অনলাইন ডেস্ক
ইন্টারনেটের হাত ধরে প্রসারিত হয়েছে ডিজিটাল দুনিয়া। এই দুনিয়ায় তথ্যের প্রবাহ এতটাই বেশি যে, কোনটি তথ্য আর কোনটি অপতথ্য সেটি নিশ্চিত হওয়াই কঠিন। আধুনিক দুনিয়ায় অপতথ্য চিহ্নিত করা এবং তা ছড়িয়ে পড়া ঠেকানোই এক বিরাট চ্যালেঞ্জ। তবে সেই চ্যালেঞ্জে নামার আগে অপতথ্য কীভাবে কাজ করে, কীভাবে ছড়ায় সেটি বোঝা জরুরি।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণের প্রাক্কালে ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এক্স ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘সাই ইং-ওয়েনের গোপন ইতিহাস’ নামে হাজারো ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওগুলোতে উপস্থাপকেরা ইংরেজি ও চীনা ভাষায় সাই ও তাঁর দল সম্পর্কে একাধিক মিথ্যা তথ্য হাজির করে।
এমনকি নির্বাচনের দিন চীনপন্থী বলে পরিচিত তেরি গৌয়ের একটি অডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে গৌকে বলতে শোনা যায়, তিনি নির্বাচনে চীনপন্থী প্রার্থীকে সমর্থন দিচ্ছেন। অথচ, তেরি গৌ এমন কোনো বক্তব্য দেননি বলে নিজেই জানিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, তেরি গৌ নিজেও প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ছিলেন। পরে অবশ্য নভেম্বরে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন তিনি।
এসব ভিডিও ও অডিও ক্লিপ সম্ভবত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল। এই ভিডিও ও অডিও ক্লিপগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছিল চীনা প্রোপাগান্ডা প্ল্যাটফর্ম স্প্যামোফ্লাজ, ড্রাগনব্রিজ ও স্টর্ম–১৩৭৬ থেকে। চলতি বছরের এপ্রিলে মাইক্রোসফটের থ্রেট ইন্টেলিজেন্স নামের একটি দল উল্লেখ করে, এই প্রথমবারের মতো তাঁরা প্রমাণ পেয়েছেন যে—একটি রাষ্ট্র এআই ব্যবহার করে বিদেশি কোনো রাষ্ট্রের নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে।
সাই ও তাঁর দলের বিরুদ্ধে যেসব ভিডিও ছড়ানো হয়েছিল, সেখানে যেসব উপস্থাপককে হাজির করা হয়েছিল সেগুলোও বাস্তব কোনো চরিত্র নয়। এগুলো তৈরি করা হয়েছিল ক্যাপকাট নামে একটি অ্যাপ ব্যবহার করে। যার মালিক প্রতিষ্ঠান চীনের বাইটড্যান্স; এটি আবার টিকটকেরও মাতৃপ্রতিষ্ঠান। এই ভিডিওগুলো এত দ্রুত ছড়িয়েছিল যে, একটা সময় প্রতি মিনিটে ১০০ বারেরও বেশি ছড়ানো হয়েছিল। কিন্তু পরে বিষয়টি জানাজানি হলে খুব দ্রুতই সেগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপরও কিছু মানুষ হয়তো সেই ভিডিওগুলো দেখেছেন।
তাইওয়ানের এক কর্মকর্তা তাইপেই টাইমসকে বলেন, চীন সম্ভবত এই ‘অপতথ্য’ ছড়ানোর কৌশলটি অন্যত্র বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তাইওয়ানকে পরীক্ষাক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।
তাইওয়ানের নির্বাচন সম্ভবত এআই দিয়ে তৈরি বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে পড়ার একটি নমুনামাত্র। তাইওয়ানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো যেমন অন্য রাষ্ট্রের অপতথ্য দিয়ে ভরে গিয়েছিল, একই অবস্থা যুক্তরাষ্ট্রেরও।
চলতি বছরে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে ভোট দিচ্ছে। ঠিক এই সময়ে বিভ্রান্তি তৈরি ও ছড়িয়ে দেওয়া আগের তুলনায় অনেক সহজ করে তুলছে নতুন প্রযুক্তি। ফলে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের সরকার, বেসরকারি সংস্থা ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে সমস্যাটি মোকাবিলা করার প্রয়োজনীয়তা বর্তমানে আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি অনুভূত হচ্ছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ বলেছেন, বিভ্রান্তিকর ও ভুল তথ্য আগামী দুই বছরে সবচেয়ে বড় বৈশ্বিক ঝুঁকি হিসেবে আবির্ভূত হবে। এমনকি যুদ্ধ, চরম আবহাওয়া বা মূল্যস্ফীতির চেয়েও বেশি বিপজ্জনক হবে।
এই বিষয়টি এখনো অস্পষ্ট যে, বর্তমান সময়ে ঠিক কী পরিমাণ অপতথ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এবং তা কীভাবে ব্যক্তির মতামত বা আচরণকে প্রভাবিত করে। তবে গবেষকেরা বিভ্রান্তিকর তথ্যের নেটওয়ার্কগুলো কীভাবে কাজ করে এবং জোয়ারের মতো বাড়তে থাকা অপতথ্য কীভাবে শনাক্ত ও পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব সে উপায়গুলোর বিকাশ ঘটাচ্ছেন। তাইওয়ান, সুইডেন ও ব্রাজিলের মতো কিছু দেশ অপতথ্যের সমস্যা মোকাবিলায় বেশ কিছু নীতি প্রয়োগ করেছে যা অন্যদের জন্য দরকারি শিক্ষা হতে পারে।
অপতথ্য অনেক রূপ ধারণ করতে পারে এবং তা অনেকগুলো দিককে প্রভাবিত করতে পারে। এ বিষয়ে সাবেক সাংবাদিক ও বর্তমানে অপতথ্য নিয়ে কাজ করা আমিল খান বলেন, অনেক বছর ধরেই অপতথ্য ছড়ানোর ক্ষেত্রে লাখ লাখ সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। একটিমাত্র নির্দিষ্ট অ্যাপ ব্যবহার করে একই বার্তা লাইক, শেয়ারের মাধ্যমে বিপুলসংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব।
আমিল খান জানান, বড় পরিসরে এই ‘কো–অর্ডিনেটেড ইন–অথেনটিক বিহেভিয়র (সিআইবি) ’ বা সমন্বিত অনির্ভরযোগ্য তথ্য ছড়ানোর কৌশল ফেসবুক বা এক্সের কিউরেশন অ্যালগরিদমকে বোকা বানাতে পারে। যার ফলে, এই প্ল্যাটফর্মগুলো মনে করে, অপতথ্য ছড়ানোর কনটেন্টগুলোর প্রতি মানুষের আগ্রহ আছে। ফলে অ্যালগরিদম নিজ থেকেই এই কনটেন্টগুলোকে প্রকৃত ব্যবহারকারীদের কাছে আরও বেশি বেশি উপস্থাপন করে।
আমিল খানের নিজস্ব প্রতিষ্ঠান ভ্যালেন্ট প্রজেক্ট সিআইবির একটি উদাহরণ হাজির করেছে। কিছুদিন আগে, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান ডেওউও ইরাক সরকারের একটি নির্মাণকাজের ঠিকাদারি পায় ২৬০ কোটি ডলারে। কিন্তু চীনা অপতথ্যের প্ল্যাটফর্মগুলো এই কোম্পানিটির বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লাগে এবং নেতিবাচক তথ্য প্রচার শুরু করে। যাতে করে, ডেওউও-এর ঠিকাদারি বাতিল হয় এবং শেষ পর্যন্ত কাজটি চীনা কোম্পানি পায়।
ওইসব প্রচারণায় ডেওউওকে ‘ইরাকি সম্পদ শোষণের মার্কিন ফ্রন্ট’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। এসব ভিডিওতে কিছু বানোয়াট বক্তব্য মার্কিন কর্মকর্তাদের নামে হাজির করে বোঝানোর চেষ্টা করা হয় যে, আমেরিকা সিনো-ইরাকি সম্পর্ক বিনষ্ট করার অপচেষ্টা করছে। যদিও ইরাক ও কাতারের বিভিন্ন ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান এসব অপতথ্যের ব্যাপারে কাজ করে ভুল ভাঙানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু তাতে খুব একটা ফায়দা হয়নি।
আমিল খানের মতে, প্রযুক্তির কল্যাণে আজকাল এসব সিআইবি কর্মকাণ্ড শনাক্ত করা খুব সহজ হয়ে গেছে। ফেসবুকের মাতৃপ্রতিষ্ঠান মেটা ইদানীং এই কাজটি বেশ সফলতার সঙ্গে করছে। ধীর গতিতে হলেও এক্সও একই কাজ করছে। গত ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে মেটা অন্তত তিনটি সিআইবি অপারেশনের ব্যাপারে তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করেছে। এসব সিআইবি অপারেশনের উৎস ছিল চীন, ইউক্রেন ও মিয়ানমার। মেটার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেন থেকে যেসব সিআইবি অপারেশন চালানো হয়েছে, তা রুশ ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসগুলো খুব দ্রুতই শনাক্ত করে ফেলতে সক্ষম হয়েছে।
কিন্তু ২০২২ সালের পর থেকে অপতথ্য ছড়ানোর বিষয়টি নতুন রূপ ধারণ করেছে। এই সময় বিভিন্ন ‘ডিনায়াবল এনটিটি’ যেমন, বিভিন্ন মার্কেটিং কোম্পানি এবং ট্রল ফার্ম—যেগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ কোনো যোগসূত্র নেই—এরা ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা বিভিন্ন ব্লগিং প্ল্যাটফর্মে নির্দিষ্ট কনটেন্ট শেয়ার করে।
অপতথ্য নিয়ে কাজ করা মার্কিন সংস্থা নিউজগার্ড জানিয়েছে, ২০২৩ সালের মে মাস থেকে চলতি বছরের এপ্রিলের মধ্যে অপতথ্য ছড়ানোর উদ্দেশ্যে এআই দিয়ে ওয়েবসাইটের সংখ্যা ৪৯ থেকে বেড়ে ৮০২–এ পৌঁছেছে। এই সাইটগুলোর বেশির ভাগের কনটেন্ট খুবই নিরীহ গোছের, কিন্তু তাতে মিথ্যা তথ্য মিশ্রিত থাকে, যা পাঠক বা দর্শককে সহজেই বিভ্রান্ত করতে পারে।
উদাহরণ হিসেবে ডিসি উইকলি নামের ওয়েবসাইটের কথাই ধরা যাক। দেখতে মার্কিন মনে হলেও এটি মূলত যুক্তরাষ্ট্রে রুশ অপতথ্য প্রচারণার কেন্দ্রে ছিল। এই ওয়েবসাইট থেকেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির স্ত্রী ওলেনা জেলেনস্কার বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো হয়েছিল যে, যুদ্ধের দুর্দশার মধ্যেও ওলেনা যুক্তরাষ্ট্রে এক দিনে ১১ লাখ ডলারের কেনাকাটা করেছেন।
পরে অবশ্য সাউথ ক্যালিফোর্নিয়ার ক্লেমসন ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা এই প্রচারণাকে ভুয়া প্রমাণ করেন। গবেষকেরা দেখেছেন, ওলেনার বিরুদ্ধে এই প্রোপাগান্ডা ইউটিউবের একটি ভিডিওর মাধ্যমে শুরু হয়েছিল এবং পরে তা বেশ কয়েকটি আফ্রিকান ফেক নিউজ ওয়েবসাইট এবং এআই দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রচারিত/প্রকাশিত হয়। এরপর রুশ প্রোপাগান্ডা প্ল্যাটফর্মগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেগুলো ছড়িয়ে দিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখে। ওলেনাকে নিয়ে এ সংক্রান্ত কনটেন্টগুলো অন্তত ২০ হাজারবার শেয়ার হয়।
যেসব সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট এবং ওয়েবসাইট প্রাথমিকভাবে এসব অপতথ্য উৎপাদন ও শেয়ার শুরু করছে সেগুলোকে আমিল খান ‘সিডারস’ বা সূত্রপাতকারী বলে উল্লেখ করছেন এবং যেসব অ্যাকাউন্ট থেকে কনটেন্টগুলো ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে সেগুলোকে ‘স্প্রেডার’ বা বিস্তারকারী বলে আখ্যা দিয়েছেন। অপতথ্য উৎপাদকেরা এ ধরনের স্প্রেডার ব্যবহার করেই অপতথ্যকে বানের জলের মতো ডিজিটাল পরিসরে ছড়িয়ে দিচ্ছে।
আমিল খানের মতে, এ ধরনের স্প্রেডার অ্যাকাউন্টগুলো প্রথম দিকে মূলত খেলাধুলা ও স্বল্পবসনা নারীদের ছবি/ভিডিও ব্যবহার করে ফলোয়ার সংগ্রহ করে। এরপর হঠাৎ একদিন সেগুলো ভোল পাল্টে ফেলে এবং সিডার অ্যাকাউন্টগুলোর কনটেন্ট লাইক বা শেয়ার করার মাধ্যমে অপতথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার সহযোগী হয়ে ওঠে।
গত বছরের নভেম্বরে প্রকাশিত মেটার থ্রেট রিপোর্টে (ঝুঁকি বিষয়ক প্রতিবেদন) উল্লেখ করা হয়, চীনের স্প্যামোফ্লাজ, স্টর্ম-১৩৭৬-এর মতো অর্ধশতাধিক প্ল্যাটফর্ম মেটার প্ল্যাটফর্মগুলোতে তাদের অপতথ্যের কনটেন্ট শেয়ার করার আগে বিভিন্ন ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম—মিডিয়াম, রেডিট ও কৌরায় শেয়ার করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর কম বয়সী ও প্রযুক্তি বোঝা তরুণেরা স্প্রেডার অ্যাকাউন্ট তৈরির বড় উৎস। আমিল খান বলছেন, দরিদ্র দেশগুলোতে অপতথ্যের কনটেন্ট ছড়ানোর ক্ষেত্রে রীতিমতো ‘কুটির শিল্প’ দাঁড়িয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যেমন, এই তরুণেরা বিভিন্ন পেজ তৈরি করে এবং সেগুলোর ফলোয়ার ১ লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ার পর তারা টাকার বিনিময়ে সেই অ্যাকাউন্ট বিভিন্ন অপতথ্য শেয়ারকারী সিডারের কাছে বিক্রি করে।
এই প্রক্রিয়াটিই অপতথ্যের মূল উৎস খুঁজে পাওয়া কঠিন করে তোলে। কারণ, স্প্রেডার অ্যাকাউন্টগুলোর মালিকেরা প্রায়ই প্রযুক্তি বিষয়ে অতটা দক্ষ হয় না। এ ছাড়া যে অপতথ্য শেয়ারের মাধ্যমে উপার্জন করে সেটির উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রায়ই তারা অবগত থাকে না বা থাকার প্রয়োজনও মনে করে না।
স্প্রেডারদে শনাক্ত করা বেশ কঠিন, কারণ তাদের আচরণে কোনো উদ্দেশ্য বা সন্দেহ করার মতো উপাদান থাকে না। অন্তত একটি স্প্রেডার অ্যাকাউন্ট তৈরির শুরুটা নিছক কনটেন্ট শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মই থাকে। এই স্প্রেডাররা অপতথ্যের উৎসও নয়। এরা মূলত বড় পরিসরে কনটেন্টের প্রচারকারী। আবার সচেতনভাবে বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে যেসব অ্যাকাউন্ট থেকে অপতথ্য ছড়ানো হয়, সেগুলো একই সঙ্গে অন্যান্য বিষয়ে কনটেন্টও শেয়ার করে এবং ধরা পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি এড়াতে মাঝে মাঝে অপতথ্য ও অন্যান্য কনটেন্ট মিশিয়ে শেয়ার করে।
চলবে...
ইন্টারনেটের হাত ধরে প্রসারিত হয়েছে ডিজিটাল দুনিয়া। এই দুনিয়ায় তথ্যের প্রবাহ এতটাই বেশি যে, কোনটি তথ্য আর কোনটি অপতথ্য সেটি নিশ্চিত হওয়াই কঠিন। আধুনিক দুনিয়ায় অপতথ্য চিহ্নিত করা এবং তা ছড়িয়ে পড়া ঠেকানোই এক বিরাট চ্যালেঞ্জ। তবে সেই চ্যালেঞ্জে নামার আগে অপতথ্য কীভাবে কাজ করে, কীভাবে ছড়ায় সেটি বোঝা জরুরি।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণের প্রাক্কালে ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এক্স ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘সাই ইং-ওয়েনের গোপন ইতিহাস’ নামে হাজারো ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওগুলোতে উপস্থাপকেরা ইংরেজি ও চীনা ভাষায় সাই ও তাঁর দল সম্পর্কে একাধিক মিথ্যা তথ্য হাজির করে।
এমনকি নির্বাচনের দিন চীনপন্থী বলে পরিচিত তেরি গৌয়ের একটি অডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে গৌকে বলতে শোনা যায়, তিনি নির্বাচনে চীনপন্থী প্রার্থীকে সমর্থন দিচ্ছেন। অথচ, তেরি গৌ এমন কোনো বক্তব্য দেননি বলে নিজেই জানিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, তেরি গৌ নিজেও প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ছিলেন। পরে অবশ্য নভেম্বরে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন তিনি।
এসব ভিডিও ও অডিও ক্লিপ সম্ভবত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল। এই ভিডিও ও অডিও ক্লিপগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছিল চীনা প্রোপাগান্ডা প্ল্যাটফর্ম স্প্যামোফ্লাজ, ড্রাগনব্রিজ ও স্টর্ম–১৩৭৬ থেকে। চলতি বছরের এপ্রিলে মাইক্রোসফটের থ্রেট ইন্টেলিজেন্স নামের একটি দল উল্লেখ করে, এই প্রথমবারের মতো তাঁরা প্রমাণ পেয়েছেন যে—একটি রাষ্ট্র এআই ব্যবহার করে বিদেশি কোনো রাষ্ট্রের নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে।
সাই ও তাঁর দলের বিরুদ্ধে যেসব ভিডিও ছড়ানো হয়েছিল, সেখানে যেসব উপস্থাপককে হাজির করা হয়েছিল সেগুলোও বাস্তব কোনো চরিত্র নয়। এগুলো তৈরি করা হয়েছিল ক্যাপকাট নামে একটি অ্যাপ ব্যবহার করে। যার মালিক প্রতিষ্ঠান চীনের বাইটড্যান্স; এটি আবার টিকটকেরও মাতৃপ্রতিষ্ঠান। এই ভিডিওগুলো এত দ্রুত ছড়িয়েছিল যে, একটা সময় প্রতি মিনিটে ১০০ বারেরও বেশি ছড়ানো হয়েছিল। কিন্তু পরে বিষয়টি জানাজানি হলে খুব দ্রুতই সেগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপরও কিছু মানুষ হয়তো সেই ভিডিওগুলো দেখেছেন।
তাইওয়ানের এক কর্মকর্তা তাইপেই টাইমসকে বলেন, চীন সম্ভবত এই ‘অপতথ্য’ ছড়ানোর কৌশলটি অন্যত্র বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তাইওয়ানকে পরীক্ষাক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।
তাইওয়ানের নির্বাচন সম্ভবত এআই দিয়ে তৈরি বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে পড়ার একটি নমুনামাত্র। তাইওয়ানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো যেমন অন্য রাষ্ট্রের অপতথ্য দিয়ে ভরে গিয়েছিল, একই অবস্থা যুক্তরাষ্ট্রেরও।
