মো. আশিকুর রহমান
সিদ্ধান্তটা আপেক্ষিক
এ পৃথিবীতে বাস করা প্রায় আট শ কোটি মানুষের প্রত্যেকে একে অন্যের থেকে আলাদা। সবার কাছে সফলতার সংজ্ঞা আলাদা, সবার আত্মতৃপ্তির জায়গাও আলাদা। নিজের অবস্থান থেকে নিজের জন্য একটা বাস্তবসম্মত জায়গা খুঁজে বের করতে হবে। যেখানে আপনার পড়তে ভালো লাগবে বা মন থেকে তৃপ্তি পাবেন, সেখানেই পড়ুন। সেটা হতে পারে ডিগ্রি, অনার্স, ডিপ্লোমা, টেকনিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং, আইটি, মেডিকেল—যেকোনো কিছু। অন্যের সঙ্গে নিজেকে তুলনা না করে নিজের সিদ্ধান্তের ওপর অবিচল থাকুন।
লক্ষ্য নির্ধারণ
জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে লক্ষ্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে এসডব্লিউটি বিশ্লেষণ করা জরুরি। নিজের শক্তিশালী দিক, দুর্বল দিক, সম্ভাবনা ও আশঙ্কার বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে ভবিষ্যতের ক্যারিয়ার পরিকল্পনা করুন। সেটা কীভাবে দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই হবে, তা ভাবুন। পারিবারিক কোনো চাপে বা অন্যের পছন্দ অনুযায়ী নয়, আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে নিজের পছন্দ অনুযায়ী লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। উচ্চমাধ্যমিক পাস করা একজন শিক্ষার্থী যদি চিকিৎসক হতে চান, তাহলে এক ধরনের পড়াশোনা। ইঞ্জিনিয়ার হতে চাইলে তাঁর ভাবনা ও প্রস্তুতি আলাদা হবে। আবার কেউ যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়তে চান কিংবা বিদেশে যেতে চান, তাঁর পড়াশোনা আলাদা হবে। কেউ যদি খেলোয়াড় বা সংগীতশিল্পী হতে চান, তাঁর পড়াশোনার ধরনও আলাদা হবে। লক্ষ্য নির্ধারণের সময় এ বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখতে হবে।
নিতে হবে পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রবেশ করার প্রক্রিয়া আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে প্রতিযোগিতাপূর্ণ হয়েছে। আমাদের দেশের স্কুল-কলেজের যে শিক্ষাধারা, তার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় বা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশের যে পরীক্ষা, সেটির পার্থক্য রয়েছে। সংগত কারণে একজন শিক্ষার্থীকে একটা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হয়। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক পরীক্ষা দিতে হয়। বিভিন্ন বিভাগের জন্য যে আলাদা প্রস্তুতি, সে অনুযায়ী নিজেকে প্রস্তুত করে নিতে হবে। মনোযোগের সঙ্গে সুচিন্তিতভাবে সময়ের যথাযথ ব্যবহার করতে হবে। নিতে হবে একটা পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি।
রয়েছে বিভাগের বৈচিত্র্য
রোবোটিকস ও মেকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ন্যানোম্যাটেরিয়ালস অ্যান্ড সিরামিক প্রকৌশল বিভাগ, পেট্রোলিয়াম ও খনিজ সম্পদ প্রকৌশল বিভাগ কিংবা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন প্রকৌশলের মতো বিষয় পড়ানো হয় কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে। তেমনি পড়ানো হয়
ভাষা, সাহিত্য, লোকপ্রশাসন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, নৃবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান কিংবা সংগীতের মতো বিষয়। অনুষদভেদে, বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে বিভাগের বৈচিত্র্য রয়েছে। সব কটি বিশ্ববিদ্যালয় মিলিয়ে সাড়ে তিন শর বেশি বিষয়ে পাঠদান করা হয়। সিদ্ধান্ত আপনার—নিজের যোগ্যতা ও ফলাফল অনুযায়ী কোন বিভাগটি আপনার জন্য উপযুক্ত।
শুধু সার্টিফিকেটের জন্য পড়াশোনা নয়
অনেকে মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো বিভাগের সার্টিফিকেট হলেই হলো। কিন্তু আমার কাছে এমন মনে হয় না। যে বিষয়ে পড়ুন না কেন, তাতে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। পাশাপাশি সে সময়েই নির্বাচন করে ফেলতে হবে ভবিষ্যতে কী হতে চান। কেউ বেকার থাকতে চান না।
