মারুফ ইসলাম
এই তো গত মাসে (৬ এপ্রিল) নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করল লেবানন। তারপর শ্রীলঙ্কা। দেশে দেশে দেখা দিয়েছে মুদ্রাস্ফীতি। বাড়ছে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা। বিশেষ করে গত দুই বছরে করোনা মহামারির কারণে বিশ্বজুড়ে অগণিত মানুষ চাকরি হারিয়েছে এবং কাজকর্মের সুযোগ হারিয়ে দরিদ্র মানুষের পাল্লা করেছে ভারী। তাহলে কি মার্কিন ধনকুবের বিল গেটসের ‘দরিদ্র দেশমুক্ত’ বিশ্বের দেখা পাওয়া যাবে না? নাকি এটি দারিদ্র্যমুক্তির যাত্রায় শুধু সাময়িক ছন্দপতন?
গত বছরের অক্টোবরে বিশ্বব্যাংক এক প্রতিবেদনে লিখেছে, করোনা মহামারির আগের তুলনায় করোনার সময় মানুষের গড় আয় কমেছে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ। পৃথিবীতে এখন ৪০ ভাগ মানুষ চরম দরিদ্র অবস্থায় জীবন যাপন করছে।
এমন পরিস্থিতিতে আপনার মনে পড়ে যাবে ২০১৪ সালে বলা বিল গেটসের একটি কথা। ওই বছর বিশ্বের এই অন্যতম ধনকুবের ও মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা তাঁর প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের উদ্দেশে লেখা বার্ষিক চিঠিতে বলেছিলেন, ‘২০৩৫ সাল নাগাদ পৃথিবীতে আর একটিও দরিদ্র দেশ থাকবে না।’ আর ২০১৮ সালের চিঠিতে বলেছিলেন, ‘২০৫০ সাল নাগাদ পৃথিবীতে খুব কম মানুষই দরিদ্র থাকবে। যে কজন দরিদ্র মানুষ থাকবে, তার ৪০ ভাগ থাকবে পৃথিবীর মাত্র দুটি দেশে—কঙ্গো ও নাইজেরিয়ায়।’
২০৩৫ এখনো আসেনি। আসেনি ২০৫০ সালও। তার আগে দেখে নেওয়া যেতে পারে গণক গেটসের ভবিষ্যদ্বাণী ফলতে যাচ্ছে কি না।
বিল গেটস যে বছর ভবিষ্যদ্বাণী করলেন, তার পরের বছর (২০১৫) ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম বলেছিল, পৃথিবীতে দরিদ্র দেশ আছে ২৩টি। আর এই চলতি বছরে (২০২২) বিশ্বব্যাংক বলছে, পৃথিবীতে এখন দরিদ্র দেশের সংখ্যা ২৭। মাত্র সাত বছরে ‘লো ইনকাম’ দেশের তালিকায় ঢুকেছে নতুন করে চারটি দেশ।
মহামতি গেটসের ভবিষ্যদ্বাণী, সঠিক পথে হাঁটলে দরিদ্র দেশের সংখ্যা কমার কথা ছিল। তা হয়নি বরং বেড়েছে। ২০৩৫ আসতে আসতে লো ইনকাম দেশের সংখ্যা আরও বাড়বে নাকি কমবে, সেই সিদ্ধান্ত অবশ্য এখনই নেওয়া যাচ্ছে না। তবে কিসের ভিত্তিতে বিল গেটস অমন ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন তা অবশ্য ভেবে দেখা যেতে পারে।
গেটসের ধারণা, ২০৩৫ সালের মধ্যে বিশ্বের প্রায় সব দেশ নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হবে। অনেক দেশ হবে ধনী। কারণ, দরিদ্র দেশগুলো ইতিমধ্যে শিখে ফেলবে কীভাবে উৎপাদনশীলতা বাড়ানো যায়। পাশাপাশি নতুন নতুন টিকা আবিষ্কার, উন্নত ফসলি বীজ এবং ডিজিটাল বিপ্লব কম আয়ের দেশগুলোর দারিদ্র্যমুক্তির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে।
ধনী বিশ্বের স্বপ্নে বিভোর গেটস ওই চিঠিতে তিনটি মিথের কথাও বলেছিলেন। যে তিনটি মিথ বৈশ্বিক উন্নয়নে মুখ্য ভূমিকা পালন করবে, তার একটি হচ্ছে বৈদেশিক সহায়তা।
