছে ডিপ ব্রেইন স্টিমুলেশন (ডিবিএস)। মস্তিষ্কের সেই বৈদ্যুতিক সংকেতগুলোকে এটি লক্ষ্যবস্তু করে, যা এর কার্যক্ষমতাকে ফিরিয়ে আনে। ১৫ মাস পরীক্ষার পর উচ্চমাত্রার বিষণ্নতার চিকিৎসায় এই পদ্ধতির প্রয়োগ করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। এতে সাফল্যও এসেছে। এই সাফল্য সারা বিশ্বের বিষণ্নতায় আক্রান্ত কোটি কোটি মানুষের চিকিৎসায় নতুন আশার সঞ্চার করেছে।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এ সম্পর্কিত প্রতিবেদনে বলা হয়, সারা বিশ্বে ভয়াবহ বিষণ্নতায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ২৮ কোটির কম নয়। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে অবসন্ন ভাব, হতাশা, উৎসাহ, উদ্দীপনা ও আগ্রহের ভীষণ অভাব এবং এই সব মিলিয়ে জীবনকে অর্থহীন বলে মনে করা। এ ধরনের ব্যক্তিরা জীবন উপভোগের কোনো পথই খুঁজে পান না। নানাভাবেই এর চিকিৎসা করা হয়। নিয়মিত কাউন্সেলিং থেকে শুরু করে ওষুধ গ্রহণ—সবই রয়েছে এই চিকিৎসার অঙ্গ হিসেবে। কিন্তু এত কিছু করেও অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় বিষণ্নতায় ভোগাটাই সারা জীবনের বাস্তবতা হয়ে দাঁড়ায়। এ থেকে নিস্তার পাওয়ার উপায় এত দিন ধরে খোঁজা হচ্ছিল। এখন বিজ্ঞানীরা সেই সুখবরই দিলেন। তাঁরা জানালেন—এমন ঘাঁটি গেড়ে থাকা বিষণ্নতার চিকিৎসাও সম্ভব। আর তা এই আধুনিক মস্তিষ্ক প্রক্ষালনের মাধ্যমে। আর এই প্রক্ষালন করবে ডিবিএস।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, সান ফ্রান্সেসকোর (ইউসিএসএফ) একদল বিজ্ঞানী বিষণ্নতা মোকাবিলায় নতুন একটি চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। তাঁরা মস্তিষ্কে এমন একটি বস্তু সংযোজনে সফল হয়েছে, যা পেসমেকারের মতো কাজ করবে। এখন পর্যন্ত এটি একজন রোগীর ওপর পরীক্ষা করা হয়েছে, যেখানে সাফল্য পাওয়া গেছে।
কীভাবে কাজ করে এই ডিবিএস? ইউসিএসএফ ওয়েইল ইনস্টিটিউট ফর নিউরোসায়েন্সেসের মনরোগবিদ্যার অধ্যাপক ড. অ্যান্ড্রু ক্রিস্টাল বলেন, চিকিৎসা-সাধ্যের বাইরে থাকা বিষণ্নতা নিরাময়ে আমরা একটি নতুন চেষ্টা চালাই। এ প্রক্রিয়ায় মস্তিষ্কে একটি বস্তু স্থাপন করা হয়, যাকে পেসমেকার বলা যেতে পারে। এই পেসমেকার মস্তিষ্কের সেই অংশগুলোকে চিহ্নিত করে, যেগুলো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মধ্যে থাকা বিষণ্নতার লক্ষণগুলোর সঙ্গে যুক্ত। মস্তিষ্কের সেই অংশগুলোর বৈদ্যুতিক সংকেতগুলোকে চিহ্নিত করাটাই প্রথম কাজ। এবার আসে দ্বিতীয় কাজ। এই পর্যায়ে বিষণ্নতা দূরের জন্য বৈদ্যুতিক সংকেত পাঠানো হয়। অর্থাৎ, উদ্দীপনা ও উৎসাহ তৈরি এবং আনন্দের অনুভূতিগুলোকে জাগিয়ে তোলার জন্য সংকেত পাঠানো হয়।
কী এই ডিবিএস? এতে থাকে দুটি ইলেকট্রোড। এর একটি বিষণ্নতার সঙ্গে যুক্ত মস্তিষ্কের বিভিন্ন সংকেত শনাক্তের কাজ করে। অন্যটি ঠিক বিপরীত সংকেত উৎপন্ন করে মস্তিষ্ককে উদ্দীপ্ত করতে সচেষ্ট থাকে।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিষণ্নতা মস্তিষ্কের বিভিন্ন এলাকার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। ডিবিএসের সুবিধা হলো এটি বিষণ্নতার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত যেকোনো সংকেতকে শনাক্ত করে তা নিরসনে কাজ করে। আর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এটি প্রয়োজন ছাড়া সক্রিয় হয় না। অর্থাৎ, কোনো ব্যক্তি বিষণ্নতা থেকে মুক্তি পেতে এই পেসমেকার লাগানোর পর যদি সুস্থ হয়ে যান, তবে মস্তিষ্কের ভেতরে পেসমেকারটি থাকলেও, তা অক্রিয় অবস্থায় থাকবে। আবার কয়েক বছর পর যদি তিনি আবার বিষণ্নতায় আক্রান্ত হন, তবে এই ডিবিএস আবার সক্রিয় হয়ে উঠবে।
