গোলাম রব্বানী ছোটন
সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমস খেলতে ২০০৯ সালের জুলাইয়ে প্রথম নারী ফুটবল দল গড়া হয়েছিল। এর আগে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করে সেখান থেকে বাছাই করা হয়েছিল খেলোয়াড়। সেসব খেলোয়াড় নিয়ে চারটি দল হয়েছিল। রাঙামাটি, বান্দরবান, নারায়ণগঞ্জ, যশোর, পঞ্চগড় থেকে খেলোয়াড়েরা আসত।
এদের অধিকাংশই ছিল অন্য ডিসিপ্লিনের। আরেকটু খুলে বললে, কেউ কাবাডি খেলত, কেউ এসেছে আর্চারি থেকে, আবার কেউ খেলত তায়কোয়ান্দো। ফুটবলে এরা সবাই ছিল একেবারেই নতুন। এদের নিয়ে মহিলা কমপ্লেক্সে একটা ক্যাম্প করা হলো। শুধু খেলানোর জন্য খেলা। শখের বশে খেলা। এই ফুটবলারদের তখন ফিটনেসের ওপর বেশি নজর দিতে হয়েছে। তারাই ২০১০ সালে এসএ গেমসে অংশ নিল। সেখানে আমরা পাকিস্তান আর শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ম্যাচ জিতলাম। ব্রোঞ্জ পেলাম। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের নারী ফুটবলে ওটাই প্রথম সাফল্য।
এসএ গেমসে খেলা সে মেয়েরাই সাফে খেলল। সেই সাফে আমরা সেমিফাইনালে নেপালের কাছে হেরে গেলাম। এভাবে কয়েকটা টুর্নামেন্ট খেলার পর আমার উপলব্ধি হলো কাবাডি, ভলিবলের মতো ডিসিপ্লিন থেকে আসা ফুটবলারদের নিয়ে খুব একটা এগোনো সম্ভব নয়। বাফুফে নারী বিভাগের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণ আপার সঙ্গে তখন আলোচনা করলাম, তিনিও উপলব্ধি করতে পারলেন বিষয়টি। ২০১২ সালের শেষের দিকে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতায় অনূর্ধ্ব-১৪ ট্যালেন্ট হান্ট প্রতিযোগিতা হলো। সেই টুর্নামেন্ট থেকে বাছাই করা হলো ২১০ ফুটবলারকে। কিন্তু সব ফুটবলারকে তো আমাদের পক্ষে রাখা সম্ভব নয়। তাই এসব ফুটবলারকে আবার জেলা অনুযায়ী ৭ দলে ভাগ করা হলো—প্রতি দলে ৩০ জন করে। বাফুফের অধীনে তখন ২০ জন কোচ ছিলেন। সেখান থেকে ১৪ জন কোচের অধীনে দলগুলোকে ৭ ভেন্যুতে এক মাস অনুশীলন করানো হয়। এরপর ৭ দলকে ১৪ দলে ভাগ করে একটা টুর্নামেন্ট হয় রাজশাহীতে। আমরা সেখান থেকে ৪৬ ফুটবলার বাছাই করলাম। আজকের মৌসুমী, স্বপ্না, মার্জিয়া, তহুরা, নার্গিস, কৃষ্ণা, মাসুরাদের মতো জাতীয় দলের ফুটবলাররা হচ্ছে সেই ক্যাম্পের ফল। এই ৪৬ ফুটবলারকে নিয়ে দুই মাসের ক্যাম্প হলো বাফুফে ভবনে। সেই ক্যাম্প করেই আমরা অনূর্ধ্ব-১৬ এএফসি কাপের বাছাইপর্ব খেললাম ২০১৪ সালে। নারী ফুটবলের সত্যিকারের পথচলা শুরু সেখান থেকেই। এরপর কী হয়েছে, সেসব গল্প তো প্রায় সবারই কম-বেশি জানা।
