মারুফ ইসলাম
পুতিন এখন ইউক্রেন নিয়ে খেলায় মেতে আছেন, তাতে সন্দেহ নেই। তাই বলে কি অন্য কোথাও তাঁর নজর নেই? আলবৎ আছে। আপনি যদি গভীরভাবে তলিয়ে ভাবেন, তাহলে দেখবেন, আফ্রিকা অঞ্চলে এক গভীর পরিকল্পনা নিয়ে খেলায় মেতেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ‘পুতিনের আফ্রিকা নীতি’ নিয়ে এরই মধ্যে সরব হয়েছে বিশ্লেষকেরা।
এই নীতিটা কেমন? তা জানার জন্য আফ্রিকা-রাশিয়া-ইউক্রেন প্রসঙ্গগুলোতে নজর বোলাতে হবে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে পুতিনের বাহিনী। তারপর ২ মার্চ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপিত হয়। সেখানে বিশ্বের ১১৪টি দেশ পুতিনের আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে ভোট দিয়েছে। এই ভোট দেওয়ার মাধ্যমে তারা এটি নিশ্চিত করেছে যে, বিশ্বের যেকোনো রাষ্ট্রের আঞ্চলিক অখণ্ডতা ব্যাহত করার চেষ্টা বা তার রাজনৈতিক স্বাধীনতা হরণের চেষ্টা জাতিসংঘ সনদের উদ্দেশ্য ও নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
কিন্তু পুতিনের এ বর্বরতার বিরুদ্ধে আফ্রিকার দেশগুলোর অবস্থান কী? এ অঞ্চলের ১৭টি দেশ নিন্দা প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত ছিল। আর আটটি দেশ ভোটাভুটিতে অংশই নেয়নি। শুধু একটি দেশ—ইরিত্রিয়া, যেটি একনায়কতান্ত্রিক দেশ হিসেবে পরিচিত, সেটি সরাসরি এ নিন্দা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে।
আফ্রিকার দেশগুলোর এই অবস্থান মাথায় রেখে পুতিনের ভাবনার দিকে নজর দিলে দেখা যাবে, তিনি গোটা বিশ্ব ব্যবস্থাকেই দুর্বল করার চেষ্টা করছেন। ক্রিমিয়া ও উত্তর জর্জিয়ার কিছু অংশ এবং ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চলের পূর্বাঞ্চল দখল করে ফেলেছে পুতিনের বাহিনী। তিনি তাঁর দখলদারি আস্তে আস্তে বাড়াচ্ছেন।
এ সম্পর্কিত এক বিশ্লেষণে মার্কিন পত্রিকা ফরেন পলিসি বলছে, পুতিনের সাম্রাজ্য বিস্তারের এই উচ্চাকাঙ্ক্ষা আফ্রিকাকে বড় ধরনের নেতিবাচক পরিণতির দিকে নিয়ে যাবে। কারণ, এ ধরনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতার ধারণাগুলোকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে। রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে হিংসাত্মক প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে বিশ্রীভাবে উন্মুক্ত করে দেয়।
সুতরাং, ভেবে দেখার বিষয় হচ্ছে, পুতিনের আফ্রিকা নীতিটা কী? তা কি সত্যিই আফ্রিকার জন্য বিধ্বংসী হয়ে উঠবে?
