ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
বিশ্ব জুড়ে ১ এপ্রিল বোকা বানানোর দিন হিসেবে পরিচিত।
‘এপ্রিল ফুলস ডে’র জন্ম ইতিহাস নিয়ে বিতর্ক আছে। সভ্যতার ইতিহাসে ঠিক কোন বছর থেকে এই দিনটি চালু হয়েছে তা মানুষের কাছে আজ পর্যন্ত অজানা। ইংরেজি সাহিত্যের জনক জিওফ্রে চসার ১৩৯২ সালে লেখা ‘নানস প্রিস্ট টেল’ কবিতায় মার্চ মাসের একটি ৩২তম দিনের কথা উল্লেখ করেন। কারও কারও মতে, এই ৩২তম দিনটি বলতে চসার পয়লা এপ্রিলকে বুঝিয়েছিলেন। তবে ঐতিহাসিক পিটার ট্রাভিস বলেন, ৩২তম দিন বলতে চসার কোনো নির্দিষ্ট দিনের কথা বোঝাননি। তিনি মূলত মধ্যযুগীয় দার্শনিকতা নিয়ে ঠাট্টাচ্ছলে এটি ব্যবহার করেছেন।
এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা থেকে জানা যায় ‘এপ্রিল ফুল’ দিনটির উৎপত্তি মূলত রোমান উৎসব ‘হিলারিয়া’ থেকে। যা অতীতে পালিত হত ২৫ মার্চ। তারপর ধীরে ধীরে এই উৎসব আশেপাশের দেশগুলিতেও ছড়িয়ে পড়ে।
অন্যদিকে রোমানদের মৃত্যু দেবতা প্লুটো যখন তার “স্ত্রী” পারসিফন-কে অপহরণ করে আনেন, তখন পারসিফনের মা সেরিস মেয়েকে অনেক খোঁজার চেষ্টা করেন, কিন্তু বোকার মত অনেক জায়গা খুঁজেও যখন মেয়েকে পেলেন না তখন হতাশ হলেন কারণ, মেয়ে তখন আন্ডারওয়ার্ল্ডে অর্থাৎ মাটির গভীরে পাতালে প্রবেশ করেছে। সেরিসের বোকামির কথা স্মরণ করে রোমানরা ১ এপ্রিল ‘বোকা দিবস’পালন করা শুরু হয়।
১ এপ্রিলের সাথে জড়িয়ে রয়েছে বাইবেলের মিথ। বাইবেলের কাহিনী থেকে জানা যায়, নোয়া যখন দেখলেন জল কমছে না, তখন তিনি একটি পায়রা পাঠান মাটি খোঁজার জন্য। পায়রা পাঠানোর কারণ ছিল পায়রা যদি ফিরে আসে সেটা হবে ডাঙ্গা খোঁজার একটা ব্যর্থ প্রচেষ্টা, কারণ ডাঙ্গা পেলে পায়রা আর ফিরবে না। কিন্তু পায়রা ফিরে এল। নোয়া ‘বোকা’ বনে গেলেন। তা স্মরণ করেই ‘এপ্রিল ফুল’ পালন করা শুরু হয়।
এছাড়া ১৫০৮ সালে ফরাসী লেখক অ্যালোয় অ্যাম্যাবেল তার লেখায়, এপ্রিলের ১ তারিখ ‘ছুটির দিন’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। শুধু তাই নয় দিনটিকে “ফিস অব এপ্রিল” নামেও অভিহিত করেন।
১৫৩০ এর ১ এপ্রিল, জার্মানির অগসবার্গ শহরে আইন বিষয়ক একটি মিটিং হবার কথা ছিল। মিটিং-এর ফলাফল নিয়ে অনেক মানুষ অনেক টাকা বাজি লাগিয়েছিলেন বাজিকরের কাছে কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে মিটিং আর হয়নি। অন্যদিকে বাজিকরও টাকা ফেরৎ দেয়নি। জনগণের এই বোকামির দিনটি ছিল এপ্রিল মাসের ১তারিখ। আর সেই ১ তারিখের কথা মাথায় রেখে এপ্রিল ফুলের সূচনা বলে অনেকে মনে করেন।
জানা যায়, ১৫৭২ সালের ১ এপ্রিল হল্যান্ডের ডেন ব্রিএল শহরকে লর্ড আল্ভার স্প্যানিশ শাসন থেকে মুক্ত করে ডাচ বিদ্রোহীরা। এদিন তারা লর্ড আল্ভাকে বোকা বানিয়েছিলেন। স্পেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা পায় হল্যান্ড। ১ এপ্রিলের সেই ঐতিহাসিক যুদ্ধ স্মরণ করে একটি পোস্টকার্ডও প্রকাশিত হয়।
১৬৮৬ সালে বৃটিশ কবি জন অব্রে এপ্রিলের প্রথম দিনটিকে সরাসরি “ফুলস হলি ডে” বা বোকাদের ছুটির দিন বলে অভিহিত করেন। এছাড়াও মধ্যযুগে ইউরোপের বিভিন্ন শহরে মার্চের শেষের দিকে নতুন বছর উদযাপন করা হত। এছাড়া ফ্রান্সের বিভিন্ন জায়গায়ও মার্চে নিউ ইয়ার উদযাপনের পাশাপাশি এপ্রিলের ১তারিখ পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী ছুটি থাকত। এসময় জানুয়ারির ১ তারিখ নতুন বছর উদযাপনকারী ব্যক্তিরা মার্চে নতুন বছর উদযাপনকারীদের “এপ্রিল ফুল” নামে অভিহিত করত আর তা থেকেই সম্ভবত এই ‘এপ্রিলফুল’ দিনটির সূত্রপাত।
আবার ব্রিটিশ লোককথা অনুসারে, ব্রিটেনের নটিংহ্যামশায়ারের ‘গথাম’ শহর বোকাদের শহর নামে পরিচিত ছিল। ত্রয়োদশ শতকের দিকে নিয়ম ছিল, ব্রিটেনের রাজা যেখানে যেখানে পা রাখবেন তা হয়ে যাবে রাষ্ট্রের সম্পত্তি। যখন গথামবাসীরা শুনল রাজা জন আসছেন তাদের শহরে, তারা রাজাকে কিছুতেই ঢুকতে দেবে না গথামে, তা শুনে রাজা ক্ষেপে গেলেন এবং সৈন্য পাঠালেন। রাজার সৈন্যরা যখন শহরে এল, প্রধান ফটক থেকে তারা দেখল সারা শহরে হুলস্থূল কাণ্ড। গথামের বাসিন্দারা বোকার মত নানান কাজ করছে। সৈন্যরা হেসে ফেলল। তারা ফিরে গিয়ে রাজাকে জানাল বোকাদের অস্বাভাবিক কাজকর্মের কথা। সব শুনে রাজা বললেন, এই বোকাদের শাস্তি দেওয়া যায় না। রাজা গথামবাসীদের মাফ করে দিলেন। ‘গথাম’ স্বাধীন থাকল। গথামবাসীদের এই কৌশলকে স্মরণ করা হয় এপ্রিলের ১ তারিখ।
এসব ঘটনার থেকে একেবারে আলাদা একটি মর্মান্তিক ঘটনাও জড়িয়ে রয়েছে ১ এপ্রিলের সাথে। স্পেনের মাটি থেকে মুসলমানদের উচ্ছেদ করার কথা ঘোষণা করেন পর্তুগীজ রাণী ইসাবেলা। ইসাবেলা মুসলিম বিদ্বেষী খৃষ্টান সম্রাট ফার্ডিন্যান্ডকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর দু’জন মিলে স্পেন আক্রমণের জন্য সম্মিলিত বাহিনী গড়ে তোলেন। ১৪৯২ সালে স্পেনে মুসলমানদের চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে। এর আগেই রাজা ফার্ডিন্যান্ড মুসলমানদের হাত থেকে কর্ডোভা সহ অন্যান্য অঞ্চল নিজের দখলে নেন। বাকি ছিল কেবলমাত্র গ্রানাডা।
গ্রানাডার শাসনকর্তা ছিলেন হাসান। খ্রিষ্টানরা হাসানের ওপর চাপ সৃষ্টি করছিল, আত্মসমর্পনের জন্য। কিন্তু তিনি কিছুতেই রাজি হচ্ছিলেন না। তাকে আত্মসমর্পনে রাজি করাতে না পেরে খ্রিষ্টানরা হাসানের পুত্র আবু আবদুল্লাহকে সিংহাসনে বসানোর লোভ দেখিয়ে হাত করে নেয়। আবদুল্লাহ তাদের কথায় রাজি হয়ে পিতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে এবং এক সময় বাদশাহ হাসান পুত্রের সাথে যুদ্ধ করার গ্লানি এড়ানোর জন্য তার এক ভাইয়ের হাতে সিংহাসনের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে দেশ ছেড়ে চলে যান। আবু আব্দুল্লাহ বিশ্বাসঘাতকতা করলেও তার সেনাপতি মহাবীর মুসা’সহ অনেক মুসলমান ফার্ডিন্যান্ড বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধচালিয়ে যেতে থাকে। এরপর ফার্ডিন্যান্ডের নির্দেশে আশপাশের সব শস্য খামার জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। অচিরেই দুর্ভিক্ষ নেমে আসে গ্রানাডা শহরে। দুর্ভিক্ষ যখন বিশাল আকার ধারণ করে তখন ফার্ডিন্যান্ড ঘোষণা করেন, শহরবাসীরা যদি শহরের প্রধান ফটক খুলে দেয় এবং নিরস্ত্র অবস্থায় মসজিদে আশ্রয় নেয় তাহলে তাদের বিনা রক্তপাতে মুক্তি দেওয়া হবে ৷আর সেইদিন ছিল ১৪৯২ এর এপ্রিল মাসের প্রথম দিন, কেউ কেউ বলেন দ্বিতীয়দিন।
গ্রানাডাবাসী অসহায় নারী ও বাচ্চাদের করুণ মুখের দিয়ে তাকিয়ে খৃষ্টানদের আশ্বাসে শহরবাসী আশ্রয় নেয় মসজিদে ৷ আর এরপরই শহরে প্রবেশ করে সম্রাটের সেনা। সম্রাটের নির্দেশে সেনাবাহিনী মুসলমানদেরকে মসজিদের ভেতর আটকে রেখে মসজিদে আগুন লাগিয়ে দেয়। একাধিক মানুষ প্রাণ হারায় মসজিদের ভেতর। রাণী ইসাবেলা এরপর হেসে বলেন ‘এপ্রিলের বোকা! শত্রুর আশ্বাস কেউ কি বিশ্বাস করে?’ সেই থেকে পালিত হচ্ছে ‘এপ্রিলের বোকা’ উৎসব।
‘অ্যা হিস্ট্রি অব মেডিয়েয়াল স্পেইন’ বইটি অবশ্য বলছে অন্য কথা। স্পেনে মুসলিমদের পুড়িয়ে মারার দিনটি ১ এপ্রিল নয় কারণ ১৪৯২ সালের ২ জানুয়ারি ইসাবেলা গ্রানাডা প্রবেশ করে এবং ২ জানুয়ারি তার দখল নেয়। তারা শান্তিপূর্ণভাবে সেদিন গ্রানাডার শাসক দ্বাদশ মুহাম্মাদের কাছ থেকে গ্রানাডার চাবি নেন।
১ এপ্রিল বোকাদিবস হিসেবে পালন করার একদম সোজাসাপটা কোন ইতিহাস চিহ্নিত করা না গেলেও এটা তো বলাই যায় যে কাউকে ইচ্ছে করে বোকা বানানো মোটেও ঠিক নয়। বরং যারা একটু কম জানেন বা বোঝেন, আপনার একটু সহযোগিতা তাদের জন্য অনেক বড় উপকার বয়ে আনতে পারে। তাই নিজেও বোকা হবেন না, অপরকেও বোকা বানাবেন না।
বিশ্ব জুড়ে ১ এপ্রিল বোকা বানানোর দিন হিসেবে পরিচিত।
‘এপ্রিল ফুলস ডে’র জন্ম ইতিহাস নিয়ে বিতর্ক আছে। সভ্যতার ইতিহাসে ঠিক কোন বছর থেকে এই দিনটি চালু হয়েছে তা মানুষের কাছে আজ পর্যন্ত অজানা। ইংরেজি সাহিত্যের জনক জিওফ্রে চসার ১৩৯২ সালে লেখা ‘নানস প্রিস্ট টেল’ কবিতায় মার্চ মাসের একটি ৩২তম দিনের কথা উল্লেখ করেন। কারও কারও মতে, এই ৩২তম দিনটি বলতে চসার পয়লা এপ্রিলকে বুঝিয়েছিলেন। তবে ঐতিহাসিক পিটার ট্রাভিস বলেন, ৩২তম দিন বলতে চসার কোনো নির্দিষ্ট দিনের কথা বোঝাননি। তিনি মূলত মধ্যযুগীয় দার্শনিকতা নিয়ে ঠাট্টাচ্ছলে এটি ব্যবহার করেছেন।
এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা থেকে জানা যায় ‘এপ্রিল ফুল’ দিনটির উৎপত্তি মূলত রোমান উৎসব ‘হিলারিয়া’ থেকে। যা অতীতে পালিত হত ২৫ মার্চ। তারপর ধীরে ধীরে এই উৎসব আশেপাশের দেশগুলিতেও ছড়িয়ে পড়ে।
অন্যদিকে রোমানদের মৃত্যু দেবতা প্লুটো যখন তার “স্ত্রী” পারসিফন-কে অপহরণ করে আনেন, তখন পারসিফনের মা সেরিস মেয়েকে অনেক খোঁজার চেষ্টা করেন, কিন্তু বোকার মত অনেক জায়গা খুঁজেও যখন মেয়েকে পেলেন না তখন হতাশ হলেন কারণ, মেয়ে তখন আন্ডারওয়ার্ল্ডে অর্থাৎ মাটির গভীরে পাতালে প্রবেশ করেছে। সেরিসের বোকামির কথা স্মরণ করে রোমানরা ১ এপ্রিল ‘বোকা দিবস’পালন করা শুরু হয়।
১ এপ্রিলের সাথে জড়িয়ে রয়েছে বাইবেলের মিথ। বাইবেলের কাহিনী থেকে জানা যায়, নোয়া যখন দেখলেন জল কমছে না, তখন তিনি একটি পায়রা পাঠান মাটি খোঁজার জন্য। পায়রা পাঠানোর কারণ ছিল পায়রা যদি ফিরে আসে সেটা হবে ডাঙ্গা খোঁজার একটা ব্যর্থ প্রচেষ্টা, কারণ ডাঙ্গা পেলে পায়রা আর ফিরবে না। কিন্তু পায়রা ফিরে এল। নোয়া ‘বোকা’ বনে গেলেন। তা স্মরণ করেই ‘এপ্রিল ফুল’ পালন করা শুরু হয়।
এছাড়া ১৫০৮ সালে ফরাসী লেখক অ্যালোয় অ্যাম্যাবেল তার লেখায়, এপ্রিলের ১ তারিখ ‘ছুটির দিন’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। শুধু তাই নয় দিনটিকে “ফিস অব এপ্রিল” নামেও অভিহিত করেন।
১৫৩০ এর ১ এপ্রিল, জার্মানির অগসবার্গ শহরে আইন বিষয়ক একটি মিটিং হবার কথা ছিল। মিটিং-এর ফলাফল নিয়ে অনেক মানুষ অনেক টাকা বাজি লাগিয়েছিলেন বাজিকরের কাছে কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে মিটিং আর হয়নি। অন্যদিকে বাজিকরও টাকা ফেরৎ দেয়নি। জনগণের এই বোকামির দিনটি ছিল এপ্রিল মাসের ১তারিখ। আর সেই ১ তারিখের কথা মাথায় রেখে এপ্রিল ফুলের সূচনা বলে অনেকে মনে করেন।
জানা যায়, ১৫৭২ সালের ১ এপ্রিল হল্যান্ডের ডেন ব্রিএল শহরকে লর্ড আল্ভার স্প্যানিশ শাসন থেকে মুক্ত করে ডাচ বিদ্রোহীরা। এদিন তারা লর্ড আল্ভাকে বোকা বানিয়েছিলেন। স্পেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা পায় হল্যান্ড। ১ এপ্রিলের সেই ঐতিহাসিক যুদ্ধ স্মরণ করে একটি পোস্টকার্ডও প্রকাশিত হয়।
১৬৮৬ সালে বৃটিশ কবি জন অব্রে এপ্রিলের প্রথম দিনটিকে সরাসরি “ফুলস হলি ডে” বা বোকাদের ছুটির দিন বলে অভিহিত করেন। এছাড়াও মধ্যযুগে ইউরোপের বিভিন্ন শহরে মার্চের শেষের দিকে নতুন বছর উদযাপন করা হত। এছাড়া ফ্রান্সের বিভিন্ন জায়গায়ও মার্চে নিউ ইয়ার উদযাপনের পাশাপাশি এপ্রিলের ১তারিখ পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী ছুটি থাকত। এসময় জানুয়ারির ১ তারিখ নতুন বছর উদযাপনকারী ব্যক্তিরা মার্চে নতুন বছর উদযাপনকারীদের “এপ্রিল ফুল” নামে অভিহিত করত আর তা থেকেই সম্ভবত এই ‘এপ্রিলফুল’ দিনটির সূত্রপাত।
