ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
‘দুধ দিয়ে কালসাপ পোষা’—এই বাংলা প্রবাদের সঙ্গে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত। কাউকে মনেপ্রাণে ভালোবেসে উপকার করে বা আদর-যত্নে বড় করে তোলার পর সেই ব্যক্তিই যখন আপনার ক্ষতি করে বসে, সে পরিস্থিতিকে ‘দুধ দিয়ে কালসাপ পোষা’ হিসেবে বলা হয়। আবার বাংলা সিনেমার নানা দৃশ্যে দেখা যায়, সাপ দুধের পেয়ালা থেকে দুধ পান করছে। গরুর খামারিরাও মাঝেমধ্যে দাবি করেন, সাপ এসে তাঁদের গরুর দুধ খেয়ে গেছে। কিন্তু আদতেই কি সাপ দুধ পান করতে পারে? বিজ্ঞান কী বলে?
তবে সেসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার আগে জেনে নেওয়া যাক, সাপের দৈহিক বৈশিষ্ট্য ও খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে। পৃথিবীজুড়ে প্রায় চার হাজার প্রজাতির সাপ আছে। তবে এসব সাপের শতভাগই মাংসাশী। এর মানে, এরা কখনোই উদ্ভিদজাতীয় কিছু খায় না। আজ পর্যন্ত বিজ্ঞানী ও গবেষকেরা এমন প্রজাতির সাপ খুঁজে পাননি, যা অল্প পরিমাণে হলেও উদ্ভিদজাতীয় কিছু খায়। বরং সাপ খাবারের জন্য জীবন্ত প্রাণী বেছে নেয়; কখনো কখনো পাখি, মাছ এমনকি সাপসহ সরীসৃপ প্রজাতির ডিমও খেয়ে থাকে। সাপের খাদ্যতালিকায় আছে ইঁদুর ও ইঁদুরজাতীয় অন্যান্য প্রাণী, খরগোশ, পাখি, ব্যাঙ, মাছ, বিভিন্ন অমেরুদণ্ডী প্রাণী যেমন কেঁচো, অন্যান্য প্রজাতির সাপ ইত্যাদি। তবে সাপ দুধ বা দুধজাতীয় খাবার খায়—এমন কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তা ছাড়া সাপের দৈহিক বৈশিষ্ট্যও দুধ বা দুধজাতীয় খাবার গ্রহণের ধারণা সমর্থন করে না। কারণ, দুধ হজমের জন্য প্রাণীর ক্ষুদ্রান্ত্রে ‘ল্যাকটজ’ নামের এনজাইম বা জারক রস থাকা আবশ্যক। ল্যাকটোজ বা দুধজাতীয় খাবারকে হজমে সাহায্য করে এই ল্যাকটেজ। কিন্তু সাপের পরিপাক প্রক্রিয়ার ল্যাকটেজের কোনো উপস্থিতি পাননি প্রাণিবিজ্ঞানীরা। ফলে কোনো প্রজাতির সাপেরই ল্যাকটোজ বা দুধ ও দুধজাতীয় খাবার গ্রহণের কোনো বাস্তবতা নেই।
ইতালিয়ান গবেষক ডেভিড ইরমাকোরা ২০১৭ সালে তার প্রকাশিত গবেষণা প্রবন্ধে উল্লেখ করেন, সাপের ল্যাকটেজ এনজাইম না থাকায় তার পরিপাক প্রক্রিয়ায় ল্যাকটোজ জাতীয় খাদ্য হজম হয় না। তাই সাপের পক্ষে দুধ হজম করা সম্ভব নয়।
এ ছাড়া প্রাণীবিষয়ক ওয়েবসাইট ফাউনা ফ্যাক্ট এক প্রতিবেদনে জানায়, সাপের পক্ষে দুগ্ধজাত খাবার হজম করা সম্ভব নয়।
প্রাণীবিষয়ক আরেকটি ওয়েবসাইট পেট এডুকেটের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সাপের কাটা বিভক্ত জিহবা তরল গ্রহণের জন্য আদর্শ নয়। তবে সাপ যে পানি পান করে, তা চোয়ালের নিচের অংশের মাধ্যমে করে। সাপের মুখের নিচের অংশে অনেকগুলো ছোট খাঁজ থাকে, যা স্পঞ্জের মতো পানিশোষণ করে। আর সাপ এভাবেই পানি পান করে।