এসব পথচলায় প্রতিনিয়ত প্রতিকূলতা ছিলই। নারী ফুটবলকে শুরুতে অনেকে সুনজরে দেখতেন না। সামাজিক প্রতিবন্ধকতাও ছিল অনেক। অধিকাংশ ফুটবলার এসেছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে, রক্ষণশীল পরিবারগুলো চাইত না তাদের মেয়েরা ফুটবল খেলুক। এসব পরিবার মনে করত, ফুটবল খেললে তাদের মেয়েদের হাত-পা ভেঙে যাবে, তাদের বিয়ে হবে না। একটা উদাহরণ দিই, ২০১৪ সালে আমরা দুজন গোলরক্ষককে বাছাই করেছিলাম—আইরিন ও রাজিয়া। দুজনকে ক্যাম্পে ডাকতে গিয়ে জানতে পারলাম, দুজনেরই বিয়ে হয়ে গেছে। ২০১৬ সালের আগপর্যন্ত মা-বাবারা মনে করতেন, মেয়েদের ফুটবল খেলে কী হবে? এসব খেলার ভবিষ্যৎ কী? ২০১৬ সালে অনূর্ধ্ব-১৪ এএফসি এশিয়ান কাপের মূলপর্বে ওঠার পর বাফুফে সভাপতি ফুটবলারদের পরিবারকে সোনারগাঁও হোটেলে ডেকে সংবর্ধনা দিয়েছিলেন। তাদের আর্থিকভাবে পুরস্কৃত করা হয়েছিল। প্রতি ফুটবলার দেড় লাখ টাকা পেয়েছিল। মা-বাবারা ঢাকায় এসে তখন তাঁদের মেয়েদের ক্যাম্প দেখে গিয়েছিলেন, তাঁরা আশ্বস্ত হলেন। প্রধানমন্ত্রীও তাঁদের কয়েকবার ডেকে সংবর্ধনা দিলেন। সবকিছু দেখে তাঁরাও উৎসাহী হলেন। এরপর থেকেই নারীদের ফুটবলে অংশগ্রহণ বেড়েছে, আর বাফুফে ট্যালেন্ট হান্ট ঠিকঠাক চালু রাখায় এখন অনেক ফুটবলার উঠে আসছে।
মেয়েদের পথচলায় কত গল্পই না লুকিয়ে আছে। মেয়েরা যখন শুরুর দিকে অনুশীলন করত, তখন এক জোড়া বুটই ছিল সবার। মেয়েরা তখন মহিলা কমপ্লেক্সে অনুশীলন করত। কম দামের বুট। বৃষ্টি হলেই সেলাই খুলে যেত। তখন প্রতিদিন ধানমন্ডি থেকে ৭-৮ জোড়া বুট মতিঝিলে মুচির কাছে এনে সেলাই করে সেগুলো ফেরত দিয়ে আসতাম। দিনে আমাদের মহিলা কমপ্লেক্সে চারবার করে যাতায়াত করতে হতো। সকালে বুট সেলাই হলেই মেয়েরা বিকেলে অনুশীলন করতে নামত। বুট সেলাই না হলে অনুশীলন হতো না। শ্রীলঙ্কায় গিয়ে ট্যাক্সি করে আমাদের মুচি খুঁজে বের করতে হয়েছে। প্রতি বুট আমরা ৩০০ রুপি দিয়ে সেলাই করাতাম। দেখা গেল কোনো ফুটবলারের বুট সেলাইয়েরই অযোগ্য বা একেবারেই নেই। তখন নিজের টাকা দিয়ে আমি তাঁকে বুট কিনে দিয়েছি। এমন অনেক গল্পই আছে।
নারী ফুটবলে যোগ দেওয়ার আগে ২০০৮ সালে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে মেয়েদের একটা খেলা দেখেছিলাম। পশ্চিমবঙ্গের একটা দলের সঙ্গে বাংলাদেশ দলের খেলা হয়েছিল। পুরো ম্যাচে মেয়েরা সেই দলের ফুটবলারদের পেছন পেছন দৌড়েছে। এ খেলা দেখে দর্শকেরা খুব হাসি-তামাশা করে। নারী দলে যোগ দেওয়ার পর এসব বিষয় আমার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। আসলে আগে যাঁরা দলের দায়িত্বে ছিলেন তাঁরাও এই দল নিয়ে এতটা ভাবনা-চিন্তা করেননি। তখন শুধু অংশগ্রহণটাই মুখ্য ছিল। আমি কোচ হয়েই মেয়েদের বলেছি, খেলতে যদি হয় তাহলে খেলার মতো করে খেলতে হবে। মেয়েদের খেলা দেখে মানুষ হাসবে, এমনটি হতে দেওয়া যাবে না। কঠোর অনুশীলন, ফিটনেস—এসব বিষয়ে মেয়েদের ধারণাই ছিল না। তবে একটা জিনিস বুঝতে পেরেছিলাম, এই মেয়েরা হার মানার পাত্রী নয়। এদের যদি সঠিকভাবে আশ্বস্ত করা যায়, তাহলে উপায় হবেই। কঠোর অনুশীলনের সময় অনেক মেয়ে কেঁদেছে, ভয় পেয়েছে, অনেক ‘ওমা’ বলে মাঠেই বসে পড়েছে। এখন সবকিছুই তো পাল্টে গেছে।
