ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
হাট্টিমা টিম টিম/তারা মাঠে পাড়ে ডিম/তাদের খাড়া দুটো শিং/তারা হাট্টিমা টিম টিম—ছোটবেলায় এই ছড়া কে না পড়েছে! কিন্তু কখনো কি মনে প্রশ্ন জেগেছে, ছড়াটি মাত্র চার লাইনের, নাকি আরও বড়? যদি এখন শোনেন, ছোটবেলা থেকে পড়ে বা শুনে বড় হওয়া চার লাইনের এই ছড়া এইটুকুই নয় বরং ৫২ লাইনের! তখন নিশ্চয় বিস্মিত হবেন!
‘গল্পের লিংক রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প’ নামের প্রায় ৬৭ হাজার সদস্যের একটি গ্রুপে গত ২৩ জানুয়ারি ‘হাট্টিমা টিম টিম’ ছড়াটি নিয়ে এমনই একটি পোস্ট করেন মাইশা আক্তার নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী। পোস্টে তিনি লেখেন, ‘এত বছর পর্যন্ত জানতাম এই হাট্টি মা টিম টিম ছড়াটা ৪ লাইন। আসলে এটা রোকনুজ্জামান খানের ৫২ লাইনের অসম্ভব সুন্দর একটি ছড়া।’
তাঁর পোস্টটি আজ শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ২ হাজারবারের বেশি শেয়ার হয়েছে। এতে রিয়েকশন পড়েছে ১৪ হাজার, মন্তব্য পড়েছে প্রায় সাড়ে ৫০০। এসব কমেন্টে অনেক মন্তব্যকারীদের এত বছর পরে এসে ছড়াটি ৫২ লাইন দেখে অভিভূত হতে দেখা গেছে। কিন্তু ছড়াটি কি আসলেই ৫২ লাইনের? এটির লেখক কি রোকনুজ্জামান খান দাদা ভাই?
এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে কি–ওয়ার্ড অনুসন্ধানে ব্লগ সাইট সামহ্যোয়ার ইন ব্লগে নাদিয়া জামান নামে একজন ব্লগারের লেখা ব্লগ খুঁজে পাওয়া যায়। নাদিয়া জামান ব্লগসাইটটিতে নিজের পরিচয়ে লিখেছেন, ‘ছড়া সব করে রব। সবাই ছড়া পড়ুন, মনকে প্রফুল্ল রাখুন। এই মাধ্যমটি শুধুমাত্র কল্পনার রাজ্যে বসবাসকারীদের চিন্তার খোরাক নয় এর থেকে বেশি কিছু। বেশি বেশি ছড়া আর অল্প কিছু কবিতা............মনে হয় খারাপ লাগবে না...।’ তাঁর ব্লগটিতে অনেকগুলো ছড়া রয়েছে।
২০১৮ সালের ২৫ মার্চ পোস্ট করা ‘একটি হাট্টিমা টিম ছড়া এবং তারপর...’ নামের ওই ব্লগটিতে নাদিয়া জামান লেখেন, ‘লেখা লেখি করি না অনেক দিন হয়ে গেল। পড়াশোনা, কাজ আর সংসার এসবের ভিড়ে লেখার অভ্যাসটা আর জায়গা করে নিতে না পেরে কীভাবে যে হারিয়ে গেল তা টের ও পেলাম না। যাক সে কথা...সপ্তা খানিক আগে হঠাৎ ফেসবুকে বেশ কিছু ম্যাসেজ পেলাম, বিষয় ছিল হাট্টিমা টিম ছড়াটির প্রথম ৪৮ লাইন! এত সুন্দর একটা ছড়ার সম্পর্কে এই ভুল তথ্যের ছড়াছড়ি দেখে তা দূর করার জন্য কিছু একটা না লিখলেই যে নয়।’