বিশ্বের ধনী দেশ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিম্ন আয়ের দেশগুলোকে অব্যাহতভাবে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। এতে অনেক দেশের কাঁধে ঋণের বোঝা চাপলেও বিল গেটস মনে করেন, এটাই ধনী হওয়ার অন্যতম পথ। বিশ্বের অনেক দেশ ঋণ নিয়ে, অনুদান নিয়ে এর সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে উন্নত দেশের কাতারে চলে গেছে।
গেটসের দ্বিতীয় মিথের নাম ‘দরিদ্র দেশগুলো দরিদ্রই থাকতে চায়’। এটি একটি ভুল মিথ বলে মনে করেন বিল গেটস। তাঁর বক্তব্য, কোনো দেশই দরিদ্র থাকতে চায় না। তিনি মেক্সিকোর উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘আমরা (বিল ও মেলিন্ডা) ১৯৮৭ সালে একবার মেক্সিকো ভ্রমণে গিয়েছিলাম। তখন নিজের চোখে দেখেছি দেশটির দ্ররিদ্রাবস্থা। ঘরে ঘরে ছিল পানির জন্য হাহাকার। মাইলের পর মাইল হেঁটে মানুষ পানি সংগ্রহ করতে যেত। এখন মেক্সিকোতে গিয়ে দেখুন। সুউচ্চ ভবন মাথা উঁচু করে অভিবাদন জানাচ্ছে। ঝকঝকে, চকচকে রাস্তা। অত্যাধুনিক সেতু। সেখানে যে এখন একজনও দরিদ্র মানুষ নেই তা নয়, তবে শেষবার মেক্সিকোতে গিয়ে অবাক হয়ে দেখেছি, বেশির ভাগ মানুষই মধ্যবিত্ত।’
সুতরাং দরিদ্র দেশগুলোর দরিদ্র থাকতে থাকতে ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পৌরাণিক মিথটি সঠিক নয়। যেসব দেশ দরিদ্র ছিল, তারা চিরকাল দরিদ্র থাকেনি। একসময় আমরা যেসব দেশকে দরিদ্র বলতাম, সেসব দেশের অনেকেই এখন সমৃদ্ধ অর্থনীতির দেশ। বিল গেটস বলেন, ‘১৯৯০ সাল থেকে হতদরিদ্র মানুষের সংখ্যা অর্ধেকেরও বেশি কমেছে।’
ধনী বিল গেটসের আরেকটি অকাট্য যুক্তি হচ্ছে, দরিদ্র দেশগুলোর শ্রমশক্তি এবং শিক্ষা খাতে ক্রমোন্নতি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করবে। এ বিষয়গুলো কম আয়ের দেশগুলোর দারিদ্র্যমুক্তি থেকে উত্তরণের সিঁড়ি হিসেবে কাজ করবে।
তবে একটি ব্যাপারে সতর্কও করেছেন বিল গেটস। তাঁর মতে, দরিদ্র দেশগুলো ধনীর কাতারে যাওয়ার পরে ‘অসমতা’ একটি বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিতে পারে। ফলে প্রতিটি অঞ্চলে কিছু না কিছু দরিদ্র মানুষ থাকবেই। তাতে অবশ্য সামগ্রিকভাবে একটি দেশ দরিদ্র হয়ে যাবে না। ওই দরিদ্র মানুষগুলোর বেশির ভাগই অর্থনৈতিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশগুলোতেই বাস করবে।
দক্ষিণ আমেরিকা, মধ্য আমেরিকা, এশিয়া ও আফ্রিকার উপকূলীয় অঞ্চলের বেশির ভাগ দরিদ্র দেশ আর এক যুগের মধ্যেই মধ্য আয়ের দেশের তালিকায় ঢুকে যাবে বলে বিল গেটসের ধারণা। বর্তমানে চীনের মানুষের যে মাথাপিছু আয়, তার চেয়ে বেশি মাথাপিছু আয় হবে বিশ্বের ৭০ ভাগ দেশের মানুষের। আর ৯০ ভাগ দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় হবে ভারতের মাথাপিছু আয়ের চেয়ে বেশি।
২০১৪ সালে টাইম সাময়িকীকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় পৃথিবীর দরিদ্র দেশগুলোর এই অভূতপূর্ব ভবিষ্যতের কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন বিল গেটস। তিনি উচ্ছ্বসিত হয়ে বলেন, ‘এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের কোটি কোটি মানুষ দারিদ্র্যের অভিশাপ থেকে বের হয়ে আসবে। ভাবতেই অবাক লাগছে, এটা আমার জীবদ্দশাতেই ঘটবে! আমি নিজের চোখে এই পরিবর্তনটা হয়তো দেখে যেতে পারব।’
