ময়মনসিংহের নান্দাইলে সহপাঠীর সঙ্গে প্রেম ছিল মো. ইমরান মিয়া (১৫) নামের এক কিশোরের। এরপর তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে বাল্যবিবাহ করে। বিয়ের সপ্তাহ পেরোতেই শুরু হয় দুজনের মধ্য মনোমালিন্য। কিশোর বরের বাড়ি ছেড়ে মেয়েটি চলে যায় বাবার বাড়ি। এরপর কিশোরটি অভিমানে ‘বিষপানে আত্মহত্যা’ করেছে বলে জানা গেছে। 

গতকাল রোববার রাত ১২টার দিকে নান্দাইল সদর ইউনিয়নের ভাটি পাঁচানি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মো. ইমরান মিয়া ওই গ্রামের নুরুল ইসলামের পুত্র। সে স্থানীয় পাঁচানি উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। 

স্থানীয় পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মো. ইমরান মিয়া স্থানীয় পাঁচানি উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা অবস্থায় একই শ্রেণির এক মেয়ের (১৫) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। ১৬ মে তারা প্রেমের টানে বাড়ি থেকে পালায়। এর দুই দিন পর (১৮ মে) ইমরানের বাবা নুরুল ইসলাম দুজনের বিয়ে পড়িয়ে দেন। সংসারের আট দিনের মাথায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হয়। এরপর গত শনিবার (২৭ মে) মেয়েটি বাবার বাড়িতে চলে যায়।

পরে ইমরান মিয়া তার বাবা নুরুল ইসলামকে স্ত্রীকে এনে দিতে চাপ দিতে থাকে। তিনি এনে দেবেন বলে জানান। এরপর গতকাল রোববার (২৮ মে) রাত ৯টার দিকে অভিমান করে বাড়ির পাশে এক মাচায় বসে বিষপান করে। পরিবারের লোকজন খোঁজ পেয়ে ইমরান মিয়াকে উদ্ধার করে নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। অবস্থার অবনতি হলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ১২টার দিকে মৃত্যু হয়। 

এ বিষয়ে নিহত ইমরানের বাবা নুরুল ইসলাম বলেন, ‘ছেলেটি না জানিয়ে মেয়েটিকে নিয়ে পালায়। এতে আমার অনেক অপমান হয়েছে। তবুও বাড়িতে নিয়ে আসলে বিয়ে পড়িয়ে দিই। বিয়ের পর থেকে তো ভালোই চলছিল। হঠাৎ বউয়ের সঙ্গে ঝগড়া হয়। বউ তার বাবার বাড়িতে রাগ করে চলে গেছে। আমাকে ইমরান বলছে বউকে এনে দিতে। সে জন্য স্থানীয় মেম্বারের সঙ্গে কথা বলি। তারপরও কেন ছেলেটা বিষ খাইছে, তা বলতে পারি না। কারও প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই।’

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে স্থানীয় ইউপি সদস্য আতিক হাসান বাবুল মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত শনিবার আমার কাছে মেয়ের বাবা ও ছেলের বাবা এসেছিলেন। রোববার দুই পক্ষকে ডাকলেও ছেলের বাবা সাড়া না দেওয়ায় সমস্যাটি সমাধান করতে পারিনি। রাতে ছেলেটি এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।’ 

নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশেদুজ্জামান রাশেদ মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষপানে আত্মহত্যা করেছে বলে শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। মরদেহ ময়মনসিংহ মেডিকেলে আছে, ময়নাতদন্তের জন্য বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হবে।’