পুতিনের নীতির প্রাথমিক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, প্রতিষ্ঠিত অলঙ্ঘনীয় সীমানাগুলোকে চ্যালেঞ্জ করা। আফ্রিকা মহাদেশে বর্তমানে প্রায় ১০০টি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সীমানা রয়েছে। এ সীমানাগুলোর বেশির ভাগই ঔপনিবেশিক সময়ে নির্বিচারে টানা হয়েছিল।
সীমানাগুলো আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের সরকারেরা দীর্ঘকাল ধরে শান্তিপূর্ণভাবে রক্ষা করে চলছিল। তারা আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিল। ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘অর্গানাইজেশন অব আফ্রিকান ইউনিটি’ সংস্থার সনদের মধ্যে এ নীতিগুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল। পরে ২০০১ সালে আফ্রিকান ইউনিয়নের সাংবিধানিক আইনে তা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে।
ঔপনিবেশিক স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে অনেক আফ্রিকান রাষ্ট্রের জন্মই হয়েছে মূলত ‘আত্মনিয়ন্ত্রণের’ প্রতিশ্রুতি থেকে। কিন্তু হাস্যকরভাবে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের মাধ্যমে সেই প্রতিশ্রুতিই আজ হুমকির মুখে পড়েছে। এরই মধ্যে আমরা আফ্রিকার কিছু অংশেও এ ধরনের ঘটনা ঘটতে দেখছি।
আফ্রিকান গ্রেট লেক অঞ্চল (বুরুন্ডি, গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ইথিওপিয়া, কেনিয়া, মালাউ, মোজাম্বিক, রুয়ান্ডা, জাম্বিয়া, তানজানিয়া ও উগান্ডা) দাঁড়িয়ে আছে ভঙ্গুর সীমান্ত নিয়ে। এদিকে কঙ্গো তার প্রতিবেশী রুয়ান্ডা ও উগান্ডার কর্তৃত্ববাদী নেতাদের শোষণের লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে।
রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামে ২০০০ সাল থেকে এবং উগান্ডার প্রেসিডেন্ট ইউওয়েরি মুসেভেনি ১৯৮৬ সাল থেকে ক্ষমতায় আছেন। তাঁরা তাঁদের সেনাবাহিনী ও তাঁদের মদদপুষ্ট বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে কঙ্গোর ভূখণ্ড দখল করতে, প্রাকৃতিক সম্পদ লুণ্ঠন করতে এবং নাগরিকদের হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এই তো গত বছরের অক্টোবরে কঙ্গোর সঙ্গে রুয়ান্ডার সৈন্যদের সংঘর্ষ হয়েছে। রুয়ান্ডা বেশ কয়েকটি গ্রাম দখল করেছে বলে অভিযোগ করেছে কঙ্গো। একই সঙ্গে কঙ্গোর সেনাবাহিনী বলেছে, পূর্ব কঙ্গোর বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে সক্রিয়ভাবে সমর্থন দিচ্ছে কাগামে সরকার—এমন প্রমাণ তারা পেয়েছে।
আফ্রিকার গ্রেট লেক অঞ্চলে পরিস্থিতি এখন এমন দাঁড়িয়েছে যে, সেখানে ভয়াবহ দ্বন্দ্ব-সংঘাত পুনরুজ্জীবিত হওয়ার আশঙ্কা চূড়া স্পর্শ করেছে। আর এই আশঙ্কার আগুনে ঘি ঢালছেন স্বয়ং পুতিন।
কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, মস্কো আফ্রিকার জন্য এক ‘নতুন নীতি’ গ্রহণ করেছে। এ মহাদেশজুড়ে তারা নিজেদের রাজনীতি, শাসন ও অর্থনৈতিক পতাকা ওড়াতে চায় এবং তা অনেকটা জবরদখল নীতির পথ ধরেই। এ জন্য রাশিয়া বারবার এ অঞ্চলের জনবিচ্ছিন্ন ও কর্তৃত্ববাদী নেতাদের সমর্থন দিয়েছে। আর রাশিয়ার সমর্থনপুষ্ট নির্ভার হাতখানা নিজের কাঁধে পেয়ে ভয়ংকর কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠেছে আফ্রিকার দেশগুলোর নেতারা, বিশেষ করে লিবিয়া, মালি ও সুদান।
পুতিন এ অঞ্চলে জবাবদিহিহীন ভাড়াটে গোষ্ঠী মোতায়েন করে বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চালাচ্ছেন, নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করছেন এবং অহরহ অস্ত্রচুক্তি করছেন। আর এসবের মাধ্যমে পুরো আফ্রিকাকে অস্থিতিশীল করে তুলছেন। রাশিয়ার ছত্রচ্ছায়ায় সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন এখন নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আফ্রিকার অনেক দেশে এখন অসাংবিধানিক সরকার ক্ষমতায়। তাদের প্রকাশ্যে এবং গোপনে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। আফ্রিকায় একনায়কতান্ত্রিক নেতাদের উত্থানের স্রোত এবং তাদের মেয়াদ বৃদ্ধির পেছনে দক্ষ খেলুড়ে হিসেবে কাজ করছে মস্কো। বলা বাহুল্য, সমগ্র আফ্রিকাকে স্বৈরাচারী ছাঁচে নির্মাণ করতে চাচ্ছেন পুতিন। আর সেই লক্ষ্যেই তিনি তাঁর ‘আফ্রিকা নীতি’ তৈরি করেছেন।
পুতিনের আফ্রিকা নীতি পরিপূর্ণভাবে কার্যকর হলে ওই অঞ্চলের জনসাধারণের কপালে সীমাহীন নিপীড়ন নেমে আসবে, তা আগে থেকে অনুমান করাই যায়। কারণ আফ্রিকায় চলমান ১৬টি অভ্যন্তরীণ সংঘাতের প্রধান শিকড় গেঁড়ে আছে এসব কর্তৃত্ববাদী শাসনের ভেতরে। বিপরীতে আফ্রিকায় যে কয়েকটি হাতেগোনা দেশে গণতন্ত্র আছে, সেসব দেশে তাকিয়ে দেখুন, কোনো দ্বন্দ্ব-সংঘাত নেই। সুতরাং আরও কর্তৃত্ববাদ আরও সংঘাতের জন্ম দেবে বলে ধারণা করা যায়।
আফ্রিকার ৭৫ শতাংশ মানুষ গণতন্ত্র পছন্দ করে। তাদের ওপর চেপে বসেছে স্বৈরতান্ত্রিক সরকার। এসব একনায়ক সরকার গণতন্ত্রকামী মানুষের ওপর ক্রমবর্ধমান হারে দমন, পীড়ন, নির্যাতন চালাবে তাতে সন্দেহ নেই। এতে আফ্রিকার অভ্যন্তরে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা বাড়বে। বাড়বে নিজ দেশ ছেড়ে শরণার্থী হওয়ার সংখ্যা।
আফ্রিকান সেন্টারের তথ্যমতে, পুতিন লিবিয়াকে ২০১৯ সাল থেকে স্নাইপার, মিগ-২৯, এসইউ-২৪ ফাইটার জেট, এসএ-২২ সারফেস টু ক্ষেপণাস্ত্র, বিমানবিধ্বংসী সরঞ্জাম ও শত শত উড়োজাহাজ দিয়ে সহায়তা করে আসছেন। বিনিময়ে কী ফায়দা তুলে নিচ্ছেন পুতিন? পূর্ব লিবিয়ার তেলক্ষেত্র থেকে রাজস্ব ও পূর্ব ভূমধ্যসাগরে নৌসুবিধা নিচ্ছে রাশিয়া।
পুতিনের আফ্রিকা নীতির মধ্যে আরও রয়েছে—বৈধ সরকারগুলোকে কোণঠাসা করে রাখা, সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলগুলোতে বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চালিয়ে সমাজকে বিভক্ত করে রাখা, বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর অসাংবিধানিক দাবিগুলোকে সমর্থন দিয়ে যাওয়া ইত্যাদি। আফ্রিকার অন্তত আটজন নেতার সঙ্গে হাত মিলিয়ে পুতিন এসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।