মেয়েদের উন্নতিটা ধরে রাখতে হলে এখন সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অনুশীলন থেকে শুরু করে সবকিছুতেই পরিবর্তন আনতে হবে। ফেডারেশনের উচিত, সময়ের সঙ্গে মেয়েদের চাহিদাটা পূরণ করা। প্রচুর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলাতে হবে। যখন আপনি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলবেন তখন দলের প্রয়োজনে চাহিদাগুলো এমনিতেই পরিবর্তন ও পূরণ হতে শুরু করবে।
লেখক: সাবেক কোচ, জাতীয় নারী ফুটবল দল
সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমস খেলতে ২০০৯ সালের জুলাইয়ে প্রথম নারী ফুটবল দল গড়া হয়েছিল। এর আগে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করে সেখান থেকে বাছাই করা হয়েছিল খেলোয়াড়। সেসব খেলোয়াড় নিয়ে চারটি দল হয়েছিল। রাঙামাটি, বান্দরবান, নারায়ণগঞ্জ, যশোর, পঞ্চগড় থেকে খেলোয়াড়েরা আসত।
এদের অধিকাংশই ছিল অন্য ডিসিপ্লিনের। আরেকটু খুলে বললে, কেউ কাবাডি খেলত, কেউ এসেছে আর্চারি থেকে, আবার কেউ খেলত তায়কোয়ান্দো। ফুটবলে এরা সবাই ছিল একেবারেই নতুন। এদের নিয়ে মহিলা কমপ্লেক্সে একটা ক্যাম্প করা হলো। শুধু খেলানোর জন্য খেলা। শখের বশে খেলা। এই ফুটবলারদের তখন ফিটনেসের ওপর বেশি নজর দিতে হয়েছে। তারাই ২০১০ সালে এসএ গেমসে অংশ নিল। সেখানে আমরা পাকিস্তান আর শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ম্যাচ জিতলাম। ব্রোঞ্জ পেলাম। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের নারী ফুটবলে ওটাই প্রথম সাফল্য।
এসএ গেমসে খেলা সে মেয়েরাই সাফে খেলল। সেই সাফে আমরা সেমিফাইনালে নেপালের কাছে হেরে গেলাম। এভাবে কয়েকটা টুর্নামেন্ট খেলার পর আমার উপলব্ধি হলো কাবাডি, ভলিবলের মতো ডিসিপ্লিন থেকে আসা ফুটবলারদের নিয়ে খুব একটা এগোনো সম্ভব নয়। বাফুফে নারী বিভাগের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণ আপার সঙ্গে তখন আলোচনা করলাম, তিনিও উপলব্ধি করতে পারলেন বিষয়টি। ২০১২ সালের শেষের দিকে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতায় অনূর্ধ্ব-১৪ ট্যালেন্ট হান্ট প্রতিযোগিতা হলো। সেই টুর্নামেন্ট থেকে বাছাই করা হলো ২১০ ফুটবলারকে। কিন্তু সব ফুটবলারকে তো আমাদের পক্ষে রাখা সম্ভব নয়। তাই এসব ফুটবলারকে আবার জেলা অনুযায়ী ৭ দলে ভাগ করা হলো—প্রতি দলে ৩০ জন করে। বাফুফের অধীনে তখন ২০ জন কোচ ছিলেন। সেখান থেকে ১৪ জন কোচের অধীনে দলগুলোকে ৭ ভেন্যুতে এক মাস অনুশীলন করানো হয়। এরপর ৭ দলকে ১৪ দলে ভাগ করে একটা টুর্নামেন্ট হয় রাজশাহীতে। আমরা সেখান থেকে ৪৬ ফুটবলার বাছাই করলাম। আজকের মৌসুমী, স্বপ্না, মার্জিয়া, তহুরা, নার্গিস, কৃষ্ণা, মাসুরাদের মতো জাতীয় দলের ফুটবলাররা হচ্ছে সেই ক্যাম্পের ফল। এই ৪৬ ফুটবলারকে নিয়ে দুই মাসের ক্যাম্প হলো বাফুফে ভবনে। সেই ক্যাম্প করেই আমরা অনূর্ধ্ব-১৬ এএফসি কাপের বাছাইপর্ব খেললাম ২০১৪ সালে। নারী ফুটবলের সত্যিকারের পথচলা শুরু সেখান থেকেই। এরপর কী হয়েছে, সেসব গল্প তো প্রায় সবারই কম-বেশি জানা।
এসব পথচলায় প্রতিনিয়ত প্রতিকূলতা ছিলই। নারী ফুটবলকে শুরুতে অনেকে সুনজরে দেখতেন না। সামাজিক প্রতিবন্ধকতাও ছিল অনেক। অধিকাংশ ফুটবলার এসেছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে, রক্ষণশীল পরিবারগুলো চাইত না তাদের মেয়েরা ফুটবল খেলুক। এসব পরিবার মনে করত, ফুটবল খেললে তাদের মেয়েদের হাত-পা ভেঙে যাবে, তাদের বিয়ে হবে না। একটা উদাহরণ দিই, ২০১৪ সালে আমরা দুজন গোলরক্ষককে বাছাই করেছিলাম—আইরিন ও রাজিয়া। দুজনকে ক্যাম্পে ডাকতে গিয়ে জানতে পারলাম, দুজনেরই বিয়ে হয়ে গেছে। ২০১৬ সালের আগপর্যন্ত মা-বাবারা মনে করতেন, মেয়েদের ফুটবল খেলে কী হবে? এসব খেলার ভবিষ্যৎ কী? ২০১৬ সালে অনূর্ধ্ব-১৪ এএফসি এশিয়ান কাপের মূলপর্বে ওঠার পর বাফুফে সভাপতি ফুটবলারদের পরিবারকে সোনারগাঁও হোটেলে ডেকে সংবর্ধনা দিয়েছিলেন। তাদের আর্থিকভাবে পুরস্কৃত করা হয়েছিল। প্রতি ফুটবলার দেড় লাখ টাকা পেয়েছিল। মা-বাবারা ঢাকায় এসে তখন তাঁদের মেয়েদের ক্যাম্প দেখে গিয়েছিলেন, তাঁরা আশ্বস্ত হলেন। প্রধানমন্ত্রীও তাঁদের কয়েকবার ডেকে সংবর্ধনা দিলেন। সবকিছু দেখে তাঁরাও উৎসাহী হলেন। এরপর থেকেই নারীদের ফুটবলে অংশগ্রহণ বেড়েছে, আর বাফুফে ট্যালেন্ট হান্ট ঠিকঠাক চালু রাখায় এখন অনেক ফুটবলার উঠে আসছে।
মেয়েদের পথচলায় কত গল্পই না লুকিয়ে আছে। মেয়েরা যখন শুরুর দিকে অনুশীলন করত, তখন এক জোড়া বুটই ছিল সবার। মেয়েরা তখন মহিলা কমপ্লেক্সে অনুশীলন করত। কম দামের বুট। বৃষ্টি হলেই সেলাই খুলে যেত। তখন প্রতিদিন ধানমন্ডি থেকে ৭-৮ জোড়া বুট মতিঝিলে মুচির কাছে এনে সেলাই করে সেগুলো ফেরত দিয়ে আসতাম। দিনে আমাদের মহিলা কমপ্লেক্সে চারবার করে যাতায়াত করতে হতো। সকালে বুট সেলাই হলেই মেয়েরা বিকেলে অনুশীলন করতে নামত। বুট সেলাই না হলে অনুশীলন হতো না। শ্রীলঙ্কায় গিয়ে ট্যাক্সি করে আমাদের মুচি খুঁজে বের করতে হয়েছে। প্রতি বুট আমরা ৩০০ রুপি দিয়ে সেলাই করাতাম। দেখা গেল কোনো ফুটবলারের বুট সেলাইয়েরই অযোগ্য বা একেবারেই নেই। তখন নিজের টাকা দিয়ে আমি তাঁকে বুট কিনে দিয়েছি। এমন অনেক গল্পই আছে।
নারী ফুটবলে যোগ দেওয়ার আগে ২০০৮ সালে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে মেয়েদের একটা খেলা দেখেছিলাম। পশ্চিমবঙ্গের একটা দলের সঙ্গে বাংলাদেশ দলের খেলা হয়েছিল। পুরো ম্যাচে মেয়েরা সেই দলের ফুটবলারদের পেছন পেছন দৌড়েছে। এ খেলা দেখে দর্শকেরা খুব হাসি-তামাশা করে। নারী দলে যোগ দেওয়ার পর এসব বিষয় আমার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। আসলে আগে যাঁরা দলের দায়িত্বে