পঞ্চগড়ে আহমদিয়াদের সালানা জলসাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটের ঘটনায় ভূক্তভোগীরা আরও তিনটি মামলা করেছে। এ নিয়ে মোট মামলা হলো ১৬টি। এসব মামলায় নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে প্রায় ১১ হাজার জন। আজ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত এসব মামলায় আরও ৮ জন গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মোট গ্রেপ্তারকৃতদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭৩ জনে। 

এদিকে গ্রেপ্তার আতঙ্কে অনেক এলাকায় রাতে পুরুষ মানুষ বাড়িতে থাকছেনা বলে জানা গেছে। শহরতলির তুলারডাঙ্গা, তেলীপাড়া ও ফুলতলা এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে এমন তথ্য জানা গেছে। 

পঞ্চগড় পৌরসভার একজন কাউন্সিলর বলেন, এলাকার অনেকেই বাড়িতে পুলিশ যাওয়ার কথা জানিয়ে বলেছেন বাড়িতে পুরুষ মানুষ নাই তবুও কয়েকবার পুলিশ গিয়েছে। আমি বলেছি অপরাধ না করলে পুলিশ কাউকে ধরবে না, এটা পুলিশ সুপার নিজেই বলেছেন। এ জন্য অপরাধ না করলে বাড়িতে থাকতে কোনো অসুবিধা নেই। 

তুলারডাঙ্গা মহল্লার হাফিজুল বলেন, ‘আমরা ঘটনার সময় বাজারেই ছিলাম। এখন কে কীভাবে ছবি তুলেছে তাই ভয়ে গত তিন দিন ধরে বাড়িতে থাকিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সাহস করে বাড়িতে ছিলাম, কিছু হয়নি। পুলিশও আসেনি।’

তবে লাবু হোসেন নামে একজন তার ফেসবুক আইডিতে লেখেন, ঘটনার আগে থেকেই তিনি জীবিকার তাগিদে বাড়ির বাইরে থাকেন, তার নামে কোনো মামলাও নেই তবুও তাকে পুলিশ বাড়িতে খুঁজতে গেছে বলে তিনি আইডিতে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা বলেন, পুলিশ ও র‍্যাবের অভিযান চলমান রয়েছে। ভিডিও, সিসিটিভি ফুটেজ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নাশকতায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কোনো সাধারণ নিরীহ মানুষকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। আজ শুক্রবার জুমার নামাজ তাই শহরে ও কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের আবাসস্থলসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ও আহমদিয়াদের দুটি মসজিদের আশে পাশে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ ও র‍্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়। বর্তমানে জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ শান্ত ও স্বাভাবিক রয়েছে। পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার। 

সিরাজুল হুদা আরও বলেন, যারা অপরাধী তাঁদের মধ্যে নানা আতঙ্ক থাকবে, আমরাও তাদের খুঁজছি। অপরাধীর বাইরে কারও উদ্বেগ উৎকণ্ঠার কিছু নেই। এ কয়েক দিনে এটা প্রমাণও হয়েছে। এরপরও কারও কোনো অভিযোগ থাকলে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। তবে কোনোভাবেই কোনো অপরাধীকে ছাড় দেওয়া হবে না।