সুদানের স্বৈরশাসক ওমর আল বশিরকে দীর্ঘদিন ধরে সমর্থন দিয়ে গেছে মস্কো। সেখানে সুদানের সামরিক বাহিনীকে সমর্থন দিতে গিয়ে নিজেদের সেনাদের যুক্ত করেছে রাশিয়া। বিনিময়ে পশ্চিম সুদানের সোনার খনিগুলোতে অবাধ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করেছেন মহামান্য পুতিন।
তারপর পুতিন নজর দিয়েছেন মোজাম্বিকের দিকে। দেশটির উত্তরে ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠীর উত্থান ঘটেছে। সুতরাং তাদের মোকাবিলা করা দরকার—এই অজুহাতে রুশ সেনাসমর্থিত ওয়াগনার গ্রুপকে নিযুক্ত করেছে রাশিয়া। শুধুই কি জঙ্গি মোকাবিলা করাই উদ্দেশ্য? মনে হয় না। আসলে এ অঞ্চলের গ্যাস খনির দিকে নজর পড়েছে পুতিনের।
আফ্রিকার আরেক দেশ মালিকে কতটা কবজা করেছেন পুতিন, তা একটি ঘটনার দিকে নজর দিলেই স্পষ্ট হবে। ঘটনা ২০২০ সালের ১৮ আগস্টের। ওই দিন সেনা অভ্যুত্থানের পর খুশিতে রাস্তায় নেমে আসেন অনেক মানুষ। তাঁদের অনেকের হাতে রাশিয়ার পতাকা ও পুতিনের ছবি দেখা গেছে। এ থেকেই বোঝা যায়, পুতিন সেখানে কতটা প্রভাব বিস্তার করেছেন।
নানা কারণেই আফ্রিকাকে নিজের কবজায় রাখতে চান পুতিন। এর একটি বড় কারণ ‘অস্ত্র ব্যবসা’। এখন পর্যন্ত আফ্রিকার অস্ত্রের বাজারের ৪৯ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে মস্কো। রাশিয়ার কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র কেনে আলজেরিয়া, অ্যাঙ্গোলা, মিসর, মরক্কো, নাইজেরিয়া, সুদান, সেনেগাল ও জাম্বিয়া।
পুতিন চান দক্ষিণ ভূমধ্যসাগর এবং লোহিত সাগরে তাঁর প্রভাব বিস্তার করতে। একই সঙ্গে চান, এ অঞ্চলে ন্যাটোকে চাপের মধ্যে রাখতে। নিজের শক্তি প্রদর্শন এবং এ অঞ্চলকে পশ্চিমা প্রভাবমুক্ত করে নিজের কবজায় আনাই পুতিনের অদম্য ইচ্ছা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এসব ইচ্ছা পূরণ করতে পুতিন ব্যবহার করছেন আলজেরিয়া, অ্যাঙ্গোলা, বুরুন্ডি, গিনি, মাদাগাস্কার, মোজাম্বিক, দক্ষিণ সুদান, উগান্ডা ও জিম্বাবুয়ের পুতুল সরকারকে।
বিশ্লেষকেরা মনে করেন, আরও দীর্ঘকাল আফ্রিকা পুতিনের এসব খায়েশ পূরণ করে যাবে। কারণ, আফ্রিকার সঙ্গে রাশিয়ার রয়েছে ঐতিহাসিক সম্পর্ক—সেই সোভিয়েত ইউনিয়নের সময় থেকে।
রাশিয়া ইউক্রেন সংকট সম্পর্কিত সংবাদ পেতে - এখানে ক্লিক করুন
অ্যাঙ্গোলার রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এন কুলুম্বু বলেছেন, ‘মস্কোর সঙ্গে ঐতিহাসিক বন্ধুত্বের কথা মাথায় রেখেই অ্যাঙ্গোলা, মোজাম্বিক, জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়ার মতো দেশগুলো জাতিসংঘের ইউক্রেনের প্রস্তাবে ভোটদান থেকে বিরত থেকেছে।’
সূত্র: ফরেন পলিসি, আফ্রিকা সেন্টার, দ্য কনভারসেশন ও ডয়চে ভেলে
বিশ্লেষণ সম্পর্কিত পড়ুন:
পুতিন এখন ইউক্রেন নিয়ে খেলায় মেতে আছেন, তাতে সন্দেহ নেই। তাই বলে কি অন্য কোথাও তাঁর নজর নেই? আলবৎ আছে। আপনি যদি গভীরভাবে তলিয়ে ভাবেন, তাহলে দেখবেন, আফ্রিকা অঞ্চলে এক গভীর পরিকল্পনা নিয়ে খেলায় মেতেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ‘পুতিনের আফ্রিকা নীতি’ নিয়ে এরই মধ্যে সরব হয়েছে বিশ্লেষকেরা।
