ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনে গত ১৬ জুলাই রংপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। তাঁর মৃত্যু নিয়ে আজ শনিবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের একটি অডিও রেকর্ড প্রচার করা হয়েছে। অডিও রেকর্ডটিতে আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে শেখ হাসিনাকে কথা বলতে শোনা যায়। রেকর্ডটিতে তিনি দাবি করেন, গুলি খাওয়ার পর আবু সাঈদকে চার–পাঁচ ঘণ্টা পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।
রেকর্ডটির ৩০ সেকেন্ড পরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আবু সাঈদ গুলি খাওয়ার পর তার সঙ্গী–সাথিরা যে তাকে টেনে নিয়ে গেল, কোথায় নিয়ে গেল? যার গুলি লাগবে, তাকে তো সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা। হাসপাতালে নিবে, অপারেশন করবে, বুলেট বের করবে, বাঁচানোর চেষ্টা করবে। আবু সাঈদকে কিন্তু হাসপাতালে নেয় নাই। নিয়েছিল কিন্তু চার–পাঁচ ঘণ্টা পরে। চার–পাঁচ ঘণ্টা পর হাসপাতালে নেওয়ার পর ডাক্তাররা যখন তাকে চিকিৎসা করে, তখন সে মৃত্যুবরণ করে।’
আহত হওয়ার পর চার–পাঁচ ঘণ্টা পরে আবু সাঈদকে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যাপারে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ দাবি কতটুকু সত্য?
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ১৬ জুলাই আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে ওই দিন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত ভিডিও ও ছবিতে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ।
আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে আজকের পত্রিকার রংপুর প্রতিনিধির বরাতে ১৬ জুলাই বিকেল ৪টা ১৮ মিনিটে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ওই দিন কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বেরোবি এলাকা। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ (২৫) নিহত হন। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে আন্দোলনকারীরা আরও উত্তেজিত হয়ে পড়েন। প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত (বিকেল পৌনে ৪টা) বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক অবরুদ্ধ করে রাখেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আরেকটি দলকে আবু সাঈদের লাশ নিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতাল থেকে বেরোবির দিকে যেতে দেখা যায়।
ওই দিনের ঘটনা নিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির ফেসবুক পেজে একটি লাইভ ভিডিও পাওয়া যায়। ১৬ জুলাই বেলা ২টা ১৬ মিনিটে শুরু হওয়া লাইভটির ১ মিনিট ৫৫ সেকেন্ডের মাথায় আবু সাঈদকে রাস্তায় লুটিয়ে পড়তে দেখা যায়। এরপরই আন্দোলনকারী কয়েকজন শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে সেখান থেকে নিয়ে যান। এর আগে তাকে লক্ষ্য করে পুলিশকে গুলি ছুড়তে দেখা যায়।
আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার ১৬ জুলাই বিকেল ৪টা ১ মিনিটে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, আবু সাঈদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ওই দিন বেলা আড়াইটার দিকে। প্রতিবেদনটিতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ইউনুস আলীর বরাত দিয়ে বলা হয়, আবু সাঈদকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তিনি আবু সাঈদের মরদেহ দেখেননি। তবে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁর শরীরে রাবার বুলেটের ক্ষতের চিহ্ন আছে।
দৈনিক প্রথম আলোয় ১৬ জুলাই সন্ধ্যায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই দিন বেলা ২টার দিকে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় আহত হন আবু সাঈদ। পরে তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে হাসপাতালে আনার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আশিকুল আরেফিন।
ইংরেজি দৈনিক ডেইলি সানের
বাংলা সংস্করণে ৪টা ১৩ মিনিটে আবু সাঈদের মৃত্যুর ব্যাপারে হাসপাতালের দেওয়া ডেথ সার্টিফিকেটের তথ্য দিয়ে লিখেছে, আবু সাঈদকে বিকেল ৩টা ৫ মিনিটে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়। দৈনিক কালের কণ্ঠে ৪টা ১৩ মিনিটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে দেওয়া মৃত্যুসনদের বরাত দিয়ে বলা হয়, আবু সাঈদকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল।
আরও খুঁজে নিউজ পোর্টাল ডেইলি ক্যাম্পাসে ৩টা ৫৯ মিনিটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আবু সাঈদের মৃত্যুর প্রমাণপত্র পাওয়া যায়। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে দেওয়া ওই প্রমাণপত্রে আবু সাঈদের মৃত্যুর বিষয়ে বলা হয়েছে, তাঁকে মৃত অবস্থায় ১৬ জুলাই বেলা ৩টা ৫ মিনিটে হাসপাতালে আনা হয়।
আবু সাঈদের ময়নাতদন্ত রিপোর্টে কী আছে?