তাহলে প্রচলিত এই ধারণাটির উৎপত্তি কোথায়? এ নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, এ ধারণার সঙ্গে মূলত সাংস্কৃতিক বিশ্বাস ও অজ্ঞতা জড়িত। মানুষের কল্পনায় নানারূপে নানাভাবে সাপ জায়গা করে নিয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতিতে নানা প্রতীক নিয়ে হাজির হয়েছে, যেমন কোনো কোনো সংস্কৃতিতে সাপ ভয়ের, কোনো ক্ষেত্রে আবার সম্মানের পাত্র।
এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের অধ্যাপক সুস্মিতা চক্রবর্তী বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘সাপ নিয়ে একই সাথে ভয় এবং কৌতূহল থাকার কারণেই সাপকেন্দ্রিক নানা ধরনের রীতি-রেওয়াজ, কিংবদন্তি প্রচলিত রয়েছে। সাধারণ মানুষের জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিষয়গুলোই তো সাহিত্য-সংস্কৃতিতে ফুটে ওঠে। সেভাবে জনজীবনের সঙ্গে সাপের সম্পৃক্ততার কারণেই সাপ নিয়ে এত গল্প, কাহিনি রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সারা বিশ্বের আদিবাসী বা ওই জাতীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে পরম্পরাগতভাবে এমন প্রথা দেখা যায়, তারা যখন কোনো শক্তিকে ভয় পায়, তখন সেই শক্তিকে পূজা করার একটা প্রবণতা তাদের মধ্যে দেখা যায়।’
ধারণা করা যায়, এসব কুসংস্কার থেকেই সাপের দুধ খাওয়ার প্রচলিত মতটির জন্ম। তবে ১৯৮১ সালে ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের অ্যানিমেল ডাইভার্সিটি ওয়েবের এক প্রতিবেদনে মিল্কস্নেক (বৈজ্ঞানিক নাম: ল্যামপ্রোপেল্টিস ট্রায়াঙ্গুলাম) প্রজাতির সাপের দুধ পান করা নিয়ে মিথ বা জনশ্রুতির খোঁজ মিলেছে ।
ওই প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, মিল্কস্নেক নামটি এসেছে পুরোনো বৈশ্বিক লোককাহিনি থেকে। এই কাহিনিমতে, দুধ শুকিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত সাপটি স্তন্যদায়ী মা ও গরু থেকে দুধ চুষে খায়। যদিও এটি অসম্ভব। কারণ, সাপ নিরীহ প্রাণী এবং মানব মা বা গরু—কেউ সাপের দুধপান অনুমোদন করবে না। এ ছাড়া সাপের পেটে মাত্র কয়েক টেবিল চামচ দুধের জায়গা হবে।
আমাদের দেশে দুধরাজ নামে আরেকটি সাপের খোঁজ পাওয়া যায়। তবে নামে দুধরাজ হলেও এই সাপ দুধ খায়—এমন কোনো প্রমাণ নেই। এ ছাড়া সাপের যেসব বৈশিষ্ট্য স্বীকৃত, তার মধ্যে সাপের দুধ পানের সক্ষমতা নেই।
যদিও খামারিরা অনেক সময় দাবি করেন, তাঁরা রেট স্ন্যাক বা সাপকে গরুর ওলান থেকে দুধ পান করতে দেখেছেন। তাঁদের এই দাবি মিথ্যা নয়, তবে এটি ভ্রম। ইতিপূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে, সাপের খাবারের তালিকায় আছে ইঁদুর। রেট স্ন্যাক অনেক সময় গরুর ওলানকে জীবন্ত ইঁদুর মনে করে কামড়ে ধরে এবং মাথা খুঁজতে থাকে। কারণ, সকল সরীসৃপ প্রাণীই তাদের শিকারকে মাথা থেকে খাওয়া শুরু করে। তবে ইঁদুর নয় বুঝতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে এটি ছেড়ে দেয়। আর এ কাজটি একমাত্র রেট স্ন্যাকই করে। কারণ, অন্যান্য সাপের তুলনায় এই প্রজাতির সাপের ওপরে ওঠার সক্ষমতা অনেক বেশি।
হিন্দু ধর্মে সাপ ও দুধ পান করানো
হিন্দু ধর্মে সাপ বিশেষ জায়গা দখল করে আছে। হিন্দু পৌরাণিক কাহিনিতে শিবকে গলায় কুণ্ডলীবদ্ধ সাপ দিয়ে চিত্রিত করা হয়, যা অনন্তকাল এবং মহাজাগতিক শক্তির প্রতিনিধিত্ব করে। আবার হিন্দু ধর্মের অনুসারীরা শ্রাবণ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চম দিনে নাগপঞ্চমী নামে উৎসব পালন করে থাকে। এ উৎসবের দিন উত্তর ভারতের বহু জায়গায় সাপকে দুধ পান করিয়ে পূজা করা হয়।
তবে নাগপঞ্চমীতে সাপ দুধ পান করে কি না এমন প্রশ্নে ভারতের সংবাদমাধ্যম ডিএনএ ইন্ডিয়া জানায়, নাগপঞ্চমীর দিন অন্তত দুই-তিন সপ্তাহ আগে থেকে সাপের মুখ সেলাই করে দেওয়া হয়। যাতে সে কিছু খেতে না পারে। একপর্যায়ে সাপগুলো তৃষ্ণার্ত ও ক্ষুধার্ত হয়ে পড়ে। ফলে এই ক্ষুধার্ত সাপগুলোকে পরবর্তী সময় যা কিছুই দেওয়া হবে, তা ‘পান’ করবে। সেটা দুধ হোক বা কোমল পানীয়।
ভারতের প্রাণী পুনর্বাসন ও সুরক্ষা সংগঠন এআরপিএফের তথ্য অনুযায়ী, সাপগুলোকে ৩০ থেকে ৪৫ দিন না খাইয়ে রেখে নাগপঞ্চমী উৎসবের জন্য প্রস্তুত করেন সাপুড়েরা। দুধ খাওয়ানোর আয়োজনের পরে এগুলো মরে যায় অথবা মেরে ফেলা হয়। তারপর সেসবের চামড়া ৩ থেকে ৫ হাজার রুপিতে বিক্রি করা হয়।
সিদ্ধান্ত
সাপের দৈহিক বৈশিষ্ট্য ও খাদ্যাভ্যাস নিয়ে ওপরের আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয়, সাপের পক্ষে দুধ পান করা সম্ভব নয়। বরং ধর্মীয় আচার, কুসংস্কার ও অজ্ঞতার কারণে সাপের দুধ পানের ধারণা যুগ যুগ ধরে প্রচলিত। তবে দুধ পানের পর সাপের পক্ষে বেচে থাকা সম্ভব নয়।
‘দুধ দিয়ে কালসাপ পোষা’—এই বাংলা প্রবাদের সঙ্গে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত। কাউকে মনেপ্রাণে ভালোবেসে উপকার করে বা আদর-যত্নে বড় করে তোলার পর সেই ব্যক্তিই যখন আপনার ক্ষতি করে বসে, সে পরিস্থিতিকে ‘দুধ দিয়ে কালসাপ পোষা’ হিসেবে বলা হয়। আবার বাংলা সিনেমার নানা দৃশ্যে দেখা যায়, সাপ দুধের পেয়ালা থেকে দুধ পান করছে। গরুর খামারিরাও মাঝেমধ্যে দাবি করেন, সাপ এসে তাঁদের গরুর দুধ খেয়ে গেছে। কিন্তু আদতেই কি সাপ দুধ পান করতে পারে? বিজ্ঞান কী বলে?