এই নীতিটা কেমন? তা জানার জন্য আফ্রিকা-রাশিয়া-ইউক্রেন প্রসঙ্গগুলোতে নজর বোলাতে হবে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে পুতিনের বাহিনী। তারপর ২ মার্চ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপিত হয়। সেখানে বিশ্বের ১১৪টি দেশ পুতিনের আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে ভোট দিয়েছে। এই ভোট দেওয়ার মাধ্যমে তারা এটি নিশ্চিত করেছে যে, বিশ্বের যেকোনো রাষ্ট্রের আঞ্চলিক অখণ্ডতা ব্যাহত করার চেষ্টা বা তার রাজনৈতিক স্বাধীনতা হরণের চেষ্টা জাতিসংঘ সনদের উদ্দেশ্য ও নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
কিন্তু পুতিনের এ বর্বরতার বিরুদ্ধে আফ্রিকার দেশগুলোর অবস্থান কী? এ অঞ্চলের ১৭টি দেশ নিন্দা প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত ছিল। আর আটটি দেশ ভোটাভুটিতে অংশই নেয়নি। শুধু একটি দেশ—ইরিত্রিয়া, যেটি একনায়কতান্ত্রিক দেশ হিসেবে পরিচিত, সেটি সরাসরি এ নিন্দা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে।
আফ্রিকার দেশগুলোর এই অবস্থান মাথায় রেখে পুতিনের ভাবনার দিকে নজর দিলে দেখা যাবে, তিনি গোটা বিশ্ব ব্যবস্থাকেই দুর্বল করার চেষ্টা করছেন। ক্রিমিয়া ও উত্তর জর্জিয়ার কিছু অংশ এবং ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চলের পূর্বাঞ্চল দখল করে ফেলেছে পুতিনের বাহিনী। তিনি তাঁর দখলদারি আস্তে আস্তে বাড়াচ্ছেন।
এ সম্পর্কিত এক বিশ্লেষণে মার্কিন পত্রিকা ফরেন পলিসি বলছে, পুতিনের সাম্রাজ্য বিস্তারের এই উচ্চাকাঙ্ক্ষা আফ্রিকাকে বড় ধরনের নেতিবাচক পরিণতির দিকে নিয়ে যাবে। কারণ, এ ধরনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতার ধারণাগুলোকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে। রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে হিংসাত্মক প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে বিশ্রীভাবে উন্মুক্ত করে দেয়।
সুতরাং, ভেবে দেখার বিষয় হচ্ছে, পুতিনের আফ্রিকা নীতিটা কী? তা কি সত্যিই আফ্রিকার জন্য বিধ্বংসী হয়ে উঠবে?
পুতিনের নীতির প্রাথমিক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, প্রতিষ্ঠিত অলঙ্ঘনীয় সীমানাগুলোকে চ্যালেঞ্জ করা। আফ্রিকা মহাদেশে বর্তমানে প্রায় ১০০টি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সীমানা রয়েছে। এ সীমানাগুলোর বেশির ভাগই ঔপনিবেশিক সময়ে নির্বিচারে টানা হয়েছিল।
সীমানাগুলো আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের সরকারেরা দীর্ঘকাল ধরে শান্তিপূর্ণভাবে রক্ষা করে চলছিল। তারা আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিল। ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘অর্গানাইজেশন অব আফ্রিকান ইউনিটি’ সংস্থার সনদের মধ্যে এ নীতিগুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল। পরে ২০০১ সালে আফ্রিকান ইউনিয়নের সাংবিধানিক আইনে তা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে।