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলন একপর্যায়ে রূপ নেয় সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে। শেষ পর্যন্ত গত ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। এর প্রায় দেড় মাস পর সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে আবু সাঈদের দুই মাস আট দিন পর তাঁর ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. রাজিবুল ইসলাম উল্লেখ করেন, সাঈদের শরীরজুড়ে ছররা গুলির চিহ্ন ছিল। গুলি ঢুকে তাঁর শরীরের ভেতরের বিভিন্ন অংশে গর্ত তৈরি করেছিল। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ফলে মৃত্যু হয় তাঁর। তা ছাড়া, তাঁর খাদ্যনালি ও ঊরুর রক্তনালিতেও জখমের কারণে রক্তজমাট বেঁধে গিয়েছিল।
আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে ডা. রাজিবুল ইসলাম যমুনা টিভিকে বলেন, ‘ফরেনসিক টার্মে ছররা গুলি ১০ থেকে ৩০ মিটার দূর থেকে করা হলে সেটাকে আমরা লেথাল বলি। ১০ মিটারের দূর থেকে গুলি করায় তার শরীরের ভেতরের কিছু অঙ্গ ফুটো হয়ে গিয়েছিল। ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই মৃত্যু হয় তার।’
সরকার পতনের আগে ১৭ জুলাই রংপুর মেট্রোপলিটনের তাজহাট থানায় আবু সাঈদের মৃত্যুর ঘটনায় একটি মামলা হয়। তবে ওই ঘটনায় এসআই বিভূতি ভূষণ রায় আগের রাত ১১টা ৩৫ মিনিটে এজাহার দাখিল করেন। কিন্তু ১৭ জুলাই তারিখে মামলাটি রেকর্ড করা হয়।
এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ‘বিভিন্ন দিক থেকে আন্দোলনকারীদের ছোড়া গোলাগুলি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপে একজন শিক্ষার্থীকে পড়ে যেতে দেখা যায়। তখন তার সহপাঠীরা তাকে ধরাধরি করে জরুরি চিকিৎসার জন্য বিকেল ১৫.০৫ (৩টা ৫ মিনিটে) ঘটিকার সময় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।’
আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে সংবাদমাধ্যমের এসব প্রতিবেদন থেকে প্রতীয়মান হয়, বেরোবি শিক্ষার্থী আবু সাঈদ কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষে ১৬ জুলাই বেলা সোয়া ২টার দিকে আহত হওয়ার পরপরই তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান আন্দোলনকারীরা। পরে হাসপাতাল থেকে তাঁর মৃত্যুসনদে সময় উল্লেখ করা হয় ৩টা ৫ মিনিট এবং রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, হাসপাতালে নেওয়ার আগেই আবু সাঈদের মৃত্যু হয়।
অর্থাৎ আহত হওয়ার পর চার–পাঁচ ঘণ্টা পরে আবু সাঈদকে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যাপারে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দাবিটি সঠিক নয়। আবু সাঈদ আহত হওয়ার পরপরই তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং আহত হওয়ার ঘণ্টাখানেকে মধ্যেই তাঁর মৃত্যু ঘটে।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনে গত ১৬ জুলাই রংপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। তাঁর মৃত্যু নিয়ে আজ শনিবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের একটি অডিও রেকর্ড প্রচার করা হয়েছে। অডিও রেকর্ডটিতে আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে শেখ হাসিনাকে কথা বলতে শোনা যায়। রেকর্ডটিতে তিনি দাবি করেন, গুলি খাওয়ার পর আবু সাঈদকে চার–পাঁচ ঘণ্টা পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।
রেকর্ডটির ৩০ সেকেন্ড পরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আবু সাঈদ গুলি খাওয়ার পর তার সঙ্গী–সাথিরা যে তাকে টেনে নিয়ে গেল, কোথায় নিয়ে গেল? যার গুলি লাগবে, তাকে তো সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা। হাসপাতালে নিবে, অপারেশন করবে, বুলেট বের করবে, বাঁচানোর চেষ্টা করবে। আবু সাঈদকে কিন্তু হাসপাতালে নেয় নাই। নিয়েছিল কিন্তু চার–পাঁচ ঘণ্টা পরে। চার–পাঁচ ঘণ্টা পর হাসপাতালে নেওয়ার পর ডাক্তাররা যখন তাকে চিকিৎসা করে, তখন সে মৃত্যুবরণ করে।’
আহত হওয়ার পর চার–পাঁচ ঘণ্টা পরে আবু সাঈদকে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যাপারে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ দাবি কতটুকু সত্য?
