১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা হত্যার ঘটনায় ৪৮ বছর পর শেরে বাংলা নগর থানায় দায়ের করা মামলাকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
শেরে বাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি উৎপল বড়ুয়া জানান, মামলায় উল্লেখিত জীবিত আসামি ১০ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের মেজর (অব.) আব্দুল জলিল ছাড়াও অজ্ঞাতদের চিহ্নিত করতে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন।
আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘মামলাটির তদন্তে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। মামলার বাদী একজন সংসদ সদস্য। পাশাপাশি মামলার ঘটনাটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটও রয়েছে। আমরা খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেছি।’
অভিযানের বিষয়ে জানতে চাইলে উৎপল বড়ুয়া বলেন, ‘আমরা মামলার পর থেকেই কাজ শুরু করেছি। অভিযানের বিষয়ে বলা যাবে না। তবে সব আসামির বিষয় খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ঘটনার সাক্ষীদের সঙ্গে কথা বলে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর অভ্যুত্থান পাল্টা অভ্যুত্থানের মধ্যে ৩ মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার ঘটনার ৪৮ বছর পর মামলা দায়ের করা হয়েছে। খন্দকার নাজমুল হুদা ছাড়া হত্যাকাণ্ডের শিকার বাকি ২ সেনা কর্মকর্তা হলেন মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ (বীর উত্তম) ও এ টি এম হায়দার (বীর উত্তম)।
কর্নেল নাজমুল হুদার মেয়ে সংসদ সদস্য নাহিদ ইজহার খান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন
মামলার এজাহারে বলা হয়, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর ‘সেনাবাহিনীর বিপথগামী, বিশৃঙ্খল সদস্যদের হাতে’ নিহত হন কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা। ওই সময় তিনি সেনাবাহিনীর ৭২ ব্রিগেডের কমান্ডার ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের দুই সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীর উত্তম ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ টি এম হায়দার বীর উত্তমকেও একই সময়ে হত্যা করা হয়।
এতে আরও বলা হয়, তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান ও জাসদ নেতা অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আবু তাহেরের নির্দেশে ২০-২৫ জন সেনা কর্মকর্তা ও সৈনিকের একটি দল নাজমুল হুদাসহ তিন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করে। ওই ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে একমাত্র ১০ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সাবেক মেজর আব্দুল জলিল জীবিত আছেন। তাঁকেই মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, বৃহস্পতিবার তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করছেন। একই সঙ্গে সাক্ষীদের খুঁজছেন। কেউ বেঁচে আছেন কি-না তারও খোঁজ চলছে।
ঘটনাটি পুরোনো হওয়ায় তদন্তে সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন তদন্তে সংশ্লিষ্ট ওই কর্মকর্তা। তিনি জানান, এ মামলায় অনেক বিষয় নিয়ে কাজ করার আছে। তদন্তে যে ধরনের তথ্য সংগ্রহ করা দরকার, সেসব তাঁরা সংগ্রহ করছেন।