বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চলমান অসহযোগ আন্দোলনে রংপুরে ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। পুরো নগরী রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া বদরগঞ্জে রংপুর-২ আসনের সংসদ সদস্যের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। 

আজ রোববার সকাল ১০টা থেকে অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচি পালনের জন্য ছাত্র-জনতা রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে জড়ো হতে থাকেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ছাত্র-জনতার ভিড়। পাবলিক লাইব্রেরির মাঠ ভরাট হওয়ার পর হাজারো আন্দোলনকারীরা জিলা স্কুল মোড় থেকে সিটি বাজার পর্যন্ত অবস্থান নেন। এ সময় ছাত্রলীগ, যুবলীগ আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসংগঠনের চার শতাধিক নেতা-কর্মী রামদা, চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল, এসএস পাইপসহ স্লোগান জাহাজ কোম্পানি মোড় থেকে পাবলিক লাইব্রেরির দিকে অগ্রসর হলে রংপুর সুপার মার্কেটের সামনে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। শুরু হয় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া। 

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (১২টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত)। এ পর্যন্ত আহত হয়েছে ২০ জন। আন্দোলনে ছবি ও খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে এ পর্যন্ত আটজন সাংবাদিক হামলার শিকার হয়েছেন বলে জানা গেছে। 

সকাল ১০টা থেকে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা সহপাঠী ছাড়াও অভিভাবকের হাত ধরে আন্দোলনে যোগ দিতে আসেন। আইনজীবী, ব্যবসায়ী, মজুরসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে এই আন্দোলনে স্লোগান দিতে দেখা যায়। সকাল থেকে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। আন্দোলন ঘিরে আজ রোববার পুলিশ, সেনাবাহিনী, র‍্যাব, বিজিবির উপস্থিতি তেমন লক্ষ করা যায়নি। 

শহর ছাড়িয়ে গ্রাম পর্যায়েও আন্দোলনের ঢেউ আছড়ে পড়েছে। ইউনিয়নে থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপজেলা পর্যায়েও এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রতিনিধিরা। এ ছাড়াও বদরগঞ্জে রংপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম মো. ডিউক চৌধুরীর বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। 

বদরগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, এক দফা দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীরা বদরগঞ্জ পৌর শহরের জিতেন দত্ত মঞ্চের সামনে অবস্থান নেয়। এ সময় উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালায়। এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের ধাওয়া করে। ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা আত্মরক্ষায় এমপির বাসভবনে গিয়ে আশ্রয় নেন। এ সময় শিক্ষার্থীরাও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে সংসদ সদস্যের বাসভবন। পরে তারা এমপির বাসভবনের ভেতরে প্রবেশ করে অন্তত ২০টি মোটরসাইকেলসহ তার বাসভবনে অগ্নিসংযোগ চালায়। 

এখনো শিক্ষার্থীরা সেখানেই অবস্থান করছেন। সংসদ সদস্যের বাসভবন ছাড়াও মেয়র টুটুল চৌধুরী, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক  পলিন চৌধুরী ও সাবেক মেয়র উত্তম কুমার সাহার বাসভবনে হামলা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চলছে। এই ঘটনায় অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।