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ১৬ জুলাই আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে ওই দিন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত ভিডিও ও ছবিতে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ।
আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে আজকের পত্রিকার রংপুর প্রতিনিধির বরাতে ১৬ জুলাই বিকেল ৪টা ১৮ মিনিটে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ওই দিন কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বেরোবি এলাকা। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ (২৫) নিহত হন। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে আন্দোলনকারীরা আরও উত্তেজিত হয়ে পড়েন। প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত (বিকেল পৌনে ৪টা) বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক অবরুদ্ধ করে রাখেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আরেকটি দলকে আবু সাঈদের লাশ নিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতাল থেকে বেরোবির দিকে যেতে দেখা যায়।
ওই দিনের ঘটনা নিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির ফেসবুক পেজে একটি লাইভ ভিডিও পাওয়া যায়। ১৬ জুলাই বেলা ২টা ১৬ মিনিটে শুরু হওয়া লাইভটির ১ মিনিট ৫৫ সেকেন্ডের মাথায় আবু সাঈদকে রাস্তায় লুটিয়ে পড়তে দেখা যায়। এরপরই আন্দোলনকারী কয়েকজন শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে সেখান থেকে নিয়ে যান। এর আগে তাকে লক্ষ্য করে পুলিশকে গুলি ছুড়তে দেখা যায়।
আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার ১৬ জুলাই বিকেল ৪টা ১ মিনিটে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, আবু সাঈদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ওই দিন বেলা আড়াইটার দিকে। প্রতিবেদনটিতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ইউনুস আলীর বরাত দিয়ে বলা হয়, আবু সাঈদকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তিনি আবু সাঈদের মরদেহ দেখেননি। তবে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁর শরীরে রাবার বুলেটের ক্ষতের চিহ্ন আছে।
দৈনিক প্রথম আলোয় ১৬ জুলাই সন্ধ্যায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই দিন বেলা ২টার দিকে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় আহত হন আবু সাঈদ। পরে তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে হাসপাতালে আনার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আশিকুল আরেফিন।
ইংরেজি দৈনিক ডেইলি সানের
বাংলা সংস্করণে ৪টা ১৩ মিনিটে আবু সাঈদের মৃত্যুর ব্যাপারে হাসপাতালের দেওয়া ডেথ সার্টিফিকেটের তথ্য দিয়ে লিখেছে, আবু সাঈদকে বিকেল ৩টা ৫ মিনিটে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়। দৈনিক কালের কণ্ঠে ৪টা ১৩ মিনিটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে দেওয়া মৃত্যুসনদের বরাত দিয়ে বলা হয়, আবু সাঈদকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল।
আরও খুঁজে নিউজ পোর্টাল ডেইলি ক্যাম্পাসে ৩টা ৫৯ মিনিটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আবু সাঈদের মৃত্যুর প্রমাণপত্র পাওয়া যায়। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে দেওয়া ওই প্রমাণপত্রে আবু সাঈদের মৃত্যুর বিষয়ে বলা হয়েছে, তাঁকে মৃত অবস্থায় ১৬ জুলাই বেলা ৩টা ৫ মিনিটে হাসপাতালে আনা হয়।
আবু সাঈদের ময়নাতদন্ত রিপোর্টে কী আছে?