ছিলেন তাঁরাও এই দল নিয়ে এতটা ভাবনা-চিন্তা করেননি। তখন শুধু অংশগ্রহণটাই মুখ্য ছিল। আমি কোচ হয়েই মেয়েদের বলেছি, খেলতে যদি হয় তাহলে খেলার মতো করে খেলতে হবে। মেয়েদের খেলা দেখে মানুষ হাসবে, এমনটি হতে দেওয়া যাবে না। কঠোর অনুশীলন, ফিটনেস—এসব বিষয়ে মেয়েদের ধারণাই ছিল না। তবে একটা জিনিস বুঝতে পেরেছিলাম, এই মেয়েরা হার মানার পাত্রী নয়। এদের যদি সঠিকভাবে আশ্বস্ত করা যায়, তাহলে উপায় হবেই। কঠোর অনুশীলনের সময় অনেক মেয়ে কেঁদেছে, ভয় পেয়েছে, অনেক ‘ওমা’ বলে মাঠেই বসে পড়েছে। এখন সবকিছুই তো পাল্টে গেছে।
মেয়েদের উন্নতিটা ধরে রাখতে হলে এখন সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অনুশীলন থেকে শুরু করে সবকিছুতেই পরিবর্তন আনতে হবে। ফেডারেশনের উচিত, সময়ের সঙ্গে মেয়েদের চাহিদাটা পূরণ করা। প্রচুর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলাতে হবে। যখন আপনি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলবেন তখন দলের প্রয়োজনে চাহিদাগুলো এমনিতেই পরিবর্তন ও পূরণ হতে শুরু করবে।
লেখক: সাবেক কোচ, জাতীয় নারী ফুটবল দল
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে লন্ডন এবং দিল্লি হয়ে ঢাকায় ফিরলেন। সেদিন অপরাহ্ণে রেসকোর্সে অলিখিত স্বতঃস্ফূর্ত ভাষণ দিয়েছিলেন। যে ভাষণটি আমি শুনেছিলাম—১৭ মিনিটের। ভাষণে একটি জায়গায় তিনি বলেছিলেন, একটা কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে,
২৬ মার্চ ২০২৪১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানে যে চার রাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করা হয়েছিল তার একটি সমাজতন্ত্র। সমাজতন্ত্র মানে বৈষম্যের অবসান। সমাজতন্ত্র মানে ন্যায্যতা। সমাজতন্ত্র মানে সবার শিক্ষা, চিকিৎসা, মাথাগোঁজার ঠাঁই, কাজের সুযোগ। সমাজতন্ত্র মানে যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ, প্রয়োজন অনুয
২৬ মার্চ ২০২৪স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্র পরিচালনার চালিকা শক্তি হিসেবে চারটি মৌলনীতি গ্রহণ করেছিলেন। এগুলো হলো: জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র। আজ ৫২ বছর পর দেখছি, এই মৌলনীতিগুলোর প্রতিটির সূচক এত নিচে নেমে গেছে যে, বলা চলে রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলনীতি বলে এখন আর কিছু নেই। জাতীয়তা দুই ভাগে বি
২৬ মার্চ ২০২৪বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা যেতে পারে, রাষ্ট্র হিসেবে নবীন, কিন্তু এর সভ্যতা সুপ্রাচীন। নদীবেষ্টিত গাঙেয় উপত্যকায় পলিবাহিত উর্বর ভূমি যেমন উপচে পড়া শস্যসম্ভারে জীবনকে সমৃদ্ধ করেছে, তেমনি নদীর ভাঙনের খেলায় রাতারাতি বিলুপ্ত হয়েছে বহু জনপদ। এরপরও সভ্যতার নানা চিহ্ন এখানে খুঁজে পাওয়া যায় এবং বাঙালিত্বের বৈশিষ
২৬ মার্চ ২০২৪