শেরপুরে পীরের দরবারে হামলা-ভাংচুরের ঘটনায় আহত একজনের মৃত্যু

শেরপুর প্রতিনিধি 
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৩: ১৫
শেরপুর সদর উপজেলার কান্দাশেরী এলাকার বাড়িতে নিহত হাফেজ উদ্দিনের ছেলে ও বাবার আহাজারি। ছবি: আজকের পত্রিকা

শেরপুরের মুর্শিদপুর দরবার শরীফে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আহত হাফেজ উদ্দিন (৩৯) নামে একজন মারা গেছেন। আজ বুধবার (২৭ নভেম্বর) সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

হাফেজ উদ্দিন সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের কান্দাশেরী গ্রামের ইদু মিয়ার ছেলে। তিন সন্তানের এই বাবা পেশায় কাঠের নকশামিস্ত্রি ছিলেন।

মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে মুর্শিদপুর দরবার বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছিলেন সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের জামতলা এলাকার ফারাজিয়া আল আরাবিয়া কওমি মাদ্রাসার সুপার মো. তরিকুল ইসলাম এবং স্থানীয় প্রভাবশালী মো. খোরশেদ, মজিবুর ও শহিদুলসহ ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের একটি অংশ।

তাদের অভিযোগ, দরবারে ইসলামবিরোধী কার্যকলাপ চলছে। এর আগেও দরবার বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

গতকাল মঙ্গলবার ভোররাতে ৪০০-৫০০ লোক দরবারে হামলা চালায়। দরবারের খাদেম ও মুরিদরা বাধা দিলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে হামলাকারীদের মধ্যে হাফেজ উদ্দিনসহ ৭ জন এবং দরবারের ৬ জনসহ মোট ১৩ জন আহত হন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‍্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

হামলাকারীদের মধ্যে আসিফ (২৫), শহিদুল ইসলাম (৩৫), আল মাসুদ (১৫), জিসান (২২) এনামুল হক (৩৫), হাফেজ (৩৯) ও জয়নাল (২৮) কে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে দরবার কর্তৃপক্ষের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাদের আটক করে পুলিশ।

সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় হাফেজ উদ্দিনকে প্রথমে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে বুধবার সকালে তিনি মারা যান।

দরবারের খাদেম মো. মামুন অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে দরবার বন্ধের হুমকি দিয়ে আসছিল হামলাকারীরা। মঙ্গলবার ভোরে তাঁরা দরবারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মাদ্রাসার সুপার মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘আপসের কথা বলে আমাদের ৭ জনকে দরবারে ডেকে নিয়ে মারধর করা হয় এবং বাথরুমে আটকে রাখা হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমাদের একজন মারা গেছেন। এই ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।’

শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুবায়দুল আলম বলেন, আহত হাফেজ ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এ ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। তবে তাঁরা মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত কিনা তা যাচাই করা হচ্ছে।

এই ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তৎপর রয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রামে নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে গুজব

ববির ট্রেজারার সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে যোগদানে বাধা

বিগত সরকারে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের ক্ষতিপূরণ দিতেই যাবে শতকোটি টাকা

দুই দিনে ৭ ব্যাংককে ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা দিল বাংলাদেশ ব্যাংক

কোনো পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেননি রয়টার্সের প্রতিবেদক: সিএমপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত