আশরাফ-উল-আলম, ঢাকা
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আগে-পরে তখনকার সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল কে এম শফিউল্লাহর নির্দেশনা ছিল অকার্যকর। মেজর জেনারেল (অব.) শফিউল্লাহ বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দেওয়ার সময় এ কথা জানান আদালতকে। তিনি তাঁর জবানবন্দির একপর্যায়ে বলেন, মেজর খালেদ মোশাররফকে তৎকালীন সেনাবাহিনীর ৪৬ ব্রিগেডের কমান্ডার কর্নেল শাফায়াত জামিলকে সহযোগিতা করার নির্দেশ দেন তিনি। কারণ, তাঁর পূর্ববর্তী আদেশের কোনো তৎপরতাই ছিল না। তিনি আরও জানান, খালেদ মোশাররফকে নির্দেশ দেওয়ার পর তৎকালীন সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান (পরে সেনাবাহিনী প্রধান ও রাষ্ট্রপতি) বাধা দিয়েছিলেন।
মেজর জেনারেল (অব.) শফিউল্লাহ বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ৪৫তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি মঞ্চ তৈরি করা হয়। ১৪ আগস্ট সেখানে কয়েকটি মাইন বিস্ফোরণ হয়। পুলিশের কাছে বিস্ফোরক প্রতিরোধের কোনো সরঞ্জাম না থাকায় তৎকালীন পুলিশের আইজি নুরুল ইসলাম সেনাবাহিনী প্রধানের কাছে সহযোগিতা চান। মেজর জেনারেল শফিউল্লাহ সেনাবাহিনী ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিটের বিশেষজ্ঞ সেখানে পাঠান। রাত পর্যন্ত তিনি বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেন। ক্লান্ত হয়েই তিনি বেশি রাতে ঘুমাতে যান।
মেজর জেনারেল শফিউল্লাহ তাঁর সাক্ষ্যে বলেন, ১৫ আগস্ট খুব ভোরে তাঁকে ঘুম থেকে ডেকে তোলা হয়। দরজা খুলতেই তিনি দেখেন, সামরিক গোয়েন্দা পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সালাহউদ্দিন উপস্থিত। সেনাবাহিনীর আর্টিলারি রেজিমেন্ট রেডিও স্টেশন, গণভবন ও ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের দিকে যাচ্ছে। শফিউল্লাহ তখন সালাহউদ্দিনকে ৪৬ ব্রিগেডের কমান্ডার কর্নেল সাফায়াত জামিলের কাছে যেতে বলেন। একই সঙ্গে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে যে তিনটি পদাতিক বাহিনী আছে, তাদের এসব প্রতিহত করার নির্দেশ দেন।
এদিকে মেজর জেনারেল শফিউল্লাহ বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু তিনি ফোনে বঙ্গবন্ধুকে পাচ্ছিলেন না। এ সময় তিনি বিমানবাহিনী প্রধান এ কে খন্দকার, নৌবাহিনী প্রধান এম এইচ খান, ডেপুটি চিফ অব আর্মি জিয়াউর রহমান, ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ ও ঢাকা ব্রিগেড কমান্ডার কর্নেল সাফায়াত জামিলকে ফোন করেন। সাফায়াত জামিলকে তিনি তাঁর অধীনস্থ তিনটি ব্যাটালিয়ন নিয়ে আর্টিলারি বাহিনীকে প্রতিহত করার নির্দেশ দেন। একপর্যায়ে ভোর ৫টা থেকে সোয়া ৫টার দিকে শফিউল্লাহ বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু শফিউল্লাহকে বলেন, ‘শফিউল্লাহ, তোমার ফোর্স আমার বাড়ি অ্যাটাক করেছে। কামালকে বোধ হয় তারা মেরে ফেলেছে। জলদি ফোর্স পাঠাও।’ উত্তরে শফিউল্লাহ বলেন , ‘আই অ্যাম ডুয়িং সামথিং, ক্যান ইউ গেট আউট টু ইউর হাউস?’ এর পর শফিউল্লাহ জিয়াউর রহমান ও খালেদ মোশাররফকে ডাকেন। তাঁরা ১৫/২০ মিনিটের মধ্যেই আসেন। তখন ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফকে আর্টিলারি বাহিনীকে প্রতিহত করার জন্য সাফায়াত জামিলকে সহযোগিতা করতে নির্দেশ দেন। কিন্তু জিয়াউর রহমান বাধা দেন। তিনি বলেন, ‘ডোন্ট সেন্ট হিম। হি ইজ গোয়িং টু স্পয়েল ইট (তাকে পাঠিও না। সে সবকিছু নষ্ট করে ফেলবে)।’
মেজর জেনারেল শফিউল্লাহ জবানবন্দিতে আরও বলেন, সবকিছু দ্রুত ঘটছিল। তিনি সেনা সদর দপ্তরে যান। জিয়াউর রহমানও তাঁর সঙ্গে যান। তিনি ঢাকার বাইরের সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। খালেদ মোশাররফও সদর দপ্তরে আসেন। তিনি ঢাকার সব ব্রিগেড কমান্ডারকে ওই দিনের ঘটনা প্রতিহত করার নির্দেশ দেন। কিন্তু ৭টার সময় রেডিওতে ভেসে আসে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে। খালেদ মোশাররফ বাইরে যা দেখে এসেছেন, তা জানাতে শুরু করবেন—এই সময় বাইরে হট্টগোল হয়। মেজর ডালিম ১০/১৫ জনসহ সশস্ত্র সেনা নিয়ে সেনাপ্রধানের কক্ষে ঢোকেন। ডালিম চাকরিচ্যুত থাকলেও সেদিন সেনা পোশাক পরা ছিলেন।
তখন সেনাপ্রধান ডালিমকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘অস্ত্র বাইরে রেখে আসো। আর যদি ব্যবহার করতে আসো, তাহলে ব্যবহার করো।’ এ সময় ডালিম অস্ত্র নিচে নামিয়ে বলেন, ‘স্যার প্রেসিডেন্ট ওয়ান্টস ইউ ইন রেডিও স্টেশন।’ সেনাপ্রধান বলেন, প্রেসিডেন্ট তো মারা গেছেন। তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। ডালিম আবার বলেন, ‘খন্দকার মোশতাক ইজ দ্য প্রেসিডেন্ট নাও।’
মেজর জেনারেল শফিউল্লাহ এ সময় সেনা সদর দপ্তর থেকে বেরিয়ে ৪৬ ব্রিগেডের দিকে রওনা হন। ডালিম তাঁর সৈন্যসামন্ত নিয়ে পেছনে পেছনে যান। শফিউল্লাহকে ৪৬ ব্রিগেডের একটি কক্ষে নিয়ে যান ডালিম। এর পর তাঁকে রেডিও স্টেশনে যেতে চাপ দেওয়া হয়। শফিউল্লাহ কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন। তিনি বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনী প্রধানকে আসতে বলেন। তাঁরা আসেন। একসময় সৈন্যরা তিন বাহিনীর প্রধানকে রেডিও স্টেশনে নিয়ে যায়। রেডিও স্টেশনে খন্দকার মোশতাক ও তাহের উদ্দিন ঠাকুর ছিলেন। খন্দকার মোশতাক সেনাপ্রধানকে বলেন, ‘কংগ্র্যাচুলেশন শফিউল্লাহ।ই উ ডু দ্য রেস্ট।’ শফিউল্লাহ প্রশ্ন করেন, ‘হোয়াট রেস্ট?’ মোশতাক বলেন, ‘ইউ শ্যুড নো ইট বেটার।’ শফিউল্লাহ বলেন, ‘ইন দ্যাট কেইস, লিভ টু মি।’ তিনি বেরিয়ে যেতে চান। তাহের উদ্দিন ঠাকুর তাঁকে থামিয়ে দেন। মেজর ডালিম, মেজর রশিদ ও ক্যাপ্টেন মোসলেম উদ্দিন সেনাপ্রধানকে আটকে রাখেন। একটি কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। এর পর তাহের উদ্দিন ঠাকুর খন্দকার মোশতাককে প্রেসিডেন্ট হিসেবে আনুগত্য স্বীকারের একটি খসড়া ঘোষণা লিখে দেন। শফিউল্লাহকে এটা জোরে পড়তে বলা হয়, এবং সেটা রেকর্ড করা হয়। পরে তাঁকে বঙ্গভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মাহমুদ হোসেন ওই দিনই খন্দকার মোশতাককে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ পড়ান বঙ্গভবনে। এর পর তৎকালীন সেনাপ্রধানকে বঙ্গভবনে আটকে রাখা হয়। এক কাপড়েই তিনি বঙ্গভবনে কাটান। ২৪ আগস্ট তাঁকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। তিনি তাঁর সাক্ষ্যে বঙ্গভবনে ওই কয়েক দিন যা যা ঘটেছিল, তার বর্ণনাও দেন।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আগে-পরে তখনকার সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল কে এম শফিউল্লাহর নির্দেশনা ছিল অকার্যকর। মেজর জেনারেল (অব.) শফিউল্লাহ বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দেওয়ার সময় এ কথা জানান আদালতকে। তিনি তাঁর জবানবন্দির একপর্যায়ে বলেন, মেজর খালেদ মোশাররফকে তৎকালীন সেনাবাহিনীর ৪৬ ব্রিগেডের কমান্ডার কর্নেল শাফায়াত জামিলকে সহযোগিতা করার নির্দেশ দেন তিনি। কারণ, তাঁর পূর্ববর্তী আদেশের কোনো তৎপরতাই ছিল না। তিনি আরও জানান, খালেদ মোশাররফকে নির্দেশ দেওয়ার পর তৎকালীন সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান (পরে সেনাবাহিনী প্রধান ও রাষ্ট্রপতি) বাধা দিয়েছিলেন।
মেজর জেনারেল (অব.) শফিউল্লাহ বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ৪৫তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি মঞ্চ তৈরি করা হয়। ১৪ আগস্ট সেখানে কয়েকটি মাইন বিস্ফোরণ হয়। পুলিশের কাছে বিস্ফোরক প্রতিরোধের কোনো সরঞ্জাম না থাকায় তৎকালীন পুলিশের আইজি নুরুল ইসলাম সেনাবাহিনী প্রধানের কাছে সহযোগিতা চান। মেজর জেনারেল শফিউল্লাহ সেনাবাহিনী ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিটের বিশেষজ্ঞ সেখানে পাঠান। রাত পর্যন্ত তিনি বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেন। ক্লান্ত হয়েই তিনি বেশি রাতে ঘুমাতে যান।
মেজর জেনারেল শফিউল্লাহ তাঁর সাক্ষ্যে বলেন, ১৫ আগস্ট খুব ভোরে তাঁকে ঘুম থেকে ডেকে তোলা হয়। দরজা খুলতেই তিনি দেখেন, সামরিক গোয়েন্দা পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সালাহউদ্দিন উপস্থিত। সেনাবাহিনীর আর্টিলারি রেজিমেন্ট রেডিও স্টেশন, গণভবন ও ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের দিকে যাচ্ছে। শফিউল্লাহ তখন সালাহউদ্দিনকে ৪৬ ব্রিগেডের কমান্ডার কর্নেল সাফায়াত জামিলের কাছে যেতে বলেন। একই সঙ্গে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে যে তিনটি পদাতিক বাহিনী আছে, তাদের এসব প্রতিহত করার নির্দেশ দেন।
এদিকে মেজর জেনারেল শফিউল্লাহ বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু তিনি ফোনে বঙ্গবন্ধুকে পাচ্ছিলেন না। এ সময় তিনি বিমানবাহিনী প্রধান এ কে খন্দকার, নৌবাহিনী প্রধান এম এইচ খান, ডেপুটি চিফ অব আর্মি জিয়াউর রহমান, ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ ও ঢাকা ব্রিগেড কমান্ডার কর্নেল সাফায়াত জামিলকে ফোন করেন। সাফায়াত জামিলকে তিনি তাঁর অধীনস্থ তিনটি ব্যাটালিয়ন নিয়ে আর্টিলারি বাহিনীকে প্রতিহত করার নির্দেশ দেন। একপর্যায়ে ভোর ৫টা থেকে সোয়া ৫টার দিকে শফিউল্লাহ বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু শফিউল্লাহকে বলেন, ‘শফিউল্লাহ, তোমার ফোর্স আমার বাড়ি অ্যাটাক করেছে। কামালকে বোধ হয় তারা মেরে ফেলেছে। জলদি ফোর্স পাঠাও।’ উত্তরে শফিউল্লাহ বলেন , ‘আই অ্যাম ডুয়িং সামথিং, ক্যান ইউ গেট আউট টু ইউর হাউস?’ এর পর শফিউল্লাহ জিয়াউর রহমান ও খালেদ মোশাররফকে ডাকেন। তাঁরা ১৫/২০ মিনিটের মধ্যেই আসেন। তখন ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফকে আর্টিলারি বাহিনীকে প্রতিহত করার জন্য সাফায়াত জামিলকে সহযোগিতা করতে নির্দেশ দেন। কিন্তু জিয়াউর রহমান বাধা দেন। তিনি বলেন, ‘ডোন্ট সেন্ট হিম। হি ইজ গোয়িং টু স্পয়েল ইট (তাকে পাঠিও না। সে সবকিছু নষ্ট করে ফেলবে)।’
মেজর জেনারেল শফিউল্লাহ জবানবন্দিতে আরও বলেন, সবকিছু দ্রুত ঘটছিল। তিনি সেনা সদর দপ্তরে যান। জিয়াউর রহমানও তাঁর সঙ্গে যান। তিনি ঢাকার বাইরের সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। খালেদ মোশাররফও সদর দপ্তরে আসেন। তিনি ঢাকার সব ব্রিগেড কমান্ডারকে ওই দিনের ঘটনা প্রতিহত করার নির্দেশ দেন। কিন্তু ৭টার সময় রেডিওতে ভেসে আসে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে। খালেদ মোশাররফ বাইরে যা দেখে এসেছেন, তা জানাতে শুরু করবেন—এই সময় বাইরে হট্টগোল হয়। মেজর ডালিম ১০/১৫ জনসহ সশস্ত্র সেনা নিয়ে সেনাপ্রধানের কক্ষে ঢোকেন। ডালিম চাকরিচ্যুত থাকলেও সেদিন সেনা পোশাক পরা ছিলেন।
তখন সেনাপ্রধান ডালিমকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘অস্ত্র বাইরে রেখে আসো। আর যদি ব্যবহার করতে আসো, তাহলে ব্যবহার করো।’ এ সময় ডালিম অস্ত্র নিচে নামিয়ে বলেন, ‘স্যার প্রেসিডেন্ট ওয়ান্টস ইউ ইন রেডিও স্টেশন।’ সেনাপ্রধান বলেন, প্রেসিডেন্ট তো মারা গেছেন। তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। ডালিম আবার বলেন, ‘খন্দকার মোশতাক ইজ দ্য প্রেসিডেন্ট নাও।’
মেজর জেনারেল শফিউল্লাহ এ সময় সেনা সদর দপ্তর থেকে বেরিয়ে ৪৬ ব্রিগেডের দিকে রওনা হন। ডালিম তাঁর সৈন্যসামন্ত নিয়ে পেছনে পেছনে যান। শফিউল্লাহকে ৪৬ ব্রিগেডের একটি কক্ষে নিয়ে যান ডালিম। এর পর তাঁকে রেডিও স্টেশনে যেতে চাপ দেওয়া হয়। শফিউল্লাহ কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন। তিনি বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনী প্রধানকে আসতে বলেন। তাঁরা আসেন। একসময় সৈন্যরা তিন বাহিনীর প্রধানকে রেডিও স্টেশনে নিয়ে যায়। রেডিও স্টেশনে খন্দকার মোশতাক ও তাহের উদ্দিন ঠাকুর ছিলেন। খন্দকার মোশতাক সেনাপ্রধানকে বলেন, ‘কংগ্র্যাচুলেশন শফিউল্লাহ।