আনিকা জীনাত, ঢাকা
ডিসেম্বর মাস এলেই চারদিকে দেখা যায় লাল-সবুজের খেলা। পোশাকে, অনুষঙ্গে রং হিসেবে লাল-সবুজের প্রাধান্য দেখা দিলেই আমরা বুঝতে পারি বিজয়ের মাস শুরু হয়েছে। নিজের অজান্তেই মনের ভেতর তৈরি হয় এক গর্বের অনুভব। আজ থেকে ৫০ বছর আগে আমাদের পূর্বপুরুষেরা যুদ্ধ করে ছিনিয়ে এনেছিলেন এক স্বাধীন ভূখণ্ড, বাংলাদেশ যার নাম। ত্রিশ লাখ মানুষের রক্ত ক্ষয়ের মধ্য দিয়ে পাওয়া এ স্বাধীন দেশে জন্ম নিয়েছি বলে বিজয়ের উৎসব আমাদের মনে ও শরীরে অনুরণন তোলে।
আমাদের মতো পৃথিবীর আরও কিছু দেশ যুদ্ধ করে তাদের স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিল। সেসব দেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্যাপিত হয় বিজয় দিবস বা ভিক্টরি ডে।
ভিয়েতনাম
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টানা ১৯ বছর যুদ্ধের পর ১৯৭৫ সালে বিজয়ী হয় ভিয়েতনাম। বিজয় দিবসকে তারা বলে রিইউনিফিকেশন ডে। এই দিনে উত্তর ভিয়েতনাম ও দক্ষিণ ভিয়েতনাম এক হয়। প্রতি বছর ৩০ এপ্রিল এ দিবস উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকে। দিবসটি সাপ্তাহিক ছুটির দিন পড়লে আলাদাভাবে কর্মদিবসে ছুটি থাকে। শ্রম দিবসের আগের দিন বিজয় দিবস হওয়ায় টানা দুদিন ছুটি পায় সে দেশের মানুষ। অনেকেই তাই পরিবার নিয়ে ভ্রমণে বের হয়। ব্যাংক ও সরকারি অফিস বন্ধ থাকলেও দোকানপাট খোলা থাকে। পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে থাকে তুমুল ভিড়। পতাকা ওড়ানো হয় সারা দেশে। হো চি মিন সিটিতে প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়। দিনটি উদ্যাপনে তারা নৌকাবাইচ বা মোটরবাইক প্রতিযোগিতায় নামে। রাত ৯টার দিকে আতশবাজি ফোটানো হয় ১৫ মিনিট ধরে। হোটেল-রেস্তোরাঁয় চলে খাদ্য উৎসব।
রাশিয়া
১৯৪৫ সালের ৯ মে জার্মানির নাৎসি বাহিনীর আত্মসমর্পণের দিনটি রাশিয়ায় বিজয় দিবস হিসেবে পালিত হয়। তবে ১৯৬৫ সালের আগে দিনটি নিয়ে তাদের কোনো আলাদা আয়োজন ছিল না বললেই চলে। এখন ৯ মে তাদের সব স্কুল, অফিস ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। প্যারেডের কারণে অনেক রাস্তা বন্ধ থাকে বলে বাসের রুট বদলে যায়।
এই দিন মানুষ কাপড়ের ওপরে কালো ও হলুদ ফিতা বেঁধে বের হয়। গাড়ির অ্যানটেনার মধ্যও এই ফিতা বাঁধা থাকে। ‘সেন্ট জর্জ রিবন’ নামের এ ফিতা ব্যবহার করে রাশিয়ার মানুষ শহীদদের স্মরণ করে ও শ্রদ্ধা জানায়। প্রতিটি পরিবারই সাধ্য অনুযায়ী বিশেষ খাবারের আয়োজন করে এ দিন। এর সঙ্গে তারা যুদ্ধের ছবি দেখে। যারা যুদ্ধ করেছিলেন তাঁদের গলায় মেডেল ঝুলতে দেখা যায়। তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় লাল কারনেশন ফুল। স্মৃতিসৌধে দেওয়া হয় পুষ্পস্তবক।
একই তারিখে একই কারণে ইউক্রেন, সার্বিয়া, মালদোভা, কাজাখস্তান, বেলারুশ, আর্মেনিয়া, ইসরায়েলসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশ দিবসটি পালন করে।
তুরস্ক
প্রতি বছর ৩০ আগস্ট তুরস্কের বিজয় দিবস পালিত হয়। দিনটি আর্মড ফোর্স ডে নামেও পরিচিত। গ্রিসের সঙ্গে তিন বছরব্যাপী যুদ্ধ শেষে ১৯২২ সালে তারা বিজয় লাভ করে। সরকারি ছুটির দিন হিসেবে দিবসটির উদ্যাপন শুরু হয় ১৯৩৫ সালে। এ দিন জরুরি সেবা বাদে প্রায় সবকিছুই বন্ধ থাকে।
শুধু তুরস্কে নয়, দ্বীপ দেশ সাইপ্রাসের উত্তরাঞ্চলেও দিনটি উদ্যাপন করা হয়। দেশটির উত্তরাঞ্চল তুরস্কের অধীনস্থ। তুরস্কের প্রথম রাষ্ট্রপতি মুস্তফা কামাল আতাতুর্কের সমাধিস্থলে মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সে দিন ইস্তাম্বুলের ওয়ার অ্যাকাডেমিতে প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়।
আজারবাইজান
১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর থেকে নাগোর্নো-কারাবাখ নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয় আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে। ১৯৯৪ সালে সে অঞ্চলের দখল নেয় আর্মেনিয়া। সংঘাতে আজারবাইজানের ৩০ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়।
২০২০ সালে স্বঘোষিত সে প্রজাতন্ত্র পুনরায় দখলে নেয় আজারবাইজান। ৪৪ দিনের মধ্যে নাগোর্নো-কারাবাখের গুরুত্বপূর্ণ শহর সুশা দখল করে তারা। ৮ নভেম্বর প্রথম বিজয় দিবস পূর্তি উপলক্ষে আজারবাইজানের রাষ্ট্রপতি ইলহাম আলিয়েভ সুশা শহরে অনেকগুলো প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। পতাকা উড়িয়ে ও শহীদ সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দিবসটি উদ্যাপন করা হয়। প্রথম বিজয় দিবসে বাকু শহরে ৪৪০ মিটার লম্বা পতাকা বহন করে সৈন্যরা।
ডিসেম্বর মাস এলেই চারদিকে দেখা যায় লাল-সবুজের খেলা। পোশাকে, অনুষঙ্গে রং হিসেবে লাল-সবুজের প্রাধান্য দেখা দিলেই আমরা বুঝতে পারি বিজয়ের মাস শুরু হয়েছে। নিজের অজান্তেই মনের ভেতর তৈরি হয় এক গর্বের অনুভব। আজ থেকে ৫০ বছর আগে আমাদের পূর্বপুরুষেরা যুদ্ধ করে ছিনিয়ে এনেছিলেন এক স্বাধীন ভূখণ্ড, বাংলাদেশ যার নাম। ত্রিশ লাখ মানুষের রক্ত ক্ষয়ের মধ্য দিয়ে পাওয়া এ স্বাধীন দেশে জন্ম নিয়েছি বলে বিজয়ের উৎসব আমাদের মনে ও শরীরে অনুরণন তোলে।
আমাদের মতো পৃথিবীর আরও কিছু দেশ যুদ্ধ করে তাদের স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিল। সেসব দেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্যাপিত হয় বিজয় দিবস বা ভিক্টরি ডে।
ভিয়েতনাম
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টানা ১৯ বছর যুদ্ধের পর ১৯৭৫ সালে বিজয়ী হয় ভিয়েতনাম। বিজয় দিবসকে তারা বলে রিইউনিফিকেশন ডে। এই দিনে উত্তর ভিয়েতনাম ও দক্ষিণ ভিয়েতনাম এক হয়। প্রতি বছর ৩০ এপ্রিল এ দিবস উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকে। দিবসটি সাপ্তাহিক ছুটির দিন পড়লে আলাদাভাবে কর্মদিবসে ছুটি থাকে। শ্রম দিবসের আগের দিন বিজয় দিবস হওয়ায় টানা দুদিন ছুটি পায় সে দেশের মানুষ। অনেকেই তাই পরিবার নিয়ে ভ্রমণে বের হয়। ব্যাংক ও সরকারি অফিস বন্ধ থাকলেও দোকানপাট খোলা থাকে। পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে থাকে তুমুল ভিড়। পতাকা ওড়ানো হয় সারা দেশে। হো চি মিন সিটিতে প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়। দিনটি উদ্যাপনে তারা নৌকাবাইচ বা মোটরবাইক প্রতিযোগিতায় নামে। রাত ৯টার দিকে আতশবাজি ফোটানো হয় ১৫ মিনিট ধরে। হোটেল-রেস্তোরাঁয় চলে খাদ্য উৎসব।
রাশিয়া
১৯৪৫ সালের ৯ মে জার্মানির নাৎসি বাহিনীর আত্মসমর্পণের দিনটি রাশিয়ায় বিজয় দিবস হিসেবে পালিত হয়। তবে ১৯৬৫ সালের আগে দিনটি নিয়ে তাদের কোনো আলাদা আয়োজন ছিল না বললেই চলে। এখন ৯ মে তাদের সব স্কুল, অফিস ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। প্যারেডের কারণে অনেক রাস্তা বন্ধ থাকে বলে বাসের রুট বদলে যায়।
এই দিন মানুষ কাপড়ের ওপরে কালো ও হলুদ ফিতা বেঁধে বের হয়। গাড়ির অ্যানটেনার মধ্যও এই ফিতা বাঁধা থাকে। ‘সেন্ট জর্জ রিবন’ নামের এ ফিতা ব্যবহার করে রাশিয়ার মানুষ শহীদদের স্মরণ করে ও শ্রদ্ধা জানায়। প্রতিটি পরিবারই সাধ্য অনুযায়ী বিশেষ খাবারের আয়োজন করে এ দিন। এর সঙ্গে তারা যুদ্ধের ছবি দেখে। যারা যুদ্ধ করেছিলেন তাঁদের গলায় মেডেল ঝুলতে দেখা যায়। তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় লাল কারনেশন ফুল। স্মৃতিসৌধে দেওয়া হয় পুষ্পস্তবক।