তবে সেসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার আগে জেনে নেওয়া যাক, সাপের দৈহিক বৈশিষ্ট্য ও খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে। পৃথিবীজুড়ে প্রায় চার হাজার প্রজাতির সাপ আছে। তবে এসব সাপের শতভাগই মাংসাশী। এর মানে, এরা কখনোই উদ্ভিদজাতীয় কিছু খায় না। আজ পর্যন্ত বিজ্ঞানী ও গবেষকেরা এমন প্রজাতির সাপ খুঁজে পাননি, যা অল্প পরিমাণে হলেও উদ্ভিদজাতীয় কিছু খায়। বরং সাপ খাবারের জন্য জীবন্ত প্রাণী বেছে নেয়; কখনো কখনো পাখি, মাছ এমনকি সাপসহ সরীসৃপ প্রজাতির ডিমও খেয়ে থাকে। সাপের খাদ্যতালিকায় আছে ইঁদুর ও ইঁদুরজাতীয় অন্যান্য প্রাণী, খরগোশ, পাখি, ব্যাঙ, মাছ, বিভিন্ন অমেরুদণ্ডী প্রাণী যেমন কেঁচো, অন্যান্য প্রজাতির সাপ ইত্যাদি। তবে সাপ দুধ বা দুধজাতীয় খাবার খায়—এমন কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তা ছাড়া সাপের দৈহিক বৈশিষ্ট্যও দুধ বা দুধজাতীয় খাবার গ্রহণের ধারণা সমর্থন করে না। কারণ, দুধ হজমের জন্য প্রাণীর ক্ষুদ্রান্ত্রে ‘ল্যাকটজ’ নামের এনজাইম বা জারক রস থাকা আবশ্যক। ল্যাকটোজ বা দুধজাতীয় খাবারকে হজমে সাহায্য করে এই ল্যাকটেজ। কিন্তু সাপের পরিপাক প্রক্রিয়ার ল্যাকটেজের কোনো উপস্থিতি পাননি প্রাণিবিজ্ঞানীরা। ফলে কোনো প্রজাতির সাপেরই ল্যাকটোজ বা দুধ ও দুধজাতীয় খাবার গ্রহণের কোনো বাস্তবতা নেই।
ইতালিয়ান গবেষক ডেভিড ইরমাকোরা ২০১৭ সালে তার প্রকাশিত গবেষণা প্রবন্ধে উল্লেখ করেন, সাপের ল্যাকটেজ এনজাইম না থাকায় তার পরিপাক প্রক্রিয়ায় ল্যাকটোজ জাতীয় খাদ্য হজম হয় না। তাই সাপের পক্ষে দুধ হজম করা সম্ভব নয়।
এ ছাড়া প্রাণীবিষয়ক ওয়েবসাইট ফাউনা ফ্যাক্ট এক প্রতিবেদনে জানায়, সাপের পক্ষে দুগ্ধজাত খাবার হজম করা সম্ভব নয়।
প্রাণীবিষয়ক আরেকটি ওয়েবসাইট পেট এডুকেটের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সাপের কাটা বিভক্ত জিহবা তরল গ্রহণের জন্য আদর্শ নয়। তবে সাপ যে পানি পান করে, তা চোয়ালের নিচের অংশের মাধ্যমে করে। সাপের মুখের নিচের অংশে অনেকগুলো ছোট খাঁজ থাকে, যা স্পঞ্জের মতো পানিশোষণ করে। আর সাপ এভাবেই পানি পান করে।
তাহলে প্রচলিত এই ধারণাটির উৎপত্তি কোথায়? এ নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, এ ধারণার সঙ্গে মূলত সাংস্কৃতিক বিশ্বাস ও অজ্ঞতা জড়িত। মানুষের কল্পনায় নানারূপে নানাভাবে সাপ জায়গা করে নিয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতিতে নানা প্রতীক নিয়ে হাজির হয়েছে, যেমন কোনো কোনো সংস্কৃতিতে সাপ ভয়ের, কোনো ক্ষেত্রে আবার সম্মানের পাত্র।
এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের অধ্যাপক সুস্মিতা চক্রবর্তী বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘সাপ নিয়ে একই সাথে ভয় এবং কৌতূহল থাকার কারণেই সাপকেন্দ্রিক নানা ধরনের রীতি-রেওয়াজ, কিংবদন্তি প্রচলিত রয়েছে। সাধারণ মানুষের জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিষয়গুলোই তো সাহিত্য-সংস্কৃতিতে ফুটে ওঠে। সেভাবে জনজীবনের সঙ্গে সাপের সম্পৃক্ততার কারণেই সাপ নিয়ে এত গল্প, কাহিনি রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সারা বিশ্বের আদিবাসী বা ওই জাতীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে পরম্পরাগতভাবে এমন প্রথা দেখা যায়, তারা যখন কোনো শক্তিকে ভয় পায়, তখন সেই শক্তিকে পূজা করার একটা প্রবণতা তাদের মধ্যে দেখা যায়।’
ধারণা করা যায়, এসব কুসংস্কার থেকেই সাপের দুধ খাওয়ার প্রচলিত মতটির জন্ম। তবে ১৯৮১ সালে ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের অ্যানিমেল ডাইভার্সিটি ওয়েবের এক প্রতিবেদনে মিল্কস্নেক (বৈজ্ঞানিক নাম: ল্যামপ্রোপেল্টিস ট্রায়াঙ্গুলাম) প্রজাতির সাপের দুধ পান করা নিয়ে মিথ বা জনশ্রুতির খোঁজ মিলেছে ।
ওই প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, মিল্কস্নেক নামটি এসেছে পুরোনো বৈশ্বিক লোককাহিনি থেকে। এই কাহিনিমতে, দুধ শুকিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত সাপটি স্তন্যদায়ী মা ও গরু থেকে দুধ চুষে খায়। যদিও এটি অসম্ভব। কারণ, সাপ নিরীহ প্রাণী এবং মানব মা বা গরু—কেউ সাপের দুধপান অনুমোদন করবে না। এ ছাড়া সাপের পেটে মাত্র কয়েক টেবিল চামচ দুধের জায়গা হবে।
আমাদের দেশে দুধরাজ নামে আরেকটি সাপের খোঁজ পাওয়া যায়। তবে নামে দুধরাজ হলেও এই সাপ দুধ খায়—এমন কোনো প্রমাণ নেই। এ ছাড়া সাপের যেসব বৈশিষ্ট্য স্বীকৃত, তার মধ্যে সাপের দুধ পানের সক্ষমতা নেই।
যদিও খামারিরা অনেক সময় দাবি করেন, তাঁরা রেট স্ন্যাক বা সাপকে গরুর ওলান থেকে দুধ পান করতে দেখেছেন। তাঁদের এই দাবি মিথ্যা নয়, তবে এটি ভ্রম। ইতিপূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে, সাপের খাবারের তালিকায় আছে ইঁদুর। রেট স্ন্যাক অনেক সময় গরুর ওলানকে জীবন্ত ইঁদুর মনে করে কামড়ে ধরে এবং মাথা খুঁজতে থাকে। কারণ, সকল সরীসৃপ প্রাণীই তাদের শিকারকে মাথা থেকে খাওয়া শুরু করে। তবে ইঁদুর নয় বুঝতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে এটি ছেড়ে দেয়। আর এ কাজটি একমাত্র রেট স্ন্যাকই করে। কারণ, অন্যান্য সাপের তুলনায় এই প্রজাতির সাপের ওপরে ওঠার সক্ষমতা অনেক বেশি।
হিন্দু ধর্মে সাপ ও দুধ পান করানো
হিন্দু ধর্মে সাপ বিশেষ জায়গা দখল করে আছে। হিন্দু পৌরাণিক কাহিনিতে শিবকে গলায় কুণ্ডলীবদ্ধ সাপ দিয়ে চিত্রিত করা হয়, যা অনন্তকাল এবং মহাজাগতিক শক্তির প্রতিনিধিত্ব করে। আবার হিন্দু ধর্মের অনুসারীরা শ্রাবণ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চম দিনে নাগপঞ্চমী নামে উৎসব পালন করে থাকে। এ উৎসবের দিন উত্তর ভারতের বহু জায়গায় সাপকে দুধ পান করিয়ে পূজা করা হয়।
