মামুনুল হক কি পুলিশকে দ্বিতীয় বিয়ের কাবিননামা জমা দিয়েছেন?   

ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০২১, ১৫: ১২

প্রেক্ষাপট: ফেসবুকে একাধিক পেইজ এবং প্রোফাইল থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, মাওলানা মামুনুল হকের দ্বিতীয় বিয়ের কাবিননামা থানায় জমা দেয়া হয়েছে।

৫ এপ্রিল St new bangla নামের পেইজ থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয় যার ক্যাপশন ছিল, "মাওলানা মামুনুল হক এর ২য় বিয়ের কাবিন নামা নিয়ে হাজির হলেন থানায়"। ২৩০০ রিঅ্যাক্ট, ৮৮২ বার শেয়ার হয়েছে সেই পোস্টটি। ইমরান নাযির নামে এক ব্যক্তিসহ আরও বেশ কয়েকটি আইডিতে একই ধরণের পোস্ট দেখা যায়।

ছবি: ফেসবুক থেকে

৩ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের সেই ভিডিওতে হেফাজতের পক্ষ থেকে সাদা পাঞ্জাবী পরিহিত একজনকে সোনারগাঁও থানা ওসি বরাবর একটি কাগজ হস্তান্তর করতে দেখা যায়।

ফ্যাক্ট চেক:

১। ভিডিওটি নেয়া হয়েছে 'দৈনিক আমাদের সময়' পত্রিকার অফিশিয়াল ফেইসবুক পেইজ থেকে। পত্রিকাটির ফেসবুক পেইজে ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়েছে, 'সোনারগাঁওয়ে যুবলীগের সভাপতি ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতিকে আসামি করে থানায় হেফাজতের অভিযোগ'।

ভিডিওটি দেখুন-

 

২। সম্পূর্ণ ভিডিওটির কোথাও বলা হয়নি, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব  মামুনুল হকের দ্বিতীয় বিবাহের কাবিননামা জমা দিয়েছেন। ভিডিওটির শেষাংশে হেফাজতের প্রতিনিধি মুফতি ফয়সাল মাহমুদ হাবিবি বলছিলেন, 'হেফাজতে ইসলামের নেতৃবৃন্দ-কর্মীরা দাবি নিয়ে এসেছে। সে দাবি হল, আমাদের নেতা, আমাদের আইকন, আমাদের আইডল আল্লামা মামুনুল হক তার স্ত্রীকে নিয়ে এসেছেন নারায়নগঞ্জের রয়েল রিসোর্টে। সেখানে কতিপয় সন্ত্রাসী নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহ মোহাম্মদ সোহাগ রনির নেতৃত্বে আমাদের নেতার উপর কেন হামলা চালানো হল, এর আমরা তীব্র নিন্দা জানাই।' তবে ভিডিওটিতে পুলিশের কাছে হস্তান্তরকৃত কাগজটি যেটিকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে কাবিননামা বলা হচ্ছে সে ব্যাপারে কোনো বিস্তারিত তথ্য জানা যায়না।  

৩। ৪ এপ্রিল 'রিসোর্ট কাণ্ডে মামুনুলের পক্ষে থানায় অভিযোগ' শিরোনামে বিডিনিউজ২৪ এর একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, 'রোববার দুপুরে সোনারগাঁ থানায় হাজির হয়ে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে লাঞ্ছিত করার এই অভিযোগ দায়ের করেন মুফতি ফয়সাল মাহমুদ হাবিবী নামের এক যুবক'। এছাড়া বিডিনিউজ২৪ এর সেই  প্রতিবেদনে মুফতি ফয়সাল কর্তৃক পুলিশের হাতে হস্তান্তরকৃত কাগজটির একটি ছবিও দেয়া হয়। সেই কাগজটি মূলত সোনারগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর লিখিত একটি অভিযোগের। কাগজটির নিচে কাগজটির হস্তান্তরকারী মুফতি ফয়সাল হাবিবের নাম ও ফোন নাম্বার লিখিত আছে। বিডিনিউজ২৪ এর খবরটিতে কোনো কাবিননামা জমা দেয়ার কথার উল্লেখ পাওয়া যায়নি।  

৪। প্রথম আলোর প্রতিবেদনেও বলা হয়, মূলত থানায় অভিযোগপত্র জমা দিতেই গিয়েছিলেন তারা। যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে মামুনুল হক এবং তার দাবিকৃত স্ত্রীর ওপর হামলার অভিযোগ করেন তারা। প্রথম আলোর প্রতিবেদনটিতেও পুলিশের কাছে কোনো কাবিননামা জমা দেয়ার কথা বলা হয়নি।

ফলাফল: মামুনুল হকের উপর হামলার অভিযোগ দায়েরের ভিডিওকে তার দ্বিতীয় বিবাহের কাবিননামা জমা দেয়ার ভিডিও বলে দাবি করা হয়েছে যা মিথ্যে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরাসরি সমুদ্রপথে বাণিজ্যিক সম্পর্কের ঐতিহাসিক যুগে বাংলাদেশ-পাকিস্তান, শঙ্কায় ভারত

হাসিনা ক্ষমতা ছাড়ার পর দেশ ‘মবের মুল্লুক’: সামিনা লুৎফা

বাংলাদেশের বন্দরে পাকিস্তানের কার্গো জাহাজ, ‘ঐতিহাসিক’ বলা হচ্ছে যে কারণে

পরশুরামে ছুরিকাঘাতে তরুণ নিহত

নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সংলাপ শুরু কাল, চলবে পুরো নভেম্বর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত