রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) শিক্ষার্থী ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু সাঈদের গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে শিক্ষার্থীরা ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ অংশ নেন।
নিহত আবু সাঈদ বেরোবির ইংরেজি বিভাগের ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের বামনপুর গ্রামে।
জানাজা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত প্রধান ফটকের নাম ‘শহীদ আবু সাঈদ’ গেট নামকরণ করেন আন্দোলনকারীরা। পরে পার্কের মোড় এলাকাকে ‘শহীদ আবু সাঈদ’ চত্বর নামকরণের ঘোষণা দেওয়া হয়।
এরপর প্রধান ফটক থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আন্দোলনকারীরা বেরোবির দ্বিতীয় গেটে যান যেখানে আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হন। সেখানে অবস্থান করে নানা স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট খুলে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন।
এ সময় আন্দোলনকারীরা বলেন, ‘আবু সাঈদের হত্যাকারী পুলিশের বিচার চাই। তাঁর হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন থামবে না। পুলিশের সামনে আবু সাঈদ ২০ হাত দূরে একাই দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাকে পুলিশ ইচ্ছে করলে ধরতে পারত, লাঠি পেটা করে অজ্ঞান করতে পারত। কিন্তু পুলিশ তা না করে আবু সাঈদ যখন বুক পেতে দিল, বাংলা সিনেমার ভিলেনের মতো তাকে গুলি করা হলো।’
তারা আরও বলেন, ‘তাকে মাথায় গুলি করা হয়েছে, বুকে গুলি করা হয়েছে। সবাইকে রাজপথে নামার আহ্বান জানাচ্ছি। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত আছি আমরা।’ এ সময় শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, পুলিশ রাতেই আবু সাঈদের লাশ দাফন করার চেষ্টা করছিল।
এর আগে সকাল জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের বামনপুর গ্রামের বাড়িতে আবু সাঈদের লাশ দাফন করে হয়। সেখানে তাঁর জানাজায় মানুষের ঢল নামে।
গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে তাঁর মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়। এ সময় হাজারো মানুষ আবু সাঈদের লাশ দেখার জন্য তাঁর বাড়িতে অপেক্ষায় ছিলেন। মরদেহ গ্রামে পৌঁছালে সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
এদিকে গতকাল বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে বুধবার দুপুরে মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দিলে সকাল থেকে হলে থাকা শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে থাকেন।