ঔপনিবেশিক স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে অনেক আফ্রিকান রাষ্ট্রের জন্মই হয়েছে মূলত ‘আত্মনিয়ন্ত্রণের’ প্রতিশ্রুতি থেকে। কিন্তু হাস্যকরভাবে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের মাধ্যমে সেই প্রতিশ্রুতিই আজ হুমকির মুখে পড়েছে। এরই মধ্যে আমরা আফ্রিকার কিছু অংশেও এ ধরনের ঘটনা ঘটতে দেখছি।
আফ্রিকান গ্রেট লেক অঞ্চল (বুরুন্ডি, গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ইথিওপিয়া, কেনিয়া, মালাউ, মোজাম্বিক, রুয়ান্ডা, জাম্বিয়া, তানজানিয়া ও উগান্ডা) দাঁড়িয়ে আছে ভঙ্গুর সীমান্ত নিয়ে। এদিকে কঙ্গো তার প্রতিবেশী রুয়ান্ডা ও উগান্ডার কর্তৃত্ববাদী নেতাদের শোষণের লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে।
রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামে ২০০০ সাল থেকে এবং উগান্ডার প্রেসিডেন্ট ইউওয়েরি মুসেভেনি ১৯৮৬ সাল থেকে ক্ষমতায় আছেন। তাঁরা তাঁদের সেনাবাহিনী ও তাঁদের মদদপুষ্ট বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে কঙ্গোর ভূখণ্ড দখল করতে, প্রাকৃতিক সম্পদ লুণ্ঠন করতে এবং নাগরিকদের হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এই তো গত বছরের অক্টোবরে কঙ্গোর সঙ্গে রুয়ান্ডার সৈন্যদের সংঘর্ষ হয়েছে। রুয়ান্ডা বেশ কয়েকটি গ্রাম দখল করেছে বলে অভিযোগ করেছে কঙ্গো। একই সঙ্গে কঙ্গোর সেনাবাহিনী বলেছে, পূর্ব কঙ্গোর বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে সক্রিয়ভাবে সমর্থন দিচ্ছে কাগামে সরকার—এমন প্রমাণ তারা পেয়েছে।
আফ্রিকার গ্রেট লেক অঞ্চলে পরিস্থিতি এখন এমন দাঁড়িয়েছে যে, সেখানে ভয়াবহ দ্বন্দ্ব-সংঘাত পুনরুজ্জীবিত হওয়ার আশঙ্কা চূড়া স্পর্শ করেছে। আর এই আশঙ্কার আগুনে ঘি ঢালছেন স্বয়ং পুতিন।
কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, মস্কো আফ্রিকার জন্য এক ‘নতুন নীতি’ গ্রহণ করেছে। এ মহাদেশজুড়ে তারা নিজেদের রাজনীতি, শাসন ও অর্থনৈতিক পতাকা ওড়াতে চায় এবং তা অনেকটা জবরদখল নীতির পথ ধরেই। এ জন্য রাশিয়া বারবার এ অঞ্চলের জনবিচ্ছিন্ন ও কর্তৃত্ববাদী নেতাদের সমর্থন দিয়েছে। আর রাশিয়ার সমর্থনপুষ্ট নির্ভার হাতখানা নিজের কাঁধে পেয়ে ভয়ংকর কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠেছে আফ্রিকার দেশগুলোর নেতারা, বিশেষ করে লিবিয়া, মালি ও সুদান।