এরপর তিনি লেখেন, ‘দাদাভাই (রোকনুজ্জামান খান) এর লেখা ৪ লাইনের চমৎকার শিশুতোষ ছড়া হাট্টিমা টিম টিম। ২০১২ সালের দিকে লিখেছিলাম প্রথম দিকের লাইনগুলো। দাদা ভাইয়ের লেখা চারটি লাইন ছোটবেলায় পড়েন নাই এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না, আর তাই যখন আমি এই ছড়াটির প্রথম দিকের লাইন লিখেছি তখন রেফারেন্সিংয়ের প্রয়োজন ও বোধ করিনি। বিভিন্ন অনলাইন ব্লগ আর ফোরামে এক্টিভ থাকার কারণে ছড়াটি সে সময় পোস্ট ও করেছিলাম আর চমৎকার সব রেসপন্স ও পেয়েছিলাম কিন্তু এই ছড়া নিয়ে যে এত বিভ্রান্তির শুরু হতে পারে তা ঘুণাক্ষরেও মনে আসেনি।’
পরে তাঁর ব্লগ খুঁজে ২০১২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি হাট্টিমাটিম গল্প নামে আরেকটি ব্লগ পাওয়া যায়। এখানে ‘হাট্টিমা টিম টিম/তারা মাঠে পাড়ে ডিম/তাদের খাড়া দুটো শিং/তারা হাট্টিমা টিম টিম— এই লাইনগুলোসহ আরও ৪৮ লাইন রয়েছে। ব্লগটিতে ছড়াটি শুরু হয়েছে টাট্টুকে আজ আনতে দিলাম/বাজার থেকে শিম/মনের ভুলে আনলো কিনে/মস্ত একটা ডিম’—পংক্তিগুলো দিয়ে। এই লাইনগুলোসহ বাকি লাইনগুলোর সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল লাইনগুলোর মিল রয়েছে।
ব্লগটির মন্তব্যের ঘরে ‘অদ্ভূত উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ’ নামে একজন ব্লগার কমেন্ট করে জানতে চান, ‘শেষের ৪ লাইনই তো আসল ছড়া, তাই না? খুব ভাল হয়েছে এক্সটেনশন।’ উত্তরে নাদিয়া জামান লেখেন, ‘হুম, শেষের চার লাইন আসল ছড়া কিন্তু আমারটাও সাথে আসলই...।’
নওশাদ জামিল নামে আরেকজন ব্লগার লেখেন, ‘এ ছড়াটাতো আপনার লেখা না। রোকনুজ্জামান খানের। উনার নাম দেখতে পাচ্ছিনা ক্যানো?’ উত্তরে নাদিয়া জামান লেখেন, ‘শেষ চারটি লাইন উনার থেকে নেয়া আর প্রথম ৪৮ লাইন আমার কল্পনা, কোথা থেকে এলো এই হাট্টিমা টিম তা লিখেছি।’
নাদিয়া জামানের ২০১২ সালে ছড়া নিয়ে লেখা এই ব্লগ ও ২০১৮ সালের ব্লগ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ‘হাট্টিমা টিম টিম’ ছড়াটি ৪ লাইনেরই। বাকি ৪৮ লাইন ব্লগার নাদিয়া জামানের লেখা।
‘হাট্টিমা টিম টিম’ ছড়াটি ৪ লাইন হওয়া প্রসঙ্গে আরও নিশ্চিত হওয়া যায় প্রাসঙ্গিক কি–ওয়ার্ড সার্চে পাওয়া ‘খুকুমনির ছড়া’ নামের একটি বই থেকে। বইটি একটি ছড়া সংকলন। বাংলা ১৩০৬ বঙ্গাব্দ, ইংরেজি ১৮৯৯ সালে কলকাতার ৬৪ নং কলেজ স্ট্রিটের সিটি বুক সোসাইটি থেকে এটি প্রকাশিত হয়। বইটি সংকলন ও প্রকাশ করেন যোগীন্দ্রনাথ সরকার। বইটির ৩৭ নম্বর পৃষ্ঠায় ‘হট্টিমা টিম টিম’ নামে মূল ছড়াটি খুঁজে পাওয়া যায়। এখানে ছড়াটি ৪ লাইনই অর্থাৎ ‘হট্টিমা টিম টিম/তারা মাঠে পাড়ে ডিম/তাদের খাড়া দুটো শিং/তারা হাট্টিমা টিম টিম’—উল্লেখ রয়েছে। তবে এটির ছড়াকারের নাম উল্লেখ করা হয়নি। ছড়াটির মূল লেখক কে তা নিয়ে ইন্টারনেটে বিতর্ক খুঁজে পাওয়া যায়। কারো কারো মতে, এটি সুকুমার রায়ের লেখা, আবার কারো মতে অন্নদাশঙ্কর রায়ের।
