চিন্ময়কে ঘিরে চট্টগ্রাম আদালতে বিক্ষোভ: মুন্সি সমিতি কার্যালয় ভাঙচুর, দখলের অভিযোগ

 নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০১: ৩৩
মুন্সি সমিতির কার্যালয়ের সামনে নথিপত্রে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

সনাতন সম্মিলিত জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) সাবেক নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুরের পর মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) চট্টগ্রাম আদালতে বিক্ষোভ হয়। সেই বিক্ষোভে আদালতের মুন্সি সমিতি (অ্যাডভোকেটস ক্লার্ক অ্যাসোসিয়েশন) সহায়তা করেছে এমন দাবি তুলে কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়েছে। কার্যালয়টি দখলের অভিযোগও উঠেছে।

মঙ্গলবার হামলায় নিহত হন অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ। সেটির প্রতিবাদে বুধবার (২৭ নভেম্বর) সাধারণ আইনজীবী পরিষদসহ কয়েকটি ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীদের একাংশ মুন্সি সমিতিতে ভাঙচুর চালায় এবং নথিপত্রে আগুন ধরিয়ে দেয়।

চট্টগ্রাম আদালতে আইনজীবীদের সহকারী হিসেবে যারা কাজ করেন, তাঁরাই মুন্সি সমিতির সদস্য। সংগঠনটির তথ্য মতে, চট্টগ্রাম আদালতে ১৭০০ থেকে ১৮০০ মুন্সি কর্মরত রয়েছেন। এর মধ্যে সমিতির অধীনে ১২০০ সদস্য রয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় আইনজীবীদের বিক্ষোভ সমাবেশ চলাকালে সকাল সোয়া ১০টার দিকে বিক্ষুব্ধ আইনজীবীদের একাংশ মুন্সি সমিতির কার্যালয়ে এক দফা ভাঙচুর করে। পরে সেখান থেকে তাঁরা নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের জানাজায় অংশ নেয়। জানাজা শেষে পুনরায় আদালত এলাকায় বিক্ষোভ কর্মসূচি করেন আইনজীবীরা। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেয় ছাত্র-জনতা। সেখানে সমাবেশে অংশ নেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হাসান আরিফ। পরে বিক্ষুব্ধ আইনজীবীরা কার্যালয়ে পুনরায় হামলা চালিয়ে ক্লার্কদের মারধর ও ভেতর থেকে সকল নথিপত্র বের করে আগুন ধরিয়ে দেন।

অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহতের প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে টাঙানো ব্যানার। ছবি: আজকের পত্রিকা
অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহতের প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে টাঙানো ব্যানার। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ছোটখাটো সামান্য ঝামেলা হয়েছিল বলে আমি শুনেছি। তবে বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। সম্ভবত বহিরাগতদের কেউ এই ধরনের কাজটি করতে থাকতে পারে। এছাড়া ওদিকে (আদালতে) আজ আমি যাইনি। তাই এটা নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে পারছি না।’

চট্টগ্রাম অ্যাডভোকেটস ক্লার্ক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামসুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাঁরা (আইনজীবীরা) সমিতির অফিস ভাঙচুর ও নথিপত্রে অগ্নিসংযোগের পর কার্যালয়টিতে নাম পরিবর্তন করে দুটি ব্যানার ঝুলিয়ে রেখেছেন।’

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক রিপন কান্তি নাথ বলেন, ‘তাঁরা আমাদের সমিতির সদস্যদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলেছেন তা সঠিক নয়। সমিতির কেউ বিক্ষোভে অংশ নেয়নি। আমাদের সমিতিতে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান-সবাই আছে। মূলত ওই ঘটনার অজুহাতে এটা জায়গা দখলের পাঁয়তারা।’

সাধারণ আইনজীবী পরিষদসহ কয়েকটি ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাধারণ আইনজীবী পরিষদসহ কয়েকটি ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

জেলা প্রশাসন, অ্যাডভোকেটস ক্লার্ক ও পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের মালিকানাধীন জায়গাটিতে মুন্সি সমিতি কার্যালয় তুলে দীর্ঘসময় ধরে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। আইনজীবীদের একাংশ দীর্ঘদিন ধরে জায়গাটি দখলের চেষ্টা করে আসছে। এটা নিয়ে জেলা প্রশাসন ও আইনজীবীদের মধ্যে অতীতে বিরোধ রয়েছে। আইনজীবী আলিফ হত্যার সুযোগ নিয়ে কিছু সুযোগসন্ধানী আইনজীবী বুধবার জায়গাটি দখল করে নিজেদের আয়ত্তে নিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মুন্সি আজকের পত্রিকাকে বলেন, সমিতির কয়েকজন সদস্য ইসকনের পক্ষে পোস্ট দিয়েছিল। আবার প্রিজন ভ্যান আটকে বিক্ষোভ চলাকালে মুন্সি সমিতির সদস্যরা খাবার পানি সরবরাহ করেছিল। এটা নিয়ে আইনজীবীদের একাংশ ক্ষুব্ধ।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রামে নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে গুজব

ববির ট্রেজারার সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে যোগদানে বাধা

বিগত সরকারে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের ক্ষতিপূরণ দিতেই যাবে শতকোটি টাকা

দুই দিনে ৭ ব্যাংককে ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা দিল বাংলাদেশ ব্যাংক

কোনো পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেননি রয়টার্সের প্রতিবেদক: সিএমপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত