প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী, কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. জাকির হোসেন দাবি করেছেন, পিস্তল উঁচিয়ে গুলি করার হুমকি এবং জমি দখল করার অভিযোগে জিডি এবং এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অসত্য, ভিত্তিহীন ও অপপ্রচার। 

আজ মঙ্গলবার বিকেলে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার নিজ বাড়িতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেন তিনি। 

এদিকে পিস্তল উঁচিয়ে প্রতিবেশীকে গুলি করার হুমকি এবং জমি দখল করার অভিযোগে হওয়া সাধারণ ডায়েরির (জিডি) তদন্তের অনুমোদন চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার জিডিটি আদালতে পাঠানো হয়েছে। 

সংবাদ সম্মেলনে জাকির হোসেনের স্ত্রী সুরাইয়া সুলতানা ও ছেলে সাফায়াত আদি জাকির উপস্থিত ছিলেন। এ সময় গত ২৩ জুনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জাকির হোসেন বলেন, ‘আমার বাড়ির পাশে আমি কিছু জায়গা দিছি, রাস্তা বানায় দিছি আমার পড়শির জন্য। কিছু লোকজন ওখানে রাস্তা থেকে মাটি কাটি নিয়া যায়। আমার নিজের বাউন্ডারি ওয়ালের নিচ থেকেও মাটি কাটি নিয়া যায়। এই রাস্তাটা ঠিক করার জন্য, আমি লেবারকে দিছি।’ 

প্রতিপক্ষের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু ওরা কাজও করতে দেয় নাই। নানা ধরণের হট্টোগোল করে। আমার সঙ্গে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। আমি যখন যাইতে চাচ্ছিলাম, আমার ছেলেমেয়েরা আটকাইলো। আমি আর ওখানে (বিরোধপূর্ণ স্থানে) যাইতে পারি নাই। পরে পুলিশ এসে ঘটনাটা নিষ্পত্তি করে কাজ করার অনুমতি দিয়ে যায়। ওরা (অভিযোগকারীরা) পালায় তখন। পরবর্তীতে কোনও কাগজপত্র দেখাতে পারে নাই

এ ঘটনায় পিস্তল উঁচিয়ে গুলি করার হুমকি এবং জমি দখল করার অভিযোগ এনে থানায় সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেছেন তারই প্রতিবেশী আনোয়ার নামের এক ব্যক্তি। 

থানায় জিডি ও গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের কথা উল্লেখ করে সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘পরবর্তীতে রাস্তার কাজ হচ্ছে। হঠাৎ করে দেখছি পত্রপত্রিকায়, থানায় আমার নামে বিভিন্ন ধরণের জিডি, বিভিন্ন ধরণের মিথ্যা, অপপ্রচার, অসত্য ভিত্তিহীন সংবাদ দিয়ে আমার এবং আমার দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা হচ্ছে।’ তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে তিনি অনুসন্ধানের দাবি জানিয়েছেন। 

জিডি তদন্তের অনুমোদন চেয়ে আদালতে পুলিশ

জিডিটি আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লা হিল জামান। তিনি জানান, ‘জিডি হয়েছে। সেটি তদন্তের জন্য আদালতের অনুমোদন প্রয়োজন। এজন্য জিডিটি সংশ্লিষ্ট আমলি আদালতের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে।’ 

এর আগে গতকাল সোমবার দুপুরে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, তাঁর স্ত্রী সুরাইয়া সুলতানা ও ছেলে সাফায়াত আদি জাকিরের বিরুদ্ধে রৌমারী থানায় জিডি করেন তাদেরই প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেন। 

• পিস্তল উঁচিয়ে প্রতিবেশীকে হুমকি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাকিরের বিরুদ্ধে জিডি

জিডিতে অভিযোগকারী উল্লেখ করেন, ‘সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ভুক্তভোগী আনোয়ার হোসেনের পৈত্রিক জমির ৪৫ শতক দখল করে নেন। গত রোববার (২৩ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাকির হোসেন তাঁর লোকজন দিয়ে দখলকৃত জমির পাশে থাকা আনোয়ার হোসেনের অবশিষ্ট জমিতে মাটি ভরাট করে দখল করার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থলে পৌঁছে মাটি ভরাটে বাধা দিলে জাকির হোসেন ক্ষিপ্ত হন। সাবেক এই মন্ত্রী, তাঁর স্ত্রী ও ছেলে অভিযোগকারী আনোয়ার হোসেনকে শাসাতে থাকেন, মারপিট করতে উদ্যত হন। একপর্যায়ে জাকির হোসেন পিস্তল উঁচিয়ে আনোয়ার হোসেনকে গুলি করার হুমকি দেন।’ 

বিবাদীরা (জাকির হোসেন, তার স্ত্রী ও ছেলে) আনোয়ার হোসেন ও তার পরিবারের লোকজনকে রাস্তাঘাটে একা পেলে পেটানোর হুমকি দেন এবং মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানির ভয় দেখান বলেও জিডিতে উল্লেখ করেছেন ভুক্তভোগী।