নাদিয়া জামান তাঁর ব্লগে ছড়াটি রোকনুজ্জামান খান দাদা ভাইয়ের বলে উল্লেখ করেছেন। তবে রোকনুজ্জামান খানের জীবনী নিয়ে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত খালেক বিন জয়েনউদ্দিনের লেখা রোকনুজ্জামান খানের জীবনী গ্রন্থমালা ‘রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই’ থেকে জানা যায়, রোকনুজ্জামান খান ১৯২৫ সালে রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। যেহেতু তাঁর জন্মের আগে থেকেই হাট্টিমা টিম টিম ছড়াটির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়, তাই এটি তাঁর লেখা হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
তবে রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই গ্রন্থটি থেকে আরও জানা যায়, রোকনুজ্জামান খানের একটি বইয়ের নাম ‘হাটটিমা টিম।’ যেটি তাঁর প্রকাশিত তৃতীয় গ্রন্থ এবং প্রথম ছড়াগ্রন্থ। এটি ১৯৬২ সালে ঢাকার কাকলী প্রকাশনী থেকে প্রথম প্রকাশিত হয়। দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয় ১৯৭৫ সালে ঢাকার মুক্তধারা প্রকাশনী থেকে এবং এটির তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয় ১৯৯৭ সালে ব্র্যাক থেকে। বইটির প্রচ্ছদ ও বহুরঙা অঙ্গসজ্জা করেন শিল্পী হাশেম খান।
বইটিতেই ‘হাটটিমা টিম’ নামে রোকনুজ্জামান খানের লেখা ছড়াটি রয়েছে। তাঁর লেখা ছড়াটি ২২ লাইনের। ছড়াটি শুরু হয়েছে ‘বগার বাড়ি মাছের হাঁড়ি/গড়াগড়ি যায়/বাঁশের মাথায় চড়ে বগা/পাবদা-পুঁটি খায়’—পঙক্তিমালা দিয়ে। ছড়াটিতে ‘হাট্টিমা টিম টিম/তারা মাঠে পাড়ে ডিম/তাদের খাড়া দুটো শিং/তারা হাট্টিমা টিম টিম’ লাইনগুলো নেই।
স্পষ্টত, স্কুলে পড়া ‘হাট্টিমা টিম টিম’ ছড়াটি চার লাইনেরই। এর সঙ্গে অতিরিক্ত যে ৪৮ লাইন প্রচার করা হচ্ছে সেটি নাদিয়া জামান নামে একজন ব্লগার ও ছড়াকারের লেখা। এ ছাড়া ছড়াটি শিশু সাহিত্যিক ও সাংবাদিক রোকনুজ্জামান খানের লেখা নয়। যদিও তাঁর লেখা ‘হাটটিমা টিম’ নামে একটি বই ও ছড়া রয়েছে।
হাট্টিমা টিম টিম/তারা মাঠে পাড়ে ডিম/তাদের খাড়া দুটো শিং/তারা হাট্টিমা টিম টিম—ছোটবেলায় এই ছড়া কে না পড়েছে! কিন্তু কখনো কি মনে প্রশ্ন জেগেছে, ছড়াটি মাত্র চার লাইনের, নাকি আরও বড়? যদি এখন শোনেন, ছোটবেলা থেকে পড়ে বা শুনে বড় হওয়া চার লাইনের এই ছড়া এইটুকুই নয় বরং ৫২ লাইনের! তখন নিশ্চয় বিস্মিত হবেন!
‘গল্পের লিংক রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প’ নামের প্রায় ৬৭ হাজার সদস্যের একটি গ্রুপে গত ২৩ জানুয়ারি ‘হাট্টিমা টিম টিম’ ছড়াটি নিয়ে এমনই একটি পোস্ট করেন মাইশা আক্তার নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী। পোস্টে তিনি লেখেন, ‘এত বছর পর্যন্ত জানতাম এই হাট্টি মা টিম টিম ছড়াটা ৪ লাইন। আসলে এটা রোকনুজ্জামান খানের ৫২ লাইনের অসম্ভব সুন্দর একটি ছড়া।’
তাঁর পোস্টটি আজ শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ২ হাজারবারের বেশি শেয়ার হয়েছে। এতে রিয়েকশন পড়েছে ১৪ হাজার, মন্তব্য পড়েছে প্রায় সাড়ে ৫০০। এসব কমেন্টে অনেক মন্তব্যকারীদের এত বছর পরে এসে ছড়াটি ৫২ লাইন দেখে অভিভূত হতে দেখা গেছে। কিন্তু ছড়াটি কি আসলেই ৫২ লাইনের? এটির লেখক কি রোকনুজ্জামান খান দাদা ভাই?
এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে কি–ওয়ার্ড অনুসন্ধানে ব্লগ সাইট সামহ্যোয়ার ইন ব্লগে নাদিয়া জামান নামে একজন ব্লগারের লেখা ব্লগ খুঁজে পাওয়া যায়। নাদিয়া জামান ব্লগসাইটটিতে নিজের পরিচয়ে লিখেছেন, ‘ছড়া সব করে রব। সবাই ছড়া পড়ুন, মনকে প্রফুল্ল রাখুন। এই মাধ্যমটি শুধুমাত্র কল্পনার রাজ্যে বসবাসকারীদের চিন্তার খোরাক নয় এর থেকে বেশি কিছু। বেশি বেশি ছড়া আর অল্প কিছু কবিতা............মনে হয় খারাপ লাগবে না...।’ তাঁর ব্লগটিতে অনেকগুলো ছড়া রয়েছে।
২০১৮ সালের ২৫ মার্চ পোস্ট করা ‘একটি হাট্টিমা টিম ছড়া এবং তারপর...’ নামের ওই ব্লগটিতে নাদিয়া জামান লেখেন, ‘লেখা লেখি করি না অনেক দিন হয়ে গেল। পড়াশোনা, কাজ আর সংসার এসবের ভিড়ে লেখার অভ্যাসটা আর জায়গা করে নিতে না পেরে কীভাবে যে হারিয়ে গেল তা টের ও পেলাম না। যাক সে কথা...সপ্তা খানিক আগে হঠাৎ ফেসবুকে বেশ কিছু ম্যাসেজ পেলাম, বিষয় ছিল হাট্টিমা টিম ছড়াটির প্রথম ৪৮ লাইন! এত সুন্দর একটা ছড়ার সম্পর্কে এই ভুল তথ্যের ছড়াছড়ি দেখে তা দূর করার জন্য কিছু একটা না লিখলেই যে নয়।’
এরপর তিনি লেখেন, ‘দাদাভাই (রোকনুজ্জামান খান) এর লেখা ৪ লাইনের চমৎকার শিশুতোষ ছড়া হাট্টিমা টিম টিম। ২০১২ সালের দিকে লিখেছিলাম প্রথম দিকের লাইনগুলো। দাদা ভাইয়ের লেখা চারটি লাইন ছোটবেলায় পড়েন নাই এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না, আর তাই যখন আমি এই ছড়াটির প্রথম দিকের লাইন লিখেছি তখন রেফারেন্সিংয়ের প্রয়োজন ও বোধ করিনি। বিভিন্ন অনলাইন ব্লগ আর ফোরামে এক্টিভ থাকার কারণে ছড়াটি সে সময় পোস্ট ও করেছিলাম আর চমৎকার সব রেসপন্স ও পেয়েছিলাম কিন্তু এই ছড়া নিয়ে যে এত বিভ্রান্তির শুরু হতে পারে তা ঘুণাক্ষরেও মনে আসেনি।’