ইউসিএসএফের গবেষকেরা জানান, তাঁদের পরীক্ষাধীন রোগীর নাম সারাহ। সারাহ অবশ্য ছদ্মনাম। চিকিৎসার পর সারাহ সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘মনে হচ্ছিল জীবনটা শেষ। ভীষণ ডিপ্রেসড ছিলাম। এটা কোনো জীবনই ছিল না। এই চিকিৎসা আমাকে জীবনটা ফিরিয়ে দিয়েছে।’
আরও পড়ুন:
‘হীরক রাজার দেশে’ মনে আছে? কেউ একটু এদিক-ওদিক হলেই হীরক রাজা তাকে পাঠিয়ে দিতেন যন্তর-মন্তরে। সেখানে ছিল মিস্তষ্ক প্রক্ষালন যন্ত্র। আর এই যন্ত্রে একবার মাথা দিলে মস্তিষ্কের জটিল অলিগলিতে কী যেন কী হয়ে যেত। বিজ্ঞানীরা এখন জানাচ্ছেন, এমন এক যন্ত্র হাতে চলে এসেছে, যা মস্তিষ্কে বসানো যাবে তাকে ঠিকঠাক করার জন্য। তাঁরা আশা করছেন এর মাধ্যমে ভয়াবহ বিষণ্নতায় (ডিপ্রেশন) আক্রান্তদের জাগিয়ে তোলা যাবে, মুক্ত করা যাবে।
আধুনিককালের এই মস্তিষ্ক প্রক্ষালন যন্ত্রকে বলা হচ্ছে ডিপ ব্রেইন স্টিমুলেশন (ডিবিএস)। মস্তিষ্কের সেই বৈদ্যুতিক সংকেতগুলোকে এটি লক্ষ্যবস্তু করে, যা এর কার্যক্ষমতাকে ফিরিয়ে আনে। ১৫ মাস পরীক্ষার পর উচ্চমাত্রার বিষণ্নতার চিকিৎসায় এই পদ্ধতির প্রয়োগ করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। এতে সাফল্যও এসেছে। এই সাফল্য সারা বিশ্বের বিষণ্নতায় আক্রান্ত কোটি কোটি মানুষের চিকিৎসায় নতুন আশার সঞ্চার করেছে।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এ সম্পর্কিত প্রতিবেদনে বলা হয়, সারা বিশ্বে ভয়াবহ বিষণ্নতায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ২৮ কোটির কম নয়। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে অবসন্ন ভাব, হতাশা, উৎসাহ, উদ্দীপনা ও আগ্রহের ভীষণ অভাব এবং এই সব মিলিয়ে জীবনকে অর্থহীন বলে মনে করা। এ ধরনের ব্যক্তিরা জীবন উপভোগের কোনো পথই খুঁজে পান না। নানাভাবেই এর চিকিৎসা করা হয়। নিয়মিত কাউন্সেলিং থেকে শুরু করে ওষুধ গ্রহণ—সবই রয়েছে এই চিকিৎসার অঙ্গ হিসেবে। কিন্তু এত কিছু করেও অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় বিষণ্নতায় ভোগাটাই সারা জীবনের বাস্তবতা হয়ে দাঁড়ায়। এ থেকে নিস্তার পাওয়ার উপায় এত দিন ধরে খোঁজা হচ্ছিল। এখন বিজ্ঞানীরা সেই সুখবরই দিলেন। তাঁরা জানালেন—এমন ঘাঁটি গেড়ে থাকা বিষণ্নতার চিকিৎসাও সম্ভব। আর তা এই আধুনিক মস্তিষ্ক প্রক্ষালনের মাধ্যমে। আর এই প্রক্ষালন করবে ডিবিএস।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, সান ফ্রান্সেসকোর (ইউসিএসএফ) একদল বিজ্ঞানী বিষণ্নতা মোকাবিলায় নতুন একটি চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। তাঁরা মস্তিষ্কে এমন একটি বস্তু সংযোজনে সফল হয়েছে, যা পেসমেকারের মতো কাজ করবে। এখন পর্যন্ত এটি একজন রোগীর ওপর পরীক্ষা করা হয়েছে, যেখানে সাফল্য পাওয়া গেছে।