মা-বাবাদের তো চিন্তার মধ্যেই আসে না, তাঁদের সন্তান উচ্চশিক্ষা লাভ করেও বেকার থাকবেন। এ কারণে একটা পারিবারিক ও সামাজিক দায়বদ্ধতা থাকে। প্রতিষ্ঠিত হতে না পারলে নিজেকে সমাজে বিচ্ছিন্ন মানুষ মনে হয়। এ জন্য আগেভাগে ঠিক করতে হবে, কোন ধরনের পড়াশোনা আপনি করবেন; কিংবা চাকরির ধরন কী হবে। তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে সচেতন হতে হবে অবশ্যই তথ্যপ্রযুক্তি বা আইটির সঙ্গে থাকতে হবে।
তবে মনে রাখতে হবে, একটা সময় তথ্যের অপ্রতুলতা সংকট সৃষ্টি করেছিল। এখন তথ্যের অতিপ্রাপ্যতা সংকট সৃষ্টি করে মানুষকে বিভ্রান্তিতে ফেলছে। কোন জিনিস কোন জায়গা থেকে নিতে হবে, সে বিষয়ে সচেতনতা জরুরি। মুদ্রিত তথ্যমাত্রই সঠিক, তা যেমন নয়; ভার্চুয়াল মিডিয়ায় পাওয়া তথ্য বেঠিক, তেমনও নয়। প্রকৃত তথ্য গ্রহণ করার দক্ষতা অর্জন করতে হবে শিক্ষার্থীদের। না হলে একসময়ের অপ্রাপ্তির অসুখ অতিপ্রাপ্তির বিড়ম্বনা সৃষ্টি করবে। এমন সংকটকে অতিক্রম করতে হবে, যাঁরাই অতিক্রম করতে পারবেন, তাঁরাই এগিয়ে যাবেন।
অনুলিখন: মো. আশিকুর রহমান
সিদ্ধান্তটা আপেক্ষিক
এ পৃথিবীতে বাস করা প্রায় আট শ কোটি মানুষের প্রত্যেকে একে অন্যের থেকে আলাদা। সবার কাছে সফলতার সংজ্ঞা আলাদা, সবার আত্মতৃপ্তির জায়গাও আলাদা। নিজের অবস্থান থেকে নিজের জন্য একটা বাস্তবসম্মত জায়গা খুঁজে বের করতে হবে। যেখানে আপনার পড়তে ভালো লাগবে বা মন থেকে তৃপ্তি পাবেন, সেখানেই পড়ুন। সেটা হতে পারে ডিগ্রি, অনার্স, ডিপ্লোমা, টেকনিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং, আইটি, মেডিকেল—যেকোনো কিছু। অন্যের সঙ্গে নিজেকে তুলনা না করে নিজের সিদ্ধান্তের ওপর অবিচল থাকুন।
লক্ষ্য নির্ধারণ
জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে লক্ষ্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে এসডব্লিউটি বিশ্লেষণ করা জরুরি। নিজের শক্তিশালী দিক, দুর্বল দিক, সম্ভাবনা ও আশঙ্কার বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে ভবিষ্যতের ক্যারিয়ার পরিকল্পনা করুন। সেটা কীভাবে দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই হবে, তা ভাবুন। পারিবারিক কোনো চাপে বা অন্যের পছন্দ অনুযায়ী নয়, আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে নিজের পছন্দ অনুযায়ী লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। উচ্চমাধ্যমিক পাস করা একজন শিক্ষার্থী যদি চিকিৎসক হতে চান, তাহলে এক ধরনের পড়াশোনা। ইঞ্জিনিয়ার হতে চাইলে তাঁর ভাবনা ও প্রস্তুতি আলাদা হবে। আবার কেউ যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়তে চান কিংবা বিদেশে যেতে চান, তাঁর পড়াশোনা আলাদা হবে। কেউ যদি খেলোয়াড় বা সংগীতশিল্পী হতে চান, তাঁর পড়াশোনার ধরনও আলাদা হবে। লক্ষ্য নির্ধারণের সময় এ বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখতে হবে।
নিতে হবে পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রবেশ করার প্রক্রিয়া আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে প্রতিযোগিতাপূর্ণ হয়েছে। আমাদের দেশের স্কুল-কলেজের যে শিক্ষাধারা, তার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় বা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশের যে পরীক্ষা, সেটির পার্থক্য রয়েছে। সংগত কারণে একজন শিক্ষার্থীকে একটা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হয়। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক পরীক্ষা দিতে হয়। বিভিন্ন বিভাগের জন্য যে আলাদা প্রস্তুতি, সে অনুযায়ী নিজেকে প্রস্তুত করে নিতে হবে। মনোযোগের সঙ্গে সুচিন্তিতভাবে সময়ের যথাযথ ব্যবহার করতে হবে। নিতে হবে একটা পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি।
রয়েছে বিভাগের বৈচিত্র্য
রোবোটিকস ও মেকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ন্যানোম্যাটেরিয়ালস অ্যান্ড সিরামিক প্রকৌশল বিভাগ, পেট্রোলিয়াম ও খনিজ সম্পদ প্রকৌশল বিভাগ কিংবা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন প্রকৌশলের মতো বিষয় পড়ানো হয় কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে। তেমনি পড়ানো হয়
ভাষা, সাহিত্য, লোকপ্রশাসন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, নৃবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান কিংবা সংগীতের মতো বিষয়। অনুষদভেদে, বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে বিভাগের বৈচিত্র্য রয়েছে। সব কটি বিশ্ববিদ্যালয় মিলিয়ে সাড়ে তিন শর বেশি বিষয়ে পাঠদান করা হয়। সিদ্ধান্ত আপনার—নিজের যোগ্যতা ও ফলাফল অনুযায়ী কোন বিভাগটি আপনার জন্য উপযুক্ত।
শুধু সার্টিফিকেটের জন্য পড়াশোনা নয়
অনেকে মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো বিভাগের সার্টিফিকেট হলেই হলো। কিন্তু আমার কাছে এমন মনে হয় না। যে বিষয়ে পড়ুন না কেন, তাতে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। পাশাপাশি সে সময়েই নির্বাচন করে ফেলতে হবে ভবিষ্যতে কী হতে চান। কেউ বেকার থাকতে চান না।
মা-বাবাদের তো চিন্তার মধ্যেই আসে না, তাঁদের সন্তান উচ্চশিক্ষা লাভ করেও বেকার থাকবেন। এ কারণে একটা পারিবারিক ও সামাজিক দায়বদ্ধতা থাকে। প্রতিষ্ঠিত হতে না পারলে নিজেকে সমাজে বিচ্ছিন্ন মানুষ মনে হয়। এ জন্য আগেভাগে ঠিক করতে হবে, কোন ধরনের পড়াশোনা আপনি করবেন; কিংবা চাকরির ধরন কী হবে। তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে সচেতন হতে হবে অবশ্যই তথ্যপ্রযুক্তি বা আইটির সঙ্গে থাকতে হবে।
তবে মনে রাখতে হবে, একটা সময় তথ্যের অপ্রতুলতা সংকট সৃষ্টি করেছিল। এখন তথ্যের অতিপ্রাপ্যতা সংকট সৃষ্টি করে মানুষকে বিভ্রান্তিতে ফেলছে। কোন জিনিস কোন জায়গা থেকে নিতে হবে, সে বিষয়ে সচেতনতা জরুরি। মুদ্রিত তথ্যমাত্রই সঠিক, তা যেমন নয়; ভার্চুয়াল মিডিয়ায় পাওয়া তথ্য বেঠিক, তেমনও নয়। প্রকৃত তথ্য গ্রহণ করার দক্ষতা অর্জন করতে হবে শিক্ষার্থীদের। না হলে একসময়ের অপ্রাপ্তির অসুখ অতিপ্রাপ্তির বিড়ম্বনা সৃষ্টি করবে। এমন সংকটকে অতিক্রম করতে হবে, যাঁরাই অতিক্রম করতে পারবেন, তাঁরাই এগিয়ে যাবেন।
অনুলিখন: মো. আশিকুর রহমান
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে লন্ডন এবং দিল্লি হয়ে ঢাকায় ফিরলেন। সেদিন অপরাহ্ণে রেসকোর্সে অলিখিত স্বতঃস্ফূর্ত ভাষণ দিয়েছিলেন। যে ভাষণটি আমি শুনেছিলাম—১৭ মিনিটের। ভাষণে একটি জায়গায় তিনি বলেছিলেন, একটা কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে,
২৬ মার্চ ২০২৪১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানে যে চার রাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করা হয়েছিল তার একটি সমাজতন্ত্র। সমাজতন্ত্র মানে বৈষম্যের অবসান। সমাজতন্ত্র মানে ন্যায্যতা। সমাজতন্ত্র মানে সবার শিক্ষা, চিকিৎসা, মাথাগোঁজার ঠাঁই, কাজের সুযোগ। সমাজতন্ত্র মানে যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ, প্রয়োজন অনুয
২৬ মার্চ ২০২৪স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্র পরিচালনার চালিকা শক্তি হিসেবে চারটি মৌলনীতি গ্রহণ করেছিলেন। এগুলো হলো: জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র। আজ ৫২ বছর পর দেখছি, এই মৌলনীতিগুলোর প্রতিটির সূচক এত নিচে নেমে গেছে যে, বলা চলে রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলনীতি বলে এখন আর কিছু নেই। জাতীয়তা দুই ভাগে বি
২৬ মার্চ ২০২৪বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা যেতে পারে, রাষ্ট্র হিসেবে নবীন, কিন্তু এর সভ্যতা সুপ্রাচীন। নদীবেষ্টিত গাঙেয় উপত্যকায় পলিবাহিত উর্বর ভূমি যেমন উপচে পড়া শস্যসম্ভারে জীবনকে সমৃদ্ধ করেছে, তেমনি নদীর ভাঙনের খেলায় রাতারাতি বিলুপ্ত হয়েছে বহু জনপদ। এরপরও সভ্যতার নানা চিহ্ন এখানে খুঁজে পাওয়া যায় এবং বাঙালিত্বের বৈশিষ
২৬ মার্চ ২০২৪