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলন একপর্যায়ে রূপ নেয় সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে। শেষ পর্যন্ত গত ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। এর প্রায় দেড় মাস পর সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে আবু সাঈদের দুই মাস আট দিন পর তাঁর ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. রাজিবুল ইসলাম উল্লেখ করেন, সাঈদের শরীরজুড়ে ছররা গুলির চিহ্ন ছিল। গুলি ঢুকে তাঁর শরীরের ভেতরের বিভিন্ন অংশে গর্ত তৈরি করেছিল। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ফলে মৃত্যু হয় তাঁর। তা ছাড়া, তাঁর খাদ্যনালি ও ঊরুর রক্তনালিতেও জখমের কারণে রক্তজমাট বেঁধে গিয়েছিল।
আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে ডা. রাজিবুল ইসলাম যমুনা টিভিকে বলেন, ‘ফরেনসিক টার্মে ছররা গুলি ১০ থেকে ৩০ মিটার দূর থেকে করা হলে সেটাকে আমরা লেথাল বলি। ১০ মিটারের দূর থেকে গুলি করায় তার শরীরের ভেতরের কিছু অঙ্গ ফুটো হয়ে গিয়েছিল। ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই মৃত্যু হয় তার।’
সরকার পতনের আগে ১৭ জুলাই রংপুর মেট্রোপলিটনের তাজহাট থানায় আবু সাঈদের মৃত্যুর ঘটনায় একটি মামলা হয়। তবে ওই ঘটনায় এসআই বিভূতি ভূষণ রায় আগের রাত ১১টা ৩৫ মিনিটে এজাহার দাখিল করেন। কিন্তু ১৭ জুলাই তারিখে মামলাটি রেকর্ড করা হয়।
এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ‘বিভিন্ন দিক থেকে আন্দোলনকারীদের ছোড়া গোলাগুলি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপে একজন শিক্ষার্থীকে পড়ে যেতে দেখা যায়। তখন তার সহপাঠীরা তাকে ধরাধরি করে জরুরি চিকিৎসার জন্য বিকেল ১৫.০৫ (৩টা ৫ মিনিটে) ঘটিকার সময় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।’
আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে সংবাদমাধ্যমের এসব প্রতিবেদন থেকে প্রতীয়মান হয়, বেরোবি শিক্ষার্থী আবু সাঈদ কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষে ১৬ জুলাই বেলা সোয়া ২টার দিকে আহত হওয়ার পরপরই তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান আন্দোলনকারীরা। পরে হাসপাতাল থেকে তাঁর মৃত্যুসনদে সময় উল্লেখ করা হয় ৩টা ৫ মিনিট এবং রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, হাসপাতালে নেওয়ার আগেই আবু সাঈদের মৃত্যু হয়।
অর্থাৎ আহত হওয়ার পর চার–পাঁচ ঘণ্টা পরে আবু সাঈদকে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যাপারে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দাবিটি সঠিক নয়। আবু সাঈদ আহত হওয়ার পরপরই তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং আহত হওয়ার ঘণ্টাখানেকে মধ্যেই তাঁর মৃত্যু ঘটে।
ফ্যাক্টচেক, সোশ্যাল মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ভাইরাল, ভুয়া পোস্ট, সংঘর্ষ, রাজধানী, সেনাবাহিনী, বিক্ষোভ, রিকশা
৮ ঘণ্টা আগেদীপ্তির বক্তব্য দাবিতে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের নাম ও লোগোযুক্ত একটি ফটোকার্ড ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। দীপ্তি চৌধুরীর ছবিযুক্ত ফটোকার্ডটিতে লেখা, ‘আমার নানীর ফুফাতো বোনের স্বামী মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।’
১২ ঘণ্টা আগেবৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। তিনি জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদকও। সম্প্রতি সারজিস শিশু মডেল অভিনেত্রী সিমরিন লুবাবাকে ফেসবুকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন দাবিতে একটি ফটোকার্ড সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
২ দিন আগেপ্রযুক্তি জগতে নানা উদ্ভাবন দিয়ে সব সময়ই আলোচনায় থাকেন স্পেসএক্স, টেসলাসহ মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সের (সাবেক টুইটার) মালিক ইলন মাস্ক। সম্প্রতি তিনি আলোচনায় এসেছেন এক্সে ডিজনির এলজিবিটিকিউ সম্পর্কিত কনটেন্ট ব্লক করে দিয়েছেন এমন দাবিতে। গত মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দিবাগত রাতে ফেসবুকে ‘মহিদুল আলম...
২ দিন আগে