এরপর গেটস বলেন মিথ নম্বর ৩ নিয়ে কথা। ৩ নম্বর মিথ হচ্ছে—‘জীবন বাঁচানো ওষুধ ও টিকার কারণে পৃথিবীর মানুষ দীর্ঘায়ু লাভ করছে এবং এ জন্য পৃথিবীর জনসংখ্যা বাড়ছে।’ বিল গেটসের জোরালো অভিমত, এই মিথও সঠিক নয়।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে গরিব মানুষ বেড়ে যাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই বলে মনে করেন বিল গেটস। বরং দীর্ঘজীবী মানুষই দারিদ্র্যমুক্তির পথ আবিষ্কার করবে বলে তাঁর বিশ্বাস।
ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ টমাস ম্যালথাস ১৭৯৮ সালে জনসংখ্যা নীতির ওপর একটি প্রবন্ধে বলেছিলেন, পৃথিবীতে যে হারে জনসংখ্যা বাড়বে, সেই হারে খাদ্য উৎপাদন বাড়বে না। ফলে খাবারের অভাবে অনেক মানুষ মারা যাবে। আবার মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি বিশেষজ্ঞরাও বলেছেন, পৃথিবীতে দুর্ভিক্ষ বাড়বে এবং দুর্ভিক্ষ কবলিত মানুষেরা কমিউনিজমের প্রতি আকৃষ্ট হবে।
তাহলে উপায় কী? উপায় হচ্ছে, যেসব দেশের ললাটে ‘তৃতীয় বিশ্বের দরিদ্র দেশ’ লেবেল সাঁটা রয়েছে, সেসব দেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করো—উন্নত বিশ্বের সরকারেরা এমনটাই ভাবল এবং জন্মনিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম হাতে নিল। বিল এবং মেলিন্ডা কর্মীদের কাছে লেখা ওই চিঠিতে বলেছেন, ‘নারীদের গর্ভধারণের অধিকার হরণ করার মতো ন্যক্কারজনক নীতি আর হতে পারে না।’
আশার কথা, ‘পরিবার পরিকল্পনা’ কিংবা ‘প্রজন্ম সীমিত’ করার এসব নীতি থেকে মানুষ ধীরে ধীরে সরে আসছে। মানুষের এ পরিবর্তনকে স্বাগত জানিয়েছেন বিল গেটস। তিনি বলেছেন, ‘আমরা আমাদের ভবিষ্যৎকে তখনই টেকসই করতে পারব, যখন গরিবের ওপর বিনিয়োগ করতে পারব।’
তবে ২০১৮ সালের আরেক বার্ষিক চিঠিতে বিল গেটস তাঁর অবস্থান থেকে খানিকটা সরে এসে বলেছেন, ‘জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ দারিদ্র্য হ্রাসের ক্ষেত্রে কিছুটা ভূমিকা রাখে। সাব-সাহারা ও আফ্রিকার নারীরা যদি তাঁদের পছন্দমতো সন্তান ধারণ করতে পারেন, তাহলে ওই অঞ্চলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে আসবে।’
বিল গেটসের এসব ভবিষ্যদ্বাণী অবশ্য পুরোটাই ফেলনা নয়। ছোট্ট একটি পরিসংখ্যানে চোখ বোলালেই তা স্পষ্ট হবে। ১৯৯০ সালে পৃথিবীতে দরিদ্র মানুষ ছিল ১৮০ কোটি। এটি বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন। আর ২০১৯-এ এসে ওয়ার্ল্ড ভিশন বলেছে, পৃথিবীতে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৬৮ কোটি ৯০ লাখ। মাত্র ২৯ বছরে পৃথিবী থেকে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমেছিল ১১১ কোটি ১০ লাখ।
কিন্তু মাঝখানে করোনা মহামারি এসে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা আবার খানিকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। গত তিন বছরে নতুন করে দরিদ্র হয়েছে ১৮ কোটি ৯০ লাখ মানুষ। ব্রিটিশ দাতব্য প্রতিষ্ঠান অক্সফাম বলছে, ২০২২ সালে পৃথিবীতে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৬ কোটি।