একই তারিখে একই কারণে ইউক্রেন, সার্বিয়া, মালদোভা, কাজাখস্তান, বেলারুশ, আর্মেনিয়া, ইসরায়েলসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশ দিবসটি পালন করে।
তুরস্ক
প্রতি বছর ৩০ আগস্ট তুরস্কের বিজয় দিবস পালিত হয়। দিনটি আর্মড ফোর্স ডে নামেও পরিচিত। গ্রিসের সঙ্গে তিন বছরব্যাপী যুদ্ধ শেষে ১৯২২ সালে তারা বিজয় লাভ করে। সরকারি ছুটির দিন হিসেবে দিবসটির উদ্যাপন শুরু হয় ১৯৩৫ সালে। এ দিন জরুরি সেবা বাদে প্রায় সবকিছুই বন্ধ থাকে।
শুধু তুরস্কে নয়, দ্বীপ দেশ সাইপ্রাসের উত্তরাঞ্চলেও দিনটি উদ্যাপন করা হয়। দেশটির উত্তরাঞ্চল তুরস্কের অধীনস্থ। তুরস্কের প্রথম রাষ্ট্রপতি মুস্তফা কামাল আতাতুর্কের সমাধিস্থলে মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সে দিন ইস্তাম্বুলের ওয়ার অ্যাকাডেমিতে প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়।
আজারবাইজান
১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর থেকে নাগোর্নো-কারাবাখ নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয় আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে। ১৯৯৪ সালে সে অঞ্চলের দখল নেয় আর্মেনিয়া। সংঘাতে আজারবাইজানের ৩০ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়।
২০২০ সালে স্বঘোষিত সে প্রজাতন্ত্র পুনরায় দখলে নেয় আজারবাইজান। ৪৪ দিনের মধ্যে নাগোর্নো-কারাবাখের গুরুত্বপূর্ণ শহর সুশা দখল করে তারা। ৮ নভেম্বর প্রথম বিজয় দিবস পূর্তি উপলক্ষে আজারবাইজানের রাষ্ট্রপতি ইলহাম আলিয়েভ সুশা শহরে অনেকগুলো প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। পতাকা উড়িয়ে ও শহীদ সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দিবসটি উদ্যাপন করা হয়। প্রথম বিজয় দিবসে বাকু শহরে ৪৪০ মিটার লম্বা পতাকা বহন করে সৈন্যরা।
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে লন্ডন এবং দিল্লি হয়ে ঢাকায় ফিরলেন। সেদিন অপরাহ্ণে রেসকোর্সে অলিখিত স্বতঃস্ফূর্ত ভাষণ দিয়েছিলেন। যে ভাষণটি আমি শুনেছিলাম—১৭ মিনিটের। ভাষণে একটি জায়গায় তিনি বলেছিলেন, একটা কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে,
২৬ মার্চ ২০২৪১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানে যে চার রাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করা হয়েছিল তার একটি সমাজতন্ত্র। সমাজতন্ত্র মানে বৈষম্যের অবসান। সমাজতন্ত্র মানে ন্যায্যতা। সমাজতন্ত্র মানে সবার শিক্ষা, চিকিৎসা, মাথাগোঁজার ঠাঁই, কাজের সুযোগ। সমাজতন্ত্র মানে যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ, প্রয়োজন অনুয
২৬ মার্চ ২০২৪স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্র পরিচালনার চালিকা শক্তি হিসেবে চারটি মৌলনীতি গ্রহণ করেছিলেন। এগুলো হলো: জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র। আজ ৫২ বছর পর দেখছি, এই মৌলনীতিগুলোর প্রতিটির সূচক এত নিচে নেমে গেছে যে, বলা চলে রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলনীতি বলে এখন আর কিছু নেই। জাতীয়তা দুই ভাগে বি
২৬ মার্চ ২০২৪বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা যেতে পারে, রাষ্ট্র হিসেবে নবীন, কিন্তু এর সভ্যতা সুপ্রাচীন। নদীবেষ্টিত গাঙেয় উপত্যকায় পলিবাহিত উর্বর ভূমি যেমন উপচে পড়া শস্যসম্ভারে জীবনকে সমৃদ্ধ করেছে, তেমনি নদীর ভাঙনের খেলায় রাতারাতি বিলুপ্ত হয়েছে বহু জনপদ। এরপরও সভ্যতার নানা চিহ্ন এখানে খুঁজে পাওয়া যায় এবং বাঙালিত্বের বৈশিষ
২৬ মার্চ ২০২৪