চলতি বছরে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে ভোট দিচ্ছে। ঠিক এই সময়ে বিভ্রান্তি তৈরি ও ছড়িয়ে দেওয়া আগের তুলনায় অনেক সহজ করে তুলছে নতুন প্রযুক্তি। ফলে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের সরকার, বেসরকারি সংস্থা ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে সমস্যাটি মোকাবিলা করার প্রয়োজনীয়তা বর্তমানে আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি অনুভূত হচ্ছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ বলেছেন, বিভ্রান্তিকর ও ভুল তথ্য আগামী দুই বছরে সবচেয়ে বড় বৈশ্বিক ঝুঁকি হিসেবে আবির্ভূত হবে। এমনকি যুদ্ধ, চরম আবহাওয়া বা মূল্যস্ফীতির চেয়েও বেশি বিপজ্জনক হবে।
এই বিষয়টি এখনো অস্পষ্ট যে, বর্তমান সময়ে ঠিক কী পরিমাণ অপতথ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এবং তা কীভাবে ব্যক্তির মতামত বা আচরণকে প্রভাবিত করে। তবে গবেষকেরা বিভ্রান্তিকর তথ্যের নেটওয়ার্কগুলো কীভাবে কাজ করে এবং জোয়ারের মতো বাড়তে থাকা অপতথ্য কীভাবে শনাক্ত ও পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব সে উপায়গুলোর বিকাশ ঘটাচ্ছেন। তাইওয়ান, সুইডেন ও ব্রাজিলের মতো কিছু দেশ অপতথ্যের সমস্যা মোকাবিলায় বেশ কিছু নীতি প্রয়োগ করেছে যা অন্যদের জন্য দরকারি শিক্ষা হতে পারে।
অপতথ্য অনেক রূপ ধারণ করতে পারে এবং তা অনেকগুলো দিককে প্রভাবিত করতে পারে। এ বিষয়ে সাবেক সাংবাদিক ও বর্তমানে অপতথ্য নিয়ে কাজ করা আমিল খান বলেন, অনেক বছর ধরেই অপতথ্য ছড়ানোর ক্ষেত্রে লাখ লাখ সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। একটিমাত্র নির্দিষ্ট অ্যাপ ব্যবহার করে একই বার্তা লাইক, শেয়ারের মাধ্যমে বিপুলসংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব।
আমিল খান জানান, বড় পরিসরে এই ‘কো–অর্ডিনেটেড ইন–অথেনটিক বিহেভিয়র (সিআইবি) ’ বা সমন্বিত অনির্ভরযোগ্য তথ্য ছড়ানোর কৌশল ফেসবুক বা এক্সের কিউরেশন অ্যালগরিদমকে বোকা বানাতে পারে। যার ফলে, এই প্ল্যাটফর্মগুলো মনে করে, অপতথ্য ছড়ানোর কনটেন্টগুলোর প্রতি মানুষের আগ্রহ আছে। ফলে অ্যালগরিদম নিজ থেকেই এই কনটেন্টগুলোকে প্রকৃত ব্যবহারকারীদের কাছে আরও বেশি বেশি উপস্থাপন করে।
আমিল খানের নিজস্ব প্রতিষ্ঠান ভ্যালেন্ট প্রজেক্ট সিআইবির একটি উদাহরণ হাজির করেছে। কিছুদিন আগে, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান ডেওউও ইরাক সরকারের একটি নির্মাণকাজের ঠিকাদারি পায় ২৬০ কোটি ডলারে। কিন্তু চীনা অপতথ্যের প্ল্যাটফর্মগুলো এই কোম্পানিটির বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লাগে এবং নেতিবাচক তথ্য প্রচার শুরু করে। যাতে করে, ডেওউও-এর ঠিকাদারি বাতিল হয় এবং শেষ পর্যন্ত কাজটি চীনা কোম্পানি পায়।
ওইসব প্রচারণায় ডেওউওকে ‘ইরাকি সম্পদ শোষণের মার্কিন ফ্রন্ট’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। এসব ভিডিওতে কিছু বানোয়াট বক্তব্য মার্কিন কর্মকর্তাদের নামে হাজির করে বোঝানোর চেষ্টা করা হয় যে, আমেরিকা সিনো-ইরাকি সম্পর্ক বিনষ্ট করার অপচেষ্টা করছে। যদিও ইরাক ও কাতারের বিভিন্ন ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান এসব অপতথ্যের ব্যাপারে কাজ করে ভুল ভাঙানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু তাতে খুব একটা ফায়দা হয়নি।
আমিল খানের মতে, প্রযুক্তির কল্যাণে আজকাল এসব সিআইবি কর্মকাণ্ড শনাক্ত করা খুব সহজ হয়ে গেছে। ফেসবুকের মাতৃপ্রতিষ্ঠান মেটা ইদানীং এই কাজটি বেশ সফলতার সঙ্গে করছে। ধীর গতিতে হলেও এক্সও একই কাজ করছে। গত ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে মেটা অন্তত তিনটি সিআইবি অপারেশনের ব্যাপারে তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করেছে। এসব সিআইবি অপারেশনের উৎস ছিল চীন, ইউক্রেন ও মিয়ানমার। মেটার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেন থেকে যেসব সিআইবি অপারেশন চালানো হয়েছে, তা রুশ ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসগুলো খুব দ্রুতই শনাক্ত করে ফেলতে সক্ষম হয়েছে।
কিন্তু ২০২২ সালের পর থেকে অপতথ্য ছড়ানোর বিষয়টি নতুন রূপ ধারণ করেছে। এই সময় বিভিন্ন ‘ডিনায়াবল এনটিটি’ যেমন, বিভিন্ন মার্কেটিং কোম্পানি এবং ট্রল ফার্ম—যেগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ কোনো যোগসূত্র নেই—এরা ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা বিভিন্ন ব্লগিং প্ল্যাটফর্মে নির্দিষ্ট কনটেন্ট শেয়ার করে।
অপতথ্য নিয়ে কাজ করা মার্কিন সংস্থা নিউজগার্ড জানিয়েছে, ২০২৩ সালের মে মাস থেকে চলতি বছরের এপ্রিলের মধ্যে অপতথ্য ছড়ানোর উদ্দেশ্যে এআই দিয়ে ওয়েবসাইটের সংখ্যা ৪৯ থেকে বেড়ে ৮০২–এ পৌঁছেছে। এই সাইটগুলোর বেশির ভাগের কনটেন্ট খুবই নিরীহ গোছের, কিন্তু তাতে মিথ্যা তথ্য মিশ্রিত থাকে, যা পাঠক বা দর্শককে সহজেই বিভ্রান্ত করতে পারে।
উদাহরণ হিসেবে ডিসি উইকলি নামের ওয়েবসাইটের কথাই ধরা যাক। দেখতে মার্কিন মনে হলেও এটি মূলত যুক্তরাষ্ট্রে রুশ অপতথ্য প্রচারণার কেন্দ্রে ছিল। এই ওয়েবসাইট থেকেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির স্ত্রী ওলেনা জেলেনস্কার বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো হয়েছিল যে, যুদ্ধের দুর্দশার মধ্যেও ওলেনা যুক্তরাষ্ট্রে এক দিনে ১১ লাখ ডলারের কেনাকাটা করেছেন।
পরে অবশ্য সাউথ ক্যালিফোর্নিয়ার ক্লেমসন ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা এই প্রচারণাকে ভুয়া প্রমাণ করেন। গবেষকেরা দেখেছেন, ওলেনার বিরুদ্ধে এই প্রোপাগান্ডা ইউটিউবের একটি ভিডিওর মাধ্যমে শুরু হয়েছিল এবং পরে তা বেশ কয়েকটি আফ্রিকান ফেক নিউজ ওয়েবসাইট এবং এআই দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রচারিত/প্রকাশিত হয়। এরপর রুশ প্রোপাগান্ডা প্ল্যাটফর্মগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেগুলো ছড়িয়ে দিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখে। ওলেনাকে নিয়ে এ সংক্রান্ত কনটেন্টগুলো অন্তত ২০ হাজারবার শেয়ার হয়।
যেসব সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট এবং ওয়েবসাইট প্রাথমিকভাবে এসব অপতথ্য উৎপাদন ও শেয়ার শুরু করছে সেগুলোকে আমিল খান ‘সিডারস’ বা সূত্রপাতকারী বলে উল্লেখ করছেন এবং যেসব অ্যাকাউন্ট থেকে কনটেন্টগুলো ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে সেগুলোকে ‘স্প্রেডার’ বা বিস্তারকারী বলে আখ্যা দিয়েছেন। অপতথ্য উৎপাদকেরা এ ধরনের স্প্রেডার ব্যবহার করেই অপতথ্যকে বানের জলের মতো ডিজিটাল পরিসরে ছড়িয়ে দিচ্ছে।
আমিল খানের মতে, এ ধরনের স্প্রেডার অ্যাকাউন্টগুলো প্রথম দিকে মূলত খেলাধুলা ও স্বল্পবসনা নারীদের ছবি/ভিডিও ব্যবহার করে ফলোয়ার সংগ্রহ করে। এরপর হঠাৎ একদিন সেগুলো ভোল পাল্টে ফেলে এবং সিডার অ্যাকাউন্টগুলোর কনটেন্ট লাইক বা শেয়ার করার মাধ্যমে অপতথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার সহযোগী হয়ে ওঠে।