করোনা মহামারির ধাক্কা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তনসহ আরও নানা কারণে যদি পৃথিবীতে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা এভাবে বাড়তেই থাকে, তাহলে বিল গেটসের তথাকথিত দারিদ্র্যমুক্ত পৃথিবীর স্বপ্ন পূরণ হবে না। আর যদি কোনো কারণে আবার ঘুরে দাঁড়ায় পৃথিবীর অর্থনীতি, তাহলে স্বপ্ন পূরণ হতেও পারে।
পৃথিবীর অনেক অর্থনীতিবিদ অবশ্য আশাবাদী। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলেছে, বৈশ্বিক অর্থনীতি ধীরে ধীরে আগের অবস্থানে ফিরে আসছে। করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার অব্যাহত আছে।
আইএমএফের ফার্স্ট ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর গীতা গোপীনাথ গত ২৫ মে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সভায় বলেছেন, ‘২০২৪ সালের মধ্যে উন্নত দেশের অর্থনীতি আবার আগের অবস্থানে ফিরে আসবে। উন্নয়নশীল দেশগুলোও অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করবে।’ বিশ্বের একেক দেশ একেকভাবে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে বলেও জানান তিনি।
আমরা আশাবাদী হতে পারি জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার কথা শুনেও। গত বছর প্রকাশিত ‘পভার্টি, গ্রোথ অ্যান্ড ইনইকুয়ালিটি ওভার দ্য নেক্সট ফিফটি ইয়ার্স’ প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানিয়েছে, পিছিয়ে থাকা দেশগুলো যদি টেকসই উচ্চতর প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পারে, তাহলে ২০৫০ সাল নাগাদ পৃথিবীতে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা আড়াই শতাংশেরও নিচে নেমে আসবে।
আশার কথা শুনিয়েছেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুনের বিশেষ উপদেষ্টা জেফরি ডি. শ্যাস। নিউ ইয়র্ক টাইমসে লেখা এক নিবন্ধে তিনি বলেছেন, ‘দারিদ্র্য দূর করার জন্য নতুন ধরনের “মিশ্র পুঁজিবাদ” দরকার। এর মধ্যে থাকবে রোগ নিয়ন্ত্রণ, জনশিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়ন।’ আফ্রিকার কিছু দেশের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেখানে ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ এবং মোবাইল ফোনের বিকাশের কারণে দারিদ্র্য দূর হয়েছে অনেকটাই।’
জেফরি ডি শ্যাসের কথানুযায়ী অনেক দেশই হয়তো এখন মিশ্র পুঁজিবাদের পথে হাঁটবে। তাতে দূর হবে দারিদ্র্য। পূরণ হবে বিল গেটসের দারিদ্র্যমুক্ত পৃথিবীর স্বপ্ন। মন্দ কি!
সূত্র: বিশ্ব ব্যাংকের ওয়েবসাইট, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম, ওয়ার্ল্ড ভিশন, অক্সফাম, টাইম ম্যাগাজিন, সিএনবিসি, বিজনেস ইনসাইডার, ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউ, ফান্ডস সোসাইটি ও পিটিআই
এই তো গত মাসে (৬ এপ্রিল) নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করল লেবানন। তারপর শ্রীলঙ্কা। দেশে দেশে দেখা দিয়েছে মুদ্রাস্ফীতি। বাড়ছে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা। বিশেষ করে গত দুই বছরে করোনা মহামারির কারণে বিশ্বজুড়ে অগণিত মানুষ চাকরি হারিয়েছে এবং কাজকর্মের সুযোগ হারিয়ে দরিদ্র মানুষের পাল্লা করেছে ভারী। তাহলে কি মার্কিন ধনকুবের বিল গেটসের ‘দরিদ্র দেশমুক্ত’ বিশ্বের দেখা পাওয়া যাবে না? নাকি এটি দারিদ্র্যমুক্তির যাত্রায় শুধু সাময়িক ছন্দপতন?
গত বছরের অক্টোবরে বিশ্বব্যাংক এক প্রতিবেদনে লিখেছে, করোনা মহামারির আগের তুলনায় করোনার সময় মানুষের গড় আয় কমেছে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ। পৃথিবীতে এখন ৪০ ভাগ মানুষ চরম দরিদ্র অবস্থায় জীবন যাপন করছে।
এমন পরিস্থিতিতে আপনার মনে পড়ে যাবে ২০১৪ সালে বলা বিল গেটসের একটি কথা। ওই বছর বিশ্বের এই অন্যতম ধনকুবের ও মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা তাঁর প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের উদ্দেশে লেখা বার্ষিক চিঠিতে বলেছিলেন, ‘২০৩৫ সাল নাগাদ পৃথিবীতে আর একটিও দরিদ্র দেশ থাকবে না।’ আর ২০১৮ সালের চিঠিতে বলেছিলেন, ‘২০৫০ সাল নাগাদ পৃথিবীতে খুব কম মানুষই দরিদ্র থাকবে। যে কজন দরিদ্র মানুষ থাকবে, তার ৪০ ভাগ থাকবে পৃথিবীর মাত্র দুটি দেশে—কঙ্গো ও নাইজেরিয়ায়।’
২০৩৫ এখনো আসেনি। আসেনি ২০৫০ সালও। তার আগে দেখে নেওয়া যেতে পারে গণক গেটসের ভবিষ্যদ্বাণী ফলতে যাচ্ছে কি না।
বিল গেটস যে বছর ভবিষ্যদ্বাণী করলেন, তার পরের বছর (২০১৫) ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম বলেছিল, পৃথিবীতে দরিদ্র দেশ আছে ২৩টি। আর এই চলতি বছরে (২০২২) বিশ্বব্যাংক বলছে, পৃথিবীতে এখন দরিদ্র দেশের সংখ্যা ২৭। মাত্র সাত বছরে ‘লো ইনকাম’ দেশের তালিকায় ঢুকেছে নতুন করে চারটি দেশ।
মহামতি গেটসের ভবিষ্যদ্বাণী, সঠিক পথে হাঁটলে দরিদ্র দেশের সংখ্যা কমার কথা ছিল। তা হয়নি বরং বেড়েছে। ২০৩৫ আসতে আসতে লো ইনকাম দেশের সংখ্যা আরও বাড়বে নাকি কমবে, সেই সিদ্ধান্ত অবশ্য এখনই নেওয়া যাচ্ছে না। তবে কিসের ভিত্তিতে বিল গেটস অমন ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন তা অবশ্য ভেবে দেখা যেতে পারে।
গেটসের ধারণা, ২০৩৫ সালের মধ্যে বিশ্বের প্রায় সব দেশ নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হবে। অনেক দেশ হবে ধনী। কারণ, দরিদ্র দেশগুলো ইতিমধ্যে শিখে ফেলবে কীভাবে উৎপাদনশীলতা বাড়ানো যায়। পাশাপাশি নতুন নতুন টিকা আবিষ্কার, উন্নত ফসলি বীজ এবং ডিজিটাল বিপ্লব কম আয়ের দেশগুলোর দারিদ্র্যমুক্তির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে।
ধনী বিশ্বের স্বপ্নে বিভোর গেটস ওই চিঠিতে তিনটি মিথের কথাও বলেছিলেন। যে তিনটি মিথ বৈশ্বিক উন্নয়নে মুখ্য ভূমিকা পালন করবে, তার একটি হচ্ছে বৈদেশিক সহায়তা।
বিশ্বের ধনী দেশ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিম্ন আয়ের দেশগুলোকে অব্যাহতভাবে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। এতে অনেক দেশের কাঁধে ঋণের বোঝা চাপলেও বিল গেটস মনে করেন, এটাই ধনী হওয়ার অন্যতম পথ। বিশ্বের অনেক দেশ ঋণ নিয়ে, অনুদান নিয়ে এর সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে উন্নত দেশের কাতারে চলে গেছে।
গেটসের দ্বিতীয় মিথের নাম ‘দরিদ্র দেশগুলো দরিদ্রই থাকতে চায়’। এটি একটি ভুল মিথ বলে মনে করেন বিল গেটস। তাঁর বক্তব্য, কোনো দেশই দরিদ্র থাকতে চায় না। তিনি মেক্সিকোর উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘আমরা (বিল ও মেলিন্ডা) ১৯৮৭ সালে একবার মেক্সিকো ভ্রমণে গিয়েছিলাম। তখন নিজের চোখে দেখেছি দেশটির দ্ররিদ্রাবস্থা। ঘরে ঘরে ছিল পানির জন্য হাহাকার। মাইলের পর মাইল হেঁটে মানুষ পানি সংগ্রহ করতে যেত। এখন মেক্সিকোতে গিয়ে দেখুন। সুউচ্চ ভবন মাথা উঁচু করে অভিবাদন জানাচ্ছে। ঝকঝকে, চকচকে রাস্তা। অত্যাধুনিক সেতু। সেখানে যে এখন একজনও দরিদ্র মানুষ নেই তা নয়, তবে শেষবার মেক্সিকোতে গিয়ে অবাক হয়ে দেখেছি, বেশির ভাগ মানুষই মধ্যবিত্ত।’
সুতরাং দরিদ্র দেশগুলোর দরিদ্র থাকতে থাকতে ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পৌরাণিক মিথটি সঠিক নয়। যেসব দেশ দরিদ্র ছিল, তারা চিরকাল দরিদ্র থাকেনি। একসময় আমরা যেসব দেশকে দরিদ্র বলতাম, সেসব দেশের অনেকেই এখন সমৃদ্ধ অর্থনীতির দেশ। বিল গেটস বলেন, ‘১৯৯০ সাল থেকে হতদরিদ্র মানুষের সংখ্যা অর্ধেকেরও বেশি কমেছে।’
ধনী বিল গেটসের আরেকটি অকাট্য যুক্তি হচ্ছে, দরিদ্র দেশগুলোর শ্রমশক্তি এবং শিক্ষা খাতে ক্রমোন্নতি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করবে। এ বিষয়গুলো কম আয়ের দেশগুলোর দারিদ্র্যমুক্তি থেকে উত্তরণের সিঁড়ি হিসেবে কাজ করবে।
তবে একটি ব্যাপারে সতর্কও করেছেন বিল গেটস। তাঁর মতে, দরিদ্র দেশগুলো ধনীর কাতারে যাওয়ার পরে ‘অসমতা’ একটি বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিতে পারে। ফলে প্রতিটি অঞ্চলে কিছু না কিছু দরিদ্র মানুষ থাকবেই। তাতে অবশ্য সামগ্রিকভাবে একটি দেশ দরিদ্র হয়ে যাবে না। ওই দরিদ্র মানুষগুলোর বেশির ভাগই অর্থনৈতিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশগুলোতেই বাস করবে।
দক্ষিণ আমেরিকা, মধ্য আমেরিকা, এশিয়া ও আফ্রিকার উপকূলীয় অঞ্চলের বেশির ভাগ দরিদ্র দেশ আর এক যুগের মধ্যেই মধ্য আয়ের দেশের তালিকায় ঢুকে যাবে বলে বিল গেটসের ধারণা। বর্তমানে চীনের মানুষের যে মাথাপিছু আয়, তার চেয়ে বেশি মাথাপিছু আয় হবে বিশ্বের ৭০ ভাগ দেশের মানুষের। আর ৯০ ভাগ দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় হবে ভারতের মাথাপিছু আয়ের চেয়ে বেশি।
২০১৪ সালে টাইম সাময়িকীকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় পৃথিবীর দরিদ্র দেশগুলোর এই অভূতপূর্ব ভবিষ্যতের কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন বিল গেটস। তিনি উচ্ছ্বসিত হয়ে বলেন, ‘এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের কোটি কোটি মানুষ দারিদ্র্যের অভিশাপ থেকে বের হয়ে আসবে। ভাবতেই অবাক লাগছে, এটা আমার জীবদ্দশাতেই ঘটবে! আমি নিজের চোখে এই পরিবর্তনটা হয়তো দেখে যেতে পারব।’
এরপর গেটস বলেন মিথ নম্বর ৩ নিয়ে কথা। ৩ নম্বর মিথ হচ্ছে—‘জীবন বাঁচানো ওষুধ ও টিকার কারণে পৃথিবীর মানুষ দীর্ঘায়ু লাভ করছে এবং এ জন্য পৃথিবীর জনসংখ্যা বাড়ছে।’ বিল গেটসের জোরালো অভিমত, এই মিথও সঠিক নয়।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে গরিব মানুষ বেড়ে যাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই বলে মনে করেন বিল গেটস। বরং দীর্ঘজীবী মানুষই দারিদ্র্যমুক্তির পথ আবিষ্কার করবে বলে তাঁর বিশ্বাস।
ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ টমাস ম্যালথাস ১৭৯৮ সালে জনসংখ্যা নীতির ওপর একটি প্রবন্ধে বলেছিলেন, পৃথিবীতে যে হারে জনসংখ্যা বাড়বে, সেই হারে খাদ্য উৎপাদন বাড়বে না। ফলে খাবারের অভাবে অনেক মানুষ মারা যাবে। আবার মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি বিশেষজ্ঞরাও বলেছেন, পৃথিবীতে দুর্ভিক্ষ বাড়বে এবং দুর্ভিক্ষ কবলিত মানুষেরা কমিউনিজমের প্রতি আকৃষ্ট হবে।
তাহলে উপায় কী? উপায় হচ্ছে, যেসব দেশের ললাটে ‘তৃতীয় বিশ্বের দরিদ্র দেশ’ লেবেল সাঁটা রয়েছে, সেসব দেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করো—উন্নত বিশ্বের সরকারেরা এমনটাই ভাবল এবং জন্মনিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম হাতে নিল। বিল এবং মেলিন্ডা কর্মীদের কাছে লেখা ওই চিঠিতে বলেছেন, ‘নারীদের গর্ভধারণের অধিকার হরণ করার মতো ন্যক্কারজনক নীতি আর হতে পারে না।’
আশার কথা, ‘পরিবার পরিকল্পনা’ কিংবা ‘প্রজন্ম সীমিত’ করার এসব নীতি থেকে মানুষ ধীরে ধীরে সরে আসছে। মানুষের এ পরিবর্তনকে স্বাগত জানিয়েছেন বিল গেটস। তিনি বলেছেন, ‘আমরা আমাদের ভবিষ্যৎকে তখনই টেকসই করতে পারব, যখন গরিবের ওপর বিনিয়োগ করতে পারব।’
তবে ২০১৮ সালের আরেক বার্ষিক চিঠিতে বিল গেটস তাঁর অবস্থান থেকে খানিকটা সরে এসে বলেছেন, ‘জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ দারিদ্র্য হ্রাসের ক্ষেত্রে কিছুটা ভূমিকা রাখে। সাব-সাহারা ও আফ্রিকার নারীরা যদি তাঁদের পছন্দমতো সন্তান ধারণ করতে পারেন, তাহলে ওই অঞ্চলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে আসবে।’
বিল গেটসের এসব ভবিষ্যদ্বাণী অবশ্য পুরোটাই ফেলনা নয়। ছোট্ট একটি পরিসংখ্যানে চোখ বোলালেই তা স্পষ্ট হবে। ১৯৯০ সালে পৃথিবীতে দরিদ্র মানুষ ছিল ১৮০ কোটি। এটি বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন। আর ২০১৯-এ এসে ওয়ার্ল্ড ভিশন বলেছে, পৃথিবীতে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৬৮ কোটি ৯০ লাখ। মাত্র ২৯ বছরে পৃথিবী থেকে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমেছিল ১১১ কোটি ১০ লাখ।
কিন্তু মাঝখানে করোনা মহামারি এসে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা আবার খানিকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। গত তিন বছরে নতুন করে দরিদ্র হয়েছে ১৮ কোটি ৯০ লাখ মানুষ। ব্রিটিশ দাতব্য প্রতিষ্ঠান অক্সফাম বলছে, ২০২২ সালে পৃথিবীতে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৬ কোটি।
করোনা মহামারির ধাক্কা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তনসহ আরও নানা কারণে যদি পৃথিবীতে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা এভাবে বাড়তেই থাকে, তাহলে বিল গেটসের তথাকথিত দারিদ্র্যমুক্ত পৃথিবীর স্বপ্ন পূরণ হবে না। আর যদি কোনো কারণে আবার ঘুরে দাঁড়ায় পৃথিবীর অর্থনীতি, তাহলে স্বপ্ন পূরণ হতেও পারে।
পৃথিবীর অনেক অর্থনীতিবিদ অবশ্য আশাবাদী। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলেছে, বৈশ্বিক অর্থনীতি ধীরে ধীরে আগের অবস্থানে ফিরে আসছে। করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার অব্যাহত আছে।
আইএমএফের ফার্স্ট ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর গীতা গোপীনাথ গত ২৫ মে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সভায় বলেছেন, ‘২০২৪ সালের মধ্যে উন্নত দেশের অর্থনীতি আবার আগের অবস্থানে ফিরে আসবে। উন্নয়নশীল দেশগুলোও অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করবে।’ বিশ্বের একেক দেশ একেকভাবে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে বলেও জানান তিনি।
আমরা আশাবাদী হতে পারি জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার কথা শুনেও। গত বছর প্রকাশিত ‘পভার্টি, গ্রোথ অ্যান্ড ইনইকুয়ালিটি ওভার দ্য নেক্সট ফিফটি ইয়ার্স’ প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানিয়েছে, পিছিয়ে থাকা দেশগুলো যদি টেকসই উচ্চতর প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পারে, তাহলে ২০৫০ সাল নাগাদ পৃথিবীতে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা আড়াই শতাংশেরও নিচে নেমে আসবে।
আশার কথা শুনিয়েছেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুনের বিশেষ উপদেষ্টা জেফরি ডি. শ্যাস। নিউ ইয়র্ক টাইমসে লেখা এক নিবন্ধে তিনি বলেছেন, ‘দারিদ্র্য দূর করার জন্য নতুন ধরনের “মিশ্র পুঁজিবাদ” দরকার। এর মধ্যে থাকবে রোগ নিয়ন্ত্রণ, জনশিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়ন।’ আফ্রিকার কিছু দেশের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেখানে ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ এবং মোবাইল ফোনের বিকাশের কারণে দারিদ্র্য দূর হয়েছে অনেকটাই।’
জেফরি ডি শ্যাসের কথানুযায়ী অনেক দেশই হয়তো এখন মিশ্র পুঁজিবাদের পথে হাঁটবে। তাতে দূর হবে দারিদ্র্য। পূরণ হবে বিল গেটসের দারিদ্র্যমুক্ত পৃথিবীর স্বপ্ন। মন্দ কি!
সূত্র: বিশ্ব ব্যাংকের ওয়েবসাইট, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম, ওয়ার্ল্ড ভিশন, অক্সফাম, টাইম ম্যাগাজিন, সিএনবিসি, বিজনেস ইনসাইডার, ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউ, ফান্ডস সোসাইটি ও পিটিআই
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
১৯ ঘণ্টা আগেপরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
৫ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় মোটামুটি সারা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। বাদ যায়নি তাঁর প্রতিবেশী দেশগুলো। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই জয়ের বড় প্রভাব পড়বে প্রতিবেশী দেশগুলোয়।
৭ দিন আগেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর বিশ্বের অনেক অঞ্চলে নতুন উদ্বেগ ও প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সতর্কভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, ইউক্রেন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, আর ইসরায়েল অনেকটা খুশিতে উদ্বেলিত। তবে বিশেষ নজরে আছে পারস্য উপসাগরীয় তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো।
৮ দিন আগে