কীভাবে কাজ করে এই ডিবিএস? ইউসিএসএফ ওয়েইল ইনস্টিটিউট ফর নিউরোসায়েন্সেসের মনরোগবিদ্যার অধ্যাপক ড. অ্যান্ড্রু ক্রিস্টাল বলেন, চিকিৎসা-সাধ্যের বাইরে থাকা বিষণ্নতা নিরাময়ে আমরা একটি নতুন চেষ্টা চালাই। এ প্রক্রিয়ায় মস্তিষ্কে একটি বস্তু স্থাপন করা হয়, যাকে পেসমেকার বলা যেতে পারে। এই পেসমেকার মস্তিষ্কের সেই অংশগুলোকে চিহ্নিত করে, যেগুলো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মধ্যে থাকা বিষণ্নতার লক্ষণগুলোর সঙ্গে যুক্ত। মস্তিষ্কের সেই অংশগুলোর বৈদ্যুতিক সংকেতগুলোকে চিহ্নিত করাটাই প্রথম কাজ। এবার আসে দ্বিতীয় কাজ। এই পর্যায়ে বিষণ্নতা দূরের জন্য বৈদ্যুতিক সংকেত পাঠানো হয়। অর্থাৎ, উদ্দীপনা ও উৎসাহ তৈরি এবং আনন্দের অনুভূতিগুলোকে জাগিয়ে তোলার জন্য সংকেত পাঠানো হয়।
কী এই ডিবিএস? এতে থাকে দুটি ইলেকট্রোড। এর একটি বিষণ্নতার সঙ্গে যুক্ত মস্তিষ্কের বিভিন্ন সংকেত শনাক্তের কাজ করে। অন্যটি ঠিক বিপরীত সংকেত উৎপন্ন করে মস্তিষ্ককে উদ্দীপ্ত করতে সচেষ্ট থাকে।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিষণ্নতা মস্তিষ্কের বিভিন্ন এলাকার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। ডিবিএসের সুবিধা হলো এটি বিষণ্নতার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত যেকোনো সংকেতকে শনাক্ত করে তা নিরসনে কাজ করে। আর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এটি প্রয়োজন ছাড়া সক্রিয় হয় না। অর্থাৎ, কোনো ব্যক্তি বিষণ্নতা থেকে মুক্তি পেতে এই পেসমেকার লাগানোর পর যদি সুস্থ হয়ে যান, তবে মস্তিষ্কের ভেতরে পেসমেকারটি থাকলেও, তা অক্রিয় অবস্থায় থাকবে। আবার কয়েক বছর পর যদি তিনি আবার বিষণ্নতায় আক্রান্ত হন, তবে এই ডিবিএস আবার সক্রিয় হয়ে উঠবে।
ইউসিএসএফের গবেষকেরা জানান, তাঁদের পরীক্ষাধীন রোগীর নাম সারাহ। সারাহ অবশ্য ছদ্মনাম। চিকিৎসার পর সারাহ সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘মনে হচ্ছিল জীবনটা শেষ। ভীষণ ডিপ্রেসড ছিলাম। এটা কোনো জীবনই ছিল না। এই চিকিৎসা আমাকে জীবনটা ফিরিয়ে দিয়েছে।’
আরও পড়ুন:
বিশ্বে প্রথমবারের মতো সফলভাবে স্টেম সেল প্রতিস্থাপন করে তিনজন ব্যক্তির চোখের ঝাপসা দৃষ্টি সারিয়ে ফেলেছেন জাপানের গবেষকেরা। চোখের কর্নিয়ার গুরুতর ক্ষতির কারণে তাদের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে গিয়েছিল। এই গবেষণামূলক চিকিৎসা পদ্ধতিটি আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
২৭ মিনিট আগেঅ্যাজমা বা হাঁপানিতে আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে শিশুদের স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার সম্পর্ক রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এক গবেষণায় এমন তথ্য জানা যায়।
১ দিন আগেবিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যগত অসমতা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। চারটি দেশে ডায়াবেটিস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা মিলিয়ে বৈশ্বিক ডায়াবেটিসের অর্ধেকেরও বেশি। ২০২২ সালে ভারতে ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা ২১ কোটি ২০ লাখ, যা বৈশ্বিক হিসাবের চার ভাগের এক ভাগ।
১ দিন আগেশারীরিক পুনর্বাসন চিকিৎসার গুরুত্ব তুলে ধরতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) আজ বুধবার ‘আন্তর্জাতিক শারীরিক পুনর্বাসন চিকিৎসা (পিএমআর) দিবস ২০২৪’ উদযাপিত হয়েছে। বাংলাদেশ সোসাইটি অফ ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন (বিএসপিএমআর) এবং বিএসএমএমইউ-এর ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড
২ দিন আগে