পুতিন এ অঞ্চলে জবাবদিহিহীন ভাড়াটে গোষ্ঠী মোতায়েন করে বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চালাচ্ছেন, নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করছেন এবং অহরহ অস্ত্রচুক্তি করছেন। আর এসবের মাধ্যমে পুরো আফ্রিকাকে অস্থিতিশীল করে তুলছেন। রাশিয়ার ছত্রচ্ছায়ায় সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন এখন নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আফ্রিকার অনেক দেশে এখন অসাংবিধানিক সরকার ক্ষমতায়। তাদের প্রকাশ্যে এবং গোপনে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। আফ্রিকায় একনায়কতান্ত্রিক নেতাদের উত্থানের স্রোত এবং তাদের মেয়াদ বৃদ্ধির পেছনে দক্ষ খেলুড়ে হিসেবে কাজ করছে মস্কো। বলা বাহুল্য, সমগ্র আফ্রিকাকে স্বৈরাচারী ছাঁচে নির্মাণ করতে চাচ্ছেন পুতিন। আর সেই লক্ষ্যেই তিনি তাঁর ‘আফ্রিকা নীতি’ তৈরি করেছেন।
পুতিনের আফ্রিকা নীতি পরিপূর্ণভাবে কার্যকর হলে ওই অঞ্চলের জনসাধারণের কপালে সীমাহীন নিপীড়ন নেমে আসবে, তা আগে থেকে অনুমান করাই যায়। কারণ আফ্রিকায় চলমান ১৬টি অভ্যন্তরীণ সংঘাতের প্রধান শিকড় গেঁড়ে আছে এসব কর্তৃত্ববাদী শাসনের ভেতরে। বিপরীতে আফ্রিকায় যে কয়েকটি হাতেগোনা দেশে গণতন্ত্র আছে, সেসব দেশে তাকিয়ে দেখুন, কোনো দ্বন্দ্ব-সংঘাত নেই। সুতরাং আরও কর্তৃত্ববাদ আরও সংঘাতের জন্ম দেবে বলে ধারণা করা যায়।
আফ্রিকার ৭৫ শতাংশ মানুষ গণতন্ত্র পছন্দ করে। তাদের ওপর চেপে বসেছে স্বৈরতান্ত্রিক সরকার। এসব একনায়ক সরকার গণতন্ত্রকামী মানুষের ওপর ক্রমবর্ধমান হারে দমন, পীড়ন, নির্যাতন চালাবে তাতে সন্দেহ নেই। এতে আফ্রিকার অভ্যন্তরে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা বাড়বে। বাড়বে নিজ দেশ ছেড়ে শরণার্থী হওয়ার সংখ্যা।
আফ্রিকান সেন্টারের তথ্যমতে, পুতিন লিবিয়াকে ২০১৯ সাল থেকে স্নাইপার, মিগ-২৯, এসইউ-২৪ ফাইটার জেট, এসএ-২২ সারফেস টু ক্ষেপণাস্ত্র, বিমানবিধ্বংসী সরঞ্জাম ও শত শত উড়োজাহাজ দিয়ে সহায়তা করে আসছেন। বিনিময়ে কী ফায়দা তুলে নিচ্ছেন পুতিন? পূর্ব লিবিয়ার তেলক্ষেত্র থেকে রাজস্ব ও পূর্ব ভূমধ্যসাগরে নৌসুবিধা নিচ্ছে রাশিয়া।
পুতিনের আফ্রিকা নীতির মধ্যে আরও রয়েছে—বৈধ সরকারগুলোকে কোণঠাসা করে রাখা, সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলগুলোতে বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চালিয়ে সমাজকে বিভক্ত করে রাখা, বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর অসাংবিধানিক দাবিগুলোকে সমর্থন দিয়ে যাওয়া ইত্যাদি। আফ্রিকার অন্তত আটজন নেতার সঙ্গে হাত মিলিয়ে পুতিন এসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।
সুদানের স্বৈরশাসক ওমর আল বশিরকে দীর্ঘদিন ধরে সমর্থন দিয়ে গেছে মস্কো। সেখানে সুদানের সামরিক বাহিনীকে সমর্থন দিতে গিয়ে নিজেদের সেনাদের যুক্ত করেছে রাশিয়া। বিনিময়ে পশ্চিম সুদানের সোনার খনিগুলোতে অবাধ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করেছেন মহামান্য পুতিন।
তারপর পুতিন নজর দিয়েছেন মোজাম্বিকের দিকে। দেশটির উত্তরে ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠীর উত্থান ঘটেছে। সুতরাং তাদের মোকাবিলা করা দরকার—এই অজুহাতে রুশ সেনাসমর্থিত ওয়াগনার গ্রুপকে নিযুক্ত করেছে রাশিয়া। শুধুই কি জঙ্গি মোকাবিলা করাই উদ্দেশ্য? মনে হয় না। আসলে এ অঞ্চলের গ্যাস খনির দিকে নজর পড়েছে পুতিনের।
