ডিপ ফ্রিজে গৃহবধূর লাশ: ‘৪ লাখ টাকায় খুনি ভাড়া করেন ভাড়াটিয়া মাবিয়া’

বগুড়া প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১৯: ২২
গ্রেপ্তার মোসলেম উদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় ভাড়াটিয়া মাবিয়া চার লাখ টাকার চুক্তিতে গৃহবধূ সালমাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তবে মাবিয়া অটোভ্যান চালক সুমন রবিদাসকে চুক্তির সেই টাকা দেননি। এই হত্যাকাণ্ডে সুমন ও মাবিয়ার সঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া আরেক সহযোগী মোসলেম উদ্দিনের (২৮) আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য জানা গেছে।

জবানবন্দিতে মোসলেম উল্লেখ করেন, সুমন তাঁর শৈশবের বন্ধু এবং তারা একসঙ্গে মাদক সেবন করতেন। দুজনের বাড়ি দুপচাঁচিয়া উপজেলার তালুচ পশ্চিম পাড়া গ্রামে।

জবানবন্দির তথ্য অনুযায়ী, মাবিয়া স্থানীয় অটোভ্যান চালক সুমনকে চার লাখ টাকায় সালমাকে হত্যার দায়িত্ব দেন। সুমন ও তার বন্ধু মোসলেম মাবিয়ার পরিকল্পনায় ১০ নভেম্বর সালমার বাসায় যান। সেখানে রান্নাঘরে কাজ করার সময় সালমাকে মুখে ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। হত্যার পর লাশ একটি ডিপ ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখেন তারা। এ সময় মাবিয়া দুজনকে জানান, আলমারিতে ৬–৭ লাখ টাকা আছে। কুড়াল দিয়ে আলমারি ভাঙার চেষ্টা করলে বিকট শব্দ হওয়ায় তা আর ভাঙেননি তাঁরা।

একপর্যায়ে দেয়ালে রাউটার দেখে মোসলেম মনে করেন, এটি সিসি ক্যামেরা। হত্যার ঘটনা সেখানে ধরা পড়েছে। এই ভয়ে রাউটার খুলে নিয়ে তিনজনে চারতলায় মাবিয়ার বাসায় যায়। সেখান থেকে রাউটার নিয়ে সুমন এবং মোবাইল ফোন নিয়ে মোসলেম ভ্যান যোগে তালুচ বাজারে চলে যান। ঘটনার পরদিন মোসলেম সালমার বাটন ফোন ও স্মার্টফোনটি ব্যবহার শুরু করেন। ১৪ নভেম্বর রাত ৯টার দিকে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ তালুচ বাজার থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

মোসলেম জবানবন্দিতে আরও বলেন, মাবিয়া সালমাকে হত্যার জন্য সুমনকে ৪ লাখ টাকা দিতে চেয়েছিল। কিন্তু পরে সেই টাকা আর দেয়নি।

বগুড়া ডিবি পুলিশের ইনচার্জ মোস্তাফিজ হাসান বলেন, ‘চাঞ্চল্যকর সালমা খুনের ঘটনায় সালমার ছেলে সাদ বিন আজিজুর রিমান্ডে থাকাকালে আমরা তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় মোসলেমকে শনাক্ত করি। পরে মোসলেমকে গ্রেপ্তারের পর সুমন এবং মাবিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারাও দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে সুমন এবং মোসলেম অজ্ঞান পার্টির সদস্য। সালমার লাশ উদ্ধারের সময় সেখানে একটি খালি কৌটা পাওয়া যায়। এক পুলিশ সদস্য কৌটায় নাক দিলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। সালমাকে হত্যার আগে ওড়নার সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে তার নাক মুখ পেঁচিয়ে ধরা হয়।’

পুলিশ জানায়, মাবিয়া আগে দুটি বিয়ে করেছিলেন। নানা কারণে তার দুই ছেলে ও দ্বিতীয় স্বামী তাঁকে ছেড়ে চলে যান। চার মাস আগে জয়পুরপাড়ার বাসার মালিক মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ আজিজুর রহমানের বাসায় ভাড়া নেন মাবিয়া। সেই বাসায় অপরিচিত মানুষের আনাগোনা বাড়ায় তাঁকে বাসা ছাড়তে বলেছিলেন তাঁরা। বাসা ছাড়ার জন্য চাপ দেওয়ার জেরে ক্ষিপ্ত হয়ে মাবিয়া এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন।

আরও পড়ুন:

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আবু সাঈদকে ৪–৫ ঘণ্টা পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়—শেখ হাসিনার দাবির সত্যতা কতটুকু

মেট্রোরেল থেকে আমলাদের বিদায়, অগ্রাধিকার প্রকৌশলীদের

সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার সময় বাড়ল

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

ব্যাংক খাতে নতুন নীতিমালা: আটকে গেল ২৫৮ কর্মকর্তার জিএম পদে পদোন্নতি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত