অনলাইন ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭ তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। এটি তাঁর দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউস যাত্রা। ট্রাম্পের ব্যক্তিত্ব, তাঁর রাজনৈতিক বোঝাপড়াসহ নানা কারণেই বিশ্বজুড়ে দেশগুলো এখন হিসাব কষছে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এই প্রেসিডেন্টের আমলে তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আসলে কেমন হবে। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোও এর বাইরে নয়।
ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হয়ে আসার বিষয়টি দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় দেশ ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা উভয়ই খুলে দিয়েছে। ভারতের যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার হলেও ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ নয়া দিল্লির জন্য বেশ কিছু সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসতে পারে। বিশেষ করে, বাণিজ্য, অভিবাসন, সামরিক সহযোগিতা এবং কূটনীতি—এই চারটি ক্ষেত্রে। ট্রাম্প ও মোদি পরস্পরকে একাধিকবার বন্ধু বলে সম্বোধন করলেও সামগ্রিকভাবে ট্রাম্পের নতুন মেয়াদে ভারত বেশ চ্যালেঞ্জের মুখেই পড়তে পারে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প আনুষ্ঠিকভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগেই তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মোদি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘অন্তরের অন্তস্তল থেকে অভিনন্দন’ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা এক টুইটে বলেছেন, ‘আসুন, একসঙ্গে আমাদের জনগণের জন্য কাজ করি এবং বিশ্বশান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধিকে এগিয়ে নিই।’
ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতিকে সহজভাবে উপস্থাপন করা হলে বলা যায়, এটি আমেরিকার স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেয় এবং আন্তর্জাতিক চুক্তিতে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা কমায়। প্রথম মেয়াদে, ট্রাম্প প্যারিস জলবায়ু চুক্তি এবং ইরানের পরমাণু চুক্তি সহ গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলো থেকে বেরিয়ে আসেন বা বিষয়বস্তু পরিবর্তন করেন। দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হলে, এ ধরনের নীতি অব্যাহত থাকলে ভারতসহ ঐতিহ্যগত মার্কিন মিত্র সম্পর্ক ও চুক্তিগুলোতে আবারও প্রভাব পড়তে পারে।
ট্রাম্পের নতুন প্রশাসন ভারত-মার্কিন বাণিজ্য সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারে। গত মাসে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ভারত বিদেশি পণ্য আমদানিকে সর্বোচ্চ শুল্ক আরোপ করে থাকে এবং তিনি বলেন, নির্বাচিত হলে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা ভারতীয় পণ্যেও ‘রেসিপ্রোকাল ট্যাক্স’ (পারস্পরিক সমানুপাতিক কর) চালু করা হবে।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমার পরিকল্পনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো, আমেরিকাকে অত্যন্ত ধনী করে তোলা এবং এর মূল কথা হচ্ছে সমান-সমান আচরণ। আমরা সাধারণত শুল্ক আদায় করি না। আমি সেই প্রক্রিয়া শুরু করেছি। চীন আমাদের পণ্যে ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, ব্রাজিল বড় ধরনের শুল্ক আরোপকারী, আর সব থেকে বড় শুল্কারোপকারী হলো ভারত।’
তিনি বলেন, ‘ভারত খুব বড় ধরনের শুল্ক আরোপকারী দেশ। আমাদের ভারতের সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে দেশটির নেতা মোদির সঙ্গে, তিনি একজন মহান নেতা। সত্যিই তিনি একজন মহান ব্যক্তি। তিনি দেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন, চমৎকার কাজ করছেন। কিন্তু তারাও বেশ বড় শুল্ক আদায় করে।’
ট্রাম্পের সম্ভাব্য এই শুল্কনীতি ভারতের আইটি, ওষুধ এবং টেক্সটাইল খাতে প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ এই খাতগুলো মার্কিন বাজারের ওপর নির্ভরশীল। অপরদিকে, চীন থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিচ্ছিন্ন হওয়ার জন্য ট্রাম্পের যে নীতি, তা ভারতের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলতে পারে। মার্কিন কোম্পানিগুলো যেহেতু তাদের সরবরাহ চেইন চীন থেকে সরিয়ে আনতে চায়, এর ফলে ভারত নিজেকে একটি উৎপাদন হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ পেতে পারে।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের কড়া অভিবাসন নীতিমালা, বিশেষ করে এইচ-১বি ভিসা নীতি ভারতীয় পেশাজীবীদের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে। তাঁর প্রথম শাসনামলে বিদেশি কর্মীদের বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন এবং বাড়তি নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা করেছিলেন। যা ভারতীয় আইটি পেশাজীবী এবং প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছিল। ট্রাম্পের নতুন প্রশাসন যদি আবার এই ধরনের পদক্ষেপ নেয়, তবে তা যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত ভারতীয় দক্ষ জনশক্তির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে এবং সেসব প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও প্রভাবিত করবে, যেগুলো ভারতীয় কর্মীদের ওপর নির্ভরশীল।
এই বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেছিলেন, ‘ট্রাম্পের সঙ্গে (ভারতের) বাণিজ্য এবং অভিবাসন নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে বেশ কঠিন দেনদরবার করতে হবে বলেই মনে হচ্ছে। তবে অন্যান্য অনেক বিষয়ে তিনি ভারত এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্কের কথা বলেছেন।’
ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সামরিক ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অন্যতম প্রধান ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে। জো বাইডেন প্রশাসনের অধীনে গুরুত্বপূর্ণ ও উদীয়মান প্রযুক্তি বিষয়ক উদ্যোগ এবং জেট ইঞ্জিন তৈরির জন্য জিই-হালের মতো প্রতিরক্ষা চুক্তিগুলো ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের প্রধান দিকগুলোর মধ্যে ছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্প ন্যাটো সম্পর্কে সাবধানী মনোভাব দেখিয়েছেন এবং পুনরায় ক্ষমতায় এলে তিনি সামরিক জোটগুলোর ক্ষেত্রে একই ধরনের অবস্থান নিতে পারেন। তবে, চীনের প্রভাব মোকাবিলায় ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা অব্যাহত থাকতে পারে।
ট্রাম্পের আগের প্রশাসনে কোয়াডের (যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার জোট) গুরুত্ব বাড়ানো হয়েছিল। এটি মূলত চীনের ভারসাম্য রক্ষার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়েছিল। ট্রাম্প আবারও ক্ষমতায় আসার পর ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়তে পারে, বিশেষ করে অস্ত্র বিক্রি, প্রযুক্তি স্থানান্তর ও যৌথ সামরিক মহড়ার ক্ষেত্রে।
সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমেও ট্রাম্পের ‘বল প্রয়োগের মাধ্যমে শান্তি’ নীতি ভারতের নিরাপত্তা লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে পারে। ভারত দীর্ঘদিন ধরে চাইছে, যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের প্রতি আরও দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করুক। বিশেষত, সীমান্ত এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র দৃঢ়ভাবে কথা বলুক—এমনটাই চায় নয়া দিল্লি।
ভারত ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোও ট্রাম্পের নতুন মেয়াদে তাদের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্ক কেমন হতে পারে সেই বিষয়টি নিয়ে নতুন করে মূল্যায়ন শুরু করেছে। ভারতের প্রতিবেশী পাকিস্তান ট্রাম্পের বিজয়ের প্রভাব নিয়ে বেশ উদ্বিগ্নই। কারণ, তাঁর আগের মেয়াদে পাকিস্তানে অধিকাংশ মার্কিন সহায়তা বাতিল করা হয়েছিল। ট্রাম্প আবারও ক্ষমতায় আসায় পাকিস্তানে শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বের সরকার চাপে পড়তে পারে। কারণ দেশটি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং বিশ্ব ব্যাংক থেকে ঋণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা হারানোর ঝুঁকিতে পড়ে গেছে। এ ছাড়া, পাকিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা তাও আরও কমে যেতে পারে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর মতে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব থাকলেও ট্রাম্পের সঙ্গে খুব একটা সখ্য তাঁর নেই। ট্রাম্প সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা এক পোস্টে বাংলাদেশের হিন্দুদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে, এই বিষয়টি সম্ভবত ওয়াশিংটন-ঢাকা সম্পর্ককে প্রভাবিত করবে না।
বাইডেন প্রশাসনের আমলে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ক্ষেত্রে ওয়াশিংটন এক আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েছিল। যেখানে প্রতিটি দেশ—নেপাল, ভুটান, এবং মালদ্বীপকে আলাদা আলাদাভাবে বিবেচনা করা হয়েছে। ট্রাম্পের আমলেও এমনটা বহাল থাকতে পারে। তবে ট্রাম্পের প্রশাসনের কাছে এই দেশগুলোর গুরুত্ব কিঞ্চিৎ কমে যেতে পারে। ফলে এই দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো হয়তো ইউএসের পদক্ষেপ নিয়ে চিন্তিত নয়, বরং নতুন প্রশাসন দেশগুলোর দিকে কম দৃষ্টি দেবে এই আশঙ্কায় আছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের নতুন আমলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কিছুটা হলেও পরিবর্তন দেখা যেতে পারে। তিনি সাধারণত, যে সব দেশের সরকারকে সমস্যাজনক মনে করেন, তাদের সমালোচনায় মুখর থাকেন। মানবাধিকার ইস্যুতে তাঁর অবস্থান, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক প্রভাবিত করতে পারে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, তাঁর প্রশাসন আঞ্চলিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নেতৃত্বের সঙ্গে একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে পারে।
এমনটা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এই বিষয়ে মার্কিন থিংকট্যাংক উইলসন সেন্টারে সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি বা কৌশল এখন এশিয়ায় মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির মূল চালিকাশক্তি। ট্রাম্প প্রশাসনের আমলেই এই কৌশলের উদ্ভব হয়। বাইডেন প্রশাসন কিছুটা পরিবর্তনসহ এই কৌশলটিকে দৃঢ়ভাবে গ্রহণ করে এবং বেশির ভাগ দক্ষিণ এশীয় দেশের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক শক্তিশালী করার চেষ্টা চালিয়েছে এবং অঞ্চলে চীনের প্রভাব বাড়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।’
কুগেলম্যান আরও বলেন, ‘ট্রাম্পের প্রশাসন পরাশক্তি দেশগুলোর মধ্যকার প্রতিযোগিতার বিষয়টি আমলে নিয়েই পররাষ্ট্রনীতিতে অগ্রাধিকার দেবে। এর অর্থ হলো, ওয়াশিংটনের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল বা এর পেছনের লক্ষ্যগুলো অপরিবর্তিত থাকবে। তবে, ট্রাম্প বিজয়ী হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কগুলোয় কিছু পরিবর্তন আসবে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি কম গুরুত্ব পেতে পারে তাঁর নতুন প্রশাসনে।’
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক কেমন হতে পারে সে বিষয়ে দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ কুগেলম্যান বলেন, ‘ট্রাম্প বিজয়ী হলে দক্ষিণ এশিয়ার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গিতে, বিশেষ করে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন আসবে। ট্রাম্প হয়তো বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান সম্পর্কের যে, মৌলিক জায়গা—বাংলাদেশে উন্নয়ন ও শাসন ব্যবস্থা সংস্কারকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে—সেগুলো পুনর্নির্ধারণ করতে পারেন।’
দক্ষিণ এশিয়ার অপর দেশ, আফগানিস্তান বিষয়েও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হতে পারে ট্রাম্পের নতুন মেয়াদে। তিনি বাইডেনের তুলনায় আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে আরও আগ্রহী হতে পারেন, যদিও তালেবানের মানবাধিকার ইতিহাস খুবই ন্যক্কারজনক। ট্রাম্পের কঠোর শুল্কনীতি দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে, কারণ এই অঞ্চলটি যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের একটি শীর্ষ রপ্তানি গন্তব্য হিসেবে বিবেচনা করে।
তথ্যসূত্র: আল–জাজিরা, ফরেন পলিসি, দ্য হিন্দু ও ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭ তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। এটি তাঁর দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউস যাত্রা। ট্রাম্পের ব্যক্তিত্ব, তাঁর রাজনৈতিক বোঝাপড়াসহ নানা কারণেই বিশ্বজুড়ে দেশগুলো এখন হিসাব কষছে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এই প্রেসিডেন্টের আমলে তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আসলে কেমন হবে। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোও এর বাইরে নয়।
ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হয়ে আসার বিষয়টি দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় দেশ ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা উভয়ই খুলে দিয়েছে। ভারতের যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার হলেও ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ নয়া দিল্লির জন্য বেশ কিছু সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসতে পারে। বিশেষ করে, বাণিজ্য, অভিবাসন, সামরিক সহযোগিতা এবং কূটনীতি—এই চারটি ক্ষেত্রে। ট্রাম্প ও মোদি পরস্পরকে একাধিকবার বন্ধু বলে সম্বোধন করলেও সামগ্রিকভাবে ট্রাম্পের নতুন মেয়াদে ভারত বেশ চ্যালেঞ্জের মুখেই পড়তে পারে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প আনুষ্ঠিকভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগেই তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মোদি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘অন্তরের অন্তস্তল থেকে অভিনন্দন’ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা এক টুইটে বলেছেন, ‘আসুন, একসঙ্গে আমাদের জনগণের জন্য কাজ করি এবং বিশ্বশান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধিকে এগিয়ে নিই।’
ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতিকে সহজভাবে উপস্থাপন করা হলে বলা যায়, এটি আমেরিকার স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেয় এবং আন্তর্জাতিক চুক্তিতে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা কমায়। প্রথম মেয়াদে, ট্রাম্প প্যারিস জলবায়ু চুক্তি এবং ইরানের পরমাণু চুক্তি সহ গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলো থেকে বেরিয়ে আসেন বা বিষয়বস্তু পরিবর্তন করেন। দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হলে, এ ধরনের নীতি অব্যাহত থাকলে ভারতসহ ঐতিহ্যগত মার্কিন মিত্র সম্পর্ক ও চুক্তিগুলোতে আবারও প্রভাব পড়তে পারে।
ট্রাম্পের নতুন প্রশাসন ভারত-মার্কিন বাণিজ্য সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারে। গত মাসে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ভারত বিদেশি পণ্য আমদানিকে সর্বোচ্চ শুল্ক আরোপ করে থাকে এবং তিনি বলেন, নির্বাচিত হলে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা ভারতীয় পণ্যেও ‘রেসিপ্রোকাল ট্যাক্স’ (পারস্পরিক সমানুপাতিক কর) চালু করা হবে।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমার পরিকল্পনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো, আমেরিকাকে অত্যন্ত ধনী করে তোলা এবং এর মূল কথা হচ্ছে সমান-সমান আচরণ। আমরা সাধারণত শুল্ক আদায় করি না। আমি সেই প্রক্রিয়া শুরু করেছি। চীন আমাদের পণ্যে ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, ব্রাজিল বড় ধরনের শুল্ক আরোপকারী, আর সব থেকে বড় শুল্কারোপকারী হলো ভারত।’
তিনি বলেন, ‘ভারত খুব বড় ধরনের শুল্ক আরোপকারী দেশ। আমাদের ভারতের সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে দেশটির নেতা মোদির সঙ্গে, তিনি একজন মহান নেতা। সত্যিই তিনি একজন মহান ব্যক্তি। তিনি দেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন, চমৎকার কাজ করছেন। কিন্তু তারাও বেশ বড় শুল্ক আদায় করে।’
ট্রাম্পের সম্ভাব্য এই শুল্কনীতি ভারতের আইটি, ওষুধ এবং টেক্সটাইল খাতে প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ এই খাতগুলো মার্কিন বাজারের ওপর নির্ভরশীল। অপরদিকে, চীন থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিচ্ছিন্ন হওয়ার জন্য ট্রাম্পের যে নীতি, তা ভারতের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলতে পারে। মার্কিন কোম্পানিগুলো যেহেতু তাদের সরবরাহ চেইন চীন থেকে সরিয়ে আনতে চায়, এর ফলে ভারত নিজেকে একটি উৎপাদন হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ পেতে পারে।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের কড়া অভিবাসন নীতিমালা, বিশেষ করে এইচ-১বি ভিসা নীতি ভারতীয় পেশাজীবীদের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে। তাঁর প্রথম শাসনামলে বিদেশি কর্মীদের বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন এবং বাড়তি নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা করেছিলেন। যা ভারতীয় আইটি পেশাজীবী এবং প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছিল। ট্রাম্পের নতুন প্রশাসন যদি আবার এই ধরনের পদক্ষেপ নেয়, তবে তা যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত ভারতীয় দক্ষ জনশক্তির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে এবং সেসব প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও প্রভাবিত করবে, যেগুলো ভারতীয় কর্মীদের ওপর নির্ভরশীল।
এই বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেছিলেন, ‘ট্রাম্পের সঙ্গে (ভারতের) বাণিজ্য এবং অভিবাসন নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে বেশ কঠিন দেনদরবার করতে হবে বলেই মনে হচ্ছে। তবে অন্যান্য অনেক বিষয়ে তিনি ভারত এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্কের কথা বলেছেন।’
ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সামরিক ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অন্যতম প্রধান ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে। জো বাইডেন প্রশাসনের অধীনে গুরুত্বপূর্ণ ও উদীয়মান প্রযুক্তি বিষয়ক উদ্যোগ এবং জেট ইঞ্জিন তৈরির জন্য জিই-হালের মতো প্রতিরক্ষা চুক্তিগুলো ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের প্রধান দিকগুলোর মধ্যে ছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্প ন্যাটো সম্পর্কে সাবধানী মনোভাব দেখিয়েছেন এবং পুনরায় ক্ষমতায় এলে তিনি সামরিক জোটগুলোর ক্ষেত্রে একই ধরনের অবস্থান নিতে পারেন। তবে, চীনের প্রভাব মোকাবিলায় ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা অব্যাহত থাকতে পারে।
ট্রাম্পের আগের প্রশাসনে কোয়াডের (যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার জোট) গুরুত্ব বাড়ানো হয়েছিল। এটি মূলত চীনের ভারসাম্য রক্ষার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়েছিল। ট্রাম্প আবারও ক্ষমতায় আসার পর ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়তে পারে, বিশেষ করে অস্ত্র বিক্রি, প্রযুক্তি স্থানান্তর ও যৌথ সামরিক মহড়ার ক্ষেত্রে।
সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমেও ট্রাম্পের ‘বল প্রয়োগের মাধ্যমে শান্তি’ নীতি ভারতের নিরাপত্তা লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে পারে। ভারত দীর্ঘদিন ধরে চাইছে, যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের প্রতি আরও দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করুক। বিশেষত, সীমান্ত এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র দৃঢ়ভাবে কথা বলুক—এমনটাই চায় নয়া দিল্লি।
ভারত ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোও ট্রাম্পের নতুন মেয়াদে তাদের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্ক কেমন হতে পারে সেই বিষয়টি নিয়ে নতুন করে মূল্যায়ন শুরু করেছে। ভারতের প্রতিবেশী পাকিস্তান ট্রাম্পের বিজয়ের প্রভাব নিয়ে বেশ উদ্বিগ্নই। কারণ, তাঁর আগের মেয়াদে পাকিস্তানে অধিকাংশ মার্কিন সহায়তা বাতিল করা হয়েছিল। ট্রাম্প আবারও ক্ষমতায় আসায় পাকিস্তানে শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বের সরকার চাপে পড়তে পারে। কারণ দেশটি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং বিশ্ব ব্যাংক থেকে ঋণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা হারানোর ঝুঁকিতে পড়ে গেছে। এ ছাড়া, পাকিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা তাও আরও কমে যেতে পারে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর মতে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব থাকলেও ট্রাম্পের সঙ্গে খুব একটা সখ্য তাঁর নেই। ট্রাম্প সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা এক পোস্টে বাংলাদেশের হিন্দুদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে, এই বিষয়টি সম্ভবত ওয়াশিংটন-ঢাকা সম্পর্ককে প্রভাবিত করবে না।
বাইডেন প্রশাসনের আমলে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ক্ষেত্রে ওয়াশিংটন এক আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েছিল। যেখানে প্রতিটি দেশ—নেপাল, ভুটান, এবং মালদ্বীপকে আলাদা আলাদাভাবে বিবেচনা করা হয়েছে। ট্রাম্পের আমলেও এমনটা বহাল থাকতে পারে। তবে ট্রাম্পের প্রশাসনের কাছে এই দেশগুলোর গুরুত্ব কিঞ্চিৎ কমে যেতে পারে। ফলে এই দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো হয়তো ইউএসের পদক্ষেপ নিয়ে চিন্তিত নয়, বরং নতুন প্রশাসন দেশগুলোর দিকে কম দৃষ্টি দেবে এই আশঙ্কায় আছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের নতুন আমলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কিছুটা হলেও পরিবর্তন দেখা যেতে পারে। তিনি সাধারণত, যে সব দেশের সরকারকে সমস্যাজনক মনে করেন, তাদের সমালোচনায় মুখর থাকেন। মানবাধিকার ইস্যুতে তাঁর অবস্থান, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক প্রভাবিত করতে পারে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, তাঁর প্রশাসন আঞ্চলিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নেতৃত্বের সঙ্গে একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে পারে।
এমনটা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এই বিষয়ে মার্কিন থিংকট্যাংক উইলসন সেন্টারে সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি বা কৌশল এখন এশিয়ায় মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির মূল চালিকাশক্তি। ট্রাম্প প্রশাসনের আমলেই এই কৌশলের উদ্ভব হয়। বাইডেন প্রশাসন কিছুটা পরিবর্তনসহ এই কৌশলটিকে দৃঢ়ভাবে গ্রহণ করে এবং বেশির ভাগ দক্ষিণ এশীয় দেশের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক শক্তিশালী করার চেষ্টা চালিয়েছে এবং অঞ্চলে চীনের প্রভাব বাড়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।’
কুগেলম্যান আরও বলেন, ‘ট্রাম্পের প্রশাসন পরাশক্তি দেশগুলোর মধ্যকার প্রতিযোগিতার বিষয়টি আমলে নিয়েই পররাষ্ট্রনীতিতে অগ্রাধিকার দেবে। এর অর্থ হলো, ওয়াশিংটনের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল বা এর পেছনের লক্ষ্যগুলো অপরিবর্তিত থাকবে। তবে, ট্রাম্প বিজয়ী হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কগুলোয় কিছু পরিবর্তন আসবে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি কম গুরুত্ব পেতে পারে তাঁর নতুন প্রশাসনে।’
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক কেমন হতে পারে সে বিষয়ে দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ কুগেলম্যান বলেন, ‘ট্রাম্প বিজয়ী হলে দক্ষিণ এশিয়ার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গিতে, বিশেষ করে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন আসবে। ট্রাম্প হয়তো বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান সম্পর্কের যে, মৌলিক জায়গা—বাংলাদেশে উন্নয়ন ও শাসন ব্যবস্থা সংস্কারকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে—সেগুলো পুনর্নির্ধারণ করতে পারেন।’
দক্ষিণ এশিয়ার অপর দেশ, আফগানিস্তান বিষয়েও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হতে পারে ট্রাম্পের নতুন মেয়াদে। তিনি বাইডেনের তুলনায় আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে আরও আগ্রহী হতে পারেন, যদিও তালেবানের মানবাধিকার ইতিহাস খুবই ন্যক্কারজনক। ট্রাম্পের কঠোর শুল্কনীতি দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে, কারণ এই অঞ্চলটি যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের একটি শীর্ষ রপ্তানি গন্তব্য হিসেবে বিবেচনা করে।
তথ্যসূত্র: আল–জাজিরা, ফরেন পলিসি, দ্য হিন্দু ও ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
১৩ ঘণ্টা আগেপরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
৫ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় মোটামুটি সারা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। বাদ যায়নি তাঁর প্রতিবেশী দেশগুলো। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই জয়ের বড় প্রভাব পড়বে প্রতিবেশী দেশগুলোয়।
৭ দিন আগেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর বিশ্বের অনেক অঞ্চলে নতুন উদ্বেগ ও প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সতর্কভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, ইউক্রেন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, আর ইসরায়েল অনেকটা খুশিতে উদ্বেলিত। তবে বিশেষ নজরে আছে পারস্য উপসাগরীয় তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো।
৭ দিন আগে