তবে নাগপঞ্চমীতে সাপ দুধ পান করে কি না এমন প্রশ্নে ভারতের সংবাদমাধ্যম ডিএনএ ইন্ডিয়া জানায়, নাগপঞ্চমীর দিন অন্তত দুই-তিন সপ্তাহ আগে থেকে সাপের মুখ সেলাই করে দেওয়া হয়। যাতে সে কিছু খেতে না পারে। একপর্যায়ে সাপগুলো তৃষ্ণার্ত ও ক্ষুধার্ত হয়ে পড়ে। ফলে এই ক্ষুধার্ত সাপগুলোকে পরবর্তী সময় যা কিছুই দেওয়া হবে, তা ‘পান’ করবে। সেটা দুধ হোক বা কোমল পানীয়।
ভারতের প্রাণী পুনর্বাসন ও সুরক্ষা সংগঠন এআরপিএফের তথ্য অনুযায়ী, সাপগুলোকে ৩০ থেকে ৪৫ দিন না খাইয়ে রেখে নাগপঞ্চমী উৎসবের জন্য প্রস্তুত করেন সাপুড়েরা। দুধ খাওয়ানোর আয়োজনের পরে এগুলো মরে যায় অথবা মেরে ফেলা হয়। তারপর সেসবের চামড়া ৩ থেকে ৫ হাজার রুপিতে বিক্রি করা হয়।
সিদ্ধান্ত
সাপের দৈহিক বৈশিষ্ট্য ও খাদ্যাভ্যাস নিয়ে ওপরের আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয়, সাপের পক্ষে দুধ পান করা সম্ভব নয়। বরং ধর্মীয় আচার, কুসংস্কার ও অজ্ঞতার কারণে সাপের দুধ পানের ধারণা যুগ যুগ ধরে প্রচলিত। তবে দুধ পানের পর সাপের পক্ষে বেচে থাকা সম্ভব নয়।
বাংলাদেশে এক হিন্দু নারীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে দাবিতে মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে ১৮ সেকেন্ডের ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে। এতে দেখা যাচ্ছে, রক্তাক্ত এক নারীকে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য কোথাও নিয়ে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দীপক শর্মা নামের একটি ভারতীয় এক্স হ্যান্ডল থেকে ভিডিওটি টুইট করে দাবি করা হয়, ‘ভিড
১ দিন আগেআওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য সাবরিনা চৌধুরী নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় এমন দাবিতে স্ক্রিনশটটি পোস্ট করে লেখেন, ‘Sabnam Faria কিছুক্ষণ আগে একটা পোস্ট করলেন ৫ মিনিট পর ডিলিট করে দিলেন।’
২ দিন আগেএলিস থমাস নামের এক ওপেন সোর্স ইন্টেলিজেন্স গবেষকের বরাত দিয়ে জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে জানিয়েছে, ট্রাম্পকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে সাহায্য করেছে এআই পরিচালিত বট নেটওয়ার্ক।
৩ দিন আগেগত বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) ‘প্রবাসী জীবন’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। পোস্টটি আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক শেয়ার হয়েছে। রিয়েকশন পড়েছে ৪ হাজারের বেশি। ভিডিওটি দেখা হয়েছে ৪২ হাজার বার।
৩ দিন আগে