আফ্রিকার আরেক দেশ মালিকে কতটা কবজা করেছেন পুতিন, তা একটি ঘটনার দিকে নজর দিলেই স্পষ্ট হবে। ঘটনা ২০২০ সালের ১৮ আগস্টের। ওই দিন সেনা অভ্যুত্থানের পর খুশিতে রাস্তায় নেমে আসেন অনেক মানুষ। তাঁদের অনেকের হাতে রাশিয়ার পতাকা ও পুতিনের ছবি দেখা গেছে। এ থেকেই বোঝা যায়, পুতিন সেখানে কতটা প্রভাব বিস্তার করেছেন।
নানা কারণেই আফ্রিকাকে নিজের কবজায় রাখতে চান পুতিন। এর একটি বড় কারণ ‘অস্ত্র ব্যবসা’। এখন পর্যন্ত আফ্রিকার অস্ত্রের বাজারের ৪৯ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে মস্কো। রাশিয়ার কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র কেনে আলজেরিয়া, অ্যাঙ্গোলা, মিসর, মরক্কো, নাইজেরিয়া, সুদান, সেনেগাল ও জাম্বিয়া।
পুতিন চান দক্ষিণ ভূমধ্যসাগর এবং লোহিত সাগরে তাঁর প্রভাব বিস্তার করতে। একই সঙ্গে চান, এ অঞ্চলে ন্যাটোকে চাপের মধ্যে রাখতে। নিজের শক্তি প্রদর্শন এবং এ অঞ্চলকে পশ্চিমা প্রভাবমুক্ত করে নিজের কবজায় আনাই পুতিনের অদম্য ইচ্ছা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এসব ইচ্ছা পূরণ করতে পুতিন ব্যবহার করছেন আলজেরিয়া, অ্যাঙ্গোলা, বুরুন্ডি, গিনি, মাদাগাস্কার, মোজাম্বিক, দক্ষিণ সুদান, উগান্ডা ও জিম্বাবুয়ের পুতুল সরকারকে।
বিশ্লেষকেরা মনে করেন, আরও দীর্ঘকাল আফ্রিকা পুতিনের এসব খায়েশ পূরণ করে যাবে। কারণ, আফ্রিকার সঙ্গে রাশিয়ার রয়েছে ঐতিহাসিক সম্পর্ক—সেই সোভিয়েত ইউনিয়নের সময় থেকে।
রাশিয়া ইউক্রেন সংকট সম্পর্কিত সংবাদ পেতে - এখানে ক্লিক করুন
অ্যাঙ্গোলার রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এন কুলুম্বু বলেছেন, ‘মস্কোর সঙ্গে ঐতিহাসিক বন্ধুত্বের কথা মাথায় রেখেই অ্যাঙ্গোলা, মোজাম্বিক, জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়ার মতো দেশগুলো জাতিসংঘের ইউক্রেনের প্রস্তাবে ভোটদান থেকে বিরত থেকেছে।’
সূত্র: ফরেন পলিসি, আফ্রিকা সেন্টার, দ্য কনভারসেশন ও ডয়চে ভেলে
বিশ্লেষণ সম্পর্কিত পড়ুন:
কোভিড-১৯ মহামারির পর সোশ্যাল মিডিয়া ফাস্ট ফ্যাশন শিল্পকে ভঙ্গুর করে তুলেছে। জায়গা করে নিচ্ছে ভয়াবহ মানবাধিকার সংকট সৃস্টিকারী ‘আলট্রা-ফাস্ট ফ্যাশন’। সেই শিল্পে তৈরি মানুষেরই ‘রক্তে’ রঞ্জিত পোশাক সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করে কিনছে অনবরত। আর রক্তের বেসাতি থেকে মালিক শ্রেণি মুনাফা কামিয়েই যাচ্ছে।
১ দিন আগেনবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
৫ দিন আগেপরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
৯ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় মোটামুটি সারা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। বাদ যায়নি তাঁর প্রতিবেশী দেশগুলো। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই জয়ের বড় প্রভাব পড়বে প্রতিবেশী দেশগুলোয়।
১১ দিন আগে