পরে তাঁর ব্লগ খুঁজে ২০১২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি হাট্টিমাটিম গল্প নামে আরেকটি ব্লগ পাওয়া যায়। এখানে ‘হাট্টিমা টিম টিম/তারা মাঠে পাড়ে ডিম/তাদের খাড়া দুটো শিং/তারা হাট্টিমা টিম টিম— এই লাইনগুলোসহ আরও ৪৮ লাইন রয়েছে। ব্লগটিতে ছড়াটি শুরু হয়েছে টাট্টুকে আজ আনতে দিলাম/বাজার থেকে শিম/মনের ভুলে আনলো কিনে/মস্ত একটা ডিম’—পংক্তিগুলো দিয়ে। এই লাইনগুলোসহ বাকি লাইনগুলোর সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল লাইনগুলোর মিল রয়েছে।
ব্লগটির মন্তব্যের ঘরে ‘অদ্ভূত উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ’ নামে একজন ব্লগার কমেন্ট করে জানতে চান, ‘শেষের ৪ লাইনই তো আসল ছড়া, তাই না? খুব ভাল হয়েছে এক্সটেনশন।’ উত্তরে নাদিয়া জামান লেখেন, ‘হুম, শেষের চার লাইন আসল ছড়া কিন্তু আমারটাও সাথে আসলই...।’
নওশাদ জামিল নামে আরেকজন ব্লগার লেখেন, ‘এ ছড়াটাতো আপনার লেখা না। রোকনুজ্জামান খানের। উনার নাম দেখতে পাচ্ছিনা ক্যানো?’ উত্তরে নাদিয়া জামান লেখেন, ‘শেষ চারটি লাইন উনার থেকে নেয়া আর প্রথম ৪৮ লাইন আমার কল্পনা, কোথা থেকে এলো এই হাট্টিমা টিম তা লিখেছি।’
নাদিয়া জামানের ২০১২ সালে ছড়া নিয়ে লেখা এই ব্লগ ও ২০১৮ সালের ব্লগ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ‘হাট্টিমা টিম টিম’ ছড়াটি ৪ লাইনেরই। বাকি ৪৮ লাইন ব্লগার নাদিয়া জামানের লেখা।
‘হাট্টিমা টিম টিম’ ছড়াটি ৪ লাইন হওয়া প্রসঙ্গে আরও নিশ্চিত হওয়া যায় প্রাসঙ্গিক কি–ওয়ার্ড সার্চে পাওয়া ‘খুকুমনির ছড়া’ নামের একটি বই থেকে। বইটি একটি ছড়া সংকলন। বাংলা ১৩০৬ বঙ্গাব্দ, ইংরেজি ১৮৯৯ সালে কলকাতার ৬৪ নং কলেজ স্ট্রিটের সিটি বুক সোসাইটি থেকে এটি প্রকাশিত হয়। বইটি সংকলন ও প্রকাশ করেন যোগীন্দ্রনাথ সরকার। বইটির ৩৭ নম্বর পৃষ্ঠায় ‘হট্টিমা টিম টিম’ নামে মূল ছড়াটি খুঁজে পাওয়া যায়। এখানে ছড়াটি ৪ লাইনই অর্থাৎ ‘হট্টিমা টিম টিম/তারা মাঠে পাড়ে ডিম/তাদের খাড়া দুটো শিং/তারা হাট্টিমা টিম টিম’—উল্লেখ রয়েছে। তবে এটির ছড়াকারের নাম উল্লেখ করা হয়নি। ছড়াটির মূল লেখক কে তা নিয়ে ইন্টারনেটে বিতর্ক খুঁজে পাওয়া যায়। কারো কারো মতে, এটি সুকুমার রায়ের লেখা, আবার কারো মতে অন্নদাশঙ্কর রায়ের।
নাদিয়া জামান তাঁর ব্লগে ছড়াটি রোকনুজ্জামান খান দাদা ভাইয়ের বলে উল্লেখ করেছেন। তবে রোকনুজ্জামান খানের জীবনী নিয়ে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত খালেক বিন জয়েনউদ্দিনের লেখা রোকনুজ্জামান খানের জীবনী গ্রন্থমালা ‘রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই’ থেকে জানা যায়, রোকনুজ্জামান খান ১৯২৫ সালে রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। যেহেতু তাঁর জন্মের আগে থেকেই হাট্টিমা টিম টিম ছড়াটির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়, তাই এটি তাঁর লেখা হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
তবে রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই গ্রন্থটি থেকে আরও জানা যায়, রোকনুজ্জামান খানের একটি বইয়ের নাম ‘হাটটিমা টিম।’ যেটি তাঁর প্রকাশিত তৃতীয় গ্রন্থ এবং প্রথম ছড়াগ্রন্থ। এটি ১৯৬২ সালে ঢাকার কাকলী প্রকাশনী থেকে প্রথম প্রকাশিত হয়। দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয় ১৯৭৫ সালে ঢাকার মুক্তধারা প্রকাশনী থেকে এবং এটির তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয় ১৯৯৭ সালে ব্র্যাক থেকে। বইটির প্রচ্ছদ ও বহুরঙা অঙ্গসজ্জা করেন শিল্পী হাশেম খান।
বইটিতেই ‘হাটটিমা টিম’ নামে রোকনুজ্জামান খানের লেখা ছড়াটি রয়েছে। তাঁর লেখা ছড়াটি ২২ লাইনের। ছড়াটি শুরু হয়েছে ‘বগার বাড়ি মাছের হাঁড়ি/গড়াগড়ি যায়/বাঁশের মাথায় চড়ে বগা/পাবদা-পুঁটি খায়’—পঙক্তিমালা দিয়ে। ছড়াটিতে ‘হাট্টিমা টিম টিম/তারা মাঠে পাড়ে ডিম/তাদের খাড়া দুটো শিং/তারা হাট্টিমা টিম টিম’ লাইনগুলো নেই।
স্পষ্টত, স্কুলে পড়া ‘হাট্টিমা টিম টিম’ ছড়াটি চার লাইনেরই। এর সঙ্গে অতিরিক্ত যে ৪৮ লাইন প্রচার করা হচ্ছে সেটি নাদিয়া জামান নামে একজন ব্লগার ও ছড়াকারের লেখা। এ ছাড়া ছড়াটি শিশু সাহিত্যিক ও সাংবাদিক রোকনুজ্জামান খানের লেখা নয়। যদিও তাঁর লেখা ‘হাটটিমা টিম’ নামে একটি বই ও ছড়া রয়েছে।
বাংলাদেশে এক হিন্দু নারীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে দাবিতে মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে ১৮ সেকেন্ডের ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে। এতে দেখা যাচ্ছে, রক্তাক্ত এক নারীকে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য কোথাও নিয়ে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দীপক শর্মা নামের একটি ভারতীয় এক্স হ্যান্ডল থেকে ভিডিওটি টুইট করে দাবি করা হয়, ‘ভিড
১ দিন আগেআওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য সাবরিনা চৌধুরী নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় এমন দাবিতে স্ক্রিনশটটি পোস্ট করে লেখেন, ‘Sabnam Faria কিছুক্ষণ আগে একটা পোস্ট করলেন ৫ মিনিট পর ডিলিট করে দিলেন।’
২ দিন আগেএলিস থমাস নামের এক ওপেন সোর্স ইন্টেলিজেন্স গবেষকের বরাত দিয়ে জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে জানিয়েছে, ট্রাম্পকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে সাহায্য করেছে এআই পরিচালিত বট নেটওয়ার্ক।
৩ দিন আগেগত বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) ‘প্রবাসী জীবন’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। পোস্টটি আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক শেয়ার হয়েছে। রিয়েকশন পড়েছে ৪ হাজারের বেশি। ভিডিওটি দেখা হয়েছে ৪২ হাজার বার।
৩ দিন আগে