টাঙ্গাইলের মধুপুরে শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে শিক্ষকদের ওপর হামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়ক অবরোধ করে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে করা অবরোধ পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে তারা তুলে নেয়। পরে পরিস্থিতি বিবেচনায় বিদ্যালয়ের আজকের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।

উপজেলার গাংগাইর আহাম্মদ আলী মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. শাহজাহান আলী বলেন, সম্প্রতি প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদ পূরণকে কেন্দ্র করে শিক্ষকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। সেই দ্বন্দ্বের কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে।

অভিযোগ রয়েছে, সভাপতি কোরবান আলী বিএসসি তাঁর পছন্দের লোক নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। যার বিরোধিতা করছিলেন কয়েকজন শিক্ষক। আজ বৃহস্পতিবার কোরবান আলী তাঁর ভাতিজা মমিনুল ইসলাম মুকুল, খলিলুর রহমানসহ কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে বিদ্যালয়ে যান। এ বিষয়ে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে শিক্ষকদের ওপর হামলা চালায় বহিরাগতরা।

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিদ্যালয়ে চলমান বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বহিরাগতদের ধাওয়া করে। অবস্থা বেগতিক দেখে বহিরাগতরা পালিয়ে যায়। পরে বিদ্যালয়ের সভাপতি কোরবান আলীকে ছাত্ররা অবরুদ্ধ করে রাখে।

হামলায় শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক, মো. আতিকুর রহমান, বুলবুল আহমেদ, আনোয়ার হোসেন, আবুল কালাম আজাদসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আতিকুর রহমানসহ দুজনকে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

খবর পেয়ে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীমা ইয়াসমিন, মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা আজিজুর রহমান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ ঘটনাস্থলে যান। তাঁদের উপস্থিতিতে ছাত্ররা আবারও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। সভাপতির পদত্যাগের দাবিতে বিকেল ৪টার দিকে তারা টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়ক অবরোধ করে। অবস্থা বেগতিক দেখে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে তারা অবরোধ তুলে নেয়।

মধুপুর থানার ওসি মোল্লা আজিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এই ঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় বিদ্যালয়ের আজকের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীমা ইয়াসমীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, শিক্ষার্থী ও বিক্ষুব্ধদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সভাপতি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। তাঁর পদত্যাগের পর বিক্ষুব্ধরা অবরোধ তুলে নেয়।