আবার ব্রিটিশ লোককথা অনুসারে, ব্রিটেনের নটিংহ্যামশায়ারের ‘গথাম’ শহর বোকাদের শহর নামে পরিচিত ছিল। ত্রয়োদশ শতকের দিকে নিয়ম ছিল, ব্রিটেনের রাজা যেখানে যেখানে পা রাখবেন তা হয়ে যাবে রাষ্ট্রের সম্পত্তি। যখন গথামবাসীরা শুনল রাজা জন আসছেন তাদের শহরে, তারা রাজাকে কিছুতেই ঢুকতে দেবে না গথামে, তা শুনে রাজা ক্ষেপে গেলেন এবং সৈন্য পাঠালেন। রাজার সৈন্যরা যখন শহরে এল, প্রধান ফটক থেকে তারা দেখল সারা শহরে হুলস্থূল কাণ্ড। গথামের বাসিন্দারা বোকার মত নানান কাজ করছে। সৈন্যরা হেসে ফেলল। তারা ফিরে গিয়ে রাজাকে জানাল বোকাদের অস্বাভাবিক কাজকর্মের কথা। সব শুনে রাজা বললেন, এই বোকাদের শাস্তি দেওয়া যায় না। রাজা গথামবাসীদের মাফ করে দিলেন। ‘গথাম’ স্বাধীন থাকল। গথামবাসীদের এই কৌশলকে স্মরণ করা হয় এপ্রিলের ১ তারিখ।
এসব ঘটনার থেকে একেবারে আলাদা একটি মর্মান্তিক ঘটনাও জড়িয়ে রয়েছে ১ এপ্রিলের সাথে। স্পেনের মাটি থেকে মুসলমানদের উচ্ছেদ করার কথা ঘোষণা করেন পর্তুগীজ রাণী ইসাবেলা। ইসাবেলা মুসলিম বিদ্বেষী খৃষ্টান সম্রাট ফার্ডিন্যান্ডকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর দু’জন মিলে স্পেন আক্রমণের জন্য সম্মিলিত বাহিনী গড়ে তোলেন। ১৪৯২ সালে স্পেনে মুসলমানদের চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে। এর আগেই রাজা ফার্ডিন্যান্ড মুসলমানদের হাত থেকে কর্ডোভা সহ অন্যান্য অঞ্চল নিজের দখলে নেন। বাকি ছিল কেবলমাত্র গ্রানাডা।
গ্রানাডার শাসনকর্তা ছিলেন হাসান। খ্রিষ্টানরা হাসানের ওপর চাপ সৃষ্টি করছিল, আত্মসমর্পনের জন্য। কিন্তু তিনি কিছুতেই রাজি হচ্ছিলেন না। তাকে আত্মসমর্পনে রাজি করাতে না পেরে খ্রিষ্টানরা হাসানের পুত্র আবু আবদুল্লাহকে সিংহাসনে বসানোর লোভ দেখিয়ে হাত করে নেয়। আবদুল্লাহ তাদের কথায় রাজি হয়ে পিতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে এবং এক সময় বাদশাহ হাসান পুত্রের সাথে যুদ্ধ করার গ্লানি এড়ানোর জন্য তার এক ভাইয়ের হাতে সিংহাসনের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে দেশ ছেড়ে চলে যান। আবু আব্দুল্লাহ বিশ্বাসঘাতকতা করলেও তার সেনাপতি মহাবীর মুসা’সহ অনেক মুসলমান ফার্ডিন্যান্ড বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধচালিয়ে যেতে থাকে। এরপর ফার্ডিন্যান্ডের নির্দেশে আশপাশের সব শস্য খামার জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। অচিরেই দুর্ভিক্ষ নেমে আসে গ্রানাডা শহরে। দুর্ভিক্ষ যখন বিশাল আকার ধারণ করে তখন ফার্ডিন্যান্ড ঘোষণা করেন, শহরবাসীরা যদি শহরের প্রধান ফটক খুলে দেয় এবং নিরস্ত্র অবস্থায় মসজিদে আশ্রয় নেয় তাহলে তাদের বিনা রক্তপাতে মুক্তি দেওয়া হবে ৷আর সেইদিন ছিল ১৪৯২ এর এপ্রিল মাসের প্রথম দিন, কেউ কেউ বলেন দ্বিতীয়দিন।
গ্রানাডাবাসী অসহায় নারী ও বাচ্চাদের করুণ মুখের দিয়ে তাকিয়ে খৃষ্টানদের আশ্বাসে শহরবাসী আশ্রয় নেয় মসজিদে ৷ আর এরপরই শহরে প্রবেশ করে সম্রাটের সেনা। সম্রাটের নির্দেশে সেনাবাহিনী মুসলমানদেরকে মসজিদের ভেতর আটকে রেখে মসজিদে আগুন লাগিয়ে দেয়। একাধিক মানুষ প্রাণ হারায় মসজিদের ভেতর। রাণী ইসাবেলা এরপর হেসে বলেন ‘এপ্রিলের বোকা! শত্রুর আশ্বাস কেউ কি বিশ্বাস করে?’ সেই থেকে পালিত হচ্ছে ‘এপ্রিলের বোকা’ উৎসব।
‘অ্যা হিস্ট্রি অব মেডিয়েয়াল স্পেইন’ বইটি অবশ্য বলছে অন্য কথা। স্পেনে মুসলিমদের পুড়িয়ে মারার দিনটি ১ এপ্রিল নয় কারণ ১৪৯২ সালের ২ জানুয়ারি ইসাবেলা গ্রানাডা প্রবেশ করে এবং ২ জানুয়ারি তার দখল নেয়। তারা শান্তিপূর্ণভাবে সেদিন গ্রানাডার শাসক দ্বাদশ মুহাম্মাদের কাছ থেকে গ্রানাডার চাবি নেন।
১ এপ্রিল বোকাদিবস হিসেবে পালন করার একদম সোজাসাপটা কোন ইতিহাস চিহ্নিত করা না গেলেও এটা তো বলাই যায় যে কাউকে ইচ্ছে করে বোকা বানানো মোটেও ঠিক নয়। বরং যারা একটু কম জানেন বা বোঝেন, আপনার একটু সহযোগিতা তাদের জন্য অনেক বড় উপকার বয়ে আনতে পারে। তাই নিজেও বোকা হবেন না, অপরকেও বোকা বানাবেন না।
বাংলাদেশে এক হিন্দু নারীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে দাবিতে মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে ১৮ সেকেন্ডের ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে। এতে দেখা যাচ্ছে, রক্তাক্ত এক নারীকে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য কোথাও নিয়ে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দীপক শর্মা নামের একটি ভারতীয় এক্স হ্যান্ডল থেকে ভিডিওটি টুইট করে দাবি করা হয়, ‘ভিড
১ দিন আগেআওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য সাবরিনা চৌধুরী নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় এমন দাবিতে স্ক্রিনশটটি পোস্ট করে লেখেন, ‘Sabnam Faria কিছুক্ষণ আগে একটা পোস্ট করলেন ৫ মিনিট পর ডিলিট করে দিলেন।’
২ দিন আগেএলিস থমাস নামের এক ওপেন সোর্স ইন্টেলিজেন্স গবেষকের বরাত দিয়ে জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে জানিয়েছে, ট্রাম্পকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে সাহায্য করেছে এআই পরিচালিত বট নেটওয়ার্ক।
৩ দিন আগেগত বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) ‘প্রবাসী জীবন’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। পোস্টটি আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক শেয়ার হয়েছে। রিয়েকশন পড়েছে ৪ হাজারের বেশি। ভিডিওটি দেখা হয়েছে ৪২ হাজার বার।
৩ দিন আগে