গত বছরের নভেম্বরে প্রকাশিত মেটার থ্রেট রিপোর্টে (ঝুঁকি বিষয়ক প্রতিবেদন) উল্লেখ করা হয়, চীনের স্প্যামোফ্লাজ, স্টর্ম-১৩৭৬-এর মতো অর্ধশতাধিক প্ল্যাটফর্ম মেটার প্ল্যাটফর্মগুলোতে তাদের অপতথ্যের কনটেন্ট শেয়ার করার আগে বিভিন্ন ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম—মিডিয়াম, রেডিট ও কৌরায় শেয়ার করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর কম বয়সী ও প্রযুক্তি বোঝা তরুণেরা স্প্রেডার অ্যাকাউন্ট তৈরির বড় উৎস। আমিল খান বলছেন, দরিদ্র দেশগুলোতে অপতথ্যের কনটেন্ট ছড়ানোর ক্ষেত্রে রীতিমতো ‘কুটির শিল্প’ দাঁড়িয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যেমন, এই তরুণেরা বিভিন্ন পেজ তৈরি করে এবং সেগুলোর ফলোয়ার ১ লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ার পর তারা টাকার বিনিময়ে সেই অ্যাকাউন্ট বিভিন্ন অপতথ্য শেয়ারকারী সিডারের কাছে বিক্রি করে।
এই প্রক্রিয়াটিই অপতথ্যের মূল উৎস খুঁজে পাওয়া কঠিন করে তোলে। কারণ, স্প্রেডার অ্যাকাউন্টগুলোর মালিকেরা প্রায়ই প্রযুক্তি বিষয়ে অতটা দক্ষ হয় না। এ ছাড়া যে অপতথ্য শেয়ারের মাধ্যমে উপার্জন করে সেটির উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রায়ই তারা অবগত থাকে না বা থাকার প্রয়োজনও মনে করে না।
স্প্রেডারদে শনাক্ত করা বেশ কঠিন, কারণ তাদের আচরণে কোনো উদ্দেশ্য বা সন্দেহ করার মতো উপাদান থাকে না। অন্তত একটি স্প্রেডার অ্যাকাউন্ট তৈরির শুরুটা নিছক কনটেন্ট শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মই থাকে। এই স্প্রেডাররা অপতথ্যের উৎসও নয়। এরা মূলত বড় পরিসরে কনটেন্টের প্রচারকারী। আবার সচেতনভাবে বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে যেসব অ্যাকাউন্ট থেকে অপতথ্য ছড়ানো হয়, সেগুলো একই সঙ্গে অন্যান্য বিষয়ে কনটেন্টও শেয়ার করে এবং ধরা পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি এড়াতে মাঝে মাঝে অপতথ্য ও অন্যান্য কনটেন্ট মিশিয়ে শেয়ার করে।
চলবে...
বাংলাদেশে এক হিন্দু নারীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে দাবিতে মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে ১৮ সেকেন্ডের ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে। এতে দেখা যাচ্ছে, রক্তাক্ত এক নারীকে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য কোথাও নিয়ে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দীপক শর্মা নামের একটি ভারতীয় এক্স হ্যান্ডল থেকে ভিডিওটি টুইট করে দাবি করা হয়, ‘ভিড
১ দিন আগেআওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য সাবরিনা চৌধুরী নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় এমন দাবিতে স্ক্রিনশটটি পোস্ট করে লেখেন, ‘Sabnam Faria কিছুক্ষণ আগে একটা পোস্ট করলেন ৫ মিনিট পর ডিলিট করে দিলেন।’
২ দিন আগেএলিস থমাস নামের এক ওপেন সোর্স ইন্টেলিজেন্স গবেষকের বরাত দিয়ে জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে জানিয়েছে, ট্রাম্পকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে সাহায্য করেছে এআই পরিচালিত বট নেটওয়ার্ক।
৩ দিন আগেগত বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) ‘প্রবাসী জীবন’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। পোস্টটি আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক শেয়ার হয়েছে। রিয়েকশন পড়েছে ৪ হাজারের বেশি। ভিডিওটি দেখা হয়েছে ৪২ হাজার বার।
৩ দিন আগে