ই উ ডু দ্য রেস্ট।’ শফিউল্লাহ প্রশ্ন করেন, ‘হোয়াট রেস্ট?’ মোশতাক বলেন, ‘ইউ শ্যুড নো ইট বেটার।’ শফিউল্লাহ বলেন, ‘ইন দ্যাট কেইস, লিভ টু মি।’ তিনি বেরিয়ে যেতে চান। তাহের উদ্দিন ঠাকুর তাঁকে থামিয়ে দেন। মেজর ডালিম, মেজর রশিদ ও ক্যাপ্টেন মোসলেম উদ্দিন সেনাপ্রধানকে আটকে রাখেন। একটি কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। এর পর তাহের উদ্দিন ঠাকুর খন্দকার মোশতাককে প্রেসিডেন্ট হিসেবে আনুগত্য স্বীকারের একটি খসড়া ঘোষণা লিখে দেন। শফিউল্লাহকে এটা জোরে পড়তে বলা হয়, এবং সেটা রেকর্ড করা হয়। পরে তাঁকে বঙ্গভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মাহমুদ হোসেন ওই দিনই খন্দকার মোশতাককে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ পড়ান বঙ্গভবনে। এর পর তৎকালীন সেনাপ্রধানকে বঙ্গভবনে আটকে রাখা হয়। এক কাপড়েই তিনি বঙ্গভবনে কাটান। ২৪ আগস্ট তাঁকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। তিনি তাঁর সাক্ষ্যে বঙ্গভবনে ওই কয়েক দিন যা যা ঘটেছিল, তার বর্ণনাও দেন।
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে লন্ডন এবং দিল্লি হয়ে ঢাকায় ফিরলেন। সেদিন অপরাহ্ণে রেসকোর্সে অলিখিত স্বতঃস্ফূর্ত ভাষণ দিয়েছিলেন। যে ভাষণটি আমি শুনেছিলাম—১৭ মিনিটের। ভাষণে একটি জায়গায় তিনি বলেছিলেন, একটা কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে,
২৬ মার্চ ২০২৪১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানে যে চার রাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করা হয়েছিল তার একটি সমাজতন্ত্র। সমাজতন্ত্র মানে বৈষম্যের অবসান। সমাজতন্ত্র মানে ন্যায্যতা। সমাজতন্ত্র মানে সবার শিক্ষা, চিকিৎসা, মাথাগোঁজার ঠাঁই, কাজের সুযোগ। সমাজতন্ত্র মানে যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ, প্রয়োজন অনুয
২৬ মার্চ ২০২৪স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্র পরিচালনার চালিকা শক্তি হিসেবে চারটি মৌলনীতি গ্রহণ করেছিলেন। এগুলো হলো: জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র। আজ ৫২ বছর পর দেখছি, এই মৌলনীতিগুলোর প্রতিটির সূচক এত নিচে নেমে গেছে যে, বলা চলে রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলনীতি বলে এখন আর কিছু নেই। জাতীয়তা দুই ভাগে বি
২৬ মার্চ ২০২৪বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা যেতে পারে, রাষ্ট্র হিসেবে নবীন, কিন্তু এর সভ্যতা সুপ্রাচীন। নদীবেষ্টিত গাঙেয় উপত্যকায় পলিবাহিত উর্বর ভূমি যেমন উপচে পড়া শস্যসম্ভারে জীবনকে সমৃদ্ধ করেছে, তেমনি নদীর ভাঙনের খেলায় রাতারাতি বিলুপ্ত হয়েছে বহু জনপদ। এরপরও সভ্যতার নানা চিহ্ন এখানে খুঁজে পাওয়া যায় এবং বাঙালিত্বের বৈশিষ
২৬ মার্চ ২০২৪